Home Blog Page 106

ইসলাম প্রসঙ্গে নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামসের মন্তব্য দাবিতে বিবিসিকে উদ্ধৃত করে ভুয়া তথ্য প্রচার

0

সুনিতা উইলিয়ামস এবং বুচ উইলমোর, নাসার এই দুই মহাকাশচারী গত বছরের জুন মাস থেকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) অবস্থান করছিলেন। মূলত, তাঁরা বোয়িংয়ের স্টারলাইনার মহাকাশযানে করে একটি আট দিনের মিশনে সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে, স্টারলাইনার মহাকাশযানের ত্রুটির কারণে তাঁদের পৃথিবীতে ফিরে আসা বিলম্বিত হয়। প্রায় ৯ মাস পর তাঁরা নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরেন।

এরই প্রেক্ষিতে, বিবিসির বরাত দিয়ে একটি বার্তা ইন্টারনেটে প্রচারিত হচ্ছে, যাতে দাবি করা হয়েছে সুনিতা উইলিয়ামস বলেছেন তিনি মহাকাশে কুরআন পাঠ করতেন এবং সেখানে কম খাওয়া ও পান করার জন্য রমজানের রোজা থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। তিনি কুরআনকে সত্য বলে বিশ্বাস করেন এবং এর বৈজ্ঞানিক দিকগুলো নিয়ে গবেষণা করতে চান।

 ৯ মাস মহাকাশে কাটিয়ে এক সপ্তাহের মিশন থেকে ফিরে এসে সুনিতা সাংবাদিকদের যা বলেছিলেন তা এখন বিশ্বজুড়ে আলোচনার একটি আলোচিত বিষয় উল্লেখ করে বিবিসির বরাত দিয়ে সুনিতা উইলিয়ামসের মন্তব্য দাবিতে প্রচারিত বার্তায় যা দাবি করা হচ্ছে,

১. আমার মনে হচ্ছে এটা ঈশ্বরের ইচ্ছা ছিল যে আমি মহাকাশে আটকা পড়ি। যখন আমার বয়স ২০ দিন, তখন আমি এমনভাবে বেঁচে ছিলাম যেন আমি মৃত্যুর মুখোমুখি। যখন আমি ভাবছিলাম যে এখন আমার কাছে থাকা খাবার এবং জল ফুরিয়ে গেছে, তখন কীভাবে এগিয়ে যাব, তখন আমার মুসলিমদের রোজার মাসের কথা মনে পড়ে গেল।  সেই দিন থেকে, আমি সন্ধ্যায় অল্প খাবার এবং জল পান করব, এবং সকালে অল্প জল।  এক মাস পর, আমি সুস্থ এবং সতেজ বোধ করলাম।  আমি বুঝতে পারলাম যে আমি আরও কিছুক্ষণ ধরে রাখতে পারব। 

২. যখন আমি মৃত্যুর অপেক্ষা করছিলাম, তখন আমি কম্পিউটার খুললাম এই ভেবে যে আমি একদিন বাইবেল পড়ব।”  আমি এটি আগে অনেকবার পড়েছি, তাই মাত্র এক পৃষ্ঠা পড়ার পরই আমি বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। তখনই আমার আবার কুরআন পড়ার ইচ্ছা জাগলো (এখন মনে হচ্ছে এটি আমাকে এক ধরণের শক্তি দিয়েছে)। আমি এটি ডাউনলোড করে (ইংরেজি অনুবাদ) পড়া শুরু করলাম।  ১০-১৫ পৃষ্ঠা পড়ার পর আমি অবাক হয়ে গেলাম।  এর মধ্যে ভ্রূণতত্ত্ব, গভীর সমুদ্র এবং আকাশ, এটি ছিল আশ্চর্যজনক। আমার মনে হলো পৃথিবীকে এটা বলা উচিত। 

৩.  মহাকাশ থেকে দেখলে সূর্যকে মনে হয় যেন এটি কাদার গর্তে বসে আছে। মাঝে মাঝে আমি উপর থেকে কিছু শব্দ শুনতে পাই, যেমন মন্ত্র জপ করা, আমার মনে হয়েছিল এটা আরবি ভাষার মতো।  আমার ভ্রমণসঙ্গী, ব্যারি উইলমোর, আমাকে বলেছিলেন যে আমি প্রতিদিন কুরআন পড়ি বলেই এমনটা হয়েছে। এরপর, আমি গভীরভাবে কুরআন পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং তাফসীরগুলো ডাউনলোড করলাম। এটা একটা দারুন অভিজ্ঞতা ছিল। আমি তাৎক্ষণিকভাবে ইলন মাস্ককে ফোন করে বিষয়টি জানাই।  তিনি বললেন, খুব শীঘ্রই তিনি তার প্রাক্তন প্রেমিকের সাথে বিষয়টি শেয়ার করবেন। 

