Home Blog Page 105

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচে রোজা ভাঙতে জোর করা হয়েছে শীর্ষক মন্তব্য করেননি ক্রিকেটার শামি

রমজান মাস চলাকালীন গত ৪ মার্চ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচ চলাকালীন দিনের বেলাতেই ভারতীয় ক্রিকেটার মোহাম্মদ শামিকে এনার্জি ড্রিঙ্ক পান করতে দেখা যায়। তিনি রোজা পালন না করায় তা নিয়ে পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানা জায়গায় চরম আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে মোহাম্মদ শামি বলেছেন “রোজা ভাঙতে জোর করা হয়েছে, নাহলে এরা আমার কেরিয়ার শেষ করে দিত”।

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্ট দেখুন বিডি২৪রিপোর্ট

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত নেটিজেনদের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সম্প্রতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচ চলাকালীন রোজা না রাখার কারণ হিসেবে “রোজা ভাঙতে জোর করা হয়েছে, নাহলে এরা আমার কেরিয়ার শেষ করে দিত” শীর্ষক কোনো মন্তব্য মোহাম্মদ শামি করেননি। প্রকৃতপক্ষে, মোহাম্মদ শামির পুরোনো একটি ভিডিওতে ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আলোচিত ভুয়া মন্তব্যের অডিও যোগ করা হয়, যার প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে আলোচিত দাবিটি ছড়িয়ে পড়ে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলেও মোহাম্মদ শামির এমন কোনো প্রকাশ্য মন্তব্য করার বিষয়ে গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রেও কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচে রোজা না রাখার বিষয়ে মোহাম্মদ শামি এরূপ কোনো মন্তব্য করে থাকলে তা গণমাধ্যমে প্রচার করা হতো।

পরবর্তীতে আলোচিত দাবিটির সূত্রপাতের বিষয়ে অনুসন্ধান করলে ইনস্টাগ্রামে এনার্জি ড্রিঙ্ক পান করা অবস্থায় ধারণকৃত শামির ছবিসহ প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়, যেখানে দেখা যায় যে হিন্দি ভাষায় শামি বলছেন, “হ্যাঁ, আমি সেদিন রোজা ভেঙে ফেলেছিলাম। মুসলিম ভাই ও বোনেরা, দয়া করে আমাকে ভুল বুঝবেন না। আমি ইচ্ছাকৃতভাবে এটি করিনি। আমাকে আমার রোজা ভাঙতে বাধ্য করা হয়েছিল, অন্যথায়, ওই লোকেরা আমার ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দিত। আমি আবারও আমার মুসলিম ভাইবোনদের কাছে ক্ষমা চাইছি।”

উল্লিখিত উক্ত ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করতে ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে মোহাম্মদ শামির ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ২০২৪ সালের ১১ এপ্রিলে ‘Wishing the magic of Eid bring never-ending happiness, peace, and prosperity in your life. Eid Mubarak! #shami #mdshami #eidmubarak #eid’ শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতে শামির পরিধেয় পাঞ্জাবী, পারিপার্শ্বিক অবস্থার সাথে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে সাদৃশ্য পাওয়া যায় এবং নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্য মূলত উক্ত ভিডিওটি থেকেই নেওয়া হয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

মূলত ২০২৪ সালের ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রচার করা উক্ত ভিডিওতে শামিকে তার নিজের, পরিবার ও বন্ধুদের তরফ থেকে হিন্দি ভাষায় বলতে শোনা যায়, “ঈদের মিষ্টি উপভোগ করতে থাকো। আজ ঈদ। ঈদের উৎসব সুন্দরভাবে উদযাপন করো।” তবে, ভিডিওতে কোথাও তাকে রোজা রোজা ভাঙার বা এর জন্য ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে কথা বলতে দেখা যায়নি।

