Home Blog Page 23

বিএনপি সমালোচনা প্রসঙ্গে পুলিশ সদস্যের বক্তব্যের এই ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি 

সম্প্রতি “বিএনপিকে বাঁশ দিলো পুলিশ অফিসার” শিরোনামে পুলিশ সদস্যের বক্তব্য দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, পুলিশ সদস্য বলছেন, “চাকরি চলে যেতে পারে তবুও বলি, একটা দল ক্ষমতায় যাওয়ার যা শুরু করেছে তা আওয়ামী লীগের ১৭ বছরকেও হার মানাচ্ছে। ভোট না দিলে তারা নাকি মানুষকে জান নিয়ে ঘরে ফিরতে দিবে না। এদেরকে জাহেল বললেও কম হবে।”  

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।  

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উপরোল্লিখিত ভিডিও পোস্টগুলো সম্মিলিতভাবে প্রায় ১ লক্ষ বার দেখা হয়েছে এবং প্রায় ২ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওগুলোতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপিকে সমালোচনা করে দেওয়া পুলিশ সদস্যের বক্তব্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয় বরং, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি একটি ভুয়া ভিডিও। 

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কোনো বিশ্বস্ত গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে কোনো পুলিশ সদস্য বাস্তবে এরূপ কোনো বক্তব্য প্রদান করলে তা মূলধারার গণমাধ্যমে প্রচার করা হতো। 

এছাড়া, প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে ভয়েস ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও খানিকটা অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়, যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়। 

পরবর্তীতে ভিডিওটি এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী টুল ক্যান্টিলাক্সে বিশ্লেষণ করা হলে, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৩ শতাংশ বলে ফলাফল আসে। 

Screenshot from Cantilux by Rumor Scanner 

উল্লেখ্য, চলতি আগস্ট মাসে পাবনার একটি নির্বাচনী প্রচারণা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, “ধানের শীষের বাইরে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দেওয়ার কথা বলে সেখান থেকে কেউ সুস্থভাবে ফিরে আসতে পারবে—আমার কাছে সেটা মনে হয় না।” দলের নির্দেশ অমান্য করা নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নেটিজেনদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। 

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি করা ভিডিওকে পুলিশ সদস্য কর্তৃক বিএনপির সমালোচনার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

এনসিপির সমাবেশে আওয়ামী লীগের হামলার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের 

সম্প্রতি, “ এই মাএ লক্ষীপুরে NCP সমাবেশে। আওয়ামী লীগ ও এলাকাবাসী হামলা করেছে।” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে এনসিপির সমাবেশে আওয়ামী লীগের হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং, এটি ২০২৪ সালে লক্ষীপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সাথে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ির ঘটনার ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটিতে থাকা লোগোর সূত্র ধরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘Meghna News’ এর ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ২ আগস্ট “লক্ষ্মীপুরে ‘শিক্ষার্থীদের’ বি-ক্ষো-ভ, ছাত্রলীগ-যুবলীগের ধাওয়া” ক্যাপশনে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর ১ মিনিট ২৪ সেকেন্ড অংশ থেকে ২ মিনিট ২৩ সেকেন্ড অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি হুবহু মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

পরবর্তীতে, কি ওয়ার্ড সার্চ করে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ২ আগস্ট ‘লক্ষ্মীপুরে চেয়ারম্যানের উসকানিতে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে পিটুনি | Lakshmipur | Quota | Dhaka Post’ শিরোনামে প্রচারিত ভিডিওর কিছু অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

একই ক্যাপশনে থাকা ঢাকা পোস্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২ আগস্ট (২০২৪) দুপুর ২টার দিকে তমিজ মার্কেট এলাকায় সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপুর বাসার সামনে লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটে। পরে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধাওয়া করে লাঠিসোঁটা দিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে পিটিয়েছেন। 

সেসময় অন্যান্য গণমাধ্যমও এবিষয়ে সংবাদ (,) প্রচার করে। 

সুতরাং, ২০২৪ সালে লক্ষীপুরে কোটা আন্দোলনকারীদের সাথে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সংঘর্ষের ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে এনসিপির সমাবেশে আওয়ামী লীগের হামলার দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

“মির্জা ফখরুলের আসনসহ ৩০০ আসনেই জয়ী হবে জামায়াত” শীর্ষক মন্তব্য করেননি জামায়াত নেতা আবদুল হালিম 

