পরিবারের অমতে দুই তরুণীর পালিয়ে বিয়ে করার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় 

সম্প্রতি, ‘মেনে নেয়নি পরিবার, পালিয়ে বিয়ে করলেন দুই তরুণী’ শীর্ষক শিরোনামে একটি সংবাদ বাংলাদেশের দাবিতে বেসরকারি টেলিভিশন “সময় টেলিভিশন” এর একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

দুই তরুণীর পালিয়ে বিয়ে

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পরিবার মেনে না নেওয়ায় দুই তরুণীর পালিয়ে বিয়ে করার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং ঘটনাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদহের।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত পোস্টগুলোতে ব্যবহৃত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। সময় টিভি’র সূত্র ধরে সময় টিভির ফেসবুক পেজে আলোচিত ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Somoy Tv Facebook Page 

উক্ত গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজে ফটোকার্ড নিয়ে প্রচারিত পোস্টের ক্যাপশনে এ সম্পর্কিত একটি  প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদহের দুই তরুণীর মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে প্রথম আলাপ হয়। ধীরে ধীরে সেই আলাপ বেশ গাঢ় হতে থাকে। দু’জন একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। কিন্তু বিষয়টি মেনে নেয়নি তাদের পরিবার। এরপর পরিবারের মতের বিরুদ্ধে গিয়েই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন ওই দুই তরুণী। 

এছাড়া একই বিষয়ে শিরোনামে ভারতের কথা উল্লেখ না করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আরও কিছু গণমাধ্যম। প্রতিবেদন দেখুন

প্রতিবেদনগুলোর শিরোনামে ঘটনাটির স্থানের নাম উল্লেখ না করায় বিষয়টি নিয়ে নেটিজেনদের মনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। বিস্তারিত প্রতিবেদন না পড়েই তারা বিষয়টিকে বাংলাদেশের মনে করে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন।

Comment Collage by Rumor Scanner

পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম  Hindustan Times বাংলা এর ওয়েবসাইটে গত ২৫ জানুয়ারি “মেনে নেয়নি পরিবার, প্রেমের টানে মন্দিরে একে অপরকে বিয়ে করল মালদার ২ যুবতী” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পপি মণ্ডল এবং প্রতিমা বিশ্বাস নামের ভারতীয় দুই তরুণী  দীর্ঘদিন ধরেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছেন। বিয়ে করতে চাইলে বিষয়টি তাদের বাড়ি থেকে না মেনে নেওয়ায় পালিয়ে বিয়ে করেন তারা। 

অর্থাৎ, পরিবার মেনে না নেওয়ায় দুই তরুণীর পালিয়ে বিয়ে করার ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়। তবে এ সম্পর্কিত খবরের শিরোনামে স্থানের নাম না উল্লেখ করায় ঘটনাটি বাংলাদেশের ভেবে নেটিজেনরা বিভ্রান্ত হয়েছেন।

মূলত, সম্প্রতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদহের দুই তরুণীর মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়। তবে, এই বিয়েতে মন ছিলো না পরিবারের। পরবর্তীতে পরিবারের অমতেই পালিয়ে বিয়ে করেন তাঁরা। উক্ত বিষয়ে বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনামে ঘটনাটির স্থানের নাম উল্লেখ না করে সংবাদ প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা বিষয়টি বাংলাদেশের ঘটনা মনে করে ফেসবুকে প্রচার করেন।

উল্লেখ্য, পূর্বেও ভারতের ঘটনা বাংলাদেশের দাবিতে প্রচারিত হলে তা নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে

সুতরাং, পরিবার মেনে না নেওয়ায় ভারতের দুই তরুণীর পালিয়ে বিয়ে করার ঘটনাটি স্থানের নাম উল্লেখ না করে বাংলাদেশের ঘটনা দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র 

আরও পড়ুন

spot_img