Home Blog Page 55

ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশ কর্তৃক শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জের ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়, গত বছরের জুলাই মাসের 

সম্প্রতি, ‘ইনুস ওর পেটোয়া বাহিনী দিয়ে বর্তমান ঠাকুরগাঁও এর অবস্থা। এভাবে নির্মমভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের উপর পুলিশের লাঠি চার্জ।’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে 

ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়, এমনকি ভিডিওটি ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বে গ্রহণের পরেরও নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভিডিওটি আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকাকালীন গত বছরের ৩১ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালনকালে ঠাকুরগাঁওয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের দৃশ্যের।

অনুসন্ধানে ‘Moinuddin Talukder Himel’ নামক এক স্থানীয় সাংবাদিকের অ্যাকাউন্টে গত বছরের ৩১ জুলাই প্রচারিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে থাকা ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

উক্ত পোস্টের ক্যাপশনে দাবি করা হয় ভিডিওটি ঠাকুরগাঁওয়ের। এছাড়া পুরো ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আন্দোলনকারীরা কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়কার কোটা বিরোধী স্লোগান গুলো দিচ্ছেন এবং বিক্ষোভ মিছিলের সামনের সারিয়ে থাকা ব্যানারেও একই তথ্য রয়েছে। 

উক্ত সূত্রগুলো ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে অনলাইন ভিত্তিক গণমাধ্যম রাইজিং বিডি এর ওয়েবসাইটে গত বছরের ৩১ জুলাই “ঠাকুরগাঁওয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, পুলিশের লাঠিচার্জ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে থাকা ছবিটির সাথে আলোচিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল রয়েছে। 

Screenshot: Rising bd

রাইজিং বিডির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত বছরের ৩১ জুলাই দুপুরের দিকে জেলা শহরের আর্ট গ্যালারি এলাকার একাত্তরের অপরাজয় চত্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভ মিছিলে লাঠিচার্জ করেছিল পুলিশ। 

একই বিষয়ে মূলধারার গণমাধ্যম ইত্তেফাক এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত বছরের ৩১ জুলাই সকাল ১১টা থেকে ঠাকুরগাঁওয়ে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালনের জন্য জেলা শহরের আর্ট গ্যালারি এলাকার একাত্তরের অপরাজয় চত্বরে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখানে পুলিশ ব্যারিকেড দিলে বেলা ১২টার দিকে তা ভেঙে মিছিল নিয়ে শহরের চৌরাস্তার আদালত চত্বরের দিকে যায় আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনকারীদের বাধা দিতে আদালতের মূল ফটকের সামনের সড়কে ব্যারিকেড দেয় পুলিশ। এ সময় শিক্ষার্থীরা আদালত চত্বরে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। 

ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন গত বছরের ০৮ আগস্ট। যা উক্ত ঘটনার অন্তত ৯ দিন পর।

বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য স্থানীয় সাংবাদিক মহিউদ্দিন তালুকদার হিমেলের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ‘ভিডিওটি ২০২৪ সালের ৩১ জুলাইয়ের। ছাত্ররা তাদের কর্মসূচী অনুযায়ী ঠাকুরগাঁও আর্ট গ্যালারী থেকে একটি মিছিল নিয়ে কোর্ট চত্বরে প্রবেশ করার সময় পুলিশ বাধা দেয় এবং লাঠিপেটা করে।’

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে সম্প্রতি ঠাকুরগাঁওয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের কোনো তথ্য গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, গত বছরের ৩১ জুলাই ঠাকুরগাঁওয়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিওকে সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের দৃশ্য দাবিতে এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও প্রচার

ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ী এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল এলাকায় গত ২১ জুলাই বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় এখন অবধি অন্তত ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়।এছাড়া, আহত ও দগ্ধ হয়েছে অন্তত শতাধিক, যাদের বেশিরভাগই শিশু শিক্ষার্থী। এরই প্রেক্ষিতে অনলাইনে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, প্রচারিত ভিডিওটি উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত পোস্টগুলো সম্মিলিতভাবে প্রায় ৩৮ লক্ষ বার দেখা হয়েছে এবং প্রায় ২৯ হাজারটি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্টগুলোতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে 

টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনার আসল দৃশ্যের নয় বরং, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি একটি ভুয়া ভিডিও।

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কোনো বিশ্বস্ত গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে মানুষের অঙ্গভঙ্গি, হাঁটার ধরণ, কাপড় ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয় যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়।

Comparison : Rumor Scanner

এছাড়াও, উত্তরায় একটি বিমান বিধ্বস্ত হলেও প্রচারিত ভিডিওটিতে দুইটি বিমানের অস্তিত্ব দেখা যায়৷ পাশাপাশি, বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটি এফ-৭ বিজিআই মডেলের হলেও প্রচারিত ভিডিওটিতে ভিন্ন মডেলের বিমান দেখা যায়।

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, প্রচারিত ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনার আসল দৃশ্য দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মাইলস্টোনে বিধ্বস্ত বিমানের দৃশ্য দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার

গত ২১ জুলাই রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনা ঘটেছে। এতে শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের পাশাপাশি বিমানটির পাইলট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম ওরফে সাগরও নিহত হন। এরই প্রেক্ষিতে, “যারা ২০০+ বাচ্চার খুনিকে জাতীয় হিরো বানানোর জন্য আদাজল খেয়ে ফেসবুকে শ্রম দিচ্ছে এই ভিডিও তাদের জন্য। প্লেন যে উচ্চতায় ছিল সেই উচ্চতায় থাকা অবস্থায়ও সে টার্ন নেওয়ার চেষ্টা না করে হাল ছেড়ে দিয়ে ইজেক্ট হয়ে গেছে নিজে বাঁচার জন্য! এটি পরিকল্পিত হত্যা*কান্ড। #KillerYunus #StepDownFescistYounus #standwithmilestonestudents” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি মাইলস্টোনে বিধ্বস্ত বিমানের পাইলট তৌকিরের ইজেক্ট করার দৃশ্যের নয় বরং, এটি মিশিগানের এয়ার শো চলাকালে বিমান দুর্ঘটনার ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘MLive’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট ‘Crew ejects before plane crash at Michigan air show #planecrash #michigan #ypsilanti’ শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওর বিবরণী থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৩ আগস্ট (রোববার), মিশিগানের ইপসিল্যান্টিতে অনুষ্ঠিত ‘থান্ডার ওভার মিশিগান’ এয়ার শো চলাকালে একটি MiG-23 প্রদর্শনী বিমানের দুর্ঘটনা ঘটে। 

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওর বিষয়ের আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ‘BBC’ এর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট “Michigan air show: MiG-23 jet crashes moments after two occupants eject” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৩ আগস্ট মিশিগানে ‘থান্ডার ওভার মিশিগান’ এয়ার শো চলাকালে একটি সোভিয়েত যুগের যুদ্ধবিমান MiG-23 ভেঙে পড়ে। ক্র্যাশের ঠিক আগেই পাইলট ও যাত্রী প্যারাশুটে নিরাপদে অবতরণ করেন। বিমানটি বেলভিলের একটি অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের পার্কিং লটে ফাঁকা গাড়ির ওপর পড়ে এবং এরপর তা জ্বলন্ত আগুনে রূপ নেয়। 

এ বিষয়ে সেসময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম একই তথ্যসংবলিত সংবাদ (,,) প্রচার করে।

সুতরাং, মিশিগানের এয়ার শো চলাকালে বিমান দুর্ঘটনার ভিডিওকে মাইলস্টোনে বিধ্বস্ত বিমানের পাইলট তৌকিরের ইজেক্ট করার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

নাচের এই ভিডিওটি মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীদের নয়, ভারতের