অন্তত গত ২০ আগস্ট থেকে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি প্রচার করা হয়েছে, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেছেন, “মির্জা ফখরুলের আসনসহ ৩০০ আসনেই জয়ী হবে জামায়াত”।

এরূপ দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্ট দেখুন আজকের পত্রিকা, চ্যানেল আই

এরূপ দাবিতে গণমাধ্যমের এক্স অ্যাকাউন্টে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এছাড়াও, আলোচিত দাবিতে সংবাদ প্রচার করে পরবর্তীতে তা সংশোধন করে নেওয়া গণমাধ্যম : ক্যাম্পাস টাইমস।

এছাড়া, গণমাধ্যম সূত্রে ফেসবুকের নানা অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকেও আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “মির্জা ফখরুলের আসনসহ ৩০০ আসনেই জয়ী হবে জামায়াত” শীর্ষক মন্তব্য করেননি জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম। প্রকৃতপক্ষে গত ২০ আগস্ট ঠাকুরগাঁওয়ে এক দলীয় সম্মেলনে মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, জামায়াতে ইসলামী সারাদেশের ৩০০ আসনেই প্রার্থী দিয়েছে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করবে আশা করি। এবং তিনি আরো বলেন, “ঠাকুরগাঁওয়ের ৩ টা আসনেই আমরা (জামায়াত) জিতবো।” উক্ত বক্তব্যকে বিকৃত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে সূরা সদস্য দেলাওয়ার হোসেনের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ২০ আগস্টে ৪৪ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের একটি লাইভ ভিডিও সম্প্রচার হতে দেখা যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, “ঠাকুরগাঁওয়ে ওয়ার্ড সভাপতি সেক্রেটারি সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম”। উক্ত পুরো ভিডিওটিতেই মাওলানা আবদুল হালিমকে বক্তব্য দিতে শোনা যায়। বক্তব্যের ৯:৪০ সেকেন্ডের পর আবদুল হালিমকে বলতে শোনা যায়, “জামায়াতে ইসলামী সারাদেশের ৩০০ আসনেই আমরা প্রার্থী দিয়েছি।” এরপর ২৫:২০ সেকেন্ড পরবর্তী সময়ে আবারও বলতে শোনা যায়, “৩০০ আসনে আমরা (বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী) প্রার্থী দিয়েছি।” এছাড়াও, ২৬:১৬ সেকেন্ডের পর আবদুল হালিমকে বলতে শোনা যায়, “..এজন্য আগামী নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী এইদেশের মানুষের দোয়া, আল্লাহর রহমতে ইনশাআল্লাহ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করবে আশা করি। আপনারা মনে করেন না শুধু আমরা ঠাকুরগাঁওয়ে ১ আসন পাবো? ঠাকুরগাঁওয়ে ৩ টা আসনেই আমরা জিতবো।”

এছাড়াও বক্তব্যে তাকে জামায়াতের নেতাদের ওপর হওয়া নিপীড়ন, পিআর পদ্ধতি, ডাকসু নির্বাচনসহ নানা বিষয়ে কথা বলতে শোনা যায়। কিন্তু, কোথাও তাকে “মির্জা ফখরুলের আসনসহ ৩০০ আসনেই জয়ী হবে জামায়াত” এমন কথা বলতে শোনা যায়নি।

উক্ত ভিডিওটিতে মাওলানা আবদুল হালিমের পেছনে থাকা ব্যানারে থাকা লেখা থেকে জানা যায়, অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার কর্তৃক আয়োজিত “ওয়ার্ড সভাপতি-সেক্রেটারি সম্মেলন ২০২৫”। উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে গত ২০ আগস্ট সকালে ঠাকুরগাঁওয়ে জামায়াতে ইসলামীর ওয়ার্ড সভাপতি ও সেক্রেটারি সম্মেলনে প্রধান অতিথির হিসেবে আবদুল হালিম উপস্থিত থাকার বিষয়ে জানা যায়।

উল্লেখ্য, নানা কোণ থেকে ধারণকৃত উক্ত অনুষ্ঠানে মাওলানা আব্দুল হালিমের উপরোল্লিখিত দীর্ঘ বক্তব্যের নানা খন্ডাংশ বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেও পোস্ট হতে দেখা যায়। তবে কোথাও তাকে আলোচিত কথাগুলো বলতে শোনা যায়নি।

