সম্প্রতি রাশিয়ায় ৮.৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এরপরেই সুনামির সৃষ্টি হয়। এরই প্রেক্ষিতে, রাশিয়ার সুনামির আঘাত হানার দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সম্প্রতি রাশিয়ায় সুনামির আঘাতের দৃশ্য নয় বরং, প্রচারিত ভিডিওটি ২০১৭ সালের জুন মাস গ্রিনল্যান্ডে সুনামির আঘাতের দৃশ্যের।
অনুসন্ধানে ‘Newsflare’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ১০ মে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে।
উক্ত ভিডিওর ডেসক্রিপশন থেকে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ২০১৭ সালের জুন মাসে গ্রিনল্যান্ডের পশ্চিম উপকূলে সুনামির আঘাত হানার দৃশ্য।
একই তথ্যে উক্তি ভিডিওটি ‘Licet Studios’ নামক আরেকটি ইউটিউব চ্যানেল থেকেও ২০২১ সালের ০৯ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়।
এরপর প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি এর ওয়েবসাইটে ২০১৭ সালের ১৮ জুন “Four missing after tsunami strikes Greenland coast” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৭ জুন গ্রিনল্যান্ডের পশ্চিম উপকূলে সুনামির আঘাতে চারজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। এছাড়া, জলের তীব্রতা নুগাতসিয়াক গ্রামের ১১টি বাড়ি ভেসে গেছে বলেও জানা গেছে।
সুতরাং, ২০১৭ সালের জুন মাসে গ্রিনল্যান্ডের পশ্চিম উপকূলে সুনামির আঘাতের দৃশ্যকে সম্প্রতি রাশিয়ায় সুনামির আঘাত হানার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি সাদা পাঞ্জাবি ও পাগড়ি পরিহিত এক ব্যক্তির মঞ্চে বসে বক্তব্য দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে তাকে বলতে শোনা যায়, “জামায়াতে ইসলামী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মানুষ হত্যা করেছিল, মা-বোনদের ধর্ষণের পর হত্যা করেছে। জামায়াতকে ভোট দেবে না আলেম সমাজ।” কিছু পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, ওই ব্যক্তি জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারীর ভাই।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি কোনো ইসলামি বক্তার আসল বক্তব্যের দৃশ্যের নয়। বরং, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি একটি ভুয়া ভিডিও।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওতে থাকা ব্যক্তির পরিচয় যাচাইয়ের চেষ্টা করা হয়। তবে তাকে কোনো পরিচিত ইসলামি বক্তা হিসেবে শনাক্ত করা যায়নি। তিনি কোথায় এবং কবে বক্তব্য দিয়েছেন, সে সম্পর্কেও নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
জাগোনিউজ২৪-এর একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মিজানুর রহমান আজহারীর একজন ভাই রয়েছেন। তবে ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি তার ভাই কিনা, সে বিষয়ে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে তথ্য পাওয়া যায়নি।
বরং ভিডিওটির বিভিন্ন ফ্রেম বিশ্লেষণে, মুখমণ্ডলের বিকৃতি, চোখ ও ঠোঁটের অস্বাভাবিক গঠন, আলো ছায়ার ভারসাম্যহীনতা, চুল ও ব্যাকগ্রাউন্ডে অতিরিক্ত মসৃণতার মতো এআই দিয়ে তৈরি ভিডিওর একাধিক সাধারণ লক্ষণ এই ভিডিওতে লক্ষ্য করা যায়।
এছাড়া, ভিডিওটির দৈর্ঘ্য ৮ সেকেন্ড, যা গুগলের এআই ভিডিও জেনারেশন টুল ‘Veo’-এর সঙ্গে মিলে যায়। এই টুল দিয়ে ৮ সেকেন্ডের বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করা সম্ভব এবং সম্প্রতি এর মাধ্যমে ভুয়া ভিডিও ছড়ানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
পরবর্তীতে, ভিডিওটি গুগলের জেনারেটিভ এআই টুল ‘Veo’ দিয়ে তৈরি কিনা তা যাচাই করতে গুগলের ‘SynthID’ টুল ব্যবহার করা হয়। SynthID হলো গুগলের একটি প্রযুক্তি, যা এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও, ছবি বা অডিওতে অদৃশ্য ‘জলছাপ’ বা বিশেষ চিহ্ন সংযোজন করে। এই চিহ্ন খালি চোখে দেখা যায় না, তবে গুগলের বিশেষ টুল দিয়ে শনাক্ত করা যায় যে কনটেন্টটি এআই দিয়ে তৈরি। বুম বাংলাদেশের সহায়তায় রিউমর স্ক্যানার টিম এই টুল ব্যবহার করে ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে। যাচাইয়ে দেখা যায়, ভিডিওটির অডিও ও ভিজ্যুয়াল উভয় অংশে SynthID সংকেত রয়েছে, যা নিশ্চিত করে ভিডিওটি গুগলের জেনারেটিভ এআই দিয়ে তৈরি।
Screenshot: SynthID
সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে একজন ইসলামি বক্তা ‘আলেম সমাজ জামায়াতকে ভোট দেবে না’ শীর্ষক বক্তব্য দিয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা।
সম্প্রতি, “৫ তারিখ না আসলে বুঝতাম না!” Hashtags: #বাংলাদেশবাস্তবতা #রাজনীতি #জনগণেরকথা #রিয়েলটক #BanglaVoice #StreetSpeech #PoliticalIrony #ViralBanglaScene” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ৫ আগস্ট (২০২৪) পরবর্তী দেশের রাজনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে এক ব্যক্তির বক্তব্যের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত এই ভিডিওটি আসল নয়; বরং এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি একটি ভুয়া ভিডিও।
ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কোনো বিশ্বস্ত গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে কথা বলা ব্যক্তির পেছনে থাকা লোকজনকে নড়াচড়া কিংবা চোখের পলক ফেলতে দেখা যায়নি এবং উক্ত ব্যক্তির মুখ নড়লেও চোখের অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয় যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি কনটেন্টে দেখা যায়।
এছাড়া, প্রচারিত ভিডিওটির নিচের ডান কোণে ‘Veo’ নামের একটি জলছাপ রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘Veo’ হলো গুগলের একটি অত্যাধুনিক এআই টুল, যা টেক্সট প্রম্পট থেকে ৮ সেকেন্ডের বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে পারে। এই টুল দিয়ে তৈরি ভিডিওতে সাধারণত ‘Veo’ জলছাপ থাকে। এই ভিডিওটিতেও ‘Veo’ জলছাপ রয়েছে এবং এর দৈর্ঘ্য ৮ সেকেন্ড।
Screenshot from Claimed Video
বিষয়টি আরও নিশ্চিতের জন্য এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম হাইভ মডারেশনে ভিডিওটি পরীক্ষা করলে দেখা যায়, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৯৯ শতাংশ।
Screenshot: Hive Moderation
সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে ৫ আগস্ট (২০২৪) পরবর্তী দেশের রাজনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে এক ব্যক্তির বক্তব্য প্রদানের দৃশ্য দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা।
সম্প্রতি, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৎ ও দুর্নীতিমুক্ত প্রধানমন্ত্রীদের কথিত এক তালিকায় ১৭৩ জন প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সৎ ও দুর্নীতিমুক্ত প্রধানমন্ত্রীদের কথিত এক তালিকায় ১৭৩ জন প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে শেখ হাসিনার তৃতীয় অবস্থানে থাকার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০১৭ সালে অনলাইন নিউজ পোর্টাল Bangla Insider-এ ‘পিপলস অ্যান্ড পলিটিক্স’ নামের এক ভিত্তিহীন প্রতিষ্ঠানের বরাতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের পর থেকে আলোচিত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়ে আসছে।
মূলত, ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর ‘শেখ হাসিনা বিশ্বের ৩য় সৎ সরকার প্রধান’ শীর্ষক শিরোনামে বাংলা ইনসাইডার নামক একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটিতে ‘পিপলস অ্যান্ড পলিটিক্স’ নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বরাতে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে সৎ পাঁচজন সরকার প্রধানের তালিকায় বাংলাদেশের ততকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃতীয় স্থানে আছেন। প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়, পিপলস অ্যান্ড পরিটিক্স ১৭৩ টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করে এই তথ্য পেয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘পিপলস অ্যান্ড পলিটিক্স’ নামে কোনো গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব নেই। একটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন প্রতিষ্ঠানের সূত্রে বাংলা ইনসাইডার প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তথ্যটি প্রচার হয়ে আসছে।
উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিটি ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় তথ্যটিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।
