১৬ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ে যেতে না পারার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়, ভারতের

সম্প্রতি, ‘১৬ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীরা কোচিংয়ে যেতে পারবে না’ শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

কোচিংয়ে

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৬ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ে যেতে না পারার উক্ত ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং এটি ভারতের। কোচিং সেন্টারগুলোর জন্য জারিকৃত নতুন নির্দেশনা স্বরূপ এ সিদ্ধান্ত নেয় ভারতের শিক্ষা মন্ত্রণালয়। 

অনুসন্ধানের শুরুতে ফেসবুকে প্রকাশিত পোস্টগুলোর সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দেশীয় একাধিক গণমাধ্যমে (ডিবিসি নিউজ, দেশ রুপান্তর, ডেইলি বাংলাদেশ, শিক্ষাবার্তা, দ্য বাংলাদেশ মোমেন্টস, জুম বাংলা নিউজ) এবিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot : DBC News 

প্রচারিত প্রতিবেদনগুলো পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, সংবাদগুলোর শিরোনামে ঘটনাটির স্থান উল্লেখ করা না হলেও প্রতিবেদনগুলোর বিস্তারিত অংশে এটি ভারতের শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্দেশিত ঘটনা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

তাছাড়া একাধিক গণমাধ্যম তাদের ফেসবুক পেজে (,, ) ঘটনাটি’র বিস্তারিত উল্লেখ না করে শুধুমাত্র শিরোনাম এবং ফটোকার্ড পোস্ট করার ফলে ঘটনাটি ভারতের হলেও স্থানের নাম উল্লেখ না করে বাংলাদেশে প্রচার করায় বিষয়টি বাংলাদেশের ভেবে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে এবং বাংলাদেশের নেটিজেনরা বিষয়টি সঠিকভাবে না জেনেই ঘটনাটি বাংলাদেশের মনে করেছেন। 

Screenshot : DBC News 

উক্ত পোস্টগুলোর কমেন্টবক্স বিশ্লেষণ করে নেটিজেনদের ঘটনাটি বাংলাদেশের ভেবে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করতে দেখা যায়।

Screenshot Collage : Rumor Scanner 

পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি’র ওয়েবসাইটে গত ১৮ জানুয়ারি ‘Coaching Centres Cannot Enrol Students Below 16 Years: Government’শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ঘোষিত নতুন নির্দেশিকা অনুসারে কোচিং সেন্টারগুলো ১৬ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের নথিভুক্ত করতে পারবে না। কোচিং সেন্টারগুলোর অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্যই এই সিদ্ধান্ত। 

অর্থাৎ, ১৬ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ে যেতে না পারার উক্ত ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়। তবে এ সম্পর্কিত খবরের শিরোনামে স্থানের নাম না উল্লেখ করে বাংলাদেশে প্রচার করায় ঘটনাটি বাংলাদেশের ভেবে নেটিজেনরা বিভ্রান্ত হয়েছেন।

পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে ১৬ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীরা কোচিংয়ে যেতে পারবে না বিষয়ক কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মূলত, সম্প্রতি ভারতের শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক কোচিং সেন্টারগুলোর অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি কমানোর উদ্দেশ্য ১৬ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের কোচিং সেন্টারগুলো নথিভুক্ত করতে পারবে না শীর্ষক নির্দেশিকা প্রদান করা হয়। নির্দেশিকায় বলা হয়, শুধুমাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালায়ের পরীক্ষায় সফলভাবে পাশ করার পরই কোচিংয়ে ভর্তি হতে পারবে শিক্ষার্থীরা। উক্ত বিষয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের বরাতে বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনামে ঘটনাটির স্থানের নাম উল্লেখ না করে প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা বিষয়টি বাংলাদেশের ঘটনা মনে করে ফেসবুকে প্রচার করেন।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ভারতের একাধিক ঘটনা বাংলাদেশের দাবিতে প্রচারিত হলে তা নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে  এবং এখানে

সুতরাং, ১৬ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ে ভর্তি হতে না পারার ভারতের ঘটনাকে বাংলাদেশে স্থানের নাম উল্লেখ না করে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img