এছাড়াও, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলেও সম্প্রতি তার এরূপ কোনো বক্তব্য দেওয়ার সপক্ষে কোনো ভিডিও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, মূলধারার গণমাধ্যম ‘চ্যানেল আই’ উক্ত অনুষ্ঠানে মাওলানা আবদুল হালিমের একটি ভিডিও প্রচার করে ক্যাপশনে দাবি করে, “৩০০ আসনেই জামায়াত ইসলামী জয় লাভ করবে: মাওলানা আব্দুল হালিম”। কিন্তু চ্যানেল আইয়ের উক্ত ভিডিওটিতেও মাওলানা আবদুল হালিমকে এরূপ কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি।

উল্লিখিত তথ্যপ্রমাণ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, “মির্জা ফখরুলের আসনসহ ৩০০ আসনেই জয়ী হবে জামায়াত” শীর্ষক উক্ত মন্তব্যটি করেননি জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম। 

সুতরাং, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেছেন, “মির্জা ফখরুলের আসনসহ ৩০০ আসনেই জয়ী হবে জামায়াত” শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

প্রথমবার নয়, এর আগেও পাঁচ ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থী কিংবা প্যানেল ঘোষণা করেছে শিবির 

আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। পাঁচ বছর পর হতে যাওয়া এ নির্বাচনকে ঘিরে ২৮ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। এ ঘোষণা ঘিরে গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, স্বাধীনতার পর এবারই প্রথমবারের মতো ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। 

বিবিসি বাংলা ১৮ আগস্ট একটি ফেসবুক পোস্টে “প্রথমবারের মতো” শব্দ ব্যবহার করে একটি ফটোকার্ড প্রকাশ করে। তবে ২৯ মিনিট পর তা সম্পাদনা করে সেখানে “প্রকাশ্যে” শব্দটি যুক্ত করে।

এই দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন: বিবিসি বাংলা (ফেসবুক), দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, খবরের কাগজ। 

একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, স্বাধীনতার পর এবারের ডাকসু নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির প্রথমবার প্রার্থী বা প্যানেল ঘোষণা করেছে  বলে গণমাধ্যমে প্রচারিত দাবিটি সঠিক নয়। বরং ১৯৭৭ সালে সংগঠনটির আনুষ্ঠানিক যাত্রার পর থেকে অনুষ্ঠিত ছয়টি ডাকসু নির্বাচনের (১৯৭৯, ১৯৮০, ১৯৮২, ১৯৮৯, ১৯৯০ ও ২০১৯) মধ্যে পাঁচটিতেই শিবির প্রার্থী বা প্যানেল ঘোষণা করেছে। শুধু ২০১৯ সালের নির্বাচনে তারা কোনো প্রার্থী বা প্যানেল দেয়নি।

অনুসন্ধানের শুরুতে ১৮ আগস্ট “বাঁশেরকেল্লা” নামের একটি ফেসবুক পেজে প্রকাশিত পোস্টে ১৯৮০ সালের ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের একটি প্রচারপত্র এবং ১৮ সদস্যের প্রার্থীর তালিকা পাওয়া যায়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ১৯৭৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। এরপর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে মোট ছয়বার– ১৯৭৯, ১৯৮০, ১৯৮২, ১৯৮৯, ১৯৯৯ এবং ২০১৯ সালে। রিউমর স্ক্যানার টিম ওপেন সোর্স অনুসন্ধানের মাধ্যমে প্রতিটি নির্বাচনের তারিখ বের করে। পরে বাংলাদেশের পুরোনো পত্রিকার অন্যতম অনলাইন সংরক্ষণাগার ‘সংগ্রামের নোটবুক’ ঘেঁটে সে সময়কার সংবাদমাধ্যমে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করে শিবিরের প্রার্থী বা প্যানেল ঘোষণার তথ্য খোঁজা হয়।

১৯৭৯ সালের ২৪ জুলাই ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেদিনের দৈনিক ইত্তেফাকের এক প্রতিবেদনে সহ-সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশিত হয়। সেখান থেকে জানা যায়, ইসলামী ছাত্রশিবিরের হয়ে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মোহাম্মদ আবু তাহের এবং জিএস পদে প্রার্থী ছিলেন আব্দুল কাদের বাচ্চু। একই তথ্য পাওয়া যায় সেদিনের দৈনিক সংবাদ পত্রিকার প্রতিবেদনেও।

