Home Blog Page 21

যুদ্ধ থামাতে ইরানের প্রতি ইসরায়েলি নাগরিকের আর্তনাদের ভিডিও দাবিতে এআই ভিডিও প্রচার

সাম্প্রতিক সময়ের ইরান-ইসরায়েলের সংঘাতের প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে একটি সাক্ষাৎকারে “আপনি কি মনে করেন যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটা প্রয়োজন” শীর্ষক প্রশ্নের জবাবে একজন ব্যক্তি বলছেন, “প্লিজ, প্লিজ যুদ্ধ বন্ধ করুন। ইরান দয়া করে বন্ধ করো।” উক্ত ভিডিওটি ইসরায়েলি নাগরিকের আর্তনাদের দৃশ্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি যুদ্ধ থামাতে ইরানের প্রতি ইসরায়েলি নাগরিকের আর্তনাদের দৃশ্যের নয় বরং, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি একটি ভুয়া ভিডিও।

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কোনো বিশ্বস্ত গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এছাড়াও ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে ভয়েস ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও খানিকটা অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়।

এছাড়া, ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে ভিডিওটির নিচের ডান কোণে ‘Veo’ নামের একটি জলছাপ দেখতে পাওয়া যায়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘Veo’ গুগলের একটি উন্নত এআই টুল, যা টেক্সট প্রম্পট থেকে ৮ সেকেন্ডের বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম। এই ভিডিওটির দৈর্ঘ্যও ৮ সেকেন্ড।

বিষয়টি আরও নিশ্চিতের জন্য এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম হাইভ মডারেশনে ভিডিওটি পরীক্ষা করলে দেখা যায়, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৮ শতাংশ।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে যুদ্ধ থামাতে ইরানের প্রতি ইসরায়েলি নাগরিকের আর্তনাদের দৃশ্য দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Hive Moderation
  • Rumor Scanners’ analysis

ইরানের বৃহদাকৃতির ক্ষেপণাস্ত্র জনসম্মুখে আনার ভিডিও দাবিতে উজবেকিস্তানের পুরোনো ভিডিও প্রচার

সাম্প্রতিক ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র সদৃশ একটি বৃহৎ বস্তু জনসম্মুখে এনেছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ইরানের কোনো দৈত্যাকৃতির ক্ষেপণাস্ত্রের নয়। প্রকৃতপক্ষে, কাজাখস্তান থেকে উজবেকিস্তানের একটি গ্যাস প্রক্রিয়াকরণ প্ল্যান্টে একটি বৃহদাকৃতির যন্ত্রাংশ নিয়ে যাওয়ার পুরোনো ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে HEAVY TRANSPORT (O.Y) নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৮ সালের ১৩ ডিসেম্বর প্রচারিত একটি ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। এছাড়াও ভিডিওর বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি কাজাখস্তান থেকে উজবেকিস্তানের একটি প্রাকৃতিক গ্যাস প্ল্যান্টের জন্যে Sularry hopper নামের একটি যন্ত্রাংশ বহন করে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য। পাশাপাশি ভিডিওটি পর্যােলোচনার মাধ্যমে উক্ত যন্ত্রাংশ বহনকারী গাড়িতে caba misnak শীর্ষক একটি লেখা দেখতে পাওয়া যায়।

প্রাপ্ত caba misnak নামটির সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে জানা যায়, caba misnak তুরস্ক ভিত্তিক একটি ভারী সামগ্রী উত্তোলন এবং পরিবহনকারী প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি ইঞ্জিনিয়ারিং সহায়তাও করে থাকে বলে জানা যায়। প্রতিষ্ঠানটি তুরস্ক এবং পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে উক্ত সেবাগুলো প্রদান করে থাকে বলেও প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়।

