Home Blog Page 161

ঢাবিতে নয়, ‘সমন্বয়ক ভুয়া’ স্লোগান দেওয়া হয়েছে জবিতে 

সম্প্রতি, ‘গণেশ উল্টে গেছে। এই মুহূর্তে ‘সমন্বয়ক ভুয়া’ স্লোগান দিচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওতে সমন্বয়ক ভুয়া স্লোগানটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নয় বরং, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দিয়েছেন। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Kabir Chowdhury Tanmoy নামের একটি ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল সমন্বয়ক অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে T20 ম্যাচ শুরু করেছে।’ শিরোনামে গত ১২ নভেম্বর ২০২৪ সালের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর সাদৃশ্য রয়েছে৷ 

Comparison: Rumor Scanner

এছাড়া, একই দিনে ‘লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগ’ ও ‘Tahidul Islam’ নামের পৃথক দুটি ফেসবুক এ্যাকাউন্ট থেকেও ‘রণক্ষেত্র জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’ শিরোনামে উক্ত ভিডিওটি (,) প্রচার করা হয়। 

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত পোস্টগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে একই দিনে  মূলধারার অনলাইন গণমাধ্যম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস এর ওয়েবসাইটে  গত ১২ নভেম্বর ২০২৪ ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সমন্বয়ককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব সমন্বয়ককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন শিক্ষার্থীরা। ১২ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স রুমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আলোচনা সভা শেষে জনসম্মুখে এসে শিক্ষার্থীরা এই ঘোষণা দেন।

একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছে মূলধারার গণমাধ্যম দেশ রুপান্তর

অর্থাৎ, গত ১২ নভেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসটির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের উদ্দেশ্য করে সমন্বয়ক ভুয়া স্লোগান দিয়েছেন।

সুতরাং, ঢাবির শিক্ষার্থীরা ‘সমন্বয়ক ভুয়া” স্লোগান দিচ্ছে দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব সমন্বয়ককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা পরবর্তী আন্দোলের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সুইজারল্যান্ডে ড. ইউনূস গ্রেফতার হয়েছেন দাবি করে আসিফ নজরুল লাইভে আসেননি

গত ২১ জানুয়ারি সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্মেলনে যোগ দিতে ঢাকা ত্যাগ করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরইমধ্যে ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের বক্তব্যের একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, আসিফ নজরুল লাইভে এসে জানিয়েছেন ড. ইউনূস সুইজারল্যান্ডে গ্রেফতার হয়েছেন।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ড. মুহাম্মদ ইউনূস সুইজারল্যান্ডে গ্রেফতার হননি এবং ড. আসিফ নজরুলও লাইভে এসে এমন কোনো তথ্য জানাননি বরং সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান প্রসঙ্গে আসিফ নজরুলের পুরোনো বক্তব্যের লাইভ ভিডিওর খণ্ডিত অংশ সুইজারল্যান্ডে ড. ইউনূস গ্রেফতার হয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ড. আসিফ নজরুলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে উক্ত দাবিতে তাঁর সাম্প্রতিক লাইভের বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে আসিফ নজরুলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ০২ অক্টোবর ‘মাহমুদূর রহমান প্রসঙ্গে’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির একটি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner

উক্ত ভিডিও বার্তায় ড. আসিফ নজরুল সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানের জামিনের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে বক্তব্য দেন।

গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে ‘অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্রের’ মামলায় আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে  মাহমুদুর রহমান সেদিন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

অর্থাৎ, আসিফ নজরুলের বক্তব্যের এই লাইভ ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং এর সাথে ড. ইউনূসের সুইজারল্যান্ডে গ্রেফতার হওয়ার দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।