গত ২১ জুলাই রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান প্রশিক্ষণকালে বিধ্বস্ত হয়। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে। এছাড়াও এঘটনায় আহত ও দগ্ধ হয়েছে প্রায় শতাধিক, যাদের বেশিরভাগই শিশু শিক্ষার্থী। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, বিমান দুর্ঘটনার পূর্বে সকালে স্কুলটির ওই ক্লাসরুমে ধারণ করা একটি ভিডিও দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও ক্লিপ প্রচার করা হয়েছে। যাতে একটি শ্রেণীকক্ষে শিশু শিক্ষার্থীদের শিক্ষকের সাথে নাচতে দেখা যায়।  

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, শিশুদের নাচের আলোচিত ভিডিওটি বিমান দুর্ঘটনার আগে মাইলস্টোন স্কুলের শ্রেণীকক্ষে ধারণ করা নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভারতের একটি স্কুলের শিশু শিক্ষার্থীদের নাচের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে এর কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে Amit Thakur Sidhu নামের একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ২৬ জুন প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যালোচনার মাধ্যমে দেখা যায়, মাইলস্টোনের শিশু শিক্ষার্থীদের নাচের ভিডিও দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। ভিডিওটির ভারতীয় ভাষার ক্যাপশন এবং #himachal শীর্ষক হ্যাশট্যাগ দেখে ধারণা করা যায় ভিডিওটি ভারতের কোনো স্কুলের।

পরবর্তীতে উক্ত ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে একই স্কুলের পোশাক পরিহিত শিক্ষার্থীদের একাধিক নাচের ভিডিও অ্যাকাউন্টটিতে দেখতে পাওয়া যায়। প্রতিটি ভিডিওতেই একই ব্যক্তিকে নির্দেশনা দিতে দেখা যায়। এমন কয়েকটি ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে

ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি পর্যালোচনার মাধ্যমে দেখা যায়, এটি পরিচালনাকারী অমিত ঠাকুর সিধু একজন নৃত্যশিল্পী এবং স্কুলের ভিডিওগুলোতে শিক্ষার্থীদের তিনিই নাচের নির্দেশনা দিচ্ছেন। এছাড়াও জানা যায়, সিধু ভারতের হিমাচল প্রদেশের একজন নিবাসী। 

Screenshot: Instagram 

তার প্রোফাইল পর্যালোচনা করে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীদের নাচ শেখানোর বেশকিছু ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

সুতরাং, ভারতের একটি স্কুলের শিশু শিক্ষার্থীদের নাচের ভিডিওকে মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনার আগে ধারণ করা শিক্ষার্থীদের নাচের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Amit Thakur Sidhu Instagram Account Post
  • Rumor Scanner’s Analysis

চাঁদপুরে দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত হিন্দু নারীকে নিহত দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে “চাঁদপুরে মাটি কেটে ঘরে ঢুকে হিন্দু নারী কে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা” লেখা সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সংযুক্ত করে প্রচার করা হয়েছে। তবে ফটোকার্ডটিতে ‘হত্যা চেষ্টা’ উল্লেখ থাকলেও ক্যাপশনে ইংরেজিতে দাবি করা হয়েছে, “৪৬ বছর বয়সী বাংলাদেশী হিন্দু নারী ইসলামপন্থীদের হাতে নিহত”। (অনূদিত)

এরূপ দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

উল্লেখ্য, এই এক্স অ্যাকাউন্টটি ভারত থেকে পরিচালিত হচ্ছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চাঁদপুরে দুর্বৃত্তের হামলার শিকার এই নারী নিহত হননি। প্রকৃতপক্ষে তিনি আহত হয়েছেন এবং এখন শঙ্কামুক্ত আছেন বলে তার ছেলে জানিয়েছেন।

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টে সংযুক্ত ফটোকার্ডটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘সনাতন টিভি’ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ১০ জুলাইয়ে ‘চাঁদপুরে মাটি কেটে ঘরে ঢুকে হি’ন্দু নারী কে কু*পি*য়ে হ*ত্যা চেষ্টা..’ শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টটিতে আলোচিত ফটোকার্ডটির সংযুক্তি পাওয়া যায় এবং পেজটির অন্যান্য ফটোকার্ডসহ সামগ্রিকভাবে পর্যবেক্ষণ করলে নিশ্চিত হওয়া যায় যে ‘সনাতন টিভি’র উক্ত ফটোকার্ডটিই মূল ফটোকার্ড।

