Home Blog Page 24

সাম্প্রতিক নয়, সদরঘাটে লঞ্চে আগুন লাগার এই ভিডিওটি ২০২৩ সালের

সম্প্রতি, ‘এই মুহুর্তে ঢাকা সদরঘাটে লঞ্চে ভয়াবহ আগুন বহু হতাহতের আশংকা। চলছে উদ্ধার কাজ। সবাই বলছে পরিকল্পিত ভাবে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে…’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও ইন্টারটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, লঞ্চে আগুন লাগার এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলের নয়। প্রকৃতপক্ষে, এটি ২০২৩ সালের ৩০ জুন রাজধানীর সদরঘাটে ময়ূর-৭ নামক লঞ্চে আগুন লাগার ভিডিও। 

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে রাজধানীর সদরঘাটে লঞ্চে সম্প্রতি আগুন লাগার কোনো তথ্য গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘সংবাদ সবসময়’ নামক একটি ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ৩০ জুন ‘রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের পন্টুনে থাকা ময়ূর-৭ নামক একটি লঞ্চে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে’ ক্যাপশনে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর সাদৃশ্য রয়েছে।

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে এর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও স্থান, পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও লঞ্চের ছবির মিল পাওয়া যায়।

Comparison & Indicated by Rumor Scanner

ভিডিওটির সংবাদ বর্ণনা থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৩০ জুন রাজধানীর সদরঘাটে ময়ূর-৭ নামক লঞ্চে আগুন লাগার ঘটনা এটি।

উক্ত পোস্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে একই ঘটনার বিষয়ে মূলধারার গণমাধ্যমগুলোর ওয়েবসাইট (,,) ও ইউটিউব চ্যানেলে (,,) প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনগুলো থেকেও আলোচিত ভিডিওর বিষয়ে একই তথ্য জানা যায়।

অর্থাৎ, সদরঘাটে লঞ্চে আগুন লাগার এই ভিডিওটি ২০২৩ সালের। 

সুতরাং, ২০২৩ সালের ৩০ জুন রাজধানীর সদরঘাটে ময়ূর-৭ নামক লঞ্চে লাগা আগুনের ঘটনাকে সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ফেনীতে আওয়ামী লীগের মিছিলের এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়, ২০১৮ সালের 

সম্প্রতি, ফেনীতে আওয়ামী লীগ মিছিল দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ফেনীতে আওয়ামী লীগের মিছিলের এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং, এটি ২০১৮ সালে যুক্তরাজ্য বিএনপি- জামাত কর্তৃক শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অবমাননার অভিযোগে ফেনী জেলা ছাত্রলীগের মিছিলের ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স সার্চ করে ‘Jabed Haidar Jeorje জাবেদ হায়দার জর্জ’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৮ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি “ফেনী জেলা ছাত্রলীগের “বিক্ষোভ মিছিল” ১১/০২/২০১৮।” শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি হুবহু মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওর বিস্তারিত বিবরণীতে বলা হয়, “যুক্তরাজ্য বিএনপি- জামাত কর্তৃক জাতির পিতার ছবি অবমাননা, বাংলাদেশ দূতাবাসে হামলাকারী ও সাজাপ্রাপ্ত আসামী খুনী তারেককে অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে এনে কারাগারে প্রেরণের দাবিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নির্দেশে ফেনী জেলা ছাত্রলীগের আজকের ২০১৮ সালের (১১ ফেব্রুয়ারি) বিক্ষোভ মিছিল।”

সেসময় একই দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত মিছিলের ছবি সম্বলিত একাধিক পোস্ট (,) খুঁজে পাওয়া যায়। 

সুতরাং, ২০১৮ সালে যুক্তরাজ্য বিএনপি-জামায়াত কর্তৃক শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অবমাননার অভিযোগে  ফেনী জেলা ছাত্রলীগের মিছিলের ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

