Home Blog Page 53

আনবার নাজাহ এর কয়েকমাস পূর্বের মৃত্যুর খবর সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ছবি প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “শোক সংবাদ আনবার নাজাহ নামের এই মেয়েটির দেশের বাড়ি ফেরীঘাট পাড়া, পাবনা । বর্তমান ঠিকানা মিরপুর -১২, ঢাকা । স্টুডেন্ট ভিসায় আমেরিকা এসেছিলো। মেয়েটি অসুস্থ হয়ে মৃত্যু বরণ করেছে…ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না-ইলাইহে রাজিউন। মেয়েটির লাশ জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টাতে Emory Hospital  রয়েছে। পরিবারের সাথে যোগাযোগ কিংবা খোজ পেতে সকলে শেয়ার দিয়ে পরিবারকে জানাতে সাহায্য করুন…।।” প্রচারিত ছবিটিতে একজন নারীর ছবিসহ যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা লেখা দেখতে পাওয়া যায়।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত আনবার নাজাহ সম্প্রতি নিহত হননি বরং প্রায় দুইমাস পূর্বে গত মে মাসের প্রথমার্ধে নিহত হয়েছেন। এছাড়া, আনবারের পরিবার এ বিষয়ে ইতোমধ্যে অবগত আছে এবং আনবারকে দাফনও করা হয়ে গিয়েছে।

অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ এর ওয়েবসাইটে ‘আটলান্টায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থী নাজাহর মৃত্যু এখনও রহস্যময়’ শীর্ষক শিরোনামে গত ২২ মে তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে একটি ছবির সংযুক্তি পাওয়া যায় যার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলোতে সংযুক্ত ছবির হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের পর সুন্দর ভবিষ্যতের অভিপ্রায়ে ঢাকার ‘বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)’র অর্থনীতি বিভাগের মেধাবী ছাত্রী আনবার নাজাহ (২৬) ২০২৩ সালে স্টুডেন্ট ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে আসার দেড় বছর পর চলতি মাসের (গত মে মাসের) প্রথমার্ধে জর্জিয়া স্টেটের আটলান্টাস্থ ইমোরি জোন্স ক্রিক হাসপাতালে মারা যান। তার এ মৃত্যুকে রহস্যজনক বলে মনে করা হচ্ছে। সাবেক সহপাঠিসহ সচেতন প্রবাসীরা আনবার নাজাহ’র এই অকাল মৃত্যুর কারণ উদঘাটন এবং মরদেহ তার মা-বাবার কাছে হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছেন। আটলান্টাস্থ সামাজিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব জর্জিয়া’ এবং ‘বাংলাধারা’র সভাপতি মাহবুব ভূঁইয়া ২১ মে রাতে এ সংবাদদাতাকে আরো জানান, আনবার নাজাহ এ বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি ডেভিড উ নিউবাই নামক এক আমেরিকানের সাথে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আটলান্টার জোন্স ক্রিক সিটিতে স্বামীর সাথে বাস করছিলেন। আনবারের বাবা ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা জাকিউর রহমান জিতুর সাথে কথোপকথনের উদ্ধৃতি দিয়ে মাহবুব ভূইয়া জানান, আনবার ২ মে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ৩ মে ডেভিডের সাথে ফোনে কথা বলার সময় ফেসটাইমে আনবার গুরুতর অবস্থায় ইমোরি জোন্স ক্রিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার দৃশ্য দেখিয়েছেন। ৯ মে পর্যন্ত জিতুর সাথে ডেভিডের যোগাযোগ ছিল। আনবার হাসপাতালে অচেতন থাকায় কিছুই জানতে পারেননি জিতু। ৩ দিন পর ১২ মে ডেভিড তার শ্বশুরকে অবহিত করেন যে ১১ মে তাকে দাফন করা হয়েছে স্থানীয় মুসলিম গোরস্থানে।…”

