Home Blog Page 160

সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের দৃশ্য দাবিতে জুলাই আন্দোলনের পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দাবি করা হচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে সাধারণ জনতা। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে একটি মিছিল ‘’ভুয়া,ভুয়া”,”আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেবোনা’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে এগিয়ে যাচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ),

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি সম্প্রতি সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কোনো দৃশ্য নয় বরং, জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গাজীপুরে অনুষ্ঠিত আন্দোলনের একটি ভিডিও আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতিতে, ‘SM Nayeem Hasan’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়, যার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবুহু মিল দেখা যায়। ফেসবুক ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা – ‘’অস্তিত্বের লড়াইয়ে, ডুয়েট, গাজীপুর।” ফেসবুক ভিডিওটি দেখে নিশ্চিত হওয়া যায় আলোচিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের সময়ের নয় বরং গত বছরের কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে মিছিলের ভিডিও এটি।

বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিত করতে রিউমর স্ক্যানার টিম ভিডিওটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে এবং এতে ‘অঙ্কুর ক্যাডেট একাডেমি’ নামের একটি সাইনবোর্ড লক্ষ্য করা যায়। এই সূত্র ধরে গুগল ম্যাপে এই নামের একটি প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া যায়। জানা যায়, এটি গাজীপুরের শিমুলতলী রোডে অবস্থিত। পরবর্তীতে গুগল ম্যাপ থেকে উক্ত রোডের ছবি সংগ্রহ করে এবং এর সঙ্গে ভিডিওটিতে দৃশ্যমান স্থাপনার তুলনা করে। এতে দেখা যায়, ভিডিওতে দৃশ্যমান স্থাপনার সঙ্গে শিমুলতলী রোডের অবকাঠামোর মিল রয়েছে। অর্থাৎ, ভিডিওটি গাজীপুরেই ধারণকৃত।

Photo comparison: Rumor Scanner

এছাড়া অনুসন্ধানে জানা যায়, গত বছরের ১৬ জুলাই গাজীপুরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন বিকাল ৩টায় ডুয়েটের সামনে অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে এটি শুরু হয়। এরপর ডুয়েট থেকে গাজীপুর চৌরাস্তার উদ্দেশ্যে পদযাত্রা করা হয় এবং চৌরাস্তা গিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।

সুতরাং, কোটা সংস্কার আন্দোলনের পুরোনো ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ের সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ভিডিও হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

দক্ষিণ সুদানের মুন্দারি উপজাতির গো-মূত্রে গোসল করার ভিডিওকে হিন্দু ব্যক্তির গোসল দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, হিন্দু ব্যক্তি গো-মূত্রে গোসল করছে দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, গো-মূত্রে এক ব্যক্তি গোসল করছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই ভিডিওতে হিন্দু ব্যক্তি গো-মূত্রে গোসল করছে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং, দক্ষিণ সুদানের মুন্দারি উপজাতির এক ব্যক্তির গো-মূত্রে গোসল করার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ২০২৩ সালের ০৫ জুলাই ‘UR World’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ‘The Mundari tribe is made up mostly of cattle breeders and fierce warriors.’ শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটি থেকে জানা যায়, ভিডিওতে গো-মূত্রে গোসল করা ব্যক্তি মুন্দারি উপজাতির।

এছাড়াও, অনলাইন ভিডিও নিউজ কমিউনিটি এবং মার্কেটপ্লেস ‘Newsflare’ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একই ভিডিওর ক্যাপশন থেকেও জানা যায়, এটি মুন্দারি উপজাতির।

পরবর্তীতে, উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে ‘africanvibes’ নামক ইনস্টগ্রাম অ্যকাউন্টে প্রচারিত একই ভিডিও থেকে জানা যায়, ভিডিওটি দক্ষিণ সুদানের মুন্দারি উপজাতির । মুন্দারি সম্প্রদায়ে গরুর প্রস্রাব দিয়ে চুল ধোয়া একটি গভীর সাংস্কৃতিক প্রথা। তাদের বিশ্বাস, এই প্রস্রাব তাদের চুলকে এক বিশেষ রঙ দেয়, যা তাদের নারীদের অত্যন্ত আকর্ষণ করে। এই রীতি তাদের পুরুষদের প্রতি নারীদের আকর্ষণ বাড়ায়।

