Home Blog Page 30

সাদা পাথর লুটে জামায়াতে ইসলামী ও স্থানীয় প্রশাসনকে জড়িয়ে কালের কন্ঠের নামের ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি সিলেটের ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর নামক পর্যটন স্পট থেকে পাথর লুটের ঘটনা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ‘সিলেটে সাদা পাথর লুট নেপথ্যে জামাত নেতা ও স্থানীয় প্রশাসন। বানিয়েছেন ৫০ কোটি টাকার প্রাসাদ’ শিরোনামে মূলধারার গণমাধ্যম কালের কন্ঠের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সিলেটের পর্যটন স্পট সাদা পাথর থেকে পাথর লুটের ঘটনার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও সেখানকার স্থানীয় প্রশাসনকে জড়িয়ে কালের কন্ঠ এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে,  ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় কালের কন্ঠের প্রচলিত ফটোকার্ডের ডিজাইনের আদলে প্রচারিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে কালের কন্ঠের লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ১১ আগস্ট, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে।

উক্ত তথ্যাবলীর সূত্র ধরে কালের কন্ঠের ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত তারিখে আলোচিত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, কালের কন্ঠের ওয়েবসাইটইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তাছাড়া, কালের কন্ঠের প্রচলিত ফটোকার্ডের শিরোনামের ফন্টের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির ফন্টের পার্থক্যও লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner

কালের কণ্ঠ ব্যতীত অন্য কোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবিকে সমর্থন করে এমন কোনো সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি৷

সুতরাং, ‘সিলেটে সাদা পাথর লুট নেপথ্যে জামাত নেতা ও স্থানীয় প্রশাসন। বানিয়েছে ৫০ কোটি টাকার প্রাসাদ’ শিরোনামে কালের কন্ঠের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র

বিদ্যা সিনহা সাহা মীম দাবিতে ভারতীয় অভিনেত্রীর সম্পাদিত ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি বাংলাদেশি অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা সাহা মীমের ছবি দাবিতে একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা সাহা মীমের নয়। প্রকৃতপক্ষে, একজন ভারতীয় অভিনেত্রীর ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা সাহা মীমের ফেসবুক পেজইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট যাচাই করে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে, Arshin Mehta নামক একজন ভারতীয় অভিনেত্রী ও মডেলের ফেসবুক পেজে গত ১৭ জুলাই প্রকাশিত পোস্টে কিছু ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ছবিগুলোর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত  ছবিগুলোর আংশিক সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

ছবিগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, প্রচারিত ছবিগুলোর সাথে এই ছবিতে থাকা ব্যক্তির পোশাক, অঙ্গভঙ্গি ও পারিপার্শ্বিক সবকিছুর মিল রয়েছে কিন্তু ছবিগুলোতে থাকা নারীদের চেহারা ভিন্ন। 

Comparison: Rumor Scanner 

ছবিগুলো পর্যবেক্ষণ করে প্রতীয়মান হয়, ভারতীয় অভিনেত্রী আর্শিন মেহতার এসব ছবিতে তার মুখমণ্ডলের স্থলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় বিদ্যা সিনহা সাহা মীমের মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ছবিগুলো তৈরি করা হয়েছে। 

আর্শিন মেহতার ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ১৭ জুলাই প্রকাশিত পোস্টেও একই ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়। 

সুতরাং, অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা সাহা মীমের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলো সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

টাঙ্গাইলের সখিপুরে দু’জনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়, ২০২৩ সালের 