এছাড়াও, এ বিষয়ে ‘খবর সংযোগ’ নামক গণমাধ্যমে গত ২৩ মে তারিখে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, “বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী আনবার নাজাহ (২৬) গত সপ্তাহে আমেরিকার আটলান্টার একটি হাসপাতালে মারা যান। এরপর পরিবারকে না জানিয়ে মরদেহ দাফন করে ফেলেন তার স্বামী ডেভিড উ নিউবাই।…নাজাহর বাবার সঙ্গে তার স্বামীর যোগাযোগ ছিল ৯ মে পর্যন্ত। এর তিন দিন পর ১২ মে ডেভিড নাজাহর বাবাকে অবহিত করেন যে, ১১ মে নাজাহকে দাফন করা হয়েছে স্থানীয় মুসলিম গোরস্থানে। অথচ মৃত্যুর খবরটি জানায়নি ডেভিড।”

অনুসন্ধানে এ বিষয়ে গত মে মাসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও নানা পোস্ট হতে দেখা যায়। ‘Dream USA Group – Mock & Visa applications’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে এ বিষয়ে গত ২১ মে তারিখে প্রচারিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টটিতে বলা হয়, “গুজব ছড়ানো বন্ধ করুন! নাজাহ আনবার গত সপ্তাহে মারা গেছেন এবং তার পরিবার এই বিষয়ে অবগত আছে।… তার বোন, নিহা আনবার, ব্যক্তিগতভাবে নিশ্চিত করেছেন যে তারা সমস্ত কিছু সঠিকভাবে সামলাচ্ছেন। আমরা সবাইকে বিনীতভাবে অনুরোধ করছি যে মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন।” (অনূদিত)।

সুতরাং, গত মে মাসে নিহত হওয়া নাজাহ আনবার সম্প্রতি নিহত হয়েছেন এবং তার পরিবারের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না শীর্ষক দাবিটি বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সেনাবাহিনীর পোশাক পরে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালিয়েছেন শিবিরের নেতা শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা

0

ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ী এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল এলাকায় গত ২১ জুলাই বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সেদিন গভীর রাত তিনটার দিকে গত ২২ জুলাইয়ের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করার ঘোষণা দেয় সরকার। এসব ঘটনার জেরে শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষাসচিবের পদত্যাগের দাবিতে গত ২২ জুলাই সচিবালয়ের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় পুলিশ ও সেনা সদস্যদের সাথে সংঘর্ষও হয় শিক্ষার্থীদের। এরই প্রেক্ষিতে গত ২৩ জুলাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুইটি ছবি প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “গতকাল (২২ জুলাই) সেনাবাহিনীর পোশাক পরে, শিক্ষার্থীদের উপর গু*লি চালিয়েছেন শিবিরের নেতা”।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত পোস্টে থাকা শার্ট-টাই পরিহিত ব্যক্তি এবং সেনা পোশাক পরিহিত ব্যক্তি একই নন বরং, দুইজন ভিন্ন ব্যক্তি। দুইজনের কেউই শিবির নেতা নন। প্রকৃতপক্ষে একটি ছবি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ল্যান্স কর্পোরাল আছাদুল ইসলামের এবং অপর ছবিটি নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা আবসার হাসান রানার।

প্রচারিত পোস্টে থাকা শার্ট-টাই পরিহিত ব্যক্তির ছবির বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘আবসার হাসান রানা’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত কয়েকটি ছবির স্ক্রিনশট সংযুক্ত করে গত ২৩ জুলাইয়ে প্রচারিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টটিতে বলা হয়, “… আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানাই গতকাল এক বড় ভাই সেনাবাহিনীর ছবিটা দিয়ে বলছিলো যে উনি দেখতে হুবহু আমার মতো। এর পরে আমি আমার ছবি উনার সাথে দিয়ে উনাকে উপহাস করছিলাম। আজকে দেখি ইতিহাস চেতনা সবাই আমার ছবি দিয়ে শিবির বানাই দিলেন…”।