বাংলাদেশ সব ফর্মেটেই সমানভাবে খারাপ শীর্ষক মন্তব্য মাইকেল ভন করেননি

0

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি প্রচার করা হয়েছে, ইংলিশ ধারাভাষ্যকার ও সাবেক ক্রিকেটার মাইকেল ভন বলেছেন “কিছু দল টেস্ট ফর্ম্যাটে সেরা, কিছু ওয়ানডেতে কিন্তু বাংলাদেশ সব ফর্ম্যাটেই সমানভাবে খারাপ।”

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি এরূপ দাবিতে প্রচারিত সবচেয়ে ভাইরাল ফেসবুক পোস্টটিতে প্রায় ৫৫ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইংলিশ ধারাভাষ্যকার ও সাবেক ক্রিকেটার মাইকেল ভন বাংলাদেশ সম্পর্কে আলোচিত মন্তব্যটি করেননি৷ প্রকৃতপক্ষে, একটি ট্রল পেজ থেকে দাবিটির সূত্রপাত হলেও পরবর্তীতে তা আসল দাবিতে ছড়িয়ে পড়ে।

অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে মাইকেল ভন এরূপ কোনো মন্তব্য করে থাকলে তা দেশি-বিদেশি অসংখ্য গণমাধ্যমে প্রচার হতো।

পরবর্তীতে আলোচিত দাবিটির সূত্রপাতের বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Cricket Sarcasm Centre’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত ৮ জুলাইয়ে প্রচারিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টটিতে মাইকেল ভন ও বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের একটি ছবি সংযুক্ত করে মাইকেল ভনের মন্তব্য দাবিতে বলা হয়, “কিছু দল টেস্ট ফর্মেটে সেরা, কিছু দল ওয়ানডেতে। কিন্তু বাংলাদেশ সব ফর্মেটেই সমানভাবে খারাপ।” (অনূদিত)

পোস্টটির ডিজাইনের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টটির তুলনা করলে মিল পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টটিতে ট্রল ফেসবুক পেজটির লোগো মুছে ইংরেজিতে লেখা অক্ষরকে বাংলায় অনুবাদ করে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টটি তৈরি করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।

Comparison : Rumor Scanner

পোস্টটির ক্যাপশন পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, পোস্টটির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট দল সম্পর্কে মাইকেল ভনের মন্তব্য’ (অনূদিত)। এছাড়াও, ক্যাপশনে ‘#satire’ হ্যাশট্যাগেরও সংযুক্তি পাওয়া যায়। উল্লেখ্য, পোস্টটির এডিট হিস্ট্রি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, পোস্টটি ৮ জুলাইয়ে করার পর ৯ জুলাইয়ে ক্যাপশনে ‘satire’ হ্যাশট্যাগটি সংযুক্ত করা হয়েছে। উক্ত ফেসবুক পেজটির বায়ো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে পেজটির উদ্দেশ্য হিসেবে মূলত ব্যাঙ্গাত্মক ও মিম কনটেন্টের উল্লেখ পাওয়া যায়।  এছাড়াও, পেজটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, এটি একটি ব্যঙ্গাত্মক বা ট্রল পেজ যা ভারত থেকে পরিচালিত হয়।

এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশের অন্যতম সক্রিয় ক্রিকেট বিষয়ক প্ল্যাটফর্ম ‘ক্রিকেটাঙ্গন’ এর প্রতিষ্ঠাতা ও এডমিন সাজেদুল হাসান রাহিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, “উদ্ধৃতিটি একটি মিথ্যা উক্তি, এবং এটি আংশিকভাবে সত্য হওয়ার ১% সম্ভাবনা থাকলেও, এটি অবশ্যই ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। এটির উৎপত্তি একটি মিম পেজ থেকে।” (অনূদিত)

এছাড়াও এ বিষয়ে মূলধারার গণমাধ্যম বিডিনিউজ২৪ এর সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রনির সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, “আমার ঠিক জানা নেই। এখন তো কত জায়গায় কত কিছু হয় মিডিয়ার বাইরেও নানা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, পডকাস্ট, নানা কিছু। তবে কমন সেন্স থেকে বলা যায়, এভাবে কেউ সাধারণত বলে না। সমালোচনা করলেও অন্যভাবে করে। এভাবে করে না। এই পোস্ট সম্ভবত সার্কাজম করেই বানানো। ভন যেহেতু কড়া সমালোচনা করেন অনেক সময়, তাকে দিয়ে বানানো হয়েছে।”