৪. এখন তুমি অবাক হবে… কিছু দিন আমরা আমাদের মহাকাশ স্টেশনের দিকে ছুটে আসা বড় উল্কাপিণ্ড দেখে ভীত হব।’  যেহেতু আর কোন উপায় ছিল না, আমরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতাম এবং অলৌকিকভাবে, কিছু ছোট গোলাকার আলো (যা দেখতে তারার মতো) উড়ে এসে ভিতরের সবকিছু ধ্বংস করে দিত।  যখন আমরা এটির দিকে তাকাই, তখন মনে হয় আমরা এটির দিকে তারা ছুঁড়ে মারছি।  এটা আমাদের অবাক করেছে। নাসা শীঘ্রই এই বিষয়ে আরও তদন্ত পরিচালনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। 

 তাই ৮ মাস পর, আমি পুরো কুরআন পড়ে ফেললাম। আমার মনে হতে লাগলো যে আমি আবার পৃথিবীতে ফিরে যেতে পারব। আমি অনুভব করলাম এক অসাধারণ আত্মবিশ্বাস আমাকে ভরে দিয়েছে।

৫. এপ্রিল মাসে, যখন সূর্য অস্ত যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল, তখন একটি ইউনিকর্ন (উড়ন্ত ঘোড়া) সদৃশ একটি প্রাণী উপর থেকে পৃথিবীতে নেমে আসতে দেখা গেল। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পৌঁছানোর পর, এটি আর দৃশ্যমান ছিল না। আমি বুঝতে পারছিলাম না এটা কোথা থেকে আসছে, তাই আমি আর আমার ব্যারি উইলিমোর এটা দেখতে শুরু করলাম। আমার কাছে মনে হচ্ছে এটি উপরের একটি বিশেষ স্তর থেকে নেমে আসছে, এবং আমি বুঝতে পারি যে আকাশের একাধিক স্তর রয়েছে।  আমরা যতই ভেবেছি, তবুও বুঝতে পারছি না কেন এই উড়ন্ত ঘোড়াগুলো সেখানে ছিল না।  ঠিক তখনই আমি নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনটি দেখি যে হাডসন নদীর উপর অর্ধচন্দ্র দেখা যাচ্ছে এবং খবরটি আসে যে মুসলিমদের রোজা শুরু হয়েছে ২রা মার্চ।  তখন থেকেই নজাঙ্গাল এই ঘটনাটি দেখছে। পরবর্তী দিনগুলিতে, আমরা বুঝতে পারলাম যে পৃথিবীতে উপবাস ভাঙার সময় এসেছে।  আমার মনে হয় তারা হলেন ফেরেশতা যারা ঈশ্বরের আশীর্বাদ নিয়ে আসে। 

৬. এখন আমার মনে হচ্ছে কুরআন সত্য। এখন আমার গবেষণা হবে কুরআনের বিজ্ঞানের উপর।  ভ্রূণবিদ্যা, গভীর সমুদ্র বিজ্ঞান।  আমি জ্যোতির্বিদ্যা সম্পর্কে সবকিছু শিখতে চাই। কুরআনের অতিপ্রাকৃত শক্তি আবিষ্কারের জন্য নাসায় একটি নতুন বিভাগ শুরু করার প্রস্তাব করা হয়েছে। 

এছাড়াও, দাবি করা হয়, ট্রাম্প সরকার এর জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল বরাদ্দ করবে কিনা তা নিয়েও সুনিতা তার উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মহাকাশে কুরআন পাঠ ও রমজানের রোজা থেকে অনুপ্রাণিত হওয়ার বিষয়ে সুনিতা উইলিয়ামসের মন্তব্য দাবিতে বিবিসি এমন কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই বিবিসির বরাত দিয়ে আলোচিত বার্তা ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। তাছাড়া, সুনিতা উইলিয়ামসও এমন কোনো মন্তব্য করেননি।

দাবির সত্যতা যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ এবং বিবিসির ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, অন্যান্য গণমাধ্যমেও এমন কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে, বিবিসি এর ওয়েবসাইটে ‘Butch Wilmore and Suni Williams return to Earth after nine unplanned months in space’ তাদের অবতরণের একটি লাইভ কভারেজ খুঁজে পাওয়া যায়।

জানা যায়, ফ্লোরিডার উপকূলে স্পেসএক্স ক্রু-৯ এর সফল স্প্ল্যাশডাউনের পর লাইভ কভারেজটি নাসা এবং স্পেসএক্স সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে শেষ হয়েছিল। এতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মহাকাশচারীরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন না, তবে নাসা কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে তারা ভালো আছেন। তবে, তারা যোগ করেছেন যে মাধ্যাকর্ষণ সাথে পুনরায় মানিয়ে নিতে তাদের কিছু সময় লাগবে এবং পরিবারের সাথে মিলিত হওয়ার আগে উভয় মহাকাশচারীর চিকিৎসা মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

এছাড়াও, বিবিসির ওয়েবসাইটে ‘Astronauts Butch and Suni finally back on Earth’ শীর্ষক শিরোনোমে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মহাকাশে থাকাকালীন সাক্ষাৎকারে বুচ এবং সানি বলেছিলেন যে তারা তাদের প্রত্যাশার চেয়ে দীর্ঘ অবস্থানের জন্য ভালোভাবে প্রস্তুত ছিলেন – তবে বাড়িতে ফিরে তারা কিছু জিনিসের জন্য উন্মুখ ছিলেন।

