Home Blog Page 346

গাছের সাথে বেঁধে রাখা এই নারী হিন্দু ধর্মাবলম্বী শিক্ষিকা গীতাঞ্জলি বড়ুয়া নন

গত জুলাই মাসের শুরুতে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন শেষ পর্যন্ত সরকার পতনের আন্দোলনে রুপ নেয়। গণআন্দোলনের মুখে গত ০৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। ০৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এরমধ্যে দেশব্যাপী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অসংখ্য শিক্ষককে পদত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগ উঠে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। দেশে বিভিন্ন এলাকা থেকে একের পর এক শিক্ষক হেনস্তার খবর আসে গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এরই প্রেক্ষিতে গাছের সাথে একজন নারীকে বেঁধে রাখার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, এক্স ও গণমাধ্যমে প্রচার করে দাবি করা হয়, “ঢাকার আজিমপুর গভঃমেন্ট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ গীতাঞ্জলি বড়ুয়ার পদত্যাগ করানোর জন্য শিক্ষিকাকে রশি দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রেখেছেন শিক্ষার্থীদের একাংশ।”

উক্ত দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ভারতীয় ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেও পোস্ট করা হয়৷ এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ভারতীয় গণমাধ্যমেও উক্ত দাবিতে সংবাদ প্রচার করা হয়৷ এমন প্রতিবেদন দেখুন : দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ত্রিপুরা ইনফো

উক্ত নারীকে শিক্ষক দাবিতে ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গাছের সাথে বেঁধে রাখা নারী আজিমপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ গীতাঞ্জলি বড়ুয়া নন, বরং ভিন্ন একজন নারী যিনি একজন সম্ভাব্য প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তাছাড়া, আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের আগে থেকেই শিক্ষিকা গীতাঞ্জলি বড়ুয়ার পদত্যাগের দাবির ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে যেখানে সাম্প্রদায়িক কোনো সম্পৃক্ততা নেই। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আজিমপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের ফেসবুক পেজে উক্ত ঘটনার বিষয়ে উল্লেখ পাওয়া যায়৷ গাছের সাথে একজন নারীকে বেঁধে রাখার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির উক্ত ফেসবুক পেজ থেকে গত ২১ আগস্ট তারিখে একটি পোস্টের মাধ্যমে জানানো হয়, “কিছু মানুষ স্কুলের নামে মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছে। শুধু তাই না কেউ কেউ তো হিন্দু-মুসলিম দ্বন্দ্বের ও অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্যে বলছি,গাছের সাথে বেঁধে রাখা মানুষটা গীতাঞ্জলি বড়ুয়া না। স্কুলের কোনো শিক্ষক ও না। উনি নিজেকে স্কুলের প্রাক্তন ছাত্রী হিসেবে পরিচয় দেয়(এইটার কোনো প্রমান ও পাওয়া যায় নি)। তখন উত্তেজিত ছাত্রীরা ওনাকে বেঁধে রাখে।(আমরা কোনো মেয়েকে গাছের সাথে বেঁধে রাখাও সমর্থন করছি না) ঘটনাটি সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত।”

এ বিষয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম আজকের পত্রিকার ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৯ আগস্ট তারিখে “শিক্ষার্থীদের হুমকি-ধামকি, আজিমপুরে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হলো প্রাক্তন শিক্ষার্থীকে” শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়৷ ভিডিও প্রতিবেদনে উক্ত বেঁধে রাখা নারীর একটি ছবি বা স্থিরচিত্রও ব্যবহৃত হয়। উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, “আজিমপুর গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষসহ দুইজন শিক্ষিকার পদত্যাগের দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ডেকে এনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার চেষ্টা করান অভিযুক্ত শিক্ষকরা৷ তখন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রাক্তন একজন শিক্ষার্থীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন।” 

অর্থাৎ, উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা উক্ত নারীকে একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী বলে উল্লেখ করা হয়।

Comparison : Rumor Scanner

তাছাড়া, উক্ত একই প্রতিবেদনে আলোচিত শিক্ষিকা গীতাঞ্জলি বড়ুয়ার ছবিও প্রকাশ করা হয় যার সাথে গাছের সাথে বেঁধে রাখা নারীর বৈসাদৃশ্য দেখা যায়। 

Comparison : Rumor Scanner

এ বিষয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডে গত ২২ আগস্ট তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আলোচিত শিক্ষিকা গীতাঞ্জলি বড়ুয়া নিজেই দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে গাছের সাথে তাকে বেঁধে রাখার মর্মে প্রচারিত দাবিগুলো মিথ্যা বলে নিশ্চিত করেছেন। তিনি একইসাথে জানান যে তিনি তার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন, যেহেতু তার শিক্ষার্থীরা তাকে আর চাচ্ছিল না। তিনি তার পদত্যাগপত্র স্বেচ্ছায় জমা দিয়েছেন, কোনোরকমের বাইরের চাপ ছাড়াই।