পরবর্তীতে caba misnak নামের প্রতিষ্ঠানটির ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট পর্যালোচনার মাধ্যমে ২০১৯ সালের ৩ অক্টোবর প্রচারিত একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ছবিতে দেখতে পাওয়া বস্তুর সাথে আলোচিত ভিডিওতে থাকা যন্ত্রাংশের সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও যন্ত্রাংশটি বহনকারী গাড়িগুলোও একই। ছবিতে থাকা বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি উজবেকিস্তানের কারশি নামক স্থানে নির্মানাধীন গ্যাসকে তরলে পরিণতকারী একটি প্রজেক্টের জন্যে যন্ত্রাংশ নিয়ে যাওয়ার ছবি। বিবরণীতে আরও উল্লেখ করা হয়, উজবেকিস্তানে বহনকারী এটিই সবচাইতে ভারী কার্গো।

অনুসন্ধানে জানা যায়, উজবেকিস্তানের কাশকাদারিও অঞ্চলের কারশি শহরের দক্ষিণে গ্যাসকে তরণে পরিণতকারী ওই প্ল্যান্টটি অবস্থিত। যেটি UZGTL নামে পরিচিত। প্ল্যান্টটি ২০২১ সালের ২৫ ডিসেম্বর চালু করা হয় বলেও জানা যায়।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওতে দেখতে পাওয়া বৃহদাকৃতির বস্তুটি কোনো ক্ষেপণাস্ত্রের নয় এবং এর সাথে ইরানের কোনো প্রকার যোগসূত্রও নেই।

সুতরাং, উজবেকিস্তানের গ্যাস প্ল্যান্টের জন্যে বহনকারী ভারী যন্ত্রাংশের পুরোনো ভিডিওকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র জনসম্মুখে আনার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ইটভাটায় যুবক ও চিতাবাঘের লড়াইয়ের ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়, ভারতের 

সম্প্রতি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের লক্ষ্মীপুর জেলায় ইটভাটায় এক যুবক ও চিতাবাঘের লড়াইয়ের দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

এমন দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

ইউটিউবে প্রচারিত একই দাবি দেখুন: এখানে, এখানে

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে, এখানে

এক্সে প্রচারিত দাবি দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চিতাবাঘ ও যুবকের লড়াইয়ের ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়, বরং এটি ভারতের উত্তর প্রদেশের লখিমপুর খেরি জেলার গত ২৩ জুনের ভিডিও।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়ার ফেসবুক পেজে ২৫ জুন প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড পাওয়া যাত। ওই ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবির সঙ্গে আলোচিত ভিডিওর মিল দেখা যায়। ফটোকার্ডের ক্যাপশন থেকে জানা যায়, লখিমপুর খেরিতে এক ব্যক্তি খালি হাতে একটি চিতাবাঘের সঙ্গে লড়েছেন।  

Comparison: Rumor Scanner.

এনডিটিভির ওয়েবসাইটেও এই ঘটনার ভিডিও পাওয়া যায়, যেখানে ঘটনাটি উত্তর প্রদেশের বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

দ্য ইকোনমিক টাইমসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত সোমবার (২৩ জুন) উত্তর প্রদেশের লখিমপুর খেরি জেলার একটি ইটভাটায় ৩৫ বছর বয়সী মিহিলালের ওপর একটি চিতাবাঘ হামলা করে। মিহিলাল ভাটায় কাজ করার সময় চিমনির ভেতরে লুকিয়ে থাকা চিতাবাঘটি তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তবে তিনি সাহসিকতার সঙ্গে চিতাবাঘের মোকাবিলা করেন। আশপাশে থাকা গ্রামবাসীরা ইট-পাথর ছুড়ে চিতাবাঘটিকে তাড়িয়ে দেয় এবং এটি পাশের কলাবাগানে পালিয়ে যায়।

সুতরাং, ভারতের লখিমপুর খেরিতে যুবক ও চিতাবাঘের লড়াইয়ের একটি ভিডিওকে বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুরের ঘটনা দাবি করে প্রচার করা হয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

গাজীপুরের কথিত নারী সমন্বয়কের এডাল্ট ভিডিও দাবিতে ভিনদেশি নারীর ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ফেসবুকে এক নারীর এডাল্ট ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে ভিডিওটি গাজীপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাবিলা নওসিনের।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুর কিংবা অন্য কোনো এলাকার নারী সমন্বয়কের নয় বরং, ইন্টারনেট থেকে ভিনদেশি এক নারীর ভিডিও সংগ্রহ করে তা আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘MANILA B.’ নামের একটি টিকটক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ২৬ মে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে অ্যাকাউন্টটি থেকে নিয়মিত এমন এডাল্ট ভিডিও প্রচার করতে দেখা যায়।