গত মাসে সিবিএসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সানি উইলিয়ামস বলেছিলেন, “আমি আমার পরিবার, আমার কুকুরদের দেখতে এবং সমুদ্রে ঝাঁপ দিতে আগ্রহী। পৃথিবীতে ফিরে আসা এবং পৃথিবীর অনুভূতি পাওয়াটা সত্যিই ভালো হবে।”

অর্থাৎ, নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামস মহাকাশে কুরআন পাঠ ও রোজা থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছেন দাবি করে সুনিতাকে উদ্ধৃত করে বিবিসি কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি।

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে অন্য কোনো গণমাধ্যমেও সুনিতার এমন কোনো মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, বিবিসিকে উদ্ধৃত করে ইসলাম প্রসঙ্গে নভোচারী সুনিতা উইলিয়ামসের মন্তব্য দাবিতে ইন্টাররেটে প্রচারিত বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

পাখির চোখে তোলা ব্রাজিলের মানাউস শহরের দৃশ্য দাবিতে এআই তৈরি ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, পাখির চোখে তোলা ব্রাজিলের মানাউস শহর ও আমাজন অরণ্যের সংযোগস্থলের দৃশ্য দাবিতে একটি ছবি ইন্টারনেটে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি ব্রাজিলের মানাউস শহর ও আমাজন অরণ্যের সংযোগস্থলের আসল ছবি নয় বরং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি ছবি। ছবিটির সাথে মানাউসের প্রকৃত দৃশ্যের সঙ্গে মিল থাকলেও এটি একটি ভুয়া ছবি। 

অনুসন্ধানের শুরুতেই ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে কয়েকটি অসামঞ্জস্যতা চোখে পড়ে, যেমন: ভবনের ছাদ ও জানালার অস্বাভাবিক গঠন, গাছের গঠন, ছায়া ও রঙের পুনরাবৃত্তি। এসব লক্ষণ বিবেচনায় আমাদের কাছে ছবিটি প্রাথমিকভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সাহায্যে তৈরি বলে প্রতীয়মান হয়।

Indicated by Rumor Scanner

এই বিষয়ে আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ ওয়েবসাইট ‘Decopy.ai’ সাহায্য নেওয়া হয়। ওয়েবসাইটির বিশ্লেষণে ছবিটি এআই দ্বারা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৫.১৩% শতাংশ বলে ফলাফল দিয়েছে।

Screenshot: Decopy.ai

অর্থাৎ, ছবিটি এআই তথা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি।

পরবর্তীতে ব্রাজিলের মানাউস শহর এর বিষয়ে গুগল আর্থের স্যাটেলাইট এবং স্ট্রিট ভিউ পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, মানাউস শহরের সীমানায় অবস্থিত ভবনগুলি আলোচিত ছবিতে থাকা ভবনের সাথে মিল নেই।

Collage: Rumor Scanner

সুতরাং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি ছবিকে ড্রোন ক্যামেরায় তোলা ব্রাজিলের মানাউস শহর ও আমাজন অরণ্যের সংযোগস্থলের ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সাম্প্রতিক সময়ে সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের ঢাকার উদ্দেশ্যে অগ্রসরের দাবিটি ভুয়া

ক্যান্টনমেন্ট থেকে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে নতুন রাজনৈতিক পরিকল্পনার উপস্থাপন করা হয়েছে দাবি করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। এই পোস্টকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয় তীব্র আলোচনা-সমালোচনা।

এ ঘটনাপ্রবাহের মধ্যেই ২৪ মার্চ ঢাকা সেনানিবাসে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। এর একদিন আগেই, ২৩ মার্চ রাত থেকে ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাভারের ৯ম ডিভিশন ঢাকার দিকে রওনা হয়েছে’ একটি ভিডিও ছড়িয়ে সামাজিক মাধ্যমে পড়ে। ভিডিওতে শতাধিক সেনাবাহিনী সদস্যকে সামনের দিকে অগ্রসর হতে দেখা যায়।


উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ভিডিওটি ভারতীয় গণমাধ্যম ‘আজতক’-এর ইউটিউব চ্যানেলেও দেখানো হয়েছে। ভিডিওর এক কোণে তারা উল্লেখ করেছে যে এর সত্যতা যাচাই করা হয়নি। তবে অনুষ্ঠানের অতিথি ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল দীপ্তাংশু চৌধুরী এটিকে সাভারের ২৩ মার্চ রাতের ঘটনা বলে দাবি করেছেন। উপস্থাপকও একই দাবি করেন।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের ঢাকার দিকে অগ্রসর হওয়ার কোনো দৃশ্য নয়; বরং অন্তত দেড় বছর আগে থেকে আলোচিত ভিডিওটি অনলাইনে বিদ্যমান রয়েছে।

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘InFormative Bangla’ নামের একটি ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি পোস্টে একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

পরদিন, ২০২৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ‘Md. Rasel’ নামের আরেকটি ফেসবুক পেজে একই ভিডিও শেয়ার করে ক্যাপশনে উল্লেখ করা হয়, এটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর রাতের মহড়ার দৃশ্য।

