Home Blog Page 163

২২ জানুয়ারি ঢাবি এলাকায় দুইটি নয়, একটি লাশ পাওয়া গেছে 

0

সম্প্রতি, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই প্রান্তে দুইটি ঝুলন্ত লাশ পাওয়া গেছে’- শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ২২ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় দুইটি নয় বরং, একটি লাশ পাওয়া গেছে। গণিত বিভাগের পাশের ফুটপাতে মেহগনি গাছের চূড়ায় গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় থেকে এই ঝুলন্ত লাশটি উদ্ধার করা হয়। ওই ব্যক্তির নাম- আবু সালেহ (৪৫)। 

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ২২ জানুয়ারি “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গাছে ঝুলছিল এক ব্যক্তির মৃতদেহ”- শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২২ জানুয়ারি সকাল পৌনে ০৯ টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়াম এলাকায় গাছে ঝুলতে থাকা দেখতে পান পথচারীরা। পরবর্তীতে পৌনে ১০ টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে মরদেহটি গাছ থেকে নামান। প্রাথমিকভাবে মৃত ব্যক্তির নাম ও পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

একই দিন ঢাকা ট্রিবিউনের ওয়েবসাইটে “ঢাবি ক্যাম্পাসের গাছে ঝুলন্ত মরদেহের পরিচয় মিলেছে” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণিত বিভাগের পাশের ফুটপাতে মেহগনি গাছের চূড়ায় গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলন্ত মৃত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশ। ওই ব্যক্তির নাম- আবু সালেহ (৪৫)। তিনি ঢাকা কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ। ২২ জানুয়ারি দুপুরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন রমনা বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ আলম।

একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছে প্রথম আলো, আজকের পত্রিকা এবং সমকাল

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গণমাধ্যমে গত ২২ জানুয়ারি দুইটি লাশ উদ্ধারের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত একাধিক সাংবাদিক এবং প্রক্টরের সাথে কথা বলে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যানেল ২৪ এর প্রতিনিধি মোঃ বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘দুইটি নয়, গত ২২ জানুয়ারি একটি লাশ পাওয়া গেছে। দুইটি লাশ পাওয়ার দাবিটি মিথ্যা। 

বাংলা ট্রিবিউনের ঢাবি প্রতিনিধি আবিদ হাসান রাসেল বলেন, আবু সালেহ নামের এক ব্যক্তির লাশ জিমনেসিয়ামের সামনে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। দুইটি লাশ পাওয়ার দাবিটি গুজব। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সাইফুদ্দীন আহমদ  বলেন, ‘লাশ একটি পাওয়া গেছে।’

সুতরাং, ২২ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় একটি লাশ পাওয়ার ঘটনাকে দুইটি লাশ পাওয়া গেছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র 

সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুমের গোপন ভিডিও দাবিতে মিথ্যা প্রচারণা

সম্প্রতি, সামাজিক মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নুসরাত তাবাসসুম এর নামে একটি আপত্তিকর ভিডিও ‘সমন্বয়ক নুসরাতের গোপন ভিডিও ফাঁস’ দাবিতে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটি প্রচারের পাশাপাশি ওই ভিডিওর প্রেক্ষিতে “বেডি সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম কট”, বেডি সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম ৩ মিনিট ১২ সেকেন্ড জাতিকে উপহার দিল” ইত্যাদি টেক্সট আকারেও পোস্ট দেয়া হচ্ছে।

ফেসবুক প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) ,এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায় নুসরাত তাবাসসুমকে নিয়ে প্রচারিত দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ইন্টারনেট বা অ্যাডাল্ট ওয়েবসাইট থেকে একটি পুরোনো ভিডিও সংগ্রহ করে সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেত্রী নুসরাত তাবাসসুমের একটি ছবি যুক্ত করে ভিডিওটি তার বলে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে বিভিন্ন পর্ণসাইটে প্রচারিত ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। অন্তত ২০২২ সাল থেকে ভিডিওটি বিভিন্ন পর্ণ ওয়েবসাইটে রয়েছে বলে দেখা যায়। এসব ওয়েবসাইটে ভিডিওর নারীর কোনো পরিচয়ের উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