পরবর্তী ডাকসু নির্বাচন হয় ১৯৮০ সালের ১৭ নভেম্বর। সেদিনের দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে এর আগের দিন (১৬ নভেম্বর) ছাত্রশিবির একটি সাইকেল র‌্যালির আয়োজন করে। একইদিনের দৈনিক গণকণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই নির্বাচনে শিবিরের “তাহের-কাদের পরিষদ” প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। আর নির্বাচনের একদিন আগে (১৬ নভেম্বর) প্রকাশিত দৈনিক সংবাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ডাকসু ও ১১টি হল সংসদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে।


১৯৮২ সালের ২৩ জানুয়ারি দৈনিক বাংলায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেদিন অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের পক্ষে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এনামুল হক মঞ্জু এবং জিএস পদে আব্দুল কাদের বাচ্চু। এর আগের দিন (২২ জানুয়ারি) প্রকাশিত দৈনিক ইত্তেফাক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ওই নির্বাচনের প্রচারণাকালে ছাত্রশিবিরের এক মিছিলে গ্রেনেড হামলা হয়, যাতে পথচারীসহ মোট ২২ জন আহত হন।


১৯৮৯ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের শামসু-আমিন পরিষদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। সেদিনের দৈনিক বাংলায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে। একইদিনের দৈনিক ইত্তেফাকে উল্লেখ করা হয়, শিবিরের পক্ষ থেকে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আ.ন.ম. শামসুল ইসলাম এবং জিএস পদে আমিনুল ইসলাম।

‘Maulana A.N.M Shamsul Islam’ নামের একটি ফেসবুক প্রোফাইল থেকে গত ১৯ আগস্ট প্রকাশিত এক পোস্টে ১৯৮৯ সালের ডাকসু নির্বাচনের “শামসু-আমিন-মুজিব পরিষদ”-এর একটি ব্যানার এবং সেবার ছাত্রশিবিরের মনোনীত ২০ প্রার্থীর তালিকা পাওয়া যায়।

১৯৯০ সালের ২৭ মে অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচন নিয়ে সেদিনের দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ইসলামী ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে ভিপি পদে মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, জিএস পদে মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান এবং এজিএস পদে শফিকুল আলম হেলাল মনোনয়নপত্র জমা দেন। একইদিনের দৈনিক বাংলায় প্রকাশিত প্রতিবেদনেও একই তথ্য উঠে আসে।


তবে ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কোনো প্যানেল ঘোষণার তথ্য পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, ১৯৭৭ সালে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর পর থেকে অনুষ্ঠিত ছয়টি ডাকসু নির্বাচনের মধ্যে পাঁচটিতেই ছাত্রশিবির প্যানেল বা প্রার্থী দিয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের পাবলিক রিলেশন সম্পাদক এস এম তানভীর উদ্দিন রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, “বিবিসি নিউজের প্রতিবেদনে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিয়ে যে ‘স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথমবারের মত ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের প্রার্থী ঘোষণা’ মন্তব্য করা হয়েছে, সেটি বিভ্রান্তিকর এবং ইতিহাস বিকৃতির শামিল। স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে ইসলামী ছাত্রশিবির ১৯৭৯ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে ডাকসু নির্বাচনে প্যানেল দিয়েছে। কেবলমাত্র ২০১৯ সালের চরম ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক বাস্তবতায় আমরা প্যানেল দিতে পারিনি। সুতরাং এবারের অংশগ্রহণকে ‘প্রকাশ্যে’ বলা উদ্দেশ্যমূলক ও বাস্তবতার সঙ্গে অসঙ্গত। ইসলামী ছাত্রশিবির এই ধরনের অপপ্রচারকে প্রত্যাখ্যান করছে।”

সুতরাং, স্বাধীনতার পর এবারই প্রথমবার বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থী বা প্যানেল ঘোষণা করেছে বলে প্রচারিত দাবি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s analysis.
  • Newspaper archive: Songramer Notebook
  • Statement from SM Tanvir Uddin, Public Relations Secretary of Bangladesh Islami Chhatrashibir 