তাছাড়া প্রতিবেদনটি পড়ে জানা যায়, গত ১৪ জুলাই তারিখে আজিমপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি উত্থাপন করে। দুর্নীতিগ্রস্থ হওয়ার অভিযোগে তারা তাৎক্ষণিকভাবে অফিস সহকারী সবুজ মিয়া, চিফ অ্যাসিস্টেন্ট মীর মোস্তাফিজুর রহমান এবং লেকচারার আব্দুর রহিমকে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানায়। শিক্ষার্থীরা এছাড়াও স্কুল এবং সাবেক ঢাকা দক্ষিণ মেয়র ফজলে নূর তাপসের সাথে সম্পৃক্ত শফিকুল ইসলামের সাথে সব রকমের চুক্তি বাতিল করার দাবি জানায়।

অধ্যক্ষ এই অভিযোগগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান এবং উক্ত ব্যক্তিদের পদত্যাগের জন্য অনুরোধ করেন। শিক্ষার্থীরা এজন্য তিনদিনের একটি আল্টিমেটাম দেয়।

১৮ জুলাই তারিখে আল্টিমেটামের সময় শেষ হলে তারা ক্যাম্পাসে ফিরে এসে কিছু শিক্ষকদের সাথে বিবাদে জড়ায়। তারা প্রশ্নফাঁস, হয়রানি, হুমকি, কোচিং ব্যবসায় জড়ানো এবং অপমানের অভিযোগে শাহনাজ আক্তার, গৌতম চন্দ্র পাল এবং আব্দুর রহিম নামের আরো তিনজন শিক্ষকের পদত্যাগের দাবি জানায়। শিক্ষার্থীরা তাদের পদত্যাগের জন্য অধ্যক্ষকে চাপ দিতে থাকে। এরই মাঝে কিছু শিক্ষক ছয়জন বহিরাগতদের ডেকে আনেন এবং তারা শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছনা করে। তবে, বহিরাগতদের কারা ডেকেছে তা গীতাঞ্জলি বড়ুয়া জানেন না বলে তিনি জানিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের দাবি অধ্যক্ষ পূরণ করতে না পারায় এবং পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ গীতাঞ্জলি বড়ুয়ার পদত্যাগের দাবি জানায়। 

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনে গাছের সাথে বেঁধে রাখা নারীর পরিচয় জানা সম্ভব হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, গাছের সাথে বেঁধে রাখা উক্ত নারীর নাম নদী, যিনি ধর্মে একজন মুসলিম এবং একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী। 

সুতরাং, মুসলিম ধর্মালম্বী ভিন্ন নারীকে গাছের সাথে বেঁধে রাখার ঘটনাকে আজিমপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের হিন্দু শিক্ষিকা গীতাঞ্জলি বড়ুয়াকে বেঁধে রাখার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সাম্প্রদায়িক হামলার সংবাদ প্রকাশে গণমাধ্যম বন্ধের হুশিয়ারি দিয়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কোনো মন্তব্য করেননি

0

গত ১১ আগস্ট আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে যান অন্তর্বর্তী সরকারের তৎকালীন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। সম্প্রতি, উক্ত ঘটনায় প্রকাশিত একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশে হওয়া সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক হামলাগুলোর সংবাদ গণমাধ্যমে প্রচার করলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন।

সাম্প্রদায়িক হামলা

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)- এ প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাম্প্রদায়িক হামলার সংবাদ প্রকাশ করলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হুশিয়ারি জানিয়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন কোনো মন্তব্য করেননি বরং, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থী নিহতের সংবাদটি মূলধারার গণমাধ্যমে প্রকাশ না করায় বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন ‘চাটুকারিতা করলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে।’ শীর্ষক মন্তব্যটি করেন।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত পোস্টে ব্যবহৃত দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিবেদনটির শিরোনামের সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে গত ১১ আগস্ট চাটুকারিতা করলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত মূল প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Ittefaq

উক্ত প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ‘ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন ‘মিডিয়ায় চাটুকারদের ডাকবেন না। মিডিয়া চাটুকার হবেন না। একটা দেশ ডুবে কখন, যখন মিডিয়া সত্য কথা বলে না। মিডিয়াগুলো ওই সময় যদি সত্যি ঘটনা তুলে ধরতো তাহলে পুলিশের এই অবস্থা হয় না। মিডিয়া বারবার বলেছে কিছুই হয়নি। কিন্তু বিবিসিতে আমি সব দেখেছি।’ শীর্ষক কথাগুলো বলেন। তার বক্তব্যের কোথাও সাম্প্রদায়িক হামলার সংবাদ প্রকাশ করলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে আরেক সংবাদমাধ্যম এটিএন নিউজ এর ইউটিউবে সরাসরি সম্প্রচারিত ভিডিওতে সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের সেদিনের দেওয়া বক্তব্যের ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওতে তাকে টকশোগুলোতে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বাছাইয়ের বিষয়টি এবং আন্দোলনের সময় মূলধারার গণমাধ্যমগুলোর ভূমিকা নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়। মূলত এসব কারণেই তিনি বলেন, চাটুকারিতা করলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের দায়িত্ব পরিবর্তন করে তাকে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং তার স্থলে লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। 