সম্প্রতি, “সুখিপুর উপজেলায় ককড়াজান ইউনিয়নে দুজন যুবলীগের নেতাকে রাতের আধারে কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, টাঙ্গাইলের সখিপুরে দুইজনকে কুপিয়ে হত্যার এই ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং, এটি ২০২৩ সালের ঘটনা। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি থেকে প্রাপ্ত ইমেজ রিভার্স সার্চের মাধ্যমে ‘Oxygen-অক্সিজেন’ নামক ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ২০ জুলাইয়ে “সখীপুর উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের বাঘেরবাড়ি গ্রামে দুইজনকে রাতের আধারে  কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা” শিরোনামে প্রকাশিত একটি রিলস ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে, উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘BSS News’ এর ওয়েবসাইটে একই তারিখে অর্থাৎ ২০২৩ সালের ২০ জুলাই “টাঙ্গাইলের সখীপুরে দুর্বৃত্তের হাতে দু’জন খুন” শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “টাঙ্গাইলের সখীপুরে ফ্লেক্সিলোড ও বিকাশ ব্যবসায়ীসহ দুইজনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ২০ জুলাই (বৃহস্পতিবার) সকালে উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের বাঘেরবাড়ি বাংলাবাজার এলাকায় সড়কে তাদের মরদেহ পাওয়া যায়। নিহতরা হলেন- কাকড়াজান ইউনিয়নের বাঘেরবাড়ি গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে ফ্লেক্সিলোড ও বিকাশ ব্যবসায়ী শাহজালাল মিয়া (৩৫) ও একই গ্রামের নবু মিয়ার ছেলে মজনু মিয়া (৪৫)।” 

এছাড়া, আলোচ্য বিষয়ে সে সময়ে একাধিক গণমাধ্যমে (যমুনা টিভি, আরটিভি) প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। উক্ত প্রতিবেদনগুলো থেকেও আলোচিত ভিডিওর বিষয়ে একই তথ্য জানা যায়। 

এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে টাঙ্গাইলের সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম ভূইয়ার সঙ্গে কথা বলে রিউমর স্ক্যানার টিম। প্রত্যুত্তরে তিনি জানান, “সম্প্রতি সখিপুরের কাকড়াজান ইউনিয়নে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। যে ভিডিওটা ছড়ানো হচ্ছে সেটা ভুয়া।” 

অর্থাৎ, ২০২৩ সালে টাঙ্গাইলের সখিপুরে কাকড়াজান ইউনিয়নে দুর্বৃত্তদের হাতে দুই ব্যবসায়ী খুনের ঘটনায় ধারণকৃত ভিডিওকে সম্প্রতি সখিপুরে দুই যুবলীগ নেতাকে হত্যা করা হয়েছে দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক মিছিল দাবিতে ছাত্রলীগের ২০২২ সালের মিছিলের ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকে একটি মিছিলের ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওটি গত ১২ আগস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের করা একটি মিছিলের দৃশ্যের। ভিডিওতে থাকা টেক্সেটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ব্যক্তিদের সক্রিয় হবার আহ্বানও জানানো হয়। 

টিকটকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাম্প্রতিক কোনো মিছিলের দৃশ্যের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২২ সালে ছাত্রলীগের ৭৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পিরোজপুর পৌর ছাত্রলীগের করা আনন্দ মিছিলের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যালোচনা রিউমর স্ক্যানার। এতে ভিডিওটিতে দেখতে পাওয়া মিছিলের ব্যানারে ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সফল ও স্বার্থক হোক’ শীর্ষক লেখা দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও এর নিচেরই ‘মোমেন মোর্শেদ শু, সাধারণ সম্পাদক পৌর ছাত্রলীগ, পিরোজপুর’ লেখাও দেখতে পাওয়া যায়। পাশাপাশি মিছিলের সবাইকে ‘শুভ্র ভাই’ বলে স্লোগান দিতেও শোনা যায়। যা থেকে ধারণা করা যায়, ‘মোমেন মোর্শেদ’ নামটির পর থাক আংশিক ‘শু’ শব্দটির পূর্ণরূপ ‘শুভ্র’ হতে পারে।