Screenshot: Instagram

মুন্দারিন উপজাতি সম্পর্কে জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ভারতীয় দুই সংবাদমাধ্যম NEWS18Indiatimes এর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দক্ষিণ সুদানের মুন্দারি জনগোষ্ঠী তাদের গরুদের প্রতি অসাধারণ ভক্তি ও আনুগত্যের জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত। সাধারণত ভারতকে গরু পূজার দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও, মুন্দারিরা তাদের গরুদের প্রতি এমন এক গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলেছে যা অনন্য। তারা মূলত ‘আনখল-ওয়াতুসি’ গরু লালন পালন করে থাকেন। এই উপজাতির মানুষ গোমূত্র স্নান ও গোবরকে সানস্ক্রিন হিসেবে ব্যবহার করে।

তাছাড়া, ‘Discovery UK’ ইউটিউব চ্যানেলে আপলোডকৃত তথ্যচিত্র থেকেও  প্রায় একই তথ্য জানা যায়।

সুতরাং, দক্ষিণ সুদানের মুন্দারি জনগোষ্ঠীর ব্যক্তির গো-মূত্র দিয়ে গোসল করার ভিডিওকে হিন্দু ব্যক্তি গো-মূত্রে গোসল করছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাড়ি পুড়ে যাওয়ার দাবিটি মিথ্যা 

সম্প্রতি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার  ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের লস অ্যাঞ্জেলেসের বাড়ি দাবানলে জ্বলছে দাবিতে একটি ভিডিও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একটি বাড়ি আগুনে জ্বলছে।  

টিকটকে প্রচারিত এমন ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং  এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি টিকটকে প্রচারিত সর্বাধিক ভাইরাল ভিডিওটিতে প্রায় সাড়ে ৩৭ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং ভিডিওটি প্রায় পাঁচ হাজার বার শেয়ার করা হয়েছে। ভিডিওটির কমেন্ট বক্সে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে অধিকাংশ ব্যবহারকারী উক্ত দাবির পক্ষে মতামত দিয়েছে৷

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাড়ি পুড়ে যাওয়ার দাবিটি সত্য নয়। বরং, কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই এবং ভিন্ন ঘটনায় এক নারীর বাড়ি পুড়ে যাওয়ার ছবি যুক্ত করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে, ইয়াহু নিউজে গত বছরের ১৪ নভেম্বর “Kalispell community supports ‘Neighborhood Grandma’ after devastating house fire” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনের সাথে যুক্ত ভিডিওতে দেখানো আগুন লাগা বাড়ির ছবির সাথে সজীব ওয়াজেদের বাড়ি পুড়ে যাওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে দেখানো বাড়ির মিল পাওয়া যায়।

Comparison: rumor scanner

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল কেপাক্স-টিভি’র ওয়েবসাইটে গত ১৩ নভেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ঘটনার বিস্তারিত তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গেলো বছরের ৮ নভেম্বর, আমেরিকার কালিস্পেল শহরের ওয়েস্ট ভ্যালি এলাকায় বসবাসরত প্রবীণ নারী বেটসি মরিসনের প্রায় ২০ বছরের পুরনো বাড়ি এবং সমস্ত সম্পত্তি এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। উল্লেখিত ভিডিওটি এই ঘটনার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

অর্থাৎ, এই বাড়ির মালিক সজীব ওয়াজেদ জয় নয় বরং বেটসি মরিসন নামের এক নারী।

এছাড়া, নির্ভরযোগ্য কোনো সংবাদ মাধমে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাড়ি পুড়ে যাওয়ার দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে স্থানীয় সময় গত ৮ জানুয়ারি শুরু হওয়া ভয়াবহ দাবানলের সূত্রপাত ঘটে। তবে আলোচিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত বাড়ি পুড়ে যাওয়ার ঘটনাটি গত বছরের নভেম্বরের।

সুতরাং, লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাড়ি জ্বলছে দাবিতে পুরোনো ও ভিন্ন ব্যক্তির বাড়ি পোড়ার ছবি প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