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে ভিডিওটির সঠিক স্থান বা প্রেক্ষাপট সম্পর্কে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্য না মিললেও, এটি নিশ্চিত যে ভিডিওটি সাম্প্রতিক কোনো ঘটনার নয়।

সুতরাং, অন্তত দেড় বছর আগে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া একটি পুরোনো ভিডিওকে সম্প্রতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশন ঢাকার দিকে অগ্রসর হওয়ার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের হুমকি দেওয়ার ভাইরাল ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়

সম্প্রতি “হুজুর হিন্দুদের পরনের ধুতি খুলে নেবে এবং হিন্দু মহিলাদের শাঁখা সিঁদুর দিয়ে রাস্তায় বের হতে দেবে না।” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং, এটি ২০২২ সালে ভারতের কর্নাটক রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধের প্রতিবাদে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররম এর গেটে বিক্ষোভ মিছিল পূর্বক সমাবেশের ভিডিও। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে “মুহাম্মাদ যোবায়ের হোসেন সাঈদ” নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০২২ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি “ভারতের কর্নাটক রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ ও বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বায়তুল মুকাররমের উত্তর গেইটে চলছে বিক্ষোভ মিছিল পূর্বক সমাবেশ” শীর্ষক ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর ১৯ মিনিট ৩ সেকেন্ড অংশ থেকে ১৯ মিনিট ৪০ সেকেন্ড অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে৷

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী কি ওয়ার্ড সার্চ করে অনলাইন গণমাধ্যম নিউজ বাংলা২৪ ডটকমের ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ‘হিজাব নিষিদ্ধ হলে ভারত যাত্রার হুমকি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।  

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের কর্ণাটকে হিজাব নিষিদ্ধের প্রতিবাদে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে ১৮ ফেব্রুয়ারি (২০২২) জুমার নামাজ শেষে বিক্ষোভ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। হিজাব পরায় বিধিনিষেধ বাতিল না হলে দেশটির অভিমুখে যাত্রার হুমকি দিয়েছে দলটি। বিক্ষোভ মিছিলে ভারতে কর্ণাটক রাজ্যে হিজাব নিষিদ্ধের প্রতিবাদে স্লোগান দেয়া হয়।

একই বিষয়ে সেসময় দেশের একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন (, ) প্রকাশিত হয়। 

সুতরাং, ২০২২ সালে ভারতের কর্নাটক রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধের প্রতিবাদে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মুকাররম এর গেটে বিক্ষোভ মিছিল পূর্বক সমাবেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের হুমকির ঘটনাকে সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

৫০০০ হাজার বছরের পুরোনো এবং পিরামিডের পাথর দাবিতে প্রচারিত ছবিটি লেবাননের  

0

সম্প্রতি একটি বিশালাকৃতির পাথরের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে “পাথরটি ৫০০০ বছরের পুরোনো এবং পিরামিডে ব্যবহৃত প্রায় দুই মিলিয়ন পাথরের মধ্যে একটি এই পাথরের ব্লকটি!”  

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ছবি দেখুন আর্কাইভ (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ছবির পাথরটি ৫০০০ বছরের পুরোনো কিংবা মিসরের পিরামিডে ব্যবহৃত পাথর নয় বরং, এটির বয়স ২০০০ বছর এবং পাথরটির সাথে পিরামিডের কোনো সম্পর্ক নেই।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Smithsonian Magazine-এর ওয়েবসাইটে ২০১৪ সালের ০৩ ডিসেম্বর ‘The Largest Manmade Block Ever Was Just Discovered in Lebanon’ শিরোনামে আলোচিত ছবিসহ একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Smithsonian Magazine

এই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জার্মান এবং লেবাননের প্রত্নতাত্ত্বিকদের একটি দল আবিষ্কৃত সবচেয়ে বড় কৃত্রিম পাথরের খনি আবিষ্কার করেছে লেবাননের বালবেকে। গিজমোডোর প্রতিবেদন অনুসারে, এই ব্লকটির মাপ ৬৪ ফুট বাই ১৯.৬ ফুট বাই ১৮ ফুট এবং ওজন আনুমানিক ১,৬৫০ টন।ব্লকটি প্রায় ২০০০ বছর আগের, অর্থাৎ ২৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দের। তবে, এই পাথর এবং অন্যান্য পাথর কখনও খনি থেকে বের করতে পারেনি, সম্ভবত কারণ এটি পরিবহনের জন্য খুব বেশি ভারী ছিল।  

একই বিষয়ে ২০১৪ সালে প্রকাশিত ডিসকভারির ‘Largest Stone Block From Antiquity Found’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন থেকেও আলোচিত পাথরটির বয়স সম্পর্কে একই তথ্য পাওয়া যায়। 

উল্লেখ্য, মিশর এবং লেবানন দুটি ভিন্ন মহাদেশে অবস্থিত এবং পিরামিডের বয়স আনুমানিক ৫০০০ বছর এবং আলোচিত পাথরটির বয়স প্রায় ২০০০ বছর। 