১৯৬১ সালে জাতিসংঘের ভিয়েনা কনভেশন কর্তৃক অনুমোদিত আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, দায়িত্বে থাকা অবস্থায় কোনো দেশের সরকার প্রধান বা গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় পদবী ধারী ব্যক্তিরা ভিনদেশে কূটনৈতিক অনাক্রম্যতা(Diplomatic immunity) পাওয়ার অধিকার রাখেন। উক্ত অধিকার পাওয়া ব্যক্তিকে যে দেশ সফর করছেন সে দেশে অপরাধ করলেও ঐ দেশের আইনে তার বিচার কিংবা আটক করা যাবেনা। যদি ইউমিনিটির অধিকার পাওয়া কোনো ব্যক্তি বড় ধরণের কোনো অপরাধ করে থাকে তাহলে তাকে বিচার কিংবা আটক করার জন্য আগে তিনি যে দেশের নাগরিক সে দেশের সরকারের মাধ্যমে কূটনৈতিক অনাক্রম্যতা’র বিশেষ আইন রদ করাতে হবে।

Screenshot from Vienna Convention on Diplomatic Relations, 1961 PDF
Screenshot from Vienna Convention on Diplomatic Relations, 1961 PDF

অর্থাৎ, উপরোক্ত আইন অনুযায়ী ড. ইউনূস যদি সুইজারল্যান্ডে কোনো অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে থাকতেন তারপরেও ঐ অপরাধের জন্য তার বিচার করা কিংবা বিচারের অংশ হিসেবে তাকে আটক করার কোনো এখতিয়ার সুইজারল্যান্ড সরকারের নেই।

প্রসঙ্গত, গত ২১ জানুয়ারি সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্মেলনে যোগ দিতে ঢাকা ত্যাগ করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। চারদিনের সফরে মুহাম্মদ ইউনূস মোট ৪৭টি ইভেন্টে যোগ দেন। যাত্রা শেষে বাংলাদেশ সময় আজ শনিবার বিকাল ৫ টার কিছু সময় পরঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন।

সুতরাং, ড. ইউনূস সুইজারল্যান্ডে গ্রেফতার হয়েছেন দাবিতে আসিফ নজরুলকে উদ্ধৃত করে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

শিক্ষার্থীদের ভিন্ন আন্দোলনের ভিডিওকে ড. ইউনূসের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ বলে প্রচার

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অন্তত গতকাল (২৪ জানুয়ারি) থেকে একটি বিক্ষোভের ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “গভীর রাতে ইউনূস মহাজনের পদত্যাগ চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উত্তপ্ত।”

উল্লেখ্য যে, কিছু পোস্টে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম ব্যঙ্গ করে ‘সুদি মহাজন’ নামেও আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়।

প্রচারিত ভিডিওটিতে “বাহারুলের চামড়া, তুলে নেবো আমরা”, “বাহারুলের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে” ইত্যাদি স্লোগান শোনা যায়৷

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভের দৃশ্যের নয় বরং, সাত কলেজের পরীক্ষার সূচি পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গত ২৩ জানুয়ারি রাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ উল্লেখ করতে দেখা যায়নি৷ পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে “DC Insiders” নামের একটি ফেসবুক পেজে “অনার্স (২০২১-২২, ২০২২-২৩)ও মাস্টার্সের চূড়ান্ত পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তন করায় ঢাকা কলেজ হল পাড়ায় বিক্ষোপ মিছিল।” শীর্ষক ক্যাপশনে গত ২৩ জানুয়ারিতে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়৷ 

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে সাদৃশ্য পাওয়া যায়। তাছাড়া, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে “DC Insiders” নামক ফেসবুক পেজের জলছাপও পাওয়া যায় যা থেকে বুঝা যায় যে, ডিসি ইনসাইডার্স নামের উক্ত ফেসবুক পেজে প্রচারিত উক্ত ভিডিওটি পরবর্তীতে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এছাড়া, “CUB Insiders – Central University of Bangladesh” নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ২৩ জানুয়ারিতে উক্ত ঘটনার ভিডিওসহ আরেকটি পোস্ট পাওয়া যায়, যার সাথে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য পাওয়া যায়। ভিডিওটি সম্পর্কে ক্যাপশনে বলা হয়, ঢাবির শোষণ ও প্রহসনের বিরুদ্ধে ঢাকা কলেজ এর তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল। এছাড়াও কয়েকটি স্লোগানও ক্যাপশনে সংযুক্ত করা হয়। তবে কোথাও ড. ইউনূসের পদত্যাগের দাবির বিষয়ে কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে অনলাইন সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের ওয়েবসাইটে গত ২৩ জানুয়ারিতে “সাত কলেজের পরীক্ষার সূচি পরিবর্তনের খবরে পুরান ঢাকায় বিক্ষোভ” শীর্ষক শিরোনামে এ বিষয়ে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়৷ 

