Home Blog Page 22

জ্যাকি চ্যান মারা যাওয়ার দাবিটি ভুয়া

0

সম্প্রতি, অ্যাকশন সিনেমা জগতের তারকা জ্যাকি চ্যান মারা গিয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। প্রচারিত পোস্টটিতে পোস্টটিতে তিনটি ছবির সমন্বয়ে তৈরি একটি ছবিও রয়েছে। যার একটিতে তার মরদেহের ছবি ও মৃত্যুর পূর্বে হাসপাতালে অবস্থানকালীন সময় ধারণ করা ছবি দাবিতে দুটি ছবি তুলে ধরা হয়েছে। আরেকটি ছবিতে তাকে স্বাভাবিক অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।  

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, জ্যাকি চ্যান মারা যাননি। প্রকৃতপক্ষে, এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি তার মরদেহের ভুয়া ছবি তৈরি করে তার সাথে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন তার পুরোনো ছবি যুক্ত করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

যেহেতু জ্যাকি চ্যান একজন আন্তর্জাতিক তারকা সেহেতু তিনি মারা গেলে তার মৃত্যুর খবরটি স্বাভাবিকভাবেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে প্রচারিত হবে। কিন্তু অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে তার মৃত্যুর বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

তবে জ্যাকি চ্যানের বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অলিম্পিকের ওয়েবসাইটে আজ ২০ আগস্ট প্রচারিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, জ্যাকি চ্যান সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের লুসান শহরে অবস্থিত দ্য অলিম্পিক হাউজের আইওসি অর্থাৎ, ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটির সদর দপ্তর ভ্রমণ করেন। অলিম্পিকের ভেরিফাইড ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট পর্যালোচনা করেও তার সেখানে ভ্রমণের দুটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। যার একটি ভিডিও গত ১৮ আগস্ট এবং আরেকটি ভিডিও গত ১৯ আগস্ট প্রচার করা হয়। অপরদিকে তার মৃত্যুর দাবিতে করা পোস্টটি গত ১১ আগস্ট প্রচার করা হয়।  

ছবি যাচাই ১

আলোচিত পোস্টটিতে তার মরদেহের ছবি দাবিতে প্রচারিত পোসটটি পর্যালোচনায় রিউমর স্ক্যানার এতে বেশকিছু এআই জড়িত অসঙ্গতি লক্ষ্য করে। ছবিটিতে তার মরদেহের হাতের আঙ্গুলসহ সেখানে উপস্থিত বাকিদের হাতের আঙ্গুলের গঠন ও চেহারায় অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যায়। তাই বিষয়টি আরও নিশ্চিতের জন্য এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম Hive Moderation এ ছবিটি পরীক্ষা করলে দেখা যায়, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯.৯ শতাংশ।

Screenshot: Hive Moderation

অর্থাৎ, জ্যাকি চ্যানের মৃত্যুর দাবিতে প্রচারিত তার মরদেহের ছবিটি এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে।

ছবি যাচাই ২

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জ্যাকি চ্যানের ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে 成龙 Jackie Chan – Armenia নামের একটি ফেসবুক পেজে ২০২০ সালের ৪ মে প্রচারিত একটি পোস্টে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। পোস্টটিতে দাবি করা হয়, ছবিটি ১৯৮৫ সালের সেপ্টেম্বরে ধারণ করা হয়েছে। সেসময় যুগোস্লাভিয়ায় আর্মর অফ গড নামের একটি সিনেমার শ্যুটিং করতে গিয়ে তিনি গুরুতর আহত হন বলেও পোস্টটিতে উল্লেখ করা হয়।  

Screenshot: Facebook 

প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বিনোদন বিষয়ক মার্কিন গণমাধ্যম Cinema Blend এর ওয়েবসাইটে ২০১৭ সালের ২৬ অক্টোবর That Time Jackie Chan Almost Died On The Set On One Of His Movies শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, আর্মর অফ গড নামের ওই সিনেমার যে সিনটি ধারণ করতে গিয়ে তিনি আহত হয়ে প্রায় মারা যেতে নিয়েছিলেন সেটিতে মূলত তাকে একটি দেয়াল থেকে লাফ দিয়ে লম্বা একটি গাছ ধরে ঝুলে অপরপাশে যেতে হতো। প্রথমবারে দৃশ্যটি ধারণ করা হলেও তিনি দ্বিতীয়বার দৃশ্যটি ধারণ করতে চান। এসময়ই তিনি গাছের ডাল ভেঙে নিচে পড়ে যান বলে প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়। যার ফলে নিচে থাকা একটি পাথরে তিনি মাথায় ভয়াবহ আঘাত পান। প্রতিবেদনটিতে সিনেমার সেই দৃশ্যের একটি ফুটেজও দেখতে পাওয়া যায়। 

