বুধবার, জুলাই 23, 2025
Home Blog Page 29

ইরান কর্তৃক আমেরিকার জাহাজে হামলার নয়, ভিডিওটি হুতি গোষ্ঠী কর্তৃক সৌদি আরবের যুদ্ধজাহাজে হামলার

মধ্যপ্রাচ্যে সাম্প্রতিক ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষিতে ‘আরব সাগরে আমেরিকার সামরিক নৌ বাহিনীর জাহাজে, ইরানের হা’ম’লা গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে মার্কিন জাহাজ’ ক্যাপশনে একটি জলযানে বিস্ফোরণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ইরান কর্তৃক আরব সাগরে আমেরিকার নৌ-বাহিনীর জাহাজে হামলার ঘটনার নয় বরং ২০১৭ সালে ইয়েমেনের পশ্চিম উপকূলে সৌদি আরবের একটি যুদ্ধজাহাজে সশস্ত্র হুতি বিদ্রোহীদের হামলার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইউরোপ ভিত্তিক গণমাধ্যম euronews এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারি ‘Two killed as Houthis attack Saudi warship off Yemen coast’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্যাবলীর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণীতে বলা হয়, ইয়েমেন উপকূলে সৌদি আরবের একটি যুদ্ধজাহাজ হামলার শিকার হয়েছে, যার ফলে জাহাজে একটি বড় বিস্ফোরণ ঘটে। বিদ্রোহী হুতি আন্দোলন কর্তৃক  পরিচালিত আল-মাসিরাহ টেলিভিশন একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে হামলার মুহূর্তটি দেখানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এসপিএ জানিয়েছে, হোদাইদা বন্দরের পশ্চিমে টহলরত অবস্থায় ফ্রিগেটটিকে হুতি মিলিশিয়ার তিনটি আত্মঘাতী নৌকা দ্বারা আক্রমণ করা হয়। এই ঘটনায় দুইজন নাবিক নিহত হয়েছে এবং আরও তিনজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। 

একই বিষয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম Reuters এর ওয়েবসাইটে ২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারি ‘Yemen’s Houthis attack Saudi ship, launch ballistic missile’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে একই চিত্র ও তথ্য পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের নয়।

সুতরাং, ইরান কর্তৃক আরব সাগরে আমেরিকার নৌ-বাহিনীর জাহাজে হামলার ঘটনার ভিডিও দাবিতে ইয়েমেনের পশ্চিম উপকূলে সৌদি আরবের একটি যুদ্ধজাহাজে সশস্ত্র হুতি বিদ্রোহীদের হামলার পুরোনো ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ইসরায়েলের পক্ষে সংহতি জানাতে গিয়ে ইসরায়েলিদের দ্বারা ভারতীয়দের অপমানিত হওয়ার দাবিটি ভুয়া

সাম্প্রতিক সময়ে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রেক্ষিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওতে এক যুবকক উত্তেজিত অবস্থায় এক নারীর গায়ে পানি জাতীয় কোনো দ্রব্য ছিটাইতে দেখা যাচ্ছে।

ভিডিওটিতে দাবি করা হচ্ছে, কিছু ভারতীয় ইসরায়েলিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে ইসরায়েলে গিয়েছিল। কিন্তু ইসরায়েলিরা তাদের ওপর হামলা চালায়, অপমান করে এবং তাদের সংহতি প্রত্যাখ্যান করে বলে, ‘ভারতে ফিরে যাও’।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যে ইসরায়েলিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে ইসরায়েলে গিয়ে কিছু ভারতীয়ের ইসরায়েলিদের দ্বারা অপমানিত হওয়ার কোনো ঘটনার নয়। বরং, জেরুজালেমে ধর্ম প্রচাররত খ্রিস্টান নারীর গায়ে এক ইসরায়েলির পানি ছিটানোর দৃশ্য দাবিতে অন্তত গত মার্চ থেকেই ভিডিওটি ইন্টারনেটে বিদ্যামান রয়েছে। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে মধ্যপ্রাচ্য সম্পর্কিত বিশেষ করে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘাতের বিষয়ে সংবাদ প্রচার করা প্লাটফর্ম ‘Middle East Monitor’ এর এক্স অ্যাকাউন্টে গত ১২ মার্চ ‘Israeli splashes Christian woman preaching in Jerusalem’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির ক্যাপশন বর্ণনায় বলা হয়, জেরুজালেমের রাস্তায় একজন খ্রিস্টান নারী ধর্ম প্রচার করছিলেন। এমন সময় একজন ইসরায়েলি তার দিকে এগিয়ে আসে এবং তাকে চলে যেতে বলতে বলতে তার গায়ে পানি ছিটিয়ে দেয়। লোকটি তাকে উদ্দেশ্য করে বলে, ‘কী চাও তুমি? চলে যাও। এটা ইসরায়েল, ইহুদিদের।’

