Home Blog Page 107

নাহিদ ইসলামকে উদ্ধৃত করে ইনডিপেনডেন্ট টিভির নামে প্রচারিত থাম্বনেইলের ছবিটি সম্পাদিত

0

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে গত ১১ মার্চে হওয়া একটি বৈঠক নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দুই মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহসারজিস আলম ফেসবুকে ভিন্ন ভিন্ন দুইটি পোস্ট করেন এবং এর প্রতিক্রিয়ার বক্তব্য দেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ‘হাসনাত, সার্জিস ও হান্নান মাসউদ তিনজনেই মিথ্যা কথা বলেছে – নাহিদ ইসলাম।’ শীর্ষক শিরোনামে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের লোগো সম্বলিত ইউটিউব ভিডিওর থাম্বনেইলের একটি ছবি ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে৷ 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷ 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, হাসনাত-সারজিসের ফেসবুক স্ট্যাটাস বিতর্কে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আলোচিত মন্তব্যটি করেননি এবং তার মন্তব্য দাবি করে ইনডিপেনডেন্ট টিভি ‘হাসনাত, সার্জিস ও হান্নান মাসউদ তিনজনেই মিথ্যা কথা বলেছে – নাহিদ ইসলাম।’ শিরোনামে থাম্বনেইল সম্বলিত কোনো ভিডিও বা সংবাদ প্রকাশ করেনি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইনডিপেনডেন্ট টিভির ফেসবুক পেজ, ওয়েবসাইটইউটিউব চ্যানেল পর্যবেক্ষণ করে উক্ত দাবি সম্বলিত কোনো সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে, ইনডিপেনডেন্ট টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ১২ অক্টোবর ‘ফেসবুকে ফেক আইডি খুলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে: উপদেষ্টা নাহিদ’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির থাম্বনেইলের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত থাম্বনেইলের ছবিটির আংশিক সাদৃশ্য দেখতে পাওয়া গেছে। 

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত থাম্বনেইল ও আলোচিত থাম্বনেইলের ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, মূল থাম্বনেইলে বামপাশে মোবাইল স্ক্রিনের ছবিটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সরিয়ে তার স্থলে হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম ও আব্দুল হান্নান মাসুদের ছবি প্রতিস্থাপন করে এবং ‘ফেসবুকে ফেক আইডি খুলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে: উপদেষ্টা নাহিদ’ শীর্ষক শিরোনামের স্থলে ‘হাসনাত, সার্জিস ও হান্নান মাসউদ তিনজনেই মিথ্যা কথা বলেছে – নাহিদ ইসলাম।’ শিরোনাম প্রতিস্থাপন করে আলোচিত থাম্বনেইলটি তৈরি করা হয়েছে৷ এছাড়াও, আলোচিত থাম্বনেইলেটিতে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে ইনডিপেনডেন্ট টিভির থাম্বনেইলে ব্যবহৃত ফন্টের ভিন্নতা রয়েছে। মূলত, ইনডিপেনডেন্ট টিভির থাম্বনেইল সম্পাদনা করে তাদের লোগো ও নাম ব্যবহার করে উক্ত থাম্বনেইলটি তৈরি করা হয়েছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের ফেসবুক প্রোফাইল (, ) পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো পোস্ট বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি৷ 

সুতরাং, ইনডিপেনডেন্ট টিভির নামে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে উদ্ধৃত করে ‘হাসনাত, সার্জিস ও হান্নান মাসউদ তিনজনেই মিথ্যা কথা বলেছে – নাহিদ ইসলাম।’শিরোনামে প্রচারিত থাম্বনেইলের ছবিটি সম্পাদিত৷ 

তথ্যসূত্র

ইয়াসির আদ দৌসারির ভুয়া ফেসবুক পেজের পোস্টকে আসল দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরবি হরফে মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়খ ইয়াসির আদ দৌসারির নাম আরবি অক্ষরে লেখা একটি ভেরিফাইড ফেসবুক পেজের পোস্টের স্ক্রিনশট প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, মসজিদুল হারামের সাবেক ইমাম ও খতিব শায়খ ইয়াসির আদ দৌসারি বলেছেন, “যদি মুসলমানদের সমস্যাগুলো কেবল দোয়ার মাধ্যমে সমাধান করা যেত, তাহলে আল্লাহর রাসূল যুদ্ধ করতেন না, এবং তিনিই হলেন তাদের মধ্যে সেরা যাদের দোয়া কবুল হয়!”