সুতরাং, সাম্প্রদায়িক হামলার সংবাদ প্রকাশ করলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে শীর্ষক মন্তব্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন করেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সুবর্ণ বারী যুক্তরাষ্ট্রের সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট নয়

বিভিন্ন সময়ে নানান কারণে গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় উঠে এসেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক সুবর্ণ আইজ্যাক বারী ও তার পিতা রাশেদুল বারী৷ সম্প্রতি সুবর্ণ আলোচনায় এসেছে ‘যুক্তরাষ্ট্রের সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট’ দাবি করে। সুবর্ণ আইজ্যাক বারীর ফেসবুক পেজ Bari Science Lab, কিছু দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপকভাবে উক্ত দাবি প্রচারিত হতে লক্ষ্য করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধান করে দেখেছে সুবর্ণ আইজ্যাক বারী আসলেই যুক্তরাষ্ট্রের সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট বা দ্বাদশ শ্রেণি পাস কি না। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনাকে হাইস্কুল হিসেবে গণ্য করা হয়।

সুবর্ণ বারীর ফেসবুক পেজ থেকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন Bari Science Lab (আর্কাইভ)।

বাংলাদেশি গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন: আরটিভি, মাছরাঙা নিউজ (ইউটিউব), দৈনিক শিক্ষা, আমাদের বার্তা

সুবর্ণ

উক্ত দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন: আনন্দবাজার পত্রিকা

বাংলাদেশ ও ভারত থেকে পরিচালিত বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সুবর্ণ আইজ্যাক বারী যুক্তরাষ্ট্রের সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট নয় বরং তার চেয়েও কম বয়সে একাধিক মার্কিন শিক্ষার্থী হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হয়েছেন। তবে, সুবর্ণ তার স্কুল মালভার্ন হাই স্কুলের সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবি প্রচারকারীদের প্রচারিত দাবি পর্যবেক্ষণ করলে কোনো বিশ্বাসযোগ্য তথ্যপ্রমাণ উল্লেখ করতে দেখা যায়নি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনে সুবর্ণকে নিয়ে প্রকাশিত সংবাদে দেখা যায়, সুবর্ণকে লং আইল্যান্ডের তার স্কুলের সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে৷ মার্কিন টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এবিসি নিউজের ওয়েবসাইটেও একই তথ্য উল্লেখ করা হয়। মালভার্ন ইউনিয়ন ফ্রি স্কুল ডিস্ট্রিক্টের বরাতে জানানো হয়, নাসাউ কাউন্টি স্কুলের ইতিহাসে সে সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট। উল্লেখ্য যে, নাসাউ একটি কাউন্টির নাম যেখানে তার স্কুল অবস্থিত। পুরো যুক্তরাষ্ট্রে এরকম তিন হাজারেরও অধিক কাউন্টি আছে। সুবর্ণ তার কাউন্টির সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট বলেই এবিসি নিউজ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

সুবর্ণের ফেসবুক পেজে সুবর্ণকে নিয়ে মার্কিন ট্যাবলয়েড সংবাদপত্র নিউ ইয়র্ক পোস্টে সংবাদ প্রকাশের বিষয়েও জানানো হয়। নিউ ইয়র্ক পোস্টে তাকে নিয়ে প্রকাশ করা প্রতিবেদনেও সুবর্ণকে তার লং আইল্যান্ডের হাইস্কুলের সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট বলা হয়, পুরো যুক্তরাষ্ট্রের বলা হয়নি।

তাছাড়া, মার্কিন সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট দাবি করে সুবর্ণের ফেসবুক পেজে করা পোস্টের সাথে ক্যাপশনে Fox 5 New York নামের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত একটি ইউটিউব ভিডিও লিঙ্ক দেওয়া হয়, যেখানে সুবর্ণকে সাক্ষাৎকার দিতে দেখা যায়। এমনকি উক্ত ভিডিওতেও তাকে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট বলা হয়নি বরং তার স্কুলের সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট বলা হয়।

এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে সুবর্ণের হাইস্কুল মালভার্ন হাই স্কুলের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম৷ স্কুল কর্তৃপক্ষ রিউমর স্ক্যানারকে জানিয়েছে, সুবর্ণ ১২ বছর বয়সে হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হয়েছে এবং সে তাদের স্কুলের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট। 

পরবর্তীতে, সুবর্ণের চেয়ে কম বয়সে (১২ বছরের চেয়ে কম) আর কোনো আমেরিকান গ্র্যাজুয়েট হয়েছেন কি না সে বিষয়ে অনুসন্ধানে সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েটদের সম্পর্কে বেশ কিছু সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

