Home Blog Page 130

মিশ্র পরিবারের মেয়ের হেনস্তার পুরোনো ভিডিও সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “আপনার মেয়েদের শয়তানদের হাত থেকে রক্ষা করুন। এই ভিডিওটি বাংলাদেশের, যেখানে এক হিন্দু মেয়েকে প্রকাশ্যে দিনের আলোয় এক মাওলানা দ্বারা নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। যখন সমাজ জাতপাতের বিভক্তিতে বিভাজিত হয় এবং কেউ সংখ্যালঘু হয়ে পড়ে, তখন এমন ঘটনাই ঘটে।” (অনূদিত)

প্রচারিত ভিডিওটিতে দেখা যায়, মাদ্রাসা ছাত্র সদৃশ একজন ব্যক্তি একটি স্কুলছাত্রীকে জোর করে হেনস্তা করে। অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের এবং হেনস্তার শিকার হওয়া মেয়েটি সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের।

উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং গত ২০২৪ সালের মার্চের এবং হেনস্তার শিকার হওয়া মেয়েটি হিন্দু পরিবারের নয় বরং হিন্দু-মুসলিম ধর্মাবলম্বী মিশ্র পরিবারের।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য বিস্তারিত তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে মূলধারার গণমাধ্যম এটিএন নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে “প্রকাশ্যে স্কুলছাত্রীকে জোর করে হাফেজের চুমু, অতঃপর যা ঘটলো” শিরোনামে ২০২৪ সালের ১৮ মার্চে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত প্রতিবেদনটিতে প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্য প্রদর্শিত হয় এবং ভিডিওটি সম্পর্কে বলা হয়, দিনাজপুরে এক স্কুলছাত্রীকে জোর করে চুমু দিয়েছে এক হাফেজ। ঐ কান্ডের পর তার পালিয়ে যাবার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল ছড়িয়ে পড়ে। এর তিন ঘন্টার মধ্যে অভিযুক্ত হাফেজ সাখাওয়াত হোসেনকে আটক করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। তাছাড়া, উক্ত প্রতিবেদনটিতে প্রচারিত ভিডিওটির প্রদর্শিত দৃশ্য পর্যবেক্ষণ করলে সিসি ক্যামেরায় তারিখ হিসেবে ১৭ মার্চ ২০২৪, রোববার দেখা যায়।

এরই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে মূলধারার সংবাদমাধ্যম যুগান্তরে ২০২৪ সালের ১৮ মার্চে ‘স্কুলছাত্রীকে প্রকাশ্যে চুমু, যুবক গ্রেফতার’ শীর্ষক শিরোনামে এ বিষয়ে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, “দিনাজপুরে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে প্রকাশ্যে চুমু খেয়ে শ্লীলতাহানি ও আহত করার ঘটনায় সাখাওয়াত হোসেন নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।… পুলিশ জানায়, দিনাজপুর শহরের একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী কালিতলায় চাচাতো বোনের বাসার উদ্দেশে রওনা হয়। এ সময় সাখাওয়াত হোসেন তার পিছু নেয়। ছাত্রীটি তার বোনের বাসার গেটের কাছে পৌঁছলে সাখাওয়াত হোসেন অতর্কিত তার মুখে জোরপূর্বক চুমু দিয়ে শ্লীলতাহানি ঘটায়। এ সময় স্কুলছাত্রী চিৎকার করার চেষ্টা করলে তার দুই গালে নখের আঁচড় দেয় সাখাওয়াত। এতে স্কুলছাত্রীর মুখে ও গালে বেশ জখম হয়। এরপর দ্রুত এলাকা থেকে পালিয়ে যায় সাখাওয়াত হোসেন।… সোমবার [১৮ মার্চ ২০২৪] আসামি সাখাওয়াত হোসেনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।’

