Home Blog Page 127

হাতিরঝিলে অস্ত্রের মুখে মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের দাবিতে ভাইরাল ভিডিওটি সাজানো

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “দিনে দুপুরে অস্ত্রের মুখে প্রকাশ্যে বাইক ছিনতাই”। কিছু পোস্টে ঘটনাটির স্থান হিসেবে ঢাকার হাতিরঝিল বলা হয়েছে।

প্রচারিত উক্ত ভিডিওটিতে দেখা যায়, অস্ত্র ঠেকিয়ে কয়েকজন ছিনতাইকারী সদৃশ ব্যক্তি একজনের বাইক ছিনতাই করছেন।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি আসল ছিনতাইয়ের নয় বরং জনসচেতনতামূলক উদ্দেশ্যে নকল অস্ত্র দিয়ে ধারণকৃত একটি স্ক্রিপ্টেড ভিডিওয়ের দৃশ্যকে আসল ছিনতাইয়ের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ‘সাকিব রাজ’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২৭ ফেব্রুয়ারিতে প্রচারিত একটি পোস্টে প্রচারিত ভিডিওটির একটি দীর্ঘায়িত সংস্করণের সংযুক্তি পাওয়া যায়। 

Comparison : Rumor Scanner

ভিডিওটির শুরুতে আলোচিত দাবির সঙ্গে প্রচারিত দৃশ্যটি দেখা যায়। ভিডিওটির শেষ অংশে কথিত ছিনতাইকারী ও ভুক্তভোগী উভয়েই জানান, এটি একটি জনসচেতনতামূলক ভিডিও, যা শুধুমাত্র সতর্কতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে এবং এটি কোনো বাস্তব ঘটনা নয়। ভিডিওটির মূল লক্ষ্য ছিল পাঠাও চালকদের সতর্ক করা, বিশেষ করে যারা নিরিবিলি বা নির্জন স্থানে চলাচল করেন। এছাড়া, প্রচারিত পোস্টটির ক্যাপশনেও উল্লেখ করা হয়েছে,  “এটি একটি সতর্কতামূলক ভিডিও, যা দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করার উদ্দেশ্যে তৈরি। দয়া করে এটি সত্যি হিসেবে নেবেন না।”

এছাড়া, উক্ত ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করলে গতকাল (২৮ ফেব্রুয়ারি) উক্ত অ্যাকাউন্টটিতে আরেকটি ভিডিও প্রচার করতে দেখা যায় যেখানে কথিত ছিনতাইয়ের দৃশ্যটি ধারণ করার আগের মূহুর্ত দেখা যায় এবং বলা হয় যে তারা এখন একটি জনসচেতনতামূলক ভিডিও হিসেবে ছিনতাইয়ের অভিনয় করবে। তাছাড়া, কথিত ছিনতাইয়ের শিকার হওয়া ব্যক্তিকেও উক্ত ভিডিওটিতে প্রস্তুত আছে কি না জিজ্ঞেস করা হয়। উক্ত পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়, “এখানে একটা সতর্কতা মূলক ভিডিও করার জন্য কাজ করা হয়েছিল | কিন্তু কিছু মানুষ এই ভিডিওটাকে অল্প একটু ক্রপ করে ফুল ভিডিওটা না ছেড়ে সেটা ভাইরাল করে দেয় | ভাই আমরা কোন ছিনতাইকারী না আমরা content creator | দেশের পরিস্থিতি এখন যেভাবে যাচ্ছে সেই ক্ষেত্রে এখন যেভাবে ছিনতাই ডাকাতি হচ্ছে ওইটার উদ্দেশ্যে আমরা একটা ভিডিও বানিয়ে ছিলাম দেশবাসীর জন্য | দেশবাসীকে সতর্ক করার জন্য | কিন্তু ভাই আপনারা তো আমাদেরকেই ছিন্তাইকাড়ি বানায় দিলেন | প্লেস এগুলা করা বন্ধ করেন কেউ আজেবাজে ভাবে ভিডিওটা পোস্ট করবেন না”।