Reverse image search results 

এছাড়াও, ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে করে, ২০২২ সালের সমন্বয়ক নুসরাতের ছবির সাথে তুলনা করে ওই ভিডিওর নারীর সাথে নুসরাত তাবাসসুমের মুখমণ্ডলের মিল পাওয়া যায়নি।

Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, ইন্টারনেটের আ্যাডাল্ট সাইটের একটি পুরনো ভিডিওকে নুসরাত তাবাসসুমের নামে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেত্রী নুসরাত তাবাসসুমের গোপন ভিডিও দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা ।

তথ্যসূত্র

  • বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ভিডিওটির কয়েকবছর ধরে উপস্থিতি
  • ভিডিও পর্যবেক্ষণ ও তুলনা

ভিডিও কনফারেন্সে শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্য দাবিতে পুরোনো ও সম্পাদিত ভিডিও প্রচার

গত বছরের ০৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি ও ভারতে আশ্রয় গ্রহণের পর থেকে পরিবর্তিত পটভূমিতে বিভিন্ন তথ্য-অপতথ্যের ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি ‘৫ই আগস্টের পর সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য প্রদান করছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হচ্ছে৷ 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

উক্ত দাবিতে এক্স-এ প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য প্রদান করেছে দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয়। মূলত, পুরোনো একটি ভিডিওতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় শেখ হাসিনার বক্তব্যের সাম্প্রতিক একটি অডিও প্রতিস্থাপন করার মাধ্যমে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়টি অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করা হলে এতে বাংলাদেশের সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাদেশ টেলিভিশন এর লোগো লক্ষ্য করা যায়৷ 

উক্ত সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ২০২৩ সালের ০৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ টেলিভিশন এর ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ‘জাতির উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র ভাষণ’ শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে। একইসাথে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ ২০২৩ সালের ০৬ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি পোস্টেও একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকারের বর্তমান মেয়াদের চার বছর পূর্তি উপলক্ষে ২০২৩ সালের ০৬ জানুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ প্রদান করে। 

তবে, বাংলাদেশ টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেল ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড চ্যানেলে পাওয়া ২০২৩ সালের ভিডিও এবং আলোচিত দাবির ভিত্তিতে প্রচারিত ভিডিও পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় যে, উভয় ভিডিওতে গঠনগত পার্থক্য বিদ্যমান। মূলত, ২০২৩ সালের মূল ভিডিওতে ‘মিরর ইমেজ এফেক্ট’ ব্যবহার করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে, মূল ভিডিওতে ডানপাশে থাকা সকল বস্তু আলোচিত ভিডিওতে বামপাশে এবং বামপাশে থাকা সকল বস্তু ডানপাশে অবস্থান করছে।

অতঃপর, ভিডিওগুলোতে থাকা অডিও বা শব্দ পর্যবেক্ষণে দেখা যায় যে, ২০২৩ সালের মূল ভিডিওর অডিও থেকে আলোচিত ভিডিওটির অডিও ভিন্ন।  

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটির অডিওতে থাকা তথ্যের সূত্র ধরে, HAB TV Online নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৯ জানুয়ারি প্রকাশিত ‘দক্ষিণ কোরিয়া থেকে বার্তা দিলেন শেখ হাসিনা | ভার্চুয়াল বৈঠকে কী বললেন?’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়৷ উক্ত ভিডিওটির অডিও অংশের সাথে আলোচিত ভিডিওটির অডিওর হুবহু মিল রয়েছে। মূলত, উক্ত ভিডিওটির অডিও অংশকে উল্লিখিত ২০২৩ সালের ভিডিওতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে৷ 

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে গত ২০ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি পোস্ট থেকে জানা যায়, গত ১৯ জানুয়ারি দক্ষিণ কোরিয়া আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়৷ উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তব্য প্রদান করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ পোস্টে থাকা একাধিক ছবির সাথে উল্লিখিত ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওতে থাকা পারিপার্শ্বিকতা পর্যবেক্ষণ করে নিশ্চিত করা যায়, ভিডিওটি ও এতে থাকা অডিও বার্তা ১৯ জানুয়ারিতে সিউলে দক্ষিণ কোরিয়া আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ সভায় ধারণকৃত। 

এছাড়া, ১৯ জানুয়ারির উক্ত প্রতিবাদ সভায় শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল বক্তব্য প্রদানের অডিওটি গত ২১ জানুয়ারি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়। 

