Home Blog Page 46

বেলুগা প্রজাতির তিমি সমুদ্র তীরে ভেসে আসার ভিডিওটি পুরোনো

গত ৩০ জুলাই রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপের কাছে ৮.৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এরই প্রেক্ষিতে, ইন্টারনেটে একটি ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে দাবি করা হচ্ছে, কামচাটকা উপদীপের উপকূলে ভূমিকম্পের একদিন আগে সমুদ্র তীরে ভেশে আসে বেলুগা প্রজাতির পাঁচটি তিমি।

মূলধারার গণমাধ্যম যুগান্তর এর ফেসবুক পেজে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

যুগান্তরের সংবাদে ভিডিও ক্লিপটি দেখিয়ে বলা হয়, “তবে এই শক্তিশালী ভূমিকম্পের ঠিক এক দিন আগেই রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপের উপকূলে ঘটে এক অদ্ভুত ঘটনা। সেখানে সমুদ্র তীরে ভেসে আসে বেলুগা প্রজাতির পাঁচটি তিমি। এই ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর নেটিজেনদের মধ্যে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা। কেউ কেউ দাবি করছেন, প্রকৃতি আগেই সতর্ক করেছিল কিন্তু তাতে কেউ গুরুত্ব দেননি।”

ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ ও অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বেলুগা প্রজাতির পাঁচ তিমির সমুদ্র তীরে ভেসে আসার এই ভিডিও ক্লিপটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভিডিও ক্লিপটি ২০২৩ সাল থেকেই ইন্টারনেটে বিদ্যমান, এর সাথে গত ৩০ জুলাই রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপের কাছে আঘাত হানা ভূমিকম্পের কোনো সম্পর্ক নেই। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম ‘kamchatinfo.com’ -এর ইউটিউব চ্যানেল ‘kamchat100’ -এ ২০২৩ সালের ১৩ আগস্ট ‘Жители Камчатки не дали погибнуть семье белух’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও ক্লিপটির মিল রয়েছে।

ক্যাপশনটির ক্যাপশনে বলা হয়, কামচাটকাবাসী বেলুগা পরিবারটিকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছেন। (অনূদিত)

পরবর্তীতে, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আন্তর্জাতিক নিউজ ম্যাগাজিন ‘নিউজউইক’ -এর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১৫ই আগস্ট প্রকাশিত ‘Video Shows Russian Fishermen Rescuing Beached Beluga Whales’ শিরোনোমের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে কামচাটকা-ইনফর্ম -এর একই ইউটিউব ভিডিওটি সংযুক্ত থাকতে দেখা যায়।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, স্থানীয় সংবাদমাধ্যম কামচাটকা-ইনফর্ম জানিয়েছে, চারটি প্রাপ্তবয়স্ক এবং একটি ছোট শাবকসহ মোট পাঁচটি বেলুগা তিমিকে রাশিয়ার সুদূর পূর্বে তিগিল নদীর মুখের কাছে একটি সৈকতে আটকে থাকতে দেখা যায়। কয়েকজন স্থানীয় জেলে এই তিমি দলটিকে তাদের বিপদজনক পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করেন। তারা তিমিগুলোর উপর সমুদ্রের জল ঢেলেছিলেন এবং জোয়ার ফিরে না আসা পর্যন্ত মাছ খাইয়ে তাদের সুস্থ রেখেছিলেন।

রাশিয়ান সংবাদমাধ্যম pravda.ru সেই সময়ে ঘটনাটি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল এবং তাদের প্রতিবেদনে কামচাটকা-ইনফর্ম -এর একই ইউটিউব ভিডিও সংযুক্ত রয়েছে।

এছাড়া, ‘ViralBear’ নামক এক ইউটিউব চ্যানেলে ‘Heroic fishermen rescue family of five beluga whales stranded in Kamchatka’s Tigilsky district’ শিরোনামে ২০২৩ সালের ১৮ আগস্ট একই ভিডিওটি প্রচার হতে দেখা যায়।

অর্থাৎ, এটি নিশ্চিত যে এই ফুটেজটি ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকেই ইন্টারনেটে রয়েছে।

সুতরাং, ২০২৩ সাল থেকেই ইন্টারনেটো বিদ্যমান ভিডিওকে সম্প্রতি রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপের কাছে ৮.৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানার একদিন আগে ভেসে আসা বেলুগা প্রজাতির তিমির ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