তাছাড়া, প্রচারিত ভিডিওটি স্ক্রিপ্টেড জানিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকেও গতকাল (২৮ ফেব্রুয়ারি) প্রেস বিজ্ঞপ্তি পোস্ট করা হয়েছে। উক্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “….হাতিরঝিলে ওভারপাসের নিচে ‘অস্ত্র ঠেকিয়ে’ চার যুবকের মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের যে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে সেটি আসলে প্রকৃত কোন ছিনতাই এর ঘটনা নয়। এটি একটি সতর্কতামূলক ভিডিও তৈরির শুটিংয়ের দৃশ্য। কয়েকজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর কর্তৃক রাজধানীতে পাঠাও চালকদের নির্জন স্থানে অবস্থানকালে ছিনতাইয়ের ব্যাপারে সতর্ক করার উদ্দেশে সচেতনতামূলক একটি ভিডিও নির্মাণের অংশ হিসেবে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ খ্রি.) সকাল আনুমানিক ১১:০০ ঘটিকার দিকে হাতিরঝিলের ২ নম্বর ব্রিজের মহানগর পূর্ব পাশের এলাকায় দৃশ্যটি ধারণ করা হয়। ভিডিও তৈরিতে যে পিস্তল ব্যবহার করা হয়েছে সেটিও একটি খেলনা পিস্তল। জনসচেতনতামূলক ভিডিওটি তৈরি করে ফেইসবুকে পোস্ট করলে পরবর্তীতে কেউ কেউ সেই ভিডিওর খন্ডিতাংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছিনতাইয়ের ঘটনা হিসেবে ছড়িয়ে দেয়।…”

সুতরাং, জনসচেতনতামূলক উদ্দেশ্যে তৈরি ছিনতাইয়ের স্ক্রিপ্টেড অভিনয়ের দৃশ্যকে আসল ছিনতাই দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

কনটেন্ট ক্রিয়েটর কাফিকে গ্রেফতারের তথ্যটি ভুয়া

কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফির বাড়িতে আগুনে পুড়ে গেছে । গত ১২ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ৩টা ৫৫ মিনিটে কাফি নিজ ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যেমে তার বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করেন।

এরই প্রেক্ষিতে, “নিজের বাড়িতে নিজে আগুন দিয়ে অগ্নিসংযোগের নাটক। যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার কন্টেন্ট ক্রিয়েটর কাফি” শীর্ষক একটি দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফিকে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার করা হয়নি বরং কোনোপ্রকার তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে ব্যবহৃত ফুটেজগুলো পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

ভিডিওর শুরুতে এক সংবাদ উপস্থাপকের সংবাদ পাঠের ফুটেজ দেখানো হয়। উপাস্থাপককে বলতে দেখা যায়, “কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফিকে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে, অভিযোগ ছিল সে নিজের বাড়িতে নিজেই অগ্নি সংযোগের নাটক সাজিয়েছে।”

তবে, পর্যবেক্ষণে উপস্থাপকের কথা বলার ভঙ্গির সাথে অডিওর অসামঞ্জস্যতা পরিলক্ষিত হয়। 

এছাড়া ভিডিওতে দাবি করা হয়, যৌথ বাহিনীর অনুসন্ধানে উঠে এসেছে অগ্নিসংযোগের মূল হোতা কাফি ‍নিজেই। আরও বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে নুরুজ্জামান কাফি পূর্বপরিকল্পিতভাবে নিজ বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেন এবং পরে রাজনৈতিকভাবে সুবিধা আদায়ের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেন।

নুরুজ্জামান কাফি পূর্বপরিকল্পিতভাবে নিজ বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেন দাবিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে কিনা জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করেও মূলধারার গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্যপ্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তাছাড়া, নুরুজ্জামান কাফি এর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, তিনি নিয়মিত ফেসবুকে সক্রিয় রয়েছেন।

অর্থাৎ, এটি নিশ্চিত যে নুরুজ্জামান কাফির গ্রেফতারের দাবিটি মিথ্যা।

আলোচিত ভিডিওগুলোর থাম্বনেইলে কাফির গ্রেফতারের দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলো আলাদাভাবে যাচাই করে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার টিম।

