প্রধান উপদেষ্টা ও ধর্ম উপদেষ্টাকে জড়িয়ে পর্ণ ওয়েবসাইট বন্ধের ভুয়া তথ্য প্রচার

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ০১ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশে সকল পর্ণ ওয়েবসাইট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন- শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

একই দাবি একটু পরিবর্তন করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইনের বরাতেও প্রচার করা হচ্ছে। 

ধর্ম উপদেষ্টার বরাতে প্রচারিত দাবি হচ্ছে- আগামী ০১ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ মাসের জন্য বাংলাদেশে সকল পর্ণ ওয়েবসাইট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন।

পর্ণ ওয়েবসাইট

ধর্ম উপদেষ্টার বরাতে ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বরাতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কিংবা ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইন কেউই আগামী ০১ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ মাসের জন্য বাংলাদেশে সকল পর্ণ ওয়েবসাইট বন্ধের নির্দেশ দেননি, বরং ধর্ম উপদেষ্টার নামে একটি ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আলোচিত দাবিটি প্রথম পোস্ট করা হয়। এছাড়া, ২০১৬ সাল থেকেই বাংলাদেশে পর্ণ ওয়েবসাইট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। 

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আলোচিত দাবির স্বপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে উক্ত দাবির সূত্রপাতের বিষয়ে অনুসন্ধান করা হয়। ফেসবুক মনিটরিং টুল ব্যবহার করে গতকাল (২৮ আগস্ট) ‘ড. আ.ফ.ম খালিদ হোছাইন’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত একটি পোস্ট (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। 

ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইনের নামে খোলা একটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট।

এরপর ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইনের মূল ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এবং পেজ পর্যবেক্ষণ করে  এগুলোতে আলোচিত দাবি সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া, বাংলাদেশে পর্ণ ওয়েবসাইট বন্ধের বিষয়ে অনুসন্ধানে ডয়েচে ভেলের ওয়েবসাইটে ২০১৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর “৫৬০টি পর্নো ওয়েবসাইট ব্লক” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সরকারের নির্দেশে ৫৬০ টি পর্ণ ওয়েবসাইট বন্ধ করেছে। 

এরপর, ২০১৯ সালের ০৬ ফেব্রুয়ারী প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিটিআরসি সেসময় ২৪৪ টি পর্ণ ওয়েবসাইট বন্ধের নির্দেশ দেয়। 

অর্থাৎ, বাংলাদেশে পূর্ব থেকেই পর্ণ ওয়েবসাইট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

সুতরাং, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসাইনের আগামী ০১ সেপ্টেম্বর থেকে ছয় মাসের জন্য বাংলাদেশে সকল পর্ণ ওয়েবসাইট বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img