Home Blog Page 344

সমকামীদের নিয়ে সারজিস আলমের নামে প্রচারিত মন্তব্যটি ভুয়া

0

সম্প্রতি, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম ‘এবার আমার র*ক্তচক্ষুর চাহনি, সম*কামীদের জন্য। কোথায় পালিয়ে যাস,দেখবো!’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

সারজিস আলমের

উক্ত দাবিতে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম সমকামীদের নিয়ে ফেসবুকে এমন কোনো পোস্ট করেননি বরং সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে সারজিস আলমের নাম ব্যবহার করে আলোচিত তথ্যটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে Sarjis Alam এর নাম ও ছবিযুক্ত কয়েকটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও পেজে খুঁজে পাওয়া পায় রিউমর স্ক্যানার টিম যে পেজগুলোতে আলোচিত মন্তব্যটি পোস্ট(, , ) করা হয়। রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে আলোচ্য ফেসবুক পোস্ট করা অ্যাকাউন্ট ও পেজগুলো সারজিস আলমের আসল অ্যাকাউন্ট বা পেজ নয় বলে প্রতীয়মান হয়।

Screenshot: Facebook

অনুসন্ধানে সারজিস আলমের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এমন কোন ফেসবুক পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়নি। উক্ত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে সারজিস আলম গত ৬ আগস্ট লাইভে এসে তার আর কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বা পেজ না থাকার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সুতরাং, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম ‘এবার আমার র*ক্তচক্ষুর চাহনি, সম*কামীদের জন্য। কোথায় পালিয়ে যাস,দেখবো!’ শীর্ষক তথ্য ফেসবুকে পোস্ট করেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

কলকাতার নারী চিকিৎসকের পোস্টমর্টেমের ভিডিও দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার

গত ৯ আগস্ট ভারতের কলকাতায় আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নারী চিকিৎসক মৌমিতা দেবনাথকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটিনার প্রতিবাদে প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গজুড়ে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ মানুষেরা। এরই প্রেক্ষিতে, উক্ত চিকিৎসকের পোস্টমর্টেমের ভিডিও দাবিতে একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

পোস্টমর্টেমের

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধিআলোচিত দাবিতে প্রচারিত একটি ভিডিওই ৪০ লক্ষবার দেখা হয়েছে এবং ৬২ হাজার রিয়েকশন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ৩ হাজার ৫ শতবার শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি কলকাতায় আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নারী চিকিৎসক মৌমিতাকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় পোস্টমর্টেমের ঘটনার নয় বরং উক্ত নারী চিকিৎসকের মৃত্যু হওয়ার আগ থেকেই আলোচিত ভিডিওটি ইন্টারনেটে বিদ্যমান রয়েছে।

ভিডিওটির কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স সার্চের মাধ্যমে, Hesty Rahmawati নামক ফেসবুক পেজে গত ৮ জুলাই তারিখে প্রকাশিত একটি ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণীতে উক্ত ঘটনার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জানা না গেলেও ভিডিও প্রকাশের তারিখ থেকে এটা নিশ্চিত যে ভিডিওটি সম্প্রতি ভারতের কলকাতায় আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনার পোস্টমর্টেমের দৃশ্যের নয়। অর্থাৎ, ৯ আগস্ট এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও এর অন্তত এক মাস আগে থেকেই আলোচিত ভিডিওটি ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে।

সুতরাং, ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিওকে ভারতের কলকাতায় আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নারী চিকিৎসক মৌমিতাকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনার পোস্টমর্টেমের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে ২০৫০ পদে নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া

0

সম্প্রতি, “উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে নিয়োগ” শীর্ষক শিরোনামে স্বাস্থ্য বিভাগের অধীনে বিভিন্ন পদে ২০৫০ জন নিয়োগ প্রদানের একটি বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে।

নিয়োগ

ফেসবুকে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

এই বিজ্ঞপ্তির একটি ভাইরাল পোস্টে ৩০ হাজার এর অধিক একাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। পাশাপাশি প্রায় সাড়ে ৬ হাজারের বেশি মন্তব্য এবং তিন হাজারের অধিক শেয়ার হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, স্বাস্থ্য বিভাগ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করেনি বরং এটি একটি ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। 

অনুসন্ধানের শুরুতেই Uhafpc নামের যে ফেসবুক পেজ থেকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি প্রচারিত হয় সেটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, উক্ত পেজ থেকে একই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দুইটি পোস্ট করা হয়েছে। প্রথমটি গত ২০ মার্চ  এবং দ্বিতীয় গত ২০ আগস্ট

উক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সূত্র হিসেবে গত ১৭ আগস্ট তারিখের দৈনিক নয়াদিগন্ত এর চতুর্থ পৃষ্ঠা এবং দৈনিক ভোরের পাতার পঞ্চম পৃষ্ঠা উল্লেখ করা হয়েছে। 