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম The Times-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়।  

সুতরাং, অ্যাকশন সিনেমার তারকা জ্যাকি চ্যান মারা গিয়েছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ছাত্রলীগ নেতা রাব্বানীর পাশে ছাত্রদল মনোনীত ডাকসুর ভিপি প্রার্থী আবিদুল দাবিতে ভিন্ন ব্যক্তির ছবি প্রচার

আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আবিদুল ইসলাম খানকে সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী করা হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর একটি ভিডিও ও কিছু পোস্টে ভিডিওটির স্ক্রিনশট প্রচার করা হয়েছে। প্রচারিত ছবিতে গোলাম রাব্বানীর পাশে থাকা একজন ব্যক্তিকে গোল দাগে চিহ্নিত করে দাবি করা হয়েছে, গোলাম রাব্বানীর পাশে থাকা চিহ্নিত ঐ ব্যক্তি ছাত্রদলের পক্ষ থেকে ডাকসুর ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত সবচেয়ে ভাইরাল পোস্টটি এককভাবে ২ লক্ষ ৭০ হাজারেরও অধিক বার দেখা হয়েছে এবং ৫ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্টটিতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবি বা ভিডিওতে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর পাশে থাকা ব্যক্তি আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে মনোনীত ভিপি প্রার্থী মো. আবিদুল ইসলাম খান নন। প্রকৃতপক্ষে গোল দাগে চিহ্নিত ঐ ব্যক্তির নাম আপেল মাহমুদ সবুজ যিনি একজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা।

প্রচারিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ‘ছাত্রলীগের নতুন সভাপতি শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী’ শিরোনামে ২০১৮ সালের ১ আগস্টে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়। ভিডিওটির ১ মিনিট ৩৪ সেকেন্ড পরবর্তী সময়ের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও ও স্ক্রিনশটের হুবহু মিল পাওয়া যায় এবং নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি ইনডিপেনডেন্ট টিভিতে প্রচারিত উক্ত ভিডিওটি থেকেই নেওয়া হয়েছে। ইনডিপেনডেন্ট টিভির উক্ত ভিডিওতে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক পদ দিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার বিষয়ে সংবাদ পাঠ করা হয়েছে। ভিডিওটিতে গোলাম রাব্বানীর পাশে থাকা গোল দাগে চিহ্নিত ব্যক্তির কোনো পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি।

ভিডিওটিতে গোলাম রাব্বানীর পাশে থাকা গোল দাগে চিহ্নিত ব্যক্তির সাথে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে মনোনীত ডাকসু ভিপি প্রার্থী মো. আবিদুল ইসলাম খানের মুখমন্ডলের তুলনা করলে বৈসাদৃশ্য দেখা যায় যা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করে দুইজন ভিন্ন ব্যক্তি।

Comparison : Rumor Scanner

পরবর্তীতে গোল দাগে চিহ্নিত উক্ত ব্যক্তির পরিচয়ের বিষয়ে অনুসন্ধান করলে গোলাম রাব্বানীর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের ১১ জুলাইয়ে প্রচারিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টটিতে গোলাম রাব্বানী একজন ব্যক্তির সাথে তার একটি ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেন, “জন্মজয়ন্তীর ফুলেল শুভেচ্ছা, মাই বিলাভড ব্রাদার, আপেল মাহমুদ সবুজ | সদস্য, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।

Comparison : Rumor Scanner

গোলাম রাব্বানীর সাথে থাকা ‘আপেল মাহমুদ সবুজ’ নামক উক্ত ব্যক্তির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিতে গোলাম রাব্বানীর পাশে থাকা গোল দাগে চিহ্নিত ব্যক্তির তুলনা করলে মিল পাওয়া যায়। আপেল মাহমুদ সবুজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করলে তার আরো ছবি পাওয়া যায় যার সাথে প্রচারিত ছবিতে গোলাম রাব্বানীর পাশে থাকা ব্যক্তির মিল পাওয়া যায়৷ এবং নিশ্চিত হওয়া যায় যে গোলাম রাব্বানীর পাশে থাকা ঐ ব্যক্তি মূলত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আপেল মাহমুদ সবুজ।

