Home Blog Page 43

২ আগস্ট জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে এনসিপির অগ্নিসংযোগ দাবিতে ২০২৪ সালের ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ‘বিকেলে রাজধানীতে মিছিল করে জাতীয় পার্টি-আর সন্ধ্যায় কাকরাইল জাতীয় পার্টির অফিসে আ’গুন দেয় এনসিপি…!’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

অর্থাৎ, দাবি করা হচ্ছে গত ২ আগস্ট বিকেলে জাতীয় পার্টি রাজধানীতে মিছিল করে, আর সন্ধ্যায় কাকরাইলে তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা আগুন ধরিয়ে দেয়।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি গতকাল ২ আগস্টের (শনিবার) নয়। প্রকৃতপক্ষে, এটি ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ভিডিওটি। এদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Comrade Mahmud- কমরেড মাহমুদ’ নামের ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর ‘আজ ছাত্র জনতার উপর হামলার প্রতিবাদে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় অফিসে আগুন…’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Comparison : Rumor Scanner

একই তারিখে একই দাবিতে ভিডিওটি ফেসবুকে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে প্রচার হতে দেখা যায়। দেখুন – এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

উক্ত পোস্টগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করে মূলধারার গণমাধ্যমগুলোর ওয়েবসাইট (,,) ও ইউটিউব চ্যানেলে (,,) সেই সময় প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর ঢাকার কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২০৪ সালের ৩১ অক্টোবর সন্ধ্যার দিকে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক ও জনতা’র ব্যানারে একদল লোক একটি মিছিল নিয়ে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে যান। সেখানে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এরপর তাঁদের সঙ্গে জাতীয় পার্টির কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে ওই কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়। তবে, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেন দুই পক্ষই। জাতীয় পার্টি দাবি করেছে, তাদের ওপর আগে হামলা হয়েছে। অন্যদিকে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক ও জনতার ব্যানারে যাওয়া ব্যক্তিরা দাবি করেছেন, তাঁদের ওপর আগে হামলা করেন জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা।

ডেইলি স্টার -এর বাংলা ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডিউটি ​​অফিসার রাশেদ বিন খালেদ ডেইলি স্টারকে জানান, সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে (২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর) তারা কল পান এবং ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নেভাতে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যায়। এর আগে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘জাতীয় বেঈমান জাতীয় পার্টি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিজয়নগরে আমাদের ভাইদের পিটিয়েছে, অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। এবার জাতীয় বেঈমানদের উৎখাত নিশ্চিত।’

বাংলা ট্রিবিউন -এর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,  ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর সন্ধ্যার পর রাজধানীর বিজয়নগরে জাতীয় পার্টির (জাপা) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা। সেদিন সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্য এলাকায় ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতার’ ব্যানারে মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল শেষে জাপাকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ আখ্যা দেওয়ার পর কার্যালয় ঘেরাও করতে কাকরাইলের বিজয়নগর এলাকায় আসেন তারা। এসময় দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষ হয়।

সুতরাং, ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ভিডিওকে গত ২ আগস্ট কাকরাইলে জাতীয় পার্টির অফিসে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আগুন দিয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক মিছিল দাবিতে পুরোনো মিছিলের ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি ‘কি মামা খেলা তো শুরু হয়ে গেছে আওয়ামী লীগের আওয়ামী লীগের সকল কর্মীরা মাঠে নেমে গেছেন এখন আওয়ামী লীগ আমরা ক্ষমতায় আসতে চলেছে’ ক্যাপশনে ক্ষমতাচ্যুত ও দলীয় কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা আরোপিত রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক মিছিল দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) ।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক সময়ের কোনো মিছিলের নয় বরং, ২০২২ সালে দলটির একটি বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিও উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম সময় টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ১৭ আগস্ট ‘প্রায় আড়াই বছর পর রাজপথে আওয়ামী লীগ!’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটির ০০:০১ থেকে ০০:৩২ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটি আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে। 

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, সেদিন ২০০৫ সালে সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড থেকে আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী এ কর্মসূচিতে সমবেত হয়। 

পরবর্তীতে, অনলাইন গণমাধ্যম Bangla News 24 এর ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১৭ আগস্ট ‘দেশজুড়ে সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও সেদিন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশটি সম্পর্কে একই তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়। 

সুতরাং, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মিছিলের ভিডিও দাবিতে দলটির ২০২২ সালের একটি বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