এছাড়া, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে সংযুক্ত অডিও এর সাথে শামির অঙ্গভঙ্গির কিছুটা অসামঞ্জস্যতা লক্ষ্য করা যায়, যেটি মূল ভিডিওতে পরিলক্ষিত হয়নি। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে ভিডিওটি ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। এবং পরবর্তীতে এরই প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত মন্তব্যটি মোহাম্মদ শামির মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, ডিপফেক হল বাস্তবসম্মত দেখতে কিন্তু নকল বা কিছুটা পরিবর্তিত কন্টেন্ট যা ভিডিও বা অডিওর উপাদান সম্পাদনা করে তৈরি করা হয়। ডিপফেক ভিডিওতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআইI) প্রযুক্তি ব্যবহার করে একজন ব্যক্তির মুখের অবয়ব বা ভয়েসকে অন্য কারোর সাথে বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। এই প্রযুক্তির সহায়তায় একজন ব্যক্তির এমন কিছু ভিডিও বা অডিও কন্টেন্ট তৈরি করা সম্ভব যা তিনি নিজে বলেননি বা করেননি।

সুতরাং, সম্প্রতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচ চলাকালীন রোজা না রাখার কারণ হিসেবে “রোজা ভাঙতে জোর করা হয়েছে, নাহলে এরা আমার কেরিয়ার শেষ করে দিত” শীর্ষক মন্তব্য মোহাম্মদ শামি করেছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Md Shami: Instagram post 
  • Rumor Scanner’s analysis

হার্ট অ্যাটাকের দুইদিন পরে তামিমের অবস্থা দাবিতে এআই ছবি প্রচার

0

গত ২৪ মার্চ ম্যাচ খেলতে বিকেএসপিতে অবস্থান করছিলেন তামিম ইকবাল। ম্যাচ চলাকালে সেখানেই হার্ট অ্যাটাক করেন। গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে তামিম ইকবালের হার্টে রিং পরানো হয়। এখন অনেকটাই সুস্থ আছেন তামিম ইকবাল। এরই প্রেক্ষিতে গত ২৬ মার্চ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুইদিন পর তামিম ইকবালের অবস্থা দাবিতে একটি ছবি প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হাসপাতালের শয্যায় হার্ট অ্যাটাকের দুইদিন পর তামিম ইকবালের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি বাস্তব নয়। বরং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির মাধ্যমে এটি তৈরি করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে এতে ছবির নিচের দিকের ডান কোণে ‘Grok’ লেখা একটি জলছাপ দেখা যায়। 

Image : Rumor Scanner

গ্রক (Grok) মূলত ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান xAI-এর একটি জেনারেটিভ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) চ্যাটবট, যা ২০২৩ সালের নভেম্বরে চালু হয়। এই চ্যাটবটটি বাস্তবসম্মত ছবি ও কনটেন্ট তৈরি করতে সক্ষম। গ্রক দিয়ে তৈরি ছবিতে সাধারণত ‘Grok’ লেখা জলছাপ দেখা যায়, যা এই এআই প্ল্যাটফর্ম দিয়ে তৈরি কনটেন্ট শনাক্তকরণে সাহায্য করে।

Screenshot: Rumor Scanner

বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-ভিত্তিক কনটেন্ট শনাক্তকরণ প্ল্যাটফর্ম এআই অর নট ব্যবহার করে রিউমর স্ক্যানার। উক্ত প্ল্যাটফর্মটির বিশ্লেষণে দেখা যায়, ছবিটি এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও, একই ছবি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-ভিত্তিক কনটেন্ট শনাক্তকরণ প্ল্যাটফর্ম হাইভ মোডারেশন ব্যবহার করে যাচাই করলে হাইভের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ছবিটি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৬৭ শতাংশ।

এছাড়া, প্রচারিত ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে আলোচিত ছবিটি বাস্তব হওয়ার সপক্ষে মূলধারার গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রেও কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য যে, হার্ট অ্যাটাকের পর তামিম ইকবালের অবস্থা দাবিতে গত ২৪ মার্চেও গ্রক এআই দিয়ে তৈরি একটি ছবি প্রচার করা হয়েছে, যার প্রেক্ষিতে রিউমর স্ক্যানার ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পূর্বে প্রচারিত এআই দিয়ে তৈরি সেই ছবির সাথেও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি করা একটি ছবি হার্ট অ্যাটাকের দুইদিন পর তামিম ইকবালের অবস্থার বাস্তব ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s analysis
  • Ai or Not
  • Hive Moderation

সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার ২০২৩ সালের ছবি সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার

0


সম্প্রতি ঢাকা ও চট্রগ্রামের মধ্যে চলাচলকারী ট্রেন সোনার বাংলা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার শিকার হয়ে লাইনচ্যুত হয়েছে শীর্ষক দাবিতে কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবির কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানেএখানেএখানেএখানে। 

একই দাবিতে ইন্সটাগ্রামের পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের দুর্ঘটনার এই ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং সম্প্রতি ট্রেনটি দুর্ঘটনার শিকারও হয়নি বরং ২০২৩ সালের পুরোনো ঘটনার ছবি ব্যবহার করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে একাধিক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ২০২৩ সালের ১৬ এপ্রিল একই ছবিগুলো পোস্ট করতে দেখা যায়।

এসব পোস্ট থেকে জানা যায়, কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট থানার হাসানপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঢাকাগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের সাথে মালবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এগুলো উক্ত ঘটনারই ছবি।

জাতীয় দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের ওয়েবসাইটে একইদিনে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে দুর্ঘটনায় পড়েছে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেন। ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে হাসানপুর স্টেশনে একটি কনটেইনারবাহী মেইল ট্রেনকে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন ও ৭টি কোচ লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় অন্তত ৩০ জন আহত হয় বলে জানানো হয় এই প্রতিবেদনে।

অর্থাৎ, ঘটনাটি ২০২৩ সালের। তাছাড়া, সম্প্রতি সোনার বাংলা এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার ২০২৩ সালের ছবিকে সাম্প্রতিক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র 

২৫ মার্চ গণহত্যার শিকার শহীদদের স্মরণে ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের ছবিকে ছাত্রলীগের কর্মসূচির দৃশ্য দাবিতে প্রচার

0

গত ২৬ মার্চ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের দুইটি ছবি প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রথম প্রহরে বীর শহীদদের অমর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলন।”

উক্ত দাবিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটি ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের নয় বরং, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালো রাতে গণহত্যার শিকার শহীদদের স্মরণে ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্জলনের দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘ফেস দ্য পিপল’ এর ওয়েবসাইটে “২৫ মার্চের শহিদদের স্মরণে কুবি ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্জ্বলন” শীর্ষক শিরোনামে গত ২৬ মার্চে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবি দুইটির মধ্যে একটির সাথে সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ২৫শে মার্চ কালো রাতে গণহত্যার শিকার শহিদদের স্মরণে রাত ১১:৫৫ এর দিকে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেছে কুবি শাখা ছাত্রদল।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্য-সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভর নির্দেশনায় এই কর্মসূচি পালন করেন নেতাকর্মীরা।” উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের ফেসবুক পেজ থেকেও শেয়ার করা হয়।

উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্য-সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করলে গত ২৬ মার্চ (২৫ মার্চ দিবাগত রাত) রাত ১২ টা ৪৭ মিনিটে “২৫ মার্চ কালো রাতে গণহত্যার শিকার সকল শহীদদের স্মরণ ও মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্জ্বলিত।।” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত ৩টি ছবি পাওয়া যায় যার ২টি ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবি ২টির সাদৃশ্য রয়েছে। এছাড়া, ছবিগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে রিয়াজ উদ্দিন অন্তরসহ নানাভাবে ছাত্রদলের সাথে সম্পৃক্ত থাকা ছাত্রদল কর্মীদের দেখা যায়।

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ছবিটি মূলত ২৫ মার্চ কালো রাতে গণহত্যার শিকার সকল শহীদদের স্মরণ ও মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের দৃশ্য।

সুতরাং, ২৫ মার্চ কালো রাতে গণহত্যার শিকার সকল শহীদদের স্মরণ ও মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের দৃশ্যকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে ঢাবি এলাকায় উত্তেজনা দাবিতে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের মুখে দেশত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তীব্র উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, গত জানুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যকার সংঘর্ষের একটি ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম নিউজ২৪ এর ফেসবুক পেজে গত ২৬ জানুয়ারি প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওর মিল রয়েছে। এছাড়াও ভিডিওটির শিরোনামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি সাত কলেজ এবং স্টুডেন্ট আনরেস্ট শীর্ষক দুটি হ্যাশট্যাগ দেখতে পাওয়া যায়।

মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে উক্ত ঘটনায় গত ২৭ জানুয়ারি সাত কলেজ ও ঢাবি শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ ছড়িয়েছে নিউ মার্কেট এলাকায় শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৬ জানুয়ারি রাতে নিউ মার্কেট এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। যাতে দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। এছাড়াও প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ তাদেরকে অপমান করেন। যার প্রতিবাদে তারা তাঁরা সড়ক অবরোধ করেন। পরবর্তীতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে মিছিল নিয়ে নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থিত মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে কয়েকশ শিক্ষার্থী বেরিয়ে এসে তাঁদের ধাওয়া দেন। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

সুতরাং, ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনার পুরোনো ভিডিওকে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ‍উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

বোরকা না পরায় গণপরিবহনে নারীকে হয়রানি দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাজানো

সম্প্রতি, বোরকা না পরার কারণে একদল উগ্রপন্থী মুসলমান গণপরিবহনে এই মহিলাকে হয়রানি করছে। তাদের বক্তব্য, বোরকা ছাড়া গাড়িতে ওঠা যাবে না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন ভিডিও ছড়িয়ে তারা অমুসলিম নারীদের বোরকা পরতে বাধ্য করছে শীর্ষক দাবিতে এক্সে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

এক্সে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্রানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বাস্তব কোনো ঘটনার নয় বরং, বিনোদনের উদ্দেশ্যে তৈরি উক্ত ভিডিওটি বাস্তব দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

মূলত, ২০২৪ সালের ১৪ মার্চ Carton Show (বর্তমান নাম ‘আনন্দ 24) নামের  একটি ফেসবুক পেজ থেকে “রমজান মাসে বেপর্দা মহিলা বাসের হেলপারের সাথে কি ক*র*ছে অতঃপর” শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচারিত হয়। উক্ত ভিডিওটি সম্প্রতি বাস্তব ঘটনার ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিতে এই ভিডিওটি  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

কুয়েটে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষিত দাবিতে ভুয়া বিজ্ঞপ্তি প্রচার

0

সম্প্রতি, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) (কুয়েট) এ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কমিটি দেয়া হয়েছে দাবিতে দাবিতে ছাত্রদলের সভাপতি মো: রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

কথিত এই প্রেস বিজ্ঞপ্তিটিতে বলা হয়েছে,“খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

সভাপতি:রাহুল জাবেদ

সিনিয়র সহ-সভাপতি: অরিন্দল পাল পিউস

সাধারণ সম্পাদক: সাফওয়ান আহমেদ ইফাজ

সাংগঠনিক সম্পাদক: আল সাদ রাজিন

আগামী ৩০ দিনের মধ্যে কমিটি পূণাঙ্গ করে কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।” 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এ ছাত্রদলের নতুন কমিটি দেয়া হয়েছে দাবিতে প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া। প্রকৃতপক্ষে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এর কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে কুয়েট ছাত্রদল কমিটি নিয়ে এমন কোনো প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কথিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২৩ মার্চ, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে উক্ত তারিখে বাংলাদেশ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে এমন কোনো প্রেস বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র মিডিয়া সেলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করেও কথিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে, ছাত্রদলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গত ২৫ মার্চ আলোচিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি নিয়ে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে আলোচিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া ও ভিত্তিবিহীন বলে জানানো হয়।

Screenshot: Facebook 

সুতরাং, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এ ছাত্রদলের নতুন কমিটি দেয়া হয়েছে দাবিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নামে ফেসবুকে প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র

  • Bangladesh Jatiyotabadi Chatrodol: Post
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরে আসার দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে দেশত্যাগ করে ভারতে পাড়ি জমান বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি, ভারতে আশ্রিত শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছেন এবং তাকে স্বাগত জানাতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জড়ো হয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, শেখ হাসিনার দেশে ফেরার দাবিটি সঠিক নয় বরং, ২০২৪ সালের জুন মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে শেখ হাসিনার ভারত সফরে দিল্লি পৌঁছানোর ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

মূলত, ২০২৪ সালের ২১ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে নয়াদিল্লি যান বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লোকসভা নির্বাচনে বিজয়ী বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট নতুন সরকার গঠনের পর ভারতে কোনো দেশের সরকার প্রধানের এটিই ছিল প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। সে সময়ের ভিডিওই এটি যা সাম্প্রতিক ঘটনা দাবিতে প্রচার হচ্ছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই ভিডিও ব্যবহার করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় লাভের পর শেখ হাসিনার দেশে ফেরার ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে সেসময় রিউমর স্ক্যানার টিম দাবিটিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

