Home Blog Page 137

শিশুর থানাহাজতে থাকার প্রায় ৯ বছর পুরোনো ঘটনা সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে থানাহাজতে একটি শিশুর ছবি প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “বিশ্ব মানবতা আজ চরম বিপর্যয়ে! আওয়ামী লীগ করার অপরাধে মায়ের সাথে এই ছোট্ট অবুঝ শিশুর ঠাঁই হলো কারাগারে। তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”

অর্থাৎ, দাবি করা হয়েছে যে প্রচারিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শিশুর থানাহাজতে থাকার প্রচারিত ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ২০১৫ সালের প্রায় ৯ বছর পুরোনো এক ঘটনার ছবি আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রচারিত ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ২০১৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বরে মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

“১১ মাসের শিশুর ১৯ ঘণ্টা হাজতবাস” শীর্ষক শিরোনামের উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটিতে প্রচারিত ছবিটির সংযুক্তি পাওয়া যায় এবং ছবির বর্ণনায় লেখা হয়, “মহেশপুর থানাহাজতে শিশু রয়েল”। ছবিটির ঘটনার বিষয়ে উক্ত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “[থানাহাজতে প্রদর্শিত শিশু] রয়েলের বয়স ১১ মাস। বুধবার [২০১৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর] রাতে তার বাবাকে [রাজু আহম্মদ] ধরতে গিয়েছিল পুলিশ। না পেয়ে ধরে নিয়ে আসে তার মাকে, সঙ্গে তাকেও। এরপর মা ও শিশুপুত্রকে ১৯ ঘণ্টা আটকে রাখা হয় থানাহাজতে। ঘটনাটি ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার।” উক্ত প্রতিবেদনটিতে রাজুর বিরুদ্ধে থাকা অপরাধ বা রাজনৈতিক পরিচয়ের কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

এছাড়া, প্রচারিত উক্ত ছবির সংযুক্তিসহ সংবাদমাধ্যম বিডিনিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে ২০১৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত আরেকটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

 “মা-শিশুকে নিরাপত্তার জন্য থানায় নেওয়া হয়: পুলিশ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়, “মহেশপুর থানার ওসি শাহিদুল ইসলাম শাহীন বলেন, একদল লোক আব্দুল আজিজের বাড়িতে হামলা করায় পুলিশ তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। শুধু মাকে আনা হলে শিশুটিকে তো একা রেখে আসা যায় না, তাই তাকেও নিয়ে আসা হয় বলে জানান তিনি। ওসি বলেন, শিশু ও মাকে হাজতে রাখা হয়নি, গ্রিল দেওয়া বারান্দায় রাখা হয়েছিল। পরদিন সকালে ছেড়ে দেওয়া হয়।”

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, প্রচারিত ছবিটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলের নয়। প্রকৃতপক্ষে এটি আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ের ছবি।

সুতরাং, থানাহাজতে ধারণকৃত শিশুর প্রায় ৯ বছর পুরোনো ছবি সাম্প্রতিক সময়ে বাবা আওয়ামী লীগ কর্মী হওয়ায় শিশু কারাগারে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আয়নাঘরের দেওয়ালেও ‘জয় বাংলা’ লেখা দাবিতে প্রচারিত ছবিটি সম্পাদিত

0

সম্প্রতি, আয়নাঘরের দেওয়ালেও ‘জয় বাংলা’ লেখা! দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, আয়নাঘরের দেয়ালের স্থিরচিত্র যেটির দিকে ড মুহম্মদ ইউনুস সহ আরো কয়েকজন মাননীয় উপদেষ্টা ‘জয় বাংলা’ লেখা দেয়ালের তাকিয়ে আছেন , অডিওতে বিকৃত হাসির শব্দ শুনতে পাওয়া যায়। 