উপরিউক্ত তথ্যাদির ভিত্তিতে নিশ্চিত করা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির ভিডিও অংশটি সাম্প্রতিক নয়, এটি ২০২৩ সালের একটি ভিডিও থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে; এবং অডিও অংশটি গত ১৯ জানুয়ারির একটি ভার্চুয়াল বক্তব্য থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে৷ 

সুতরাং, সম্প্রতি ভিডিও কনফারেন্সে শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রদান দাবিতে তার ২০২৩ সালের ভাষণের একটি ভিডিওতে তার গত ১৯ জানুয়ারির একটি ভার্চুয়াল বক্তব্যের অডিও প্রতিস্থাপন করে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পাদিত৷ 

তথ্যসূত্র

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে যমুনা টিভির নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

সম্প্রতি, শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে “আগামী ১ সপ্তাহের ভিতরে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান ডোনাল্ড ট্রাম্প” শীর্ষক শিরোনামে বেসরকারি ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম যমুনা টিভির লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড প্রচার করা হয়েছে। এর আগে ২০২৪ সালের নভেম্বরেও একই ফটোকার্ডটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। 

অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আগামী ১ সপ্তাহের ভিতরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান দাবিতে যমুনা টিভি ফটোকার্ড প্রকাশ করেছে। 

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

উক্ত দাবিতে ২০২৪ সালে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “আগামী ১ সপ্তাহের ভিতরে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান ডোনাল্ড ট্রাম্প” শীর্ষক শিরোনামে যমুনা টিভি কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পও এমন কোনো মন্তব্য করেমনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যমুনা টিভির ডিজাইনের আদলে  আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে যমুনা টিভির নাম ও লোগো উল্লেখ করা হয়েছে।

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে যমুনা টিভির ফেসবুক পেজে প্রচারিত সংবাদ ও ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেল এবং ওয়েবসাইটেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Comparison: Rumor Scanner

তাছাড়া, যমুনা টিভির ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলোর সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির ফন্ট ডিজাইনেও ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে এটি প্রকাশের তারিখ উল্লেখ নেই, যা সাধারণত যমুনা টিভির ফটোকার্ডে উল্লেখ করা হয়।

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করেও আলোচিত ফটোকার্ডটিতে থাকা শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান ডোনাল্ড ট্রাম্প শীর্ষক দাবির  সপক্ষে অন্য কোনো গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, আগামী ১ সপ্তাহের ভিতরে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান ডোনাল্ড ট্রাম্প শীর্ষক দাবিতে শিরোনামে যমুনা টিভির নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র

ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে তারেক রহমানসহ বিশিষ্টজনদের যোগদান দাবিতে সম্পাদিত ছবি ও ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার 

0

সম্প্রতি ‘ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন তারেক রহমানসহ বিশিষ্ট জনেরা’ শীর্ষক শিরোনামে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টিভির লোগো ও ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে৷ 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন তারেক রহমানসহ বিশিষ্ট জনেরা’ শীর্ষক শিরোনামে যমুনা টিভি কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে যমুনা টিভির  ফটোকার্ডের আদলে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে৷ প্রকৃতপক্ষে, ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে তারেক রহমানসহ বিশিষ্টজনদের যোগ দেওয়ার কোনো ঘটনাও ঘটেনি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবিটিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পের কাছাকাছি অবস্থানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল রয়েছে৷ 

উক্ত ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে বহুজাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘The Trump era begins’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়৷ উক্ত প্রতিবেদনের ফিচারে ব্যবহৃত ছবিটির সাথে আলোচিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবিটির আংশিক মিল রয়েছে৷ 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্ত্রী মেলানিয়াকে পাশে নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ গ্রহণ করার সময়ে ছবিটি ধারণ করা হয়৷ 

Comparison: Rumor Scanner 

সিএনএন প্রতিবেদনের ছবি ও আলোচিত ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ছবি দুটির পারিপার্শ্বিকতার মধ্য মিল থাকলেও ২০১৭ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানের ছবিটিতে ভিন্ন কয়েকজন ব্যক্তির মুখমণ্ডলের স্থলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস, তারেক রহমান ও আসিফ নজরুলের মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপন করার মাধ্যমে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে৷ 