নেত্রকোনার সাবেক এমপি ইফতিকার উদ্দিন কারাগারে মারা যাওয়ার দাবিটি মিথ্যা 

0

গত ৩১ জুলাই থেকে নেত্রকোনা-৩ (কেন্দুয়া-আটপাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু কারাগারে নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছেন- শীর্ষক একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই তথ্যটি সজীব ওয়াজেদ জয়কেও পোস্ট দিতে দেখা যায়। 

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নেত্রকোনা-০৩  (কেন্দুয়া-আটপাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু কারাগারে নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যাওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং, গত ২৮ জুলাই তিনি ঢাকার নিজ বাসায় ইন্তেকাল করেছেন তার পরিবারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে যুগান্তরের ওয়েবসাইটে গত ২৮ জুলাই “নেত্রকোনা-৩ আসনের সাবেক এমপি পিন্টু আর নেই” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, সাবেক এমপি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতায় ভুগছিলেন। এ অবস্থায় গত ২৮ জুলাই তিনি ঢাকার নিজ বাসায় ইন্তেকাল করেন তিনি। 

একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছে প্রথম আলো, সময় টিভি এবং আরটিভি সহ একাধিক গণমাধ্যম। 

পরবর্তীতে আরও অনুসন্ধানে অনলাইন ভিত্তিক গণমাধ্যম জাগো নিউজের ওয়েবসাইটে গত ৩১ জুলাই “সাবেক এমপি ইফতিকারের কারাগারে মৃত্যু খবরটি মিথ্যা: কারা অধিদপ্তর” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ৩১ জুলাই কারা অধিদপ্তরের মিডিয়া বিভাগের সহকারী কারা মহাপরিদর্শক জান্নাত উল ফরহাদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নেত্রকোনা-৩ (কেন্দুয়া-আটপাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টুর কারাগারে মৃত্যু খবরটি সঠিক নয়। 

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নেত্রকোনা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইফতিকার উদ্দিন তালকদার পিন্টুর কারাগারে মৃত্যুর খবরটি সঠিক নয়। তিনি কারাগারে আটক ছিলেন না। বিষয়টি গুজব।

একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছে বার্তা ২৪, দেশ টিভি এবং আমাদের সময় সহ একাধিক গণমাধ্যম।

বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য সদ্য প্রয়াত সাবেক সংসদ সদস্য ইফতিকার উদ্দিন তালকদার পিন্টুর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

ইফতিকার উদ্দিন তালকদার পিন্টুর ভাগ্নে জাকির হোসেন প্রবাল বলেন, ‘০৫ আগস্টের পর তিনি কারাগারে যাননি। অনেকদিন যাবৎ অসুস্থ ছিলেন। পরবর্তীতে বাসায় (ভাড়া বাসা) মৃত্যুবরণ করেন। কারাগারে মৃত্যুর যে বিষয়টি প্রচার করা হচ্ছে তা মিথ্যা।’

সুতরাং, নেত্রকোনা-০৩ (কেন্দুয়া-আটপাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু কারাগারে নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

জুলাই আহতদের নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার মন্তব্য দাবিতে আরটিভির নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি, “জুলাই আহতদের নামে রাস্তা অবরোধকারীরা সবাই মাদকাশক্ত, মাদকের টাকার জন্যই আন্দোলন”- শীর্ষক মন্তব্যটি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর দাবিতে আরটিভির ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “জুলাই আহতদের নামে রাস্তা অবরোধকারীরা সবাই মাদকাশক্ত, মাদকের টাকার জন্যই আন্দোলন” স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর- শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে আরটিভি কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি, এমনকি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাও এসংক্রান্ত কোনো মন্তব্য করেননি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় আরটিভি ডিজাইন নকল করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে আরটিভির লোগো ও ফটোকার্ডটি প্রচারের তারিখ হিসেবে ০১ আগস্ট, ২০২৫ উল্লেখ থাকতে দেখা যায়। উক্ত সূত্র ধরে অনুসন্ধানে আরটিভির ফেসবুক পেজ (,), ইউটিউব চ্যানেল এবং ওয়েবসাইটে এসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া আলোচিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে আরটিভি কর্তৃক প্রকাশিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্টের অমিল লক্ষ্য করা যায়।