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের বিভিন্ন বর্ষের চারটি পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুরান ঢাকার সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও সরকারি কবি নজরুল কলেজ এলাকায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাত ১০টার পর এই কর্মসূচিতে ঢাকা কলেজ, কবি নজরুল কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থীকে অংশ নিতে দেখা গেছে। এসময় নানা স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের। 

এর আগে বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. বাহালুল হক চৌধুরীর সই করা বিজ্ঞপ্তিতে নতুন এ সময়সূচি প্রকাশ করা হয়। পরিবর্তিত রুটিন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে গেছে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ১১ ফেব্রুয়ারির পরীক্ষা, সেটি দুই মাস পিছিয়ে ২৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও কম বেশি সকল বর্ষের পরীক্ষা মাস খানেকের মতই পিছিয়ে গেছে। […] এ বিষয়ে সোহরাওয়ার্দী কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সাবরিনা সুলতানা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আজকে [২৩ জানুয়ারি] রাত সাড়ে ন’টায় সাত কলেজের প্রতিটি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। যার একমাত্র দাবি ছিল আগের রুটিন অনুযায়ী পরীক্ষা নেওয়া। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ সময় নিয়ে পরীক্ষা নেওয়া এবং সেশন জটের ভোগার কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। যার ফলশ্রুতিতেই এই প্রতিবাদ মিছিল।”

উল্লেখ্য যে, প্রচারিত ভিডিওটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. বাহালুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধেও স্লোগান শোনা যায়। প্রচারিত ভিডিওটিতে “বাহালুলের চামড়া তুলে নেবো আমরা” স্লোগানটিও বলা হয়। তবে, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে বাহালুলের বদলে মহাজনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া হয়েছে মর্মে দাবি প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, সাত কলেজের পরীক্ষার সূচি পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের দৃশ্যকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলার অভিযোগে নয়, মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় এই যুবককে আটক করা হয়

গত ২৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ফেসবুকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের পদত্যাগের গুজব বিশ্বাস যুবলীগের একদল নেতাকর্মী নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের বানসা বাজারে শোডাউন করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ স্থানীয়দের সহায়তায় যুবলীগের দুই কর্মীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ‘ফেসবুকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের গুজব শুনে নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার বানসা বাজারে শোডাউন করে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা করতে গেলে যুবলীগের দুই নেতাকে পুলিশ আটক করেছে’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ড. ইউনূসের পদত্যাগের গুজব শুনে নোয়াখালীতে শোডাউন করে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা করতে গিয়ে যুবলীগের দুই নেতার পুলিশের হাতে আটক হওয়ার কোনো ঘটনার নয় বরং, মোটরসাইকেল চুরি করতে গিয়ে এক যুবকের আটক হওয়ার একটি ভিডিও উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটির কি-ফ্রেমের রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে নোয়াখালীর চাটখিলের স্থানীয় সাংবাদিক Syful Islam Babor এর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২৪ জানুয়ারি দুপুরের একটি পোস্টে কিছু ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ছবিগুলোতে থাকা বিষয়বস্তু ও পারিপার্শ্বিকতার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে৷ 

পোস্টটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, গত ২৪ জানুয়ারি দুপুরে চাটখিল বড় মসজিদের সামনে হোণ্ডা মোটরসাইকেল চুরির সময় এক ব্যক্তি জনতার হাতে আটক হয়৷ 

উক্ত তথ্যের সূত্রে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ইয়াকুব মোল্লা নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২৪ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়৷ উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল রয়েছে৷ 

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, এটি চাটখিল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে থেকে হোণ্ডা মোটরসাইকেল চুরি করার সময় জনতার হাতে চোরের আটক হওয়ার ঘটনা৷ 

তবে, এই পোস্টগুলোতে আটককৃত যুবকের রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য জানা যায়নি।