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাসূল (সা.) এর উদাহরণ টেনে মুসলমানদের সমস্যা নিয়ে কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও দোয়া বিষয়ক মন্তব্য করেননি ইয়াসির আদ দৌসারি বরং, তার নামে চালু থাকা একটি ভুয়া ভেরিফাইড ফেসবুক পেজের পোস্টকে তারই মন্তব্য ভেবে নিয়ে আলোচিত দাবিটি ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেটে।

মূলত, রাসুল (সাঃ) এর উদাহারণ টেনে মুসলিমদের সমস্যা নিয়ে কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও দোয়া নিয়ে শায়খ ইয়াসির আদ দৌসারির একটি মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, শায়খ ইয়াসির আদ দৌসারি এমন কোনো মন্তব্য করেননি। প্রকৃতপক্ষে, তার নামে চালু থাকা একটি ভুয়া ভেরিফাইড ফেসবুক পেজের পোস্টকে তারই মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। রিউমর স্ক্যানার আরও যাচাই করে দেখেছে, শায়খ ইয়াসির আদ দৌসারির সামাজিক মাধ্যমে কোনো অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট বা পেজ নেই।

সুতরাং, মুসলিমদের সমস্যা নিয়ে রাসুল (সাঃ) এর উদাহরণ টেনে যুদ্ধ ও দোয়া বিষয়ক ইয়াসির আদ দৌসারি মন্তব্য করেছেন শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

পাসপোর্ট থেকে ‘এক্সেপ্ট ইসরাইল’ বাতিলের সিদ্ধান্ত বিগত শেখ হাসিনা সরকারের, ড. ইউনূসের নয়

0

সম্প্রতি, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পর নতুন ই-পাসপোর্ট থেকে “This passport is valid for all countries of the world except Israel” লেখা সরিয়ে “This passport is valid for all countries of the world” শব্দ যোগ করা হয়েছে দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

এক্সেপ্ট ইসরাইল

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে “ইসরায়েল ব্যতীত বিশ্বের সব দেশের জন্য বৈধ” বাক্যটি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে নেওয়া হয়নি বরং, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ২০২১ সালের ২৪ মে বিবিসি বাংলার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আগের পাসপোর্টে ইসরায়েলে ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ ছিল, তবে নতুন ই-পাসপোর্টে এই শব্দটি বাদ দেওয়া হয়েছে। তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন জানান, এই পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত এক বছর আগে (বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন প্রকাশের) নেওয়া হয়েছিল এবং ছয় মাস আগে এটি কার্যকর করা হয়েছে।

এছাড়া, ২০২১ সালের ২৩ মে ডেইলি স্টারের এক প্রতিবেদনে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেনের বরাতে বলা হয়, নতুন পাসপোর্টে “ইসরায়েল ব্যতীত (except Israel)” না লেখার মানে এই নয় যে বাংলাদেশ তার অবস্থান পরিবর্তন করেছে। বাংলাদেশ এখনো ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি।

২০২১ সালের ২৩ মে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের ই-পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে “ইসরায়েল ব্যতীত” শব্দটি বাদ দেওয়া হয়েছে, তবে এতে মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি এবং বাংলাদেশি নাগরিকদের ইসরায়েল ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা অপরিবর্তিত থাকবে।