উপরোল্লিখিত তথ্যপ্রমাণ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে মাইকেল ভনের নামে প্রচারিত উক্তিটি ভুয়া এবং মূলত একটি ট্রল পেজ থেকে দাবিটির সূত্রপাত।

সুতরাং, ইংলিশ ধারাভাষ্যকার ও সাবেক ক্রিকেটার মাইকেল ভন বাংলাদেশ ক্রিকেট দল সব ফর্মেটেই সমানভাবে খারাপ বলে মন্তব্য করেছেন শীর্ষক দাবিটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

  • Cricket Sarcasm Centre – Facebook Post
  • Statement of Sajedul Hassan Rahin, Founder & Admin, Cricketangon
  • Statement of Ariful Islam Roni, Bdnews24
  • Rumor Scanner’s analysis

নারী নয়, মারধর ও শ্লীলতাহানির শিকার এই ব্যক্তি হিজড়া সম্প্রদায়ের 

সম্প্রতি, একদল উত্তেজিত জনতা প্রকাশ্যে একজন নারীকে নির্যাতন ও তার শ্লীলতাহানি করছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসুবকে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি কোনো নারীকে নির্যাতন বা তার শ্লীলতাহানির ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, রংপুর বিভাগের গাইবান্ধার ধাপেরহাটে ঢাকাগামী একটি বাসে হিজড়া সম্প্রদায়ের ব্যক্তি টাকা চাইতে গিয়ে এক যাত্রীকে হেনস্তা করলে উত্তেজিত জনতা তাকে মারধর ও শ্লীলতাহানি করে। সেই ঘটনার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে এটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে সাংবাদিক শিরিন আক্তার সাংবাদিক নামের একটি ফেসবুক আইডিতে গত ১২ জুলাই প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত নির্যাতনের ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওর মিল রয়েছে। উভয় ভিডিওতেই একই স্থানে নারীদের পোশাক পরিহিত একই মানুষকে মারধর করতে দেখা যায়। তবে উক্ত ভিডিওর শিরোনামে দাবি করা হয়, ভিডিওতে যাকে মারধর ও শ্লীলতাহানির শিকার হতে দেখা যাচ্ছে তিনি নারী নন, বরং একজন হিজড়া। এছাড়াও দাবি করা হয়, ঘটনাটি রংপুর জেলার পীরগঞ্জের ধাপেরহাট নামক বাসস্ট্যান্ডে ঘটে। রংপুর থেকে ঢাকাগামী একটি বাসে টাকা তুলতে গেলে উত্তেজিত জনতা দুইজন হিজড়াকে গণধোলাই দেয় বলেও শিরোনামে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি ভিডিওতে একজনকে পুরো ঘটনার বর্ণনা করতেও শোনা যায়। তিনি জানান, ঢাকাগামী ওই বাসে একজন যাত্রীর কাছে হিজড়ারা টাকা দাবি করে। এসময় তিনি টাকা না দিলে হিজড়ারা গাড়িতে উলঙ্গ হয়ে তাকে হেনস্তা করতে থাকে। পরবর্তীতে গাড়িটি ধাপেরহাট আসলে উত্তেজিত জনতা হিজড়াদের টেনে বাড়ি থেকে বের করে গণধোলাই দেয় বলে তিনি জানান।

প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ট্যাবলয়েড পত্রিকা দৈনিক মানবজমিন-এর ওয়েবসাইটে গত ১৫ আগস্ট হিজড়ার অ্যাকশন, জনতার রিঅ্যাকশন শীর্ষক শিরোনামে উক্ত ঘটনায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে হিজড়ারা রংপুরের পীরগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে ঢাকাগামী ওই বাসটিতে ওঠেন। তবে মারধরের ঘটনাটি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের ধাপেরহাট এলাকায় ঘটে। 

পরবর্তীতে গুগলম্যাপের সহায়তায় ভিডিওটির জিওলোকেশন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটির স্থানের সাথে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের ধাপেরহাট এলাকার মিল রয়েছে। 