সুতরাং, প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের গুজব শুনে শোডাউন ও বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলার অভিযোগে দুই যুবলীগ নেতাকে আটকের দাবিতে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় আটক ব্যক্তির ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইনানকে গ্রেফতারের দাবিটি ভুয়া

0

সম্প্রতি, ‘নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইনানকে কিছুক্ষণ আগে গ্রেফতার করা হয়েছে’ শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়,নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইনানকে গ্রেফতারের শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং, কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম কিংবা বিশ্বস্ত সূত্রে ইনানের বিষয়ে এমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তরফ থেকেও এমন কোনো তথ্য জানানো হয়নি। 

তবে ২১ জানুয়ারী দৈনিক জনকণ্ঠে প্রকাশিত, ‘নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ইনান “র” এর তত্ত্বাবধানে!’ শীর্ষক একটি সংবাদ পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়য়ী, ইনানের অবস্থান এখন ভারতে। তবে এই বিষয়ে অন্য কোনো গণমাধ্যমে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। জনকণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও নির্দিষ্ট কোনো সূত্র বা প্রমাণ দেওয়া হয়নি।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে আড়ালে রয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা। এদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত গ্রেফতার হলেও কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।। 

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৩ অক্টোবর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। 

সুতরাং, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইনানকে গ্রেফতারের দাবিটি ভিত্তিহীন ও ভুয়া। 

তথ্যসূত্র

ড. ইউনূসের নয়, ফিরে না আসা প্রসঙ্গে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি জুলাই আন্দোলনকারী কিশোরের

সম্প্রতি, গত ২১ জানুয়ারি বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সুইজারল্যান্ডে পৌঁছান। সফর শেষে আজ ২৫ জানুয়ারি তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। এই সফরে তিনি বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সভা এবং অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের পার্শ্ব ইভেন্টের সময় কমপক্ষে ৪৭টি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।

এই সফরের মধ্যেই ড. ইউনূস ক্ষমা চেয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও ‍সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটিতে ড. ইউনূস ক্ষমা চাননি বরং, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যাওয়া এক কিশোরের তার মাকে লেখা চিঠির বিষয়ে ড. ইউনূসের ‘কোট’ করা “if I don’t come back please forgive me” শীর্ষক মন্তব্যকে কাট করে তার (ইউনূস) নিজস্ব মন্তব্য দাবিতে বিকৃতভাবে প্রচার করা হয়েছে।

গত ২৩ জানুয়ারি ড. ইউনূস বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ক্লাউস শোয়াবের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের নানা বিষয় ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তরুণদের আন্দোলনে সম্পৃক্ততার কথা বলতে গিয়ে আন্দোলনে যাওয়া এক কিশোর তার মাকে লেখা চিঠির বিষয়ে ‘কোট’ করে বলেন, “ if I don’t come back please forgive me”। তার আলোচনার এই অংশটিই তার নিজস্ব মন্তব্য  দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে করে ভিডিওতে ড. ইউনূসকে বলতে দেখা যায়, “ if I don’t come back please forgive me, my friends are there, they are brave friends, I’m a brave person too” অর্থাৎ, যদি আমি ফিরে না আসি, তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমার বন্ধুরা সেখানে আছে, তারা সাহসী বন্ধু। আমিও একজন সাহসী মানুষ।

ভিডিওটিতে যমুনা টিভির লোগো রয়েছে। এছাড়াও, ভিডিওতে ‘দাভোস সুইজারল্যান্ড…’ লেখা দেখতে পাওয়া যায়।

এই তথ্যের সূত্র ধরে যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৩ জানুয়ারি ‘দাভোসে বিভিন্ন সংস্থার প্রধানসহ ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠকে যা বললেন ড. ইউনূস | Switzerland | Jamuna TV’ শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটিতে দেখা যায়, ড. ইউনূস বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ক্লাউস শোয়াবের সঙ্গে আলোচনা করছেন। এতে তাকে জুলাই বিপ্লব ও নানা বিষয় নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়।