সুতরাং, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর পাশে ডাকসুতে ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান বসে আছেন দাবিতে আপেল মাহমুদ সবুজ নামের এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতার ছবি প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশে চুরির অভিযোগে মুসলিম তরুণদের মারধরের ভিডিওকে সাম্প্রদায়িক ঘটনা দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, বাংলাদেশে দুজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী তরুণকে খুঁটির সাথে বেঁধে একজন দাড়ি-টুপিওয়ালা ব্যক্তি বেধড়ক পেটাচ্ছেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, এক তরুণকে হাত-পা বেঁধে উপুড় করে মাটিতে ফেলে রাখা হয়েছে। যাকে ওই দাড়ি-টুপিওয়ালা ব্যক্তি একটি লাঠি দিয়ে পায়ে আঘাত করছেন। এতে আরেকজন ব্যক্তিকে সহযোগিতা করতেও দেখা যায়। ভিডিওটিতে অপর আরেক তরুণকে পাশের একটি খুঁটিতে বেঁধে রাখতে দেখা যায়। এছাড়াও ঘটনাটি ঘিরে কৌতূহলী জনতাকে দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা যায় ভিডিওটিতে।

এক্স (সাবেক টুইটার)-এ প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।  

ফেসবুক প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত একই ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত বাংলাদেশে মুসলিমদের দ্বারা হিন্দু ধর্মাবলম্বী তরুণদের মুসলিম ধর্মাবলম্বী কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, বরিশালের বাবুগঞ্জে একটি ওয়ার্কশপ থেকে লোহার পাত চুরির অভিযোগে দুই তরুণকে বেঁধে ওয়ার্কশপ মালিকের মরধরের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। এছাড়াও মারধরের শিকার দুই তরুণ হিন্দু ধমাবলম্বী নয়, তারা মুসলিম।

আলোচিত দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে অনলাইনভিত্তিক গণমাধ্যম Dhaka Mail-এর ওয়েবসাইটে গত ১৬ মার্চ ‘চুরির অভিযোগে দুই যুবককে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, দোকান মালিক আটক’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison by Rumor Scanner

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এতে ব্যবহৃত ফিচার ইমেজে ব্যবহৃত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওর নির্যাতনের দৃশ্যের হুবহু মিল রয়েছে। অর্থাৎ, প্রতিবেদনটি আলোচিত নির্যাতনের ঘটনা নিয়েই প্রকাশিত। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, নির্যাতনের ঘটনাটি গত ১৬ মার্চ বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ব্রিজ এলাকায় ঘটে। দোকান থেকে লোহার পাত চুরির অভিযোগে মিঠুন (২০) ও লিংকন (২৩) নামের ওই দুই তরুণকে মারধর করা হয় বলেও প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়।   

প্রতিবেদনটিতে সূত্রের বরাতে উল্লেখ করা হয়, ১৫ মার্চ দিবাগত রাতে সেবা ইঞ্জিনিয়ারিং নামের ওই দোকান থেকে বেশ কিছু লোহার পাত চুরি হয়। সকালে দোকান মালিক হাসান এসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন পাশের ভাঙারি ব্যবসায়ী সাইদুল চোরাই লোহার পাতগুলো কিনেছে। পরে সাইদুলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মিঠুন ও লিংকনকে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করেন দোকান মালিক হাসান ও স্থানীয় কিছু লোকজন। তবে প্রতিবেদনের কোথাও নির্যাতনের শিকার দুই তরুণের ধর্মীয় পরিচয় উল্লেখ না থাকলেও তাদের বাবার নাম উল্লেখ করা হয়। মিঠুন বাবুগঞ্জ উপজেলার দোয়ারিকা গ্রামের চান মুন্সির ছেলে এবং লিংকন একই গ্রামের বাবুল বেপারীর ছেলে বলে প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়। 

উক্ত ঘটনায় একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য পাওয়া গেলেও কোনোটিতেই  তাদের ধর্মীয় পরিচিয় পাওয়া যায়নি। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং  এখানে। তবে তাদের বাবার নাম দেখে ধারণা করা যায়, তারা মুসলিম ধর্মাবলম্বী।

বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিত হওয়ার জন্যে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ওসি জাকির হোসেন শিকদারের সাথে রিউমর স্ক্যানার যোগাযোগ করলে তিনি জানান, মারধরের এই ঘটনাটি বেশ আগের। বর্তমানে এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি কারাগারে আছেন। তবে নির্যাতনের শিকার কেউ-ই হিন্দু ধর্মাবলম্বী নয়, তারা সকলেই মুসলিম। 

সুতরাং, চুরির অভিযোগে বরিশালে দুই মুসলিম তরুণকে মারধরের ভিডিওকে বাংলাদেশে হিন্দু তরুণদের মারধরের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

পদ্মা সেতু নিয়ে পাপুয়া নিউগিনির আদালতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা- অব্যাহতির দাবিগুলো ভুয়া

সম্প্রতি ‘Tamanna Akhter Yesman’ নামক একটি ফেসবুক প্রোফাইল থেকে একটি ছবি প্রচার করে দাবি করা হয়, এটি তামান্না নামের একজন নারীর পাপুয়া নিউগিনির গোয়েন্দা ডিপার্টমেন্ট কোর্টের প্রধান বিচারপতি ব্রেট জির্কারটের হাত থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথিত মামলার অব্যাহতির ফাইল গ্রহণের দৃশ্য। উল্লিখিত মামলাটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কর্তৃক পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থ লুটপাটের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৫৬ জনকে আসামী করে দায়ের করা হয়েছিল বলে দাবি করা হয়েছে।  

একই ক্যাপশনসহ অন্যান্য ফেসবুক আইডি থেকেও এই ভিডিও প্রচারিত হয়।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পদ্মাসেতু নির্মাণে অর্থ লুটপাটের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫৬ জনের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কর্তৃক বাংলাদেশ কিংবা বাংলাদেশের বাহিরে কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে ২০১২ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন একটি মামলা দায়ের করেছিল। তবে,২০১৪ সালে মামলাটির কার্যক্রম গোপনে বন্ধ করে দেওয়া হয়, গত ০১ জুলাই দুদকের পক্ষ থেকে মামলাটি নতুন করে চালু হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, ২০২০ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী রিম আল হাশিমির সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত কলম্বিয়ার রাষ্ট্রদূত ফাইহান আল ফায়েজের সাক্ষাতের ছবিকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের মাধ্যমে স্পেনের গণমাধ্যম El Correo এর সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংস্করণের ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ২৩ মার্চ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে যুক্ত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছবিটি ২০১৮ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত কলম্বিয়ার তৎকালীন রাষ্ট্রদূত ফাইহান আল ফায়েজের সাথে সংযুক্ত আরব-আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রী রিম আল হাশিমির সাথে সাক্ষাৎকালে ধারণ করা। 

একই বিষয়ে কলম্বিয়ার গণমাধ্যম Ecos Politicos এর ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ২৩ মার্চ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও একই ছবি ও তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়। 

তাছাড়া, পাপুয়া নিউগিনিতে ‘গোয়েন্দা ডিপার্টমেন্ট কোর্ট’ নামক কোনো আদালতের তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। ব্রেট জির্কারট নামেও কোনো বিচারপতির অস্তিত্ব নেই।

২০১২ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলা, যেটির কার্যক্রম ২০১৪ সালে গোপনে বন্ধ করে দেওয়া হয়, গত ০১ জুলাই দুদকের পক্ষ থেকে মামলাটি নতুন করে চালু হয়েছে। উক্ত মামলাটি দুদকের পক্ষ থেকে দায়ের করা হয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কর্তৃক নয়। 

উল্লেখ্য, Tamanna Akhter Yesman নামে পরিচালিত এই ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ভুয়া। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমিরর ছবি ব্যবহার করে এই ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে আওয়ামী লীগের পক্ষে রাজনৈতিক প্রভাব তৈরির চেষ্টা নিয়ে গত ১৯ জুন বিস্তারিত ফ্যাক্টস্টোরি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

সুতরাং, পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থ লুটের অভিযোগে কথিত মামলা থেকে শেখ হাসিনাসহ ৫৬ জনের অব্যাহতি পেয়েছেন দাবিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মন্ত্রী রিম আল হাশিমির সাথে ২০১৮ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত তৎকালীন কলম্বিয়ার রাষ্ট্রদূত ফাইহান আল ফায়েজের ছবি প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

আওয়ামী লীগের পক্ষে সাম্প্রতিক মশাল মিছিল দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ‘ব্রেকিং নিউজ,, সিলেটে মশাল মিছিল বিজয় অতি নিকটে, জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