এক্সে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, আয়নাঘরের দেয়ালে ‘জয় বাংলা’ লেখা দেখা যাওয়া সংক্রান্ত দাবির ভিডিওটি আসল নয় বরং, আয়নাঘরের একটি ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে তৈরি ছবি ভিডিওর মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক The Business Standard এর ওয়েবসাইটে গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত “What we saw was far from humanity: CA Yunus visits Aynaghar at DGFI” শীর্ষক একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত ছবির পারিপার্শ্বিক অবস্থার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির তুলনা করলে লেখা ব্যতীত সবকিছুর সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

Comparison: rumor scanner

উক্ত ভিডিওটির লেখা ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে “জয় বাংলা” বসানো হয়েছে।

এছাড়া একাধিক গনমাধ্যম এই ছবিটি প্রকাশ করেছে। দেখুন প্রথম আলো, যমুনা টিভি। এসব প্রতিবেদনের ছবিতেও জয় বাংলা লেখা পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, আয়নাঘরের দেওয়ালেও ‘জয় বাংলা’ লেখা দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির ছবিটি সম্পাদিত এবং দাবিটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

কামড়ে সমন্বয়কের অণ্ডকোষ নিয়ে গেল শিয়াল দাবিতে জনকণ্ঠের নামে ভুয়া ফটোকার্ড

0

সম্প্রতি ‘কামড়ে সমন্বয়কের অণ্ডকোষ নিয়ে গেল শিয়াল!’ শীর্ষক শিরোনামে মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক জনকণ্ঠের লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘কামড়ে সমন্বয়কের অণ্ডকোষ নিয়ে গেল শিয়াল’ শিরোনামে দৈনিক জনকণ্ঠের কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে জনকণ্ঠের ডিজাইন ব্যবহার করে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করে প্রচার করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে জনকণ্ঠের লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ২৬ জানুয়ারি, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, জনকণ্ঠের ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

এই বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে জনকণ্ঠের  ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করা হয়। সেখানে গত ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ ‘কামড়ে পথচারীর অণ্ডকোষ নিয়ে গেল শিয়াল! (ভিডিওসহ)’’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, লালমনিরহাটে একদম অপ্রত্যাশিতভাবে শিয়ালের আক্রমণ বেড়ে গেছে। গত ২০ জানুয়ারি রাতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় শিয়ালের কামড়ে বেশ কয়েকজন পথচারী আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় সবাই ভয়ে কাঁপছে। এই রাতে মিশনমোড়, সার্কিট হাউস, পুলিশ লাইন ও বটতলা এলাকায় শিয়ালটি হঠাৎ আক্রমণ শুরু করে। প্রথমে শিয়ালটি ট্রাক শ্রমিক জেমস্ পিটার শচিনকে কামড়ে তার অণ্ডকোষের অংশ ছিঁড়ে নিয়ে যায়। শচিন অনেক সময় ধরে শিয়ালের সঙ্গে লড়াই করে নিজেকে রক্ষা করেন। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। 

এছাড়া, দেশের একাধিক গণমাধ্যম (১,,) এ বিষয়ে একই দাবিতে সংবাদ প্রচার করে। 

তবে, গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে আহত ব্যক্তির পরিচয় সমন্বয়ক বলে উল্লেখ করা হয়নি। 

সুতরাং, ‘কামড়ে সমন্বয়কের অণ্ডকোষ নিয়ে গেল শিয়াল’ শীর্ষক শিরোনামে জনকণ্ঠের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

ইরানের বাস স্টপেজ দাবিতে ভাইরাল ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে যেখানে একটি শৈল্পিক বাস স্টপেজের ছবি দেখিয়ে দাবি করা হচ্ছে, ছবিটি ইরানের একটি বাস স্টপেজের ছবি। 

উক্ত দাবিতে ছড়িয়ে পড়া পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইরানের বাস স্টপেজের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিটি বাস্তব নয়। বরং এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে ‘Pooriya Zamani’ নামের একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি পোস্টে হুবহু একই ছবি পাওয়া যায়।