স্টক ইমেজ ওয়েবসাইট গেটি ইমেজেও ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০১৭ সালে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের প্রায় একই একটি ছবি পাওয়া গিয়েছে।

পরবর্তীতে, আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে এতে যমুনা টিভির লোগো দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়া উক্ত ফটোকার্ডটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ‘২০ জানুয়ারি ২০২৫’ উল্লেখ করা হয়েছে।

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে যমুনা টিভি’র ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গত ২০ জানুয়ারি ২০২৫ প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত দাবি সম্বলিত  কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Comparison: Rumor Scanner 

তাছাড়া, আলোচিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে যমুনা টিভির প্রচলিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্টের মধ্যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়৷ 

এই বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে যমুনা টিভি’র ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ফটোকার্ড ও সংবাদ পর্যবেক্ষণ করা হয়, তবে সেখানে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বরং, গত ২১ জানুয়ারি যমুনা টিভির ভেরিফাইয়েড ফেসবুক পেজ থেকে এই ফটোকার্ডটির বিষয় নিয়ে অপর একটি ফটোকার্ড পোস্ট করে বলা হয়, ‘যমুনা টিভি এমন সংবাদ প্রচার করেনি; গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না’। 

এছাড়াও, যমুনা টিভি ব্যতীত অন্য কোনো গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট কোনো নির্ভর‍যোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা তথ্য পাওয়া যায়নি।

উপরিউক্ত তথ্যাবলির আলোকে বলা যায়, আলোচিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবিটি সাম্প্রতিক কোনো ছবি নয়, এটি ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানের ছবিকে সম্পাদনা করে তৈরি করা হয়েছে এবং দাবিকৃত ফটোকার্ডটি যমুনা টিভি প্রকাশ করেনি।

সুতরাং, ‘ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন তারেক রহমানসহ বিশিষ্ট জনেরা’ শীর্ষক শিরোনামে যমুনা টিভির নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট এবং ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবিটি সম্পাদিত৷ 

তথ্যসূত্র

গোপনে আপনার ফেসবুক প্রোফাইল কারা দেখছে তাদের নাম জানা সম্ভব নয়

সম্প্রতি অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ প্রকাশ “জেনে নিন আপনার ফেসবুক প্রোফাইল কে দেখছেন” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনটিতে তারা কয়েকটি ধাপ উল্লেখ করে দাবি করে, উক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করে জানা সম্ভব যে কারা আপনার ফেসবুক প্রোফাইল দেখছে।

উক্ত দাবিতে সংবাদ প্রকাশ কর্তৃক প্রচারিত সংবাদ প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নীরবে আপনার ফেসবুক প্রোফাইল ভিজিট করছে কে, তা জানা সম্ভব নয় বরং এ ধরনের কোনো সুবিধা ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ব্যবহারকারীদের দেয় না। 

মূলত, সংবাদ প্রকাশের এ সংক্রান্ত দাবি সম্বলিত প্রতিবেদনটিতে প্রোফাইল পরিদর্শনকারীর তালিকা বের করার যে কৌশল দেখানো হয়েছে সেই কৌশল ভিন্ন ভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রয়োগ এবং বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই পদ্ধতিটি কার্যকর নয় বলে প্রমাণ পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার। এছাড়া, প্রোফাইল পরিদর্শনকারীর তালিকা দেখা সম্পর্কে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তাদের হেল্প সেন্টারে জানিয়েছে, “ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তাদের প্রোফাইল কে দেখছে তা ট্র্যাক করতে দেয় না। থার্ডপার্টি অ্যাপগুলোও এই কার্যকারিতা প্রদান করতে অক্ষম।”

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোর মধ্যে এ বিষয়টি নিয়ে প্রথমদিকে “জানতে চান কে দেখল আপনার ফেসবুক প্রোফাইল?” শীর্ষক শিরোনামে ২০১৬ সালের ৮ মে দৈনিক ‘প্রথম আলো’ এর অনলাইন সংস্করণে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম এ তথ্যটি প্রচার করে আসছে। উক্ত তথ্যের সত্যতা অনুসন্ধানে ২০২২ সালে বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে বিস্তারিত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সাংবাদিক শাহেদ আলমকে জড়িয়ে একাধিক গণমাধ্যমের নামে ভুয়া ফটোকার্ডে অপপ্রচার