Photocard Comparison By Rumor Scanner 

পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে অন্যকোনো গণমাধ্যমেও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এমন বক্তব্য দেওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, “জুলাই আহতদের নামে রাস্তা অবরোধকারীরা সবাই মাদকাশক্ত, মাদকের টাকার জন্যই আন্দোলন” স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর- শীর্ষক তথ্যে বা শিরোনামে আরটিভির নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র 

কোল্ডপ্লের কনসার্ট চলাকালীন নিজ প্রতিষ্ঠানের এক নারী কর্মকর্তাকে জড়িয়ে ধরা সিইও’র স্ত্রী দাবিতে ভিন্ন এক নারীর ছবির প্রচার 

0

গত ১৬ জুলাই বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ব্যান্ড কোল্ডপ্লের একটি কনসার্টে এক অস্বস্তিকর ঘটনার জন্ম দেন মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাস্ট্রোনোমার কোম্পানির সিইও অ্যান্ডি বায়রন। কনসার্ট চলাকালীন তিনি নিজ কোম্পানির এইচআর-প্রধান এক নারী কর্মকর্তাকে জড়িয়ে ধরেন। এরই প্রেক্ষিতে অ্যান্ডি বায়রনের পরিবার দাবিতে একটি তুলনামূলক ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে। 

থ্রেডসে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে। 

এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটি অ্যান্ডি বায়রনের স্ত্রী’র নয়। প্রকৃতপক্ষে, পরিবারসহ প্রচারিত ছবিতে থাকা নারীর নাম এলিনা সালিয়াখোভা এবং তিনি একজন রুশ ইনফ্লুয়েন্সার। উল্লেখ্য, অ্যান্ডি বায়রনের স্ত্রী’র নাম মেগান কেরিগান। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কোল্ডপ্লের কনসার্টে আলোচিত ঘটনা বিষয়ে বিস্তারিত জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি বাংলার ওয়েবসাইটে “কোল্ড প্লে কনসার্টের ভিডিও ভাইরালের পর প্রধান নির্বাহীকে ছুটিতে পাঠিয়েছে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি” শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনটিতে ভিডিওতে থাকা পুরুষ ব্যক্তিকে অ্যাস্ট্রোনোমারের সিইও অ্যান্ডি বাইরন এবং নারীকে কোম্পানির চিফ পিপল অফিসার ক্রিস্টিন ক্যাবট হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। 

পরবর্তীতে, অ্যান্ডি বাইরনের স্ত্রী সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘New York Post’ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ‘Ex-Astronomer CEO Andy Byron’s wife holed up in $2.4M mansion since husband was caught canoodling with HR exec at Coldplay concert’ শিরোনামে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদেনটিতে, অ্যান্ডি বায়রনের স্ত্রী হিসেবে মেগান কেরিগানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং আলোচিত এই ঘটনার পর তিনি (স্ত্রী) অ্যান্ডি বায়রনের থেকে দূরে সরে ২.৪ মিলিয়ন ডলারের একটি প্রাসাদে আশ্রয় নিয়েছেন। 

এছাড়া, অ্যান্ডি বায়রনের স্ত্রীর চেহারার সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির নারীর চেহারার যথেষ্ট অমিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Face Comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তী অনুসন্ধানে অ্যান্ডি বায়রনের পরিবারের ছবি দাবিতে থাকা নারীর পরিচয় খুঁজে দেখার চেষ্টা করে রিউমর স্ক্যানার টিম। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছবির নারীর নাম এলিনা সালিয়াখোভা, যিনি একজন রুশ ইনফ্লুয়েন্সার। একটি ভাইরাল ছবির মাধ্যমে ইন্টারনেটে তিনি বেশ পরিচিতি পান। ছবিটিতে তাকে ও তার সন্তানদের একটি বিলাসবহুল ডিনার টেবিলে দেখা যায়, যেটি প্রথম ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বরে তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে প্রকাশ করা হয়েছিল। 

অর্থাৎ, ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত এলিনা সালিয়াখোভার নামক এক পরিবারসহ নারীর ছবি অপ্রাসঙ্গিকভাবে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাস্ট্রোনোমার এর সিইও অ্যান্ডি বায়রনের স্ত্রী দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

জুলাই সনদে বাংলাদেশ পুলিশের ১১ দফা সুপারিশ দাবিতে প্রচারিত বিশেষ বিবেচনাধীন পত্রটি ভুয়া