ছবি যাচাই ০১

ছবিটি রিভার্স ইমজে সার্চ করে ডেইলি সান এর ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর প্রকাশিত ‘Efran Salim, bodyguard put on 5-day remand’ শীর্ষক শিরোনামের প্রতিবেদনের ফিচার ইমেজের সাথে আলোচিত ছবির সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, এটি ঢাকার  আদালত প্রাঙ্গণে তোলা হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিমের ছবি। সেদিন (৮ নভেম্বর) একাধিক মামলায় ইফরান সেলিমকে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

অর্থাৎ, কাফির ছবি দাবিতে প্রচারিত এই ছবিটি এডিটেড। এখানে ইরফান সেলিমের মূখমন্ড সম্পাদনার মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করে কাফির মুখমণ্ডল  বসানো হয়েছে।

ছবি যাচাই ০২

ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর ওয়েবসাইটে গত ২১ জানুয়ারী প্রাকাশিত ‘কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা কবির শিকদার গ্রেফতার’ শীর্ষক শিরোনামের প্রতিবেদনের ফিচার ইমেজের সাথে আলোচিত ছবির সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়,  কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা কবির শিকদারকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। গত ১৬ জানুয়ারি দিবাগত রাত তিনটায় সেনাবাহিনী কুমিল্লা ২৩ বীর অভিযান চালিয়ে নগরীর মোঘলটুলি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে।

অর্থাৎ, কাফির ছবি দাবিতে প্রচারিত এই ছবিটিও এডিটেড। এখানে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা কবির শিকদারের গ্রেপ্তারকৃত ছবিতে কাফির মুখমণ্ডল বসানো হয়েছে।

ছবি যাচাই ০৩

ছবিটি রিভার্স ইমজে সার্চ করে সময় টিভির ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ১০ ডিসেম্বর ‘ফেনীতে ভুয়া সেনা সদস্য আটক’ শীর্ষক শিরোনমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ফিচার ইমেজের সাথে আলোচিত ছবির সাদৃশ্য রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ফেনীর মহিপাল সার্কিট হাউজ রোড এলাকা থেকে মো. নাজমুল হাসান (২৫) নামের এক ভুয়া সেনা সদস্যকে গ্রেফতার করেছে যৌথবাহিনী। সোমবার (২০২৪ সালের ৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে মহিপাল এলাকা থেকে তাকে আটক করে।

অর্থাৎ, কাফির ছবি দাবিতে প্রচারিত এই ছবিও এডিটেড। এখানে গ্রেপ্তারকৃত ভুয়া সেনা সদস্যের মুখমণ্ডলে কাফির মুখমণ্ডল বসানো হয়েছে।

সুতরাং, নিজের বাড়িতে নিজে আগুন দেওয়ার অভিযোগ কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফিকে গ্রেফতার করা হয়েছে শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ভারতে শেখ হাসিনার প্রকাশ্য উপস্থিতির দাবিতে পাকিস্তানী নেত্রী মরিয়ম নওয়াজের পুরোনো ভিডিও প্রচার

গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করছেন বলে বিভিন্ন সূত্রের বরাতে জানা যায়। এর মধ্যেই ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অবস্থিত রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন হায়দ্রাবাদ হাউসের সামনে শেখ হাসিনার উপস্থিতির দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ভবনের সামনে কালো একটি গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে, যার সামনের যাত্রী আসনে একজন নারীর অবয়ব অস্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি ভারতের রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন হায়দ্রাবাদ হাউসের সামনে শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক উপস্থিতির ভিডিও নয় বরং,  এটি পাকিস্তানের পিএমএল-এন নেত্রী মরিয়ম নওয়াজের ২০১৭ সালের একটি ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম বোল নেটওয়ার্কের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল প্রকাশিত একটি পোস্টে একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ওই পোস্টের ক্যাপশন অনুযায়ী, ভিডিওটি পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এর প্রধান সংগঠক মরিয়ম নওয়াজের উমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে বিএমডব্লিউ গাড়িতে করে বাড়ি থেকে বের হওয়ার দৃশ্য।

Comparison: Rumor Scanner.