এছাড়া, ফটোকার্ড সম্বলিত ফেসবুক পোস্টটির মন্তব্য বিভাগ পর্যবেক্ষণ করলে সনাতন টিভির একটি মন্তব্য পাওয়া যায়। মন্তব্যটিতে বলা হয়, “চাঁদপুর সদর উপজেলায় মাটি কেটে ঘরে ঢুকে কাজল চক্রবর্তী (৪৬) নামে এক হিন্দু নারীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ভোর ৪টার দিকে উপজেলার ৪নং শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের ভাটেরগাঁও ছোট পন্ডিত বাড়িতে এই নৃশংস ঘটনা ঘটে। আহত কাজল চক্রবর্তী বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।”

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে মূলধারার গণমাধ্যম ‘আরটিভি’র ওয়েবসাইটে “সিঁদ কেটে ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে কুপিয়ে জখম” শীর্ষক শিরোনামে গত ১০ জুলাইয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “চাঁদপুরে গভীর রাতে সিঁদ কেটে ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত গৃহবধূ কাজল রাণী চক্রবর্তীকে (৪৬) কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার (৯ জুলাই) দিবাগত রাতে চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের ভাটেরগাঁও ছোট পণ্ডিত বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে। আহত কাজল রাণী চক্রবর্তী মৃত কৃষ্ণপদ চক্রবর্তীর স্ত্রী। আহত কাজল রাণীর ছোট ছেলে প্রদীপ চক্রবর্তী ও স্থানীয়রা জানান, বুধবার (৯ জুলাই) দিবাগত ভোর ৪টার দিকে দুর্বৃত্তরা সিঁদ কেটে ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় ওই গৃহবধূকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ঘাড়ে, সিনায় ও হাতে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে খাটের নিচ দিয়ে সিঁদ কেটে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় কাজল রাণীকে উদ্ধার করে দ্রুত চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কর্মরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।” 

অর্থাৎ, হামলার শিকার হওয়া নারী কাজল চক্রবর্তী নিহত হওয়ার দাবির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে পরবর্তীতে রিউমর স্ক্যানার টিম শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ সোহেলের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, “উক্ত ঘটনা তার ওয়ার্ডেই ঘটেছে এবং হামলার শিকার ওই নারী সুস্থ আছেন। তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে।”

এছাড়াও, রিউমর স্ক্যানার টিম আহত নারীর ছেলে প্রদীপ চক্রবর্তীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি নিশ্চিত করেন, “কাজল চক্রবর্তীকে বাসায় আনা হয়েছে। ডাক্তার বলেছেন শঙ্কামুক্ত আছেন।”

সুতরাং, চাঁদপুরে দুর্বৃত্তের হামলায় কাজল চক্রবর্তী নামের এক নারীর আহত হওয়ার ঘটনাকে নিহত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

এটি ‘ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড’ এর বিয়ার গ্রিলসের কোনো শ্যুটিংয়ের ছবি নয় 

0

সম্প্রতি, “শেষমেষ তুমিও ধোঁকা দিলা বেয়ার” শিরোনামে জনপ্রিয় টিভি শো ‘ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড’ এর বিয়ার গ্রিলসের ছবি সম্বলিত একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে 

টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি ‘ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড’ শো এর বিয়ার গ্রিলসের কোনো শ্যুটের ছবি নয় বরং, ‘BEAR GRYLLS Young Adventurer‘ নামক একটি অ্যানিমেশন মুভির শ্যুটিংয়ের ছবিকে সম্প্রতি আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে থাকা ছবিটি রিভার্স সার্চের মাধ্যমে ফেসবুকে ‘Bear Grylls’ এর অফিশিয়াল পেজে গত ১৬ মে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে বিয়ার গ্রিলস লিখেছেন, “আমাদের প্রথম ‘Bear Grylls Young Adventurer: Endangered’ অ্যানিমেশন মুভির আশেপাশে কিছু অ্যাড-অন তৈরি করতে সাহায্যকারী একটি দুর্দান্ত দলকে ধন্যবাদ। গ্রিন স্ক্রিন কাজ করার জন্য একটি অদ্ভুত কিন্তু বরাবরের মতো উন্নতি, মানিয়ে নেওয়া এবং কাটিয়ে উঠার মতো মাধ্যম।” (অনূদিত) 

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে বিয়ার গ্রিলসের ‘ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড’ এর শ্যুটিংয়ের দৃশ্য দাবিতে একই ছবি প্রচার করা হলে সেসময়ে বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

চাঁদপুরের মতলব উত্তর-দক্ষিণ উপজেলার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কমিটি বিলুপ্তির দাবিতে ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রচার

0

সম্প্রতি, চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর-দক্ষিণ উপজেলা ও পৌরসভাসহ ছেংগারচর পৌরসভার বিএনপি এবং এর অঙ্গ সংগঠনগুলোর কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে দাবিতে দলটির সিনিয়র মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, চাঁদপুরের মতলব উত্তর-দক্ষিণ উপজেলা, পৌরসভাসহ ছেংগারচর পৌরসভার বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলোর কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে দাবিতে প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া। বিএনপির বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষর নকল করে ভুয়া এই প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কথিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২৫ জুলাই, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ফেসবুক পেজ ও মিডিয়া সেলের ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে এমন কোনো প্রেস বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে, গত ২৫ জুলাই বিএনপির ফেসবুক পেজে প্রচারিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

উক্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আলোচিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির একটি ছবি যুক্ত করে বলা হয়, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষর জাল করে মতলব উত্তর-দক্ষিণ উপজেলা, পৌরসভা ও ছেংগারচর পৌরসভার বিএনপি এবং এর অঙ্গ সংগঠনগুলোর কমিটি বিলুপ্তি প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও বলা হয়, বিএনপি’র দফতর থেকে গণমাধ্যমে এমন কোনো বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়নি। ফেসবুকে পোষ্টকৃত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি সম্পূর্ণরুপে মিথ্যা, বানোয়াট ও অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিটির বিষয়ে দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিটির মাধ্যমে।

সুতরাং, চাঁদপুরের মতলব উত্তর-দক্ষিণ উপজেলা, পৌরসভাসহ ছেংগারচর পৌরসভার বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলোর কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণার দাবিতে বিএনপির নামে প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

  • Bangladesh Nationalist Party-BNP Facebook Post

নেত্রকোনায় এনসিপির পদযাত্রা: নিজেদের নোটিশকে ভুয়া দাবি করে প্রতিবাদলিপি দিলো স্কুল কর্তৃপক্ষ

0

নেত্রকোনায় এনসিপির আগামী রবিবারের (২৭ জুলাই) পদযাত্রার কারণে শহরের পুলিশ লাইনস স্কুল দুই দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ওই বিদ্যালয়ে এনসিপির কর্মসূচি উপলক্ষে আসা পুলিশ সদস্যরা অবস্থান করবেন বলে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) একটি নোটিশ দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার এক পর্যায়ে শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে নতুন করে ‘প্রতিবাদলিপি’ দিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেখানে দাবি করা হয়, “আগের নোটিশটি সঠিক নয়। আগের নোটিশটি স্কুলের বিরুদ্ধে দূরভিসন্ধিমূলক ও বিভ্রান্তিকর একটি ষড়যন্ত্র।” 