Screenshot: Facebook

এ বিষয়ে সে সময় মেয়েটির এক আত্মীয়ের সাথে কথা বলে রিউমর স্ক্যানার জানতে পারে, মেয়েটা হিন্দু ধর্মাবলম্বী। রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, মেয়েটি এক মিশ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছেন, তার কিছু আত্মীয় মুসলিম। ওই সময় তার কিছু মুসলিম আত্মীয় ঘটনাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও পোস্ট করেছিলেন।

সুতরাং, প্রায় ১ বছর আগে মিশ্র পরিবারের মেয়ের হেনস্তার ভিডিও সম্প্রতি প্রচার করে হিন্দু পরিবারের মেয়ে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ভারতের ২০১৭ সালের ধর্ষণের ঘটনা বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি দেশে ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে এমন অভিযোগে সমালোচনা চলছে সর্বত্র। এরই প্রেক্ষিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে যাতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি রাস্তার ফুটপাতে প্রকাশ্যে এক নারীকে ধর্ষণ করছেন। দাবি করা হচ্ছে, এটি রাজধানী ঢাকার দৃশ্য।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত দাবিতে এক্সের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত দাবিতে ইউটিউবের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত দাবিতে ইন্সটাগ্রামের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাস্তার ফুটপাতে প্রকাশ্যে নারীকে ধর্ষণের এই ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় বরং ভারতে ২০১৭ সালে মাতাল এক ব্যক্তি কর্তৃক উক্ত নারীকে ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইউটিউবে Logical Soch নামের একটি চ্যানেলে ২০১৭ সালের ২৬ অক্টোবর প্রকাশিত একই ঘটনার ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিও থেকে জানা যায়, সে সময় ভারতের বিশাখাপত্তম (ভিজাগ) শহরে রেলওয়ে স্টেশনের কাছে রাস্তায় প্রকাশ্যে একজন মাতাল ব্যক্তি এক নারীকে ধর্ষণ করার ভিডিও এটি। একজন অটো ড্রাইভার এই ভিডিওটি ধারণ করেন। ভিডিওতে দাবি করা হয়, ধর্ষণের শিকার ওই নারী মানসিক প্রতিবন্ধী একজন ভিক্ষুক। 

Comparison: Rumor Scanner 

বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঘটনাটি ২০১৭ সালের ২২ অক্টোবর ঘটে। ভারতের মূল ধারার গণমাধ্যমগুলোতেও সে সময় ঘটনাটি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এনডিটিভি জানায়, এই ঘটনায় ধর্ষককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

অর্থাৎ, ঘটনাটি যে বাংলাদেশের নয় তা নিশ্চিত। 

সুতরাং, ভারতে ফুটপাতে প্রকাশ্যে ২০১৭ সালের ধর্ষণের ঘটনার ভিডিওকে বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।  

তথ্যসূত্র 

পারিবারিক কলহের জেরে শিশু মৃত্যুর ঘটনা রাজনৈতিক হত্যার দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি, দুটি শিশুর মরদেহের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ছড়িয়ে পড়েছে। এসব ছবি ব্যবহার করে দাবি করা হচ্ছে যে, যশোরে এক ব্যক্তি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা তার দুই শিশুসন্তানকে হত্যা করেছেন।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা গেছে, যশোরে এক ব্যক্তি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে তার দুই শিশু সন্তানকে হত্যার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে পারিবারিক কলহের জেরে এই দুই শিশুর মৃত্যু হয়। এই ঘটনার ছবি ব্যবহার করেই আলোচিত দাবিটি ছড়ানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘তথ্য ভান্ডার’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত ২৯ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি পোস্টে একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। পোস্টের তথ্য অনুযায়ী, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলায় এক মা তার দুই সন্তানকে বিষ খাওয়ানোর পর নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

Comparison: Rumor Scanner. 

অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা মেইলের ওয়েবসাইটে গত ২৯ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবিকৃত একটি ছবি সংযুক্ত থাকতে দেখা যায়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামে পারিবারিক কলহের জেরে রত্না খাতুন (৩০) তাঁর দুই শিশুসন্তান মাহির (৫) ও আরিয়ান (৯ মাস)-কে বিষ খাওয়ান এবং নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় দুই শিশুর মৃত্যু হলেও সংকটাপন্ন অবস্থায় ওই নারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনায় জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত আরেক প্রতিবেদন থেকে নিহত শিশুদের চাচা আরিফুল ইসলামের বরাতে জানা যায়, ঘটনার সময় রত্না বেগম সন্তানদের নিয়ে ঘরে ছিলেন। হঠাৎ কীটনাশকের গন্ধ পেয়ে স্বজনেরা দরজা খুলতে বলেন, কিন্তু ভেতর থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে তিনজনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক দুই শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন। আরিফুল ইসলামের ভাষ্য, স্বামী-স্ত্রীর মনোমালিন্যের জেরে রত্না সন্তানদের বিষ খাইয়ে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে প্রতিবেশী ফজর আলী প্রথম আলোকে জানান, রত্না বেগম স্বামী মাহমুদুল হাসানের পরকীয়ার সন্দেহ করতেন, যার ফলে দাম্পত্য কলহ চলছিল। তাদের ধারণা, এ মনোমালিন্যের জেরেই রত্না সন্তানদের নিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

সুতরাং, যশোরে এক ব্যক্তি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করায় তার দুই শিশুসন্তানকে সমন্বয়করা হত্যা করেছে দাবিতে প্রচারিত বিষয়টি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

রাজধানীতে সাম্প্রতিক ছিনতাইয়ের দৃশ্য দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার 

0

সম্প্রতি, রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। এমনই ছিনতাইয়ের ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

ভিডিওর সাথে কোনো সময় উল্লেখ না করায় স্বাভাবিকভাবেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা ধরে নিচ্ছেন ভিডিওর ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন- এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানীতে ছিনতাইয়ের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। বরং, ভিডিওটি ২০২১ সালে মোহাম্মদপুরে সংঘটিত একটি পুরোনো ছিনতাইয়ের ঘটনার।  

অনুসন্ধানে মূল ধারার গণমাধ্যম যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর “মোহাম্মদপুরে ফিল্মি স্টাইলে ছিনতাই, সিসিটিভিতে মিললো সেই দৃশ্য!” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওর ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ভিডিওটি ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ছিনতাইয়ের দৃশ্য। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে ছিনতাইয়ের কোনো ঘটনার নয়। 

সুতরাং, ২০২১ সালে ছিনতাইয়ের ঘটনার দৃশ্যকে সাম্প্রতিক সময়ের দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

সাম্প্রতিক নয়, ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে রিকশাচালকের রুখে দাঁড়ানোর ঘটনাটি ২০২১ সালের 

0

সম্প্রতি, “ঢাকার কমলাপুরে রেলওয়ে ফুটওভার ব্রিজের সামনে আজ দুপুরে চলন্ত রিকশায় থাকা এক নারীর গলার চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে রিকশাচালক তৎক্ষণাৎ তাকে ধরে ফেলেন। পাশেই ছিল ছিনতাইকারীর আরও দুই সহযোগী। বিপদের আঁচ পেয়ে তাদের একজন রিকশাচাককে ব্লে’ড দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করেন। তবে এতেও সাহস হারাননি সেই রিকশাচালক। রাস্তার পাশে পড়ে থাকা ইট তুলে নিয়ে তাদের একজনকে সজোরে আঘাত করেন। অপ্রত্যাশিত প্রতিরোধের মুখে পড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছিনতা’ইকারীদের ধরে পিটুনি দিয়ে ছেড়ে দেয় উপস্থিত লোকজন।
ছবি: এমরান হোসেন
ছিন’তাইকারীদের বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ায় তাদের চেহারা অস্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।’ শীর্ষক তথ্যসহ একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।”

উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কমলাপুরে ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে রিকশাচালকের রুখে দাঁড়ানোর ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং, এটি ২০২১ সালে ১৩ অক্টোবরের ঘটনা।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ২০২১ সালের ১৩ অক্টোবর মূলধারার গণমাধ্যম ডেইলি স্টারের ফেসবুক পেজে হুবহু একই ছবি এবং ক্যাপশনে একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison By Rumor Scanner

পরবর্তীতে ‘ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে যেভাবে রুখে দাঁড়ালেন রিকশাচালক’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায় ছবিটি দ্য ডেইলি স্টারের ফটোসাংবাদিক এমরান হোসেনের তোলা। সেসময় তিনি জানিয়েছেন, দুপুর সোয়া ১২টার (১৩ অক্টোবর, ২০২১) দিকে এক নারী টিটিপাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে রিকশায় খিলগাঁওয়ের দিকে যাচ্ছিলেন। কমলাপুর রেলওয়ে ফুটওভার ব্রিজের কাছে পৌঁছাতেই ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন তিনি। রাস্তা থেকে একজন তার গলার সোনার চেইনটি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তবে ছিনতাইকারীর হাত ফসকে যায়। রিকশাচালক ঘটনার আকস্মিকতা সামলে উঠে ছিনতাইকারীকে ধাওয়া করে ধরে ফেলেন।

অর্থাৎ, কমলাপুরে ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে রিকশাচালকের রুখে দাঁড়ানোর ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

সুতরাং, ২০২১ সালে ১৩ অক্টোবরে কমলাপুরে ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে রিকশাচালকের রুখে দাঁড়ানোর ঘটনাটিকে সাম্প্রতিক ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র 

রাজধানীতে ছিনতাইকারীর কবলে সাংবাদিক দাবিতে বার্তা২৪ এর নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি, “স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সংবাদ সম্মেলনে যাওয়ার পথে ছিনতাইকারীর কবলে সাংবাদিক জসিম” শীর্ষক শিরোনামে মূলধারার গণমাধ্যম বার্তা২৪ এর ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ),  এখানে  (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সংবাদ সম্মেলনে যাওয়ার পথে ছিনতাইকারীর কবলে সাংবাদিক জসিম” শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে বার্তা২৪ কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে বার্তা২৪ এর একটি ফটোকার্ড নকল করে এই ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে বার্তা২৪ এর লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে।

বার্তা২৪ এর লোগো ও ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখের সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবিসম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, বার্তা২৪ এর ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে,  আলোচিত ফটোকার্ডের বিষয়ে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বার্তা২৪ এর ফেসবুক পেজে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে আলোচিত ফটোকার্ডটি বার্তা২৪  প্রকাশ করেনি বলে নিশ্চিত করা হয়।

Screenshot: Facebook

অর্থাৎ,  ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় বার্তা২৪ এর ফটোকার্ডের ডিজাইন নকল করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

পাশাপাশি, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সংবাদ সম্মেলনে যাওয়ার পথে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন সাংবাদিক জসিম শীর্ষক দাবিতে বার্তা২৪ এর নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশে শান্তিসেনা মোতায়েনের ভুয়া তথ্য ভারতের গণমাধ্যমে

0

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যম আজতক বাংলা কর্তৃক প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, “ঠিক হল শান্তি সেনা ঢুকছে বাংলাদেশে”।

উক্ত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানো হোক চেয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এবার বাংলাদেশ নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসংঘ/জাতিসংঘ এবং জল্পনা রয়েছে বাংলাদেশে এখন আর শান্তি সেনা ঢুকতে আর কোনো বাঁধা রইলো না। বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর প্রবেশ এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা। এছাড়াও উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনে জাতিসংঘ কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে কী কী তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে সে বিষয়েও বলা হয়।

উক্ত দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন আজতক বাংলা (ইউটিউব)।

আজতক বাংলা কর্তৃক প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদনটি পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করেও দাবি করা হয়, “ঠিক হল শান্তি সেনা ঢুকছে বাংলাদেশে, রিপোর্ট মোদিকে দিল জাতিসংঘ”।