সম্প্রতি ঢাকায় শিক্ষার্থীদের জয় বাংলা স্লোগান দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ঢাকায় সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জয় বাংলা স্লোগান দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন লেখা অবধি ভিডিওটি দেখা হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার বারেরও বেশি। এছাড়াও ভিডিওটিতে প্রায় ২৩ হাজারেরও বেশি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি ভিডিওটি ৪ হাজারের বেশি শেয়ার করা হয়েছে।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক ঢাকায় সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জয় বাংলা স্লোগানের দৃশ্যের নয় বরং, ২০২০ সালে কুষ্টিয়ায় নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙ্গার প্রতিবাদে ঢাকায় ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিলের দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক যুগান্তরের ফেসবুক পেজে ২০২০ সালের ৫ ডিসেম্বরে প্রচারিত একটি সরাসরি সম্প্রচারিত ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির প্রায় ১০ মিনিট ৩০ সেকেন্ড পরবর্তী সময়ের দৃশ্যের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner

যুগান্তরের ফেসবুক পেজে প্রচারিত ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, উক্ত ভিডিওটি কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙ্গার প্রতিবাদ এবং জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ সংলগ্ন এলাকায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের দৃশ্যের।

এরই সূত্র ধরে বিবিসি বাংলার ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ৫ ডিসেম্বরে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে শেখ মুজিবুর রহমানের একটি নির্মাণাধীন ভাস্কর্যের কিছু অংশ ভেঙ্গে ফেলেছে কে বা কারা। শনিবার (২০২০ সালের ৫ ডিসেম্বর) সকালে ভাস্কর্যটির হাত ও মুখের কিছু অংশ ভাঙ্গা দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে বিষয়টি জানান। 

একই দিনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উক্ত ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার (০৫ ডিসেম্বর ২০২০) সন্ধ্যার পর ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউ ও ধানমণ্ডিতে বিক্ষোভ করেন আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

অর্থাৎ, ভিডিওটি প্রায় চার বছরের বেশি সময়ের পুরোনো। 

সুতরাং, ২০২০ সালে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিলের দৃশ্যকে সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকায় সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জয় বাংলা স্লোগানের দৃশ্যের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশে মার্শাল ল জারি সংক্রান্ত ভুয়া দাবিতে কালের কণ্ঠের নামে অপপ্রচার  

0

সম্প্রতি, জাতীয় দৈনিক ‘কালের কন্ঠ’ এর লোগোযুক্ত ‘মার্শাল ল জারি! ফিরছেন শেখ হাসিনা?সমন্বয় উপদেষ্টারা দেশ ছাড়ছেন কেনো?’ শীর্ষক শিরোনামের একটি প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট সামাজিক মাধ্যমে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়,  ‘মার্শাল ল জারি! ফিরছেন শেখ হাসিনা?সমন্বয় উপদেষ্টারা দেশ ছাড়ছেন কেনো?’ শীর্ষক শিরোনামে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি কালের কন্ঠ বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইন সাইটে কালের কণ্ঠ এর লোগো ব্যবহার করে প্রকাশিত ভুয়া সংবাদের স্ক্রিনশট সত্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিযুক্ত সংবাদের স্ক্রিনশটে থাকা কালের কণ্ঠ এর লোগোর সূত্র ধরে অনুসন্ধানে ব্লগস্পটের বিনামূল্যের একটি ডোমেইন সাইটে ‘ডেইলি নিউজ বিডি আওয়ামী লীগ’ নামক একটি সাইটে ‘মার্শাল ল জারি! ফিরছেন শেখ হাসিনা?সমন্বয় উপদেষ্টারা দেশ ছাড়ছেন কেনো?’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদনটি গত ২৩ জানুয়ারি প্রকাশিত হতে দেখা যায় এবং এটিই আলোচিত দাবিটির সম্ভাব্য উৎস বলে প্রতীয়মান হয়।

উক্ত সাইটটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, সাইটটির লোগো হিসেবে কালের কণ্ঠের লোগো ব্যবহার হলেও এর ইউআরএলে ব্যবহার হয়েছে আওয়ামী লীগের নাম; নাম দেওয়া হয়েছে ডেইলি নিউজ বিডি আওয়ামী লীগ।