তবে Uhafpc নামের ফেসবুক পেজে উক্ত বিজ্ঞপ্তিটি প্রথম পোস্ট করা হয় গত ২০ মার্চ। যা সূত্রে উল্লেখিত পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের অন্তত পাঁচ মাস আগের৷ 

এছাড়া, গত ১৭ আগস্ট দৈনিক নয়াদিগন্ত এর প্রিন্ট সংস্করণ পর্যবেক্ষণ করে এসংক্রান্ত কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া গত ১৭ আগস্ট ভোরের পাতার প্রিন্ট সংস্করণ প্রকাশিত হয়নি। এমনকি গণমাধ্যম দুইটির ওয়েবসাইটেও এসংক্রান্ত কোনো বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পাশাপাশি, আলোচিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটির বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তব ওয়েবসাইটটিতে এমন কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, “উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে নিয়োগ” সংক্রান্ত আলোচিত এই বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মদদ দিলে আজীবন বহিষ্কারের নির্দেশনা দিয়ে বিএনপির নামে প্রচারিত এই বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া

0

সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর “বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মী আওয়ামীলীগ নেতাদের মদদ দিলে আজীবন বহিষ্কার” দাবিতে দলটির অফিশিয়াল প্যাডে লেখা একটি কথিত বিজ্ঞপ্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষর সম্বলিত প্রচারিত কথিত ঘোষণাপত্রটির সারমর্ম এমন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, ছাত্রদল, কৃষকদল, শ্রমিকদল, মহিলাদল সহ সকল অঙ্গসংগঠনের জেলা, থানা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, ইউনিট, ইত্যাদি পর্যায়ের নেতাকর্মীকে আদেশ করা হচ্ছে যারা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগ, শ্রমিকলীগ, মহিলালীগ সহ আওয়ামীলীগের অঙ্গসংগঠন, আওয়ামীগের আত্বীয় বা গোষ্ঠী কে যে সকল বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মীরা মদদ দিচ্ছেন সাথে করে নিয়ে ঘুরছেন, তাদের ব্যাপারে সুপারিশ করছেন, তাদের বাসায় বাসায় গিয়ে সান্ত্বনা দিচ্ছেন, বলছেন আমার আত্মীয়, আমার বন্ধু, সেই সব বিএনপির নেতা কর্মী কে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন থেকে আজিবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে।

আওয়ামী

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপির নামে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তিটি দলটি প্রকাশ করেনি বরং বিএনপির পক্ষ থেকে এই ঘোষণাপত্রকে ভুয়া বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে ঘোষণাপত্রটির বিষয়ে বিএনপির অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ এবং মিডিয়া সেল এর ফেসবুকে পেজে অনুসন্ধান করলে এমন কোনো বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে বিএনপির মিডিয়া সেলের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে আজ (৩০ আগস্ট) রুহুল কবির রিজভীর পাঠানো একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: BNP Media Cell

বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং তার সাথে আলোচিত বিজ্ঞপ্তিটির কোনো সম্পর্ক নেই। পাশাপাশি তিনি বিজ্ঞপ্তিটিকে ভুয়া ও বিভ্রান্তিমূলক উল্লেখ করেন এবং এটি উদ্দেশ্যপ্রণোতিতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করার কথা জানান।

এছাড়া, আলোচিত বিজ্ঞপ্তিটিতে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে বিএনপি কর্তৃক প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে ব্যবহৃত ফন্টের মধ্যেও পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।

Notice Comparison By Rumor Scanner

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম বা বিশ্বস্ত সূত্রে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষর সম্বলিত ভুয়া একটি বিজ্ঞপ্তিটির ছবি ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মার্কিন সেনাদের সেন্টমার্টিন দখলের ভিডিও দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশিক্ষণ ঘাঁটির ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রসঙ্গে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, তিনি জনগণকে বন্যা এবং ভারত বিরোধী রাষ্ট্রীয় সংকটের মধ্যে রাখার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন দখল করে নিয়েছে এবং সেখানে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণের ঘাঁটি তৈরি করেছে।

সেন্টমার্টিন

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি মার্কিন সেনাবাহিনীর সেন্টমার্টিন দখল করে তাতে সামরিক ঘাঁটি তৈরির দৃশ্য নয় বরং, ভিডিওটি যুক্তরাষ্ট্রে সেনা প্রশিক্ষণ ঘাটিতে ২০২১ সালে ধারণ করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Fit One Tech নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ৬ জুলাই Infantry OSUT Basic Trainees Training Mounted Ops and Urban Ops Fort Benning 2021 শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল রয়েছে। উভয় ভিডিওতে দেখানো ইংরেজি বাক্যও একই। এছাড়াও ভিডিওটির শিরোনাম পর্যালোচনার মাধ্যমে জানা যায়, ভিডিওটি Fort Benning নামের স্থানে ২০২১ সালে ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি এটিও জানা যায়, এটি মূলত Mounted Ops এবং Urban Ops নামের দুটো বিশেষ গ্রুপের Infantry OSUT Basic প্রশিক্ষণের ভিডিও।