Location Comparison by Rumor Scanner 

সুতরাং, গাইবান্ধার ধাপেরহাট বাসস্ট্যান্ডে হিজড়াকে মারধর ও শ্লীলতাহানির ঘটনার ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে এক নারীকে প্রকাশ্যে নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

গেল ১৪ আগস্টের নয়, আওয়ামী লীগের মিছিলের এই ভিডিওটি ২০২৪ সালের নভেম্বরের

গত ১৪ আগস্ট ঢাকা সচিবালয়ের সামনে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত মিছিলের ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে রাজধানীর রমনায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে করা আওয়ামী লীগের একটি মিছিলের দৃশ্যকে সম্প্রতি উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটির কী-ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘UNB – United News of Bangladesh’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ১৮ নভেম্বর “রাজধানীর রমনায় আওয়ামী লীগের হঠাৎ বিক্ষোভ মিছিল” শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর (২২ সেকেন্ড থেকে) সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।  

Video Comparison by Rumor Scanner 

উল্লিখিত সূত্র থেকে প্রাপ্ত  তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে অনলাইন সংবাদমাধ্যম বিডিনিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে একই তারিখে “Awami League holds march in Ramna to protest cases, arrests” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from Bdnews24 website 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শেখ হাসিনা এবং দলের অন্যান্য নেতাদের বিরুদ্ধে গণগ্রেপ্তার এবং হত্যা মামলার প্রতিবাদে গত বছরের ১৮ নভেম্বরে রমনার ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ার্স থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণ পর্যন্ত মিছিল করে আওয়ামী সমর্থকরা। এসময়ে নেতাকর্মীরা শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনাকে অভিবাদন জানিয়ে স্লোগান দেন এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ‘অবৈধ’ বলে নিন্দা জানান।  

এছাড়া, ‘The Financial Express’ এর ওয়েবসাইটে একই তারিখে আলোচ্য বিষয়ে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনটি থেকেও একই তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়। 

যা থেকে নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, এটি সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের কোনো ঝটিকা মিছিলের ভিডিও নয়। 

সুতরাং, ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে আওয়ামী লীগের সমর্থনে রাজধানীর রমনায় একটি ঝটিকা মিছিলের দৃশ্যকে গেল ১৪ আগস্ট ঢাকা সচিবালয়ের সামনে আওয়ামী লীগের মিছিল দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

পুলিশ কর্তৃক তরুণী নির্যাতনের ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়, ২০১৮ সালের 

সম্প্রতি, “অল্পবয়সী এক অসহায় মেয়েকে পুলিশের দু-সদস‍্য রাস্তায় প্রকাশ‍্য মারধর। এক পথচারী ছবি তুলতে গেলে তার সাথেও খারাপ আচরণ করে পুলিশ। বতর্মান পুলিশ অপরাধীদের ছেড়ে দিয়ে, অসহায় মানুষের উপর নির্যাতন করতেছে…” ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পুলিশ কর্তৃক তরুণীকে নির্যাতনের এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং, এটি ২০১৮ সালের ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কী ফ্রেম রিভার্স সার্চ করে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘Bangla Tribune’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি “Police brutality on woman in front of Bangabhaban” শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি হুবহু মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

উল্লিখিত সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে জাতীয় দৈনিক সমকালের ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি “’ভারসাম্যহীন’ তরুণীকে পুলিশের মারধরের ভিডিও ভাইরাল’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ০৭ ফেব্রুয়ারি গুলিস্তানের অলিম্পিক ভবনের সামনের রাস্তায় এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। পরে ওই তরুণীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে নির্যাতনকারী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রতিবেদনটিতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার তৎকালীন উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমানের বরাতে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির যাতায়াতের সময় বড় একটি ব্যাগ নিয়ে সড়ক বিভাজকে অবস্থান করছিলেন ওই তরুণী। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তাকে সরে যেতে বলা হয়। কিন্তু তিনি সরতে না চাওয়ায় জোর করে তাকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। তরুণীকে মারধর করা হয়নি বলেও দাবি করেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।