Screenshot: Blogspot Site

অর্থাৎ, কথিত এই সংবাদ থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে আলোচিত দাবিটি সমাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

পরবর্তীতে, কথিত সংবাদটি পড়ে দেখা যায়, এতে দাবি করা হয়েছে, “সেনাবাহিনীর কাছে আমেরিকা থেকে একটি গোপন চিঠি পৌঁছানোর পর সেনাপ্রধান দ্রুত এক জরুরি বৈঠক ডাকেন। এর পরেই দেশের সর্বত্র অস্থিরতা এবং সম্ভাব্য মার্শাল ল জারি হওয়া নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে যে, বাংলাদেশে শিগগিরই মার্শাল ল জারি হতে পারে এবং শেখ হাসিনা পুনরায় ক্ষমতায় ফিরবেন।

এদিকে, রাজনৈতিক অস্থিরতার ফলে সরকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বেশ কিছু  সমন্বয়ক এবং উপদেষ্টা দেশের বাইরে চলে গেছেন। সুত্র থেকে জানা যাচ্ছে যে, সার্জিস ইতিমধ্যে দুবাই পালিয়েছেন, আবার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, মাহফুজ, মোয়াজ্জেম এবং আব্দুল আহাদ ব্যাংকক চলে গেছেন। এই পদক্ষেপগুলি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের উপর গভীর প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।”

উক্ত সাইটে দাবিটি প্রকাশে মূলধারার গণমাধ্যম কালের কণ্ঠের লোগো ব্যবহার করা হলেও কালের কণ্ঠ পত্রিকার ওয়েবসাইট এবং প্রিন্ট সংস্করণে সাম্প্রতিক সময়ে উক্ত দাবিতে কোনো সংবাদ প্রকাশের প্রমাণ মেলেনি। ইন্টারনেট আর্কাইভেও এ সংক্রান্ত দাবির কোনো সংবাদ কালের কণ্ঠের ওয়েবসাইটে প্রকাশের তথ্য পাওয়া যায়নি। 

তাছাড়া, আলোচিত ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইন সাইটে কালের কণ্ঠ এর লোগো ব্যবহার করে প্রকাশিত সংবাদে উপদেষ্টারা দেশ ছেড়েছেন এবং সেনাবাহিনীর কাছে আমেরিকা থেকে গোপন চিঠি আসার বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে মূল ধারার গণমাধমে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিকভাবে এমন কিছু হলে তা মূলধারা গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার কথা।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইন সাইটে কালের কণ্ঠের লোগো ব্যবহার করা এই সাইটটি থেকে একাধিকবার ভুয়া তথ্য প্রচার করা হলে সেগুলো নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন (, , , ) প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, মার্শাল ল জারি! ফিরছেন শেখ হাসিনা?সমন্বয় উপদেষ্টারা দেশ ছাড়ছেন কেনো? শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত সংবাদটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s Own Analysis

বাংলাদেশের নয়, ভাইরাল ছবিগুলো ভারতে খুন হওয়া এক নারীর

0

সম্প্রতি ‘৭১ সালে যারা দেখে নাই মা বোনদের ইজ্জত কিভাবে লু’টয়েছে হায়না জ’ঙ্গির দল ২৪ সাল তাদের কে সুযোগ করে দিয়েছে। চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ উপজেলার, ১নং নায়েরগাঁও উত্তর ইউনিয়ন, ৯ নং ওয়ার্ড সাং পাঁচদোনা গ্রামের সন্ত্রাসীরা ধর্ষন পরে হত্যা করে, আদিবার লাশ ফেলে দায় জঙ্গলে।’ শীর্ষক শিরোনামে একজন নারীর ছবি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে৷ 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো বাংলাদেশের কোনো নারীর নয় এবং ঘটনাটিও বাংলাদেশের নয়। প্রকৃতপক্ষে ছবিগুলো নিশা নামের এক ভারতীয় নারীর।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘Road Ki Rani’ নামের একটি ফেসবুক পেজে  গত ২৩ জানুয়ারির একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে সংযুক্ত ছবিগুলোর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলোর মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Photo Comparison by Rumor Scanner