এসব তথ্যের সূত্রে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১২ মে Georgia’s Fort Benning drops Confederacy connection with new name in honor of a military couple শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, Fort Benning মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বাস এবং জর্জিয়া শহরের অদূরে অবস্থিত একটি বৃহৎ সেনা প্রশিক্ষণ ঘাঁটি। 

মার্কিন সেনাবাহিনীর ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর 22-week Infantry OSUT pilot program trainees graduate at forefront of Soldier Lethality শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, Infantry OSUT Basic হচ্ছে একটি ২২ সপ্তাহব্যাপী চলমান একটি প্রশিক্ষণ। এটি Fort Benning সেনা প্রশিক্ষণ ঘাঁটিতে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

সুতরাং, মার্কিন সেনাদের সেন্টমার্টিন দখলের ভিডিও দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশিক্ষণ ঘাঁটির পুরোনো ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

শাহজালাল বিমানবন্দরে ড. ইউনূসের নতুন উদ্যোগ দাবিকৃত সেবাগুলো পূর্বে থেকেই বিদ্যমান

ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে গত ০৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। ০৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরইমধ্যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিমানবন্দরে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। দাবি করা হচ্ছে, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর বিমানবন্দরের যাত্রী সেবায় ফ্রি টেলিফোন, ফ্রি ওয়াইফাই, হেল্প ডিস্ক, কাষ্টমার সার্ভিস, দ্রুত ল্যাগেজ প্রদান, ভালো ব্যবহার, ল্যাগেজ ভাঙ্গলে বা কোন কিছু চুরি হলে, কর্মীদের বেতন থেকে টাকা কাটা হবে এই ধরণের নতুন উদ্যোগগুলো নেওয়া হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত দাবিতে টিকটকের ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে একাত্তর টিভির একটি ভিডিও প্রতিবেদনও প্রচার করছেন নেটিজেনরা। দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।  

একই দাবিতে ফেসবুকে জাতীয় দলের ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মুখলেস রহমান, রেডিও জকি রাফসান শান্ত। 

একই দাবিতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন ডিবিসি নিউজ, ইনডিপেনডেন্ট টিভি, মানবকণ্ঠ, ভোরের পাতা।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্যোগ দাবিতে প্রচারিত তথ্যগুলো তার সময়ে নেওয়া নয় বরং, ড. ইউনূসের দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে থেকেই উক্ত সেবাগুলো পাচ্ছেন বিমানবন্দরের যাত্রীরা। 

গুচ্ছ দাবিগুলো নিয়ে ফেসবুকে অন্তত গত ২৬ আগস্ট থেকে পোস্ট পাওয়া যায়। এসব পোস্টে এ বিষয়ে কোনো তথ্য প্রমাণ উল্লেখ করা হয়নি। 

নেটিজেনরা একাত্তর টিভির যে ভিডিও প্রতিবেদনটি প্রচার করছেন একাত্তর টিভি তা প্রচার করে ২০২২ সালের ০৬ অক্টোবর। সেদিন ইউটিউবে প্রকাশিত এই প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হেল্পডেস্ক, বিনা পয়সায় টেলিফোন বুথ,  ফ্রি ওয়াইফাই, কনভেয়ার বেল্টে লাগেজ আসার সময়ও আগের চেয়ে কমে গেছে। বিমানবন্দরে বিনামূল্যে কথা বলতে আগমনী টার্মিনালে বসানো হয়েছে ১০টি টেলিফোন বুথ। হেল্প ডেস্কে দিনরাত কাজ করছেন ৫৪ জন কর্মী।

অর্থাৎ, ফ্রি টেলিফোন, ফ্রি ওয়াইফাই, হেল্প ডেস্ক, দ্রুত ল্যাগেজ প্রদানের মতো উদ্যোগগুলো অন্তত ২০২২ সাল থেকেই বাস্তবায়নের তথ্য জানা যাচ্ছে। 

অথচ, এই দাবিগুলোই নতুন উদ্যোগ বলে বর্তমানে প্রচার করছে দেশেরই কতিপয় গণমাধ্যম। 

Screenshot: DBC News

গত মার্চে অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা পোস্টকে সাক্ষাৎকার দেন বিমানবন্দরটির নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম। এই সাক্ষাৎকারটি বিমানবন্দরের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটেও প্রকাশিত হয়। এই সাক্ষাৎকারে জনাব কামরুল জানান, বিমানবন্দরে অবতরণ করার পরে যাত্রীদের লাগেজ পেতে বিলম্ব হওয়ার অনেক অভিযোগ ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠে এসেছে। বর্তমানে এ  সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে সার্বক্ষণিক তদারকির মাধ্যমে এক ঘণ্টা বা তার কম সময়ে যাত্রীদের কাছে লাগেজ ডেলিভারি নিশ্চিত করা হচ্ছে। লাগেজ ডেলিভারি পেতে সমস্যার সম্মুখীন হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি কর্তৃক তাৎক্ষণিক সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রায় ৮০% যাত্রীর কাছে ১৫ মিনিট থেকে ৫৫ বা ৬০ মিনিটের মধ্যে লাগেজ ডেলিভারি নিশ্চিত করা হয়েছে।