অর্থাৎ, পুলিশ কর্তৃক তরুণী নির্যাতনের ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

সুতরাং, ২০১৮ সালে পুলিশ কর্তৃক তরুণীকে নির্যাতনের ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

চট্টগ্রামে স্কুল ছাত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ ও হত্যার দাবিটি ভুয়া

সম্প্রতি, চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় এক স্কুল ছাত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ ও পরবর্তীতে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে দাবিতে একটি মেয়ের নিথর দেহের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে স্কুল ছাত্রীকে গণধর্ষণ ও হত্যার মতো কোনে ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার সিঙ্গুর শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিক থেকে নার্সের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতেপ্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওর কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Sovanlal Sahoo এবং Rajkumar Karak Prince নামের দুটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ১৫ আগস্ট একই ভিডিও প্রচারিত হতে দেখা যায়। ভিডিওগুলো দেখুন এখানে এবং এখানে। পোস্ট দুটিতে দাবি করা হয়, ভিডিওতে দেখতে পাওয়া লাশটি দিপালী জানা নামের এক মেয়ের। পোস্টটির আগের দিন রাতে অর্থাৎ, ১৪ আগস্ট রাতে তার কর্মস্থল সিঙ্গুরের শিবম সেবা সদন নামের একটি নার্সিংহোম থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা ও পরবর্তীতে খুন করা হয় বলেও পোস্টটিতে দাবি করা হয়। এছাড়াও পোস্টটিতে উল্লেখ করা হয়, দিপালী মাত্র ৩ দিন আগে তিনি ওই নার্সিংহোমে জয়েন করেন।

Video Comparison by Rumor Scanner 

প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম TV9 Bangla-এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৪ আগস্ট সিঙ্গুরে নার্সিংহোমে পাওয়া গেল নার্সের ঝুলন্ত দেহ! শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনটি থেকেও পশ্চিমবঙ্গের সিঙ্গুর শহরের শিবম সেবা সদন নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিক থেকে দিপালী জানা নামের একজন নার্সের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের তথ্য পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদনটিতেও বলা হয়, দিপালী ঘটনার মাত্র ৩ দিন আগে প্রতিষ্ঠানটিতে নার্স হিসেবে জয়েন করেন। এর মধ্যেই তার রহস্যজনক মৃত্যু হয়। তবে পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি হত্যাকাণ্ড বলে অভিযোগ করছেন বলেও প্রতিবেদনটিতে বলা হয়। কিন্তু প্রতিবেদনের কোথাও ধর্ষণের বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এমন অভিযোগের কথাও প্রতিবেদনটিতে বলা হয়নি। 

Comparison by Rumor Scanner 

এছাড়াও প্রতিবেদনটির শুরুতে লাশ উদ্ধারের একটি সিসিটিভি ফুটেজ দেখানো হয়। যাতে লাশটিকে একটি স্ট্রেচারে করে আনতে দেখা যায়। উক্ত ফুটেজে দেখতে পাওয়া লাশের পরনে থাকা জামার রঙ ও প্যাটার্নের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত লাশের ভিডিওতে থাকা মেয়ের পোশাকের মিল লক্ষ্য করা যায়। 

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একাধিক ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এঘটনায় প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। প্রতিবেদনগুলোতে দিপালী জানা নামের ওই নার্সের মৃত্যুর ঘটনাকে রহস্যজনক বলে অভিহিত করা হলেও তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে এমন দাবি করতে দেখা যায়নি। 