Screenshot: Tiktok 

পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Ashik Zaman Pollob নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০২২ সালের ২১ মে প্রচারিত একটি মিছিলের ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উভয় মিছিল-ই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে উক্ত মিছিলের ব্যানারের সাথে আলোচিত মিছিলের ব্যানারের মিল থাকলেও দুই মিছিলের নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তি এবং সম্মুখসারীতে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও পোস্টটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, এটি পিরোজপুর পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোমেন মোর্শেদ শুভ্র-এর নেতৃত্বে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে হওয়ার মিছিলের ভিডিও। তবে উক্ত ভিডিওটিতে শুভ্রের নেতৃত্বে হওয়া মিছিলটির শেষ পর্যন্ত দেখা গেলেও এই মিছিলে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত মিছিলের ভিডিওতে দেখতে পাওয়া ব্যক্তিদের ভিডিওটিতে লক্ষ করা যায়নি।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২২ সালের ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল। তাই পরবর্তীতে Ashik Zaman Pollob নামের ওই ব্যক্তির ফেসবুক প্রোফাইলে গিয়ে টাইম ফিল্টারিংয়ের মাধ্যমে সেবছর ৫ ‍জানুয়ারি করা একটি পোস্টের সন্ধান পাওয়া যায়। 

পোস্টটিতে ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠার ৭৪ বছর উৎযাপনে পিরোজপুর পৌর ছাত্রলীগের করা মিছিলের বেশকিছু ছবি প্রচার করা হয়। যাতে মোমেন মোর্শেদ শুভ্র-এর নেতৃত্বে হওয়া মিছিলের ছবির পাশাপাশি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত মিছিলের ছবিও দেখতে পাওয়া যায়। ছবিগুলো পর্যালোচনার মাধ্যমে ধারণা করা যাচ্ছে, আলোচিত মিছিলে মোমেন মোর্শেদ শুভ্র-এর নামের ব্যানার ব্যবহার করা হলেও সেটি ভিন্ন আরেকটি মিছিল ছিল। 

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে হুবহু একই ভিডিও না পাওয়া গেলেও ভিন্ন কোণ থেকে ধারণকৃত আলোচিত মিছিলটির আরেকটি ভিডিওর সন্ধান পাওয়া যায়। ২০২২ সালের ৭ জানুয়ারি হাসিবুল ইসলাম সৈকত নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রচারিত এই ভিডিওর শিরোনাম থেকে জানা যায়, ভিডিওর মিছিলটিতে নেতৃত্বদানকারীর নাম সাইমুন ইসলাম সাকিব। তিনি পিরোজপুর পৌর ছাত্রলীগের নেতা।

Screenshot: Facebook 

সাইমুন ইসলাম সাকিব নামের ওই ব্যক্তির ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যালোচনার মাধ্যমে ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি প্রচারিত একটি পোস্টের সন্ধান পাওয়া যায়। পোস্টটিতে তিনি ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের ৭৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তার নেতৃত্বে হওয়া মিছিলের ছবিগুলো প্রচার করেছেন। যার সাথে আলোচিত ভিডিওর মিছিলের ব্যক্তিদের ও ব্যানারের মিল পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook 

এছাড়াও অনুসন্ধানে পিরোজপুর পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোমেন মোর্শেদ শুভ্রর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ছাত্রলীগের ৭৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা ও পৌর ছাত্রলীগের আনন্দ মিছিলের বেশকিছু ছবি সম্বলিত একটি পোস্টও পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, আলোচিত মিছিলের ভিডিওটি গত ১২ আগস্টের নয়। 

সুতরাং, ২০২২ সালে ছাত্রলীগের ৭৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পিরোজপুর পৌর ছাত্রলীগের করা আনন্দ মিছিলের ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের মিছিল দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

নুসরাত ইমরোজ তিশার ছবি বিকৃত করে প্রচার

0

সম্প্রতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর স্ত্রী অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশার ছবি দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, নুসরাত ইমরোজ তিশার নামে প্রচারিত এই ছবিটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, অভিনেত্রী তিশার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সাম্প্রতিক সময়ে প্রচারিত একটি ছবিকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে এই এডাল্ট ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

এবিষয়ে অনুসন্ধানে নুসরাত ইমরোজ তিশার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ পর্যালোচনার মাধ্যমে গত ৩১ মে প্রচারিত একটি পোস্টের সন্ধান পাওয়া যায়।