0

গত বছরের ০৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে জুলাই সনদ নিয়মিত আলোচনায় আছে। জুলাই সনদ নিয়ে আলোচনার মাত্রা সম্প্রতি আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের লেটারহেডে একটি ছবি প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, ছবিটি জুলাই সনদে বাংলাদেশ পুলিশের ১১ দফা সুপারিশের বিশেষ বিবেচনাধীন পত্রের।

ছবিটিতে ১১ দফা সুপারিশের তালিকা দেখতে পাওয়া যায় যেখানে সুপারিশ করা হয়, 

“১. জুলাই সনদে এই আন্দোলনে পুলিশের ইতিবাচক তথ্য যথাযথভাবে তুলে ধরতে হবে 
২. জুলাই আন্দোলনে নিহত পুলিশ সদস্যদের সঠিক তালিকা প্রকাশ করতে হবে
৩. জুলাই আন্দোলনে সকল পুলিশ হত্যার সুষ্ঠ তদন্ত করতে হবে
৪. জুলাই আন্দোলনে পুলিশ হত্যাকারীদের কোনোভাবেই জুলাই সনদে দায়মুক্তি দেওয়া যাবে না
৫. জুলাই আন্দোলনের প্রতিটি পুলিশ হত্যার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা করতে হবে
৬. পুলিশ হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনার ক্ষেত্রে কোনোপ্রকার বাঁধা সৃষ্টি করা যাবে না
৭. জুলাই সনদে নিহত পুলিশ সদস্যদের কথা উল্লেখ থাকতে হবে
৮. জুলাই সনদে নিহত ও আহত পুলিশ সদস্যদের সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে
৯. জুলাই সনদ ঘোষণার পর থেকে পুলিশকে কোনো রাজনৈতিক দলের নিরাপত্তায় ব্যবহার করা যাবে না
১০. জুলাই সনদে পুলিশ সংস্কারের মৌলিক বিষয়গুলোও থাকতে হবে
১১. কোনো রাজনৈতিক দল পুলিশকে আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেনা এই সংক্রান্ত বিধিমালা জুলাই সনদে থাকতে হবে”।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, জুলাই সনদ ইস্যুতে বাংলাদেশ পুলিশকে জড়িয়ে প্রচারিত পত্রটি আসল নয়। বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে আলোচিত ছবিটি ভুয়া বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে শুরুতে আলোচিত বিশেষ বিবেচনাধীন পত্রটি আসল হওয়ার সপক্ষে নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো  তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ পুলিশের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করলেও আলোচিত ছবিটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

প্রচারিত পত্রটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে ‘মোঃ মেনহাজুল আলম পিপিএম’ এর স্বাক্ষর দেখতে পাওয়া যায়। এ বিষয়ে মেনহাজুল এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি রিউমর স্ক্যানার টিমকে নিশ্চিত করেন, প্রচারিত ছবিটি ভুয়া। তিনি আরো বলেন, “ঐ শাখার এআইজি আমি নই।”

এছাড়া, প্রচারিত পত্রটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে ‘রিক্রুটমেন্ট অ্যান্ড ক্যারিয়ার প্ল্যানিং-২ শাখা’র উল্লেখ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করলে উল্লিখিত শাখার এআইজি হিসেবে মেনহাজুল এর বদলে ‘আফরিদা রুবাই’ এর নাম দেখতে পাওয়া যায়। 

এ বিষয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগরের সাথেও যোগাযোগ করে। তিনি জানান, “সম্প্রতি পুলিশ সদর দপ্তরের নামে একটি ভুয়া চিঠি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কিছু অনলাইন মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে। চিঠিতে পুলিশ সদর দপ্তরের লেটারহেড ব্যবহার করে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের বক্তব‍্য নিম্নরূপঃ

১।  উক্ত চিঠিটি বাংলাদেশ পুলিশের কোনো দপ্তর থেকেই ইস্যু করা হয়নি।

২। চিঠির বক্তব‍্য বানোয়াট, অনৈতিক ও পুলিশ সদর দপ্তরের অনুসৃত নীতিমালার পরিপন্থী।

৩। চিঠিতে স্বাক্ষরকারী হিসেবে যার নাম দেয়া হয়েছে তিনি উল্লিখিত শাখাতেই কর্মরত নন।

এ ধরনের ভুয়া চিঠি তৈরি বা প্রচারে জড়িতদের  বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

সুতরাং, জুলাই সনদে বাংলাদেশ পুলিশের ১১ দফা সুপারিশ দাবিতে প্রচারিত বিশেষ বিবেচনাধীন পত্রটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