এছাড়াও কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় কোনো স্কুল ছাত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, ভারতের পশ্চিতবঙ্গের এক নার্সের মরদেহের ভিডিওকে চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় স্কুল ছাত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ ও শ্বাসরোধ করে হত্যার দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করে ভারতে হিন্দু মেয়ে নির্যাতনের শিকার দাবিতে ফিল্টার দিয়ে তোলা ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন নারীর একটি ছবি প্রচার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “”আমার আব্দুলটা একেবারে ‘বিশেষ’, প্রেম ছাড়া কিচ্ছু বোঝে না” — আর সেই কারণেই আজ এই পরিণতি। লাভ জিহাদের ফাঁদে পড়ে আরেকটা মেয়ে প্রেমের মায়াজালে জড়িয়ে, পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে।  বিয়ের এক বছরও পেরোয়নি, তখনই শুরু হয় আব্দুলের আসল খেলা — মারধর, অত্যাচার, নাচন-কোদন আর মানসিক পীড়ন। একসময় যে মেয়ের মুখ ছিল টসটসে আপেলের মতো, সেই মুখই আজ চ্যাপ্টা হয়ে ভাঙারি টিনের মতো পিটপিটে — দেখে চিনতে কষ্ট হয়! এই মেয়েটা হয়তো নিজের কৃতকর্মের যোগ্য শাস্তি পেয়েছে — এমনটাই হওয়া উচিত এইসব অন্ধপ্রেমীদের।  টুকরা হয়ে বস্তাবন্দি হওয়ার আগেই পালিয়ে গিয়ে ঠাঁই নেয় তার মায়ের কাছে, কিন্তু মা-বাবা নিজের মেয়ের এই নোংরা মুখোশ দেখে ঝেটিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। এখন মেয়েটি পুলিশের হেফাজতে রয়েছে, আর আব্দুলকেও গ্রেফতার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। #LoveJihad”

অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে, ছবিটি ভারতে মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করে নির্যাতনের শিকার হিন্দু নারীর ছবি। উল্লেখ্য, প্রচারিত ছবিটিতে নারীর মুখে আঘাতের দাগ সদৃশ দাগ দেখা যায়।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটি ভারতে মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করে নির্যাতনের শিকার হিন্দু নারীর ছবি নয়। প্রকৃতপক্ষে ছবিটিতে থাকা নারী শ্বেতা পুন্ডির নামের এক ভারতীয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর এবং তার মুখে থাকা আঘাতের দাগগুলোও আসল নয় বরং সামাজিক মাধ্যম স্ন্যাপচ্যাটের লেন্স (ফিল্টার) দিয়ে তৈরি। এ তথ্য শ্বেতা নিজেও নিশ্চিত করেছেন।

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Shweta Pundir’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ১ আগস্টে আলোচিত ছবিটি পোস্ট হতে দেখা যায়। ছবিটির ক্যাপশনে লেখা হয়, “ভালোবাসে বলেই তো মারে” (অনূদিত)।

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করলে নিশ্চিত হওয়া যায় যে এটি শ্বেতা পুন্ডির আসল অ্যাকাউন্ট এবং ছবিটিতে থাকা নারী শ্বেতা পুন্ডির। ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করলে আলোচিত আঘাতের দাগের মুখের ছবি প্রচারের পরদিন ২ আগস্টে একই পোশাকে শ্বেতার আরো কয়েকটি ছবি পোস্ট হতে দেখা যায়। তবে পরদিনের এই পোস্টগুলোতে আঘাতের কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি।

ঐদিনই (২ আগস্ট) রাতে পোস্ট হওয়া আরেকটি ভিডিওতে আবারও শ্বেতার মুখে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায় এবং ভিডিওটিতে তিনি সেসব মেয়েদের ব্যঙ্গ করেন যারা নিজের প্রেমিক বা স্বামীর দ্বারা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর ‘ভালোবাসা ছিল বলে মেরেছে’ বলে থাকেন। তবে উক্ত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, শ্বেতার মুখের নাড়াচাড়ার সাথে আঘাতের দাগও বারবার অস্বাভাবিকভাবে পাল্টে বা অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে যা সাধারণত ফিল্টার ব্যবহার করে তৈরি ভিডিওতে দেখা যায়।

এছাড়াও, ফেসবুক অ্যাকাউন্টটিতে তার প্রায় ২ দিন পর গত ৪ আগস্টে একইরকম আঘাতের চিহ্নসহ তাকে একটি ভিডিও ও একটি ছবি পোস্ট করতে দেখা যায়। আবার একই পোশাকে, একই স্থানে ধারণকৃত ঐ একইদিনই ভিডিও পোস্টের এক ঘন্টা পরের আরেক ভিডিও পোস্টে কোনো আঘাতের দাগ দেখা যায়নি।