কামরুল বলছিলেন, যাত্রীদের যাত্রা সুন্দর ও আরামদায়ক করার প্রয়াসে ৫টি হেল্প ডেস্ক চালু করা হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে ফ্রি টেলিফোন বুথ, ফ্রি ইন্টারনেট। যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে আগমনী এলাকায় ২টি এবং বহির্গমন এলাকায় ৩টি হেল্প ডেস্ক স্থাপনের মাধ্যমে ৫৪ জন সহকর্মী ২৪ ঘণ্টা বিনামূল্যে যাত্রীদের বিভিন্ন তথ্য ও দিকনির্দেশনা প্রদান করে যাচ্ছেন। 

অর্থাৎ, আলোচিত দাবিতে যে সেবাগুলোর কথা বলা হচ্ছে, তা গত মার্চেই বিদ্যমান থাকার কথা উঠে এসেছে বিমানবন্দর প্রধানের বক্তব্যে। 

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া রিউমর স্ক্যানারকে বলছেন, “কিছু পরিষেবা বিদ্যমান ছিল, কিন্তু পরিষেবাগুলো আরও উন্নতি হয়েছে। আমরা ক্রমাগত ভাল পরিষেবা নিশ্চিত করেছি এবং কিছু অতিরিক্ত ব্যবস্থার মাধ্যমে তত্ত্বাবধানের উপর জোর দিয়েছি। এয়ারলাইন্সগুলোকেও ব্রিফ করা হয়েছিল এবং তারা আরও ভাল পরিষেবার জন্য এগিয়ে এসেছিল। এটি একটি দলীয় কাজ এবং সবাই এই অভিন্ন লক্ষ্যের জন্য কাজ করতে অনুপ্রাণিত হয়। এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।”

সুতরাং, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শাহজালাল বিমানবন্দরে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছেন দাবিতে পূর্বে থেকে বিদ্যমান সেবার বিষয়ে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।   

তথ্যসূত্র 

প্রধান উপদেষ্টা ও ধর্ম উপদেষ্টাকে জড়িয়ে পর্ণ ওয়েবসাইট বন্ধের ভুয়া তথ্য প্রচার

0

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ০১ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশে সকল পর্ণ ওয়েবসাইট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন- শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

একই দাবি একটু পরিবর্তন করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইনের বরাতেও প্রচার করা হচ্ছে। 

ধর্ম উপদেষ্টার বরাতে প্রচারিত দাবি হচ্ছে- আগামী ০১ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ মাসের জন্য বাংলাদেশে সকল পর্ণ ওয়েবসাইট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন।

পর্ণ ওয়েবসাইট

ধর্ম উপদেষ্টার বরাতে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বরাতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কিংবা ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইন কেউই আগামী ০১ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ মাসের জন্য বাংলাদেশে সকল পর্ণ ওয়েবসাইট বন্ধের নির্দেশ দেননি, বরং ধর্ম উপদেষ্টার নামে একটি ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আলোচিত দাবিটি প্রথম পোস্ট করা হয়। এছাড়া, ২০১৬ সাল থেকেই বাংলাদেশে পর্ণ ওয়েবসাইট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। 

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আলোচিত দাবির স্বপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে উক্ত দাবির সূত্রপাতের বিষয়ে অনুসন্ধান করা হয়। ফেসবুক মনিটরিং টুল ব্যবহার করে গতকাল (২৮ আগস্ট) ‘ড. আ.ফ.ম খালিদ হোছাইন’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত একটি পোস্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। 

ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইনের নামে খোলা একটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট।

এরপর ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইনের মূল ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এবং পেজ পর্যবেক্ষণ করে  এগুলোতে আলোচিত দাবি সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া, বাংলাদেশে পর্ণ ওয়েবসাইট বন্ধের বিষয়ে অনুসন্ধানে ডয়েচে ভেলের ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর “৫৬০টি পর্নো ওয়েবসাইট ব্লক” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সরকারের নির্দেশে ৫৬০ টি পর্ণ ওয়েবসাইট বন্ধ করেছে। 

এরপর, ২০১৯ সালের ০৬ ফেব্রুয়ারী প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিটিআরসি সেসময় ২৪৪ টি পর্ণ ওয়েবসাইট বন্ধের নির্দেশ দেয়। 

অর্থাৎ, বাংলাদেশে পূর্ব থেকেই পর্ণ ওয়েবসাইট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

সুতরাং, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইনের আগামী ০১ সেপ্টেম্বর থেকে ছয় মাসের জন্য বাংলাদেশে সকল পর্ণ ওয়েবসাইট বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