পোস্টটিতে তিনি Zuton’s Snapshoot নামের একটি প্রতিষ্ঠানের তোলা তার সাম্প্রতিক ফটোশুটের কয়েকটি ছবি প্রচার করেছে। 

Screenshot: Facebook 

ছবিগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ফটো এ্যালবামের একটি ছবির সাথে তিশার আলোচিত ছবিটির বসার ভঙ্গি, চেহারার অভিব্যক্তি, পরিহিত কানের দুল এবং পারিপাশ্বিক অবস্থার হুবহু মিল রয়েছে। এছাড়াও আলোচিত ছবির পোশাকের রঙের সাথে উক্ত ছবিতে তার পরিহিতি শাড়ির রঙেরও মিল রয়েছে। যা থেকে স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে, উক্ত ছবিটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমেই আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।  

Image Comparison by Rumor Scanner

এছাড়াও তিশার ফেসবুক পেজটি ব্যতীত তার ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টেও উক্ত ছবির এ্যালবামটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, নুসরাত ইমরোজ তিশার নামে নামে ইন্টারনেট প্রচারিত এই এডাল্ট ছবিটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

  • Nusrat Imrose Tisha Facebook Page Post
  • Nusrat Imrose Tisha Facebook Page Post
  • Nusrat Imrose Tisha Instagram Post
  • Rumor Scanner’s Analysis

শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়া ইস্যুতে আইসিসি কোনো ভিডিও বার্তা দেয়নি

সম্প্রতি, শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়া ইস্যুতে আন্তর্জাতিক অপরাধআদালত (ICC) একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটি প্রচার করে ক্যাপশনে দাবি করা হয়, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত International Criminal Court (ICC) থেকে আগামী ১৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র দেখতে চেয়েছে,

অন্যথায় শেখ হাসিনাকে জোরপূর্বক ক্ষমতাচ্যুত করার দায়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে গ্রেফতারের আদেশ আসবে বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর উপর।

আজ নেদারল্যান্ডস থেকে International Criminal Court (ICC) এর এক ভিডিও বার্তায় এমন নির্দেশ এসেছে।’

অর্থাৎ দাবি করা হচ্ছে,

এক. আইসিসি ১৭ কার্যদিবসের মধ্যে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র দেখতে চেয়েছে। 

দুই. যদি পদত্যাগপত্র দেখাতে না পারে, তবে শেখ হাসিনাকে জোরপূর্বক ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে গ্রেফতারের জন্য বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হবে।

তিন. এই নির্দেশটি নেদারল্যান্ডস থেকে আসা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (ICC) একটি ভিডিও বার্তা থেকে এসেছে, অর্থাৎ প্রচারিত ভিডিওটি।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে  আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) থেকে কোন ভিডিও বার্তা দেওয়া হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ/মিয়ানমারের পরিস্থিতির ওপর তদন্ত শুরুর অনুমোদন দেয়। সেই অনুমোদনের বিষয়ে প্রচারিত ভিডিওর অংশ ব্যবহার করে শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে আলোচিত দাবিগুলো প্রচার করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর ‘Ask The Court: Opening of ICC investigations into the situation in Bangladesh/Myanmar’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর ১ মিনিট ২১ সেকেন্ড অংশ থেকে ৩ মিনিট ১৬ সেকেন্ড অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটি থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রি-ট্রায়াল চেম্বার ৩-এর বিচারকরা প্রসিকিউটরের অনুরোধ মঞ্জুর করেন। এর ফলে আইসিসি’র এখতিয়ারভুক্ত অপরাধসমূহ সংঘটনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের পরিস্থিতির ওপর তদন্ত শুরু করার অনুমতি দেওয়া হয়। চেম্বার এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গাদের নির্বাসন এবং জাতিগত ও/অথবা ধর্মীয় কারণে তাদের ওপর নিপীড়নের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