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাম্প্রতিক মিছিল দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি ‘চট্রগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ, জুমার নামাজের পর সবাই একত্রে জয় বাংলার মিছিল নিয়ে রাজপথ দকল’ ক্যাপশনে একটি মিছিলের ভিডিও ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে।  

ভিডিওটির ক্যাপশনে উক্ত মিছিলটি নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার গত ০৮ আগস্টের আয়োজন বলে দাবি করা হয়েছে৷ 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ এমন কোনো বৃহৎ মিছিলের আয়োজন করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের একটি বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি গত ০৮ আগস্ট, শুক্রবারে প্রচার করা হয়েছে এবং ভিডিওটির ক্যাপশনে এটিকে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সেদিনের আয়োজিত মিছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।   

উক্ত তথ্যাবলীর সূত্র ধরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগবাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে উক্ত তারিখের পোস্টগুলো যাচাই করে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে, Sultan Ahmed নামক ফেসবুক প্রোফাইলে ২০২৪ সালের ০৩ আগস্ট প্রকাশিত পোস্টে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

অর্থাৎ, ভিডিওটি সাম্প্রতিক কোনো মিছিলের নয়। 

এ বিষয়ে অধিকতর অনুসন্ধানের মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ০৩ আগস্ট ‘চট্টগ্রাম-এ ছাত্র জনতার মিছিল “আমার দেশ আমার মা পাকিস্তান, আফগানিস্তান হবে না”’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর দৃশ্যাবলীর সাথে আলোচিত ভিডিওটির দৃশ্যাবলীর মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, এটি সেদিন চট্টগ্রামে বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের মিছিলের মিছিলের চিত্র। 

সুতরাং, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ আয়োজিত সাম্প্রতিক মিছিলের ভিডিও দাবিতে ২০২৪ সালের ০৩ আগস্টে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের মিছিলের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আইডিইবি নেতার বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের ‘কুলাঙ্গার’ বলে সম্বোধন করার ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়, ২০২৪ সালের

সম্প্রতি, ইন্সটিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বা আইডিইবি-এর একজন নেতা এক আলোচনা সভায় বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের ‘কুলাঙ্গার’ বলে মন্তব্য করেছেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

আইডিইবি-এর উক্ত নেতার মন্তব্যের প্রতিবাদে গত ২০ আগস্ট দিবাগত রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন কালবেলাঢাকা মেইল এবং এখন টিভি

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আইডিইবি নেতার বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের ‘কুলাঙ্গার’ বলে আখ্যায়িত করার ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৪ সালে ইন্সটিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স আয়োজিত একটি প্রতিবাদ সভায় আইডিইবির নেতা মির্জা এটিএম গোলাম মোস্তফার দেওয়া একটি বক্তব্যের ভিডিওকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে ২০ আগস্ট রাতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। 

আলোচিত দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Nabil Fahad নামের একজন বুয়েট শিক্ষার্থীর ফেসবুক আইডিতে ২০ আগস্ট মধ্যরাতে প্রচারিত একটি পোস্টের সন্ধান পাওয়া যায়। পোস্টটিতে তিনি বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের একটি চিত্র প্রচার করে দাবি করেন,  ২০ আগস্ট এক সভায় একজন ডিপ্লোমাধারী ব্যক্তি প্রকাশ্যে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের ‘কুলাঙ্গার’ বলে অভিহিত করেন। যার প্রতিবাদে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভ মিছিল করে।

Screenshot: Facebook 

তবে উক্ত পোস্টের মন্তব্যের ঘর পর্যালোচনা করে Abir Hossain Shanto নামের ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থীর একটি মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে তিনি দাবি করেন, বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের ‘কুলঙ্গার’ বলে সম্বোধন করার ঘটনাটি  ২০ আগস্টের নয়, বরং ২০২৪ সালের ২০ মে-র ঘটনা। সেদিন ইন্সটিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স-এর মির্জা এটিএম গোলাম মোস্তফা নামের নেতা উক্ত মন্তব্যটি করেন বলেও তিনি তার মন্তব্যে দাবি করেন। 