ওই পোস্টে আলোচিত ছবিটির পাশাপাশি একই ধাঁচের আরও অসংখ্য ছবি দেখা যায়। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পোস্টের প্রতিটি ছবিতে একটি শৈল্পিক প্যাটার্ন ফুটে উঠেছে। ওই ইন্সটাগ্রাম পোস্টের বিবরণ থেকে জানা যায়, ছবিগুলো এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি। 

বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিত করার জন্য রিউমর স্ক্যানার টিম ডিপফেক শনাক্তকরণ প্ল্যাটফর্ম সাইট ইঞ্জিন ব্যবহার করে ছবিটি বিশ্লেষণ করে। সাইট ইঞ্জিনের বিশ্লেষণে ছবিটি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি হওয়ার পক্ষে ৯৪% পর্যন্ত নিশ্চিত ফলাফল পাওয়া গেছে।

সুতরাং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি একটি ছবি ইরানের বাস্তব বাস স্টপেজের দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

জামাত শিবিরকে জঙ্গি সংগঠন ঘোষণার দাবিতে আসিফ মাহমুদের নামে বাংলা ভিশনের নকল ফটোকার্ড প্রচার 

0

সম্প্রতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন (এলজিআরডি) ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে বর্তমান সরকার শিগগিরই পদক্ষেপ নেবে। এরই প্রেক্ষিতে, “জামাত শিবিরকে জঙ্গী সংগঠন ঘোষণা শিগগিরই পদক্ষেপ: আসিফ মাহমুদ” শীর্ষক শিরোনামে মূলধারার গণমাধ্যম বাংলা ভিশনের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে  (আর্কাইভ ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে  (আর্কাইভ )।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জামাত শিবিরকে জঙ্গি সংগঠন ঘোষণা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। বরং, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ সংক্রান্ত একটি মন্তব্যে নিয়ে মূলধারার গণমাধ্যম বাংলা ভিশনে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড বিকৃত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে কোনো গণমাধ্যমের লোগো নেই। তবে, ফটোকার্ডের নীচের বাম কোণে এটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ এর উল্লেখ করা হয়েছে।

পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে মূলধারার গণমাধ্যম বাংলা ভিশনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে  “আ. লীগ নিষিদ্ধ করতে শিগগিরই পদক্ষেপ: আসিফ মাহমুদ” শীর্ষক শিরোনামে গত ৭ ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত মূল ফটোকার্ডটি খুঁজে পাওয়া যায়। এই ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এটি বিকৃত করেই আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

পাশাপাশি, সাম্প্রতিক সময়ে ‘জামাত শিবিরকে জঙ্গী সংগঠন ঘোষণা শিগগিরই পদক্ষেপ: আসিফ মাহমুদ’ শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা খবর বাংলা ভিশন সহ অন্য কোনো গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Comparison: Rumor Scanner 

বাংলা ভিশন নিউজের ফেসবুক পেজে প্রচারিত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ সংক্রান্ত সংবাদ থেকে জানা যায়, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সরকারী বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একধরনের ‘ঐকমত্য’ তৈরি হয়েছে। এটাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন তিনি। দেশের মানুষ আওয়ামীলীগের অগণতান্ত্রিক ও একগুঁয়েমি মনোভাব এবং কার্যকলাপ মেনে নিতে পারেনি বলেই দলটি নিষিদ্ধ করাইয় তাদের মধ্যে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এ ধরণের ঐকমত্য তৈরি হলে সরকারের জন্য আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধ করা সহজ হবে বলে মনে করেন তিনি।

সুতরাং,  “জামাত শিবিরকে জঙ্গী সংগঠন ঘোষণা শিগগিরই পদক্ষেপ: আসিফ মাহমুদ” শীর্ষক শিরোনামে ফেসবুকে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