পুরো ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায় যে, এতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) বিচারকরা কেন বাংলাদেশ-মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে তদন্তের অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন, তা আলোচনা করা হয়েছে। একই সাথে, বিচারকরা তাঁদের সিদ্ধান্তে ভুক্তভোগীদের মতামত বিবেচনা করেছেন কি না, এবং পরবর্তী পদক্ষেপগুলো কী হবে – যেমন প্রমাণ সংগ্রহ, সমন বা গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি, মামলার কার্যক্রম কীভাবে চলবে—সেসব বিষয়েও কথা বলতে দেখা যায়। এছাড়া, মিয়ানমারের আইসিসির সাথে সহযোগিতা করার বাধ্যবাধকতা আছে কি না এবং আইসিসি বাংলাদেশ-মিয়ানমারের পরিস্থিতির সমস্ত অপরাধীর বিচার করবে কি না বা করতে পারে কি না, সে বিষয়েও আলোচনা করা হয়েছে।

এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর প্রকাশিত প্রেস রিলিজ থেকেও একই তথ্য জানা যায়।

সুতরাং, ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়া ইস্যুতে আইসিসির ভিডিও বার্তা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

কক্সবাজারে প্রকাশ্যে কুপিয়ে মানুষ হত্যার দৃশ্য দাবিতে ভারতের ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন নারীকে রাস্তায় একজন ব্যক্তির কোপানোর একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওটি সম্প্রতি কক্সবাজারে প্রকাশ‍্যে রাস্তায় সন্ত্রাসীদের কুপিয়ে মানুষ হত্যা করার দৃশ্যের।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উপরোল্লিখিত ভিডিওগুলো সম্মিলিতভাবে ২ লক্ষ ৮০ হাজারেরও অধিক বার দেখা হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি কক্সবাজারের নয় বরং, এটি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের এলুরু জেলার গত ১০ আগস্টের ঘটনা। শিভা নামে এক সন্তান পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে তার মা নরসম্মাকে হত্যা করে। 

অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স সার্চ করে ভারতের তেলেগুভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘ছোটানিউজ এপ’ এর এক্স অ্যাকাউন্টে গত ১১ আগস্টে প্রচারিত একটি ভিডিও পোস্ট পাওয়া যায়। সংযুক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত দৃশ্যের তুলনা করলে মিল পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

ভিডিওটি সম্পর্কে পোস্টটিতে বলা হয়, “রাস্তার ধারে মাকে কুপিয়ে দিল ছেলে! এলুরু জেলার কয়্যালাগুডেমে একটি ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। শিবা নামের এক ব্যক্তি রাস্তার ধারে শিকারি কাস্তে দিয়ে তার মা, জাক্কু লক্ষ্মীনারাসাম্মাকে কুপিয়ে দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, শিবা কিছুদিন ধরে তার মাকে জোর করছিল যেন তিনি তাদের একমাত্র বাড়িটি বিক্রি করে সেই টাকা তাকে দেন। রবিবার (১০ আগস্ট) একই বিষয় নিয়ে ঝগড়ার পর মাতাল অবস্থায় সে মায়ের উপর হামলা চালায়। গুরুতর আহত নারাসাম্মাকে কাকিনাডার এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।” (অনূদিত)

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘ডেকান ক্রোনিকল’ এর ওয়েবসাইটে ‘Son Stabs Mother To Death In Property Dispute’ শিরোনামে গত ১১ আগস্টে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “এলুরু জেলার কয়্যালাগুডেমে একটি ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে ছেলে জাক্কু শিবা (৩০) তার মা জাক্কু নারাসাম্মা (৫০)-কে ছুরি মেরে হত্যা করেছে। সোমবার (১১ আগস্ট) চিকিৎসাধীন অবস্থায় এখানে জিজিএইচ হাসপাতালে নারাসাম্মার মৃত্যু হয়। কয়্যালাগুডেম পুলিশ জানিয়েছে, কয়েক বছর আগে স্বামীকে হারানো নারাসাম্মার এক ছেলে ও এক মেয়ে ছিল। দু’জনেই বিবাহিত এবং আলাদা গ্রামে বসবাস করেন। ছেলে শিবা তার পরিবার নিয়ে পূর্ব গোদাবরী জেলার গোপালপুরম মন্ডলের করাগাপাডু গ্রামে থাকেন।