Comparison Image : Rumor Scanner

পরবর্তীতে উক্ত ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করলে আরো নানা ছবি পাওয়া যায় যার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত শার্ট-টাই পরিহিত ব্যক্তির ছবির মিল পাওয়া যায়। এছাড়াও অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণে নিশ্চিত হওয়া যায় যে অ্যাকাউন্টটি আসল এবং এই ব্যক্তির নাম আবসার হাসান রানা। আবসার হাসান রানার ফেসবুক অ্যাকাউন্টটির বায়ো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে লেখা পাওয়া যায়, “উপ-কর্মসূচি ও পরিকল্পনা সম্পাদক | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ।”

অর্থাৎ, শার্ট-টাই পরিহিত ব্যক্তির ছবিটি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা আবসার হাসান রানার। রানার মজার ছলে করা রানার একটি ফেসবুক পোস্ট থেকেই আলোচিত দাবিটির সূত্রপাত।

পরবর্তীতে সেনাসদস্যের পোশাক পরিহিত ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে অনলাইন গণমাধ্যম ‘ঢাকা মেইল’ এর ফেসবুক পেজে “বিমান দূ/র্ঘ’টনায় বাচ্চাদের উদ্ধার করতে করতে হাপিয়ে উঠেন সেনাবাহিনীর এই সদস্য!” শীর্ষক ক্যাপশনে গত ২১ জুলাইয়ে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ছবিটি উক্ত ভিডিওটি থেকেই নেওয়া হয়েছে। উক্ত সেনা সদস্যের বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘ঢাকা মেইল’ এর ফেসবুক পেজে “সেনা সদস্যকে নিয়ে অ*প’প্র’চা’র, ফেসবুকে নি*ন্দা’র ঝড়” শীর্ষক ক্যাপশনে গত ২৪ জুলাইয়ে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটিতে বলা হয়, আলোচিত সেনা সদস্যের নাম ‘মোহাম্মদ আছাদুল ইসলাম আছাদ’ এবং তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ল্যান্স কর্পোরাল পদে কর্মরত আছেন।

Comparison Image: Rumor Scanner

পরবর্তী অনুসন্ধানে উক্ত সেনাসদস্য আছাদুল ইসলামের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুঁজে পাওয়া যায়। আছাদুল ইসলামের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করলে সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত অবস্থায় আছাদের ছবিসহ একাধিক ছবি পাওয়া যায় যার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত সেনাসদস্যের পোশাক পরিহিত ছবিটির তুলনা করলে মিল পাওয়া যায়। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত সেনাসদস্যের পোশাক পরিহিত ছবিটি আছাদুল ইসলাম নামে এক সেনাসদস্যের। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ছবি দুইটি দুই ভিন্ন ব্যক্তির ছবি।

সুতরাং, সেনাবাহিনীর পোশাক পরে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালিয়েছেন শিবিরের নেতা শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

লিওনেল মেসি ও মিয়া খলিফার এই ছবিগুলো এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কয়েকটি ছবি প্রচার করা হয়েছে যেখানে দেখা যায় আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি ও প্রাক্তন পর্ণতারকা মিয়া খলিফা একই ফ্রেমে ছবি তুলেছেন। ছবিগুলো প্রচার করে ক্যাপশনে মেসিকে উদ্দেশ্য করে লেখা হয়েছে, “ভাইটিকে খুব ভালো মনে করেছিলাম।”

অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে মেসির সাথে মিয়া খলিফার প্রচারিত ছবিগুলো আসল।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, লিওনেল মেসির সাথে মিয়া খলিফার প্রচারিত ছবিগুলো আসল নয় বরং, এগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

ছবিগুলোর বিষয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে অনুসন্ধান করলে ছবিগুলো আসল হওয়ার দাবির সপক্ষে বিশ্বস্ত গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধানে ছবিগুলোর সম্ভাব্য মূল পোস্ট “_ul_0” ইউজারনেমের একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ২ জুলাইয়ে প্রচার হতে দেখা যায়। পোস্টটির ক্যাপশনে একটি ডিসক্লেইমার বা দায়মুক্তিও পাওয়া যায় যেখানে বলা হয়, “এই ছবিগুলো বাস্তব নয়। এগুলো সর্বাধুনিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে দক্ষতার সঙ্গে তৈরি করা হয়েছে।” (অনূদিত)