সুতরাং, লেবাননে খুঁজে পাওয়া প্রায় ২০০০ বছরের পুরোনো পাথরকে ৫০০০ বছর পুরোনো এবং পিরামিড তৈরিতে ব্যবহৃত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

প্রধান উপদেষ্টাকে জড়িয়ে পদ্মা সেতু ভাঙ্গার কার্যক্রম শুরুর দাবিটি মিথ্যা 

0

সম্প্রতি ‘আগামীকাল থেকে পদ্মা সেতু ভাঙ্গার কার্যকর্ম শুরু জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা বিস্তারিত কমেন্ট_’ শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে৷ \

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধান উপদেষ্টার বরাতে পদ্মা সেতু ভাঙ্গার কার্যক্রম শুরু করার দাবিটি সঠিক নয় বরং কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইন সাইট ব্যবহার করে প্রকাশিত ভুয়া সংবাদ সত্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফেসবুকের উক্ত দাবির কতিপয় পোস্টে একটি ব্লগপোস্টের লিংক (https://bangladesar0.blogspot.com/2025/03/blog-post_21.html ) সূত্র হিসেবে দেওয়া হয়েছে। রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণে bangladeshsar0 নামের ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইনের এই সাইটটি একটি ভূঁইফোড় সাইট বলে প্রতীয়মান হয়। 

পরবর্তীতে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ Chief Adviser GOB প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করা হয়; মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কার্যক্রমের তথ্য প্রচার করা হলেও পদ্মা সেতু ভাঙ্গার কোনো কার্যক্রম সংক্রান্ত কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি৷

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কিংবা সংশ্লিষ্ট কোনো সূত্রে পদ্মা সেতু ভাঙ্গার কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি৷ 

সুতরাং, প্রধান উপদেষ্টার বরাতে পদ্মা সেতু ভাঙ্গার কার্যক্রম শুরু করার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা৷ 

তথ্যসূত্র

  • Chief Adviser GOB– Facebook Page 

লক্ষ্মীপুরে গ্যাস বিস্ফোরণে বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক ঘটনা দাবিতে প্রচার

0

গত ১৭ মার্চ লক্ষ্মীপুর জেলার কুশাখালি ইউনিয়নে ইসলামপন্থীরা হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে দাবিতে এক্সে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। এছাড়াও, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দীর্ঘ ভিডিও প্রচার করা হয়, লক্ষ্মীপুর জেলার কুশাখালী ইউনিয়নে জামাত-বিএনপির সদস্যরা কিছুক্ষণ আগে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করেছে শীর্ষক দাবি প্রচার করা হয়েছে।

এক্সে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর জেলার কুশাখালি ইউনিয়নে ইসলামপন্থীরা হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করার দৃশ্য শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় এবং এই ঘটনায় রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতাও নেই বরং গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের এই ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘লক্ষ্মীপুর ব্রেকিং নিউজ’ নামক ফেসবুক পেজে গত ১৮ মার্চ প্রকাশিত একই ঘটনার একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটি থেকে জানা যায়, গত ১৭ মার্চ রাতে লক্ষীপুরের সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের পূর্ব কল্যাণপুর জনতা কলেজ সংলগ্ন ঠাকুর বাড়িতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের সহায়তা ও ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

ভিডিওটিতে ভয়েসওভারে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বলেন, ওই বাড়ির দ্রিজেন্দনাল আচার্যের রান্না ঘরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ফলে মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পরে পার্শ্ববর্তী দুলাল আচার্য, পুরবী রানী পাল, সুরেশ চন্দ্র পালের বসত ঘর পুড়ে যায়। দুলাল আচার্যের ঘরে থাকা প্রতিবন্ধী ছেলে রনি আচার্য বের করতে দেরি হওয়ায় সে অগ্নিদগ্ধ হয়। 

এই তথ্যের সূত্রে স্থানীয় গণমাধ্যম লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর এর ওয়েবসাইটে গত ১৭ মার্চ প্রকাশিত ‘লক্ষ্মীপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে একই বাড়ির ৪টি ঘর পুড়ে ছাই; অগ্নিদগ্ধ প্রতিবন্ধী যুবক’ শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ১৭ মার্চ লক্ষ্মীপুরের কুশাখালী ইউনিয়নের ঠাকুরবাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দুটি বসতঘর ও দুটি রান্নাঘর পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় রনি আচার্য নামে এক প্রতিবন্ধী যুবক দগ্ধ হয়েছেন, তার শরীরের ৭০-৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। স্থানীয়দের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রতিবেদনটিতে স্থানীয়দের বরাতে জানানো হয়, ওই বাড়ির দ্রিজেন্দনাল আচার্যের রান্না ঘরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে পার্শ্ববর্তী দুলাল আচার্য, পুরবী রানী পাল, সুরেশ চন্দ্র পালের ঘর পুড়ে যায়। এসময় দুলাল আচার্যের ঘরে থাকা প্রতিবন্ধী ছেলে রনি আচার্য বের করতে দেরি হওয়া সে অগ্নিদগ্ধ হয়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে লক্ষ্মীপুর পরে নোয়াখালী হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ণ ইউনিটে পাঠায়।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দাসেরহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ মাহবুবুর রহমান এর বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার সন্ধ্যার সাথে সাথে রান্না ঘরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে দুটি বসত ঘর ও দুটি রান্নাঘর পুরো পুড়ে যায় এবং একজন প্রতিবন্ধী যুবক আহত হন।