সাম্প্রতিক সময়ে জয় বাংলার মিছিল দাবিতে প্রচারিত মিছিলের ভিডিওটি জুলাইয়ের কোটা আন্দোলনের

0

সম্প্রতি, ‘মাদারীপুর জয় বাংলার খেলা শুরু হয়ে গেছে’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মাদারীপুরে জয় বাংলার খেলা শুরু হয়ে গেছে দাবিতে প্রচারিত মিছিলের ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে এতে “অ্যাকশন টু অ্যাকশন ডাইরেক অ্যাকশন, আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দিব না…” শীর্ষক স্লোগান শোনা যায়।

পরবর্তীতে ভিডিওটি থেকে কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘Rakibul Islam Sajib’ নামের ফেসবুক অ্যকাউন্টে ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। যার একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির ক্যাপশনে দাবি করা  হয়, ‘সাবাস! প্রিয় মাদারীপুর। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই বিজয় হবে ইনশাআল্লাহ’

‘ক্যাম্পাস সমাচার’ নামক ফেসবুক পেজেও  একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই প্রচারিত ভিডিওটিতে ক্যাপশনে #কোটা হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে বলা হয়, ‘মাদারীপুর শহরে শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চলছে।  ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই বিজয় হবে ইনশাইল্লাহ। বেশি বেশি শেয়ার করুন’

Screenshot: ক্যাম্পাস সমাচার (Facebook)

এছাড়া, সেসময় একই দাবিতে বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট (, ) থেকে এই ভিডিওটি প্রচার করা হয়।

অর্থাৎ, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

সুতরাং, ২০২৪ সালের ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে ‘মাদারীপুর জয় বাংলার খেলা শুরু হয়ে গেছে’ শীর্ষক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

  • Rakibul Islam Sajib: Facebook Video
  • ক্যাম্পাস সমাচার: Facebook Video
  • মাদারীপুর সমাচার: Facebook Video
  • Jisan Ahmed: Facebook Video

মেসির ছেলের এক ম্যাচে ১১ গোলের খবরটি ভুয়া

0

বার্সেলোনায় দীর্ঘ ২০ বছরের ক্যারিয়ার শেষে, ২০২১ সালে লিওনেল মেসি যোগ দেন প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)-তে। দুই মৌসুম পর, ২০২৩ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকার (এমএলএস)-এর ক্লাব ইন্টার মায়ামি সিএফে পাড়ি জমান, যেখানে তার বড় ছেলে থিয়াগো মেসিও জুনিয়র দলে খেলা শুরু করেন।

সম্প্রতি, অনূর্ধ্ব-১৩ এমএলএস কাপে আটলান্টা ইউনাইটেডের বিপক্ষে থিয়াগো মেসির ১১ গোল করার একটি দাবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। দেশবিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং খ্যাতনামা ফুটবল সাংবাদিক ফাব্রিজিও রোমানো-সহ অনেকে এটি প্রচার করেন।

এই দাবিতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন: সময় টিভি

একই দাবিতে সাংবাদিক ফাব্রিজিও রোমানো ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে। 

ফেসবুকে প্রচারিত আরও কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।  

এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এমএলএস কাপে অনূর্ধ্ব-১৩ এর ম্যাচে আটলান্টা ইউনাইটেডের বিপক্ষে থিয়াগো মেসির ১১ গোল করার দাবিটি সত্য নয়। বরং, এমএলএস-এর অফিসিয়াল তথ্য, ম্যাচ রিপোর্ট বা কোনো বিশ্বাসযোগ্য সূত্রে এর প্রমাণ মেলেনি। এছাড়া, একাধিক ক্রীড়া সাংবাদিকও এটিকে গুজব বলে নিশ্চিত করেছেন।