এছাড়াও একই ভিডিওটি টিকটক অ্যাকাউন্টটির মতো একই নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্টেও গত ২৬ মে প্রচার করতে দেখা যায়। ফেসবুক অ্যাকাউন্টটির অ্যাবাউট সেকশন পর্যবেক্ষণ কন্টাক্ট ইনফোতে ঠিকানা হিসেবে ফিলিপাইনের নাগা সিটি উল্লেখ পাওয়া যায়। এছাড়াও, ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি থেকেও নিয়মিত এমন ভিডিও প্রচার করতে দেখা যায় (,,)।

অর্থাৎ, এটি নিশ্চিত যে ভিডিওটি জুলাই আন্দোলনের কোনো নারী সমন্বয়কের নয়।

এছাড়া, অনুসন্ধানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নাবিলা নওসিন নামের কোনো নারী সমন্বয়ক খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ইন্টারনেট থেকে ভিনদেশি এক নারীর এডাল্ট ভিডিও সংগ্রহ করে তা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুরের কথিত নারী সমন্বয়ক নাবিলা নওসিন এর ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বিভিন্ন আসনে বিএনপির প্রার্থী তালিকা প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে দাবিতে বিএনপির নামে ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রচার

0

সম্প্রতি, কয়েকটি আসনে বিএনপির প্রার্থী তালিকা প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে দাবিতে জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত দুইটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

কথিত এই প্রেস বিজ্ঞপ্তির একটিতে বলা হয়েছে, “যে কয়টি আসনে বিএনপির প্রার্থী তালিকা প্রায় চূড়ান্ত:
ঢাকা-১: খোন্দকার আবু আশফাক
ঢাকা-৩: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়
ঢাকা-৫: নবীউল্লাহ নবী
ঢাকা-৭: নাসিমা আক্তার কল্পনা
ঢাকা-৮: হাবীব উন নবী খান সোহেল
ঢাকা-১: মির্জা আব্বাস
ঢাকা-১১: এম এ কাইয়ুম
ঢাকা-১২: সাইফুল আলম নীরব
ঢাকা-১৪: এস এ সিদ্দিক সাজু
ঢাকা-১৫: মামুন হাসান
ঢাকা-১৬: আমিনুল হক
ঢাকা-১৮: এস এম আহাঙ্গীর
কুমিল্লা-০: মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী কায়কোবাদ
সিলেট-২: তাহসিনা রুশদী লুনা (ইলিয়াস আলীর স্ত্রী)
সিলেট-১: খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির
সিলেট-৪: সাবেক মেয়র আরিফুল হক
বরিশাল-১: জহির উদ্দিন স্বপন
বরিশাল-২: সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু
বরিশাল-৩: জয়নাল আবেদীন
বরিশাল-৪: রাজীব আহসান
বরিশাল-৫: মজিবর রহমান সরোয়ার
কুমিল্লা-১: ড খন্দকার মোশাররফ হোসেন
কুমিল্লা-৮: জাকারিয়া তাহের সুমন
চট্টগ্রাম-৪: মোহাম্মদ আসলাম চৌধুরী
চট্টগ্রাম-৫: ব্যারিস্টার মীর হেলাল
চট্টগ্রাম-৬: গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী
চট্টগ্রাম-৭: জনাব হুম্মাম কাদের চৌধুরী
চট্টগ্রাম-১১: আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী
চট্টগ্রাম ১০: সাইদ আল নোমান
টাঙ্গাইল-৫: সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু
মুন্সীগঞ্জ-২ আসাদুজ্জামান রিপন
নোয়াখালী-১: মাহবুব উদ্দিন খোকন
নোয়াখালী-২ জয়নাল আবেদিন ফারুক
নোয়াখালি-৩: বরকত উল্যাহ বুলু
লক্ষ্মীপুর-৩: শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এনী।
কক্সবাজার-১: সালাহ উদ্দিন আহমেদ
কক্সবাজার-৩: লুতফর রহমান কাজল
নরসিংদী ২: আব্দুল মইন খান
সিরাজগঞ্জ ২: ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু”
অপর প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “যে কয়টি আসনে বিএনপি প্রার্থী তালিকা প্রায় চূড়ান্ত
ঢাকা-১ খোন্দকার আবু আশফাক
ঢাকা-২ আমান উল্লাহ আমান
ঢাকা-৩ রেজাউল কবীর পল
ঢাকা-৪ তানভীর আহমেদ
ঢাকা-৫ নবীউল্লাহ নবী
ঢাকা-৭ মীর নেওয়াজ আলী নেয়াজ
ঢাকা-৮ হাবীব উন নবী খান সোহেল
ঢাকা-৯ মির্জা আব্বাস
ঢাকা-১১ এম এ কাইয়ুম
ঢাকা-১২ সাইফুল আলম নীরব
ঢাকা-১৪ এস এ সিদ্দিক সাজু
ঢাকা-১৫ মামুন হাসান
ঢাকা-১৬ আমিনুল হক
ঢাকা-১৮ এস এম জাহাঙ্গীর”