প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, লক্ষ্মীপুর ফায়ারসার্ভিসের স্টেশন অফিসার রঞ্জিত কুমার সাহা বলেন, দেড়ঘন্টা ব্যাপী চেষ্টা চালিয়ে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। চারটি ঘর পুড়ে গেছে। এরমধ্যে দুটি বসতঘর ও দুটি রান্নাঘর। প্রাথমিকভাবে ১২ লাখ টাকার ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে।

এছাড়াও, ঢাকা মেইলদৈনিক ইনকিলাব এর ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও জানা যায়, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ফলে আগুন লাগে।

অর্থাৎ, লক্ষ্মীপুরে সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নে সংখ্যালগু সম্প্রদায়ের বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনায় ইসলামপন্থী কিংবা জামাত-বিএনপির সম্পৃক্ততা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, লক্ষ্মীপুরে সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুন লাগার ঘটনাকে ইন্টারনেটে সাম্প্রদায়িক ইস্যু এবং  জামাত-বিএনপি অগ্নিসংযোগ করেছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ভারতে বরের নাচ দেখে কনের বাবার বিয়ে ভেঙে দেওয়ার ঘটনাটি বাস্তব নয়

সম্প্রতি, ভারতের নয়াদিল্লিতে বিয়ের অনুষ্ঠানে বরের নাচ দেখে কনের বাবা বিয়ে ভেঙে দিয়েছেন দাবিতে বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়, ‘চোলি কা পিছে কেয়া হ্যায়’ শীর্ষক ‘আপত্তিকর’ গানে নাচার কারণে কনের বাবা উক্ত বিয়েটি ভেঙে দেন।

গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন কালের কণ্ঠ, ইনডিপেনডেন্ট টিভি, বাংলাদেশ প্রতিদিন, ইত্তেফাক, যুগান্তর, জনকণ্ঠ, মানবজমিন, দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস, দ্য বাংলাদেশ মোমেন্টস, বিডি২৪লাইভ

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বরের আপত্তিকর গানে নাচার কারণে ভারতের দিল্লিতে কনের বাবার বিয়ে ভেঙে দেওয়ার ঘটনাটি বাস্তব কোনো ঘটনা নয়। বরং, অ্যামাজনের ওটিটি প্ল্যাটফর্মের বিজ্ঞাপনের স্ক্রিপ্টকে বাস্তব ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতিবেদনটিতে সূত্র হিসেবে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

পরবর্তীতে এনডিটিভির ওয়েবসাইটে গত ৩ ফেব্রুয়ারি Viral Ad? Report Claims Groom’s Choli Ke Peeche Dance Ended His Wedding শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত উক্ত সংবাদটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত সংবাদটি পর্যালোচনা করে প্রতিবেদনটিতে উক্ত ঘটনার নিদির্ষ্ট দিন-তারিখ কিংবা স্থানের স্পষ্ট উল্লেখ পাওয়া যায়নি। তবে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়, উক্ত সংবাদের তথ্যগুলো আরেক ভারতীয় গণমাধ্যম ‘নবভারত টাইমস’ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

পরবর্তীতে নবভারত টাইমসের ওয়েবসাইটে গত ৩১ জানুয়ারি প্রকাশিত প্রতিবেদনটিরও সন্ধান পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনটি পর্যালোচনার মাধ্যমে জানা যায়, প্রতিবেদনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে প্রচারিত একটি পোস্টের ‍উপর ভিত্তি করে করা হয়েছে। যেখানে একটি পত্রিকার কাটিং দেখতে পাওয়া যায়। যাতে উক্ত ঘটনা সম্বলিত সংবাদটি রয়েছে। 

Screenshot: X

তবে Xavier Uncle নামের ওই এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে প্রকাশিত পোস্টটিতে উক্ত সংবাদকে বিজ্ঞাপন উল্লেখ করে, ‘সম্ভবত এখন পর্যন্ত আমার দেখা সবচেয়ে মজার বিজ্ঞাপন প্লেসমেন্ট’ শীর্ষক মন্তব্য করতে দেখা যায়। 

অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে জানা যায়, এটি আরেক ভারতীয় গণমাধ্যম ‘দ্য পাইওনিয়ার’ এর ১০ জানুয়ারিতে প্রকাশিত সংস্করণের ৩ নং পৃষ্ঠার ছবি। 