উক্ত পোস্টের শিরোনামে দাবি করা হয়, ভাকরা খাল থেকে নিশা সোনি (২১) নামের এক নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ছবিগুলো এই নারীর লাশের।

Screenshot: Facebook

উক্ত পোস্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় গনমাধ্যম News 18 এর ওয়েবসাইটে  গত ২৩ জানুয়ারি  ‘Himachal Woman’s Body Found In Bhakra Canal Hours After She Went Out With Policeman Friend’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ভারতের পাঞ্জাবের পাতিয়ালার ভাকরা খালে ২২ বছর বয়সী এক নারীর মৃতদেহ পাওয়া গেছে। নিহতের নাম নিশা, হিমাচল প্রদেশের মান্ডি জেলার যোগিন্দরনগরের শেরু গ্রামের বাসিন্দা। নিহতের বন্ধু যুবরাজ (৩৩) এর বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

একই ঘটনায় ভারতের আনন্দ বাজার পত্রিকায় ‘পুলিশ-বন্ধুর সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন, পরের দিন ভাকরা ক্যানাল থেকে উদ্ধার তরুণীর দেহ’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত সপ্তাহে হিমাচল প্রদেশে নিজের বাড়িতে গিয়েছিলেন নিশা। গত সোমবার, ২০ জানুয়ারি ফিরেছিলেন চণ্ডীগড়ে। ওই দিন সন্ধ্যায় নিজের ভাড়া বাড়ি থেকে যুবরাজের সঙ্গে বেরিয়ে গিয়েছিলেন নিশা। বাড়ির সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে বিষয়টি। তার পর থেকেই তাঁর ফোন সুইচড অফ ছিল। অনেক চেষ্টা করেও নিশার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি পরিবার। তার পরেই তারা থানায় এফআইআর করে। ২১ জানুয়ারি, মঙ্গলবার ভাকরা ক্যানেল থেকে নিশার দেহ উদ্ধার হয়। পরের দিন, বুধবার তরুণীর দেহ হাসপাতালে এসে শনাক্ত করে তাঁর পরিবার।

অর্থাৎ, আলোচিত ছবিগুলোর নারীটি বাংলাদেশের নয়।

সুতরাং, ভারতে খুন হওয়া নিশা নামে তরুণীর মৃতদেহের ছবিকে বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলার কথিত আদিবার লাশের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

ঢাবিতে নয়, ‘সমন্বয়ক ভুয়া’ স্লোগান দেওয়া হয়েছে জবিতে 

সম্প্রতি, ‘গণেশ উল্টে গেছে। এই মুহূর্তে ‘সমন্বয়ক ভুয়া’ স্লোগান দিচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওতে সমন্বয়ক ভুয়া স্লোগানটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নয় বরং, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দিয়েছেন। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Kabir Chowdhury Tanmoy নামের একটি ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল সমন্বয়ক অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে T20 ম্যাচ শুরু করেছে।’ শিরোনামে গত ১২ নভেম্বর ২০২৪ সালের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর সাদৃশ্য রয়েছে৷ 

Comparison: Rumor Scanner

এছাড়া, একই দিনে ‘লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগ’ ও ‘Tahidul Islam’ নামের পৃথক দুটি ফেসবুক এ্যাকাউন্ট থেকেও ‘রণক্ষেত্র জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’ শিরোনামে উক্ত ভিডিওটি (,) প্রচার করা হয়। 

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত পোস্টগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে একই দিনে  মূলধারার অনলাইন গণমাধ্যম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস এর ওয়েবসাইটে  গত ১২ নভেম্বর ২০২৪ ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সমন্বয়ককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব সমন্বয়ককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন শিক্ষার্থীরা। ১২ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স রুমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আলোচনা সভা শেষে জনসম্মুখে এসে শিক্ষার্থীরা এই ঘোষণা দেন।

একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছে মূলধারার গণমাধ্যম দেশ রুপান্তর

অর্থাৎ, গত ১২ নভেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসটির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের উদ্দেশ্য করে সমন্বয়ক ভুয়া স্লোগান দিয়েছেন।

সুতরাং, ঢাবির শিক্ষার্থীরা ‘সমন্বয়ক ভুয়া” স্লোগান দিচ্ছে দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব সমন্বয়ককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা পরবর্তী আন্দোলের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সুইজারল্যান্ডে ড. ইউনূস গ্রেফতার হয়েছেন দাবি করে আসিফ নজরুল লাইভে আসেননি