Screenshot: Facebook 

পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Institution of Diploma Engineers, Bangladesh.(IDEB) এর ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ২০ মে প্রচারিত একটি ভিডিওর সন্ধান পাওয়া যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে উল্লেখ করা হয়, এটি কারিগরি শিক্ষাকে মর্যাদা প্রদান ও সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির প্রয়াসে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষাকে বিএসসি (পাস) সম্মান মর্যাদা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণের প্রেক্ষিতে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের বিরোধীতার প্রতিবাদ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ বাস্তবায়ন সহ ৩ দফা দাবিতে  আয়োজিত একটি প্রতিবাদ সভার সরাসরি সম্প্রচারকৃত ভিডিও। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটির ১ ঘন্টা ১৪ মিনিট থেকে তৎকালীন ঢাকা জেলা আইডিইবির সভাপতি মির্জা এটিএম গোলাম মোস্তফাকে বক্তব্য প্রদান করতে দেখা যায়। তার বক্তব্যে প্রদানের ১ ঘন্টা ১৬ মিনিট ১০ সেকেন্ডের ফুটেজ থেকে পরবর্তী বিভিন্ন অংশের বক্তব্যের সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল রয়েছে। মূলত, তার বক্তব্যের বিভিন্ন অংশ কাট করে সেগুলোর সমন্বয়ে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। তবে ওই প্রতিবাদ সভায় তার বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের ‘কুলাঙ্গার’ বলে সম্বোধন করার সত্যতা পাওয়া যায়। 

সুতরাং, ২০২৪ সালে এক আলোচনা সভায় আইডিইবি নেতার বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের ‘কুলাঙ্গার’ বলে সম্বোধন করার ভিডিওকে সাম্প্রতিক ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

  • Nabil Fahad Facebook Post
  • Institution of Diploma Engineers, Bangladesh.(IDEB) Facebook Page Post
  • Rumor Scanner’s Analysis

ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার কোনো নারীর নয়, বস্তাবন্দী এই লাশটি এক যুবকের

সম্প্রতি, একজন নারীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করার পর হত্যা করে বস্তায় ভরে রাস্তায় ফেলে গেছে জুলাই জঙ্গী মব সন্ত্রাসীরা- শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত বস্তাবন্দী লাশের ভিডিওটি কোনো নারীর নয় এবং এই লাশের সাথে ধর্ষণেরও কোনো সম্পর্ক নেই। প্রকৃতপক্ষে, এটি গত জুন মাসে নারায়নগঞ্জে এক যুবকের বস্তাবন্দী লাশ করে নালা থেকে উদ্ধারের ঘটনার দৃশ্য। 

অনুসন্ধানে ‘Jabed Ahmed Jabed Ahmed’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ১৭ জুন প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটিতে থাকা লাশ এবং লাশের পাশে থাকা মানুষের সঙ্গে আলোচিত ভিডিওতে লাশ ও লাশের পাশে থাকা মানুষের পোশাক এবং চেহারার মিল রয়েছে।

Comparison By Rumor Scanner 

জাবেদ আহমেদের পোস্টের ক্যাপশনের দাবি অনুযায়ী এটি গত ১৭ জুন ফতুল্লা পূর্ব শিয়াচর লালখা এডভান্স গার্মেন্টসের সামনে নতুন রাস্তা নামে পরিচিত এলাকার রাস্তার পাশের ড্রেন থেকে বস্তাভর্তি লাশ উদ্ধারের দৃশ্য।

উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক যায়যায়দিনের ওয়েবসাইটে “ফতুল্লায় ড্রেন থেকে যুবকের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার”- শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ১৭ জুন সকাল সাড়ে ১১ টায় ফতুল্লার পূর্ব শিহাচর লালখাঁ এলাকায় রাস্তার পাশের ড্রেন থেকে জনি সরকার (২৫) নামে এক যুবকের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত জনি সরকার সিলেট জেলার জামালগঞ্জ থানার বিশ্নপুর গ্রামের করুনা সরকারের ছেলে। সে তার পরিবারের সঙ্গে ফতুল্লার লালখাঁ এলাকায় বসবাস করতো।

ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, প্লাষ্টিকের বস্তায় হাত পা বাধা অবস্থায় ড্রেন থেকে জনি সরকারের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

পরবর্তীতে গত ১৯ জুন প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে “অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মাদকাসক্ত ছেলেকে হত্যা করেন মা–বাবা: পুলিশ”- শিরোনামে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনে আলোচিত ঘটনার বিষয়ে পুলিশের বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়।