১৯৯৪ সালের ৭ জুন যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গাডসডেন টাইমস নামের একটি সংবাদপত্রে একটি সংবাদ পাওয়া যায়। সংবাদটি পড়ে জানা যায়, মাইকেল কার্নি নামের একজন ছাত্র মাত্র ৬ বছর বয়সে হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হন এবং ১০ বছর বয়সেই দ্য ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ আলাবামা থেকে কলেজ পর্যায়ও সম্পন্ন করেন৷ তিনি ৬ বছর ৫ মাস বয়সে হাইস্কুল সম্পন্ন করেন, ৬ বছর ৭ মাস বয়সে জুনিয়র কলেজে প্রবেশ করেন এবং ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ আলাবামা থেকে ১০ বছর বয়সে কলেজ সম্পন্ন করেন। এই তিনটি গিনেস রেকর্ডই তার দখলে বলেই উক্ত সংবাদে উল্লেখ করা হয়। লরেন্স জার্নাল ওয়ার্ল্ড নামের যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংবাদপত্রে ১৯৯৮ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মাইকেল ৫ বছর বয়সে হাইস্কুলে পদার্পন করে এবং তার এক বছর পরই তার হাইস্কুল পর্যায় সম্পন্ন হয়ে যায়। টাইমস ডেইলি নামের অন্য আরেকটি সংবাদপত্র থেকে জানা যায়, ৫ বছর বয়সেই মাইকেল কার্নি হাইস্কুলের জন্য প্রস্তুত ছিলেন কিন্তু তাকে কোনো বিদ্যালয় এত কম বয়সে ভর্তি করতে রাজী ছিল না৷ অগত্যা, তিনি তার মায়ের কাছে পড়াশোনা করেন এবং ৬ বছর বয়সে তিনি তার ডিপ্লোমা অর্জন করেন। অতঃপর, তিনি তার জুনিয়র কলেজ ক্যারিয়ার শুরু করেন। দ্য তুসকালুসা নিউজ নামে যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি সংবাদমাধ্যমে ১৯৯৮ সালে তাকে নিয়ে আরেকটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। ততদিনে তিনি মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেছেন। উক্ত প্রতিবেদন থেকেও জানা যায়, ৫ বছর বয়সে স্যান ম্যারিন হাইস্কুলে তাকে ভর্তি করা হয় এবং এক বছর পর ৬ বছর বয়সে তিনি হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হোন। লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসে ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তিনি ১০ বছর বয়সেই কলেজ সম্পন্ন করেন। তার বাবা একজন সাবেক মার্কিন নেভি অফিসার এবং তার মা জাপানিজ-আমেরিকান। জিনিয়াসেস নামের একটি প্ল্যাটফর্মে মাইকেলের সম্পর্কে বেশ বিস্তৃত তথ্য পাওয়া যায় যেখানে দেখা যায় তার জন্ম আমেরিকায় এবং সে একজন আমেরিকান।

তাছাড়া, ব্রিটিশ শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে ২০২৩ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আমেরিকার পেনসিলভেনিয়ায় ৯ বছর বয়সে ডেভিড বালোগান নামে একজন ছাত্র হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হয়েছে। অর্থাৎ, এই ছাত্রটিও সুবর্ণের চেয়ে কম বয়সেই হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হয়েছে। গার্ডিয়ানের উক্ত রিপোর্টে সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হিসেবে ৬ বছর বয়সে হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হওয়া মাইকেল কার্নির নাম উল্লেখ করা হয় এবং বলা হয়, মাইকেল কার্নিই তখনও (প্রতিবেদন প্রকাশকালীন) এই ক্ষেত্রে গিনেস রেকর্ডধারী৷ তবে, গিনেস রেকর্ডের ওয়েবসাইটে মাইকেল কার্নির নামে রেকর্ডের পেজটি পাওয়া যায়নি। পূর্ববর্তী সময়ে থাকলেও হয়তো পরবর্তী সময়ে সেটি মুছে ফেলা হয়েছে প্রতীয়মান হচ্ছে। এই বিষয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, ডেভিডকে নিয়ে ফক্স ৪ কেসি নামক সংবাদমাধ্যমেও একই তথ্য উল্লেখ করতে দেখা যায়। আফ্রিকান আমেরিকানদের নানা তথ্য কিংবা সংবাদ প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাক নিউজে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে থেকেও একই তথ্য জানা যায়। উক্ত একই প্রতিবেদনে তাকে আফ্রিকান-আমেরিকান বলেও দাবি করা হয়।