স্কুল কর্তৃপক্ষের দেওয়া প্রতিবাদলিপি দেখুন এখানে।  

এই নোটিশের পর এনসিপির নেতাকর্মীরাও আগের নোটিশকে ভুয়া দাবি করে ফেসবু্কে পোস্ট করছেন।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নেত্রকোনায় এনসিপির পদযাত্রা উপলক্ষে পুলিশ লাইনস স্কুল দুই দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণার নোটিশটি ভুয়া নয় বরং নোটিশটি আসল। রিউমর স্ক্যানার স্কুলের নোটিশ সংক্রান্ত পোস্টের স্ক্রিনশটগুলো মূল সোর্স থেকে সংগ্রহ করে মেটাডাটা যাচাই করে দেখেছে এবং আগের নোটিশটিও স্কুলের পেজ থেকেই দেওয়া হয়েছিল বলে নিশ্চিত হয়েছে। তাছাড়া, প্রতিবাদলিপিতে থাকা প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষরের সাথে বিভিন্ন সময়ে নোটিশে থাকা তার স্বাক্ষরেরও অমিল পরিলক্ষিত হয়।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে নেত্রকোনার পুলিশ লাইনস স্কুলের ফেসবুক পেজে কথিত বন্ধের নোটিশটি খুুঁজে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে ফেসবুকের এডভান্স টুলের সহায়তায় সোহেল রানা সোহান নামে এক ব্যক্তির ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বন্ধের নোটিশটির স্ক্রিনশট খুঁজে পাওয়া যায়। স্ক্রিনশটটি স্কুলটির ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া হয়েছে ২২ ঘন্টা আগে। উক্ত ব্যক্তি স্ক্রিনশটটি তারই নেওয়া বলে পোস্টে দাবি করেন। রিউমর স্ক্যানার জনাব সোহানের সাথে যোগাযোগ করে স্ক্রিনশটটির মূল ফাইল সংগ্রহ করে মেটাডাটা যাচাই করে স্ক্রিনশটটি তারই নেওয়া বলে নিশ্চিত হয়। স্ক্রিনশটটি শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল ১০ টা ৪৭ মিনিটে নেওয়া হয়। 

বিষয়টি আরো নিশ্চিত হতে জনাব সোহান থেকে সংশ্লিষ্ট আরো কিছু স্ক্রিনশট নিয়ে সেগুলোও একাধিক মেটাডাটা সাইটের মাধ্যমে যাচাই করে নোটিশটির স্ক্রিনশট আসল বলে নিশ্চিত হয় রিউমর স্ক্যানার।


এরই মধ্যে রিউমর স্ক্যানার নেত্রকোনা পুলিশ লাইনস স্কুলের অফিশিয়াল ফেসবুক গ্রুপে স্কুল বন্ধের আলোচিত নোটিশটির ছবি পোস্ট হওয়ার প্রমাণ পায়। আর্কাইভ লিংক থেকে দেখা যায়, মাশিউর রহমান নামে এক ব্যক্তি স্কুলের গ্রুপটিতে নোটিশটি পোস্ট করেন। গ্রুপটির এডমিন হিসেবে স্কুলের পেজ এবং পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা রয়েছেন।

এছাড়া, জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোকেও শুক্রবার সকালে (যখন বন্ধের নোটিশটি পেজে দেওয়া ছিল) বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মালেক বলেন, ‘এনসিপির সমাবেশে বাইরে থেকে বাড়তি পুলিশ আসবে, তাদের পুলিশ লাইনস স্কুলে থাকতে দেওয়া হবে। তাই বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিদ্যালয়ে প্রায় ১০টির মতো বড় শ্রেণিকক্ষ আছে। আশা করি, থাকার সমস্যা হবে না।’ 

তবে নোটিশটি সরিয়ে প্রতিবাদলিপি পোস্টের পর শুক্রবার দুপুর ১২টা ২ মিনিটে তিনিই আবার প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, আগের নোটিশটি ‘ফেইক’ ছিল। আগেরটি তাঁর স্বাক্ষর ছিল না। এখানে কীভাবে কী হয়েছে তিনি বুঝতে পারেননি। কোনো ধরনের চাপের মুখে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কথাও অস্বীকার করেন তিনি।

