Home Blog Page 349

পাতিলে থাকা এই শিশুটির পরিবারের সকল সদস্যের মৃত্যুর তথ্যটি মিথ্যা 

0

ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বাংলাদেশের কয়েকটি জেলায় আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বড় আকৃতির একটি পাতিলের ভেতর রাখা এক শিশুর ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই ছবিটি প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, কুমিল্লার বুড়িচংয়ের খারাতাইয়া এলাকার এই শিশুটির পরিবারের সব সদস্য মারা গেছে। শুধু আধমরা অবস্থায় এই শিশুটি জড়োসড়ো হয়ে আছে একটা পাতিলের মধ্যে।

পাতিলে থাকা এই শিশুটি

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত শিশুটির পরিবারের সকল সদস্যের মৃত্যুর দাবিটি সত্য নয় বরং শিশুটির পরিবার সম্পূর্ণ সুস্থ আছে বলে ছবিটির ফটোগ্রাফার এবং শিশুটির একজন নিকটাত্মীয় রিউমর স্ক্যানার টিমকে নিশ্চিত করেছেন।

অনুসন্ধানের মাধ্যমে ‘Nazmul Hasan Topon’ নামের একটি ফেসবুক আইডিতে গত ২৩ আগস্ট দুপুর ৩ টা ৫৯ মিনিটে প্রকাশিত একই ছবি সম্বলিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। ওই পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ছবিটি তিনি নিজে তুলেছেন। পরবর্তীতে, ২৩ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টা ২৩ মিনিটে পোস্টের কমেন্টে তিনি জানান, “কেউ গুজবে কান দেবেন না, বাচ্চা ও তার পরিবার সুস্থ আছে। ছবিটা আমার নিজ মোবাইলে আমি নিজে তুলেছি।” তিনি প্রমাণ হিসেবে ছবিটির মেটাডাটাও শেয়ার করেন, যেখানে দেখা যায়, ছবিটি তিনি ২৩ আগস্ট দুপুর ২টা ২৭ মিনিটে তুলেছিলেন।

এই তথ্যগুলো নিশ্চিত করার জন্য, রিউমর স্ক্যানার টিম নাজমুল হাসান তপনের সাথে যোগাযোগ করে। তিনি জানান, “আমি যখন ছবিটি তুলেছিলাম, তখন শিশুটির মা তার সাথে ছিলেন। ছবির পাশে যে লাগেজটি দেখা যাচ্ছে, সেটির সাথে দাঁড়িয়ে থাকা নারীও শিশুটির পরিবারের একজন সদস্য ছিলেন। বন্যাকবলিত এলাকায় পানির স্রোত অত্যন্ত প্রবল ছিল, যদিও শিশুটিকে স্পিডবোটের সাহায্যে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নিরাপত্তার জন্য তাকে একটি পাতিলে রাখা হয়েছিল। ছবিটি তোলার সময় আমি শিশুটির পরিবারের সাথে সরাসরি কথা বলার সুযোগ পাইনি। এটি একটি ছোট ব্রিজের উপর থেকে তোলা হয়েছিল, যেখানে থেকে মানুষদের ট্রাকে করে বুড়িচংয়ের মূল বাজার বা আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।”

আরও অনুসন্ধানে, ‘Abdul Hai’ নামের একটি ফেসবুক আইডিতে একই ছবি সহ একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, “ছবির শিশুটি আমার ভাগ্নির মেয়ে, সম্পর্কে আমার নাতনি। ওরা এতদিন আমার বড় বোনের বাড়িতে ছিল। আজ শ্বশুর বাড়ির লোকেরা তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আসে। স্রোতের কারণে বড় আপা তাকে একটি পাতিলে করে উঁচু জায়গায় নিয়ে যান। তারপর এক উৎসুক ব্যক্তি এই ছবিটি তোলে। আর বাকি গল্প তো আপনারা জানেন। বাচ্চা এবং তার পুরো পরিবার সুস্থ আছে আলহামদুলিল্লাহ।”
আমরা আব্দুল হাইয়ের সাথেও যোগাযোগ করি। তিনি জানান, ছবির শিশুটির নাম মাশফিকা মাহবুব এবং শিশুটির পরিবার সম্পূর্ণ সুস্থ আছে।