গাছের সাথে বেঁধে রাখা এই নারী হিন্দু ধর্মাবলম্বী শিক্ষিকা গীতাঞ্জলি বড়ুয়া নন

গত জুলাই মাসের শুরুতে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন শেষ পর্যন্ত সরকার পতনের আন্দোলনে রুপ নেয়। গণআন্দোলনের মুখে গত ০৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। ০৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এরমধ্যে দেশব্যাপী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অসংখ্য শিক্ষককে পদত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগ উঠে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। দেশে বিভিন্ন এলাকা থেকে একের পর এক শিক্ষক হেনস্তার খবর আসে গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এরই প্রেক্ষিতে গাছের সাথে একজন নারীকে বেঁধে রাখার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, এক্স ও গণমাধ্যমে প্রচার করে দাবি করা হয়, “ঢাকার আজিমপুর গভঃমেন্ট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ গীতাঞ্জলি বড়ুয়ার পদত্যাগ করানোর জন্য শিক্ষিকাকে রশি দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রেখেছেন শিক্ষার্থীদের একাংশ।”

উক্ত দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ভারতীয় ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেও পোস্ট করা হয়৷ এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ভারতীয় গণমাধ্যমেও উক্ত দাবিতে সংবাদ প্রচার করা হয়৷ এমন প্রতিবেদন দেখুন : দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ত্রিপুরা ইনফো

উক্ত নারীকে শিক্ষক দাবিতে ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গাছের সাথে বেঁধে রাখা নারী আজিমপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ গীতাঞ্জলি বড়ুয়া নন, বরং ভিন্ন একজন নারী যিনি একজন সম্ভাব্য প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তাছাড়া, আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের আগে থেকেই শিক্ষিকা গীতাঞ্জলি বড়ুয়ার পদত্যাগের দাবির ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে যেখানে সাম্প্রদায়িক কোনো সম্পৃক্ততা নেই। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আজিমপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের ফেসবুক পেজে উক্ত ঘটনার বিষয়ে উল্লেখ পাওয়া যায়৷ গাছের সাথে একজন নারীকে বেঁধে রাখার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির উক্ত ফেসবুক পেজ থেকে গত ২১ আগস্ট তারিখে একটি পোস্টের মাধ্যমে জানানো হয়, “কিছু মানুষ স্কুলের নামে মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছে। শুধু তাই না কেউ কেউ তো হিন্দু-মুসলিম দ্বন্দ্বের ও অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্যে বলছি,গাছের সাথে বেঁধে রাখা মানুষটা গীতাঞ্জলি বড়ুয়া না। স্কুলের কোনো শিক্ষক ও না। উনি নিজেকে স্কুলের প্রাক্তন ছাত্রী হিসেবে পরিচয় দেয়(এইটার কোনো প্রমান ও পাওয়া যায় নি)। তখন উত্তেজিত ছাত্রীরা ওনাকে বেঁধে রাখে।(আমরা কোনো মেয়েকে গাছের সাথে বেঁধে রাখাও সমর্থন করছি না) ঘটনাটি সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত।”

এ বিষয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম আজকের পত্রিকার ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৯ আগস্ট তারিখে “শিক্ষার্থীদের হুমকি-ধামকি, আজিমপুরে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হলো প্রাক্তন শিক্ষার্থীকে” শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়৷ ভিডিও প্রতিবেদনে উক্ত বেঁধে রাখা নারীর একটি ছবি বা স্থিরচিত্রও ব্যবহৃত হয়। উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, “আজিমপুর গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষসহ দুইজন শিক্ষিকার পদত্যাগের দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ডেকে এনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার চেষ্টা করান অভিযুক্ত শিক্ষকরা৷ তখন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রাক্তন একজন শিক্ষার্থীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন।” 

অর্থাৎ, উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা উক্ত নারীকে একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী বলে উল্লেখ করা হয়।

Comparison : Rumor Scanner

তাছাড়া, উক্ত একই প্রতিবেদনে আলোচিত শিক্ষিকা গীতাঞ্জলি বড়ুয়ার ছবিও প্রকাশ করা হয় যার সাথে গাছের সাথে বেঁধে রাখা নারীর বৈসাদৃশ্য দেখা যায়। 

Comparison : Rumor Scanner

এ বিষয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডে গত ২২ আগস্ট তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আলোচিত শিক্ষিকা গীতাঞ্জলি বড়ুয়া নিজেই দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে গাছের সাথে তাকে বেঁধে রাখার মর্মে প্রচারিত দাবিগুলো মিথ্যা বলে নিশ্চিত করেছেন। তিনি একইসাথে জানান যে তিনি তার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন, যেহেতু তার শিক্ষার্থীরা তাকে আর চাচ্ছিল না। তিনি তার পদত্যাগপত্র স্বেচ্ছায় জমা দিয়েছেন, কোনোরকমের বাইরের চাপ ছাড়াই।