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিভিন্ন আসনে বিএনপির প্রার্থী তালিকা প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে দাবিতে প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি দুইটি ভুয়া। প্রকৃতপক্ষে, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে বিএনপির প্রার্থী তালিকা বিষয়ে এমন কোনো প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কথিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, একটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ১০ জুন, ২০২৫ এবং অপরটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ১৫ জুন, ২০২৫ তারিখের উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে এই দুইটি  তারিখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ ও মিডিয়া সেলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে এমন কোনো প্রেস বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গত ১৭ জুন আলোচিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিগুলো নিয়ে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে আলোচিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিগুলো সম্পূর্ণরূপে ভুয়া ও বানোয়ার  বলে জানানো হয়।

Screenshot: BNP Media Cell Facebook

সুতরাং, বিভিন্ন আসনে বিএনপির প্রার্থী তালিকা প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে দাবিতে বিএনপির নামে ফেসবুকে প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিগুলো ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র

  • BNP Media Cell – Post
  • Rumor Scanner’s Own Analysis 

মব তৈরি এবং লুটপাটের দায়ে সেনাপ্রধানের নির্দেশে সারজিস ও হাসনাতকে গ্রেফতারের দাবিটি ভুয়া

মব সৃষ্টি এবং লুটপাটের দায়ে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের নির্দেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহকে সেনাবাহিনী গ্রেফতার করেছে দাবি সম্বলিত থাম্বনেইলে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে।

ইউটিউবে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত ভিডিওটি প্রায় ১০ লাখ ৪১ হাজার বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে প্রায় ১ হাজার ৪০০টি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়াও জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মব সৃষ্টি কিংবা লুটপাটের দায়ে সেনাপ্রধানের নির্দেশে সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে গ্রেফতারের দাবিটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, অধিক ভিউ পাবার আশায় চটকদার থাম্বনেইল এবং শিরোনাম ব্যবহার করে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে প্রযুক্তির সাহায্যে যুক্ত করে ভিত্তিহীনভাবে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে ভিডিওটির থাম্বনেইল এবং শিরোনামে মবের সৃষ্টির কারণে সারজিস আলম এবং হাসনাত আবদুল্লাহকে গ্রেফতারের বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও মূল ভিডিওর কোথাও এ বিষয়ক কোনো তথ্য প্রদান করা হয়নি কিংবা আলোচনা করা হয়নি। ভিডিওটির শুরুতে একজন সংবাদপাঠকের ফুটেজ দেখতে পাওয়া যায়। যেখানে তাকে‘মবের নামে নাশকতার সুযোগ নেই। রংপুরে এনসিপি নেতা সারজিসকে এসব কথা বলেছেন সেনা কর্মকর্তারা।’ শীর্ষক কথাগুলো বলতে শোনা যায়। পরবর্তীতে উক্ত ঘটনার একটি ফুটেজ দেখতে পাওয়া যায়। যেখানে একজন সেনা কর্মকর্তাকে সারজিস আলমের সাথে মব বিষয়ক আলোচনা করতে দেখা যায়। এরপর ভিডিওতে বেশ কয়েকটি অপ্রাসঙ্গিক ভিডিও দেখানো হয়। যার সাথে দাবির কোনো যোগসূত্র নেই।