0

গত ২১ জানুয়ারি সাংবাদিক শাহেদ আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে ঢাবি শিবিরের সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েমের নামে ভুয়া মন্তব্যের একটি ফটোকার্ড পোস্ট করেন। এরই প্রেক্ষিতে শাহেদ আলমকে জড়িয়ে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভি, মূলধারার গণমাধ্যম কালবেলা ও বাংলা আউটলুকের (২) ডিজাইন সম্বলিত মোট ৪ টি ফটোকার্ড প্রকাশ করা হয়েছে।

যা দাবি করা হচ্ছে

১. আমেরিকাতে মাংস চুরির অপরাধে সাংবাদিক শাহেদ আলমের জরিমানা করেছে আদালত (আরটিভির ফটোকার্ড)
২. ছাগল চুরি করতে গিয়ে ধরা খেলো শাহেদ আলম (কালবেলার ফটোকার্ড)
৩. পলাতক হাসিনার সাথে যোগাযোগ রাখচেন ইউটিউবার সাহেদ আলম। ভিডিও কল স্কিনশট ফাঁস (বাংলা আউটলুকের ফটোকার্ড)
৪. প্রবাসী ইউটিউব সাংবাদিক শাহেদ আলম এর স্ত্রী শাহাবাগী আক্তার পালিয়েছে রিক্সা ড্রাইভার এর সাথে (বাংলা আউটলুকের ফটোকার্ড)।

আরটিভির ফটোকার্ড দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

কালবেলার ফটোকার্ড দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

বাংলা আউটলুকের ফটোকার্ড (১) দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

বাংলা আউটলুকের ফটোকার্ড (২) দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাংবাদিক শাহেদ আলমের আমেরিকায় মাংস চুরি, ছাগল চুরি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে ভিডিওকলে যোগাযোগ কিংবা স্ত্রী রিক্সা ড্রাইভারের সাথে পালিয়ে যাওয়া নিয়ে আরটিভি, কালবেলা কিংবা বাংলা আউটলুক কোনো ফটোকার্ড কিংবা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, উক্ত গণমাধ্যমগুলোর ডিজাইন নকল করে আলোচিত ফটোকার্ডগুলো প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডগুলোতে উল্লেখিত দাবিগুলোর সত্যতা যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক একাধিক কি ওয়ার্ড সার্চ করেও গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে উক্ত দাবিগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে আলোচিত ফটোকার্ডগুলো পৃথকভাবে যাচাই করেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।

ফটোকার্ড যাচাই- ১ (আরটিভি)

‘আমেরিকাতে মাংস চুরির অপরাধে সাংবাদিক শাহেদ আলমের জরিমানা করেছে আদালত’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে আরটিভি’র লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২২ জানুয়ারি, ২০২৫ এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে আরটিভি’র ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, আলোচিত ফটোকার্ডটির সাথে আরটিভি’র প্রচলিত ফটোকার্ডের টেক্সট ফন্ট ও ডিজাইনের ভিন্নতা রয়েছে।

Photocard Comparison by Rumor Scanner 

অর্থাৎ, আরটিভি এমন কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি।

ফটোকার্ড যাচাই- ২ (কালবেলা)

‘ছাগল চুরি করতে গিয়ে ধরা খেলো শাহেদ আলম’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে কালবেলা’র লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২২ জানুয়ারি, ২০২৫ এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে কালবেলা’র অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, আলোচিত ফটোকার্ডটির সাথে কালবেলা’র প্রচলিত ফটোকার্ডের টেক্সট ফন্ট ও ডিজাইনের ভিন্নতা রয়েছে।

Photocard Comparison by Rumor Scanner 

অর্থাৎ, কালবেলা এমন কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি।

ফটোকার্ড যাচাই- ৩ (বাংলা আউটলুক)

‘পলাতক হাসিনার সাথে যোগাযোগ রাখচেন ইউটিউবার সাহেদ আলম। ভিডিও কল স্কিনশট ফাঁস’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে বাংলা আউটলুকের লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২০ জানুয়ারি, ২০২৫ এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে বাংলা আউটলুকের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, আলোচিত ফটোকার্ডটির সাথে বাংলা আউটলুকের প্রচলিত ফটোকার্ডের টেক্সট ফন্টের ভিন্নতা রয়েছে।