তাছাড়া প্রতিবেদনটি পড়ে জানা যায়, গত ১৪ জুলাই তারিখে আজিমপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি উত্থাপন করে। দুর্নীতিগ্রস্থ হওয়ার অভিযোগে তারা তাৎক্ষণিকভাবে অফিস সহকারী সবুজ মিয়া, চিফ অ্যাসিস্টেন্ট মীর মোস্তাফিজুর রহমান এবং লেকচারার আব্দুর রহিমকে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানায়। শিক্ষার্থীরা এছাড়াও স্কুল এবং সাবেক ঢাকা দক্ষিণ মেয়র ফজলে নূর তাপসের সাথে সম্পৃক্ত শফিকুল ইসলামের সাথে সব রকমের চুক্তি বাতিল করার দাবি জানায়।

অধ্যক্ষ এই অভিযোগগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান এবং উক্ত ব্যক্তিদের পদত্যাগের জন্য অনুরোধ করেন। শিক্ষার্থীরা এজন্য তিনদিনের একটি আল্টিমেটাম দেয়।

১৮ জুলাই তারিখে আল্টিমেটামের সময় শেষ হলে তারা ক্যাম্পাসে ফিরে এসে কিছু শিক্ষকদের সাথে বিবাদে জড়ায়। তারা প্রশ্নফাঁস, হয়রানি, হুমকি, কোচিং ব্যবসায় জড়ানো এবং অপমানের অভিযোগে শাহনাজ আক্তার, গৌতম চন্দ্র পাল এবং আব্দুর রহিম নামের আরো তিনজন শিক্ষকের পদত্যাগের দাবি জানায়। শিক্ষার্থীরা তাদের পদত্যাগের জন্য অধ্যক্ষকে চাপ দিতে থাকে। এরই মাঝে কিছু শিক্ষক ছয়জন বহিরাগতদের ডেকে আনেন এবং তারা শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছনা করে। তবে, বহিরাগতদের কারা ডেকেছে তা গীতাঞ্জলি বড়ুয়া জানেন না বলে তিনি জানিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের দাবি অধ্যক্ষ পূরণ করতে না পারায় এবং পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ গীতাঞ্জলি বড়ুয়ার পদত্যাগের দাবি জানায়। 

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনে গাছের সাথে বেঁধে রাখা নারীর পরিচয় জানা সম্ভব হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, গাছের সাথে বেঁধে রাখা উক্ত নারীর নাম নদী, যিনি ধর্মে একজন মুসলিম এবং একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী। 

সুতরাং, মুসলিম ধর্মালম্বী ভিন্ন নারীকে গাছের সাথে বেঁধে রাখার ঘটনাকে আজিমপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের হিন্দু শিক্ষিকা গীতাঞ্জলি বড়ুয়াকে বেঁধে রাখার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সাম্প্রদায়িক হামলার সংবাদ প্রকাশে গণমাধ্যম বন্ধের হুশিয়ারি দিয়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কোনো মন্তব্য করেননি

0

গত ১১ আগস্ট আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে যান অন্তর্বর্তী সরকারের তৎকালীন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। সম্প্রতি, উক্ত ঘটনায় প্রকাশিত একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশে হওয়া সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক হামলাগুলোর সংবাদ গণমাধ্যমে প্রচার করলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন।

সাম্প্রদায়িক হামলা

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)- এ প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাম্প্রদায়িক হামলার সংবাদ প্রকাশ করলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হুশিয়ারি জানিয়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন কোনো মন্তব্য করেননি বরং, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থী নিহতের সংবাদটি মূলধারার গণমাধ্যমে প্রকাশ না করায় বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন ‘চাটুকারিতা করলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে।’ শীর্ষক মন্তব্যটি করেন।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত পোস্টে ব্যবহৃত দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিবেদনটির শিরোনামের সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে গত ১১ আগস্ট চাটুকারিতা করলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত মূল প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Ittefaq

উক্ত প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ‘ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন ‘মিডিয়ায় চাটুকারদের ডাকবেন না। মিডিয়া চাটুকার হবেন না। একটা দেশ ডুবে কখন, যখন মিডিয়া সত্য কথা বলে না। মিডিয়াগুলো ওই সময় যদি সত্যি ঘটনা তুলে ধরতো তাহলে পুলিশের এই অবস্থা হয় না। মিডিয়া বারবার বলেছে কিছুই হয়নি। কিন্তু বিবিসিতে আমি সব দেখেছি।’ শীর্ষক কথাগুলো বলেন। তার বক্তব্যের কোথাও সাম্প্রদায়িক হামলার সংবাদ প্রকাশ করলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে আরেক সংবাদমাধ্যম এটিএন নিউজ এর ইউটিউবে সরাসরি সম্প্রচারিত ভিডিওতে সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের সেদিনের দেওয়া বক্তব্যের ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওতে তাকে টকশোগুলোতে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বাছাইয়ের বিষয়টি এবং আন্দোলনের সময় মূলধারার গণমাধ্যমগুলোর ভূমিকা নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়। মূলত এসব কারণেই তিনি বলেন, চাটুকারিতা করলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের দায়িত্ব পরিবর্তন করে তাকে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং তার স্থলে লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। 

সুতরাং, সাম্প্রদায়িক হামলার সংবাদ প্রকাশ করলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে শীর্ষক মন্তব্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন করেছেন দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সুবর্ণ বারী যুক্তরাষ্ট্রের সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট নয়