মিডল ইস্ট মনিটর এর ওয়েবসাইটেও একই দাবিতে ভিডিওটি পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটির সাথে সাম্প্রতিক ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের কোনো সম্পর্ক নেই। ভিডিওটি ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের আগে থেকেই ইন্টারনেটে বিদ্যামান।

সুতরাং, ভিন্ন ঘটনার একটি ভিডিওকে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইসরায়েলিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে ইসরায়েলে গিয়ে কিছু ভারতীয়ের ইসরায়েলিদের দ্বারা অপমানিত হওয়ার ভিডিও দাবিতে প্রচার; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

কুমিল্লায় সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ড দাবিতে পুরোনো ও ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি এক্স প্ল্যাটফর্মে এক নারী ও এক কিশোরীর আহাজারির একটি ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে দাবি করা হয়, বিকাশ চন্দ্র নামের একজন হিন্দু ব্যবসায়ীকে ৭০ হাজার টাকা ‘জিজিয়া কর’ না দেওয়ায় মোহাম্মদ ইমরান নামের এক ইসলামপন্থী তাকে হত্যা করেছে। পোস্টে আরও বলা হয়, দেশে ধর্মীয় চাঁদাবাজি ও সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন নির্বিঘ্নে চলছে। অর্থাৎ, ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িকভাবে উপস্থাপন করা হয়।

উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে

একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিকাশ চন্দ্রকে হত্যার ঘটনা সাম্প্রতিক নয়। বরং, ২০২৩ সালে ঘটে যাওয়া ওই ঘটনার ভিডিওকে সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে নতুন করে সাম্প্রদায়িক রঙ দিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, ওই হত্যাকাণ্ডের পেছনে ধর্মীয় কোনো উদ্দেশ্যের প্রমাণ মেলেনি।

এই বিষয়ে অনুসন্ধান ‘Avro Neel’ নামের এক্স অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের ১০ জুন একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওর বর্ণনায় ঘটনাস্থল হিসেবে কুমিল্লার চান্দিনার উল্লেখ করা হয়। ভিডিওতে আহাজারি করা নারী জানান, তার স্বামীসহ সাতজন মিলে একটি পিকআপ কিনেছিলেন। সেই পিকআপের জন্য প্রতিবেশী আর্জু ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। ওই চাঁদার না জন্য তার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এ বিষয়ে আরও অনুসন্ধানে ২০২৩ সালের ৬ জুন দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলায় পিকআপ ভাড়া না দেওয়ায় বিকাশ চন্দ্র দাস (৪২) নামের এক ব্যক্তিকে কিল-ঘুষি মেরে হত্যার অভিযোগ উঠে। অভিযুক্ত মো. আজিজুল ইসলাম আজু (২৮) একই উপজেলার বরকরই আন্দিরপাড় গ্রামের বাসিন্দা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের প্রতিবেশী শ্রীকান্ত চন্দ্র দাস, বাদল চন্দ্র দাস ও হৃদয় চন্দ্র দাস জানান, নারাচোঁ গ্রামে গৌতমের মৎস্য প্রজেক্ট সংলগ্ন মাঠে ক্রিকেট খেলা চলছিল। বিকাশ চন্দ্র দাস দাঁড়িয়ে খেলা দেখছিল। হঠাৎ আজু নামের ওই লোকটি এসে পাওনা টাকা চাওয়ার অজুহাতে বিকাশকে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মারতে শুরু করে। একপর্যায়ে বিকাশ মাটিতে লুটিয়ে পড়ায় তাকে নবাবপুর বাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে সন্ধ্যার পর চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের ছেলে ঝলক দাস জানান, ৩-৪ দিন আগে রাতে আজু বাবার কাছে ফোন করে পিকআপ ভাড়া চান। তার লেনদেন ভালো না বিধায় আমার বাবা তাকে পিকআপ ভাড়া দেয়নি। ওই ঘটনার জের ধরে আজু আবার বাবাকে হত্যা করে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম কুমিল্লার জমিনে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ঘটনার পর ২৬ জুন ঢাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত আজিজুল হক আজুকে গ্রেপ্তার করে চান্দিনা থানা পুলিশ।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন, আলোচিত ভিডিও বিশ্লেষণ বা অন্য কোনো উৎসে এই হত্যাকাণ্ড সাম্প্রদায়িক কারণে ঘটেছে বলে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ‘জিজিয়া কর’ বা ধর্মীয় চাঁদাবাজির দাবির সপক্ষেও কোনো প্রমাণ মেলেনি।