অর্থাৎ, শেখ হাসিনা সরকারের আমলেই পাসপোর্ট থেকে “ইসরায়েল ব্যতীত বিশ্বের সব দেশের জন্য বৈধ” বাক্যটি বাদ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে গত ১৮ মার্চ যুগান্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেদিন ই-পাসপোর্টে ‘এক্সেপ্ট ইসরায়েল’ পুনর্বহালের দাবিতে সচিবালয়ে গিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ। এই বিষয়ে বাংলাদেশের পাসপোর্টে ‘এক্সেপ্ট ইসরাইল’ বা ইসরাইল ব্যতীত পুনর্বহালের দাবি ‘খুবই যৌক্তিক’ আখ্যা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে আলোচনা করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশক্রমে ‘এক্সেপ্ট ইসরাইল’ পুনর্বহালের বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

সুতরাং, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পাসপোর্ট থেকে “ইসরায়েল ব্যতীত বিশ্বের সব দেশের জন্য বৈধ” বাক্যটি বাদ দিয়েছে দাবিতে প্রচারিত বিষয়টি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশে জঙ্গি নির্মূল করতে সেনাবাহিনীর গাড়িবহরের দৃশ্য দাবিতে ইন্দোনেশিয়ার দৃশ্য প্রচার

সম্প্রতি “ইনশাআল্লাহ | জঙ্গি নির্মূল হবে বাংলাদেশ থেকে…” শীর্ষক ক্যাপশনে সেনাবাহিনীর গাড়িবহর সদৃশ একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে যে প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় বরং, ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তার গাম্বীর রেলওয়ে স্টেশনের নিকটবর্তী স্থানে ধারণকৃত একটি ভিডিওকে সম্প্রতি বাংলাদেশের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

তবে প্রচারিত ভিডিওটিতে ইন্দোনেশিয়ার পতাকাসহ ‘JALAN DEPAN STASIUN GAMBIR DIPADATI KENDARAAN MILITER’ লেখা দেখতে পাওয়া যায় যা গুগল ট্রান্সলেটরের সাহায্যে অনুবাদ করলে এর অর্থ হিসেবে জানা যায়, ‘গাম্বীর স্টেশনের সামনের রাস্তাটি মিলিটারি যানবাহনে ভর্তি’।

পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ‘পলিটিক বিসনিস এন্টারটেইনমেন্ট’ নামের ইন্দোনেশিয়া ভিত্তিক একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ২২ মার্চে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য পাওয়া যায়। প্রচারিত দৃশ্য সম্পর্কে ভিডিওটিতে ইন্দোনেশিয়ার পতাকার সংযুক্তিসহ ইন্দোনেশিয়ান ভাষায় বলা হয়, ‘গাম্বীর স্টেশনের সামনের রাস্তাটি মিলিটারি যানবাহনে ভর্তি। হাজার হাজার টিএনআই গাড়ির একটি গাড়িবহর মোনাসের চারপাশের রাস্তাগুলি পূর্ণ করেছে।’

টিএনআই ও মোনাসের বিষয়ে অনুসন্ধান করলে জানা যায়, TNI (Tentara Nasional Indonesia) হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় সশস্ত্র বাহিনী, যা সেনাবাহিনী (TNI-AD), নৌবাহিনী (TNI-AL), এবং বিমান বাহিনী (TNI-AU) নিয়ে গঠিত। এবং Monas (Monumen Nasional) হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভ, যা রাজধানী জাকার্তায় অবস্থিত। এটি ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতার সংগ্রামের প্রতীক এবং একটি প্রধান পর্যটন আকর্ষণ।

এছাড়াও রিভার্স ইমেজ সার্চে ‘Gafar’ নামের একটি ফেসবুক পেজে উক্ত স্থানে গাড়িবহরের ভিন্ন একটি কোণ থেকে ধারণকৃত আরেকটি দৃশ্য গত ২৮ নভেম্বরে প্রচার হতে দেখা যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে ইন্দোনেশিয়ান ভাষায় বলা হয়, ‘পিটি পিন্ডাড কর্তৃক তৈরি সামরিক যানবাহন’।