ভিডিওটির প্রথম ২০ সেকেন্ড অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এটি ভিডিওটির ইন্ট্রো। কিন্তু মূল কথা ভিডিওর ১৪ মিনিট ২১ সেকেন্ড থেকে ১৪ মিনিট ৪০ সেকেন্ড অংশে রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটিতে এক পর্যায়ে ছাত্র আন্দোলনে তরুণদের কথা বলতে গিয়ে ড. ইউনূস বলেন, এই তরুণরা একে অপরের সঙ্গে নতুন করে জড়ো হয়েছিল। তাদের কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দর্শন ছিল না। আপনি হয়তো জিজ্ঞেস করবেন, তারা বামপন্থী কি? ইসলামপন্থী কি? সন্ত্রাসী কি? কিন্তু তারা কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণিতে পড়ে না। আপনার কাছে তাদের জন্য কোনো শ্রেণী নেই। দেখুন, সেখানে সবাই ছিল, সকল নাগরিক, সকল তরুণ, বয়স নির্বিশেষে।

আন্দোলনে যাওয়া এক কিশোর তার মাকে লেখা চিঠির কথা বলতে গিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ১২ বছরের এক কিশোর একটি চিঠি লিখেছিল, যা তার মা কান্না করে জনতার সামনে পড়ছিলেন। সে আমাকে (তার মাকে) লিখেছিল, মা, তুমি সবসময় আমাকে রক্ষা করেছ, যাতে আমি প্রতিবাদ মিছিলে না যাই। আমি ঘরে বসে খুব রাগ করছিলাম যে আমি আজ যেতে পারছি না। আজ আমি যাচ্ছি। তোমাকে বিদায় জানাচ্ছি। আমি জানি না আমি ফিরে আসব কি না। যদি না ফিরে আসি, তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমার বন্ধুরা সেখানে আছে, তারা সাহসী বন্ধু। আমিও একজন সাহসী মানুষ।

যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে অনুষ্ঠানটির একটি লাইভ ভিডিওও খুঁজে পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তরুণদের আন্দোলনে সম্পৃক্ততার কথা বলতে গিয়ে আন্দোলনে যাওয়া এক কিশোরের তার মাকে লেখা চিঠির বিষয়ে ‘কোট’ করে বলেন, “ if I don’t come back please forgive me”। তার আলোচনার এই অংশটিই তার নিজস্ব মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, জুলাই আন্দোলনে যাওয়া এক কিশোরের লেখা চিঠির বিষয়ে ড. ইউনূসের  ‘কোট’ করে বলা কথা ড. ইউনূসের নিজস্ব বক্তব্য দাবিতে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ড. ইউনূসের নামে ভুয়া পদত্যাগপত্র প্রচার 

0

সম্প্রতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করেছেন দাবিতে একটি পদত্যাগপত্রের ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।।

ইন্টারনেটে প্রচারিত কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যমুনা টিভি’র এক সাংবাদিকের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (এখানে), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত চিঠি ব্যতীত পদত্যাগের দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।  

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগপত্র দাবিতে ভাইরাল চিঠিটি আসল নয় বরং বেশ কিছু অসঙ্গতি থাকা এই পদত্যাগপত্রটি ভুয়া। তাছাড়া, তিনি যমুনা টিভি’র কোনো সাংবাদিকের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠাননি বলে গণমাধ্যমটি রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছে।

ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে গত বছরের (২০২৪) ০৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর প্রেক্ষিতে সে বছরের সেপ্টেম্বরে শেখ হাসিনার পদত্যাগের চিঠি দাবিতে একটি ভুয়া পদত্যাগপত্রের ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়। সে সময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন দাবিতেও একটি ভুয়া চিঠির ছবি ছড়িয়ে পড়ে। উক্ত চিঠির ছবিটির সাথে সম্প্রতি প্রচারিত আলোচিত চিঠির সীল ও তারিখ ব্যতিত বাকি সবকিছুর সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner

কথিত এই চিঠিতে তারিখ বদলে ২২ জানুয়ারি ২০২৫ লেখা হয়েছে। অথচ ড. ইউনূসকে এই তারিখ পরবর্তী সময়ে সরকারি সফরে সুইজারল্যান্ডে অবস্থান করতে দেখা গেছে। গণমাধ্যমেও এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। অন্যদিকে, এই চিঠির উল্লিখিত তারিখ পরবর্তী সময়ে ড. ইউনূসের পদত্যাগের বিষয়ে গণমাধ্যম এবং নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, সাম্প্রতিক সময়ে প্রচারিত আলোচিত পদত্যাগপত্রটি পর্যবেক্ষণ করে এতে বেশ কিছু অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয়। প্রথমত, ওপেন সোর্সে থাকা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের একাধিক প্যাড পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানে তারিখের ঘরে বাংলা মাসের তারিখ ওপরে এবং ইংরেজি মাসের তারিখ নিচে থাকে। তবে আলোচিত এই পদত্যাগের চিঠিতে ইংরেজি ও বাংলা তারিখ পাশাপাশি রয়েছে। তাছাড়া ইংরেজি তারিখ শুরুতে রয়েছে।

Comparison by Rumor Scanner

দ্বিতীয়ত, আলোচিত চিঠিতে ব্যবহৃত ফন্ট এবং প্রধান উপদেষ্টার প্যাডে ব্যবহৃত ফন্টের মধ্যে পার্থক্য দেখা যায়।

Image: Facebook Claim Post

এছাড়াও, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত একাধিক পোস্টে যমুনা টিভি’র এক সাংবাদিকের কাছে ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন শীর্ষক দাবির প্রেক্ষিতে রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমটির সাথে যোগাযোগ করা হলে প্রধান বার্তা সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম জানান, “যমুনা টেলিভিশনের সংবাদ নিজেদের চ্যানেলের স্ক্রিন, ভেরিফাইড ফেসবুক, ইউটিউব এবং ওয়েবসাইটে প্রচার হয়।গুজব রটনাকারীরা মনগড়া কথা বলেছে। যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিকের যে কথা বলেছে, তা হয়ত মিথ্যাটাকে সত্য বলে প্রমাণের চেষ্টা হিসেবে। গুজবে কান না দিয়ে সবাই সচেতন থাকলে, অপপ্রচারকারীরা হালে পানি পাবে না।”

অর্থাৎ, ড. মুহাম্মদ ইউনূস যমুনা টিভি’র কোনো সাংবাদিকের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেননি।

সুতরাং, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ করেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত এই চিঠিটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশে ইজতেমায় সংঘর্ষকে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার দাবিতে অপপ্রচার

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি সংঘর্ষের দৃশ্য প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “বাংলাদেশে হিন্দুদের প্রাণ এখন বিপদে আছে” (ভাষান্তরিত)।

উক্ত দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি এককভাবে ৩ লক্ষেরও অধিক বার দেখা হয়েছে এবং ৪ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটিতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি হিন্দুদের সাথে সংঘর্ষের বা হিন্দুদের ওপর কোনো অত্যাচারের ভিডিও নয়। প্রকৃতপক্ষে ভিডিওটিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বরং, বিশ্ব ইজতেমায় তাবলীগ-জামাতের দুই পক্ষের সংঘাতের দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্ট পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে কোনো বিস্তারিত তথ্য বা নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে মূলধারার সংবাদমাধ্যম কালের কণ্ঠের ইউটিউব চ্যানেলে “ইজতেমা শুরুর আগেই দু’পক্ষের উ ত্তেজ না, তাবলীগের দুই সাথী হাসপাতালে ভর্তি” শীর্ষক শিরোনামে ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বরে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়৷ 

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটির শুরুর দিককার দৃশ্যের সাথে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে সাদৃশ্য পাওয়া যায়। ইউটিউবে প্রচারিত উক্ত ভিডিওটির থাম্বনেলে বলা হয়, “সা’দ পন্থীদের গাড়িতে হামলা | জোবায়ের পন্থীদের সড়ক অবরোধ”।