Photocard Comparison by Rumor Scanner

অর্থাৎ, বাংলা আউটলুক এমন কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি।

ফটোকার্ড যাচাই- ৪ (বাংলা আউটলুক)

‘প্রবাসী ইউটিউব সাংবাদিক শাহেদ আলম এর স্ত্রী শাহাবাগী আক্তার পালিয়েছে রিক্সা ড্রাইভার এর সাথে’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে বাংলা আউটলুকের লোগো এবং এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ২০ জানুয়ারি, ২০২৫ এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে বাংলা আউটলুকের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, আলোচিত ফটোকার্ডটির সাথে বাংলা আউটলুকের প্রচলিত ফটোকার্ডের টেক্সট ফন্টের ভিন্নতা রয়েছে।

Photocard Comparison by Rumor Scanner 

তাছাড়া, গত ২২ জানুয়ারি গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক পোস্টে উক্ত ফটোকার্ডটিকে ভুয়া বলে জানানো হয়।

অর্থাৎ, বাংলা আউটলুক এমন কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি।

সুতরাং, শাহেদ আলমকে জড়িয়ে আরটিভি, কালবেলা ও বাংলা আউটলুকের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

সড়ক দুর্ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীর নিহতের ঘটনাকে ডেঙ্গু মশার কামড়ে নিহত দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক ব্যক্তির দুইটি ছবি প্রচার করে ক্যাপশনে দাবি করা হয়েছে, “ডেঙ্গু মশার কামড়ে বৈষম্যবিরোধী আন্ডোলনের রাষ্ট্রপতি মারা গেছে। তোরা সব রাজুতে আই। আওয়ামী ডেঙ্গুমশাকে দেশছাড়া করবো।”

উল্লেখ্য যে, প্রচারিত ছবি দুইটির মধ্যে একটি ছবি হচ্ছে রাষ্ট্রপতি লেখা সম্বলিত পতাকার পাশে একজন ব্যক্তির বসা অবস্থায় ধারণকৃত এবং অপর ছবিটি নিহত অবস্থায় ধারণকৃত।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে এক্সে সাবেক টুইটার প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিতে প্রদর্শিত ব্যক্তির নাম তানভীর আহমেদ রনি। তিনি ডেঙ্গু মশার কামড়ে বা সাম্প্রতিক সময়ে নিহত হননি বরং সড়ক দুর্ঘটনায় গত ১২ সেপ্টেম্বরে নিহত হয়েছেন।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবি দুইটির প্রথমটি অর্থাৎ রাষ্ট্রপতি লেখা সম্বলিত পতাকার সাথে উক্ত ব্যক্তির ধারণকৃত ছবিটির বিষয়ে অনুসন্ধান করলে জানা যায়, ছবিটি তানভীর আহমেদ রনি নামের এক ব্যক্তির। রিউমর স্ক্যানার টিম অনুসন্ধান করে তানভীর আহমেদ রনির ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি খুঁজে পায় এবং তার অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করলে গত ০৭ আগস্টে উক্ত অ্যাকাউন্টটিতে একটি ভিডিও পোস্ট হতে দেখা যায়। উক্ত ভিডিওটি তানভীরের একাধিক ছবির সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছিল এবং উক্ত ছবিগুলোর মধ্যে আলোচিত উক্ত ছবিটিও পাওয়া যায়।

 Comparison : Rumor Scanner

এছাড়া, তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ৫ আগস্টে পোস্ট হওয়া আরেকটি ছবি পাওয়া যায় যার সাথে আলোচিত ছবিটির সাদৃশ্য পাওয়া যায় এবং নিশ্চিত হওয়া যায় যে আলোচিত প্রথম ছবিটি তানভীর রনির।