কয়্যালাগুডেম গ্রামে রাস্তার ধারে সবজি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন নারাসাম্মা। তার দুটি জমি ও দুটি করে ভবন ছিল। এর মধ্যে একটি ভবন ছেলে শিভাকে দিয়ে দেন, যা শিভা পরে অন্যদের কাছে ভাড়া দেন। অপর ভবনে থাকতেন নারাসাম্মা নিজে। শিভা দীর্ঘদিন ধরে মায়ের উপর চাপ দিচ্ছিলেন যেন তিনি ওই বাড়িটিও তাকে দিয়ে দেন, কিন্তু তিনি তা দিতে অস্বীকার করেন। এর আগে একবার শিভা মায়ের উপর হামলা চালিয়ে তার হাত ভেঙে দেয়। তবে ছেলেকে ক্ষতি না করার জন্য নারাসাম্মা সেই মামলাটি তুলে নেন। শনিবার (৯ আগস্ট) শিভা কয়্যালাগুডেমে এসে মাকে নিজের বাড়িতে আসতে বলেন। তিনি রাস্তার ধারে সবজি রেখে বাড়ির পথে হাঁটছিলেন, এমন সময় শিভা আরেকজনকে নিয়ে মোটরসাইকেলে পিছন থেকে এসে তাকে ছুরি দিয়ে আক্রমণ করে। (অনূদিত)

এ বিষয়ে ভারতীয় আরো একাধিক গণমাধ্যম সূত্রেও একইরকম তথ্য জানা যায়।

সুতরাং, পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে গত ১০ আগস্টে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে নিজের মায়ের ওপর ছেলের হামলার দৃশ্যকে সম্প্রতি কক্সবাজারে প্রকাশ‍্যে রাস্তায় সন্ত্রাসীদের কুপিয়ে মানুষ হত্যা করার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

জামায়াত নেতার কথায় ফাইলে সই না করায় সরকারি কর্মকর্তাকে মেরে ফেলার দাবিটি ভুয়া 

সম্প্রতি, একজন সরকারি কর্মকর্তা জামায়াত নেতার কথা মতো ফাইলে স্বাক্ষর না করায় তাঁকে (সরকারি কর্মকর্তাকে) মেরে ফেলা হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটিতে দেখা যায়, দুজন ব্যক্তি একটি নগ্ন মানবদেহ টেনেহিঁচড়ে সিঁড়ি দিয়ে উপরে তুলছেন।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সিঁড়ি দিয়ে টেনে এক ব্যক্তির দেহ উপরে নিয়ে যাওয়ার ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো ঘটনা নয়। এর সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীরও কোনো সম্পর্ক নেই। বরং, ভিডিওটি ভারতের বিহার রাজ্যের একটি সরকারি হাসপাতালের। হাসপাতালটিতে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসা মৃতদেহ স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাওয়ার বদলে হাসপাতালের কর্মীরা দেহটি সিঁড়ি দিয়ে টেনে ময়নাতদন্তের কক্ষে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার ভিডিও এটি। 

এই বিষয়ে ভারতীয় অনলাইন সংবাদ প্লাটফর্ম ‘BIO Saga’ এক্স অ্যাকাউন্টে ‘A dead body is being dragged up the stairs and humanity is being strangled.’ ক্যাপশনে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Comparison : Rumor Scanner

ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, এটি ভারতের বিহার রাজ্যের বেতিয়া শহরের সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (GMCH) -এর ঘটনা। তবে, ভিডিওটিতে ঘটনার বিস্তারিত কিছুই উল্লেখ করা হয়নি।

পরবর্তীতে, প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এর ওয়েবসাইটে গত ১৩ আগস্ট ‘Body Brought For Post-Mortem Dragged At Bihar Hospital, Sparks Outrage’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, দু’টি পা ধরে সিঁড়ি দিয়ে এক ব্যক্তির দেহ উপরে টেনে নিয়ে যাওয়ার এই ঘটনাটি ভারতের বেতিয়া শহরের সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (GMCH) -এর। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে আনা হয়েছিল। স্ট্রেচার ব্যবহার না করে দেহটি সিঁড়ি দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় মর্গের এক কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়।