সুতরাং, পাতিলে থাকা আলোচিত শিশুটির পরিবারের সকল সদস্যের মৃত্যুর তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

গোপালগঞ্জে টমেটোর বাম্পার ফলন দাবিতে যমুনা টিভি কোনো ফটোকার্ড প্রচার করেনি 

0

সম্প্রতি, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সরকার প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার দেশত্যাগের বিষয়টিকে জোরপূর্বক দাবি করে দ্রুত তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে গত ১০ আগস্ট গোপালগঞ্জে বিক্ষোভ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। সেসময় তাদের সাথে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষও হয়। এর প্রেক্ষিতে যমুনা টিভি ‘এবার গোপালগঞ্জে টমেটোর বাম্পার ফলন’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ফটোকার্ড প্রচার করেছে দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

গোপালগঞ্জে টমেটোর

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ফটোকার্ড দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, যমুনা টিভি ‘এবার গোপালগঞ্জে টমেটোর বাম্পার ফলন’ শীর্ষক শিরোনামে বা তথ্যে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রচার করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যমুনা টেলিভিশনের ফটোকার্ড নকল করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে যমুনা টিভির আদলে তৈরি আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এতে ফটোকার্ডটি প্রকাশের তারিখ ১১ আগস্ট ২০২৪ উল্লেখ করা রয়েছে। উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে যমুনা টিভির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ পর্যালোচনা করেও ১১ আগস্ট আলোচিত শিরোনামের প্রচারিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও যমুনা টিভির ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেল পর্যালোচনা করেও এমন কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে গত ১২ আগস্ট ‘যমুনা টিভি এমন কোনো সংবাদ প্রচার করেনি; গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না।’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। যেটিতে ‘এবার গোপালগঞ্জে টমেটোর বাম্পার ফলন’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত আলোচিত ফটোকার্ডটিকে যমুনা টিভির পক্ষ থেকে ভুয়া বলে জানানো হয়। 

সুতরাং, ‘এবার গোপালগঞ্জে টমেটোর বাম্পার ফলন’ শীর্ষক শিরোনামে যমুনা টিভির লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Jamuna Television Facebook Page
  • Jamuna Television Facebook Page Post
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহকে জড়িয়ে যমুনা টিভির নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহকে জড়িয়ে ‘হাসনাত আব্দুলাহ মামুনুল হকের প্রথম স্ত্রীর বড় ছেলেঃ দাবি মুফতি আবদুলাহর’ শীর্ষক শিরোনামে হাসনাত আব্দুল্লাহ ও মাওলানা মামুনুল হকের ছবি যুক্ত বেসরকারি ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম যমুনা টেলিভিশন এর লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহকে

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন- এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়,  ‘হাসনাত আব্দুলাহ মামুনুল হকের প্রথম স্ত্রীর বড় ছেলেঃ দাবি মুফতি আবদুলাহর’ শীর্ষক শিরোনামে মূলধারার ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম যমুনা টিভি কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যমুনা টিভির লোগো ব্যবহার করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষনে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে যমুনা টিভির লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২৭ আগস্ট, ২০২৪ তারিখের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে যমুনা টিভির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রচারিত সংবাদ ও ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও যমুনা টিভি’র ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা অন্য কোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির সপক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে, যমুনা টিভির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে আজ (২৮ আগস্ট) আলোচিত ফটোকার্ডের বিষয়ে একটি পোস্ট পাওয়া যায়। আলোচিত ফটোকার্ডটি ভুয়া উল্লেখ করে গণমাধ্যমটি জানায়, ‘যমুনা টিভি এমন কোনো সংবাদ প্রচার করেনি; গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না’