রাশিয়ার পূর্ব উপকূলীয় এলাকায় ৮ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। স্থানীয় সময় আজ (৩০ জুলাই) সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে এ ভূকম্পন অনুভূত হয় বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস)। এরই প্রেক্ষিতে গণমাধ্যমে একটি ভিডিও ফুটেজ প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওটি রাশিয়ায় হওয়া ভূমিকম্পের দৃশ্য। ফুটেজটিতে দেখা যায় ভূমিকম্পে একটি দোকানের শেলফ বা তাক ভেঙে পড়ছে।
এছাড়া, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত নেটিজেনের ইনস্টাগ্রাম পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
এছাড়াও, ভারতীয় গণমাধ্যমেও আলোচিত দাবিতে ভিডিওটি প্রচার হতে দেখা যায়। দেখুন: এনডিটিভি।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি আজ (৩০ জুলাই) রাশিয়ার পূর্ব উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানা ভূমিকম্পের দৃশ্যের নয় বরং, গত ২৮ মার্চে মায়ানমারে আঘাত হানা ভূমিকম্পের দৃশ্য আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
অনুসন্ধান আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘ডেইলি মেইল’ এর এক্স অ্যাকাউন্টে গত ০১ এপ্রিলে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে মিল পাওয়া যায়। ভিডিওটির সম্পর্কে এক্স পোস্টটিতে বলা হয়, “ভূমিকম্পে মিয়ানমারের দোকানে তাক ভেঙে পড়লো।” (অনূদিত)
এছাড়াও, ‘নেক্সটা’ নামক একটি পূর্ব ইউরোপীয়ান গণমাধ্যমের এক্স অ্যাকাউন্টেও আলোচিত ভিডিওটি গত ৩০ মার্চে প্রচার হতে দেখা যায়। পোস্টটিতে বলা হয়, “এই মেয়েটি তার কর্মস্থলে ভূমিকম্প থেকে বেঁচে ফিরেছে। মিয়ানমারে ভূমিকম্পের তীব্রতা রিখটার স্কেলে ৭.৭ পৌঁছেছে। এই দুর্ঘটনার পর হতাহতের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মৃতের সংখ্যা হাজার হাজার হতে পারে – উদ্ধার অভিযান এখনও চলছে।” (অনূদিত)
অনুসন্ধানে আলবেনিয়ান ভিত্তিক গণমাধ্যম ‘টেলিগ্রাফি’র ওয়েবসাইটেও আলোচিত দৃশ্য মায়ানমারের ভূমিকম্পের দাবিতে পাওয়া যায়।
উপরোল্লিখিত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজের ওয়েবসাইটে “Myanmar earthquake: What we know” শীর্ষক শিরোনামে গত ২৮ মার্চে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “শুক্রবার, ২৮ মার্চ তারিখে আঘাত হানা বিশাল ভূমিকম্পে মিয়ানমার বিপর্যস্ত। ৭.৭ মাত্রার এই কম্পন থাইল্যান্ড এবং দক্ষিণ-পশ্চিম চীন সহ অন্যান্য স্থানেও অনুভূত হয়েছিল।… ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (USGS) জানিয়েছে যে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল সাগাইং শহরের ১৬ কিলোমিটার (১০ মাইল) উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত ছিল। এটি মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়েরও কাছাকাছি, যার জনসংখ্যা প্রায় ১.৫ মিলিয়ন – এবং রাজধানী নেপিডো থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার (১২৫ মাইল) উত্তরে।” (অনূদিত)
এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের বা রাশিয়ার নয়। প্রকৃতপক্ষে ভিডিওটি গত ২৮ মার্চে মায়ানমারে আঘাত হানা ভূমিকম্পের দৃশ্য।
সুতরাং, গত ২৮ মার্চে মায়ানমারে আঘাত হানা ভূমিকম্পের দৃশ্যকে আজ (৩০ জুলাই) রাশিয়ার পূর্ব উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানা ভূমিকম্পের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
সম্প্রতি, একজন রিকশাওয়ালা দেশের পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন এমন একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।
ভিডিওটিতে বুম মাইক্রোফোন হাতে একজন নারী রিপোর্টারের মাইক্রোফোনে একজন রিকশাওয়ালাকে বলতে দেখা যায়, “১৭ বছর মনে করেছিলাম আওয়ামী লীগ খারাপ। কিন্তু এই এক বছরে যা দেখলাম, তাতে বুঝি গেলাম আসলে আওয়ামী লীগই ভালো ছিল। আমরাই ভুল করছিলাম আওয়ামী লীগকে তাড়াই দিয়ে”
উক্ত ভিডিওকে আসল মনে অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারীকে প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা গেছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রিকশাওয়ালা কর্তৃক আওয়ামী লীগের প্রশংসামূলক এই ভিডিওটি আসল নয়। বরং, প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া এই ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