এ বিষয়ে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ‘News9 Live’ -এর ওয়েবসাইটে গত ১২ আগস্ট ‘Video of Bihar hospital staff dragging body to post-mortem room sparks outrage’ শিরোনোমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের বেতিয়া শহরে সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (GMCH) স্ট্রেচার ব্যবহার না করে হাসপাতালের কর্মীরা দেহটি সিঁড়ি দিয়ে টেনে ময়নাতদন্তের কক্ষে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পালাম শহরের বেতিয়া নৌতান রোড থেকে উদ্ধার হওয়া দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল বলে প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়। 

এছাড়াও, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘Navbharat Times’ এবং ‘The Free Press Journal’ এ এই বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও ঘটনাটি ভারতের বিহার রাজ্যের বেতিয়া শহরের সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (GMCH) -এর বলে জানা যায়।

সুতরাং, ভারতের বিহার রাজ্যের ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে বাংলাদেশে জামায়াত নেতার কথায় ফাইলে সই না করায় সরকারি কর্মকর্তাকে মেরে ফেলা হয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ভারত থেকে শোক দিবস পালনের আহ্বান দাবিতে শেখ হাসিনার বক্তব্যের পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ভারত থেকে জাতির উদ্দেশ্যে ১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবির টিকটক ভিডিও দেখুন এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ হাসিনার বক্তব্যের এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৪ সালের ০১ আগস্ট কৃষক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় শেখ হাসিনার বক্তব্যের ভিডিওকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ০১ আগস্টের একটি লাইভ ভিডিওতে শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner 

সেদিন ১৫ই আগস্টের জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে কৃষক লীগের আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

একই লাইভ ভিডিও প্রচার হয় দেশের গণমাধ্যমগুলোতেও। দেখুন এখানে, এখানে। 

অর্থাৎ, ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ই আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে আর জনসম্মুখে দেখা যায়নি শেখ হাসিনাকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার অডিও বার্তা নিয়মিত প্রচার হলেও ভিডিও বার্তা প্রচার হয়নি। ১৫ই আগস্ট নিয়েও তিনি কোনো ভিডিও বার্তা দেননি। তবে শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় গত রাতে এক ভিডিও বার্তায় শোক দিবস পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। 

সুতরাং, ভারত থেকে ১৫ই আগস্ট শোক দিবস পালনের আহ্বান দাবিতে শেখ হাসিনার বক্তব্যের পুরোনো ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে জাপানে বিক্ষোভের দৃশ্য দাবিতে এআই ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওটিতে গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে জাপানে হাজারো মানুষের বিক্ষোভের দৃশ্য প্রদর্শিত হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে জাপানে হাজারো মানুষের বিক্ষোভের দৃশ্যের নয় বরং, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি একটি ভুয়া ভিডিও।

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে কোনো বিশ্বস্ত গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে প্রদর্শিত মানুষ, মানুষের অঙ্গভঙ্গি ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাতেও অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয় যা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি কনটেন্টে পরিলক্ষিত হয়।

Screenshot of Claimed Video

এছাড়া, ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে ভিডিওটির নিচের ডান কোণে ‘Veo’ নামের একটি জলছাপ ও এআই দিয়ে তৈরি কনটেন্টের লেবেল দেখতে পাওয়া যায়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘Veo’ গুগলের একটি উন্নত এআই টুল, যা টেক্সট প্রম্পট থেকে ৮ সেকেন্ডের বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে সক্ষম। এই ভিডিওটির দৈর্ঘ্যও ৮ সেকেন্ড।

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে প্রচারিত ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি একটি ভিডিওকে গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে জাপানে হাজারো মানুষের বিক্ষোভের দৃশ্য দাবি করে অনলাইনে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Veo 
  • Rumor Scanners’ analysis