এনসিপির সমাবেশে ‘নৌকা নৌকা’ স্লোগান দেওয়া হয়নি, প্রচারিত ভিডিওটি সম্পাদিত

“এনসিপি দেখেন আওয়ামী লীগের নৌকার স্লোগান” ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটির অডিও অংশে ‘নৌকা নৌকা’ স্লোগান শোনা যাচ্ছে।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি প্রায় ৭ লক্ষ ৫৫ হাজার বার দেখা হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশে ‘নৌকা নৌকা’ স্লোগান দেয়ার কোনো ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত ২২ জুন এনসিপির নিবন্ধনের জন্য আবেদন জমা দেওয়ার দিনে নির্বাচন কমিশন ভবনের সামনে এনসিপি নেতা-কর্মীদের ‘শাপলা শাপলা’ স্লোগানের ভিডিওর অডিও অংশ পরিবর্তনের মাধ্যমে এই ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে গণমাধ্যম কিংবা অন্য কোনো বিশ্বস্ত সূত্রে এনসিপি নেতা-কর্মীদের ‘নৌকা নৌকা’ স্লোগান দেওয়ার দাবির এই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে, ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স সার্চ করে  জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠের ফেসবুক পেজে ২০২৫ সালের ২২ জুন ‘নিবন্ধন আবেদন করেই ‘শাপলা’ প্রতীকের স্লোগান এনসিপি নেতাদের#ncp #partysymbol #shapla #ncpleaders4’ শীর্ষক  শিরোনামে প্রকাশিত একই স্থানের কাছাকাছি সময়ের ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। তবে উক্ত ভিডিওর অডিও অংশে এনসিপির নেতা-কর্মীদের নৌকা নয় বরং, ‘শাপলা’ স্লোগানই দিতে শোনা যায়।

Comparison: Rumor Scanner

এছাড়া, একই দিন একই স্থানে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ধারণ করা একাধিক ভিডিও (, , , , , ) ফেসবুক পাওয়া যায়। সবগুলো ভিডিওতেই জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা-কর্মীদের ‘শাপলা’ স্লোগান দিতে দেখা যায়।

অর্থাৎ, আলোচিত দাবির ভিডিওতে ‘নৌকা নৌকা’ স্লোগানের অডিওটি সম্পাদনা করে যুক্ত করা হয়েছে।

পরবর্তী, জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে ২০২৫ সালের ২২ জুন “‘শাপলা’ প্রতীক চেয়ে ইসিতে নিবন্ধনের আবেদন এনসিপির” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২২ জুন জাতীয় ফুল ‘শাপলা’ প্রতীক চেয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধনের জন্য আবেদন জমা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এ সময় এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন উপস্থিত ছিলেন।

সুতরাং, এনসিপির সমাবেশে ‘নৌকা নৌকা’ স্লোগান দেওয়ার দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত এই ভিডিওটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র 

সাম্প্রদায়িক কারণে নিখোঁজ নয়, ভূমিকা মণ্ডল আত্মগোপনে ছিলেন

0

সম্প্রতি ‘ভূমিকা মণ্ডল নামের একজন বিবাহিতা হিন্দু নারী নিঁখোজ হয়েছে এবং এ বিষয়ে আইন শৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষের দিক থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি’ শীর্ষক একটি দাবি ভারতীয় এক্স হ্যান্ডেল থেকে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভূমিকা মণ্ডল নামক এই নারীর নিঁখোজ হওয়ার সাথে সাম্প্রদায়িকতার কোনো সম্পর্ক নেই। প্রকৃতপক্ষে, পারিবারিক কলহের জেরে তিনি স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে বের হয় আত্নগোপনে ছিলেন এবং পরবর্তীতে তাকে খুঁজে পাওয়া গেছে। 


এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Shamim Ul Alam Shamim নামক প্রোফাইলে, যিনি নিজেকে ভূমিকা মণ্ডলের দুজন মামার বন্ধু বলে পরিচয় দিয়েছেন, গত ০৮ জুলাই প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত পোস্টে ‘হারানো বিজ্ঞপ্তি’ শিরোনামে বলা হয়, ভূমিকা মণ্ডল গত ৩ জুলাই শ্রীনগরে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে নিঁখোজ হন। পারিবারিক কলহের জেরে তিনি বাড়ি থেকে হয়ে নিখোঁজ হয়ে যান। এ ঘটনার শ্রীনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তার কোনো খোঁজ পেলে যোগাযোগ করার জন্য পোস্টটিতে একটি মোবাইল ফোন নাম্বার যুক্ত করে দেওয়া হয়। 