পরবর্তীতে এরূপ আঘাতের দাগের বিষয়ে অনুসন্ধান করলে সামাজিক মাধ্যম স্ন্যাপচ্যাটে ‘mmmooort9’ নামের একটি লেন্সের সন্ধান পাওয়া যায়। উল্লেখ্য, স্ন্যাপচ্যাটে ফিল্টার প্রযুক্তিকে লেন্স বলা হয়ে থাকে। লেন্সটি ব্যবহার করে ভিডিও করলে প্রযুক্তির সাহায্যে মুখের মধ্যে আঘাতের দাগ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংযুক্ত হয়ে যায়। অনুসন্ধানে উক্ত লেন্স ব্যবহার করে করা আরো একাধিক ভিডিও পাওয়া যায় যাদের মুখে একইরকমের আঘাতের দাগ সংযুক্ত হয়েছে। এছাড়াও, স্ন্যাপচ্যাটে শ্বেতা পুন্ডিরের অ্যাকাউন্টেও তার আঘাতের দাগ সংযুক্ত ভিডিওটি পাওয়া যায়। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ছবিটিতে মূলত স্ন্যাপচ্যাটের লেন্স ব্যবহার করা হয়েছিল।

এছাড়াও, এ বিষয়ে ভারত ভিত্তিক ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান নিউজচেকারের ওয়েবসাইটে গত ১২ আগস্টে প্রকাশিত একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতেও আলোচিত ছবিটি আসল নয় বরং স্ন্যাপচ্যাট লেন্স ব্যবহার করে তৈরি বলে জানানো হয়। প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, নিউজচেকার এর পক্ষ থেকে শ্বেতা পুন্ডিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার ছবির সঙ্গে করা আলোচিত দাবি অস্বীকার করে বলেন, ছবিটি স্ন্যাপচ্যাট লেন্সের সাহায্যে তৈরি করা হয়েছিল এবং জানান যে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন।

সুতরাং, সামাজিক মাধ্যম স্ন্যাপচ্যাটের লেন্স (ফিল্টার) দিয়ে তৈরি একটি ছবিকে মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করে ভারতে নির্যাতনের শিকার হওয়া হিন্দু মেয়ের ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর স্ত্রী মিলিকে এই চিঠি লিখেননি

0

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে চলাকালীন ১৯৭১ সালের ২০ আগস্ট পাকিস্তান বিমানবাহিনীর বাঙালি অফিসার মতিউর রহমান একটি যুদ্ধবিমান নিয়ে পালিয়ে আসার চেষ্টা করার সময় ওই বিমানে থাকা রশিদ মিনহাজ নামে পাকিস্তানী শিক্ষানবীশ পাইলটের সাথে ধস্তাধস্তির সময় বিমানটি বিধ্বস্ত হয় এবং দুজনই নিহত হন। মতিউর যেদিন নিহত হন সেই ২০ আগস্টই তিনি তাঁর স্ত্রী মিলি রহমানের উদ্দেশ্যে একটি চিঠি লিখেছিলেন শীর্ষক একটি দাবি গেল কয়েক বছর ধরেই ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে৷ 

প্রিয়তমা মিলি সম্বোধনে শুরু করা দীর্ঘ চিঠিটির শুরুর অংশটি এমন, “একটা চুম্বন তোমার পাওনা রয়ে গেলো…সকালে প্যারেডে যাবার আগে তোমাকে চুমু খেয়ে বের না হলে আমার দিন ভালো যায় না। আজ তোমাকে চুমু খাওয়া হয় নি। আজকের দিনটা কেমন যাবে জানি না… এই চিঠি যখন তুমি পড়ছো, আমি তখন তোমাদের কাছ থেকে অনেক দূরে। ঠিক কতোটা দূরে আমি জানি না। মিলি, তোমার কি আমাদের বাসর রাতের কথা মনে আছে? কিছুই বুঝে উঠার আগে বিয়েটা হয়ে গেলো।…..”