অর্থাৎ, স্কুল কর্তৃপক্ষ আগের নোটিশটি ভুয়া বলে যে দাবি করছে তা সঠিক নয়৷ একাধিক উপায়ে বিষয়টির নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছে। 

এদিকে নেত্রকোনা পুলিশ লাইনস স্কুলের ফেসবুক পেজে শুক্রবার যে প্রতিবাদলিপি দেওয়া হয়েছে তাতে প্রধান শিক্ষক আবদুল মালেকের দেওয়া স্বাক্ষরের সাথে পূর্বের বিভিন্ন নোটিশ এমনকি সরিয়ে নেওয়া বন্ধের নোটিশটিতে থাকা স্বাক্ষরের অমিল পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার।

পূর্বে বিভিন্ন সময়ে প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষরিত নোটিশের পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে। 

সুতরাং, নেত্রকোনায় এনসিপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে দু’দিন বন্ধ থাকার নোটিশ দেওয়ার পর তা ফেসবুক পেজ থেকে সরিয়ে নিয়ে নিজেদের নোটিশটিকেই ভুয়া দাবি করে প্রতিবাদলিপি দিয়েছে নেত্রকোনা পুলিশ লাইনস স্কুল কর্তৃপক্ষ; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

  • Screenshots Metadata Analysis 

Prothom Alo: বিদ্যালয় দুদিন বন্ধ রাখার নোটিশ দিয়ে এখন কর্তৃপক্ষ বলছে, সেটি ‘ফেইক’ ছিল

মাইলস্টোনে আহতদের বাংলাদেশে চিকিৎসা সেবা দিতে এসে ভারতীয় ডাক্তারের হয়রানির শিকার হওয়ার দাবিটি ভুয়া

0

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের জরুরি চিকিৎসা সহায়তা দিতে ঢাকায় এসেছে ভারতের চার সদস্যের প্রতিনিধিদল। গত ২৩ জুলাই সন্ধ্যায় ভারতীয় প্রতিনিধি দলটি ঢাকায় পৌঁছে। এরই প্রেক্ষিতে গত রাতে DrPuja Mukherjee নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে নিজেকে মাইলস্টোনের ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা দিতে আসা ভারতীয় চিকিৎসক হিসেবে উপস্থাপন করে দেওয়া এক ব্যক্তির পোস্ট নজরে আসে রিউমর স্ক্যানারের। পোস্টে দাবি করা হয়, ঢাকা মেডিকেলে দায়িত্ব পালনের সময় তৃষ্ণা লাগলে তিনি পানি কিনতে বাইরে যান এবং দোকানদার তার কাছে ৪০ টাকার পানি ৩০০ টাকা দাবি করে! এই পোস্টে দাবি করা হয়, “হাসপাতালের কিছু ডাক্তারের ব্যবহার দেখে মনে হচ্ছে আমরা তাদের বোঝা, অথচ কাজের সব সময় আমরাই আছি পাশে।”

অ্যাকাউন্টটি থেকে দেওয়া পোস্টটি দেখুন এখানে

একই দাবির এক্স পোস্ট দেখুন এখানে

একই দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন এইদিন, এশিয়ানেট নিউজ