পরবর্তীতে উক্ত পোস্টটির ক্যাপশন এডিট করে ভূমিকা মণ্ডলকে খুঁজে পাওয়া গেছে বলে আপডেট জানানো হয়।

উল্লিখিত পোস্টে প্রদত্ত নাম্বারটিতে রিউমর স্ক্যানার টিমের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করে জানা যায় এটি ভূমিকা মণ্ডলের ভাই প্রসঞ্জিত মণ্ডল জয়ের মোবাইল ফোন নাম্বার। তিনি জানান, ‘শ্বশুরবাড়িতে পারিবারিক কলহের জেরে ভূমিকা মণ্ডল গত ০৩ জুলাই ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। এরপর তিনি তাদের পিসির বাড়িতে আত্নগোপনে ছিলেন যা ভূমিকা কিংবা পিসি পরিবারের অন্য সদস্যদের জানাননি। এ বিষয়ে শ্রীনগর থানায় জিডি করা হলেও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের আগে গত ০৮ জুলাই ভূমিকা মণ্ডলকে তার পরিবারের সদস্যরা খুঁজে পায়। তিনি সুস্থ আছেন।’

সুতরাং, ভূমিকা মণ্ডলের আত্মগোপনে যাওয়ার ঘটনাকে তাকে সাম্প্রদায়িক কারণে নিঁখোজ হওয়া এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পদক্ষেপ না নেওয়ার ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

  • Shamim Ul Alam Shamim – Facebook Post 
  • Prosonjit Mondal Joy’s Statement

জামায়াতের নেতারা ছাত্রীসংস্থার মেয়েদের ভোগ করতে চায় দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি

সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচারিত হয়েছে যেখানে একটি গলির মধ্যে হিজাব পরিহিত কিছু মেয়ে দাঁড়িয়ে আছেন এবং তাদের মধ্যে সামনের জন অভিযোগের সুরে কথা বলছেন।

ভিডিওটিতে সামনের মেয়েটিকে বলতে শোনা যায়, “জামাতি ভণ্ড নেতারা ছাত্রী সংস্থার মেয়েদের ভোগ করতে চায়।”

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন লেখা অবধি ফেসবুকে এই ভিডিওটি ২ লক্ষ ৪৪ হাজার বারের বেশি দেখা হয়েছে এবং ভিডিওটি ৭ হাজার ২শত বারের বেশি শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতারা বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থার মেয়েদের ভোগ করতে চায় দাবির এই ভিডিওটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া এই ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত এই ভিডিওর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামী নেতাদের বিরুদ্ধে মেয়েদের এমন কোনো অভিযোগের তথ্যও খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, রিউমর স্ক্যানার টিমের বিশ্লেষণে মেয়েগুলোর দাঁড়ানোর ভঙ্গি, কথা বলা মেয়েটির কণ্ঠস্বর, ভিডিওর ধরণ এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে ভিডিওটিকে কোনো বাস্তব ঘটনার বলে প্রতীয়মান হয় না।

পরবর্তীতে ভিডিওটি এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল ক্যান্টিলাক্সে বিশ্লেষণ করা হলে, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৮৮  শতাংশ বলে ফলাফল আসে।

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত এই ভিডিওটির দৈর্ঘ ৮ সেকেন্ডের। ভিডিওটি ৮ সেকেন্ড দীর্ঘ হওয়ায় এটি গুগলের অত্যাধুনিক এআই টুল Veo দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ‘Veo’  টেক্সট প্রম্পট থেকে ৮ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম।

সুতরাং, এআই ভিডিওকে জামায়াতের নেতারা ছাত্রীসংস্থার মেয়েদের ভোগ করতে চায় দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • AI Content Detection Tool: Cantilux
  • Rumor Scanner’s Analysis

শেখ হাসিনা ভারতে এমপি হতে পারবেন বলে মন্তব্য করেননি রাহুল গান্ধী

0

ভারতের রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি ও লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী ‘শেখ হাসিনা এখন ভারতের এমপি হতে পারবেন’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ফটোকার্ড দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, রাহুল গান্ধী বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে আলোচিত মন্তব্যটি করেননি। প্রকৃতপক্ষে, শেখ হাসিনার বিষয়ে রাহুল গান্ধীর বার্তা নিয়ে আওয়াজ তুলুন নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার টিম ফটোকার্ডটিতে ‘আওয়াজ তুলুন’ নামের একটি ফেসবুক পেজের নাম দেখতে পায়। তবে ফটোকার্ডটি এটি প্রকাশের কোনো তারিখ লক্ষ্য করা যায়নি। পরবর্তীতে প্রাপ্ত ফেসবুক পেজের নামের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে আওয়াজ তুলুন নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ৫ জুলাই শেখ হাসিনার বিষয়ে একি বার্তা দিলেন রাহুল গান্ধী শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়।

ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডের শিরোনাম ব্যতীত বাকি সকল উপাদানের হুবহু মিল রয়েছে। এছাড়াও ‘আওয়াজ তুলুন’ নামক পেজটিকে প্রচারিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডের ফন্টের পার্থক্যও লক্ষ্য করা যায়। যা থেকে স্পষ্টত বোঝা যায় যে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ফটোকার্ডটির ‘শেখ হাসিনার বিষয়ে একি বার্তা দিলেন’ শীর্ষক শিরোনামের স্থলে ‘শেখ হাসিনা এখন ভারতের এম্পি হতে পারবেন’ লেখা যুক্ত করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

পরবর্তীতে উক্ত পোস্টের মন্তব্যের ঘর থেকে প্রাপ্ত দৈনিক নগর বার্তা নামের গণমাধ্যমের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একই শিরোনামের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের প্রেস সচিব তারিক চয়ন গত ১৩ মে তার এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময়কালে কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক প্রসঙ্গে এক ছাত্রের করা প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে বলেন তিনি শেখ হাসিনার বিষয়ে নাক গলাতে চান না।

মূলধারার গণমাধ্যম বাংলাভিশনের ওয়েবসাইটেও একই তথ্য সম্বলিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে তারিক চয়নের করা সেই ফেসবুক পোস্টটির সন্ধানও পাওয়া যায়। কিন্তু কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে শেখ হাসিনার ভারতীয় পার্লামেন্টে প্রতিনিধি হওয়ার বিষয়ে রাহুল গান্ধীর মন্তব্য করার সত্যতা মিলেনি।  

সুতরাং, ‘শেখ হাসিনা এখন ভারতের এম্পি হতে পারবেন: রাহুল গান্ধী’ শিরোনামে ফেসবুকে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

উচ্চ রক্তচাপের জন্য ডা. দেবী শেঠির পরামর্শ দাবিতে সম্পাদিত ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি ‘উচ্চ রক্তচাপের জন্য ঔষধ খাওয়া একটি বোকামি, তার তৈরি একটি ফর্মুলা প্রোডাক্ট গ্রহণ করে রক্তনালী পরিষ্কার ও ৩ দিনে রক্তচাপ স্থিতিশীল করা যাবে’ দাবিতে ভারতীয় হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠির বাংলায় কথা বলা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ড. দেবী শেঠি উচ্চ রক্তচাপের জন্য কোনো ফর্মুলা প্রোডাক্ট গ্রহণের পরামর্শ দেননি। প্রকৃতপক্ষে, ভিন্ন বিষয়ে তার একটি বক্তব্যের ভিডিওকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় বিকৃত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।


এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Narayana Health নামক প্রতিষ্ঠানের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির দৃশ্যাবলীর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

ভিডিওটির বিবরণী থেকে জানা যায়, বিশ্ব হৃদপিণ্ড দিবস উপলক্ষে ভিডিওটিতে তিনি চল্লিশের পরে হার্টের যত্নে কিছু পরামর্শ ও নিয়মিত কিছু টেস্ট করার বিষয়ে কথা বলছেন।

অতঃপর, ভিডিওগুলোতে থাকা অডিও বা শব্দ পর্যবেক্ষণে দেখা যায় যে, ২০২২ সালের মূল ভিডিওর অডিও থেকে আলোচিত ভিডিওটির অডিও ভিন্ন।

আলোচিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেবী শেঠির বাংলা কথাগুলোর উচ্চারণ কৃত্রিম বলে প্রতীয়মান হয়। দেবী শেঠির একাধিক ভিডিও পর্যবেক্ষণে দেখা যায় যে তার কথা বলার ধরণও ভিন্ন। এছাড়া, তিনি বাংলায় কথা বলছেন এরকম কোনো ভিডিও ইন্টারনেটে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সনাক্তকারী ওয়েবসাইট Resemble AI এ অডিও ক্লিপটি যাচাই করা হয়, এতে অডিওটিকে ‘Fake’ বলে চিহ্নিত করা হয়।