সুতরাং, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহর পারিবারিক পরিচয় নিয়ে যমুনা টিভির নামে প্রচারিত এই ফটোকার্ডটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

  • Jamuna Television: Facebook Page Post
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদিকে জড়িয়ে প্রথম আলোর নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

0

সরকার প্রধানের পদ ও দেশ ছেড়ে গত ৫ আগস্ট ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। এরই প্রেক্ষিতে “মা হতে চলেছেন শেখ হাসিনা। মোদির মুখে মুচকি হাসি” শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো’র ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদিকে

ফেসবুক পোস্ট এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, “মা হতে চলেছেন শেখ হাসিনা। মোদির মুখে মুচকি হাসি” শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে প্রথম আলো কোন ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে প্রথম আলোের ডিজাইন সম্বলিত আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত প্রথম আলোর আদলে তৈরি ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণে ফটোকার্ডটি প্রকশের তারিখ ১৩ আগস্ট উল্লেখ পাওয়া যায়। তবে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে ১৩ আগস্ট এ সংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রথম আলোর ওয়েবসাইটইউটিউব চ্যানেলেও এমন কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া, প্রথম আলো তাদের ফেসবুক পেজে গত ৮ আগস্ট এক পোস্টের মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটিকে ভুয়া বলে নিশ্চিত করেছে। পাশাপাশি, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, “মা হতে চলেছেন শেখ হাসিনা। মোদির মুখে মুচকি হাসি” শীর্ষক তথ্য বা শিরোনামে প্রথম আলো’র নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া।

তথ্যসূত্র

ধানমন্ডিতে গণজমায়াতের দৃশ্যটি শিক্ষার্থীদের, বঙ্গবন্ধুর ভক্তদের নয়

ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনের মুখে গত ০৫ আগস্ট  প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর ০৮ আগস্ট দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় এসে ১৫ আগস্ট এর জাতীয় ছুটি বাতিল করে। অন্যদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় দেশের সাধারণ জনগন ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ১৫ আগস্ট শোক দিবস পালনের আহ্বান জানান। জয়ের এই আহ্বানকে প্রতিবিপ্লবের ষড়যন্ত্র দাবি করে ১৫ আগস্ট রাজপথে থাকার ঘোষণা দেয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এরই অংশ হিসেবে ১৪ আগস্ট সন্ধ্যার পর থেকেই ধানমন্ডি-৩২ নাম্বারসহ আশপাশের এলাকায় অবস্থা নেয় প্রতিবাদী ছাত্র-জনতা। এসবের মধ্যে ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করে লাখ লাখ মুজিবপ্রেমী ১৫ আগস্ট প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ধানমন্ডি ৩২ এ জমায়েত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়। 

১৫ আগস্ট ধানমন্ডিতে

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ১৫ আগস্ট লাখ লাখ মুজিবপ্রেমীর ধানমন্ডি ৩২ এ জমায়েত হওয়ার দৃশ্য নয় বরং ১৪ আগস্ট রাতে ধানমন্ডি ২৭ এ রাপা প্লাজার সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ এর কর্মসূচির দৃশ্য। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে ভিডিওতে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ এর একটি লোগো পরিলক্ষিত হয়। উক্ত সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, শেরপুর জেলা’ নামের একটি ফেসবুক পেজে ‘১৫ আগস্ট প্রথম প্রহরে ধানমন্ডি-২৭, রাপা প্লাজার সামনে থেকে…’ শীর্ষক শিরোনামে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত একই ভিডিওটি (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে Taisir Khan নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টেও একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর ক্যাপশনে ভিডিওটি ১৪ আগস্ট রাত ১০ টায় ধানমন্ডি ২৭ এ রাপা প্লাজার সামনে থেকে ধারণকৃত বলে উল্লেখ করা হয়। অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি ১৫ আগস্ট এর নয়, এটি ১৪ আগস্ট রাতের। 