অর্থাৎ, সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটে আওয়ামী লীগের সমর্থনে মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত  দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটে আওয়ামী লীগের পক্ষের এমন কোনো মশাল মিছিল হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, অন্তত ২০২৪ সালের ১ আগস্ট থেকে ইন্টারনেটে ভিডিওটির অস্তিত্ব রয়েছে। সেসময় ভিডিওটি সিলেট সহ সারাদেশে ছাত্র-শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সিলেটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মশাল মিছিল দাবিতে প্রচার হতে দেখা যায়। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্যের ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ১ আগস্ট ‘সিলেট সহ সারাদেশে ছাত্র-শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে সিলেটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে আজ রাতে মশাল মিছিল করা হয়।’ শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Comparison : Rumor Scanner

একই দাবিতে সেই সময় ভিডিওটি ফেসবুকে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে প্রচার হতে দেখা যায়। দেখুন – এখানে, এখানে, এখানে

অর্থাৎ, ভিডিওটি অন্তত ২০২৪ সালের ১ আগস্ট থেকে ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে। তবে ভিডিওটি ঐদিনেরই কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এছাড়া, গুগলম্যাপের সহায়তায় ভিডিওটির জিওলোকেশন যাচাই করে দেখা যায়, এটি সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনেই ধারণ করা হয়েছে।

Collage : Rumor Scanner

সুতরাং, ২০২৪ সালের ১ আগস্ট থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে সম্প্রতি সিলেটে আওয়ামী লীগের সমর্থনে মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Pinaki Bhattacharya – পিনাকী ভট্টাচার্য : Facebook Post
  • Mohammed Kawsar : Facebook Post
  • Dr. Shafiqul Islam Masud : Facebook Post
  • Abdur Rab Bhuttow : Facebook Post

রাবি ছাত্রলীগ নেত্রীদের স্লোগানের এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়, ২০২২ সালের

সম্প্রতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসটির ছাত্রলীগের নারী নেত্রীরা প্রকাশ্যে স্লোগান দিচ্ছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওতে একদল নারীকে সমাবেত হয়ে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিতে দেখা যাচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

জুলাই অভ্যুত্থানের অংশগ্রহণকারী নারী আন্দোলনকারীর নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে ছাত্রলীগে যোগদান করে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিচ্ছেন দাবিতেও একই ভিডিওটি প্রচার করা হয়।

টিকটকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেত্রীদের স্লোগানের ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২২ সালের ১৪ মার্চ অনুষ্ঠিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের হল সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের নেত্রীদের দেওয়া স্লোগানের ভিডিওকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে এর কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Study Law নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ১৩ এপ্রিল ইতিহাসে প্রথমবার রাবিতে ছাত্রলীগের নারীনেত্রীদের স্লোগান শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটির পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওর ২৮ সেকেন্ড থেকে ৪৫ সেকেন্ডের ফুটেজের সাথে আলোচিত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি সেসময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকিটাকি চত্বরে ধারণ করা হয়। এছাড়াও ভিডিওটির ৩ মিনিট ১০ সেকেন্ডে ‘১৪ তারিখের সম্মেলন; সফল হোক, সফল হোক’ শীর্ষক স্লোগান দিতে শোনা যায়। পাশাপাশি সেসময় ছাত্রলীগের নেত্রীদের পেছনে থাকা একটি ব্যানারে ‘হল সম্মেলন’ লেখাও দেখতে পাওয়া যায়।

Screenshot: Youtube 

অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০২২ সালের ১৪ মার্চ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমন্বিত হল সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অর্থাৎ, রাবি ছাত্রলীগের নেত্রীদের স্লোগান দেওয়ার ভিডিওটি ১৩ এপ্রিল ধারণ করা নয়।

পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তাজরীন মেধার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০২২ সালের ১২ মার্চ প্রচারিত একই স্লোগানের ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির শিরোনামে বলা হয়, ১৪ মার্চের হল সম্মেলনকে কেন্দ্র করে তাদের স্লোগান দেওয়ার ভিডিওটি সেদিনই ধারণ করা হয়েছে। 