এছাড়া, তানিশক আব্রাহাম নামে আরেকজন শিক্ষার্থীর সম্পর্কে জানা যায়। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, সে মাত্র ১০ বছর বয়সেই হাইস্কুলের পড়াশোনা সম্পন্ন করে ১১ বছর বয়সের মধ্যেই তিনটি এসোসিয়েট ডিগ্রি অর্জন করেছিল। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে তার সম্পর্কে জানা যায়, তাকে ৭ বছর বয়স থেকেই গৃহশিক্ষা প্রদান করা হয়েছে। একই তথ্য জানা যায়, বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকেও। তাকে নিয়ে ভারতীয় মূলধারার গণমাধ্যম এনডিটিভিতেও একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সে একজন ভারতীয়-আমেরিকান।

সুতরাং, সুবর্ণ বারীর নিজের পঠিত লং আইল্যান্ডের মালভার্ন হাই স্কুলের ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হওয়ার বিষয়কে তার আমেরিকার সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হওয়ার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

দ্য হান্ড্রেড-এ রিশাদ হোসেন খেলার দাবিতে পাকিস্তানি স্পিনার উসামা মীরের ভিডিও প্রচার

0

সম্প্রতি, ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড পরিচালিত ১০০-বলের ক্রিকেট ফ্র্যাঞ্চাইজ লীগ দ্য হান্ড্রেড-এ একমাত্র বাংলাদেশি খেলোয়াড় হিসেবে রিশাদ হোসেন দূর্দান্ত পারফরমেন্স দেখাচ্ছেন যার অংশ হিসেবে ইংলিশ ক্রিকেটার ও ওভাল ইনভিন্সিবলসের ব্যাটার দাউদ মালানকে তার বোলিংয়ের মাধ্যমে আউট করার দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

দ্য হান্ড্রেড

টিকটকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি টিকটকে প্রচারিত উক্ত দাবির ভিডিওই দেখা হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ৯০ হাজার ৬৪০ বার। এছাড়াও ভিডিওটিতে প্রায় ১২ হাজার ৪৬৮ পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়াও দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি ভিডিওটিতে ২৯৫ টি মন্তব্যও করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি দ্য হান্ড্রেড-এ রিশাদ হোসেনের দূর্দান্ত বোলিংয়ের মাধ্যমে দাউদ মালানের উইকেট পতনের কোনো ঘটনার নয়। ভিডিওতে বোলিংরত অবস্থায় দেখতে পাওয়া ব্যক্তিও বাংলাদেশি স্পিনার রিশাদ হোসেন নয় বরং, তিনি পাকিস্তানি লেগ স্পিনার উসামা মীর। এছাড়াও রিশাদ হোসেন ফ্র্যাঞ্চাইজ লীগ দ্য হান্ড্রেড-এ খেলছেন না।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওতে থাকা Malan নামটি এবং টেলিভিশন চ্যানেল Sony Liv এর লোগোর সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Sony Liv এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ৬ আগস্ট Manchester Originals vs Oval Invincibles | Highlights | The Hundred | 6th August 2024 শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Youtube

উক্ত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে এর ১ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডে ইংলিশ ক্রিকেটার ও  ওভাল ইনভিন্সিবলসের খেলোয়াড দাউদ মালানের আউট হওয়ার দৃশ্যটি দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও মালানের নামের পাশে বোলারের নামের জায়গায় মীর নামটি দেখতে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ভিডিওটির ৩৬ সেকেন্ডে প্রদর্শিত উভয় দল ম্যানচেস্টার অরিজিনালস এবং ওভাল ইনভিন্সিবলস-এর খেলোয়াড়ে নামের তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দাউদ মালানের উইকেট নেওয়া ব্যক্তির উসামা মীর, রিশাদ হোসেন নয়। এছাড়াও তিনি একজন পাকিস্তানি খেলোয়াড়।

Screenshot College by Rumor Scanner

পরবর্তীতে রিশাদ হোসেন এবারের দ্য হান্ড্রেড-এর আসরে খেলছেন কিনা তা জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমেও গণমাধ্যম কিংবা কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, ২০২১ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হওয়া ইংল্যান্ডের ঘরোয়া টুর্নামেন্ট দ্য হানড্রেডে এ পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশি খেলোয়াড় খেলার সুযোগ না পেলেও এবারের নিলামের তালিকায় সাকিব-তামিমসহ ১৫ জন বাংলাদেশি ক্রিকেটার নিবন্ধন করেন। তবে এবারের আসরেও তাদের খেলার বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ফ্র্যাঞ্চাইজ লীগ দ্য হান্ড্রেড-এ পাকিস্তানি স্পিনার উসামা মীরের বোলিংয়ের দৃশ্যকে বাংলাদেশি স্পিনার রিশাদ হোসেনের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে ; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মোহাম্মদপুরে ডাকাত পাহারায় গিয়ে যুবক যুবতীর মধ্যে প্রেম ও বিয়ের সিদ্ধান্ত দাবিতে কালবেলার নামে ভুয়া তথ্য