Screenshot collage: Rumor Scanner

প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধান করে, গত ১৪ আগস্ট দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যম সময় টিভি’র ‘শাহবাগ থেকে ধানমন্ডি অভিমুখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পদযাত্রা’ শিরোনামে একটি সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত সংবাদের বরাতে জানা যায়, ১৪ আগস্ট  বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা শাহবাগ থেকে ধানমন্ডি ২৭ এর রাপা প্লাজার অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন। এছাড়াও, প্রথম সারির গণমাধ্যম মানবজমিন এর ১৫ আগস্ট প্রকাশিত ‘আন্দোলনকারীদের দখলে ধানমন্ডির সড়ক’ শিরোনামে একটি সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত সংবাদের বরাতে জানা যায়, ১৪ আগস্ট মধ্যরাত থেকে ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা ধানমন্ডি ৩২ ও এর আশেপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়েছে।

পরবর্তীতে, প্রচারিত ভিডিওতে থাকা দৃশ্যের সূত্র ধরে ঐ স্থানের বিস্তারিত জানার চেষ্টা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। গুগল ম্যাপের সাহায্যে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওতে থাকা BHUIYAN ACADEMY ধানমন্ডি ২৭ নম্বরের রাপা প্লাজার রাস্তার বিপরীতে অবস্থিত। অর্থাৎ প্রচারিত ভিডিওটি ধানমন্ডি ৩২ এরও নয় বরং এটি ২৭ এর।

Screenshot collage: Rumor Scanner

এছাড়াও, ১৪ আগস্ট সন্ধ্যায় ধানমন্ডি ৩২ এ মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হলেও দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যমগুলোতে ১৫ আগস্ট ভোরে ধানমন্ডি ৩২ এ বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য লাখ লাখ মানুষের সমাগমের বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। বরং ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বেশ কয়েক ব্যক্তি মারধরের শিকার হন বলে জানা গেছে। 

সুতরাং, গত ১৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ধানমন্ডি ২৭ এর গণজমায়াতের ভিডিওকে ১৫ আগস্ট প্রথম প্রহরে ধানমন্ডি ৩২ এ বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে লাখো মানুষের জমায়েতের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মানিকগঞ্জে সর্বজনীন দুর্গামন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনাটি পুরোনো

0

গতকাল (২৭ আগস্ট) মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার ভাদিয়াখোলা গ্রামের সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের নবনির্মিত প্রতিমা ভাংচুর হয়েছে দাবিতে কিছু ছবিসহ একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

প্রতিমা ভাঙচুরের

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার ভাদিয়াখোলা গ্রামের সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ২০২২ সালের ঘটনা সাম্প্রতিক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত হচ্ছে।

অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো’র ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট “মানিকগঞ্জে মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর, অপরাধীদের খুঁজছে পুলিশ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনের সাথে সংযুক্ত ছবি গুলোর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবি গুলোর সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

Screenshot Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৫ আগস্ট রাতে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ভাদিয়াখোলা বাজার সর্বজনীন দুর্গামন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এর পর পুলিশ ও প্রশাসনের উপস্থিতিতে কারিগরেরা প্রতিমাগুলোর ভাঙা অংশ মেরামত করেন। 

অনলাইন গণমাধ্যম বিডিনিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

তবে অনলাইন গণমাধ্যম প্রবাসীর দিগন্ত এর ওয়েবসাইটে গত ১০ আগস্ট “শিবালয়ে কালী মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুর, আতংকে দুই শতাধিক হিন্দু পরিবার” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ৯ আগস্ট দিবাগত রাতে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের পাড়াগ্রাম বারোয়ারী কালী মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুরের অভিযোগ করে স্থানীয়রা।

এছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ভাদিয়াখোলা বাজার সর্বজনীন দুর্গামন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনার বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যমে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ২০২২ সালে মানিকগঞ্জে সর্বজনীন দুর্গামন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা সাম্প্রতিক দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ব্যারিস্টার সুমনের পুরোনো ভিডিওকে বিকৃতভাবে সাম্প্রতিক সময়ের ভিডিও দাবিতে প্রচার