সুতরাং, ২০২৩ সালের পিকআপ ভাড়া নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডকে সাম্প্রদায়িক রঙ দিয়ে সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ড দাবি করে প্রচার করা হয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

নেতানিয়াহুর ছেলেকে গণধোলাই দেওয়া হয়েছে দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার 

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাতের প্রেক্ষিতে “ব্রেকিং নিউজ–চলমান স:হিংসতা জন্য প্রধানমন্ত্রী নেতা:নিয়াহু কে দ্বায়ী করে নে:তানিয়াহুর ছেলেকে গণধোলাই দিয়েছে সেই দেশের জনগণ’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি নেতানিয়াহুর ছেলেকে গণধোলাই দেওয়ার নয় এবং তাকে গণধোলাই দেওয়ার দাবির সপক্ষেও নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। বরং, এটি গত বছরের অক্টোবর মাসে গাজা-ইসরায়েল সংঘাতের সময়কার হামাসের কাছে থাকা ইসরায়েলের বন্দীদের স্বজনদের সাথে চলতি বছরের মার্চে ইসরায়েলের পার্লামেন্টে নিরাপত্তারক্ষীদের সংঘর্ষের দৃশ্য। 

অনুসন্ধানে ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস নাউ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ০৫ মার্চ প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে। 

Video Comparison By Rumor Scanner 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ইসরায়েলের পার্লামেন্টে নিরাপত্তারক্ষীরা বন্দীদের স্বজনদের ধাক্কা দিয়ে টেনে হিঁচড়ে সরিয়ে নিচ্ছে–এমন ঘটনার দৃশ্য এটি। 

উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে আল জাজিরার ওয়েবসাইটে গত ০৪ মার্চ “Israeli captives’ families fight with Knesset security guards” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনেও একই মারামারির দৃশ্য দেখা যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ভাষণ দেখতে বাধা দেওয়ার সময় গাজায় আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবার এবং গত বছরের ৭ অক্টোবরের হামলা থেকে বেঁচে ফেরা ব্যক্তিদের সঙ্গে ইসরায়েলি পার্লামেন্টে নিরাপত্তারক্ষীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, চলতি বছরের মার্চ মাসে ইসরায়েলের পার্লামেন্টে গত বছরের অক্টোবর মাসে হামলায় হামাসের কাছে বন্দিদের স্বজনদের সাথে নিরাপত্তারক্ষীদের সংঘর্ষের দৃশ্যকে নেতানিয়াহুর ছেলেকে গণধোলাইয়ের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