ফেসবুকে প্রচারিত এরূপ পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অতিশীঘ্রই বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে কোনোরকম নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত আজতক বাংলার প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, এতে মূলত সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় কর্তৃক প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের বিষয়ে বলা হয়েছে, যেখানে গত জুলাই-আগস্টের বিষয়ে বিস্তর বর্ণনা রয়েছে। এছাড়াও দাবি করা হয়, জাতিসংঘের উক্ত প্রতিবেদনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়েও উল্লেখ রয়েছে এবং এসবেরই প্রেক্ষিতে দাবি করা হয়েছে, অতিশীঘ্রই বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী ঢুকতে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে গত ১২ ফেব্রুয়ারিতে “OHCHR Fact-Finding Report: Human Rights Violations and Abuses related to the Protests of July and August 2024 in Bangladesh” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমন্ত্রণে, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (OHCHR) ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত দেশব্যাপী চলমান বিক্ষোভ ও তার পরবর্তী সময়ে সংঘটিত অভিযোগকৃত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়নের বিষয়ে একটি স্বাধীন তদন্ত পরিচালনা করে।  

সংগৃহীত সমস্ত তথ্যের পুঙ্খানুপুঙ্খ ও স্বাধীন মূল্যায়নের ভিত্তিতে, ওএইচসিএইচআর মনে করে যে সাবেক সরকার এবং এর নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কিত সহিংস গোষ্ঠীগুলোর সহায়তায়, পরিকল্পিতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে লিপ্ত ছিল। এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, শত শত বিচারবহির্ভূত হত্যা, সহিংস বলপ্রয়োগের কারণে হাজারো বিক্ষোভকারীর গুরুতর আহত হওয়া, ব্যাপক মাত্রায় নির্বিচার গ্রেপ্তার ও আটককরণ, নির্যাতন এবং অন্যান্য অমানবিক আচরণ। ওএইচসিএইচআর –

এর মতে, এই নিপীড়নমূলক কার্যক্রম রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের জ্ঞাতসারে, সমন্বয়ের মাধ্যমে ও প্রত্যক্ষ নির্দেশে সংঘটিত হয়েছে, যার লক্ষ্য ছিল বিক্ষোভ ও ভিন্নমত দমন করা।  

এই গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের দৃষ্টিকোণ থেকেও উদ্বেগের বিষয়। তাই, অতিরিক্ত অপরাধ তদন্ত প্রয়োজন, যাতে নির্ধারণ করা যায়—এই ঘটনাগুলো মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, স্বতন্ত্র আন্তর্জাতিক অপরাধ হিসেবে নির্যাতন, এবং দেশীয় আইনের আওতায় গুরুতর অপরাধের অন্তর্ভুক্ত কিনা।”

প্রতিবেদনটিতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশে অতি শীঘ্রই মোতায়েন করা হবে জানিয়ে কোনো তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি, প্রতিবেদনটি বিশ্লেষণ করেও জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর সম্ভাবনারও কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য যে, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে উক্ত প্রতিবেদনটির একটি প্রেস রিলিজ বাংলা ভাষায়ও প্রকাশ করা হয়েছে এবং আলোচিত দাবিটি প্রচারের পর প্রচারিত উক্ত প্রতিবেদনটির প্রায় দেড় মিনিট পরবর্তী সময়ে মূলত উক্ত প্রেস রিলিজটির তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। তবে, প্রেস রিলিজটিতেও জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশে পাঠানোর বিষয়ে কোনো উল্লেখ বা ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলেও অতি শীঘ্রই বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর বিষয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