ভাইরাল ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ভিডিওতে থাকা গাড়িটির নম্বর প্লেট ‘LE 4114’। পাকিস্তানের যানবাহন নিবন্ধন পদ্ধতি অনুযায়ী, ‘LE’ দিয়ে শুরু হওয়া নম্বর প্লেট লাহোরে নিবন্ধিত গাড়িকে নির্দেশ করে।

এ বিষয়ে আরও অনুসন্ধানে স্টক ইমেজ ওয়েবসাইট গেটি ইমেজেসে ২০১৭ সালের ১৩ অক্টোবর আপলোড করা একটি ছবিতেও একই নম্বর প্লেট সংবলিত গাড়ির ছবি পাওয়া যায়। ছবির বিবরণ অনুযায়ী, এটি ২০১৭ সালে দুর্নীতির মামলায় আদালতে হাজিরার সময় মরিয়ম নওয়াজের ব্যবহৃত গাড়ি।

সুতরাং, পাকিস্তানের একটি পুরোনো ভিডিও ভারতের রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনের সামনে শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক উপস্থিতির দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

লন্ডনে অবস্থানরত খালেদা জিয়ার মৃত্যুর গুজব

0

গত ০৭ জানুয়ারি রাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এরই মধ্যে সম্প্রতি ‘মারা গেলেন খালেদা জিয়া লন্ডনে চিকিৎসাধীন আবস্থায়’ ও ‘বেগম খালেদা জিয়া আর পৃথিবীতে নেই’ শীর্ষক দাবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে৷

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুর বিষয়ে প্রচারিত দাবিটির সত্যতা নেই। তিনি বর্তমানে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে লন্ডনে অবস্থান করছেন৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Jalal Uddin Wasim নামক ফেসবুক প্রোফাইলে ২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে থাকা একটি ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে ব্যবহৃত ছবির মিল রয়েছে৷

Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত পোস্টের ছবিটির বিষয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম Jalal Uddin Wasim এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, “ছবিটি তার মায়ের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সময়ের এবং তার মা মারা যাওয়ার কিছু দিন পূর্বে ছবিটি তোলা হয়।”

উল্লেখ্য, উক্ত ছবিটি ব্যবহার করে ২০২১ সালে একই ধরণে দাবি প্রচার করা হলে তখন রিউমর স্ক্যানার এ বিষয়ে ‘হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার ছবি নয় এটি’ শিরোনামে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। 

অর্থাৎ, আলোচিত দাবিতে ব্যবহৃত ছবির ব্যক্তি খালেদা জিয়া নন৷ 

পরবর্তীতে, আলোচিত দাবিতে থাকা অডিও ক্লিপ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বেসরকারি টিভি চ্যানেল এনটিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত ০৮ জানুয়ারি ‘খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রার সর্বশেষ তথ্য’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়৷ উক্ত ভিডিওর অডিও বার্তার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির অডিও বার্তার মিল রয়েছে৷  

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটির ০০:০১ থেকে ০০:১৭ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটি আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে৷ তবে মূল ভিডিওর ০০:০৩ থেকে ০০:১০ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটি যেখানে ‘‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনের পথে রয়েছেন। তাকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যুক্তরাজ্যের হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।” বলা হয়েছে সেখানে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় কর্তন করে ‘চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন৷ ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ অংশটি প্রতিস্থাপন করা হয়, যার ফলে আলোচিত ভিডিওতে এটি ‘‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন৷ ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২ টায় কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষায়িত এয়ার এম্বুলেন্সে ঢাকা ছাড়েন তিনি” হিসেবে প্রতীয়মান হয়েছে৷

খালেদা জিয়ার সন্তান ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে খালেদা জিয়ার মৃত্যু সংক্রান্ত কোনো প্রকার তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া বিএনপির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

এই প্রতিবেদনটি লিখার সময় পর্যন্ত গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিএনপির বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে খালেদা জিয়ার একটি ভিডিও বক্তব্য প্রচার করা হয়। তিনি এখন চিকিৎসার জন্য লন্ডনে আছেন।

সুতরাং, লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুর  তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

জনতা কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মারধরের শিকার হননি নাহিদ, ভিন্ন ভিডিও দিয়ে অপপ্রচার