উক্ত দাবির ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ১৯৭১ সালের ২০ আগস্ট স্ত্রী মিলি রহমানের উদ্দেশ্যে আলোচিত চিঠিটি লিখেননি বরং আরিফ মঈনুদ্দীন নামে এক ব্যক্তি ২০১৩ সালে কাল্পনিক এই চিঠিটি লিখেছিলেন যা পরবর্তীতে মতিউরের লেখা বাস্তব চিঠি হিসেবে প্রচার পেয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ২০১৪ সালের একটি সংবাদ প্রতিবেদনের সূত্রে জানা যায়, চিঠিটি ভুয়া। মতিউর রহমানের স্ত্রী মিলি রহমানের একটি সাক্ষাৎকারের বরাতে বলা হয়, আলোচিত চিঠিটি মতিউর রহমান লিখেননি৷ পরবর্তীতে চিঠিটি কার লেখা তা জানতে গভীর অনুসন্ধানের পর রিউমর স্ক্যানার জানতে পারে, ২০১৩ সালের ০৯ নভেম্বর আরিফ মঈনুদ্দীন নামে এক ব্যক্তি এই চিঠিটি পোস্ট করেছিলেন। চিঠিটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হলে ২০১৯ সালের ২০ আগস্ট তিনি তার পোস্ট সম্পাদনা করে জানান, “চিঠিটি রূপক। কাল্পনিক অর্থে লেখা। কেউ বিভ্রান্ত না হবার অনুরোধ রইলো।” সে সময় তিনি কমেন্ট সেকশনেও একই তথ্য দেন। 

পরবর্তীতে জনাব আরিফ মঈনুদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেন যে এই চিঠিটি তারই লেখা। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবি প্রচারের প্রেক্ষিতে এ বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার। 

১৫ আগস্টে ধানমন্ডি ৩২ এ শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে সোহেল তাজের গণপিটুনি খাওয়ার দাবিটি গুজব 

সম্প্রতি, ‘ধানমন্ডি ৩২ বঙ্গবন্ধুর শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে গণপিটুনি খেলো সোহেল তাজ’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজের সাথে এমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ঐদিন সোহেল তাজ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরেই যাননি। প্রকৃতপক্ষে, ভিন্ন দুইটি ভিডিও একসাথে যুক্ত করে চটকদার থাম্বনেইলে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওতে সোহেল তাজের উপস্থিতি কোথাও নেই। ভিডিওটিতে যে দুই ব্যক্তিকে জনগন কর্তৃক মারধর করতে দেখা যায় উক্ত ব্যক্তিদের সাথে সোহেল তাজের চেহারারও মিল নেই। 

Comparison By Rumor Scanner 

পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওতে মারধরের শিকার দুই ব্যক্তির বিষয়ে অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে পিপলস বাংলা নামক একটি ফেসবুক পেজে এবং ইত্তেফাকের ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত দুইটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওগুলোতে থাকা ব্যক্তিদের চেহারার সাথে আলোচিত ভিডিওতে থাকা মারধরের শিকার ব্যক্তিদের চেহারার মিল রয়েছে। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

উক্ত দুই পোস্টের ক্যাপশন থেকে জানা যায়, মারধরের শিকার দুই ব্যক্তিকে গত ১৫ আগস্ট রাতে ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের কর্মী সন্দেহে মারধর করা হয়। পরবর্তীতে তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছিল।

এছাড়া, সোহেল তাজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এমনকি গত ১৫ আগস্ট সোহেল তাজের ধানমন্ডি ৩২ যাওয়ার দাবির সপক্ষে কোনো তথ্যও প্রচার করতে দেখা যায়নি। 

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যমেও এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য, গত ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ধানমন্ডি ৩২ শ্রদ্ধা জানাতে এসে একাধিক ব্যক্তি হেনস্তা ও মারধরের শিকার হলেও সোহেল তাজকে গণপিটুনি বা হেনস্তা করার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। আরও দেখুন- এখানে, এখানে এবং এখানে। 

সুতরাং, গত ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ এ শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে সোহেল তাজের গণপিটুনির শিকার হওয়ার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র