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ডা. পূজা মুখার্জি নামের কেউ ভারত থেকে আসা চিকিৎসক দলে কেউ নেই। ডা. পূজা মুখার্জি নামে পরিচালিত ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ভুয়া। ভিন্ন অন্তত দুই ব্যক্তির ছবি ব্যবহার করে এই অ্যাকাউন্টটি পরিচালিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কিওয়ার্ড সার্চ করে বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনের ফেসবুক পেজে গত ২৪ জুলাইয়ের এক পোস্ট থেকে জানা যায়, ভারতের দুটি শীর্ষস্থানীয় বার্ন ইনজুরী চিকিৎসা হাসপাতাল – রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতাল এবং নয়াদিল্লির সফদরজং হাসপাতাল – থেকে দুইজন ভারতীয় বিশেষজ্ঞ এবং একজন নার্সিং সহকারীর একটি দল ২১ জুলাই ঢাকায় বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসায় সহায়তা করার জন্য ঢাকায় অবতরণ করেছে। এই পোস্ট থেকে উক্ত দলের সদস্যদের নাম জানা যায়নি। পরবর্তীতে আরো অনুসন্ধান করে ভারতীয় দুই গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসআউটলুক ইন্ডিয়ায় উক্ত দলের সদস্যদের নাম পাওয়া যায়। দলে রয়েছেন দুইজন বার্ন বিশেষজ্ঞ—আরএমএল হাসপাতালের ডা. রাম মোহন এবং সফদারজং হাসপাতালের ডা. পিয়ুষ থায়াল। এছাড়া, আরএমএল হাসপাতালের নার্স পুনীত শর্মা ও অনিতা ভার্মাও একই দলে রয়েছেন।

অর্থাৎ, ভারতীয় চিকিৎসক দলটিতে ডা. পূজা মুখার্জি নামে কেউ নেই। পরবর্তী অনুসন্ধানে DrPuja Mukherjee নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি বিশ্লেষণ করে দেখে রিউমর স্ক্যানার। অ্যাকাউন্টটি ২০২৪ সালের ০৮ এপ্রিল চালু করা হয়। অ্যাকাউন্টে থাকা ছবিগুলো যাচাই করে দেখা যায়, এসব ছবি ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তিদের। অ্যাকাউন্টে পায়েল দাস এবং পূজা দাস সাহা নামের দুটি ভিন্ন ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট এর পুরোনো ছবি সংগ্রহ করে নিজের বলে পোস্ট করেছেন। কিছু ছবি এআই দিয়ে পরিবর্তন করারও চেষ্টাও হয়েছে।

ভারতীয় ফ্যাক্টচেকার ঋদ্ধীশ দত্তের মতে, অ্যাকাউন্টটি বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তি দ্বারাই পরিচালিত হচ্ছে। তিনি রিউমর স্ক্যানারকে বলেছেন, “কোনও ভারতীয় বাঙালি পানি শব্দ ইউস করে না। জল বলে। এটা একটা বড় উদাহরণ হিসাবে দেওয়া যেতে পারে হ্যান্ডলটা যে বাংলাদেশের কেউ পরিচালনা করছে তার।”

সুতরাং, উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ডা. পূজা মুখার্জি নামে ভারতীয় চিকিৎসক বাংলাদেশে চিকিৎসা সেবা দিতে এসে হয়রানীর শিকার হয়েছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

বাংলাদেশি অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণের ছবি দাবিতে ভারতীয় মডেলের সম্পাদিত ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, বাংলাদেশি অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণের ছবি দাবিতে কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো বাংলাদেশি অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণের নয় বরং, ইন্টারনেট থেকে Gima Ashi বা Garima Chaurasia নামের একজন ভারতীয় মডেলের ছবি সংগ্রহ করে তাতে প্রযুক্তির সাহায্যে তাসনিয়া ফারিণের মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ছবিগুলো প্রচার করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘gima_ashi’ নামক ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ১৬ মে প্রচারিত কিছু ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলোর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। ছবিতে উক্ত নারীর মূখমণ্ডলে পার্থক্য ছাড়া অন্য সব উপাদানে মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, Gima Ashi বা Garima Chaurasia একজন জনপ্রিয় ভারতীয় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং মডেল। 

অর্থাৎ, মূল ছবিগুলো Gima Ashi বা Garima Chaurasia নামের একজন ভারতীয় মডেলের।

অনুসন্ধানের স্বার্থে রিউমর স্ক্যানার বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে Gima Ashi বা Garima Chaurasia-এর ছবির ওপর বাংলাদেশি অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণের মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করেছে। এতে সম্পাদিত ছবির মতোই অনুরূপ ফলাফল পাওয়া গেছে।

সুতরাং, অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণের ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত এই ছবিগুলো সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

  • Gima_ashi : Instagram Post