এই বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত এই ভিডিও রিপোর্টের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
রিউমর স্ক্যানার টিমের বিশ্লেষণে ভিডিওর রিকশাওয়ালার ভয়েস ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা বাস্তব কোনো ঘটনার নয় বলেই প্রতীয়মান হয়। এগুলো সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি ভিডিওর ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়।
পাশাপশি ভিডিওটির নিচের ডান কোণে ‘Veo’ নামের একটি জলছাপ রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘Veo’ গুগলের একটি উন্নত এআই টুল, যা টেক্সট প্রম্পট থেকে ৮ সেকেন্ডের বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম। এই ভিডিওটির দৈর্ঘ্যও ৮ সেকেন্ড।
Indicated by Rumor Scanner
পরবর্তীতে, বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতে ভিডিওটি এআই (AI) কন্টেন্ট ডিটেকশন টুল ‘Cantilux’ দিয়ে যাচাই করলে তা এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৮৯ শতাংশ পর্যন্ত বলে জানা যায়।
গত ০৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুতের পর ভারতে আশ্রয়ে নেওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে সেদেশের সংসদে একাধিক বক্তা কথা বলেছেন দাবিতে শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে কয়েকটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। যার একটিতে একজন নারী বক্তাকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সরিয়ে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় বসানোর বিষয়ে মন্তব্য করতে শোনা যায়। অপরটিকে একজন পুরুষ বক্তাকে শেখ হাসিনাকে নিজের দেশে প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে পুনরায় রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসানোর জন্যে নরেন্দ্র মোদীর কাছে অনুরোধ করতে শোনা যায়।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভারতীয় সংসদে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বক্তব্য প্রদান করা হয়েছে দাবিতে ভিডিওগুলো আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া এই ভিডিওগুলো তৈরি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওগুলো পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম ভিডিওগুলোতে JPT NEWS লেখা একটি লোগো দেখতে পায়।
ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওর প্রথম ৭ সেকেন্ডের ফুটেজের সাথে আলোচিত ভিডিওর মহিলা বক্তার ফুটেজের হুবহু মিল রয়েছে। এই ভিডিওটি স্পষ্ট হওয়ায় উক্ত বক্তার হাতে কিছু মুহুর্তে অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়। যা থেকে ভিডিওটি এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি হতে পারে বলে ধারণা করা যায়।
পরবর্তীতে ভিডিওটি এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল ক্যান্টিলাক্সে বিশ্লেষণ করা হলে, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৬৮ শতাংশ বলে ফলাফল আসে।
ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওগুলোতে দেখতে পাওয়া পুরুষ বক্তার বক্তব্যের সাথে উক্ত ভিডিওর মিল রয়েছে। এছাড়াও লক্ষ্য করা যায়, উক্ত ভিডিওকে ইউটিউব Altered বা Synthetic Content বলে চিহ্নিত করেছে। যা সাধারণত এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি কনটেন্টের ক্ষেত্রে দেখা যায়।
তাই এ বিষয়ে আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্যে পরবর্তীতে ভিডিওটি এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল ক্যান্টিলাক্সে বিশ্লেষণ করা হলে, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৫৮ শতাংশ বলে ফলাফল আসে।
এছাড়াও কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে ভারতীয় সংসদে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সরিয়ে শেখ হাসিনাকে পুনরায় বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসানোর বিষয়ে আলোচনা হওয়ার সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি ভিডিওকে ভারতীয় সংসদে শেখ হাসিনাকে পুনরায় বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসানোর বিষয়ে একাধিক বক্তার বক্তব্য প্রদানের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