0

সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগ করা নাহিদ ইসলাম জনতা, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবির এক্স পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জনতা কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সাম্প্রতিক সময়ে মারধরের শিকার হননি নাহিদ ইসলাম বরং, ভিন্ন ঘটনার ভিডিও (যেখানে নাহিদ উপস্থিতই ছিলেন না) দিয়ে ভুয়া এই দাবি প্রচার করা হয়েছে।  

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূল ধারার গণমাধ্যম যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৬ ফেব্রুয়ারির একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর ক্যাপশন থেকে জানা যায়, নতুন ছাত্রসংগঠনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করায় বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। তবে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে নাহিদ ইসলামের উপস্থিতির প্রমাণ মেলেনি।

বিবিসি বাংলার এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সেদিন (২৬ ফেব্রুয়ারি) নতুন ছাত্র সংগঠনের আত্মপ্রকাশের জন্য সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বিক্ষোভ ও হাতাহাতির খবর এসেছে।

এ সংক্রান্ত অন্যান্য গণমাধ্যমের সংবাদগুলো বিশ্লেষণ করেও উক্ত ঘটনার সময় নাহিদের উপস্থিতির কোনো তথ্য মেলেনি।

রিউমর স্ক্যানার পরবর্তীতে সেখানে উপস্থিত একাধিক সাংবাদিকের সাথে কথা বলেছে। আজকের পত্রিকার সাংবাদিক হাসান শিকদার জানান, সেখানে নাহিদ ইসলমা উপস্থিত ছিলেন না।

তাছাড়া, নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি জনতা, পুলিশ বা সেনাবাহিনীর হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন শীর্ষক দাবিটির বিষয়ে কোনো তথ্য গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, নাহিদ ইসলাম জনতা, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার প্রেস ব্রিফিংয়ের ভিডিও বিকৃত করে ভুয়া তথ্য প্রচার

0

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ‘এভাবেই আওয়ামী লীগের উপরে নিজেদের ব্যর্থতা চালিয়ে দিতে হয়, ভিডিওর প্রথম অংশটা মনোযোগ দিয়ে দেখুন।’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পাশ হতে একজন ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, “এত বেশী কথা না কয়া আওয়ামী লীগের ওপর দায় চাপায় দেন”।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) এর প্রেস ব্রিফিং এ পাশ থেকে কেউ ‘আওয়ামী লীগের ওপর দায় চাপিয়ে দেন’ বলেনি। বরং ভিডিওটি তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পাদনা করে কৃত্রিমভাবে অডিও যোগ করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে বিভিন্ন কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে জাতীয় গণমাধ্যম ‘এখন টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারী প্রকাশিত ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও পদত্যাগ প্রসঙ্গে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা’ শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল রয়েছে ৷ 

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পাশ থেকে আলোচিত অংশটিতে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা এখন আবারও বসব’। 

DBC News Daily এর ফেসবুক লাইভ থেকেও একই বিষয় নিশ্চিত হওয়া যায়। এছাড়া আলোচিত বক্তব্যের পরেও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আওয়ামী লীগ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি এবং তার পাশে থাকা কেউও “আওয়ামী লীগের ওপর দায় চাপিয়ে দেন” এমন কিছু বলেননি।

তাছাড়া কোনো গণমাধ্যম সূত্রেও দাবিটির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় তার পাশের কেউ “এভাবেই আওয়ামী লীগের উপরে নিজেদের ব্যর্থতা চালিয়ে দিতে হয়” শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বিকৃত। 

তথ্যসূত্র

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে পাকিস্তানি বিমানবাহিনী আয়োজিত প্রদর্শনীর ভিডিও দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি স্বাগতিক পাকিস্তান বনাম নিউজিল্যান্ডের ম্যাচ দিয়ে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির নবম আসরের পর্দা উঠে। এবারের আসরকে কেন্দ্র করে কোনো জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান না থাকলেও পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে প্রথম ম্যাচের শুরুতে বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। সম্প্রতি, উক্ত প্রদর্শনীর ভিডিও দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির উদ্বোধনী উপলক্ষে পাকিস্তানি বিমানবাহিনীর বিশেষ প্রদর্শনীর ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, উক্ত ভিডিওটি ২০২২ সাল থেকেই ইন্টারনেটে বিদ্যমান রয়েছে।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচ্য ভিডিও কিছু কী ফ্রেম রির্ভাস ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Negi Vlog Bangalore নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি Aero India // Asia’s biggest air show ll শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণীতে দাবি করা হয়, এটি ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে আয়োজিত সর্ববৃহৎ এয়ার শো Aero India 2023 এর একটি মুহূর্তের ভিডিও। 