পরবর্তী অনুসন্ধানে নিহত ব্যক্তির ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ‘কচুয়া নিউজ ২৪’ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ১২ সেপ্টেম্বরে প্রচারিত একটি পোস্টে আরেকটি ছবির সাথে উক্ত ছবিটির সংযুক্তি পাওয়া যায়৷ ক্যাপশনে বলা হয়, “কচুয়া উপজেলার ১০ নং গোহাট উওর ইউনিয়নের পালগীরি গ্রামের মোঃ জাহেদ (দীপু) ও তার খালাতো ভাই  তানভির (রনি) আজ সন্ধ্যায় কুমিল্লা ঢাকা মহাসড়কের  দাউদকান্দির গৌরিপুর বাইক এক্সিডেন্টে ইন্তেকাল করেন ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন ।”

Comparison : Rumor Scanner

এরই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে মূলধারার সংবাদমাধ্যম দৈনিক ইনকিলাবের ওয়েবসাইটে “সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল কচুয়ার দুই শিক্ষার্থীর” শীর্ষক শিরোনামে ২০২৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল চাঁদপুরের কচুয়ার দুই মেধাবী শিক্ষার্থীর। বৃহস্পতিবার (২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে ঢাকা- চট্রগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া পাখির ব্রীজের উপর উঠার সময় মালবাহী লরীর চাপায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। নিহতরা হলেন কচুয়া উপজেলার পালগিরি গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে তানভীর আহমেদ রনি (২৬) এবং দুলাল মিয়ার ছেলে জাহিদ হাসান জিপু (২৫)। তারা দুইজনই ঢাকা কলেজের মেধাবী ছাত্র এবং খালাতো ভাই ।” উক্ত প্রতিবেদনটিতে নিহত হওয়া ব্যক্তি দুইজনের ছবিও সংযুক্ত করা হয় যেখানে তানভীর আহমেদ রনির ছবিরও সংযুক্তি পাওয়া যায়।

এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনুসন্ধান করলেও সড়ক দুর্ঘটনায় তানভীর আহমেদ রনির নিহত হওয়ার বিষয়ে একাধিক পোস্ট পাওয়া যায় যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, প্রচারিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং গত সেপ্টেম্বর মাসের এবং তানভীর আহমেদ রনি ডেঙ্গু মশার কামড়ে নয় বরং, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন।

সুতরাং, সড়ক দুর্ঘটনায় গত সেপ্টেম্বর মাসে নিহত হওয়া তানভীর আহমেদ রনির ছবি প্রচার করে সাম্প্রতিক সময়ে তিনি ডেঙ্গু মশার কামড়ে নিহত হয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছেন; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

হালনাগাদ/ Update

২৬ জানুয়ারি, ২০২৫ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়ে একই দাবি সম্বলিত এক্স পোস্ট আমাদের নজরে আসার প্রেক্ষিতে উক্ত পোস্টগুলোকে প্রতিবেদনে দাবি হিসেবে যুক্ত করা হলো।

অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশচেষ্টার অভিযোগে আটক হওয়ার ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক আঙ্গিকে অপপ্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি প্রচার করা হয়েছে, “আমি ইতিমধ্যে জানি যে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের পক্ষে কেউ দাঁড়াবে না। খুশি রায়, এক হিন্দু মেয়ে, সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনে সক্রিয় ছিল। ইসলামী প্রশাসন তাকে গ্রেপ্তার করেছে।” এছাড়াও দাবি করা হয়েছে, “যারা সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনে কাজ করেছে, তাদেরকে ট্র্যাক করা হচ্ছে এবং মামলা দেওয়া হচ্ছে। খুশি রায়ের পুরো পরিবারকেই ইসলামী প্রশাসন গ্রেপ্তার করেছে।”

অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে যে সংখ্যালঘু অধিকার নিয়ে কাজ করার কারণে খুশি রায়কে আটক করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সংখ্যালঘু অধিকার নিয়ে কাজ করার কারণে খুশি রায়কে আটক করা হয়নি বরং, অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশচেষ্টার অভিযোগে আরো কয়েকজন ব্যক্তির সাথে তাকেও আটক করা হয়। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্ট পর্যবেক্ষণ করলে তাতে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ২০ জানুয়ারি “পঞ্চগড় সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা, পাঁচ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, “পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বড়শশী সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টার অভিযোগে দুই দম্পতিসহ মোট পাঁচ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল রোববার (১৯ জানুয়ারি) দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের বড়শশী সীমান্তের ৭৭৭ নম্বর মেইন পিলারের ৬ নম্বর সাব–পিলার থেকে প্রায় ১০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কাজীপাড়া এলাকায় তাঁদের আটক করেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা। পরে মামলা দিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গ্রেপ্তার পাঁচজনের সঙ্গে তিন শিশুকে দেওয়া হয় স্বজনদের হেফাজতে। […] গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার ছোট চণ্ডীপুর এলাকার বিশ্বজিৎ রায় (২৭), তাঁর স্ত্রী খুশি রায় (২৩), কাহারোল উপজেলার তেলিয়ান এলাকার রতন রায় (৩০), তাঁর স্ত্রী চন্দনা রানী রায় (২৮) ও পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার উৎকুড়া এলাকার বাসিন্দা সুজন রায় (২১)। […] বিজিবির জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা জানান, ভারতে আত্মীয়ের বাড়িতে যেতে অনুপ্রবেশের উদ্দেশ্যে একাধিক দালাল চক্রের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা চুক্তিতে তাঁরা সীমান্তবর্তী এলাকায় এসেছেন। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া তিনটি মুঠোফোন ও বাংলাদেশি ৪ হাজার ৫৮৪ টাকা জব্দ করা হয়। […]  বোদা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রেজওয়ানুল হক মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচজনের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের চেষ্টার অভিযোগে (পাসপোর্ট আইনে) একটি মামলা করেছে বিজিবি। এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঁচজনকে আদালতে হাজির করার প্রক্রিয়া চলছে।”

তাছাড়া, একইদিনে মূলধারার সংবাদমাধ্যম সমকালে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন থেকেও জানা যায়, পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশচেষ্টার অভিযোগে নারী ও শিশুসহ আটজনকে আটক করেছে বিজিবি যার মধ্যে খুশি রায়ের নামও অন্তর্ভুক্ত। রোববার (১৯ জানুয়ারি) গভীর রাতে বোদা উপজেলার কাজীপাড়া সীমান্ত এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তবে মুচলেকা নিয়ে শিশুদের তাদের স্বজনদের কাছে দেওয়া হয়েছে।

একই তথ্য আরো একাধিক সংবাদমাধ্যম সূত্রেও জানা যায়। তবে, কোথাও খুশি রায়কে সংখ্যালঘুর অধিকার নিয়ে কথা বলার কারণে বা সাম্প্রদায়িক কারণে আটক করার কোনো উল্লেখ বা তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও নানা পোস্ট থেকে জানা যায়, আলোচিত ধর্মীয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর খুশি রায় এবং অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ চেষ্টার অভিযোগে আটক হওয়া খুশি রায় একই ব্যক্তি।

সুতরাং, অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশচেষ্টার অভিযোগে আটককৃত খুশি রায়কে সংখ্যালঘু অধিকার নিয়ে কাজ করার কারণে আটক করা হয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

পুরোনো ছবির মাধ্যমে ওবায়দুল কাদেরের হাসপাতালে ভর্তির ভুয়া খবর প্রচার

0

সম্প্রতি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের শয্যাশায়ী অবস্থার ছবিসহ একটি ফটোকার্ড প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, তিনি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন এবং দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে ওবায়দুল কাদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার তথ্যটি সত্য নয় বরং ২০১৯ সালে তার অসুস্থতার ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত পুরোনো একটি ছবি ব্যবহার করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কোনো সংবাদমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে ওবায়দুল কাদেরের হাসপাতালে ভর্তি কিংবা দেশবাসীর কাছে দোয়া চাওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে, দাবিটির সাথে প্রচারিত ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে, ২০১৯ সালের ৩ মার্চ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল যুগান্তরের ওয়েবসাইটে “কাদের কাদের বলে ডাকতেই চোখের পাতা নড়ে উঠল” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সাথে আলোচিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবিটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সেসময় হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ওবায়দুল কাদেরকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসা গ্রহণ করে সুস্থ হয়ে ফিরেও এসেছিলেন তিনি।

অর্থাৎ, এই ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

এছাড়া, গত ০৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা গুঞ্জন চললেও তবে বর্তমানে তিনি কোথায় অবস্থান করছেন, সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দিলেও, ওবায়দুল কাদেরকে এখনো পর্যন্ত কোনো বিবৃতি বা মন্তব্য দিতে দেখা যায়নি।

সুতরাং, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের হাসপাতালে ভর্তি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র