আলোচিত দাবিটির সত্যতা যাচাই করতে ইন্টার মায়ামি ফুটবল ক্লাবমেজর লিগ সকারের (এমএলএস) সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল পর্যালোচনা করা হয়। তবে এ ধরনের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সাধারণত, ফুটবল লিগগুলোর সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যতিক্রমী পারফরম্যান্সের খবর প্রকাশ করা হয়, কিন্তু এক্ষেত্রে কোনো আনুষ্ঠানিক পোস্ট লক্ষ্য করা যায়নি। পাশাপাশি, থিয়াগো মেসির এক ম্যাচে ১১ গোল করার বিস্ময়কর ঘটনার কোনো দৃশ্যমান প্রমাণ বা ভিডিওচিত্রও পাওয়া যায়নি।

এমএলএস-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বর্তমানে অনূর্ধ্ব-১৩ দলের জন্য “U-13 MLS Cup” নামে কোনো টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। ফলে ইন্টার মিয়ামির অনূর্ধ্ব-১৩ দলের এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সম্ভাবনাও নেই।

Screenshot: mls

এছাড়া, অনলাইনে অনুসন্ধান করেও ইন্টার মিয়ামি ও আটলান্টা ইউনাইটেডের অনূর্ধ্ব-১৩ দলের সাম্প্রতিক কোনো ম্যাচের তথ্য পাওয়া যায়নি। উভয় ক্লাবের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ও ক্রীড়া সংবাদ মাধ্যমেও এ বিষয়ে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো ফটোকার্ড অনুযায়ী, ইন্টার মিয়ামির হয়ে ১২টি গোলের মধ্যে ১১টি করেছেন থিয়াগো মেসি, আর একটি গোল করেছেন “ডিয়েগো লুনা জুনিয়র” নামে এক খেলোয়াড়। তবে ইন্টার মিয়ামির অনূর্ধ্ব-১৩ স্কোয়াডে এমন কোনো খেলোয়াড়ের অস্তিত্ব মেলেনি।

Screenshot: Inter Miami Website.

এ দাবির সত্যতা নিয়ে মার্কিন ক্রীড়া সাংবাদিক মিশেল কাউফম্যান একটি এক্স পোস্টে জানান, এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং বাস্তবে এমন কোনো ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়নি। তিনি জানান, কিছু ফ্যান ওয়েবসাইট এই গুজবটি তৈরি করে ছড়িয়েছে।

স্প্যানিশ ফুটবল সাংবাদিক এবং লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর জীবনীগ্রন্থের লেখক গুইলেম বালাগেও এই দাবিকে অসত্য বলে নিশ্চিত করেছেন।

এছাড়া, বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যমফ্যাক্ট-চেকিং ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। মূলত, একটি এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে প্রথমে এই গুজবটি ছড়ানো হয়, যা পরে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়ে।

সুতরাং, থিয়াগো মেসির একাই ১১ গোল করার আলোচিত দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

রংপুরে ইউপি মেম্বারের ছেলেকে গুলি করে হত্যার দৃশ্য দাবিতে গত আগস্টের ভিডিও প্রচার

0

সম্প্রতি, রংপুরের পীরগাছায় আওয়ামী সমর্থীত এক ইউপি মেম্বারের ছেলেকে বাসা থেকে ডেকে এনে গুলি করে হত্যা করেছে পুলিশ দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গাজীপুরের কোনাবাড়িতে পুলিশ কর্তৃক হৃদয় নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করার ঘটনার ভিডিও। তাছাড়া, সম্প্রতি রংপুরের পীরগাছায় আওয়ামী সমর্থিত এক ইউপি মেম্বারের ছেলেকে বাসা থেকে ডেকে এনে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে দাবির বিষয়ে গণমাধ্যম ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অনুসন্ধানে মূল ধারার গণমাধ্যম এটিএন বাংলার ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ‘গাজীপুরে শর্টগান ঠেকিয়ে গুলি করা পুলিশ আটক । Gazipur Short gun police | akram police | police akram’ শীর্ষক ক্যাপশনে প্রচারিত সংবাদে দেখানো ভিডিওর সাথে সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner

এটিএন নিউজের সংবাদটি থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে কলেজছাত্র হৃদয় হত্যা মামলায় কিশোরগঞ্জের তাড়াইল এলাকা থেকে আকরাম হোসেন নামের এক কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি গাজীপুর শিল্প পুলিশে কর্মরত ছিলেন।

এই বিষয়ে যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত সংবাদ থেকেও প্রায় একই তথ্য জানা যায়।

এছাড়াও, অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘ঢাকা পোস্ট’ এর ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ‘কলেজছাত্রকে গুলি করে হত্যা, পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ৫ আগস্ট কোনাবাড়ি থানার পাশে গুলি করে কলেজছাত্র মো. হৃদয়কে হত্যা করা হয়। নিহত হৃদয় টাঙ্গাইলের গোপালপুরের আলমনগর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে। তিনি হেমনগর ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ালেখার পাশাপাশি কোনাবাড়ী এলাকায় বসবাস করে অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গ্রেপ্তারকৃত ওই কনস্টেবলের নাম মো. আকরাম হোসেন (২২), তিনি গাজীপুর শিল্প পুলিশে কর্মরত ছিলেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী সড়কের কোনাবাড়ী এলাকায় গত ৫ আগস্ট মো. হৃদয় বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দেন। এ সময় কয়েকজন পুলিশের উপস্থিতি দেখতে পেয়ে হৃদয় রাস্তার পাশে অবস্থান নেন। ওই সময় শিল্প পুলিশে কর্মরত কিছু পুলিশ সদস্য কোনাবাড়ী এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ সময় তারা হৃদয়কে রাস্তার পাশ থেকে ধরে নিয়ে চড়-থাপ্পড় মারেন। একপর্যায়ে পুলিশ কনস্টেবল আকরাম অতি উৎসাহী হয়ে তার পেছন দিক থেকে গুলি করলে ঘটনাস্থলেই হৃদয়ের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় নিহতের ফুফাতো ভাই মো. ইব্রাহীম বাদী হয়ে কোনাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গতকাল শুক্রবার রাতে কিশোরগঞ্জের পারাইল এলাকা থেকে আকরামকে গ্রেপ্তার করে।’

তাছাড়া, ২০২৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ‘শটগান ঠেকিয়ে গুলি করলো পুলিশ, মামলা হলো সাংবাদিকের নামে | Konabari Ridoy Death | Jamuna TV’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত সংবাদে আলোচিত ভিডিও ও নিহত হৃদয়ের পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য দেখতে পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, এটি নিশ্চিত যে ভিডিওটি ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গাজীপুরের কোনাবাড়িতে পুলিশের গুলিতে নিহত হৃদয়কে গুলি করার ঘটনার ভিডিও।

পরবর্তীতে, সম্প্রতি রংপুরের পীরগাছায় আওয়ামী সমর্থীত কোনো ইউপি মেম্বারের ছেলেকে বাসা থেকে ডেকে এনে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে কিনা জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে মূল ধারার গণমাধ্যম ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গাজীপুরে পুলিশ কর্তৃক এক ব্যক্তিকে গুলি করার ঘটনার ভিডিওকে রংপুরে আওয়ামী সমর্থিত ইউপি মেম্বারের ছেলেকে বাসা থেকে ডেকে এনে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