ইরানের মিসাইলের আঘাত দাবিতে ব্রাজিলে নববর্ষের আতশবাজিতে আহত নারীর ভিডিও প্রচার

মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাতের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ‘ইরানি মিসাইল এতো দুষ্ট কেন, একেবারে স্পর্শকাতর জায়গায় আঘাত হানে… এটা কোন লক্ষ্যবস্তু হইলো!.?’ শিরোনামে একটি ভিডিও ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটিতে দেখা যায়, এক যুগল খোলা জানালা দিয়ে একসাথে ঝুঁকে দেখার সময় রাস্তায় উজ্জ্বল আতশবাজির ঝলকানি হয়, তারপর একটি বিক্ষিপ্ত  আতশবাজি এসে ওই নারীর বুকে আঘাত করে, যার ফলে তিনি ব্যথায় চিৎকার করে খোলা জানালা থেকে সরে যান।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ইরানের নিক্ষেপিত ক্ষেপণাস্ত্র কোনো ব্যক্তির শরীরে আঘাত হানার নয় বরং, চলতির বছর ব্রাজিলে নববর্ষের আতশবাজি দেখার সময় একটি বিক্ষিপ্ত আতশবাজি এসে এক নারীর বুকে আঘাত করার ভিডিও উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক গণমাধ্যম New York Post এর ওয়েবসাইটে ২০২৫ সালের ০২ জানুয়ারি ‘Shocking video shows woman receiving third-degree burns to the chest from New Year’s fireworks’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে যুক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্যাবলীর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner 

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২৭ বছর বয়সী বিয়াঙ্কা মিরান্ডা তার স্বামীর সাথে ব্রাজিলের সান্তা ক্যাটারিনা রাজ্যের নাভেগান্তেসের একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে নববর্ষের অনুষ্ঠান দেখছিলেন, ঠিক তখনই একটি বিক্ষিপ্ত বাজি তার বুকে এবং হাতে আঘাত করে, যার ফলে তার বুকে তৃতীয়-ডিগ্রি পোড়া হয়। 

এই বিষয়ে যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম Daily Mail এর ওয়েবসাইটে Woman’s breasts are burned by stray NYE firework after leaning out of her apartment window’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একই ভিডিও ও তথ্য পাওয়া যায়। 

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের নয়।

সুতরাং, ইরানের মিসাইল একজন ব্যক্তিকে আঘাত করার ভিডিও দাবিতে ব্রাজিলে নববর্ষের আতশবাজি থেকে একটি বিক্ষিপ্ত বাজি এসে এক নারীর বুকে আঘাত করার ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আমেরিকার যুদ্ধ জাহাজে ইরানের হামলার দৃশ্য দাবিতে বাগদাদের পুরোনো ভিডিও প্রচার

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাতের প্রেক্ষিতে আমেরিকার যুদ্ধ জাহাজে ইরানের হামলার দৃশ্য শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটিতে প্রদর্শিত অগ্নিকাণ্ডের শিকার জাহাজগুলো  আমেরিকার যুদ্ধ জাহাজ নয় বরং, হরমুজ প্রণালীতে দুটি তেলবাহী জাহাজের সংঘর্ষে সৃষ্ট আগুনের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি কিছু কী-ফ্রেমের রিভার্স ইমেজ সার্চে আজারবাইজানের গণমাধ্যম “Kanal13” এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৫ সালের ১৭ জুন “A tanker belonging to Russian shadow fleet crashes in the Gulf of Omam” শীর্ষক  শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে থাকা  ভিডিওর ৩ সেকেন্ড অংশ থেকে ১ মিনিট ১৮ সেকেন্ড অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumour Scanner

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একই ঘটনায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম “Reuters” এর ওয়েবসাইটে ২০২৫ সালের ১৭ জুন “Two oil tankers collide, catch fire near Strait of Hormuz” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “ গত ১৭ জুন হরমুজ প্রণালীর কাছে দুইটি তেলবাহী ট্যাংকারের সংঘর্ষে আগুন ধরে যায়, যেখানে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতের কারণে ইলেকট্রনিক বিঘ্নতা বেড়ে গেছে। তবে কোনো নাবিক আহত হননি এবং তেলের কোনো নিঃসরণও ঘটেনি। ইরান ও ইসরায়েল শুক্রবার থেকে একে অপরকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে, যার ফলে ইরান ও ওমানের মধ্যবর্তী গুরুত্বপূর্ণ জলপথে নেভিগেশন সিস্টেমে বিঘ্নতা দেখা দিয়েছে। এই প্রণালীতেই বিশ্বের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ সমুদ্রপথে পরিবাহী তেল পরিবাহিত হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের কোস্ট গার্ডের বরাতে বলা হয়, তাদের পূর্ব উপকূল থেকে ২৪ নটিক্যাল মাইল দূরে সংঘর্ষের পর ‘আডালিন’ নামের একটি জাহাজ থেকে ২৪ জনকে উদ্ধার করে খোর ফাক্কান বন্দরে নেওয়া হয়েছে। ফ্রন্টলাইন নামক কোম্পানি রয়টার্সকে জানিয়েছে, এ ঘটনার তদন্ত করা হবে, তবে বাইরের কোনো হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।”