এরই প্রেক্ষিতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে গত ১৩ ডিসেম্বরে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো’তে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইজতেমা মাঠে পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা পালন করেন জুবায়েরের অনুসারীরা। এরপর ২০ ডিসেম্বর থেকে ৫ দিনের জোড় পালনের ঘোষণা দেন সাদের অনুসারীরা। কিন্তু জুবায়েরের অনুসারীরা সাদের অনুসারীদের ইজতেমা মাঠে জোড় ইজতেমা করতে দেবেন না বলে ঘোষণা দেন। এর মধ্যে গতকাল (১২ ডিসেম্বর) সাদের অনুসারীদের ইজতেমা মাঠে প্রবেশের খবর ছড়িয়ে পড়লে বেলা একটার দিকে স্টেশন রোড এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন জুবায়েরের অনুসারীরা। এ সময় সাদের অনুসারীদের একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সাদের অনুসারী দুই মুসল্লি আহত হন।”

এছাড়াও, তাবলীগ-জামাতের এই দুই পক্ষের সংঘাতের বিষয়ে আরো একাধিক গণমাধ্যম সূত্রেও জানা যায়। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত সংঘাত বা গাড়িতে হামলার সাথে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই৷ 

সুতরাং, বিশ্ব ইজতেমায় তাবলীগ-জামাতের দুই পক্ষের সংঘাতের দৃশ্যকে হিন্দুদের সাথে সংঘর্ষের বা হিন্দুদের ওপর হামলার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে স্পিকার বাজিয়ে দুই দেশের নাগরিকদের প্রতিযোগিতা দাবিতে ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার

গত ১৮ জানুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জের চৌকা ও কিরণগঞ্জ সীমান্তে আমগাছের ডাল কাটা নিয়ে ভারতীয় ও বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিক আহত হওয়ার তথ্যও পাওয়া যায়। উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি সীমান্তে দুই দেশের জনগণ উচ্চস্বরে মাইক এবং সাউন্ডবক্স বাজিয়ে প্রতিযোগিতা করেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে মাইক ও সাউন্ডবক্স বাজিয়ে প্রতিযোগিতা করার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের দুটি ইটভাটায় স্বত্বাধিকারীদের আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, Robiul Funny নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৭ জানুয়ারি প্রচারিত একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির শিরোনামে উল্লেখ করা হয়, এটি মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ার মধ্যবর্তী একটি প্রতিযোগিতার দৃশ্য।

Video Comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে উক্ত ইউটিউব চ্যানেলটি পর্যালোচনার মাধ্যমে এতে একই ঘটনার বেশ কয়েকটি শর্টস ভিডিওর সন্ধান পাওয়া যায়। যার মধ্যে একটির শিরোনামে ‘পিকনিক VS পিকনিক’ শব্দিটি উল্লেখ করা হয়। অপর আরেকটি ভিডিওতে ‘পিকনিক 2025 সাল’ উল্লেখ করা হয়েছে।  ‘পিকনিক 2025 সাল’ শীর্ষক ভিডিওটি পর্যালোচনা করে সাউন্ড সিস্টেমের একটি বক্সে ‘সুপার সাউন্ড’ লেখা দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও এটিতে ‘নাটনা, পূর্বপাড়া এবং নদীয়া’ নামগুলো দেখা যায়। পাশাপাশি ‘9775105686’ শীর্ষক একটি মোবাইল নাম্বার দেখতে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youtube 

পরবর্তীতে সুপার সাউন্ড তথ্যটির সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Sahin Sekh নামের একটি ভারতীয় ফেসবুক আইডিতে ২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর প্রচারিত একটি পোস্টের সন্ধান পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

পোস্টটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এটি সুপার সাউন্ড নামের সাউন্ড সিস্টেম প্রোভাইডারের একটি বিজ্ঞাপনধর্মী পোস্ট। এতে ব্যবহৃত ছবিগুলো পর্যালোচনা করে একই তথ্য সম্বলিত সাউন্ড সিস্টেম বক্সও দেখতে পাওয়া।

পরবর্তীতে পোস্টটিতে ব্যবহৃত ভারতীয় মোবাইল নাম্বারে হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করলে উক্ত নাম্বার ব্যবহারকারী রিউমর স্ক্যানারকে জানান তার নাম শাহীন শেখ। তিনি ‘সুপার সাউন্ড’- এ সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেন। আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ভিডিওটি পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের গোবিন্দপুরের মুক্তারপুর এলাকার। মূলত, পাশাপাশি অবস্থিত দুটি ইটভাটার স্বত্বাধীকারী পিকনিকের আয়োজন করেন। পিকনিককে কেন্দ্র করেই তারা সাউন্ডবক্স এবং মাইকের এমন আয়োজন করেছিলেন।