Screenshot: Facebook

সুতরাং, ২০২২ সালে হল সম্মেলনকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের নারী নেত্রীদের স্লোগান দেওয়ার ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ভারতে নারীকে পরিবার কর্তৃক তুলে নিয়ে যাওয়ার ভিডিওকে বান্দরবানের ঘটনা দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি ‘বান্দারবনে রুমায় প্রকাশ‍্য দিনে-দুপুরে নারী অপহরণ! প্রকাশ‍্য কয়েকজন সন্ত্রাসী রাস্তা থেকে এক নারীকে পিটিয়ে মটরসাইকেলে উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আশেপাশে অনেকেই থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। ফ‍্যাসিস্ট ইউনুছ বাহিনী সারাদেশে অপরাধের স্বর্গরাজ্য বানিয়েছে..’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলায় কোনো নারীকে অপহরণের দৃশ্যের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভারতের উত্তর প্রদেশে পরিবারের অমতে বিয়ে করা এক নারীকে তার পরিবার কর্তৃক তুলে নিয়ে যাওয়ার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতীয় গণমাধ্যম নিউজ এইটিনের উত্তর প্রদেশ-উত্তরাখণ্ডের আঞ্চলিক ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৯ সালের ০৩ জুলাই ‘Bareilly: Couple Thrashed By Family For Marrying Against Their Will’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়৷ উক্ত ভিডিওতে যুক্ত ফুটেজের সাথে আলোচিত ভিডিওটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, ভারতের উত্তর প্রদেশের বারেলিতে পরিবারের সম্মতি ছাড়া বিয়ে করার কারণে এক নারীর পরিবার ওই নারীকে ও তার স্বামীকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠে। শারীরিক নির্যাতনের ফলে চিকিৎসার জন্য আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দম্পতি এক বছর আগে বিয়ের পর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল এবং উক্ত ঘটনার সময়ে এলাকায় ফিরে এসেছিল। পুলিশের মতে, অভিযুক্তরা মহিলাকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে।

পুলিশের সুপারিন্টেন্ডেন্ট (গ্রামীণ) সানসার সিং জানান, “ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং একই দিনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।”

এই বিষয়ে আরেক ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টিভির ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ০৩ জুলাই প্রকাশিত প্রতিবেদনে একই চিত্র ও তথ্য পাওয়া যায়। 

সুতরাং, বান্দবানের রুমায় প্রকাশ্যে এক নারীকে অপহরণের ভিডিও দাবিতে ভারতের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে কুমিল্লার যুবলীগ নেতার বাড়িতে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসংযোগের দাবিটি ভুয়া

সম্প্রতি, ‘কুমিল্লায় যুবলীগ নেতার বাড়িতে আগুন দিয়েছে বিএনপি, জামায়াতের মব সন্ত্রাসীরা। তার অপরাধ সে গতকাল শোক দিবস পালন করেছিল। সেই এলাকার আরো অনেক নেতাকর্মী বাড়ি ছাড়া হয়েছে, শোক দিবস পালন করার কারণে!’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৫ আগস্টে ‘শোক দিবস’ পালন করায় সাম্প্রতিক সময়ে কুমিল্লায় কোনো যুবলীগ নেতার বাড়িতে বিএনপি-জামায়াত কর্তৃক আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে, গত বছরের জানুয়ারি মাসে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে বিএনপির এক নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্তের বাড়িতে জনতার আগুন দেওয়ার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ এর ময়মনসিংহের স্থানীয় সাংবাদিক সাব্বির রায়হান আকন্দের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত বছরের ১৫ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি পোস্ট পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে থাকা ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

উক্ত পোস্টের ক্যাপশন থেকে জানা যায়, গয়েশপুর হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারকে বাজারে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করার প্রতিবাদে অভিযুক্ত রুবেলের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় জনতা। সেই সময়কার দৃশ্য এটি। 

অনলাইন গণমাধ্যম বাংলানিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে গত বছরের ১৫ জানুয়ারি “গফরগাঁওয়ে বিএনপি নেতা হত্যা, অভিযুক্ত ব্যক্তির বাড়িতে আগুন” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত বছরের ১৫ জানুয়ারি দুপুর ১২টার দিকে গফরগাঁও উপজেলার পাইথল ইউনিয়নের গয়েশপুর বাজারে প্রকাশ্যে বিএনপি নেতা হোমিও চিকিৎসক মো. হারুন অর রশিদকে (৪৮) কুপিয়ে হত্যা করে রুবেল মিয়া। এরপর বিকেল ৩টার দিকে বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত রুবেলের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন। নিহত মো. হারুন অর রশিদ নিহত হোমিও চিকিৎসক মো. হারুন অর রশিদ উপজেলার পাইথল ইউনিয়নের গোয়ালবর গ্রামের মৃত খোরশেদ আলীর ছেলে। তিনি পাইথল ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলে দাবি করেছিলেন ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা ও পাগলা থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আকতারুজ্জামান বাচ্চু।

বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য কালের কণ্ঠের সাংবাদিক সাব্বির রায়হান আকন্দের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার। সাব্বির রায়হান জানান, ‘প্রচারিত দাবিটি ভুয়া। ঘটনাটি গত বছরের ১৫ জানুয়ারির। হোমিও চিকিৎসক মো. হারুন অর রশিদকে প্রকাশ্যে হত্যার প্রতিবাদে খুনির বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার দৃশ্য এটি। তিনি বিএনপির নেতা ছিলেন।’

সুতরাং, গত বছর ময়মনসিংহে হত্যায় অভিযুক্ত রুবেল মিয়ার বাড়িতে বিক্ষুব্ধ জনতার আগুন দেওয়ার ভিডিওকে ১৫ আগস্ট ‘শোক দিবস’ পালন করায় বিএনপি-জামায়াত কুমিল্লায় যুবলীগ নেতার বাড়িতে আগুন দিয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার রিয়াদের জামিন হয়নি

0

গত ২৬ জুলাই চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার হন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বহিষ্কৃত নেতা (উক্ত অভিযোগে গ্রেফতারের পর বহিষ্কৃত) আবদুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ।

রিয়াদকে জামিন দেওয়া হয়েছে দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার আবদুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদকে জামিন দেওয়া হয়নি। বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

রিয়াদের গ্রেফতার ইস্যু

অনুসন্ধানের শুরুতে রিয়াদের গ্রেফতার ইস্যু নিয়ে অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ২৬ জুলাই ‘চাঁদাবাজির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতাসহ আটক ৫’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ২৬ জুলাই ঢাকার গুলশানে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির অভিযোগে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

প্রতিবেদনটি থেকে আরও জানা যায়, এর আগে গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আহ্বায়ক কমিটির দুই নেতা রিয়াদ, অপুসহ কয়েকজন শাম্মী আহমেদের স্বামীর কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং ১০ লাখ টাকা আদায়ও করেন। ২৬ জুলাই রাত আটটার দিকে চাঁদার বাকি টাকা আনতে গেলে পুলিশ আগে থেকে এই খবর পেয়ে ঘটনাস্থল রিয়াদসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে।

প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে ২৭ জুলাই প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‍উক্ত ঘটনায় গ্রেফতার আবদুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদসহ চারজনকে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত ২৭ জুলাই এ আদেশ দেন। গ্রেফতারকৃত পাঁচজনের মধ্যে একজন প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় তাকে টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।

আলোচিত দাবি প্রচারিত হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৩১ জুলাই থেকে আলোচিত দাবিটি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। ‘Dalton Souvato Heera’ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৩১ জুলাই করা পোস্টে দাবি করা হয়, ‘গুলশানে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গ্রেফতার রাজ্জাক রিয়াদ কে জামিন দেয়া হইছে।

হইতেই হবে। নতুন বন্দোবাস্তের বাংলাদেশ।’

এছাড়াও, পোস্টের মন্তব্যের ঘরে তিনি লিখেন, ‘৪ টা মামলার একটায় জামিন দেয়া হইছে। আরেকটিতে রিমান্ড চলমান। জামিন মানে মুক্তি পায় নাই।’

রিয়াদের বিষয়ে ৩১ জুলাইয়ের পরবর্তী গণমাধ্যমের তথ্য

অনুসন্ধানে, অনলাইন সংবাদ মাধ্যম বিডিনিউজ২৪.কম এর ওয়েবসাইটে গত ৩ আগস্ট ‘গুলশানে চাঁদাবাজি: রিয়াদের দোষ স্বীকার, ৪ আসামি কারাগারে’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩ আগস্ট ঢাকার মহানগর হাকিম সেফাতুল্লাহ ১৬৪ ধারায় আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান (রিয়াদ) এর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নথিবদ্ধ করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। 