0

গত ০৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পর দেশব্যাপী পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় কয়েক দফা দাবি জানিয়ে ০৬ আগস্ট পুলিশ সদস্যরা কর্মবিরতির ঘোষণা দিলে দেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়ে। আর এই সুযোগে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনার অভিযোগ উঠেছে। মোহাম্মদপুরে ডাকাত–আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে প্রতিরোধে রাস্তায় নেমে আসেন শিক্ষার্থীসহ এলাকার বাসিন্দারা।

এরই প্রেক্ষিতে, মূল ধারার গণমাধ্যম কালবেলার সূত্র ব্যবহার করে ‘মোহাম্মদপুরে ডাকাত পাহারা দিতে গিয়ে যুবক যুবতীর মধ্যে প্রেম, পারিবারিক ভাবে আগামী শুক্রবার বিয়ের সিদ্ধান্ত!’ শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

মোহাম্মদপুরে ডাকাত

ফেসবুক পোস্ট: এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কালবেলার সূত্র ব্যবহার করে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ডাকাত পাহারা দিতে গিয়ে যুবক যুবতীর মধ্যে প্রেম এবং পারিবারিক ভাবে আগামী শুক্রবার বিয়ের সিদ্ধান্ত দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সঠিক নয় এবং কালবেলা এমন কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, গুজব ছড়ানোর উদ্দেশ্যে আলোচিত দাবিটি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে কালবেলা কোনো সংবাদ প্রকাশ করেছে কিনা সে বিষয়ে জানতে কালবেলার ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ, ইউটিউবে এ বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। অন্যান্য গণমাধ্যম সূত্রেও এমন কোনো ঘটনার বিষয়ে জানা যায়নি। 

বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য কালবেলার অনলাইন বিভাগের প্রধান পলাশ মাহমুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আলোচিত দাবিটি ‘ফেইক’ বলে জানান।

সুতরাং, কালবেলাকে সূত্র হিসেবে ব্যবহার করে  ‘মোহাম্মদপুরে ডাকাত পাহারা দিতে গিয়ে যুবক যুবতীর মধ্যে প্রেম, পারিবারিক ভাবে আগামী শুক্রবার বিয়ের সিদ্ধান্ত!’ শীর্ষক দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Statement from Palash Mahmud 
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে হবিগঞ্জে আওয়ামী লীগের মিছিল দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের গণআন্দোলনের মুখে গত ০৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই প্রেক্ষিতে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে গত ০৮ আগস্ট  হবিগঞ্জে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা

এই দাবিতে প্রচারিত ফেসবুক পোস্ট: এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে ০৮ আগস্ট হবিগঞ্জে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সেদিনের নয় বরং, ভিডিওটি গত ০৩ আগস্টের ভিন্ন ঘটনার।

অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, মিছিলের ব্যানারে হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী অঙ্গ সংগঠন এর পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়, ‘বিএনপি ও জামাত শিবিরের সন্ত্রাসী দ্বারা হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অগ্নি সংযোগ ও হবিগঞ্জ সদর আসনের এমপি’র বাসা, সরকারি স্থাপনা ও সাধারণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও হামলার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি ও দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল।

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Dinrat News।দিনরাত নিউজ’ নামের ফেসবুক পেজে গত ০৩ আগস্ট ‘হবিগঞ্জে লাঠি হাতে রাস্তায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একই ভিডিওটি পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

এছাড়া, স্থানীয় সাংবাদিক ‘সুশীল চন্দ্র দাস’ এর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ০৩ আগস্ট উক্ত ব্যানারে ‘হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের মিছিল….’ শীর্ষক শিরোনামে একই বিক্ষোভ মিছিলের আরেকটি ভিডিও পাওয়া যায়। এছাড়া, ‘Habiganj News’ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ০৩ আগস্ট ‘হ‌বিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয় আগুনে পুড়া‌নোর প্রতিবা‌দে হ‌বিগঞ্জ জেলা  আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ সভা ও মি‌ছিল ক‌রে জেলা আওয়ামী লীগে’ শীর্ষক ক্যাপশনে একই মিছিলের আরও একটি ভিডিও পাওয়া যায়। 

উল্লেখ্য, প্রথম আলো গত ০২ আগস্ট ‘হবিগঞ্জে পুলিশ-ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ, আ.লীগের কার্যালয়ে আগুন’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ০২ আগস্ট হবিগঞ্জ শহরের তিনকোনা পুকুরপাড় এলাকায় বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ–ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ চলাকালে স্থানীয় সংসদ সদস্যের বাড়ি ভাঙচুর ও জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করার ঘটনা ঘটে। 

তবে ০৫ আগস্টের পর আর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হবিগঞ্জ শহরে দেখা যায়নি বলে গণমাধ্যমের খবরে জানা যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে গত ০৮ আগস্ট বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ।

সুতরাং, গত ০৩ আগস্টের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিওকে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ০৮ আগস্ট হবিগঞ্জে আওয়ামী লীগের মিছিল দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

চট্টগ্রামে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকালে হিন্দু মেয়েকে অপহরণের ভুয়া তথ্য