Comparison : Rumor Scanner

পরবর্তীতে এ বিষয়ে উপরোল্লিখিত গাম্বীর স্টেশনের সূত্র ধরে গুগল ম্যাপে অনুসন্ধান করলে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তার গাম্বীর রেলওয়ে স্টেশনের নিকটবর্তী একটি স্থানের সাথে ‘Gafar’ কর্তৃক প্রচারিত গাড়িবহরের ভিডিও ধারণকৃত স্থানের সাদৃশ্য পাওয়া যায় এবং নিশ্চিত হওয়া যে উক্ত গাড়িবহরের দৃশ্যটি ইন্দোনেশিয়ার।

তবে, ইন্দোনেশিয়ায় উক্ত গাড়িবহরটির দৃশ্য ঠিক কবেকার এবং গাড়িবহরটির উদ্দেশ্য কী ছিল সে সম্পর্কে সুনিশ্চিতভাবে জানা সম্ভব হয়নি। তবে, আলোচিত দৃশ্যটি যে বাংলাদেশের নয় এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়।

সুতরাং, ইন্দোনেশিয়ার এক গাড়িবহরের দৃশ্যকে সম্প্রতি বাংলাদেশে জঙ্গি নির্মূলের উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনীর গাড়িবহরের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

পাঞ্জাবি পরিহিত দাঁড়িওয়ালা ব্যক্তির অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়, পাকিস্তানের 

সম্প্রতি, ‘খিলাফত কায়েম করতেছে। বাংলাদেশের তৌহিদি যৌনতা নামক জামাতি, হিজবুতি, হেফাজতিরা।’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পাঞ্জাবি পরিহিত দাঁড়িওয়ালা ব্যক্তির ব্যক্তির অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় বরং এটি পাকিস্তানের শেখুপুরা শহরের ভিডিও। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘Mansoor Ali Khan Fans’ নামক একটি এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে ২০২৪ সালের ২০ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির কিছু অংশের হুবহু মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, ‘একটি বেসরকারি স্কুলের অধ্যক্ষ আরসালান মহিলা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে অশ্লীল আচরণে জড়িত ছিলেন এবং গোপন ক্যামেরার সাহায্যে অশ্লীল ভিডিও তৈরি করে বিদেশে বিক্রি করতেন। মামলা দায়ের, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার’ (অনূদিত) 

উক্ত পোস্ট থেকে প্রাপ্ত কী-ওয়ার্ড সার্চ করে পাকিস্তানি গণমাধ্যম ‘ARY News’ এর ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর ‘School principal arrested for alleged abuse of teachers, students’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, পাকিস্তানের শেখুপুরার মির্জা ভিরকান এলাকায় বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগে এক স্কুলের অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া এবং হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ভুক্তভোগীদের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর এই মামলাটি প্রকাশ্যে আসে। ভিডিওগুলি প্রকাশের পর, বি-ডিভিশন স্টেশন পুলিশ শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। নূর-উল-হুদা স্কুলের অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত আরসালান নামে অভিযুক্তের কাছ থেকে পুলিশ কমপক্ষে ১৫০টি অশ্লীল ভিডিও উদ্ধার করেছে।

অর্থাৎ, উক্ত ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়। 

সুতরাং, পাকিস্তানের শেখুপুরা শহরে পাঞ্জাবি পরিহিত দাঁড়িওয়ালা ব্যক্তির অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিওকে বাংলাদেশের বলে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেশে ফেরা প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেননি তুলসী গ্যাবার্ড

সম্প্রতি ‘ব্রেকিং নিউজ, যমের মুখে ইউনূস! তুলসীর আশ্বাসে প্রধানমন্ত্রী হয়েই দেশের পথে বাংলার মমতাময়ী মা শেখ হাসিনা।’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে৷

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান তুলসী গ্যাবার্ড প্রচারিত ভিডিওতে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেশে ফিরবেন দাবি করে  কোনো মন্তব্য করেননি বরং, এটি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ের বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন প্রসঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুসের প্রশ্নোত্তর পর্বের ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘U.S. Department of State’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৫ সালের ২০ মার্চ প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির ৫০:১৯ থেকে শেষ পর্যন্ত অংশের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া গেছে ৷ তবে উক্ত ভিডিওর এই অংশে বা অন্য কোনো অংশে তুলসী গ্যাবার্ডকে শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেশে আসার প্রসঙ্গে কোনো কথা বলতে দেখা যায়নি।