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করলে এআই দিয়ে তৈরি একাধিক ছবি নানাসময়ে প্রচার হতে দেখা যায়। পাশাপাশি প্রচারিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করলে মুখমণ্ডলের গঠনসহ সামগ্রিকভাবে খানিকটা অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয় যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়।

Screenshot: Hive Moderation

বিষয়টি আরও নিশ্চিতের জন্য এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম “হাইভ মডারেশন” এ ছবিগুলো পরীক্ষা করলে দেখা যায়, এগুলো এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৫-৯৯ শতাংশ।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি ছবি আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসির সাথে সাবেক পর্ণতারকা মিয়া খলিফার আসল ছবি দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়নি

0

সম্প্রতি, ‘সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল, ১ আগস্ট থেকে শনিবারও খোলা থাকবে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।’- শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিলের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার। প্রকৃতপক্ষে, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। এছাড়া, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকেও এরূপ কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানানো হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ওয়েবসাইটেও এসংক্রান্ত কোনো নোটিশ বা তথ্য পাওয়া যায়নি।

তবে, অনলাইন গণমাধ্যম জাগো নিউজের ওয়েবসাইটে গত ০৭ মে “ঈদের আগের দুই শনিবার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার নির্দেশ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ১১ ও ১২ জুন নির্বাহী আদেশে ছুটি থাকায় ১৭ ও ২৪ মে ঈদের আগের দুই শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

আলোচিত দাবিটি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি) যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার সিরাজ-উদ-দৌলা খান বলেন, ‘আমার জানামতে এরকম কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) কলেজ ও প্রশাসন উইং এর উপ-পরিচালক মোঃ নুরুল হক সিকদার বলেন, ‘আমিও ফেসবুকে বিষয়টি দেখেছি। তবে, এই সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয় নিয়ে থাকে। আমার জানামতে এমন সিদ্ধান্ত হয়নি, আমাদের এমন কোনো নির্দেশনাও দেওয়া হয়নি।’

উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ২০২৫ সাল থেকে শনিবারে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকার দাবি ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়েছে শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

সাদিয়া আয়মান দাবিতে ভারতীয় মডেল জিনা তরফদারের ছবি সম্পাদনা করে প্রচার

0

সম্প্রতি, ছোট পর্দার অভিনয় শিল্পী ও মডেল সাদিয়া আয়মানের ছবি দাবিতে কিছু ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো সাদিয়া আয়মানের নয় বরং, ইন্টারনেট থেকে জিনা তরফদার নামক এক ভারতীয় মডেলের ছবি সংগ্রহ করে সেগুলোতে প্রযুক্তির সাহায্যে সাদিয়া আয়মানের মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ছবিগুলো তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মানের ফেসবুক পেজ ও ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট যাচাই করে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়নি।  

পরবর্তীতে আলোচিত ছবিগুলো রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘Jina Tarafder’ নামক ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে চলতি বছরের ১১ মে প্রচারিত কয়েকটি ছবি সম্বলিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। ছবিগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ছবিগুলোর নারীর চেহারা ব্যতীত বাকি সব উপাদানের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলোর মিল রয়েছে।

Image Comparison by Rumor Scanner

পরবর্তীতে উক্ত নারীর ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে প্রচারিত অন্যান্য ছবিগুলো পর্যালোচনা করে নিশ্চিত হওয়া যায়, রেস্টুরেন্টে তোলা ছবিগুলো তার-ই। অ্যাকাউন্টের বায়োতে এই নারীর পরিচয় হিসেবে অভিনেত্রী ও মডেল উল্লেখ রয়েছে। পাশাপাশি, তার অ্যাকাউন্টে প্রচারিত ভিডিও পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উক্ত নারী হিন্দি ভাষী। অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে লোকেশন হিসেবে এতে 

ভারত উল্লেখ থকতে দেখা গেছে এবং জিনা তরফদারের মূল ছবিগুলোতে লোকেশন হিসেবে কলকাতা উল্লেখ করা রয়েছে। যা থেকে বলা যায়, তিনি একজন ভারতীয়। 