সুতরাং, উচ্চ রক্তচাপের জন্য কথিত ফর্মুলা প্রোডাক্ট গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে ভারতীয় হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠির বক্তব্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিও সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

সৌদি আরবে নয়, ভিডিওটি ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ইস্যুতে বাগদাদে মার্কিন দূতাবাস বন্ধের বিক্ষোভের ভিডিও

সাম্প্রতিক ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষিতে, মধ্যরাতে সৌদি নাগরিকরা রাস্তায় নেমে প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের কাছে ইরানের পক্ষে যুদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে দবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

দাবি করা হয়, ‘মধ্যরাতে হাজার হাজার সৌদি নাগরিকরা রাস্তায় নেমে আসে তাদের একটাই দাবি প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের কাছে ইরানের হয়েছে যুদ্ধ করার আহ্বান জানান’ (বানান অপরিবর্তিত)। এছাড়াও, ভিডিওটিতে তারিখ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, ২৪/০৬/২৫

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সৌদি আরবের কোনো ঘটনা নয়। বরং, এটি ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ইরাকের বাগদাদে বিক্ষোভ এবং বাগদাদে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস বন্ধের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশের ভিডিও, যা আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে ‘AHMAD SLMAN’ নামক একটি এক্স অ্যাকাউন্টে গত ১৮ জুন প্রচারিত একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে। অ্যাকাউন্টটিতে ব্যবহারকারীর পদবী বা পেশাগত পরিচয় হিসেবে জার্নালিস্ট অর্থাৎ সাংবাদিক দেখতে পাওয়া যায়।

ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়, ইরাকি গোত্রগুলো বাগদাদে পৌঁছেছে মার্কিন দূতাবাস বন্ধের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভে অংশ নিতে। (অনূদিত)

অর্থাৎ, এই ভিডিওটি আলোচিত ভিডিওটিতে দাবি করা তারিখের আগের ভিডিও।
পরবর্তীতে, উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে ‘Tehran Times’ এর এক্স অ্যাকাউন্টে গত ২০ জুন প্রচারিত একটি পোস্টের ছবির মধ্যে একটি ছবিতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর সামনে থাকা লোকজনের সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়, বাগদাদে ইরাকিরা ইসরায়েলের ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে। একইসাথে তারা বাগদাদে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস বন্ধের দাবি জানিয়েছে।

একই তারিখে ইরানের ‘Press TV’ ও ‘Tehran News’ এর এক্স অ্যাকাউন্ট এবং ‘Islamic Invitation Turkey’ নামের একটি এক্স অ্যাকান্টে একই দাবির পোস্টে ছবিটি দেখতে পাওয়া যায়।

তাছাড়া, সৌদি আরবের নাগরিকরা রাস্তায় নেমে প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের কাছে ইরানের পক্ষে যুদ্ধ করার আহ্বান জানানোর কোনো তথ্য আমাদের অনুসন্ধানে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ইরাকের বাগদাদে বিক্ষোভ এবং বাগদাদে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস বন্ধের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশের ভিডিওকে মধ্যরাতে সৌদি নাগরিকরা রাস্তায় নেমে প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের কাছে ইরানের পক্ষে যুদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

  • AHMAD SLMAN: X Video Post
  • Tehran Times: X Post
  • Press TV: X Post
  • Islamic Invitation Turke

জীবিত রাফির ভুয়া বক্তব্যের সাথে গণঅভ্যুত্থানে নিহত মোঃ জাহিদুল ইসলামের ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, ‘আমার বাবা মারা গেছেন। আপনারা প্লিজ আমার বোনটাকে দেখে রাখবেন এটাই ছিল রাফির শেষ কথা, মৃত্যুর আগমুহূর্তে। এই জুলাই মাসে আমরা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি রাফির মতো সেসব মানুষকে, যারা নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন দেশের জন্য।’ শীর্ষক ক্যাপশনে পতাকায় ঢাকা একটি বালকের ছবি যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

দাবি করা হচ্ছে, পতাকায় ঢাকা ব্যক্তিটি রাফি। তিনি কোটা সংস্কার গণ-অভ্যুত্থানের সময় নিহত হয়েছেন। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশের পতাকা দিয়ে মোড়ানো দেহটি  বৈষম্যবিরোধী ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী রাফিউল ইসলাম রাফির নয়। বরং, ছবিটি গত জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে পাবনায় নিহত মোঃ জাহিদুল ইসলামের বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। এছাড়া, রাফি মারা যায়নি; তিনি গণ-অভ্যুত্থানে আহত হয়েছিলেন।