এ বিষয়ে সেসময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম একই তথ্যসংবলিত সংবাদ (,,) প্রচার করেছে।

সুতরাং, হরমুজ প্রণালীতে দুটি তেলবাহী জাহাজের সংঘর্ষে সৃষ্ট আগুনের ঘটনাকে চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে আমেরিকার যুদ্ধ জাহাজে ইরানের হামলার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

জর্জিয়ার পার্লামেন্টে ‘বিতর্কিত’ বিল পাশ প্রসঙ্গে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার দৃশ্যকে ইসরায়েলের পার্লামেন্টের দৃশ্য দাবিতে প্রচার

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাতের প্রেক্ষিতে, “ইজরায়েলি পার্লামেন্টে খোলাখুলি_লড়াই। জায়োনিস্ট সরকারকে ইজরায়েলের নিজস্ব সংসদ সদস্যরাই সমর্থন করছেন না। আর ভারতের অন্ধ গোবর ভক্তরা” শীর্ষক শিরোনামসহ ভিন্ন ভিন্ন ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

একই দাবিতে ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ইসরায়েলের পার্লামেন্টের নয়। বরং; ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে জর্জিয়ার পার্লামেন্টে ‘বিদেশি এজেন্ট বিল’ নিয়ে উত্তপ্ত বিতর্কের একপর্যায়ে প্রতিপক্ষ এমপিকে আচমকা ঘুষি মারার দৃশ্যকে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটির কিছু কী – ফ্রেম ইমেজ রিভার্স সার্চের মাধ্যমে Mario Nawfal নামক একটি এক্স একাউন্টে ২০২৪ সালের ১৫ এপ্রিলে ‘This was the Georgian Parliamen’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্যাবলীর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে আমেরিকান সংবাদমাধ্যম New York Post এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ১৬ এপ্রিল ‘Georgian lawmakers get into wild brawl inside parliament’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ১ মিনিট ৪১ সেকেন্ড সময়ের ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওর বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, জর্জিয়ার সংসদে ‘বিদেশি এজেন্ট বিল’ ঘিরে ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদলীয় এমপিদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। বিলটি নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো সমালোচনা করেছে এবং দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে বলেও উল্লেখ পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে, আলোচ্য বিষয়ে বিস্তর অনুসন্ধানে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড পত্রিকা The Sun এর ওয়েবসাইটে গতবছরে অর্থাৎ ২০২৪ সালের ১৫ এপ্রিল “ORDER, ORDER! Shocking moment MP sucker-punches rival in PARLIAMENT – sparking mass brawl” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জর্জিয়ার পার্লামেন্টে ‘বিদেশি এজেন্ট বিল’ নিয়ে উত্তপ্ত বিতর্কের একপর্যায়ে বিরোধী দলীয় নেতা আলেকো এলিসাশভিলি ক্ষমতাসীন দলের নেতা মামুকা মদিনারাদজেকে জনসম্মুখে ঘুষি মারেন। এতে ঘটনাস্থলে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক হাতাহাতি হয়। বিলটি পশ্চিমা দেশগুলো ও অভ্যন্তরীণ বিক্ষোভকারীদের তীব্র বিরোধিতার মুখে রয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। 

অর্থাৎ, ইসরায়েলের পার্লামেন্টের দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ২০২৪ সালে জর্জিয়ার পার্লামেন্টে ঘটে যাওয়া একটি বিশৃঙ্খলার দৃশ্যের। 