কোনো একটি দেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর প্রক্রিয়া সম্পর্কে অনুসন্ধান করলে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বিষয়ক ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে ‘Deploying Peacekeepers’ নামের একটি নিবন্ধ পাওয়া যায়৷ উক্ত নিবন্ধটি থেকে জানা যায়, কোনো একটি দেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়নে নানা ধাপ পেরোতে হয় জাতিসংঘের। যেমন: ১. প্রাথমিক পরামর্শ: যখন কোনো সংঘাত শুরু হয়, তীব্রতর হয় বা সমাধানের পথে এগোয়, তখন জাতিসংঘ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করে। এতে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, সম্ভাব্য হোস্ট দেশ, সদস্য রাষ্ট্র, আঞ্চলিক সংস্থা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অংশীদাররা জড়িত থাকে৷ এই পর্যায়ে, জাতিসংঘ মহাসচিব একটি কৌশলগত মূল্যায়ন চালানোর নির্দেশ দিতে পারেন।  

২. প্রযুক্তিগত মূল্যায়ন মিশন: নিরাপত্তা পরিস্থিতি অনুকূল হলে, জাতিসংঘ একটি প্রযুক্তিগত মূল্যায়ন দল পাঠায়। এই দল সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের নিরাপত্তা, রাজনৈতিক, সামরিক, মানবিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে। এর সুপারিশের ভিত্তিতে মহাসচিব নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রতিবেদন পেশ করেন, যেখানে সম্ভাব্য শান্তিরক্ষা মিশনের কাঠামো ও আনুমানিক খরচ উল্লেখ থাকে।  

৩. নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত: নিরাপত্তা পরিষদ যদি মনে করে যে শান্তিরক্ষা মিশন সবচেয়ে কার্যকর পদক্ষেপ, তবে এটি একটি আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব (রেজ্যুলেশন) গ্রহণ করে। এতে মিশনের দায়িত্ব, আকার এবং লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। বাজেট এবং সম্পদের অনুমোদন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের উপর নির্ভর করে।  

৪. উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়োগ: মহাসচিব সাধারণত মিশনের প্রধান নিয়োগ করেন, যিনি তার বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করেন। এছাড়াও, বাহিনী কমান্ডার, পুলিশ কমিশনার এবং অন্যান্য বেসামরিক কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়।  

৫. পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি: শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি সমন্বিত কর্মদল গঠন করা হয়, যেখানে জাতিসংঘের বিভিন্ন বিভাগ ও সংস্থাগুলো অংশগ্রহণ করে। এতে রাজনৈতিক, সামরিক, কার্যক্রম এবং লজিস্টিক পরিকল্পনার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।  

৬. মোতায়েন: মিশনের সদর দপ্তর স্থাপনের জন্য প্রথমে একটি অগ্রবর্তী দল পাঠানো হয়। পর্যায়ক্রমে মিশনের সমস্ত উপাদান ও অঞ্চলসমূহে বাহিনী মোতায়েন করা হয়।  জাতিসংঘের নিজস্ব সেনাবাহিনী নেই, তাই সদস্য রাষ্ট্রগুলো থেকে সৈন্য ও পুলিশ সরবরাহ করতে হয়।  

৭. নিরাপত্তা পরিষদে প্রতিবেদন ও পর্যালোচনা: মহাসচিব নিয়মিতভাবে নিরাপত্তা পরিষদে মিশনের কার্যক্রম সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রদান করেন। নিরাপত্তা পরিষদ মিশনের কার্যকারিতা পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন বা সম্প্রসারণ করে, যতক্ষণ না মিশন শেষ হয় বা বন্ধ হয়ে যায়।

এছাড়া, এ বিষয়ে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষার ওয়েবসাইটের আরেকটি নিবন্ধ থেকে জানা যায়, জাতিসংঘের সেনা মোতায়েন করতে যথেষ্ট সময় লাগে, এবং জাতিসংঘের কোনো স্থায়ী রিজার্ভ বাহিনী নেই। জাতিসংঘ কেবল তখনই সামরিক বাহিনী মোতায়েন করতে পারে, যখন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এ বিষয়ে রেজ্যুলেশন অনুমোদন করে। নিরাপত্তা পরিষদ নির্ধারণ করবে কতজন সামরিক সদস্য প্রয়োজন, এবং জাতিসংঘ সদর দফতর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে এই সদস্যদের চিহ্নিত করে মোতায়েন করবে। এতে সময় লাগে, প্রায়শই প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার তারিখ থেকে সেনা ও সরঞ্জাম স্থলে পৌঁছাতে ছয় মাসের বেশি সময় লেগে যায়।

বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ কোনো রেজ্যুলেশন অনুমোদন করেছে কি না এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ওয়েবসাইটে প্রদত্ত সাম্প্রতিক সময়ে গৃহীত রেজ্যুলেশনগুলো পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার। কিন্তু বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে কোনো অনুমোদিত রেজ্যুলেশন পাওয়া যায়নি। শান্তিরক্ষী বাহিনীর বিষয়ে সর্বশেষ গত ৩১ জানুয়ারিতে রেজ্যুলেশন অনুমোদিত হতে দেখা যায়, যেখানে সাইপ্রাসে থাকা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের সময় দীর্ঘায়িত করার বিষয়টি অনুমোদিত হয়।

তাছাড়া, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত প্রতিবেদনটিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে বলে জাতিসংঘের প্রতিবেদন জানিয়েছে এমনটা বোঝালেও প্রকৃতপক্ষে জাতিসংঘের উক্ত প্রতিবেদনটিতে কেবল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নয় বরং ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের সব ঘটনারই উল্লেখ ছিল।

সুতরাং, অতিশীঘ্রই বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ছাত্রদলকে নিষিদ্ধ করতে চেয়ে মন্তব্য করেননি হাসনাত আবদুল্লাহ 

0

সম্প্রতি ‘’হাসনাতের শপথ “ছাত্রদলকে” নিষিদ্ধ করেই ছাড়বো’’ শিরোনামে একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “ছাত্রদলকে নিষিদ্ধ করেই ছাড়বো” শীর্ষক কোনো মন্তব্য হাসনাত আবদুল্লাহ করেননি বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে আলোচিত দাবির পক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এছাড়া, হাসনাত আবদুল্লাহর ফেসবুক অ্যাকাউন্টেও এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সাধারণত হাসনাত আবদুল্লাহর জাতীয় ও রাজনৈতিক ইস্যুতে করা মন্তব্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়।  

আলোচিত ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহর যে ছবি ব্যবহার করা হয়েছে তার বিষয়ে অনুসন্ধানে গত ১২ ফেব্রুয়ারি অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা মেইলের ওয়েবসাইটে “আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেই ছাড়ব: হাসনাত” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসনাত অভিযোগ করেন যে আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সময় ধরে মানুষের অধিকার লঙ্ঘন করছে এবং অপরাধের বৈধতা তৈরি করেছে। এবং এরই প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিও তোলেন তিনি। তবে ছাত্রদলকে নিষিদ্ধ দাবি উল্লেখ করে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।

উল্লেখ্য, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সম্প্রতি সংঘর্ষের ঘটনার পর ‘কুয়েটের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই কর্মসূচি থেকে ছাত্রদলকে জালিম (অত্যাচারী) না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘গত ১৬ বছরে নির্যাতনের কথা ভুলে যাবেন না। চাপাতির রাজনীতি ক্যাম্পাসে আবার রিইনস্টল (পুনরায় প্রতিষ্ঠা) করতে চাইলে ছাত্রলীগ গেছে যে পথে, আপনারা যাবেন সে পথে।’