Screenshot: The Pioneer

দ্য পাইওনিয়ার-এর সেদিনের ই-পেপার পর্যালোচনার মাধ্যমে দেখা যায়, আলোচিত প্রতিবেদনটি অ্যামাজনের ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এমএক্স প্লেয়ারের বিজ্ঞাপনের সাথে একত্রে বক্স আকারে প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও আলোচিত প্রতিবেদনের শিরোনাম ও বডি টাইপের ফন্টের সাথে পত্রিকাটির অন্যান্য প্রতিবেদনের ফন্টের পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও উক্ত প্রতিবেদনে কোনো বাইলাইন ক্রেডিট দেখতে পাওয়া যায়না। যা থেকে এটি স্পষ্ট যে উক্ত প্রতিবেদনটি আসলে অ্যামাজনের ওটিটি প্ল্যাটফর্মের-ই একটি বিজ্ঞাপন। 

‘দ্য পাইওনিয়ার’ এর বিজ্ঞাপন ও বিক্রয় বিভাগের প্রধান বরুণ কুমার চৌধুরী ভারতীয় একটি ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠানকে জানিয়েছেন, বরের নাচ দেখে কনের বাবার বিয়ে ভেঙে দেওয়ার সংবাদটি আসল নয়। অ্যামাজনের ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এমএক্স প্লেয়ারের বিজ্ঞাপনের অংশ হিসেবে উক্ত ঘটনাটি প্রকাশ করা হয়েছে। 

সুতরাং, বিয়ের অনুষ্ঠানে আপত্তিকর গানে বরের নাচের কারণে কনের বাবা বিয়ে ভেঙে দেওয়ার ওটিটি প্ল্যাটফর্মের বিজ্ঞাপনকে ভারতের বাস্তব ঘটনা দাবিতে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ৫ আগস্টেই শেষ জানিয়ে প্রেস রিলিজ দেননি শেখ হাসিনা  

0

২০২৪ সালের ০৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী সরকারের ক্ষমতাবসানের পর বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে অবস্থান করছেন। সম্প্রতি ‘জীবনের এই পড়ন্ত বেলায় সকল প্রকার হিংসা হানাহানি, দলাদলি, ক্ষমতার জন্য রাজনীতি এসব থেকে দূরে থাকতে চায় ও তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ২০২৪ এর ০৫ আগস্টেই শেষ এবং তার ফিরে আসা বা সেনাবাহিনী কর্তৃক জরুরী অবস্থা জারি করে তাকে ফিরিয়ে আনা একটি স্বার্থান্বেষী ষড়যন্ত্র’ শীর্ষক একটি একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

শেখ হাসিনার স্বাক্ষরসহ বিজ্ঞপ্তিটিতে লিখা রয়েছে,

‘নয়াদিল্লী

২৪/০৩/২০২৫

পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা

প্রিয় দেশবাসী! পবিত্র মাহে রমজান ও আসন্ন ঈদুল ফিতরের প্রাক্কালে আপনাদের জানাই হৃদয়ের উষ্ণ শুভেচ্ছা ও অভিবাদন। প্রিয় দেশবাসী, আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, গত ৫ই আগস্ট ২০২৪ তারিখে আমাকে এক দুঃখজনক ঘটনার প্রেক্ষিতে দেশত্যাগ করে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে আশ্রয় নিতে হয়। এরপর থেকে আমি এবং আমার পরিবার রাজনীতি থেকে বিরত আছি। নিজের শারীরিক অসুস্থতা ও দৈনন্দিন ইবাদত-বন্দেগীর বাইরে আমার অন্য কিছু করার ইচ্ছা বা শারীরিক ক্ষমতাও নাই। ১৯৪৭ সালে জন্মের পর এক এক করে জীবনের ৭৯টি বসন্ত কেটে গেছে। এখন মনে শুধু একটা সুরই বাজে-” হরি দিন তো গেলো সন্ধ্যে হলো, পার করো আমারে।” জীবনের এই পড়ন্ত বেলায় আমি সকল প্রকার হিংসা হানাহানি, দলাদলি, ক্ষমতার জন্য রাজনীতি এসব থেকে দূরে থাকতে চাই। আগেও বলেছি আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ০৫.০৮.২০২৪ তারিখেই শেষ। আমার ফিরে আসা বা সেনাবাহিনী কর্তৃক জরুরী অবস্থা জারি করে আমাকে ফিরিয়ে আনা কিছু স্বার্থান্বেষী কুচক্রির হীন ষড়যন্ত্র বৈ আর কিছুই না। আমার শেষ জীবন আজমির শরীফে খাজা মঈনুদ্দিন চিশতী (রঃ) এর পবিত্র রওজা মোবারকের পাশেই কাটবে। খাজা বাবার দরবারের পাশেই আমার শেষ শয্যা হবে এমন অসিয়ত করেছি এবং ভারত সরকারের নিকট আবেদন করেছি। এমতাবস্থায় সবাইকে শান্তি ও কল্যানের দিকে আহবান করে আমি আমার বিবৃতি শেষ করলাম।

জয় বাংলা! জয় বঙ্গবন্ধু!! বাংলাদেশ চিরজীবি হোক।’

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ৫ আগস্টেই শেষ জানিয়ে প্রেস রিলিজ দেননি শেখ হাসিনা বরং আওয়ামী লীগের প্যাড নকল করে ভুয়া এই প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হচ্ছে।  