দুর্ঘটনাবশত সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডকে ইসলামপন্থীদের দেওয়া আগুন দাবিতে অপপ্রচার

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর পরিকল্পিত নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। গত রাতে, পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার ফকদাই গ্রামে ইসলামপন্থীরা ৮টি হিন্দু বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। ৮টি হিন্দু পরিবারের সমস্ত কিছু আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।” (অনূদিত)

এছাড়াও, ফেসবুকে কিছু পোস্ট উক্ত ঘটনাটির দৃশ্য প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, উল্লিখিত অগ্নিসংযোগটি উগ্রপন্থীরা করেছে। পাশাপাশি ক্যাপশনে প্রশ্ন করা হয়েছে, “সংখ্যালঘুদের উপর এই নির্মমতার শেষ কোথায়?”

অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করতে ইসলামপন্থীরা বা উগ্রপন্থীরা উক্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটিয়েছে।

এরূপ দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ইচ্ছেকৃতভাবে উগ্রবাদীদের বা ইসলামপন্থীদের দেওয়া আগুনের ফলে ঘটেনি বরং, হিন্দু ধর্মাবলম্বী একজনেরই রান্নাঘর থেকে অসতর্কতাবশত আগুনটির উৎপত্তি হয়েছিল।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

পরবর্তী অনুসন্ধানে ‘আতিকুজ্জামান আতিক’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ১২ মার্চে প্রচারিত একটি ফেসবুক লাইভ ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটি সম্পর্কে ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, “বোদা উপজেলার ঝলই শালশিরী ইউনিয়নের ফকদই পাড়া গ্রামে বিনয় দা, শুভাষ দা, শ্যামল এর বাড়ি সম্পুর্ন এবং চিত্র ও নিরঞ্জন এর একটি করে ঘর পুরেছে। বিনয় দা এর রান্নাঘরের চুলা থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্র।”।

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওতে প্রদর্শিত অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে সাদৃশ্য পাওয়া যায় এবং নিশ্চিত হওয়া যায় যে উক্ত ঘটনাটির বিষয়েই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এরই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে ‘বাংলাদেশ সকাল’ নামের একটি সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটে “পঞ্চগড়ে আগুনে বাড়ি পুড়ে যাওয়া পরিবারের পাশে বিএনপি নেতা আজাদ” শীর্ষক শিরোনামে গত ১২ মার্চে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। ঘটনাটি সম্পর্কে উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, “পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা ঝলইশালশিড়ি ইউনিয়নের খোদকইপাড়া গ্রামের ১০ জন হিন্দু পরিবারের বাড়ি পুড়ে যায়। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে…জানা যায়, ৫ টি পরিবারের সকল আসবাবপত্র, জামা কাপড়, ঘরবাড়ি, টাকাসহ সর্বস্ব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে এবং ৫ পরিবারের ঘরবাড়ির কিছু কিছু অংশ পুড়ে গেছে। উল্লেখ্য, অসতর্কতাবশত এ আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং ঘরবাড়ি পুড়ে যায়।”

পরবর্তীতে এ বিষয়ে জানতে রিউমর স্ক্যানার টিম বোদা থানার অফিসার ইনচার্জ আজিম উদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করে। তিনি নিশ্চিত করেন, মুসলিমরা ইচ্ছেকৃতভাবে আগুন লাগিয়েছে বা সনাতনীদের ওপর হামলা ছিল এইসব দাবি পুরোপুরি মিথ্যা৷ তিনি আরো জানান, তিনি নিজেই সেখানে গিয়ে পরিদর্শন করেছেন। প্রকৃতপক্ষে, শশীমোহন নামের এক হিন্দু ধর্মাবলম্বী ব্যক্তির ঘরের চুলার আগুন থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত।

বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের পঞ্চগড়ের বোদার সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, মুসলমানদের ইচ্ছেকৃতভাবে আগুন ধরানোর বিষয়টি মিথ্যা। প্রকৃতপক্ষে সেখানকারই একটি ঘর থেকে অসতর্কতাবশত আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।

এছাড়াও, উক্ত এলাকার ইউনিয়ন সদস্য রতি কান্ত বর্মনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনিও রিউমর স্ক্যানারকে জানান, প্রচারিত দাবিটি মিথ্যা। প্রকৃতপক্ষে রান্নাঘরের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।