0

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের গণআন্দোলনের মুখে গত ০৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার পতনের পর দেশের ট্রাফিক পুলিশসহ পুলিশের অধস্তন সদস্যরা জীবনের নিরাপত্তার শঙ্কায় কর্মবিরতীতে চলে গেলে সড়কে শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এর প্রেক্ষিতে, গত ০৮ আগস্ট চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ এলাকা থেকে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকালে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় এক হিন্দু মেয়েকে অপহরণের উদ্দেশ্যে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দাবিতে ‘সিএনজিচালিত অটোরিকশার’ একটি ছবিসহ তথ্যটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ট্রাফিকের

ফেসবুক পোস্ট: এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চট্টগ্রামে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকালে অটোরিকশায় হিন্দু নারীকে অপহরণের উদ্দেশ্যে তুলে নিয়ে যাওয়া যাওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং, ফাতিমা জিন্নাত নামের উক্ত মুসলিম নারীকে তার বাবা ও স্বামী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি চিৎকার করলে ভুল–বোঝাবুঝি হওয়ার ফলে সামাজিক মাধ্যমে আলোচিত দাবিটি ছড়িয়ে পড়ে।

অনুসন্ধানে মূল ধারার গণমাধ্যম ‘চ্যানেল২৪’ এর ওয়েবসাইটে গত ০৯ আগস্ট প্রকাশিত এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকেও ওই নারীকে অপহরণের কথা বলা হয়। জেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরে খোঁজ নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগে ওই নারীর সন্ধান পান এবং জানা যায়, ওই নারীকে তার বাবা ও স্বামী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় তিনি চিৎকার করলে ভুল–বোঝাবুঝি হয়।

এই বিষয়ে ‘প্রথম আলো’ প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়।

বিডিনিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে গত ০৮ আগস্ট ‘অপহরণের’ খবর ছড়িয়ে পড়া নারীর সন্ধান মিলল চট্টগ্রাম মেডিকেলের মনোরোগ বিভাগে’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ওই নারীর নাম ফাতিমা জিন্নাত।

সুতরাং, বাবা ও স্বামী এক নারীকে  হাসপাতালে নেওয়ার সময় তিনি চিৎকার করলে ভুল–বোঝাবুঝি হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চট্টগ্রামের ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকালে এক হিন্দু মেয়েকে বা এক নারী শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ড. ইউনূস দেশ থেকে রিয়াল মাদ্রিদ ভক্তদের বের করে দিবেন দাবিতে আরটিভির নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘আমার প্রথম টার্গেট বাংলাদেশ থেকে রিয়াল মাদ্রিদ ফ্যান বের করে দেওয়া’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভি-র লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

আরটিভির

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ফটোকার্ড দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং  এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের রিয়াল মাদ্রিদ ভক্তদের প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেননি। এছাড়া আরটিভিও এমন কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আরটিভির ফটোকার্ড নকল করে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ড পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটি প্রচারের তারিখ ০৬ আগস্ট ২০২৪ উল্লেখ রয়েছে। এটির সূত্রে আরটিভির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ৬ আগস্ট প্রচারিত এমন কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও আরটিভির ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলেও এ সংক্রান্ত কোনো সংবাদ খুজে পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি, অন্য কোনো গণমাধ্যমেও এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও আরটিভির ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডের সাথে এর বেশ কিছু অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়। আরটিভির পেজে প্রকাশিত দুই লাইনের শিরোনাম যুক্ত ফটোকার্ডে শিরোনাম লেখার ক্ষেত্রে সাধারণত সাদা এবং হলুদ দুটো রং ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কিন্তু উক্ত ফটোকার্ডটি শুধুমাত্র সাদা রং ব্যবহার করা হয়েছে। পাশাপাশি আলোচিত ফটোকার্ডটিতে একট ইমোজি ব্যবহার করা হয়েছে। যা আরটিভির ফটোকার্ডে কখনোই ব্যবহার করা হয় না।

Photocard Comparison by Rumor Scanner

পরবর্তীতে ফটোকার্ডটিতে ব্যবহৃত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Mizanul Islam নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৬ সালের ১০ আগস্ট Dr. Yunus invited by Barcelona Football Club শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Youtube

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ছবিটি উক্ত ভিডিও থেকে নেওয়া হয়েছে। 

২০১৬ সালে স্প্যানিশ ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনার আমন্ত্রণে ক্যাম্প ন্যু পরিদর্শনে যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে গিয়ে খেলোয়াড়দের সাথে দেখা করার পাশাপাশি বাংলাদেশি ভক্তদের বার্সেলোনার প্রতি যে ভালোবাসা তা প্রকাশ করে তিনি একটি সাক্ষাৎকার প্রদান করেন। উক্ত ভিডিওটি তার দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারেরই ভিডিও। 