সম্প্রতি, শায়েস্তাগঞ্জে পানির ট্যাংকের ভেতরে দুইজনের মরদেহ পাওয়া গিয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। পোস্টগুলোতে দাবি নিহত ব্যক্তিদের হত্যা করে তাদের লাশ সেখানে ফেলে রাখা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওর লাশ উদ্ধারের ঘটনার সাথে হত্যাকাণ্ডের সম্পর্ক নেই। প্রকৃতপক্ষে, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে নির্মাণাধীন ভবনের সেপটিক ট্যাংকের বিষাক্ত গ্যাসে নিহত দুই ব্যক্তির লাশ উদ্ধারের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে গত ১৩ জুলাই Channel 24 এর ইউটিউব চ্যানেলে হবিগঞ্জে সেপটিক ট্যাংকের বিষক্রিয়ায় ২ শ্রমিকের মৃ-ত্যু শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
Video Comparison by Rumor Scanner
প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এর ১০ সেকেন্ড থেকে দেখানো লাশ উদ্ধারের ফুটেজের সাথে আলোচিত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জের সাবাসপুর গ্রামে নির্মাণাধীন ভবনের সেপটিক ট্যাংকে নেমে বিষক্রিয়ায় ওই দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। নিহত ব্যক্তিরা ওই নির্মাণাধীন ভবনের শ্রমিক ছিলেন। নির্মাণ কাজের সময় তারা সেপটিক ট্যাংকে নামলে বিষাক্ত গ্যাসে অচেতন হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় আরেক মূলধারার গণমাধ্যম এনটিভিতে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়।
সুতরাং, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে সেপটিক ট্যাংকের বিষক্রিয়ায় নিহত ব্যক্তিদের লাশ উদ্ধারের ভিডিওকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।
‘দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার ডঃ জোবায়দা’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি প্রায় ১২ লক্ষ বার দেখা হয়েছে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, দুদকের দায়ের করা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে গ্রেফতার করা হয়নি বরং, গত ২৮ মে দুদকের মামলায় সাজা থেকে জোবাইদা রহমানকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। প্রকৃতপক্ষে, তিনটি ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ভিডিওর খণ্ডিত অংশ জোড়া লাগিয়ে জোবাইদা রহমানকে গ্রেফতারের বানোয়াট দাবির ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
ফুটেজ যাচাই- ১
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওর প্রথম ফুটেজটিতে থাকা বেসরকারি ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম চ্যানেল২৪ এর লোগোর সূত্র ধরে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যমটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ১৩ এপ্রিল ‘জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে মামলা চলবে: আপিল বিভাগ | BNP | Zubaida Rahman | Tareq Rahman | Channel 24’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি শুরু থেকে ৫ সেকেন্ড অংশের হুবহু মিল রয়েছে।
পরবর্তীতে এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাকের ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১৩ এপ্রিল “জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা চলবে” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২২ সালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের দুর্নীতির মামলার বিচার চলবে বলে আদেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। পাশাপাশি তাকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল।
ফুটেজ যাচাই- ২
ভিডিও মধ্যবর্তী অংশে থাকা ফুটেজটির কিছু কি ফ্রেম রিভার্স সার্চ করে এটিএন নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৯ সালের ২৮ জুলাই ‘কেঁচো খুড়তে বেরিয়ে এলো সাপ! বাসায় ৮০ লাখ টাকা! সিলেটের ডিআইজি প্রিজন গ্রেপ্তার’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি মিল রয়েছে।