উক্ত দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যমে Aero India 2023 এর একাধিক ভিডিও (, , ) পর্যালোচনা করেও আলোচিত প্রদর্শনীর সন্ধান মেলেনি।

পরবর্তীতে Sarat CB নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর প্রচারিত একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youtube

উক্ত ভিডিওটির শিরোনামে দাবি করা হয়, এয়ার শো ২০২২ এর সূর্যকিরণ এয়ার শো’র ভিডিও। তবে ভিডিওটির মন্তব্যের ঘরে domoh3r339 ইউজারনেমের একজন ব্যক্তি ভিডিওটিকে ভিএফএক্স বা ভিজ্যুয়াল এফেক্টস-এর সহায়তায় নির্মিত ভিডিও বলে দাবি করেন। উক্ত মন্তব্যের প্রতিউত্তরে ভিডিওটি প্রচারকারীকে একমত প্রকাশ করতেও দেখা যায়।

Screenshot: Youtube 

অর্থাৎ, ভিএফএক্স বা ভিজ্যুয়াল এফেক্টস প্রযুক্তির সহায়তায় নির্মিত ভিডিওকে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে পাকিস্তানি বিমানবাহিনীর প্রদর্শনীর ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। যেটি প্রায় ২০২২ সাল থেকেই ইন্টারনেটে বিদ্যামান রয়েছে। 

সুতরাং, আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচের শুরুতে পাকিস্তানী বিমানবাহিনীর বিশেষ প্রদর্শনীর ভিডিও দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

  • Negi Vlog Bangalore Youtube Channel Video
  • Sarat CB Youtube Channel Video
  • Rumor Scanner’s Analysis

হাসনাত আবদুল্লাহকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার 

0

সম্প্রতি,বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়কদের উদ্যোগে গঠিত নতুন ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’ এর আত্মপ্রকাশ ঘিরে মধুর ক্যান্টিনে দুই পক্ষের হাতাহাতির ঘটনার পরবর্তী সময়ে হাসনাত আব্দুল্লাহকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র/ ছাত্রীরা দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

হাসনাত আবদুল্লাহ

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যনার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি হাসনাত আবদুল্লাহকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র/ছাত্রীরা তুলে নেওয়ার কোনো ঘটনার নয় বরং, পুরোনো ও ভিন্ন ঘটনার ভিডিও দিয়ে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘কথাcom’ নামক ইউটিউব চ্যানেলের গত ২৭ জানুয়ারি আপলোডকৃত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবির প্রচারিত ভিডিওর সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির বিস্তারিত অংশে দেখা যায় এটি ঢাকার নীলক্ষেত-নিউমার্কেট এলাকার ভিডিও।

ভিডিওটির বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধানে একইদিনে প্রকাশিত জাতীয় দৈনিক কালবেলার ইউটিউব চ্যানেল থেকে ‘পরিস্থিতি শান্ত করতে এসে বিপাকে হাসনাত’ শিরোনামে একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওর বিস্তারিত অংশ থেকে জানা যায়, এটি হাসনাত আবদুল্লাহর সাত কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যকার উত্তেজনাকর পরিস্থিতি শান্ত করতে যাওয়ার ভিডিও। 

অর্থাৎ, এটি একটি পুরোনো ভিডিও, যার সাথে হাসনাত আবদুল্লাহকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র/ ছাত্রীরা তুলে নেওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে মূলধারার গণমাধ্যম ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে হাসনাত আবদুল্লাহকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র/ছাত্রীরা তুলে নেওয়ার কোনো ঘটনার তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, সাম্প্রতিক সময়ে হাসনাত আবদুল্লাহকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র/ ছাত্রীরা তুলে নেওয়ার দাবিতে হাসনাতের গত জানুয়ারিতে ঢাবি ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি শান্ত করতে যাওয়ার ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ভারতীয় শিশু ঋষিতাকে বাংলাদেশি দাবি করে আর্থিক সহায়তা চেয়ে প্রতারণা