গত জুলাই মাসের শুরুতে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন শেষ পর্যন্ত সরকার পতনের আন্দোলনে রুপ নেয়। গণআন্দোলনের মুখে গত ০৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। তার দেশ ছাড়ার আগে ও পরে তার সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, এমপি এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা দেশ ছেড়েছেন বলে জানা যায়। এরই প্রেক্ষিতে, হবিগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের ‘আওয়ামিলীগের পাপের জন্য দেশ ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি’ ইউটিউবে শীর্ষক থাম্বনেইলে উল্লেখপূর্বক একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। এছাড়াও, উক্ত ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘আমেরিকা থেকে একি বললেন ব্যারিস্টার সুমন’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচার করা হয়েছে।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন- এখানে (আর্কাইভ)

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্ট

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্যারিস্টার সুমনের নামে প্রচারিত ভিডিওটি গত ০৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পরবর্তী সময়ের নয় বরং, ভিডিওটি গত এপ্রিল মাস থেকে ইন্টারনেটে পাওয়া যাচ্ছে। যা বিকৃতভাবে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত দাবির সত্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। ভিডিওটির তথ্যমতে, ব্যারিস্টার সুমন নিউইয়র্কে বসে মাধবপুর এবং চুনারুঘাট মানুষদের ফেসবুকে লেখালেখির কথা উল্লেখ করে বলেন, অতীতে বাপ-চাচাদের পাপের শাস্তি বর্তমান জেনারেশনকে ভোগ করতে হয়। এবং নিজেকে অনেক জবাবাদিহি করতে হয় উল্লেখ করে বলেন, আমি জবাবদিহি করতে প্রস্তুত। এছাড়াও প্রয়োজনে মাধবপুর-চুনারঘাটে মহাসমাবেশ ডাকার কথা বলেন তিনি এবং এই সমাবেশের মাধ্যমে তিনি হবিগঞ্জের জনসাধারণকে একত্রিত হওয়ার কথা বলবেন বলে নিজের আশা ব্যাক্ত করেন। মহাসমাবেশ করে নেত্রীর (শেখ হাসিনা) কাছে সংবাদ পৌঁছানোর জন্য উক্ত এলাকার আরও তিনজন এমপি’র প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন , চলেন আমরা একত্রিত হয়। এবং ভিডিও’র শেষে নিজের এলাকার মানুষদের উদ্দেশ্যে করে বলেন, আপনারা এইটার জন্য যে কষ্ট করতেছেন তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করি। 

তবে, ভিডিওটিতে ব্যারিস্টার সুমন কি কথা বলেছেন তা বুঝা যায়নি।

পরবর্তীতে, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও’র কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘Barrister Syed Sayedul Haque Suman’ এর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে গত ০৩ এপ্রিল ‘বিদ্যুতের লোড সিডিং এর ব্যাপারে এম পি হিসাবে আমার জবাবদিহিতা।’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ৫মিনিট ৩০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। যার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটি থেকে ছোট ছোট ক্লিপ নিয়ে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।

ভিডিওটি থেকে জানা যায়, রমজান মাসে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে মাধবপুর ও চুনারঘাটের জনসাধারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হলে ব্যারিস্টার সুমন তাঁর সংসদীয় এলাকার জনগণের প্রতি ফেসবুকে ভিডিও বার্তা দিয়ে লোডশেডিং কমানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং লোডশেডিংয়ের সমস্যার সমাধান না হলে তিনি মহাসমাবেশের ডাক দিবেন বলেও হুশিয়ারী দেন। 

অর্থাৎ, এটা নিশ্চিত যে ভিডিওটি ০৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পরবর্তী সময়ের নয়। তবে ব্যারিস্টার সুমন বর্তমানে কোথায় আছেন সে সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য জানা যায়নি।