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে কথিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে তারিখ হিসেবে ২৪ মার্চ উল্লেখ করা হয়েছে। সাধারণত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিগুলো দলটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রচার করা হয়। তবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ, মিডিয়া সেলের ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত কোনো প্রেস বিজ্ঞপ্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিগুলোর ফন্ট ও লেখার ডিজাইনের সাথেও আলোচিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটির বৈসাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner 

পরবর্তী অনুসন্ধানে এ সংক্রান্ত দাবিতে গণমাধ্যম এবং সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলোর বরাতেও কোনো তথ্য মেলেনি। 

সুতরাং, শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের ইতি ঘোষণা ও তাকে ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্র সম্পর্কে বিবৃতি দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রেস বিজ্ঞপ্তি দাবিতে প্রচারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

এটি চলতি রমজানে ভারতে মুসলিমদের নামাজে বাধা ও নির্যাতনের ঘটনার ভিডিও নয়

সম্প্রতি, রমজান মাসেও ভারতের মুসলমানদের নামাজ আদায়ে বাধা দেওয়া হচ্ছে এবং তাদের উপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি চলতি রমজান মাসে ভারতে মুসলমানদের নামাজ আদায়ে বাধা ও নির্যাতন চালানোর কোনো ঘটনার নয় বরং, দেশটির হরিয়ানা রাজ্যের গুরুগ্রামে কট্টরপন্থী হিন্দু কর্তৃক জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত স্থানে মুসলমানদের জুম্মার নামাজ আদায়ে বাধা দেওয়ার ২০২১ সালের ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Woke Malayalam’ নামের একটি ফেসবুক পেজে ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর প্রচারিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটির ক্যাপশনে ভিডিওটি সম্পর্কে মালায়ালাম ভাষায় লেখা হয়েছে, “হিন্দু চরমপন্থীদের বাধার মাঝেও গুরুগ্রামে জুমার নামাজ আদায় করলেন মুসলিমরা। আজ (০৩.১২.২০২১) হরিয়ানার গুরুগ্রামের সেক্টর ৩৭ এলাকায় ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানের মধ্য দিয়ে হিন্দুত্ববাদীরা জুমার নামাজ বন্ধ করার চেষ্টা করলেও পুলিশের নিরাপত্তায় নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। টানা তৃতীয় সপ্তাহ ধরে সরকার অনুমোদিত স্থানগুলোতে জুমার নামাজ বন্ধ করার উদ্দেশ্যে তারা হাজির হচ্ছে। ইমাম হাজি শহসাদ খান নামাজ শেষে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির জন্য দোয়া করেন। প্রতিবাদ জানাতে আসা প্রায় ৪০ জনকে পুলিশ আটকে দেয় এবং সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।” (স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনূদিত)

পরবর্তীতে, উক্ত তথ্যের সূত্রে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর ‘India: Hindu groups continue to disrupt Muslim prayers in Gurgaon’ শীর্ষক শিরোনমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে থাকা ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর ঘটনার সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নয়াদিল্লির কাছে গুরুগ্রামে দুই মাসের বেশি সময় ধরে কট্টরপন্থী হিন্দু গোষ্ঠী কর্তৃক মুসলমানদের প্রকাশ্যে জুম্মার নামাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে, যা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। গত শুক্রবারে সেক্টর ৩৭-এ বিক্ষোভকারীরা নামাজের স্থানে (জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত স্থানে) ট্রাক রেখে এবং ধর্মীয় স্লোগান দিয়ে নামাজে বিঘ্ন ঘটায়, যা পুলিশের সামনেই ঘটে। মসজিদের অভাবের কারণে মুসলমানরা আগে অনুমতি নিয়ে খোলা স্থানে নামাজ পড়লেও, সাম্প্রতিক বিক্ষোভের মুখে কর্তৃপক্ষ বেশিরভাগ স্থানের অনুমতি বাতিল করেছে। মুসলিম কাউন্সিল নতুন মসজিদ নির্মাণের জন্য জমি পেলে খোলা স্থানে নামাজ পড়া বন্ধ করতে ইচ্ছুক।

২০২১ সালের ১৭ ডিসেম্বর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির ওয়েবসাইটে ‘Gurgaon: Tension in an Indian city over Muslim prayers’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত তিন মাস ধরে, প্রতি শুক্রবার, প্রান্তিক হিন্দু ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলোর একটি দল নিয়মিতভাবে ভারতের রাজধানী দিল্লির একটি অভিজাত শহরতলী গুরুগ্রামের জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত স্থানে মুসলমানদের নামাজে বাধা দিতে একত্রিত হচ্ছে। 

সুতরাং, ২০২১ সালের ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের গুরুগ্রামে কট্টরপন্থী হিন্দু কর্তৃক জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত স্থানে মুসলমানদের জুম্মার নামাজ আদায়ে বাধা দেওয়ার ঘটনাকে সম্প্রতি রমজান মাসেও ভারতের মুসলমানদের নামাজ আদায়ে বাধা ও নির্যাতন চালানো হচ্ছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র