রিয়াদের নামে যত মামলা

অনুসন্ধানে, অনলাইন সংবাদমাধ্যম জাগোনিউজ২৪.কম -এর ওয়েবসাইটে গত ৩০ জুলাই ‘আরও একটি মামলা হচ্ছে বৈষম্যবিরোধী নেতা রিয়াদের বিরুদ্ধে’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, রিয়াদের বাসা থেকে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা মূল্যমানের চারটি চেক উদ্ধারের ঘটনায় রাজধানীর কলাবাগান থানায় একটি নতুন মামলার প্রক্রিয়া চলছে। ৩০ জুলাই রাজধানীর মিন্টুরোডে আয়োজিত সংবাদ সন্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

চেক উদ্ধারের ঘটনায় মামলা সম্পর্কে কলাবাগান থানার ওসি মো. ফজলে আশিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যনারকে জানান, চেক উদ্ধারের ঘটনায় কলাবাগান থানায় মামলা হয়নি। মামলাটা তেজগাঁও থানায় হওয়ার কথা। বাদী ঘটনার স্থান ভুুল বলার কারনে কলাবাগান থানার নাম এসেছে। 

পরবর্তীতে, রিয়াদের মামলার বিষয়ে জানতে গুলশান থানায় সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার। গুলশান থানা থেকে জানানো হয়, “গত ৩১ জুলাই রিয়াদ রিমান্ডেই ছিল। জামিনের বিষয়টি গুজব।” এছাড়াও, রিয়াদের নামে তেঁজগাও থানায়ও একটি মামলা হয়েছে বলে জানান তিনি।

তেজগাঁও থানার ওসি মোবারক হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, চাঁদাবাজির ঘটনায় রিয়াদের জামিন হয়নি এটা নিশ্চিত। আমাদের থানায়ও (তেজগাঁও) তার নামে একটা মামলা আছে।

অর্থাৎ, উল্লিখিত তথ্য প্রমাণ থেকে নিশ্চিত যে, তেজগাঁও কিংবা গুলশান কোনো থানার মামলাতেই  রিয়াদের জামিন হয়নি।

এছাড়া, রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে রিয়াদের নামে গুলশান এবং তেজগাঁও থানা ব্যতীত অন্য কোনো থানায় তার নামে মামলার তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বহিষ্কৃত নেতা আবদুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদকে জামিন দেওয়া হয়েছে শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা শেখ হাসিনার পদত্যাগ পত্রের সন্ধান পায়নি বলে হোয়াইট হাউস কোনো মন্তব্য করেনি

0

সম্প্রতি, ‘ব্রেকিং নিউজ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আবেদনের পর প্রধানমন্ত্রী জননী শেখ হাসিনার পদত্যাগ পত্রের সত্যতা খুজে পাইনি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা। আজ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন হোয়াইট হাউজ, আইন অনুযায়ী এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননী শেখ হাসিনা। তিনি পদত্যাগ করেননি।

খুব শীগ্রই অনুষ্ঠানিক ভাবে আমেরিকার হোয়াইট হাউজ থেকে এই তথ্য জানানো হবে।’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত বক্তব্য দেওয়ার দৃশ্যটি হোয়াইট হাউসের নয় এবং হোয়াইট হাউস থেকে এসংক্রান্ত কোনো তথ্যও জানানো হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, প্রচারিত ভিডিওটিতে যাকে বক্তব্য দিতে দেখা যাচ্ছে তিনি অস্ট্রেলিয়ার জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি মন্ত্রী ক্রিস বোয়েন। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশে জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সহিংসতা এবং দুর্দশার বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের ফেডারেশন চেম্বারে তিনি এই বক্তব্য দেন।

অনুসন্ধানে অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের ওয়েবসাইটে ফেডারেশন চেম্বার সেকশনে গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একই ভিডিওর পূর্ণ ভার্সন খুঁজে পাওয়া যায়।  

Video Comparison By Rumor Scanner 

ভিডিওটির একটি অংশে অস্ট্রেলিয়ার জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি মন্ত্রী ক্রিস বোয়েনকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। উক্ত অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়।  

তাঁর বক্তব্যে ক্রিস বোয়েন বাংলাদেশে জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সহিংসতা এবং দুর্দশার কথা উল্লেখ করেন। তবে তার পুরো বক্তব্য বিশ্লেষণ করে শেখ হাসিনা প্রসঙ্গে তাকে কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি৷  

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধান বা হোয়াইট হাউস থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ পত্র সংক্রান্ত কোনো তথ্য জানানোর বিষয়ে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্তে সূত্রে পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে সেপ্টেম্বর মাসে একই ভিডিও একই দাবিতে প্রচার করা হয়েছিল। সেসময়ে বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।