ভিডিও যাচাই ১

আলোচিত ভিডিওটির শুরুতে থাকা সংবাদপাঠকের ফুটেজের বিষয়ে অনুসন্ধানে উক্ত ফুটেজের কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম NEWS24 এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১ জুন ম’বে’র নামে না’শ’ক’তার সুযোগ নেই, সারজিস আলমকে সেনা কর্মকর্তা | NCP | NEWS24 শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত প্রতিবেদনের শুরুর সংবাদপাঠকের ফুটেজের সাথে আলোচিত ভিডিওর শুরুর অংশের হুবহু মিল রয়েছে। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, রংপুরে অবস্থিত জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় গত ১ জুন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিএনপির নেতাদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সেনাবাহিনী। ওই সময় সেখানে ছুটে যান এনসিপির নেতা সারজিস আলম। এসময় তিনি সেনাবাহিনীর ৭২ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুমের সাথে দেখা করেন বলে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়। তবে প্রতিবেদনের কোথাও সারজিস আলমকে আটকের কথা বলা হয়নি। বরং প্রতিবেদনে তাকে সেনা কর্মকর্তার সাথে সাক্ষাতের পর গণমাধ্যমে কথা বলতে দেখা যায়।

ভিডিও যাচাই ২

আলোচিত ভিডিওটিতে পরবর্তীতে একই ঘটনায় সারজিস আলমের সেনা কর্মকর্তার সাথে কথা বলার একটি ফুটেজ দেখানো হয়। উক্ত ফুটেজের বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রির্ভাস ইমেজ সার্চের মাধ্যমে আরেক গণমাধ্যম Porikroma News-এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১ জুন রংপুরে সারজিস আলমের সাথে কথা বলছেন সেনাবাহিনী | News | Porikroma News শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner

যেখানে সেনাবাহিনীর ৭২ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুমকে রংপুরের ঘটনায় সারজিস আলমকে মব বিষয়ক বিভিন্ন কথা বলতে শোনা যায়।

পরবর্তীতে, মব তৈরিতে ভূমিকা রাখার দায়ে সারজিস আলম বা হাসনাত আবদুল্লাকে গ্রেফতার করা হয়েছে দাবির প্রেক্ষিতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ সম্পর্কিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। বরং আলোচিত দাবি প্রচারের একদিন পর অর্থাৎ, ৩ জুন সারজিস আলমকে ঐকমত্য কমিশনের সাথে আলোচনা শেষে গণমাধ্যমে সরাসরি কথা বলতে দেখা যায়। পাশাপাশি ৬ জুন হাসনাত আবদুল্লাহকে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাতেও দেখা যায়।

সুতরাং, মব সৃষ্টি এবং লুটপাটের দায়ে সেনাপ্রধানের নির্দেশে সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়েছে শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ বিষয়ে সেনাপ্রধানের নামে বানোয়াট বক্তব্য প্রচার

সম্প্রতি ‘আওয়ামী লীগকে ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না: সেনাপ্রধান ওয়াকার!’ শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ‘আওয়ামী লীগকে ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি বরং, ভিন্ন বিষয়ের কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যুক্ত করে প্রচারিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও ক্লিপগুলোগুলো পৃথকভাবে যাচাই করেছে রিউমর স্ক্যানার।

ফুটেজ যাচাই- ১ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম  ATN Bangla News এর  ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘সেনা প্রধানের খুবই গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য, সেনাবাহিনীকে সাহায্য করেন, আক্রমণ করবেন না: সেনাপ্রধান’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর কিছু দৃশ্যের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর প্রথম ক্লিপটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner 