গত ১৯ জুন নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মো. হাসিনুজ্জামান বলেছেন, পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে ছেলে হত্যায় বাবা করুণা সরকারের সম্পৃক্ততা পায়। পরে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে বাবার সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, ছেলে মাদকাসক্ত ছিল। প্রায়ই টাকার জন্য বাড়িঘরে ভাঙচুর করতেন। বাবা-মাকেও মারধর করতেন। দীর্ঘদিন ছেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বাবা ঘুমের মধ্যে মাথায় রুটি তৈরি করার বেলন দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন। মা অসিতা রানী সরকার তাঁর স্বামীকে সহায়তা করেন।

পাশাপাশি, একই তথ্য নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের ফেসবুক পেজ থেকেও প্রচার করা হয়। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওতে থাকা বস্তাবন্দী লাশটি জনি সরকার নামক এক যুবকের। 

সুতরাং, গত জুন মাসে নারায়নগঞ্জে এক যুবকের বস্তাবন্দী  লাশ উদ্ধারের দৃশ্যকে সম্প্রতি এক নারীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণের হত্যা করে রাস্তায় ফেলে যাওয়ার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার দৃশ্য এআই দিয়ে তৈরি বলে মন্তব্য করেননি শিশির মনির, ঢাকা পোস্টের নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

0

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার শহীদ আবরার ফাহাদ অ্যাভিনিউয়ে (পূর্বনাম: বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ) আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়। এতে ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলটির শতাধিক নেতা-কর্মী। এরই প্রেক্ষিতে অন্তত গত ১৯ আগস্ট থেকে, “একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার দৃশ্য ছিলো এআই (AI) দিয়ে তৈরি” শীর্ষক মন্তব্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আইনজীবী শিশির মনির করেছেন দাবিতে অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা পোস্টের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার দৃশ্য ছিলো এআই (AI) দিয়ে তৈরি’ শীর্ষক উক্ত মন্তব্য করেননি আইনজীবী শিশির মনির এবং ঢাকা পোস্টও এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকা পোস্টের ফটোকার্ড ডিজাইনের আদলে ফটোকার্ড তৈরি করে ভুয়া এই দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডে ঢাকা পোস্টের লোগো ও তারিখ হিসেবে ১৯ আগস্ট, ২০২৫ উল্লেখ থাকার সূত্রে সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করলে সাম্প্রতিক সময়ে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইটেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি।

ফটোকার্ডটি বিশ্লেষণে সংবাদমাধ্যমটির ফেসবুক পেজের ফটোকার্ডগুলোর সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির গ্রাফিক্যাল ডিজাইন ও ফন্টের ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া, ঢাকা পোস্টের প্রচলিত ফটোকার্ডে সাধারণত “বিস্তারিত কমেন্টে” শব্দ দুইটি লেখা থাকে। কিন্তু প্রচারিত ফটোকার্ডে তা নেই।

Comparison: Rumor Scanner

পাশাপাশি অন্য গণমাধ্যম এবং বিশ্বস্ত সূত্রগুলোর বরাতেও আইনজীবী শিশির মনিরের উক্ত মন্তব্য সম্বলিত কোনো তথ্য বা সংবাদ পাওয়া যায়নি৷

সুতরাং, “একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার দৃশ্য ছিলো এআই (AI) দিয়ে তৈরি – আইনজীবী ও জামায়াত নেতা শিশির মনির” শীর্ষক দাবিতে ঢাকা পোস্টের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া।

তথ্যসূত্র

জিয়াউর রহমানকে খালেদা জিয়ার সন্তান বলে মন্তব্য করেননি মাবরুর রশিদ বান্নাহ

সম্প্রতি ‘জিয়াউর রহমান কে খালেদা জিয়ার সন্তান বানাই ফেলছে বান্নাহ’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে। 