গত ২১ জানুয়ারি সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্মেলনে যোগ দিতে ঢাকা ত্যাগ করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরইমধ্যে ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের বক্তব্যের একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, আসিফ নজরুল লাইভে এসে জানিয়েছেন ড. ইউনূস সুইজারল্যান্ডে গ্রেফতার হয়েছেন।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ড. মুহাম্মদ ইউনূস সুইজারল্যান্ডে গ্রেফতার হননি এবং ড. আসিফ নজরুলও লাইভে এসে এমন কোনো তথ্য জানাননি বরং সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান প্রসঙ্গে আসিফ নজরুলের পুরোনো বক্তব্যের লাইভ ভিডিওর খণ্ডিত অংশ সুইজারল্যান্ডে ড. ইউনূস গ্রেফতার হয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ড. আসিফ নজরুলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে উক্ত দাবিতে তাঁর সাম্প্রতিক লাইভের বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে আসিফ নজরুলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ০২ অক্টোবর ‘মাহমুদূর রহমান প্রসঙ্গে’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner

উক্ত ভিডিও বার্তায় ড. আসিফ নজরুল সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানের জামিনের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে বক্তব্য দেন।

গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে ‘অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্রের’ মামলায় আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে  মাহমুদুর রহমান সেদিন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

অর্থাৎ, আসিফ নজরুলের বক্তব্যের এই লাইভ ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং এর সাথে ড. ইউনূসের সুইজারল্যান্ডে গ্রেফতার হওয়ার দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।

১৯৬১ সালে জাতিসংঘের ভিয়েনা কনভেশন কর্তৃক অনুমোদিত আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, দায়িত্বে থাকা অবস্থায় কোনো দেশের সরকার প্রধান বা গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় পদবী ধারী ব্যক্তিরা ভিনদেশে কূটনৈতিক অনাক্রম্যতা(Diplomatic immunity) পাওয়ার অধিকার রাখেন। উক্ত অধিকার পাওয়া ব্যক্তিকে যে দেশ সফর করছেন সে দেশে অপরাধ করলেও ঐ দেশের আইনে তার বিচার কিংবা আটক করা যাবেনা। যদি ইউমিনিটির অধিকার পাওয়া কোনো ব্যক্তি বড় ধরণের কোনো অপরাধ করে থাকে তাহলে তাকে বিচার কিংবা আটক করার জন্য আগে তিনি যে দেশের নাগরিক সে দেশের সরকারের মাধ্যমে কূটনৈতিক অনাক্রম্যতা’র বিশেষ আইন রদ করাতে হবে।

Screenshot from Vienna Convention on Diplomatic Relations, 1961 PDF
Screenshot from Vienna Convention on Diplomatic Relations, 1961 PDF

অর্থাৎ, উপরোক্ত আইন অনুযায়ী ড. ইউনূস যদি সুইজারল্যান্ডে কোনো অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে থাকতেন তারপরেও ঐ অপরাধের জন্য তার বিচার করা কিংবা বিচারের অংশ হিসেবে তাকে আটক করার কোনো এখতিয়ার সুইজারল্যান্ড সরকারের নেই।

প্রসঙ্গত, গত ২১ জানুয়ারি সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্মেলনে যোগ দিতে ঢাকা ত্যাগ করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। চারদিনের সফরে মুহাম্মদ ইউনূস মোট ৪৭টি ইভেন্টে যোগ দেন। যাত্রা শেষে বাংলাদেশ সময় আজ শনিবার বিকাল ৫ টার কিছু সময় পরঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন।

সুতরাং, ড. ইউনূস সুইজারল্যান্ডে গ্রেফতার হয়েছেন দাবিতে আসিফ নজরুলকে উদ্ধৃত করে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

শিক্ষার্থীদের ভিন্ন আন্দোলনের ভিডিওকে ড. ইউনূসের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ বলে প্রচার

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অন্তত গতকাল (২৪ জানুয়ারি) থেকে একটি বিক্ষোভের ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “গভীর রাতে ইউনূস মহাজনের পদত্যাগ চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উত্তপ্ত।”