এটিএন বাংলায় প্রচারিত এই বক্তব্যে সেনাপ্রধান ৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে দেশের রাজনীতি, জনপ্রশাসন, বিচার ব্যবস্থা, পুলিশ, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাত নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানা পরিসরে সেনাবাহিনী নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্যের সমালোচনা করে জেনারেল ওয়াকার বলেন, ‘সেনাবাহিনীর ওপর আক্রমণ করবেন না। সেনাবাহিনী এবং সেনাপ্রধানের প্রতি বিদ্বেষ কারও কারও, কী কারণে জানি না। আমাদের সাহায্য করেন, আক্রমণ নয়। আমাদের উপদেশ দেন, আমি সবার কাছে শরণাপন্ন হই, আমরা ভালো উপদেশ গ্রহণ করব। আমরা এক থাকতে চাই, দেশ ও জাতিকে আমরা রক্ষা করতে চাই। ’ উক্ত বক্তব্যে তিনি ‘আওয়ামী লীগকে ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না’ সূচক কোনো মন্তব্য করেননি। 

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় শহীদ সেনা দিবসে রাজধানীর রাওয়া ক্লাবে পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ফুটেজ যাচাই- ২

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম Somoy TV এর  ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ২২ জুলাই ‘স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরৎ এসেছে: সেনাপ্রধান’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর কিছু দৃশ্যের সাথে আলোচিত ভিডিওটির দ্বিতীয় ক্লিপটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner 

সময় টিভিতে প্রচারিত এই বক্তব্যে রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় এবং রাস্তায় জনগণের যে পরিমাণ সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে তা অবর্ণনাতীত। এই সম্পদ কারো ব্যক্তিগত সম্পদ না, এগুলো জনগণের (রাষ্ট্রীয়)  সম্পদ। সশস্ত্রবাহিনীসহ আমাদের সকলের দায়িত্ব জনগণের সম্পদ রক্ষা করা। উক্ত বক্তব্যে তিনি ‘আওয়ামী লীগকে ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না’ সূচক কোনো মন্তব্য করেননি। উক্ত বক্তব্যে তিনি ‘আওয়ামী লীগকে ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না’ সূচক কোনো মন্তব্য করেননি।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকালীন সময়ে ২০২৪ সালের ২২ জুলাই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন শেষে গুলিস্তানে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সুতরাং, ‘আওয়ামী লীগকে ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না’ বলে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান মন্তব্য করেছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

ইসরায়েলে ইরানের মিসাইল আক্রমণের এই ভিডিওটি পুরোনো 

সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতের প্রেক্ষিতে ‘ইরানের IRGC প্রধান বলেছেন আমরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একটি বড় ধরনের হা”মলা শুরু করেছি,, এবং এই অভিযান সকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।’ ক্যাপশনে একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইসরায়েলে ইরানের মিসাইল আক্রমণের ঘটনা দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং, ২০২৪ সালে ইসরায়েলের নেভাটিম বিমান ঘাঁটিতে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Hot Current News – HCN ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ০২ অক্টোবর ‘Iran’s Missile Attack on Israel – Video Footage’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্যাবলীর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

একই ভিডিও তুরস্কের গণমাধ্যম TRT World এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ০১ অক্টোবর ‘Israel’s Nevatim Airbase hit by Iranian missile’ শিরোনামে প্রকাশ করা হয়। 

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির বিবরণী থেকে জানা যায়, লেবাননে ইসরায়েলি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ২০২৪ সালের ০১ অক্টোবর তেহরান রকেট হামলা চালানোর পর ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রগুলি বিরশেভার (বীর আল-সাবি) কাছে ইসরায়েলের নেভাটিম বিমান ঘাঁটিতে আঘাত করেছে।

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলে ইরানের মিসাইল আক্রমণের ঘটনার নয়।

সুতরাং, ইসরায়েলে ইরানের মিসাইল আক্রমণের সাম্প্রতিক ভিডিও দাবিতে ২০২৪ সালে ইসরায়েলের নেভাটিম বিমান ঘাঁটিতে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

ইসরায়েলে ইরানের হামলার দৃশ্য দাবিতে বাগদাদের পুরোনো ভিডিও প্রচার 

সাম্প্রতিক ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষিতে ইসরায়েলে ইরানের হামলার ভিডিও দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি সাম্প্রতিক  ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইরানের ইসলায়েলের তেল আবিবে হামলার ঘটনার নয় বরং, ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধে বাগদাদে হামলার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে তুরস্কের সংবাদমাধ্যম  ‘ODATV’ র ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১১ অক্টোবর ‘বাইডেন নিন্দা জানিয়েছেন, ২০০৩ সালের ইরাক আক্রমণ আলোচনায় এসেছে।’ (অনূদিত) শীর্ষক  শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে থাকা  ভিডিওর ২২ সেকেন্ড অংশ থেকে ১ মিনিট ৩৯ সেকেন্ড অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumour Scanner 