এছাড়া, এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলেও আলোচিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, দুর্ঘটনাবশত হিন্দু ধর্মাবলম্বী এক ব্যক্তির রান্নাঘর থেকে উদ্ভূত আগুনে ঘরবাড়ি পুড়ে যাওয়ার ঘটনাকে ইসলামপন্থীরা বা উগ্রবাদীরা ইচ্ছেকৃতভাবে আগুন ধরিয়েছে শীর্ষক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

তারেক রহমানকে রশিতে ঝুলিয়ে পেটানোর দৃশ্য দাবিতে ভিন্ন ব্যক্তির ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রশি দিয়ে বেঁধে রেখে নির্যাতনের একটি ছবি প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “এই যে ঝুলিয়ে রেখে পিটাচ্ছে, বলতে পারবেন কে উনি? উনি আর কেউ নন “তারেক জিয়া”। আ*লীগকে পূর্নবাসন করার আগে বিএনপিকে বলব এই ছবিটার দিকে ১০ মিনিট তাকিয়ে থাকবেন 🙏”

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিতে রশিতে ঝুলিয়ে রেখে নির্যাতনের শিকার এই ব্যক্তি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নন বরং, ২০০৭ সালে রতন কুমার নামে চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত একজনকে বগুড়া সদর পুলিশ স্টেশনে নির্যাতনের ছবিকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

পরবর্তী অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে মূলধারার সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টারে ২০০৭ সালের ২৭ জানুয়ারিতে ‘Police Brutality’ শিরোনামে প্রচারিত একটি ছবি পাওয়া যায়। উক্ত ছবিটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির তুলনা করলে সাদৃশ্য পাওয়া যায়। উক্ত ছবিটি সম্পর্কে বলা হয়, “চুরির অভিযোগে আটক রতনকে বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি ২০০৭) বগুড়া সদর থানার ডিউটি অফিসারের কক্ষে ছাদ থেকে ঝুলিয়ে রাখা হয়। তবে পুলিশ তাকে গতকাল (২৬ জানুয়ারি ২০০৭) গ্রেপ্তার দেখায়। ছবি: স্টার” (অনূূদিত)

Comparison : Rumor Scanner

এছাড়াও, তুর্কি সংবাদমাধ্যম ‘Haber3’ এর ওয়েবসাইটে ‘বিশ্বকে নাড়িয়ে দেওয়া ছবি!’ (স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনূদিত) শিরোনামে ২০০৭ সালের ৩০ জানুয়ারিতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনটিতে আলোচিত ছবিটির সংযুক্তি পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “দুইটি গলার হার চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত এক চোরকে থানায় “প্যালেস্টাইনিয়ান হ্যাঙ্গার” কৌশল ব্যবহার করে নির্যাতন করা হয়। মোবাইল ফোনে ধারণ করা নির্যাতনের ফুটেজ গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর এটি দেশ ও বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তোলে। বাংলাদেশের বগুড়া শহরের এক থানায়, এই বিশেষ কৌশলে নির্যাতনের ঘটনা ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।  

ফুটেজ ফাঁস হওয়ার পর তিনজন জিজ্ঞাসাবাদকারী ও দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়। পুলিশের বিবৃতিতে জানানো হয়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হবে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, “নির্যাতনকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হোক,” বিশেষ করে রতন কুমারের ক্ষেত্রে, যার কাছ থেকে দুইটি সোনার গলার হার উদ্ধার করা হয়েছিল।” (স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনূদিত)

অর্থাৎ, এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ছবিটিতে প্রদর্শিত ব্যক্তির নাম রতন কুমার।

এছাড়াও, বার্তা সংস্থা এএফপি’র জাপানি সংস্করণ এএফপিবিবি’র ওয়েবসাইটেও আলোচিত ছবিটির সংযুক্তিসহ ২০০৭ সালে প্রতিবেদন প্রকাশ হতে দেখা যায় যেখানে বলা হয় যে, ঘটনাটি ২০০৭ সালের ২৫শে জানুয়ারিতে বগুড়া থানায় ঘটেছিল এবং প্রদর্শিত ব্যক্তি চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন।

সুতরাং, ২০০৭ সালে চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত রতন কুমারকে রশিতে ঝুলিয়ে নির্যাতনের ছবিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নির্যাতনের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র