0

সম্প্রতি, ‘একজন মাসুম শিশুর জীবন বাঁচানোর জন্য সকলের সহযোগিতা চাচ্ছি  ভিক্ষুকের মত নির্লজ্জ ভাবে পায়ে ধরে শুধুই শেয়ার টা ভিক্ষা চাচ্ছি দেশ ও বিদেশ সকল প্রবাসী ভাই-বোনদেরকে বলছি  সাহায্য করতে না পারলেও অন্তত একটি শেয়ার করুন আপনার শেয়ারের মাধ্যমে হয়তো কোনো বিত্তবান, দানশীল ব্যক্তির নজরে পড়বে।’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। দাবি করা হচ্ছে, অটোচালক সিরাজ মিয়ার মেয়ে ছামিয়া জান্নাত গলায় ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন, বর্তমানে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন। শিশুটির চিকিৎসার জন্য  প্রায় ৬/৭ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। 

ঋষিতা

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, শিশু ছামিয়া জান্নাত নামে প্রচারিত ছবিটি কোনো বাংলাদেশি শিশুর নয় বরং ভারতের রোগাক্রান্ত শিশু ঋষিতার ছবি ব্যবহার করে আর্থিক প্রতারণার উদ্দেশ্যে ভুয়া পোস্টের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতের গণ-অর্থায়ন প্লাটফর্ম ‘Impact Guru’ এর ফেসবুক পেজে “8-year-old Rishita’s health is rapidly declining due to Lupus and Chronic Kidney Disease. Her kidney is failing.” শীর্ষক শিরোনামে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। এই ছবিটির সাথে আলোচিত পোস্টের শিশুর ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner

প্লাটফর্মটির ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ছবিটি ভারতের ঋষিতা নামে এক শিশুর। ঋষিতা বর্তমানে আইসিইউতে আছেন এবং তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল করার জন্য তাকে নিবিড় চিকিৎসা এবং ক্রমাগত পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। তার পরিবার চিকিৎসা খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। তবে নির্দিষ্ট কোন অর্থের পরিমাণ উল্লেখ নেই সেখানে। 

এছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে ছামিয়া জান্নাত নামে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদনকৃত ফেসবুক পোস্টে উল্লিখিত ব্যক্তিগত বিকাশ নাম্বারে 01739478657 এ যোগাযোগ করা হলে উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।

অর্থাৎ, প্রতারণার উদ্দেশ্যে ভারতীয় শিশুর ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করে বাংলাদেশের কথিত রোগাক্রান্ত শিশু ছামিয়া জান্নাতের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

সুতরাং, বাংলাদেশের কথিত রোগাক্রান্ত শিশু ছামিয়া জান্নাত চিকিৎসার জন্য অর্থ চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ প্রতারণামূলক এবং মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

মোহাম্মদপুরে ছিনতাইকারীর কবলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শীর্ষক কোনো সংবাদ দেয়নি সমকাল, ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী মোহাম্মদপুরে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছেন দাবিতে জাতীয় দৈনিক সমকালের আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মোহাম্মদপুরে ছিনতাইকারীর কবলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শীর্ষক কোনো সংবাদ দেয়নি সমকাল বরং সমকালের আদলে তৈরি নকল ফটোকার্ডের মাধ্যমে ভুয়া এই দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক সমকালের ফেসবুক পেজে সম্প্রতি উক্ত দাবিতে প্রচারিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদের অস্তিত্ব মেলেনি। তাছাড়া, অন্যান্য গণমাধ্যম এবং বিশ্বস্ত সূত্রগুলোতেও উক্ত দাবিতে কোনো সংবাদ বা তথ্য প্রকাশের প্রমাণ মেলেনি।

পরবর্তীতে সমকালের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ছড়িয়ে পড়া ওই ফটোকার্ডটি ভুয়া। দৈনিক সমকাল এই শিরোনামে কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি। সমকালের নামে ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।

সুতরাং, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদপুরে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছেন জানিয়ে ফটোকার্ড প্রকাশ করেছে সমকাল শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র