সম্প্রতি, ‘এইচএসসি পাশ করার সাথে সাথেই করতে হবে বিয়ে‘ শীর্ষক শিরোনামে মূলধারার সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো’র লোগো এবং মাজহারুল আসিফ নামের কথিত চীফ রিপোর্টারের নাম যুক্ত করে একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এইচএসসি’র পরে বিয়ে বাধ্যতামূলক দাবিতে প্রথম আলো কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথম আলো’র লোগো এবং কথিত রিপোর্টারের নাম যুক্ত করে উক্ত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবি সম্বলিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। এতে ‘এইচএসসি পাশ করার সাথে সাথেই করতে হবে বিয়ে’ শীর্ষক শিরোনামে কথিত সংবাদটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ৩০ আগস্ট, ২০২৩ এবং ফটোকার্ডটিতে মাজহারুল আসিফ নামের কথিত এক চীফ রিপোর্টারের নাম যুক্ত করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে কি ওয়ার্ড সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রথম আলোর ওয়েবসাইট, ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩০ আগস্ট বা তার আগে পরে উক্ত তথ্য সম্বলিত কোনো সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এছাড়া, আলোচিত এই ফটোকার্ডে উল্লিখিত প্রথম আলো’র কথিত চীফ রিপোর্টার মাজহারুল আসিফের পরিচয় অনুসন্ধানে এই নামে গণমাধ্যমটিতে কর্মরত কোনো চীফ রিপোর্টারের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
এই নামে গণমাধ্যমটিতে কোনো চীফ রিপোর্টার নেই বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন প্রথম আলো’র অনলাইন বিভাগের প্রধান শওকত হোসেন মাসুম।
তাছাড়া, প্রথম আলো ছাড়াও অন্যকোনো গণমাধ্যমেও প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে আলোচিত দাবি সম্পর্কি কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ, উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে এটা স্পষ্ট যে, প্রথম আলো এইচএসসি পরীক্ষা পাশের পর বিয়ে বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে কোনো সংবাদ প্রতিবেদন বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি।
মূলত, এইচএসসি পাশ করার সাথে সাথেই বিয়ে বাধ্যতামূলক দাবি করে প্রথম আলোর লোগো এবং কথিত চীফ রিপোর্টার মাজহারুল আসিফের নাম যুক্ত করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ফটোকার্ডের প্রেক্ষিতে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রথম আলো তাদের ওয়েবসাইটে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর অ্যাকাউন্টে এমন কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রচার করেনি। তাছাড়া, মাজহারুল আসিফ নামে গণমাধ্যমটিতে কোনো চীফ রিপোর্টার নেই। পাশাপাশি, এইচএসসি পরীক্ষা পাশের পর বিয়ে বাধ্যতামূলক করার বিষয়টিও সঠিক নয়।
উল্লেখ্য, পূর্বেও বিভিন্ন গণমাধ্যমের ফটোকার্ড নকল করে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হলে সেসময় বিষয়গুলো নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
সুতরাং, এইচএসসি পরীক্ষা পাশের পর বিয়ে বাধ্যতামূলক দাবিতে প্রথম আলো লোগো ও কথিত প্রতিবেদকের নাম যুক্ত করে প্রচারিত ফটোকার্ডটি বানোয়াট ও এবং উল্লিখিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
তথ্যসূত্র
- Prothom Alo Website: https://www.prothomalo.com/
- Prothom Alo: Facebook Page
- Prothom Alo YouTube: https://youtube.com/@ProthomAlo
- Statement from Shakhawat Hossain Masum, Online Head, Prothom Alo
- Rumor Scanner’s Own Analysis