উক্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নিন্দা জানিয়েছিলেন। পাশাপাশি রাশিয়াকে যুদ্ধ দ্রুত শেষ করতে এবং তাদের সেনাদের ইউক্রেন থেকে প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে সেসময় সামাজিক মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ২০০৩ সালের ইরাক আক্রমণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ভূমিকাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন কারণ বাইডেন ছিলেন ইরাক আক্রমণের সবচেয়ে বড় সমর্থকদের একজন।

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একই ঘটনায় ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘ITN Archive’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২১ মার্চ ‘Iraq War: Shock and Awe Assault on Baghdad Begins (2003)’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একই ঘটনায় ভিন্ন কোন থেকে ধারণকৃত আরেকটি ভিডিও  খুঁজে পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে ইরানের ইসরায়েলের তেল আবিবে হামলার ঘটনার ভিডিও নয়। 

সুতরাং, ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধে বাগদাদে হামলার ঘটনাকে সাম্প্রতিক সময়ে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইরানের ইসলায়েলের তেল আবিবে হামলার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

ইরানের হামলায় ইসরায়েলের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ধ্বংস দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার 

সাম্প্রতিক ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষিতে হাইফা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ইরানের সফল আক্রমণ শীর্ষক ক্যাপশনে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি সাম্প্রতিক ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইরানের হামলায় ইসলায়েলের হাইফ শহরের কোনো স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংসের ভিডিও নয়। বরং, অন্তত ২০১৫ সাল থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান একটি ভিডিও আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Crazy China Videos’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৫ সালের ১৮ নভেম্বর ‘Massive explosion at Chinese chemical plant’ শীর্ষক ক্যাপশনের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির বর্ণনায় ভিডিওটির বিষয়ে বলা হয়, “চীনের ইন্টারনেট জুড়ে একটি রাসায়নিক কারখানায় বিশাল বিস্ফোরণের একটি ভিডিও ঘুরপাক খাচ্ছে। এটি কি কোনো আসল দুর্যোগ যা ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে, নাকি কোনো সিনেমার দৃশ্য?”

ভিডিওটির মন্তব্যের ঘরে কয়েকজন ভিডিওটি নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ বা চিত্রনাট্যের মতো বলে নিজেদের মতামত জানান।

Collage: Rumor Scanner

এছাড়া, ‘Ahmed Treiban’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৫ সালের ১৯ নভেম্বর প্রচারিত ‘Chinese chemical plant explosion ….’ শীর্ষক ক্যাপশনে একই ভিডিওটি পাওয়া যায়।

ভিডিওটির মন্তব্যের ঘরে এর সত্যতা সম্পর্কে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

Collage: Rumor Scanner

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী, প্রবীণ সৈনিক এবং বৈদেশিক নীতি এবং বৃহত্তর জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়েও খবর প্রকাশ করে ‘Military.com’ এর ওয়েবসাইটে ২০১৫ সালের ২৬ নভেম্বর ‘Explosion at Chemical Plant in Zhejiang China’ শীর্ষক ক্যাপশনে একই ভিডিও পাওয়া যায়।

Screenshot: Military.com

অর্থাৎ, ভিডিওটি সাম্প্রতিক ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের অনেক বছর আগে থেকেই ইন্টারনেটে রয়েছে। যা থেকে নিশ্চিত যে ভিডিওটি চলমান ইরান ইসরায়েল সংঘাতের নয়।

তাছাড়া, ইসরায়েলের হাইফা শহরে কোনো পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে এমন কোনো তথ্য নির্ভরযোগ্য সূত্রে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, অন্তত ২০১৫ সাল থেকেই ইন্টারনেটে বিদ্যমান পুরোনো ভিডিওকে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইরানের হামলায় ইসরায়েলের কথিত হাইফা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ইরানের সফল আক্রমণ দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র