সুতরাং, ২০২৪ সালে জর্জিয়ার পার্লামেন্টে ঘটে যাওয়া বিশৃঙ্খলার দৃশ্যকে ইরান ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সংঘাতের প্রেক্ষিতে ইসরায়েলের পার্লামেন্টের দৃশ্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

ইরানের হামলায় নিহত ইসরায়েলিদের লাশের কফিন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি

মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাতের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ‘ইরানের হামলায় ইসরায়েলের লাসের স্তুপ গোপন করে রেখেছিলো। ইসরায়েলের গোয়েন্দা তথ্য ফাঁস হলো।’ শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটিতে দেখা যায়, ইসরায়েলের পতাকা মোড়ানো কিছু কফিন উন্মুক্ত স্থানে রাখা হয়েছে। এসব কফিনের পাশে কিছু সৈন্য দাঁড়িয়ে আছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইরানের হামলায় নিহত ইসরায়েলিদের লাশের কফিন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তির সহায়তায় আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে কিছু অসঙ্গতি নজরে পড়ে। যেমন- ভিডিওটিতে একজন সৈন্যকে কফিনের ওপর দিয়ে  অস্বাভাবিকভাবে দৌড়ে যেতে দেখা যায়, সাধারণত একজন মানুষের পক্ষে এভাবে কোনোকিছুর ওপর দৌড়ানো সম্ভব নয়। একইভাবে, ভিডিওতে থাকা সৈন্যদের হাঁটাচলার মধ্যেই তাদের অদৃশ্য হয়ে যেতে দেখা যায়, যা অস্বাভাবিক। এছাড়া, ভিডিওতে কয়েকটি কফিন একটির ভেতর আরেকটি ঢুকে ত্রিকোণ আকৃতি ধারণ করতে দেখা যায়।

এসব অসঙ্গতির কারণে ভিডিওটি ডিপফেক ভিডিও যাচাইয়ের টুল ‘DeepFake-o-meter’ এর মাধ্যমে যাচাই করা হয়। টুলটি ভিডিওটি যাচাই করে জানায়, এটি শতভাগ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে। 

Screenshot: DeepFake-o-meter Website 

সুতরাং, ইরানের হামলায় নিহত ইসরায়েলিদের লাশের কফিন দাবিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

চাঁদা না দেওয়ায় লঞ্চে সমন্বয়ক ও জঙ্গিগোষ্ঠীর ভাঙচুর ও লুটপাটের ভিডিও দাবিতে ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি, চাঁদা না দেওয়ায় কথিত সমন্বয়ক ও জঙ্গিগোষ্ঠী লঞ্চে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি চাঁদা না দেওয়ায় লঞ্চে কথিত সমন্বয়ক ও জঙ্গিগোষ্ঠীর ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোর নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভোগান্তির শিকার যাত্রীদের সঙ্গে লঞ্চ কর্তৃপক্ষের হওয়া দ্বন্দ্বের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে হওয়া সংঘর্ষের দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার ভিডিওটির ডানপাশে উপরে ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম এশিয়ান টেলিভিশনের একটি লোগো দেখতে পায়।

উক্ত লোগোর সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Asian Television-এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১০ জুন লঞ্চগুলোতে চলছে অনিয়মের রাজত্ব? দেখুন বিস্তারিত | Asian Television শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত প্রতিবেদনের শুরুর ১০ সেকেন্ডের ফুটেজের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর হুবহু মিল পাওয়া যায়। এছাড়াও উভয় ভিডিওর একই স্থানে এশিয়ান টেলিভিশনের লোগোও দেখতে পাওয়া যায়। যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়, উক্ত ভিডিওর শুরু অংশ কাট করে আলোচিত দাবিতে ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে। 