গণভবন লুটে জড়িত এবং বাড়িতে ডাকাতি হওয়া দুজন ভিন্ন ব্যক্তি 

0

গত বছরের ০৫ আগস্ট সরকার পতনের পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে জনতার ঢল নামার পর একজন ব্যক্তি মাথায় করে একটি শাড়িভর্তি লাগেজ নিয়ে যাওয়ায় ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়, তখন রেজাউল হাসান প্রনয় নামক এক ব্যক্তি ওই ভিডিও তার ফেসবুক প্রোফাইলে শেয়ার করেন। সম্প্রতি একটি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে তিনি তার বাড়িতে ডাকাতি হওয়ার তথ্য প্রকাশ করেন। এরই প্রেক্ষিতে রেজাউল হাসান প্রনয় গণভবন থেকে শাড়িভর্তি লাগেজ লুট করেছেন এমন দাবিতে ‘গণভবন থেকে লাগেজ চুরি করে অট্টহাসি দেয়া মুমিন ভাইটির বাসায় গতকাল ডাকাতি হবার পর তিনি লিখেছেন, “অবশ্যই হে রব, তুমিই সর্বোত্তম পরিকল্পনাকারী এবং তোমার পরিকল্পনার মধ্যে অবশ্যই ভালো কিছু রয়েছে।”’ শীর্ষক ক্যাপশনে দুটি স্ক্রিনশট ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত দাবিতে ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গণভবনে লাগেজ মাথায় যে ব্যক্তির ছবি প্রচার করা হচ্ছে তার বাড়িতে ডাকাতি হয়নি বরং, ভিন্ন দুইজন ব্যক্তিকে একই ব্যক্তি দাবি করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, পোস্টের প্রথম ছবিটি বাসায় ডাকাতি পরবর্তী সময়ের অবস্থার৷ দ্বিতীয় ছবিটি লাগেজ মাথায় নেওয়া একজন ব্যক্তির; এই ছবিটি যাচাই করে দেখা যায়, ০৫ আগস্ট গণভবন থেকে শেখ হাসিনার শাড়িভর্তি লাগেজ নিয়ে যাওয়ার এই ভিডিওটি অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে এবং গণমাধ্যমও প্রচার করে। 

Collage: Rumor Scanner 

এছাড়া, আলোচিত পোস্টগুলোর মন্তব্যের ঘরে দেখা যায়, অনেকেই Rezaul Hasan Pronoy নামক ফেসবুক প্রোফাইল ব্যবহারকারী ব্যক্তি এবং এই প্রোফাইল থেকে গত ০৫ আগস্ট প্রকাশিত গণভবন থেকে লাগেজ নিয়ে যাওয়ার ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি দুইজন ভিন্ন ব্যক্তি বলে মন্তব্য করেছেন৷ তাছাড়া, রেজাউল হাসান প্রনয় ০৫ আগস্ট সময়কালে দেশে ছিলেন না বলেও অনেকে মন্তব্য করেন৷ 

উক্ত তথ্যাবলীর সূত্র ধরে Rezaul Hasan Pronoy নামক ফেসবুক প্রোফাইলটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, বাংলাদেশের সিলেটের এই ব্যক্তি ফ্রান্সে বসবাস করেন। গত বছরের আগস্টে গণভবনে লুটপাট চলাকালীন সময়ে তিনি দেশের বাইরে ছিলেন এবং তার প্রোফাইলের কিছু পোস্ট থেকে তিনি সম্প্রতি দেশে এসেছেন বলে জানা যায়। 

পরবর্তীতে, রেজাউল হাসান প্রনয়ের প্রোফাইলে থাকা তার একটি ভিডিও এবং গণভবন থেকে শাড়ির লাগেজ নিয়ে যাওয়ার ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এই দুটি ভিডিওতে দুজন ভিন্ন ব্যক্তি রয়েছেন৷ 

Comparison: Rumor Scanner 

অর্থাৎ, ০৫ আগস্ট গণভবন থেকে শাড়িভর্তি লাগেজ নিয়ে যাওয়ার ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি ও রেজাউল হাসান প্রনয় নামক ফেসবুক প্রোফাইল ব্যবহারকারী দুজন ভিন্ন ব্যক্তি।  

সুতরাং, রেজাউল হাসান প্রনয় নামে এক ব্যক্তি গণভবন লুটের ঘটনার জড়িত দাবিতে ভিন্ন ব্যক্তির ছবি ব্যবহার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