বিভিন্ন সময়ে নানান কারণে গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় উঠে এসেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক সুবর্ণ আইজ্যাক বারী ও তার পিতা রাশেদুল বারী৷ সম্প্রতি সুবর্ণ আলোচনায় এসেছে ‘যুক্তরাষ্ট্রের সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট’ দাবি করে। সুবর্ণ আইজ্যাক বারীর ফেসবুক পেজ Bari Science Lab, কিছু দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপকভাবে উক্ত দাবি প্রচারিত হতে লক্ষ্য করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম। রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধান করে দেখেছে সুবর্ণ আইজ্যাক বারী আসলেই যুক্তরাষ্ট্রের সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট বা দ্বাদশ শ্রেণি পাস কি না। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনাকে হাইস্কুল হিসেবে গণ্য করা হয়।

সুবর্ণ বারীর ফেসবুক পেজ থেকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন Bari Science Lab (আর্কাইভ)।

বাংলাদেশি গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন: আরটিভি, মাছরাঙা নিউজ (ইউটিউব), দৈনিক শিক্ষা, আমাদের বার্তা

সুবর্ণ

উক্ত দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন: আনন্দবাজার পত্রিকা

বাংলাদেশ ও ভারত থেকে পরিচালিত বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সুবর্ণ আইজ্যাক বারী যুক্তরাষ্ট্রের সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট নয় বরং তার চেয়েও কম বয়সে একাধিক মার্কিন শিক্ষার্থী হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হয়েছেন। তবে, সুবর্ণ তার স্কুল মালভার্ন হাই স্কুলের সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবি প্রচারকারীদের প্রচারিত দাবি পর্যবেক্ষণ করলে কোনো বিশ্বাসযোগ্য তথ্যপ্রমাণ উল্লেখ করতে দেখা যায়নি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনে সুবর্ণকে নিয়ে প্রকাশিত সংবাদে দেখা যায়, সুবর্ণকে লং আইল্যান্ডের তার স্কুলের সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে৷ মার্কিন টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এবিসি নিউজের ওয়েবসাইটেও একই তথ্য উল্লেখ করা হয়। মালভার্ন ইউনিয়ন ফ্রি স্কুল ডিস্ট্রিক্টের বরাতে জানানো হয়, নাসাউ কাউন্টি স্কুলের ইতিহাসে সে সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট। উল্লেখ্য যে, নাসাউ একটি কাউন্টির নাম যেখানে তার স্কুল অবস্থিত। পুরো যুক্তরাষ্ট্রে এরকম তিন হাজারেরও অধিক কাউন্টি আছে। সুবর্ণ তার কাউন্টির সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট বলেই এবিসি নিউজ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

সুবর্ণের ফেসবুক পেজে সুবর্ণকে নিয়ে মার্কিন ট্যাবলয়েড সংবাদপত্র নিউ ইয়র্ক পোস্টে সংবাদ প্রকাশের বিষয়েও জানানো হয়। নিউ ইয়র্ক পোস্টে তাকে নিয়ে প্রকাশ করা প্রতিবেদনেও সুবর্ণকে তার লং আইল্যান্ডের হাইস্কুলের সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট বলা হয়, পুরো যুক্তরাষ্ট্রের বলা হয়নি।

তাছাড়া, মার্কিন সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট দাবি করে সুবর্ণের ফেসবুক পেজে করা পোস্টের সাথে ক্যাপশনে Fox 5 New York নামের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত একটি ইউটিউব ভিডিও লিঙ্ক দেওয়া হয়, যেখানে সুবর্ণকে সাক্ষাৎকার দিতে দেখা যায়। এমনকি উক্ত ভিডিওতেও তাকে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট বলা হয়নি বরং তার স্কুলের সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট বলা হয়।

এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে সুবর্ণের হাইস্কুল মালভার্ন হাই স্কুলের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম৷ স্কুল কর্তৃপক্ষ রিউমর স্ক্যানারকে জানিয়েছে, সুবর্ণ ১২ বছর বয়সে হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হয়েছে এবং সে তাদের স্কুলের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট। 

পরবর্তীতে, সুবর্ণের চেয়ে কম বয়সে (১২ বছরের চেয়ে কম) আর কোনো আমেরিকান গ্র্যাজুয়েট হয়েছেন কি না সে বিষয়ে অনুসন্ধানে সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েটদের সম্পর্কে বেশ কিছু সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