পরবর্তীতে পুরো প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, প্রতিবেদনটি ভোলা-ঢাকা-ভোলা লঞ্চ যাত্রীদের প্রতিদিনের ভোগান্তি নিয়ে। যথাসময়ে লঞ্চ সদরঘাটে না পৌঁছানোয় যাত্রীরা প্রতিবাদ করলেও লঞ্চকর্মীরা কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় উত্তেজিত যাত্রীরা লঞ্চে ভাঙচুর চালায়। আলোচিত ভিডিওর প্রথমে দেখতে পাওয়া চেয়ার ভাঙার দৃশ্যটি উক্ত ঘটনার। পরবর্তীতে লঞ্চটি সদরঘাটে পৌঁছালে লঞ্চকর্মীরা সাধারণ যাত্রীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এই সময়ের ঘটনাটি ভিডিওর শেষাংশে দেখতে পাওয়া যায়। যেখানে লাঠি হাতে দুইজন ব্যক্তিকে কয়েকজনের ওপর হামলা করতে দেখা যায়।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি চাঁদা না দেওয়ায় কথিত সমন্বয়ক কিংবা জঙ্গিগোষ্ঠীর লঞ্চে হামলা চালানোর নয়। 

সুতরাং, ভোলা থেকে ঢাকাগামী লঞ্চে হওয়া যাত্রী ও লঞ্চকর্মীদের পাল্টাপাল্টি হামলার ভিডিওকে চাঁদা না দেওয়ায় কথিত সমন্বয়ক ও জঙ্গিগোষ্ঠীর লঞ্চে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোর ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ডাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গে ছাত্রদল সভাপতি ও সা. সম্পাদককে জড়িয়ে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের নামে সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার 

0

সম্প্রতি, “ডাকসুর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেই বয়সসীমা, প্রার্থী হতে পারবেন যারা” শীর্ষক শিরোনামে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ছবি যুক্ত করে অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ডাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গে ছাত্রদল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ছবি যুক্ত করে ডেইলি ক্যাম্পাস কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ডেইলি ক্যাম্পাসে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ডের ইমেজ পরিবর্তনের মাধ্যমে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে থাকা ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে ডেইলি ক্যাম্পাসের লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ১৬ জুন, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে। 

উক্ত তথ্যাবলীর সূত্র ধরে ডেইলি ক্যাম্পাসের ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে গত ১৬ জুন তারিখে আলোচিত ছবি সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, ডেইলি ক্যাম্পাসের ওয়েবসাইটইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত ছবি সম্বলিত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে, গত ১৬ জুনে ডেইলি ক্যাম্পাসের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়, যেটির সাথে আলোচিত দাবিতে থাকা ফটোকার্ডের আংশিক সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

Photocard Comparison by Rumor Scanner 

মূল ফটোকার্ডের সঙ্গে আলোচিত দাবিতে থাকা ফটোকার্ডের তারিখ, লোগো এবং শিরোনামের মিল রয়েছে। তবে, উভয় ফটোকার্ডের ফিচার ফটোর ভিন্নতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ডেইলি ক্যাম্পাসের মূল ফটোকার্ডটিতে ছাত্রদল সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের ছবি না থাকলেও আলোচিত ফটোকার্ডে রয়েছে।

অর্থাৎ, ডেইলি ক্যাম্পাসের আসল ফটোকার্ডটির ফিচার ফটো ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত দাবির ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

মূল ফটোকার্ড সম্বলিত ডেইলি ক্যাম্পাসের পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, সান্ধ্যকালীন কোর্স, এক্সিকিউটিভ মাস্টার্স, ডিপ্লোমা ও ভাষা কোর্সের শিক্ষার্থীরা আর ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটার বা প্রার্থী হতে পারবেন না। একই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে অধিভুক্ত ও সংযুক্ত কলেজ/ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও। নির্বাচনে অংশ নিতে হলে শিক্ষার্থীকে পূর্ণকালীন এবং আবাসিক শিক্ষার্থী হতে হবে। 

গত ১৯ জুনে অপর এক পোস্টে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটিকে ভুয়া বলে নিশ্চিত করে এবং আসল ফটোকার্ডটি পেতে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের ফেসবুক পেজ দেখার আহ্বান জানায়। 

তাছাড়া, দেশের অন্য কোনো সংবাদমাধ্যমেও ছাত্রদল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ছবি ব্যবহারে আলোচিত দাবি সম্বলিত সংবাদ প্রকাশ হয়তে দেখা যায়নি। 

সুতরাং, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ছবি যুক্ত করে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র