বক্তব্য যাচাই 

গত বছরের আগস্ট মাসে একই মন্তব্য রাফির দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। যা নিয়ে সেসময়ই সত্যতা যাচাই করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল রিউমর স্ক্যানার। মূলত, পাবনার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী রাফিউল ইসলাম রাফি মারা যায়নি বরং তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং বর্তমানে সুস্থ আছেন। রাফির মা নেই, তবে বাবা বেঁচে আছেন৷ ছোট বোনকে দেখে রাখার বিষয়েও তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। 

বর্তমানে প্রচারিত ছবি যাচাই 

সম্প্রতি, একই মন্তব্য রাফির দাবিতে একটি ছবি যুক্ত করে আবারও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পোস্টগুলোতে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের পতাকায় মোড়ানো এক তরুণের নিস্তেজ দেহ পরে আছে দাবি করা হচ্ছে, পতাকায় দিয়ে মোড়ানো দেহটি জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে নিহত কথিত রাফির। 


অনুসন্ধানে ‘S R S Sumon’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত বছরের ০৭ আগস্ট প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে যুক্ত পাঁচটি ছবির মধ্যে থাকা একটি ছবির সাথে আলোচিত ছবিটির মিল রয়েছে।

উক্ত পোস্টের ক্যাপশন থেকে জানা যায়, পতাকায় ঢাকা ছবিটি জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে পাবনা জেলার নিহত জাহিদের। 

পরবর্তীতে, এস আর এস সুমনের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সুমন জানান, তিনি জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে নিহত জাহিদুল ইসলামের চাচাতো ভাই। আলোচিত পোস্টটি দেখালে তিনি জানান, জাহিদুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। জাহিদুলের নামে প্রচারিত মন্তব্যটি সঠিক নয় এবং ছবিটি জাহিদুল ইসলামের, রাফির নয়। 

বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য মোঃ জাহিদুল ইসলামের আপন ভাই মোঃ তৌহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি জানান, ছবিটি জাহিদুল ইসলামের। মন্তব্যটির বিষয়ে বলেন, ‘জাহিদ গুলিবিদ্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিহত হন। সুতরাং ওর কথা বলার কোনো সুযোগ ছিল না।’ 

সুতরাং, প্রচারিত ছবিটি জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে নিহত পাবনার মোঃ জাহিদুল ইসলামের। 

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শহিদদের তালিকা ঘেটে দেখা যায়, ৪০ নং শহিদের তালিকায় নাম রয়েছে মোঃ জাহিদুল ইসলামের। 

সুতরাং, প্রচারিত ছবিটি মোঃ জাহিদুল ইসলামের।  জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে পাবনায় নিহত জাহিদুলের ছবিকে একই ঘটনায় আহত রাফির ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। এছাড়া রাফির নামে প্রচারিত মন্তব্যটিও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র 

বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার মানবাধিকার কমিশন কোর্টে মামলা দায়েরের বানোয়াট তথ্য

0

সম্প্রতি, ‘বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগ এনে অস্ট্রেলিয়া মানবাধিকার কমিশন কোর্টে মামলা দায়ের করলেন গ্যাবনের প্রেসিডেন্ট এমারসন মার্থি’ দাবিতে Tamanna Akhter Yesman নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। পাশাপাশি, উক্ত অ্যাকাউন্ট থেকে ফেসবুকের একাধিক গ্রুপে পোস্টটি শেয়ার করা হয়েছে। 

পরবর্তীতে একই দাবি ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ ও অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচার করা হয়। ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনে অভিযোগ এনে অস্ট্রেলিয়া মানবাধিকার কমিশন কোর্টে গ্যাবনের প্রেসিডেন্ট মামলা দায়ের করার দাবিটি মিথ্যা। এছাড়া, এমারসন মার্থির নামের কোনো ব্যক্তি দেশটির প্রেসিডেন্ট নয়। গ্যাবনের বর্তমান প্রেসিডেন্টের নাম ব্রাইস অলিগুই এনগুয়েমা। প্রকৃতপক্ষে, ভেনেজুয়েলার জাতীয় পরিষদের সভাপতি জর্জ রোদ্রিগেসের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমির সাক্ষাতের সময়ে ধারণকৃত কিছু ছবি ব্যবহার করে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ভেনেজুয়েলার জাতীয় পরিষদের সভাপতি জর্জ রোদ্রিগেসের এক্স অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের ০৩ জানুয়ারিতে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে আলোচিত দাবিতে থাকা ছবিটিগুলোর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। 