অর্থাৎ, জিনা তরফদার নামের ভারতীয় এই নারীর ছবিটিতে তার মুখমণ্ডলের স্থলে এআই প্রযুক্তির সহায়তায় সাদিয়া আয়মানের মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ছবিগুলো তৈরি করা হয়েছে।  

অনুসন্ধানের স্বার্থে রিউমর স্ক্যানার বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এবং কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে জিনা তরফদারের ছবির ওপর সাদিয়ার মুখমণ্ড প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করেছে। এতে সম্পাদিত ছবির মতোই অনুরূপ ফলাফল পাওয়া গেছে। 

সুতরাং, ইন্টারনেট থেকে এক ভারতীয় মডেলের ছবি সংগ্রহ করে তাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে অভিনয় শিল্পী সাদিয়া আয়মানের মুখমণ্ডল বসিয়ে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

আমেরিকায় তেল ফ্যাক্টরিতে আগুনের দাবিতে অস্ট্রেলিয়ার পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ‘ইন্নালিল্লাহ কিছুক্ষণ আগে আমেরিকায় তেল রিজার্ভ ফ্যাক্টরিতে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত ৭ জন আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অগ্নিকাণ্ডের এই ভিডিওটি আমেরিকার নয় বরং, এটি ২০২৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে পেইন্ট ফ্যাক্টরিতে আগুনের ঘটনা।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে মেলবোর্নের স্থানীয় গণমাধ্যম ‘7NEWS Melbourn’ এর ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির ১৭ সেকেন্ড অংশ থেকে ৩৪ সেকেন্ড অংশের হুবহু মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়, মেলবোর্নের ড্যান্ডেনং সাউথে একটি পেইন্ট ফ্যাক্টরিতে বিস্ফোরণে একজন নিখোঁজ এবং চারজন হাসপাতালে ভর্তি, যাদের মধ্যে দুজন অগ্নিনির্বাপক কর্মী রয়েছেন।

উল্লিখিত প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওর বিষয়ের আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ‘The Guardian’ এর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ৮ ডিসেম্বর “One missing and four hospitalised as firefighters battle huge Melbourne factory fire” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।  

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেসময় মেলবোর্নের দক্ষিণ-পূর্বে একটি পেইন্ট কারখানায় বিস্ফোরণের পর আগুন লাগার ঘটনায় একজন নিখোঁজ এবং দুই দমকলকর্মীসহ চারজন হাসপাতালে ভর্তি হয়।

এ বিষয়ে সেসময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম একই তথ্যসংবলিত সংবাদ (,,,) প্রচার করে।

সুতরাং, ২০২৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে পেইন্ট ফ্যাক্টরিতে আগুনের ঘটনাকে সাম্প্রতিক সময়ে আমেরিকায় তেল রিজার্ভ ফ্যাক্টরিতে আগুন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

বাংলাদেশের হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনা দাবিতে ভারতের ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি, ‘হালিশহর ঈদগাঁ র একটা হাসপাতালের চিত্র, রোগীর সাথে ভালো ব্যাবহার না করা বা সার্ভিস দিতে গড়িমসি করার কারণে ল্যাপটপ ( কম্পিউটার)  ভাংচুর করলেন এক ভুক্তভোগী মহিলা কোলে শিশু সন্তান ও দেখা যাচ্ছে।’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হাসপাতাল ভাঙচুরের এই ভিডিওটি চট্টগ্রাম কিংবা বাংলাদেশ কোনো স্থানের নয় বরং, এটি ভারতের কেরালার একটা ঘটনা। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে তামিল গণমাধ্যম ‘dinakaran daily newspaper’ এর ফেসবুক পেজে ২০২৫ সালের ২৩ জুলাই  প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির শুরু থেকে ১৫ সেকেন্ড অংশের হুবহু মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়, কাসারগড়ে সন্তানকে নিয়ে চিকিৎসা করাতে আসা এক মা দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও টোকেন না পেয়ে রাগে হাসপাতালের কম্পিউটার ভেঙে চলে গেছেন। এটি সেই ঘটনার দৃশ্য। 