ভিডিওটিতে বাংলাদেশি নাট্য পরিচালক মাবরুর রশিদ বান্নাহকে ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান,  আমাদের আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার  সন্তান’ বলতে শোনা যায়৷ 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মাবরুর রশিদ বান্নাহ সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সন্তান বলে মন্তব্য করেননি। প্রকৃতপক্ষে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে দেওয়া মাবরুর রশিদ বান্নাহর বক্তব্যের একটি খণ্ডিত অংশ বিভ্রান্তিকরভাবে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের মাধ্যমে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ফেসবুক পেজে গত ১২ আগস্ট প্রকাশিত একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর দৃশ্যাবলীর সাথে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, গত ১২ আগস্ট আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘যুব সমাজের প্রত্যাশা ও বিএনপির পরিকল্পনায় আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অনলাইনে যুক্ত ছিলেন। 

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটির ৪৮:১৯ থেকে ৪৮:২৫ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটি আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে৷  ভিডিওটির ৪৭:২০ থেকে ৪৮:২০ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশে উক্ত সভার বক্তা মাবরুর রশিদ বান্নাহ প্রধান অতিথি তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে “আপনাকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতেই হবে, আপনাকে জিততেই হবে, আপনাকে দেখাতেই হবে যে আপনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান,  আমাদের আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সন্তান” বলতে শোনা যায়৷

এই বক্তব্য থেকে “শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান,  আমাদের আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সন্তান” অংশটি কর্তন করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷

অর্থাৎ, মাবরুর রশিদ বান্নাহ মূলত তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে আলোচ্য বক্তব্যটি দিয়েছিলেন। যেখানে তিনি জিয়াউর রহমানকে খালেদা জিয়ার সন্তান দাবি করেননি।

পরবর্তীতে, ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম ডিবিসি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে গত ১২ আগস্ট ‘তারেক রহমান আপনাকে জিততেই হবে: বান্নাহ’ শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিওতেও বান্নাহর একই বক্তব্য খুঁজে পাওয়া গিয়েছে৷ 

সুতরাং, মাবরুর রশিদ বান্নাহ জিয়াউর রহমানকে খালেদা জিয়ার সন্তান বলে মন্তব্য করেছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

এনসিপির পথসভায় তারেক রহমানের পক্ষে স্লোগান দাবিতে সম্পাদিত ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ‘এনসিপির নেতারা কি বলতে কি বলল সবাই অবাক’ দাবিতে একটি ভিডিও টিকটকে প্রচার করা হয়েছে। 

ভিডিওতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমহ এনসিপি নেতা-কর্মীদের ‘মা, মাটি ডাকছে, তারেক রহমান আসছে, তারেক রহমান বীরের বেশে, আসবে ফিরে বাংলাদেশ’ শীর্ষক স্লোগান দিতে শোনা যায়।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন: এখানে (আর্কাইভ)। 

এই প্রতিবেদন লেখা অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ২ লক্ষ ১৯ হাজার বার দেখা হয়েছে এবং ৫১২ জন এতে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এনসিপির পথসভায় তারেক রহমানের পক্ষে স্লোগান দেওয়া হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, রাজবাড়ীতে এনসিপির জুলাই পদযাত্রায় ধারণকৃত একটি ভিডিওর অডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় পরিবর্তন করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির বেশকিছু কী-ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম এখন টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৭ জুলাইয়ে ‘রাজবাড়ীতে এনসিপির পদযাত্রায় যা বললেন তাসনিম জারা’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনটির ৩৬ সেকেন্ড সময় হতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল রয়েছে। তবে, এখন টিভিতে প্রচারিত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর অডিওতে অমিল লক্ষ্য করা যায়। ভিডিওতে সারজিস আলমকে এনসিপি নেত্রী তাসনিম জারাকে উদ্দেশ্য করে স্লোগান দিতে দেখা গেলেও তাকে তারেক রহমানের পক্ষে কোনো স্লোগান দিতে দেখা যায়নি। 

অডিও যাচাই

পরবর্তীতে, আলোচিত ভিডিওতে তারেক রহমানের পক্ষে স্লোগানের অডিওর অস্তিত্ব খুঁজে দেখার চেষ্টা করে রিউমর স্ক্যানার। অনুসন্ধানে গত ০৩ আগস্ট Rahat Hossen নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর ভয়েসের (অডিও) সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর ভয়েসের মিল রয়েছে। 

অর্থাৎ, এটি নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে এনসিপির পথসভায় তারেক রহমানের পক্ষে কোনো স্লোগান দেয়া হয়নি। 

সুতরাং, এনসিপির পথসভায় তারেক রহমানের পক্ষে স্লোগান দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র