উল্লেখ্য, ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন গত ১৯ আগস্ট ‘আপনাদেরকে বুঝাতে না পারাটাই আমার ব্যর্থতা।’ শীর্ষক শিরোনামে ফেসবুকে একটি ভিডিও বার্তা দেন। ভিডিওটিতে তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনে তার অবস্থানের কথা তুলে ধরেন। এছাড়া, গত ২১ আগস্ট সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়েও ফেসবুকে ভিডিও বার্তা দেন, ভিডিওটিতে তিনি বন্যার্তদের পাশে দাড়ানোর জন্য সকলের নিকট আহ্বান জানান।

সুতরাং, সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের পুরোনো ভিডিওকে গত ০৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পরবর্তী সময়ে আমেরিকায় গিয়ে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

সাম্প্রতিক বন্যায় ফেনীতে নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী টিম পৌঁছানোর দৃশ্য দাবিতে পুরোনো ছবি প্রচার 

0

সম্প্রতি অতি বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের ফলে দেশের বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এই বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর করুণ চিত্র তুলে ধরে সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এর মধ্যে ফেনীর বন্যা কবলিত এলাকায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী টিম পৌঁছানোর দৃশ্য দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেনীতে নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী টিম

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটি বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বন্যায় ফেনীতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী টিম পৌঁছানোর দৃশ্য নয় বরং এটি ২০২১ সালে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর যৌথ নৌ মহড়ার সময় তোলা ছবি। 

অনুসন্ধানে ছবি ও ভিডিও হোস্টিং প্লাটফর্ম ফ্লিকারে ২০১১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ছবির সাথে প্রচারিত ছবিটি মিলে যায়। উক্ত ছবির বিস্তারিত অংশ থেকে জানা যায়, ছবিটি বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর প্রথম নৌ নিরাপত্তা সংক্রান্ত যৌথ মহড়া ‘কোঅপারেশন অ্যাফ্লোট রেডিনেস অ্যান্ড ট্রেইনিং (সিএআরএটি-ক্যারাট) এর সময় তোলা। ২০১১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম থেকে ছবিটি তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর গণযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড্যানিয়েল বার্কার। 

Screenshot collage: Rumor Scanner

বিডিনিউজ২৪ এর ২০১১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ‘যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ যৌথ নৌ মহড়া শুরু’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত সংবাদের বরাতে জানা যায়, বহু বছর ধরে মার্কিন নৌবাহিনী বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ‘ক্যারাট’ যৌথ সামরিক মহড়ার চালিয়ে আসলেও ২০১১ সালেই বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো এতে অংশ নেয়। আটদিনব্যাপী উক্ত মহড়ায় সমুদ্র ও উপকূল উভয় স্থানে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ছিলো।

এছাড়াও, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর সর্বশেষ ‘ক্যারাট’ যৌথ সামরিক মহড়া চলতি বছরের এপ্রিলে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়।

সুতরাং, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ‘ক্যারাট’ যৌথ সামরিক মহড়ার পুরোনো ছবিকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বন্যায় ফেনীতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী টিম পৌঁছানোর দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সংগীতশিল্পী ইমরান মাহমুদুলের মৃত্যুর গুজব

সম্প্রতি, শর্ট ভিডিও প্লাটফর্ম টিকটকে সংগীতশিল্পী ইমরান মাহমুদুল গাড়ি এক্সিডেন্টে মারা গেছেন দাবিতে ইমরান মাহমুদুলের ছবি যুক্ত একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

ইমরান মাহমুদুলের মৃত্যুর

aponmia312’ নামক টিকটক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন- এখানে (আর্কাইভ)। এই পর্যন্ত টিকটকে ভিডিওটি দেখা হয়েছে ২ লক্ষের অধিক বার।