পোস্টটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ছবিগুলো ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরোর পক্ষ থেকে জর্জ রোদ্রিগেস সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা নিয়ে বৈঠকের।

পরবর্তীতে, উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘El Correo’ এর ওয়েবসাইটে একই তারিখে অর্থাৎ, ২০২৩ সালের ০৩ জানুয়ারিতে ‘Emiratos Árabes Unidos evalúa la cooperación con Venezuela’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনের বিস্তারিত অংশ থেকে জানা যায়, ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় অবস্থিত মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির কূটনৈতিক সদর দপ্তরে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সরকারি প্রতিনিধিরা পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও স্বীকৃতির ভিত্তিতে সংহতি ও পরিপূরকতার নীতি নিয়ে আলোচনা করেন। এই প্রসঙ্গে, উভয় দেশের তেল, গ্যাস এবং পেট্রোকেমিক্যাল কার্যক্রমের প্রচারের জন্য এই বৈঠকটি সহায়ক ছিল। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ছবিগুলো এবং শিরোনামের দাবির সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পৃক্ততা নেই এবং প্রদর্শিত নারী বাংলাদেশ সরকারের কেউ নন বরং, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রিম বিনতে ইব্রাহিম আল হাশিমী।

আলোচিত দাবির পোস্টগুলোতে এমারসন মার্থিকে গ্যাবনের প্রেসিডেন্ট দাবি করা হলেও গ্যাবনের বর্তমান প্রেসিডেন্টের নাম ব্রাইস অলিগুই এনগুয়েমা।

উল্লেখ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমীর ছবি ব্যবহার করে তামান্না আক্তার ইয়াসমান (Tamanna Akhter Yesman) নাম দাবি করে আলোচ্য ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশ নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে ক্রমাগত ভুল তথ্য প্রচার করতে দেখা যায়। উক্ত অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত গুজবের বিষয়ে ফ্যাক্ট-স্টোরি প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

সুতরাং, বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার মানবাধিকার কমিশন কোর্টে মামলা দায়েরের দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

সূর্যের হাসি ক্লিনিকের নামে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

0

সম্প্রতি, সূর্যের হাসি ক্লিনিকে বিভিন্ন পদে লোকবল নিয়োগ দেওয়া হবে শীর্ষক দাবিতে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

প্রচারিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটিতে উল্লেখ করা হয়, উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও ইউনিয়ন অফিসার এই দুই পদে আগামী ১৬ আগস্টের মধ্যে আবেদন করা যাবে জানিয়ে কথিত এই বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের জন্য একটি ই-মেইল ([email protected]) ঠিকানা দেওয়া হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সূর্যের হাসি ক্লিনিকের নামে প্রচারিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ প্রকাশ করেনি বরং, আর্থিক প্রতারণার উদ্দেশ্যে কথিত এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটিতে সূর্যের হাসি ক্লিনিকের নাম ব্যবহার করে প্রচার করা হয়েছে। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে সূর্যের হাসি ক্লিনিকের ওয়েবসাইটসামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হ্যান্ডেলগুলো পর্যবেক্ষণ করে এমন বিজ্ঞপ্তির কোনো অস্তিত্ব মেলেনি। 

এছাড়া, বিজ্ঞপ্তিতে “[email protected]” শীর্ষক একটি ইমেইল ঠিকানা আবেদনের জন্য দেওয়া হলেও সূর্যের হাসি ক্লিনিকের ওয়েবসাইটে নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য ব্যবহৃত ইমেইল ঠিকানা ভিন্ন ([email protected])।   

তাছাড়া, বর্তমানে সূর্যের হাসি নেটওয়ার্কের ওয়েবসাইটে জুনিয়র অফিসার পদে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি চালু রয়েছে যেটির আবেদনের শেষ দিনও আজ (৩০ জুলাই)। 

অর্থাৎ, প্রচারিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি সূর্যের হাসি ক্লিনিকের নয়। 

সুতরাং, সূর্যের হাসি ক্লিনিকের নামে প্রচারিত এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র