Comparison: Rumor Scanner

পরবর্তীতে, একই ঘটনায়  মূলধারার গণমাধ্যম ইত্তেফাক এর ওয়েবসাইটে ২০২৫ সালের ২০ মার্চ ‘বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপকে স্বাগত জানালো যুক্তরাষ্ট্র’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১৯ মার্চ (বুধবার) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ের সময় এক সাংবাদিক বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গ্যাবার্ডের সাম্প্রতিক মন্তব্য ও অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে কিনা- এসব বিষয়ে জানতে চান। এসব প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নবনিযুক্ত মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেছেন, আমরা যেকোনো দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি সহিংসতা বা অসহিষ্ণুতার যেকোনো ঘটনার নিন্দা জানাই। এবং বাংলাদেশে সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই। এটাই আমরা পর্যবেক্ষণ করছি এবং এটাই আমরা প্রত্যাশা করি। এবং এটাই অব্যাহত থাকবে।

এছাড়া উক্ত বিষয়ে দেশের অন্যান্য গণমাধ্যমগুলোতে প্রতিবেদন (,,)  থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

অর্থাৎ, তুলসী গ্যাবার্ড শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রীর হয়ে দেশে ফেরার প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেননি। 

সুতরাং, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন প্রসঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুসের প্রশ্নোত্তর পর্বের দৃশ্যকে শেখ হাসিনার দেশে ফিরে আসা প্রসঙ্গে তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

“এই মুহূর্তে দরকার সেনাবাহিনী সরকার” শীর্ষক স্লোগানের এই ভিডিওটি পুরোনো

সম্প্রতি, “এই মূহুর্তে দরকার সেনাবাহিনী সরকার” শীর্ষক স্লোগানে গত ২১ মার্চের বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিও দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “এই মুহূর্তে দরকার সেনাবাহিনী সরকার” শীর্ষক স্লোগানে  গত ২১ মার্চের বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিও দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসলে সাম্প্রতিক সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভিডিওটি ২০২৪ সালের আগস্ট মাস থেকে ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অফ বাংলাদেশ এর সামনে এমন কোনো মিছিলের তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওর কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘Kazi Mazidul’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ২৮ আগস্ট “এই মুহূর্তে দরকার,সেনাবাহিনী সরকার ” সময়ের সেরা স্লোগান ছিল 05-08-2024 তারিখের রাজপথে। শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটি ২৮ আগস্ট আপলোড করা হলেও এর বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে এটি ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের ভিডিও।

ভিডিওটির শুরুর দিকে রোডের অপরপাশে Civil Aviation Authority of Bangladesh (CAAB)-এর সদরদপ্তরের নতুন বিল্ডিংটি দেখতে পাওয়া যায়। 

Indicated by Rumor Scanner

পরবর্তীতে, সাম্প্রতিক সময়ে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অফ বাংলাদেশ এর সামনে এমন কোনো বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে কিনা প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্র কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, ভিডিওটির প্রকৃত সময়কাল নিশ্চিত হওয়া না গেলেও এটা নিশ্চিত যে ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়, ভিডিওটি পুরোনো।

সুতরাং, ২০২৪ সালের পুরোনো ভিডিও প্রচার করে গত ২১ মার্চ এই মূহুর্তে দরকার সেনাবাহিনী সরকার শীর্ষক বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিও দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ভারত থেকে শেখ হাসিনার ভাষণের নয়, ভিডিওটি ২০২৪ সালের জাতীয় মৎস সপ্তাহের 

২০২৪ সালের ০৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে অবস্থান করছেন। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ‘২০/৩/২০২৫৷ জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ প্রথম বারের মতো ভারত থেকে সরাসরি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশ্যে প্রথম বারের মতো ভারত থেকে সরাসরি ভাষণ দিলেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ২০২৪ সালের ভিন্ন ঘটনায় ভাষণের ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালের ০৭ জানুয়ারি প্রকাশিত ‘জাতির উদ্দেশে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’ শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির ০০:০২ থেকে ০০:০৭ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটি আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে, যেখানে “জাতির উদ্দেশ্য ভাষণ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সরাসরি চলে যাচ্ছি তার বক্তব্যে” বলা হয়েছে৷ তবে ভিডিওটির বাকি অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল নেই৷ 