জানা যায়, কাসারগড় ভারতের কেরালা রাজ্যের একটি জেলা।

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে ‘Welcome Karaikudi’ নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্টেও একই তথ্যসংবলিত আলোচিত ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

এছাড়াও, ভারতের কেরালার বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একই তথ্যসংবলিত আলোচিত ভিডিওটি (,,) খুঁজে পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো হাসপাতালের নয়।

সুতরাং, ভারতের কেরালায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে ঝামেলায় রোগী কর্তৃক কম্পিউটার ভাঙচুরের ঘটনার দৃশ্যকে বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠিত হয়নি, প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া 

0

সম্প্রতি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে দাবিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সিনিয়র মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

 রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছাত্রদলের নতুন কমিটি দাবিতে প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া। প্রকৃতপক্ষে, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষর নকল করে ভুয়া এই প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কথিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২৬ জুলাই, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ফেসবুক পেজ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ফেসবুক পেজ এবং বিএনপি মিডিয়া সেলের ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে এমন কোনো প্রেস বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে নতুন এই কমিটি সংক্রান্ত বিষয়ে ফেসবুকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আমানউল্লাহ আমানের একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। ‘বটবাহিনীর গুজব থেকে সতর্ক থাকুন’ শিরোনামের উক্ত পোস্টটিতে তিনি আলোচিত বিজ্ঞপ্তিকে ভুয়া হিসেবে নিশ্চিত করেছেন। 

Screenshot: Rumor Scanner 

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চে অনলাইন সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের ওয়েবসাইটে ২৭ জুলাই “ভুয়া: কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ৫ সদস্যের নতুন কমিটি ফেসবুকে” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনের বিস্তারিত অংশে দলটির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের বরাতে ছাত্রদলের নতুন কমিটির বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া ও গুজব বলে জানানো হয়। 

সুতরাং, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নতুন কমিটি দাবিতে বিএনপির নামে প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র 

মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্তের দৃশ্য দাবিতে এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও প্রচার

ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ী এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় গত ২১ জুলাই বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় এখন অবধি অন্তত ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়। এছাড়া, আহত ও দগ্ধ হয়েছে অন্তত শতাধিক, যাদের বেশিরভাগই শিশু শিক্ষার্থী।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে, ‘উত্তরা ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা মাইলস্টোন স্কুল কলেজ’ শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, প্রচারিত ভিডিওটি উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ )।

এই প্রতিবেদন লেখা অবধি টিকটকে ভিডিওটি দেখা হয়েছে প্রায় ১ কোটি ১৬ লক্ষ বারেরও বেশি। এছাড়াও ভিডিওটিতে প্রায় ৪ লক্ষ ৫২ হাজারেরও বেশি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি ভিডিওটি ২১ হাজারেরও বেশি শেয়ার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনার আসল দৃশ্যের নয় বরং, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি একটি ভুয়া ভিডিও।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত এই ভিডিওর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া, রিউমর স্ক্যানার টিমের বিশ্লেষণে ভিডিওটিতে বিমানে আগুন জ্বলার দৃশ্য এবং দৃশ্য পরিবর্তনের সাথে সাথে বিল্ডিং ও বিমানের পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। তাছাড়া, মানুষের অঙ্গভঙ্গি, হাঁটার ধরণ ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও অস্বাভাবিকতা দেখা যায়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়।

Indicated by Rumor Scanner

পরবর্তীতে, বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতে ভিডিওটি এআই (AI) কন্টেন্ট ডিটেকশন টুল ‘Cantilux’ দিয়ে যাচাই করলে তা এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৯২ শতাংশ পর্যন্ত বলে জানা যায়।

Screenshot From Cantilux

গণমাধ্যমে প্রচারিত বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের মডেলের ছবি দেখুন –

Collage by Rumor Scanner

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনার আসল দৃশ্য দাবি করে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

উত্তরায় বিধ্বস্ত বিমানের পাইলট তৌকিরের স্ত্রীর বক্তব্যের ভিডিও দাবিতে একাধিক এআই ভিডিও প্রচার

ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ী এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল এলাকায় গত ২১ জুলাই বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। দুর্ঘটনায় অন্যান্যদের পাশাপাশি বিধ্বস্ত বিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম ওরফে সাগর যিনি নিজেও প্রাণ হারিয়েছেন। এরই প্রেক্ষিতে অনলাইনে দুইটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওগুলোতে নিহত পাইলট তৌকিরের স্ত্রী কথা বলছেন। যার মধ্যে একটি ভিডিওতে একজন নারীকে বলতে শোনা যায়, “আমি কখনও ভাবিনি, এত তাড়াতাড়ি আমার স্বামীকে হারাবো। ওকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। তৌকিরকে আপনারা ক্ষমা করে দিন। আই নেভার থট ইন মাই ড্রিম আই উড লুজ মাই হাজব্যান্ড সো কুইকলি। উই হেড মেনি ড্রিমস। প্লিজ এভ্রিওয়ান, ফরগিভ তৌকির।” এসময় পাইলট তৌকির ও তার স্ত্রীর নানা ছবিও প্রচার করা হয়।

আলোচিত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত উক্ত কথাসম্বলিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত ভিডিওটি এককভাবে প্রায় ৭০ লক্ষ বার দেখা হয়েছে এবং ৮২ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটিতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

আলোচিত দাবিতে ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

আলোচিত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এছাড়াও পাইলট তৌকিরের স্ত্রীর ভিডিও দাবিতে আরেকটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে যেখানে একজন নারীকে বলতে দেখা যায়, “আমি পাইলট তৌকিরের স্ত্রী। আমাদের বিয়ের কেবল ৬ মাস হয়েছে। সংসার কি তা বুঝার আগেই তিনি দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। আপনারাও তাকে ক্ষমা করে দিবেন৷ সে আমাকে অনেক ভালোবাসতো। এভাবে তার বিদায় নেওয়াটা মেনে নিচ্ছি না। সে খুব ভালো মানুষ ছিলেন। আপনারা কেউ তাকে ভুল বুঝে গালি দিবেন না ফেসবুকে। তাকে নিয়ে ট্রল করবেন না।”

আলোচিত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত উক্ত কথাসম্বলিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত ভিডিওটি এককভাবে প্রায় ৬৫ লক্ষ বার দেখা হয়েছে এবং ৬৩ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটিতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

আলোচিত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওগুলো উত্তরায় বিধ্বস্ত বিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম ওরফে সাগরের স্ত্রীর বক্তব্যের দৃশ্যের নয় বরং, এগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি ভুয়া ভিডিও।

আলোচিত প্রথম ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কোনো বিশ্বস্ত গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে প্রদর্শিত নারীর অঙ্গভঙ্গি, মুখমণ্ডলের গঠন ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয় যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়।

এছাড়া, অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম ‘আরটিভি’র ওয়েবসাইটে “৬ মাস আগে বিয়ে করেন বিধ্বস্ত বিমানের পাইলট তৌকির” শীর্ষক শিরোনামে গত ২২ জুলাইয়ে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে “নিহত পাইলট তৌফিক ইসলাম সাগর ও তার স্ত্রী” এর ছবি দাবিতে একটি ছবিও সংযুক্ত করা হয়েছে। তৌকির ইসলামের স্ত্রীর উক্ত ছবিটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত নারীর কাপড়, গয়না, কাপড় ও গয়নার রঙ ও ডিজাইনের বৃহৎ মিল পাওয়া যায় যা থেকে বুঝা যায় যে পাইলট তৌকিরের স্ত্রীর পুরোনো ছবির প্রেক্ষিতে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

Comparison : Rumor Scanner

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, প্রচারিত ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

প্রচারিত দ্বিতীয় ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধান করলেও কোনো বিশ্বস্ত গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে প্রদর্শিত নারীর অঙ্গভঙ্গি, মুখমণ্ডলের গঠন ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয় যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়।

অর্থাৎ, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও দুইটিই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি ভিডিওকে উত্তরায় বিধ্বস্ত বিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম ওরফে সাগরের স্ত্রীর কথা বলার আসল দৃশ্য দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র