পরবর্তীতে এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাকের ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই “বাসা থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার: ডিআইজি পার্থ কারাগারে” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “২৯ জুলাই (২০১৯) রাজধানীতে বাসা থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সিলেটের বর্তমান ডিআইজি (প্রিজন) পার্থ গোপাল বণিকের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত। এর আগে ২৮ জুলাই (২০১৯) ধানমন্ডির উত্তর গ্রিণ রোডে পার্থ গোপাল বণিকের নিজ ফ্ল্যাট থেকে ৮০লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।”
ফুটেজ যাচাই- ৩
ভিডিওর শেষ অংশে থাকা ফুটেজটির কিছু কি ফ্রেম রিভার্স সার্চ করে সময় টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী ‘শুধু টাকা আর টাকা! | ৫ সিন্দুকে মিললো ২৬ কোটি টাকা! | Casino | Somoy TV’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি মিল রয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দ্য ডেইলি স্টার বাংলার ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী “এনু-রুপনের বাসা থেকে নগদ ২৬.৫৫ কোটি, এফডিআর ৫.১৫ কোটি, ১ কেজি সোনা উদ্ধার” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২০ সালে সিআইডির হাতে গ্রেফতার হওয়া আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা ও ক্যাসিনো সহোদর এনামুল হক এনু এবং রুপন ভূঁইয়ার ওয়ারীর বাসা থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) নগদ ২৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার স্থায়ী আমানতের (এফডিআর) কাগজ, ১ কেজি সোনা, বৈদেশিক মুদ্রা ও ক্যাসিনো সরঞ্জাম উদ্ধার করেছিল।
এছাড়া, ডা. জোবাইদাকে গ্রেফতার দাবির ভিডিওটি গত ১২ মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হলেও এর পরবর্তীতে সময়ে ডা. জোবায়দা রহমানকে প্রকাশ্যে বিভিন্ন ধরনের সামাজিককর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়।
উল্লেখ্য, গত ২৮ মে দুদকের মামলায় সাজা থেকে খালাস পান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবাইদা রহমান। ৫ ই জুন ডা. জোবাইদা লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন।
সুতরাং, ডা. জোবাইদা রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
গোপালগঞ্জে গণহত্যার অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদ গত ২০ জুলাই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সর্বাত্মক হরতাল আহ্বান করেছিল আওয়ামী লীগের চার সংগঠন – যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ। এ প্রেক্ষিতে, ‘দেশের বিভিন্ন স্থানে চলন্ত বাসে অগ্নিসংযোগ করছে জামাত শিবির এনসিপিরা।’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ২০ জুলাইয়ের হরতালকে কেন্দ্র করে বাসে আগুন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, এটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় দুর্বৃত্তদের কর্তৃক বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনার ভিডিও।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটিতে @sksohelkhan92’ শীর্ষক একটি টিকটক অ্যাপল ট্যাগ লক্ষ্য করা যায়। উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে Sk Sohel Khan নামক একটি টিকটক অ্যাকাউন্ট থেকে ২০২৩ সালের ০৬ ডিসেম্বর প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে।
Video Comparison By Rumor Scanner
উক্ত পোস্টের ক্যাপশনে দাবি করা হয়, ভিডিওটি উত্তরবাড্ডার শাহজাদপুরে বৈশাখী বাসে আগুন দেওয়ার দৃশ্য।
এরপর উক্ত পোস্টের ক্যাপশনের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে সময় টিভির ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ০৬ ডিসেম্বর “বাড্ডায় বৈশাখী পরিবহনের বাসে আগুন” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে যুক্ত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওতে থাকা বাস এবং দৃশ্যের মিল রয়েছে।
Screenshot: Somoy Tv Website
অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।
সুতরাং, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় দুর্বৃত্তদের কর্তৃক বাসে আগুন দেওয়ার দৃশ্যকে সম্প্রতি আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালের দিন এনসিপি ও জামায়াত-শিবির কর্তৃক বাসে আগুন দেওয়ার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।