Comparison: Rumor Scanner 

এছাড়া, ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম দীপ্ত টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ৩১ জুলাই ‘ধ্বং’স’য’জ্ঞ চালিয়ে কে কী অর্জন করল; প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির পারিপার্শ্বিকতার মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটি থেকে জানা যায়,  এটি সেদিন ‘জাতীয় মৎস সপ্তাহ ২০২৪’ উদ্বোধনকালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের ভিডিওচিত্র। উক্ত বক্তব্যে তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনে হতাহতের ঘটনা এবং এ বিষয়ে তদন্ত নিয়ে কথা বলেন। 

পরবর্তীতে, ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ৩১ জুলাই ‘স্বজন হারানোর বেদনা আমি বুঝি: প্রধানমন্ত্রী’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, মূল ভিডিওটির পেছনের অংশকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তা ব্লার করে, শেখ হাসিনার দুইপাশে ভারতের পতাকা যুক্ত করে ও ‘BREAKING NEWS দিল্লী থেকে জাতির উদ্দ্যেশ্যে যা বললেন শেখ হাসিনা!’ লিখিত অংশটি যুক্ত করার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই ভিডিও ব্যবহার করে একইরকম দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হলে সেসময় রিউমর স্ক্যানার টিম দাবিটিকে বিভ্রান্তিকর হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

সুতরাং, ভারত থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণের ভিডিও দাবিতে ২০২৪ সালে জাতীয় মৎস সপ্তাহ উদ্বোধনে তার ভাষণের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

নিজের ফাঁসি চেয়ে বক্তব্য দেননি শেখ হাসিনা, ডিপফেক ভিডিও ভাইরাল

সম্প্রতি, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে শেখ হাসিনা সদৃশ এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, “আমি এক মহা খুনি। আজ আমি মতিউর রহমান রেন্টুর সাথে গলা মিলিয়ে বলতে চাই, আমার ফাঁসি চাই। আমি চাই রাস্তার মোড়ে আমাকে প্রকাশ্যে ফাঁসি কাস্টে ঝুলিয়ে হত্যা করা হোক। এই জাতিকে পাপমুক্ত করা হোক।”

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নিজের ফাঁসির দাবিতে শেখ হাসিনার কথিত বক্তব্যের ভিডিওটি আসল নয়। বরং, ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২০২৩ সালে ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারের ভিডিও বিকৃত করে এটি তৈরি করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে একাত্তর টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২ মে ‘ভয়েস অব আমেরিকাকে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার’ প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। এই ভিডিওতে শেখ হাসিনার পোশাক ও আনুষঙ্গিক বিষয়ের সঙ্গে আলোচিত ভিডিওটির মিল লক্ষ্য করা যায়। তবে মূল সাক্ষাৎকারের সম্পূর্ণ ভিডিওতে শেখ হাসিনা নিজের ফাঁসির দাবিতে কোনো বক্তব্য দেননি।

২০২৩ সালের ১ মে এনটিভির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কিন গণমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগে একটি সাক্ষাৎকার দেন। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বিএনপি ও তার মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ও সাংবাদিক হয়রানি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। তবে, নিজের ফাঁসির দাবিতে কোনো বক্তব্যের উল্লেখ প্রতিবেদনে পাওয়া যায়নি।

২০২৩ সালের ২ মে যুগান্তরের ওয়েবসাইটেও এই সাক্ষাৎকারের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, তবে সেখানেও শেখ হাসিনার এমন কোনো মন্তব্যের উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে ভিডিওতে থাকা কণ্ঠের সঙ্গে শেখ হাসিনার স্বাভাবিক কণ্ঠের অমিল, কথা বলার সময় মুখের অভিব্যক্তি ও বাচনভঙ্গি কৃত্রিম মনে হওয়াসহ আরও কিছু অসংগতি শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার। এসব লক্ষণ সাধারণত এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি ভিডিওতে দেখা যায়। ফলে, এটি একটি ডিপফেক ভিডিও বলে প্রতীয়মান হয়।