উল্লেখ্য যে, কিছু পোস্টে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম ব্যঙ্গ করে ‘সুদি মহাজন’ নামেও আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়।

প্রচারিত ভিডিওটিতে “বাহারুলের চামড়া, তুলে নেবো আমরা”, “বাহারুলের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে” ইত্যাদি স্লোগান শোনা যায়৷

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভের দৃশ্যের নয় বরং, সাত কলেজের পরীক্ষার সূচি পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গত ২৩ জানুয়ারি রাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ উল্লেখ করতে দেখা যায়নি৷ পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে “DC Insiders” নামের একটি ফেসবুক পেজে “অনার্স (২০২১-২২, ২০২২-২৩)ও মাস্টার্সের চূড়ান্ত পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তন করায় ঢাকা কলেজ হল পাড়ায় বিক্ষোপ মিছিল।” শীর্ষক ক্যাপশনে গত ২৩ জানুয়ারিতে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়৷ 

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে সাদৃশ্য পাওয়া যায়। তাছাড়া, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে “DC Insiders” নামক ফেসবুক পেজের জলছাপও পাওয়া যায় যা থেকে বুঝা যায় যে, ডিসি ইনসাইডার্স নামের উক্ত ফেসবুক পেজে প্রচারিত উক্ত ভিডিওটি পরবর্তীতে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এছাড়া, “CUB Insiders – Central University of Bangladesh” নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ২৩ জানুয়ারিতে উক্ত ঘটনার ভিডিওসহ আরেকটি পোস্ট পাওয়া যায়, যার সাথে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য পাওয়া যায়। ভিডিওটি সম্পর্কে ক্যাপশনে বলা হয়, ঢাবির শোষণ ও প্রহসনের বিরুদ্ধে ঢাকা কলেজ এর তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল। এছাড়াও কয়েকটি স্লোগানও ক্যাপশনে সংযুক্ত করা হয়। তবে কোথাও ড. ইউনূসের পদত্যাগের দাবির বিষয়ে কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে অনলাইন সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের ওয়েবসাইটে গত ২৩ জানুয়ারিতে “সাত কলেজের পরীক্ষার সূচি পরিবর্তনের খবরে পুরান ঢাকায় বিক্ষোভ” শীর্ষক শিরোনামে এ বিষয়ে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়৷ 

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের বিভিন্ন বর্ষের চারটি পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুরান ঢাকার সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও সরকারি কবি নজরুল কলেজ এলাকায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাত ১০টার পর এই কর্মসূচিতে ঢাকা কলেজ, কবি নজরুল কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থীকে অংশ নিতে দেখা গেছে। এসময় নানা স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের। 

এর আগে বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. বাহালুল হক চৌধুরীর সই করা বিজ্ঞপ্তিতে নতুন এ সময়সূচি প্রকাশ করা হয়। পরিবর্তিত রুটিন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে গেছে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ১১ ফেব্রুয়ারির পরীক্ষা, সেটি দুই মাস পিছিয়ে ২৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও কম বেশি সকল বর্ষের পরীক্ষা মাস খানেকের মতই পিছিয়ে গেছে। […] এ বিষয়ে সোহরাওয়ার্দী কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সাবরিনা সুলতানা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আজকে [২৩ জানুয়ারি] রাত সাড়ে ন’টায় সাত কলেজের প্রতিটি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। যার একমাত্র দাবি ছিল আগের রুটিন অনুযায়ী পরীক্ষা নেওয়া। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ সময় নিয়ে পরীক্ষা নেওয়া এবং সেশন জটের ভোগার কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। যার ফলশ্রুতিতেই এই প্রতিবাদ মিছিল।”

উল্লেখ্য যে, প্রচারিত ভিডিওটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. বাহালুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধেও স্লোগান শোনা যায়। প্রচারিত ভিডিওটিতে “বাহালুলের চামড়া তুলে নেবো আমরা” স্লোগানটিও বলা হয়। তবে, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে বাহালুলের বদলে মহাজনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া হয়েছে মর্মে দাবি প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, সাত কলেজের পরীক্ষার সূচি পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের দৃশ্যকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র