সুতরাং, আমার প্রথম টার্গেট বাংলাদেশ থেকে রিয়াল মাদ্রিদ ফ্যান বের করে দেওয়া শীর্ষক মন্তব্য ড. ইউনুস করেছেন দাবিতে আরটিভির নামে নকল ফটোকার্ডে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবির ফিরছে দাবিতে নয়া দিগন্ত এর নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

0

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরছে, মেয়েদের জন্য বাধ্যতামূলক হচ্ছে বোরখা, হারাম প্রেম নিষিদ্ধ দাবিতে জাতীয় দৈনিক নয়া দিগন্ত এর লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে

ফেসবুক পোস্ট: এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরছে শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে নয়া দিগন্ত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং গণমাধ্যমটির ফটোকার্ডের আদলে ভুয়া তথ্য সম্বলিত নকল এই ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণে এতে নয়া দিগন্তর লোগো থাকার বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হয়। পরবর্তীতে নয়া দিগন্তর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। অন্য কোনো মূলধারার গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তাছাড়াও নয়া দিগন্তর ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলোর সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির শিরোনামের লেখার সাথে নয়া দিগন্ত এর ফটোকার্ডের শিরোনাম লেখার ফন্ট ও কালারের মধ্যে ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া, ‘ইবিতে ফিরছে শিবির’ লেখাটি বন্ধনীর মধ্যে থাকায়  অসামঞ্জস্যতা লক্ষ্য করা যায়।

Photocard Comparison: Rumor Scanner

নয়া দিগন্তর ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণে গত ০৯ আগস্ট এই বিষয়ে একটি ফটোকার্ড পোস্টের মাধ্যমে উল্লেখ করা হয় ‘এমন কোনো খবর নয়া দিগন্ত প্রচার করেনি।’

সুতরাং, ছাত্রশিবির ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরছে তথ্যে বা শিরোনামে ‘নয়া দিগন্ত’ লোগো ব্যবহার করে ইন্টারনেটে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

  • Daily Naya Diganta: Facebook Page Post
  • Rumor Scanner’s own analysis

ব্যারিস্টার সুমন সম্প্রতি লন্ডনে হেনস্থার শিকার দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনের পথ ধরে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে গত ০৫ আগস্ট পদত্যাগ করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিদায় নিয়েছে তার সরকার। ভেঙে দেওয়া হয়েছে ১২তম জাতীয় সংসদ। এরই প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতা, সরকারের মন্ত্রী ও এমপিদের দেশ ছাড়ার চেষ্টা বা আত্মগোপনে যাওয়ার খবর আসছে গণমাধ্যমে। সম্প্রতি হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হক (ব্যারিস্টার সুমন) লন্ডনে পালিয়ে গিয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুক পোস্ট এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং এটি গত বছরের অক্টোবরে ব্রাজিলের সাবেক ফুটবলার রোনালদিনহো বাংলাদেশে আসার অনুষ্ঠানের।

অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে বেসরকারি ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম একাত্তর টিভির ক্রীড়া সাংবাদিক অর্ণব বাপিকে লক্ষ্য করা যায়।

ব্যারিস্টার সুমন
Screenshot: Facebook

ঘটনার প্রেক্ষাপট জানতে তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, “এই ফুটেজটি প্রায় এক বছর আগের। নির্দিষ্ট তারিখ এই মুহুর্তে মনে নেই সেদিন ব্রাজিলিয়ান সাবেক ফুটবলার রোনালদিনহো বাংলাদেশে এসেছিল। ঢাকার হোটেল রেডিসন ব্লু’তে আমাদের সংবাদকর্মীদের আমন্ত্রণ ছিল। আয়োজকদের সাথে মিডিয়ার প্রেস কনফারেন্স কভার নিয়ে ঝামেলা হয়। তখন ব্যারিস্টার সুমন আমাদের অনুরোধ জানায় অনুষ্ঠানটি কভারের জন্য। না হলে সে ও এখানে থাকবে না। সেটারই একটা ছোট্ট মুহুর্ত এটা।”

পরবর্তী অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক সমকালের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১৮ অক্টোবর “রোনালদিনহো’র অনুষ্ঠান বয়কট করলেন সাংবাদিকরা, যা বললেন ব্যারিস্টার সুমন” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনের পরিবেশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

Screenshot Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত বছরের ১৮ অক্টোবর ব্রাজিলিয়ান সাবেক ফুটবলার রোনালদিনহো বাংলাদেশে আসার অনুষ্ঠানে আয়োজকের সাথে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের আসন নিয়ে বাগবিতণ্ডা হলে সাংবাদিকগণ উক্ত অনুষ্ঠান বয়কট করেন।

আরেক গণমাধ্যম নিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে “অপমানে রোনালদিনহোর অনুষ্ঠান বয়কট সাংবাদিকদের” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। 

উল্লেখ্য, সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হকের (ব্যারিস্টার সুমন) বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হক লন্ডনে পালিয়ে গিয়েছেন দাবিতে গত বছরের ভিন্ন ঘটনার ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র