আয়নাঘর ও বিডিআর বিদ্রোহের পেছনে টিউলিপ সিদ্দিকের হাত থাকার অভিযোগে ইলন মাস্কের বিশ্লেষণের পডকাস্টটি ভুয়া

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “বিডিআর বিদ্রোহ থেকে আয়নাঘর, শেখ হাসিনা ও তারেক সিদ্দিকির ছত্রছায়ায় কিভাবে কল কাঠি নেড়েছেন টিউলিপ সিদ্দিকি ইলন মাস্কের বিশ্লেষণ”।

উক্ত ভিডিওটিতে দেখা যায় বিডিআর বিদ্রোহ থেকে আয়নাঘর, শেখ হাসিনা ও তারেক সিদ্দিকির ছত্রছায়ায় কীভাবে কল কাঠি নেড়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক, এ বিষয়ে ইলন মাস্ক বিশ্লেষণ করছেন।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয় বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি বা সম্পাদিত। প্রকৃতপক্ষে, বিডিআর বিদ্রোহ ও আয়নাঘরসহ নানা বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের হাত থাকার বিষয়ে ইলন মাস্ক কোনো পডকাস্টে মন্তব্য করেননি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত পডকাস্টটির ব্যাপারে কোনো বিস্তারিত তথ্যপ্রমাণ উল্লেখ করতে দেখা যায়নি।

পরবর্তী অনুসন্ধানে টিউলিপ সিদ্দিকের বিষয়ে কোনো পডকাস্টে ইলন মাস্ক এরূপ কোনো মন্তব্য করেছেন কি না সে বিষয়ে গণমাধ্যম এবং বিশ্বস্ত সূত্রেও কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে ভিন্ন প্রসঙ্গে টিউলিপ সিদ্দিকের সমালোচনা করতে দেখা যায় ইলন মাস্ককে। মূলত ব্যাপক চাপের মুখে গত জানুয়ারিতে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক। শেখ হাসিনা ঘনিষ্ঠের থেকে ফ্ল্যাট উপহার নেওয়া, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগের মুখে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। এ বিষয়ে ইলন মাস্ক বলেছেন, ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী নিজেই একজন দুর্নীতিবাজ। গত ১৫ জানুয়ারি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এই মন্তব্য করেন তিনি। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত উক্ত ভিডিওটির সম্ভাব্য মূল ভিডিও আরটিনিউজ২৪ বিডি নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির বর্ণনা অংশ পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিও কনটেন্টটি পরিবর্তিত বা কৃত্রিম এবং এর শব্দ বা ভিজ্যুয়াল উল্লেখযোগ্যভাবে সম্পাদিত বা ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে বলে লেবেল করা হয়েছে। 

Screenshot: YouTube

এই চ্যানেলের অধীনে থাকা ফেসবুক পেজেও আলোচিত ভিডিওটি পোস্ট করেছে। তবে সেখানে এরূপ কোনো লেবেল বা সতর্কতা দেওয়া হয়নি বরং, আসল দাবিতেই পোস্ট করেছে।

এছাড়া, প্রচারিত ভিডিওটিতে এডোবি স্টকের জলছাপ দেখা যায় এবং অস্বাভাবিক অঙ্গভঙ্গি দেখা যায় যা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয়।

অর্থাৎ, এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, প্রচারিত ভিডিওটি মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে টিউলিপ সিদ্দিকের বিষয়ে ইলন মাস্কের বিশ্লেষণের ভুয়া অডিও যুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে।

এই ইউটিউব চ্যানেল পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, তারা নিয়মিতভাবে এআই এবং বিভিন্ন প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি এমন ভুয়া কনটেন্ট প্রচার করে থাকে।

সুতরাং, বিডিআর বিদ্রোহ, আয়নাঘরসহ নানা বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের হাত থাকার বিষয়ে পডকাস্টে ইলন মাস্কের বিশ্লেষণের দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s analysis