সুতরাং, “হাসনাতের শপথ “ছাত্রদলকে” নিষিদ্ধ করেই ছাড়বো” শীর্ষক দাবিটি ভুয়া।

তথ্যসূত্র

জামায়াতের আমিরের ছেলে রাফাত গ্রেপ্তার দাবিতে প্রচারিত সংবাদটি ২০২২ সালের

0

সম্প্রতি, জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের ছেলে রাফাত সাদিক সাইফুল্লাহ গ্রেপ্তার দাবিতে এটিএন নিউজের একটি ভিডিও প্রতিবেদন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের ছেলে রাফাত গ্রেপ্তার দাবিতে এটিএন নিউজেরর ভিডিও প্রতিবেদনটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং, ২০২২ সালে তার গ্রেপ্তার হওয়ার সংবাদ প্রতিবেদনের ভিডিও সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে এটিএন নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর ‘জামায়াতে ইসলামীর আমিরের ছেলে রাফাত গ্রেফতার | Bangladesh Jamaat-e-Islami | ATN News’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

সে সময়ের গণমাধ্যম সংবাদ সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ৯ নভেম্বর সিলেট থেকে রাফাত সাদিক সাইফুল্লাহকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) একটি টিম।

অর্থাৎ, এটি সাম্প্রতিক সময়ের কোনো ঘটনা নয়।

রাফাত পরবর্তীতে মুক্তি পেয়েছেন কিনা তা জানতে কিওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য মেলেনি। 

তবে এডভোকেট আবদুল মান্নান বিপ্লব নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০২৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বরের একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। এই পোস্ট থেকে জানা যায়, রাফাত মুক্তি পেয়েছেন। 

Screenshot: Facebook

এছাড়া, চলতি বছরের গত ৬ জানুয়ারি আবদুর রহিম রনি নামের আরেকটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে রাফাতের ছবি যুক্ত করে উক্ত ব্যক্তি তার সাথে রাফাতের আত্মীয়ের বন্ধন তৈরি হয়েছে বলে জানান। 

Screenshot: Facebook

সুতরাং, ২০২২ সালের নভেম্বরে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের ছেলে রাফাতকে গ্রেপ্তারের ভিডিও প্রতিবেদনকে সাম্প্রতিক ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে সেনাবাহিনীর ওপর স্যাংশনের গুজব প্রচার 

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে সেনাবাহিনীর ওপর স্যাংশন দিয়েছে জাতিসংঘ।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে সেনাবাহিনীর ওপর কোনো স্যাংশন দেয়নি জাতিসংঘ বরং, কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই জাতিসংঘের নামে ভুয়া দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করে এবং পরবর্তীতে এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ওপর স্যাংশন জাতিসংঘ দিয়ে থাকলে তা গণমাধ্যমে আসতো, তবে গণমাধ্যমেও এ বিষয়ে কোনো সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, অনুসন্ধানে ব্লগস্পটের বিনামূল্যের একটি ডোমেইন সাইটে “ডেইলি নিউজ বিডি আওয়ামী লীগ” নামক একটি সাইটে গত ১৩ জানুয়ারি “বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা চিঠি প্রকাশ – একটি জরুরি পরিস্থিতি*” শীর্ষক একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদনটি মিথ্যা, অনুসন্ধানের মাধ্যমে খণ্ডণ করে পূর্বেই ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

এছাড়া, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ভয়েস অফ আমেরিকার বাংলা সংস্করণের ওয়েবসাইটে গত ১৩ ফেব্রুয়ারী প্রকাশিত ‘রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে এবং র‍্যাব বিলুপ্তির পক্ষে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার সুপারিশ।’ শীর্ষক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) গত বছর জুলাই-আগস্টে ঘটা হত্যাকান্ডের উপর তাদের তথ্য-অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জবাবদিহিতা ও বিচার, পুলিশ ও নিরাপত্তাসহ কয়েকটি সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্রে সুপারিশ তুলে ধরেছে। কিন্তু মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে সেনাবাহিনীর উপর স্যাংশন দেওয়ার পক্ষে কোনো সুপারিশ জাতিসংঘের পক্ষ থেকে করা হয়নি।

সুতরাং, মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে সেনাবাহিনীর ওপর স্যাংশন দেওয়া সংক্রান্ত প্রচারিত দাবি মিথ্যা এবং বানোয়াট।

তথ্যসূত্র