১৯৯৪ সালের ৭ জুন যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গাডসডেন টাইমস নামের একটি সংবাদপত্রে একটি সংবাদ পাওয়া যায়। সংবাদটি পড়ে জানা যায়, মাইকেল কার্নি নামের একজন ছাত্র মাত্র ৬ বছর বয়সে হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হন এবং ১০ বছর বয়সেই দ্য ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ আলাবামা থেকে কলেজ পর্যায়ও সম্পন্ন করেন৷ তিনি ৬ বছর ৫ মাস বয়সে হাইস্কুল সম্পন্ন করেন, ৬ বছর ৭ মাস বয়সে জুনিয়র কলেজে প্রবেশ করেন এবং ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ আলাবামা থেকে ১০ বছর বয়সে কলেজ সম্পন্ন করেন। এই তিনটি গিনেস রেকর্ডই তার দখলে বলেই উক্ত সংবাদে উল্লেখ করা হয়। লরেন্স জার্নাল ওয়ার্ল্ড নামের যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংবাদপত্রে ১৯৯৮ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মাইকেল ৫ বছর বয়সে হাইস্কুলে পদার্পন করে এবং তার এক বছর পরই তার হাইস্কুল পর্যায় সম্পন্ন হয়ে যায়। টাইমস ডেইলি নামের অন্য আরেকটি সংবাদপত্র থেকে জানা যায়, ৫ বছর বয়সেই মাইকেল কার্নি হাইস্কুলের জন্য প্রস্তুত ছিলেন কিন্তু তাকে কোনো বিদ্যালয় এত কম বয়সে ভর্তি করতে রাজী ছিল না৷ অগত্যা, তিনি তার মায়ের কাছে পড়াশোনা করেন এবং ৬ বছর বয়সে তিনি তার ডিপ্লোমা অর্জন করেন। অতঃপর, তিনি তার জুনিয়র কলেজ ক্যারিয়ার শুরু করেন। দ্য তুসকালুসা নিউজ নামে যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি সংবাদমাধ্যমে ১৯৯৮ সালে তাকে নিয়ে আরেকটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। ততদিনে তিনি মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেছেন। উক্ত প্রতিবেদন থেকেও জানা যায়, ৫ বছর বয়সে স্যান ম্যারিন হাইস্কুলে তাকে ভর্তি করা হয় এবং এক বছর পর ৬ বছর বয়সে তিনি হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হোন। লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসে ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তিনি ১০ বছর বয়সেই কলেজ সম্পন্ন করেন। তার বাবা একজন সাবেক মার্কিন নেভি অফিসার এবং তার মা জাপানিজ-আমেরিকান। জিনিয়াসেস নামের একটি প্ল্যাটফর্মে মাইকেলের সম্পর্কে বেশ বিস্তৃত তথ্য পাওয়া যায় যেখানে দেখা যায় তার জন্ম আমেরিকায় এবং সে একজন আমেরিকান।

তাছাড়া, ব্রিটিশ শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে ২০২৩ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আমেরিকার পেনসিলভেনিয়ায় ৯ বছর বয়সে ডেভিড বালোগান নামে একজন ছাত্র হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হয়েছে। অর্থাৎ, এই ছাত্রটিও সুবর্ণের চেয়ে কম বয়সেই হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হয়েছে। গার্ডিয়ানের উক্ত রিপোর্টে সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হিসেবে ৬ বছর বয়সে হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হওয়া মাইকেল কার্নির নাম উল্লেখ করা হয় এবং বলা হয়, মাইকেল কার্নিই তখনও (প্রতিবেদন প্রকাশকালীন) এই ক্ষেত্রে গিনেস রেকর্ডধারী৷ তবে, গিনেস রেকর্ডের ওয়েবসাইটে মাইকেল কার্নির নামে রেকর্ডের পেজটি পাওয়া যায়নি। পূর্ববর্তী সময়ে থাকলেও হয়তো পরবর্তী সময়ে সেটি মুছে ফেলা হয়েছে প্রতীয়মান হচ্ছে। এই বিষয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, ডেভিডকে নিয়ে ফক্স ৪ কেসি নামক সংবাদমাধ্যমেও একই তথ্য উল্লেখ করতে দেখা যায়। আফ্রিকান আমেরিকানদের নানা তথ্য কিংবা সংবাদ প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাক নিউজে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে থেকেও একই তথ্য জানা যায়। উক্ত একই প্রতিবেদনে তাকে আফ্রিকান-আমেরিকান বলেও দাবি করা হয়।

এছাড়া, তানিশক আব্রাহাম নামে আরেকজন শিক্ষার্থীর সম্পর্কে জানা যায়। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, সে মাত্র ১০ বছর বয়সেই হাইস্কুলের পড়াশোনা সম্পন্ন করে ১১ বছর বয়সের মধ্যেই তিনটি এসোসিয়েট ডিগ্রি অর্জন করেছিল। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে তার সম্পর্কে জানা যায়, তাকে ৭ বছর বয়স থেকেই গৃহশিক্ষা প্রদান করা হয়েছে। একই তথ্য জানা যায়, বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকেও। তাকে নিয়ে ভারতীয় মূলধারার গণমাধ্যম এনডিটিভিতেও একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সে একজন ভারতীয়-আমেরিকান।

সুতরাং, সুবর্ণ বারীর নিজের পঠিত লং আইল্যান্ডের মালভার্ন হাই স্কুলের ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হওয়ার বিষয়কে তার আমেরিকার সর্বকনিষ্ঠ হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হওয়ার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র