উক্ত টিকটক অ্যাকাউন্ট থেকে ইমরান মাহমুদুল মারা গেছেন দাবিতে আরও একটি ভিডিও দেখুন- এখানে (আর্কাইভ) । এই ভিডিওটি এখন পর্যন্ত দেখা হয়েছে প্রায় ৫ হাজারের অধিক বার।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সংগীতশিল্পী ইমরান মাহমুদুল মারা যাওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই গুজব ছড়ানোর উদ্দেশ্যে ইমরান সম্পর্কে আলোচিত দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে মূলধারার গণমাধ্যমে আলোচিত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। ইমরান দেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী তাই, স্বাভাবিকভাবেই এমন কিছু ঘটে থাকলে তা সংবাদ মাধ্যমগুলোতে প্রকাশ পাবে। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমে এমন কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে, ইমরান মাহমুদুলের ফেসবুক পেজ ‘Imran Mahmudul’ পর্যবেক্ষণ করে গত ২৬ আগস্ট আপলোডকৃত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটির ওপরে ‘লক্ষীপুরের উদ্দেশ্যে আজ রাতে রওনা হচ্ছি ইন শা আল্লাহ’ ও ‘আবারও বলছি যাদের ত্রাণ দেবেন তাদের ছবি অথবা ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে আপলোড দেবেন না’ লেখা রয়েছে। ভিডিওতে দেখা ইমরান মাহমুদুলকে আরও অনেকের সাথে ত্রাণ সামগ্রী প্যাকেজিং এবং বাছাই প্রক্রিয়া করতে দেখা যায়। 

Screenshot: Imran Mahmudul

ভিডিওটির ক্যাপশনে উল্লেখ করা হয়, ‘আমরা আমাদের সাধ্য মতো বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়াবার সামান্য চেষ্টা করেছি। আপনারাও আপনাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করুন। অন্যদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য ছবি পোস্ট করতে চাইলে দয়া করে যাদের ত্রাণ দিচ্ছেন তাদের ছবি অথবা ভিডিও পোস্ট করবেন না। আমাদের আয়োজনে সাথে ছিলেন সৈকত রেজা ভাই এবং তার টিম, কণা আপু , মিলন এবং আমার দুলাভাই জসিম সুমন ভাই । সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।’ 

অর্থাৎ, টিকটকে সংগীতশিল্পী ইমরান মাহমুদুলের মৃত্যু সংক্রান্ত দাবি প্রচারিত হওয়ার পরও ইমরান মাহমুদুলের শারীরিক উপস্থিতি পাওয়া যায়। যার ফলে বলা যায়, টিকটকে ভিউ বাড়ানো ও গুজব প্রচারের উদ্দেশ্যে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, সংগীতশিল্পী ইমরান মাহমুদুল মারা গেছেন শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বন্যা মোকাবেলায় সরকারের পক্ষ থেকে সকলকে ৮৫০০ টাকা প্রদানের ভুয়া প্রচারণা

0

ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ছাত্র জনতা মিলে দেশের প্রতিটি প্রান্তে বন্যার্তদের সহায়তার জন্যে নগদ অর্থ ও ত্রাণ সংগ্রহ করেন। এর প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, বন্যা মোকাবেলায় সরকার সবাইকে ৮৫০০ টাকা করে দিচ্ছে দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বন্যা মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে সকলকে ৮৫০০ টাকা দেওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারণার উদ্দেশ্যে এমন প্রলোভন দেখানো হচ্ছে।

অনুসন্ধানে সরকার থেকে ৮৫০০ টাকা পাওয়ার প্রলোভন দেখানো ওয়েবসাইটে প্রবেশের চেষ্টা করলে এটি 408 Request Time-out ত্রুটি দেখায় যার ফলে ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি।

Screenshot: tubetrek.xyz

পরবর্তীতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে বন্যা মোকাবেলায় সবাইকে উক্ত পরিমাণ অর্থ প্রদান করার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, বন্যা মোকাবেলায় সরকারের পক্ষ থেকে সবাইকে বিকাশে ৮৫০০ টাকা দিচ্ছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত বিষয়টি সম্পূর্ণ ভুয়া ও প্রতারণামূলক।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s Own Analysis