ডিপফেক হল বাস্তবসম্মত দেখতে কিন্তু নকল বা কিছুটা পরিবর্তিত কন্টেন্ট যা ভিডিও বা অডিওর উপাদান সম্পাদনা করে তৈরি করা হয়। ডিপফেক ভিডিওতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআইI) প্রযুক্তি ব্যবহার করে একজন ব্যক্তির মুখের অবয়ব বা ভয়েসকে অন্য কারোর সাথে বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। এই প্রযুক্তির সহায়তায় একজন ব্যক্তির এমন কিছু ভিডিও বা অডিও কন্টেন্ট তৈরি করা সম্ভব যা তিনি নিজে বলেননি বা করেননি।

সুতরাং, নিজের ফাঁসির দাবিতে শেখ হাসিনার কথিত বক্তব্যের ভিডিওটি এডিটেড বা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

হামজা চৌধুরীর গোলের দৃশ্য দাবিতে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার উইলিয়ানের গোলের দৃশ্য প্রচার

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন ফুটবলারের গোল করার একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওটিতে বাংলাদেশি ফুটবলার হামজা চৌধুরীর গোল করার দৃশ্য প্রদর্শিত হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ২৬ লক্ষ বার দেখা হয়েছে এবং ১ লক্ষ ২৫ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটিতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশি ফুটবলার হামজা চৌধুরীর গোলের দৃশ্যের নয় বরং, ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার উইলিয়ানের গোল করার দৃশ্য আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ‘FootyCentric’ নামের একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার উইলিয়ানের গোল করার দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

এছাড়াও, ‘osscar.18p’ নামক ফুটবল বিষয়ক নানা ভিডিও ফুটেজ প্রচার করা আরেকটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টেও গত ১৮ ফেব্রুয়ারিতে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার উইলিয়ানের গোল করার দৃশ্য দাবিতে আলোচিত ভিডিওটি প্রচার হতে দেখা যায়।

তাছাড়া, প্রচারিত ভিডিওটির প্রথম ফুটেজে গোলের মূহুর্তের ধারাভাষ্যে ধারাভাষ্যকারকেও ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার উইলিয়ানের নাম উচ্চারণ করতে শোনা যায়।

পরবর্তী অনুসন্ধানে, প্রচারিত ভিডিওটি লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে উল্লিখিত ফুটবলার নানা সময়ে ২২ এবং ১০ নাম্বার জার্সি পরিধান করে গোল করেছেন। অতঃপর, হামজা চৌধুরীর ক্যারিয়ারে পরিধেয় জার্সি নাম্বারের বিষয়ে অনুসন্ধান করলে ফুটবলারদের ট্রান্সফার ও ডাটা সংক্রান্ত প্ল্যাটফর্ম ট্রান্সফারমার্কেট থেকে জানা যায়, হামজা চৌধুরী তার ক্যারিয়ারে ২৪,১৭,৩,২০,৩৮ সহ নানা সংখ্যার জার্সি পরিধান করলেও কখনও ১০ বা ২২ নাম্বার জার্সি পরিধান করেননি। অপরদিকে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার উইলিয়ান ১০ এবং ২২ নাম্বার জার্সি একাধিকবার পরিধান করে খেলেছেন।

এছাড়াও, প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রায় ২০ টি গোলের ফুটেজ দেখানো হয়েছে। কিন্তু, একই ওয়েবসাইটের তথ্যানুসারে হামজা চৌধুরী তার পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ারে মোট ৩টি গোল করেছেন, তাই তার প্রায় ২০টি গোল করার ফুটেজ থাকা সম্ভব নয়।

সুতরাং, ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার উইলিয়ানের গোল করার দৃশ্যকে বাংলাদেশি ফুটবলার হামজা চৌধুরীর গোলের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র