এছাড়াও, চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে হওয়া সংঘর্ষের ঘটনার পরবর্তী সময়ে আলোচিত দাবিটির মত কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা জানতে ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম ডিবিসি টেলিভিশনের চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি জহুরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, দাবিটি সম্পূর্ণ ভুয়া। চাঁপাইনবাবগঞ্জে সম্প্রতি এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। 

সুতরাং, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের গোবিন্দপুরের ‍দুই ইটভাটার স্বত্বাধিকারীদের আয়োজিত পিকনিকের দৃশ্যকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাংলাদেশ ও ভারতীয় নাগরিকদের উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে প্রতিযোগিতা করার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

  • Robiul Funny Youtube Channel Video  
  • Robiul Funny Youtube Channel Video  
  • Sahin Sekh Facebook Post
  • Statement of Sahin Sekh, Owner, Super Sound
  • Statement of Zohurul Islam, Chapainawabganj Correspondent, DBC Television
  • Rumor Scanner’s Analysis

২০২২ সালে ট্রেনে আগুন লাগার পুরোনো ভিডিও সাম্প্রতিক দাবিতে অপপ্রচার

0

সম্প্রতি, ট্রেনে আগুন লেগেছে বলে একটি দাবি ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে। একটি ভিডিও যুক্ত করে ‘ট্রেনে আগুন- আহা দেশের অবস্থা! দেশের দায়িত্ব কার হাতে তুলে দিলেন?’ শিরোনামে দাবিটি প্রচারিত হয়েছে। এছাড়াও একই ভিডিওটি ‘ময়মনসিংহে ট্রেনে ভয়াবহ আগুন’ দাবিতেও প্রচারিত হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন দাবির কিছু পোস্ট এখানে (আর্কাইভ), এখানে, (আর্কাইভ),এখানে (আর্কাইভ), এখানে, (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ট্রেনে আগুন লাগার প্রচারিত দাবিটি সঠিক নয়। মূলত, ২০২২ সালে পারাবত এক্সপ্রেসে আগুন লাগার একটি ভিডিও সাম্প্রতিক ট্রেনে আগুন লাগার ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে ট্রেনে আগুন লাগার প্রচারিত ভিডিওটি UNB- United News of Bangladesh এর ইউটিউব চ্যানেলে খুঁজে পাওয়া যায়। ‘মৌলভীবাজার শমসেরনগরে চলন্ত আন্তঃনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনের বগিতে ভয়াবহ আগুন’ শিরোনামে ২০২২ সালের ১১ জুন ভিডিওটি সেখানে প্রকাশ করা হয়েছিল। 

Comparison: Rumor Scanner.

পরবর্তীতে, উক্ত ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এ দুর্ঘটনা নিয়ে ২০২২ সালের ১১ জুন প্রকাশিত ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “মৌলভীবাজারের শমসেরনগর বিমানবন্দর এলাকায় সিলেটগামী আন্তঃনগর পারাবত ট্রেনের বগিতে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা ঘটে এতে সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

শনিবার (১১ জুন ২০২২)  দুপুর ১টার দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনের বগিতে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রনে এগিয়ে আসলেও হঠাৎ আগুন ছড়িয়ে পড়ে আরো ২টি বগিতে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট আধা ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আনে।

সিলেট রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল সোয়া ৬টায় সিলেট থেকে কালনী এক্সপ্রেস ছয় শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। বেলা সোয়া ১১টায় জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। বিকেল পৌনে চারটায় আরেকটি আন্তনগর ট্রেন পারাবত এক্সপ্রেস সিলেট থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পারবত এক্সপ্রেসের ট্রেনটি মৌলভীবাজারের শমসের নগর এলাকায় আসার পর বগিতে আগুন ধরে যায়।”

সুতরাং, ২০২২ সালে মৌলভীবাজারে পারাবত এক্সপ্রেসে আগুন লাগার পুরোনো ভিডিও সাম্প্রতিক ট্রেনে আগুন এর ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র