  • Statement of Md. Menhazul Alam, PPM, AIG (Personal Management-2)
  • Statement of Inamul Haque Sagor, AIG (Media & PR), Bangladesh Police Headquarter

আগস্ট মাসের ‘শোকের’ বিরুদ্ধে ব্যঙ্গাত্মক প্রতিবাদ করে গত বছরের ১ আগস্ট প্রচারিত ভিডিও দাবিতে ভারতের ভিন্ন ঘটনার ভিডিও প্রচার

অন্তত গত ১ আগস্ট মধ্যরাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটিতে ‘লে পাগলু ডান্স’ গানে ২ জন ছেলে, ১ জন মেয়ে ও একটি কুকুরকে নাচতে বা তাল মেলাতে দেখা যায়। ভিডিওটি প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, আগস্ট মাসের ‘শোকের’ বিরুদ্ধে ব্যঙ্গাত্মক প্রতিবাদ করে বাংলাদেশি একজন গত বছরের ১ আগস্টে প্রথমবার ভিডিওটি পোস্ট করেন।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত একটি ভিডিও এককভাবে ১৬ লক্ষেরও অধিক বার দেখা হয়েছে এবং প্রায় ১৬ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটিতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি গত বছরের ১ আগস্টে প্রথমবার পোস্ট করা হয়নি বরং, গত বছরের ১৯ জুলাইয়ে ভিডিওটি ইনস্টাগ্রামে প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, ভিডিওটি পোস্টের সাথে আগস্ট মাসের ‘শোকের’ বিরুদ্ধে কোনো বাংলাদেশির ব্যঙ্গাত্মক প্রতিবাদের কোনো বিষয় ছিল না বরং, ভিডিওটিতে নাচতে থাকা ব্যক্তির নাম ভিশাল শংকর যিনি একজন ভারতীয় ড্যান্সার ও কোরিওগ্রাফার এবং ভারতের ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরের বাসিন্দা।

অনুসন্ধানে ‘vishal_sonkar_official’ শীর্ষক ইউজারনেমের একটি ভেরিফাইড ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত বছরের ১৯ জুলাইয়ে প্রচারিত একটি ভিডিও পোস্ট পাওয়া যায়। ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে প্রদর্শিত দৃশ্যের হুবহু মিল পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করলে নিশ্চিত হওয়া যায় যে এটি ভিশাল শংকর নামের এক কোরিওগ্রাফার ও ড্যান্সারের আসল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট এবং ভিডিওটিতেও ভিশাল শংকর রয়েছেন। এছাড়া ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে সংযুক্ত ভিশালের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করলে আলোচিত ভিডিওটি গত বছরের ২১ জুলাইয়ে ফেসবুকেও প্রচারিত হতে দেখা যায়। উল্লেখ্য, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও ও ভিশালের পোস্ট করা ভিডিও দুইটিরই অডিওতে ‘লে পাগলু ডান্স’ গান চললেও শব্দে কিছুটা তারতম্য লক্ষ্য করা যায়।

এছাড়া, ভিশালের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টটির বায়ো থেকে জানা যায়, ভিশাল শংকর ড্যান্স দিওয়ানে নামক একটি ভারতীয় ড্যান্স রিয়েলিটি শো এর দ্বিতীয় মৌসুমের বিজয়ী।

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে অনুসন্ধান করলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’ ও ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ এর সূত্রে জানা যায়, ভিশাল শংকর একজন ভারতীয় এবং তিনি মূলত ভারতের ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরের বাসিন্দা। তিনি ২০১৯ সালে ভারতীয় ড্যান্স রিয়েলিটি শো এর দ্বিতীয় মৌসুমের বিজয়ী হন। ভিশালের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের এবাউট সেকশন পর্যবেক্ষণ করলেও দেখা যায়, অ্যাকাউন্টটি মূলত ভারত থেকে পরিচালিত হচ্ছে।

সুতরাং, ভিশাল শংকর নামে ভারতীয় এক ড্যান্সার ও কোরিওগ্রাফারের গত বছরের ১৯ জুলাইয়ে প্রচারিত একটি ভিডিও আগস্ট মাসের ‘শোকের’ বিরুদ্ধে ব্যঙ্গাত্মক প্রতিবাদ করে একজন বাংলাদেশি গত বছরের ১ আগস্টে প্রথমবার ভিডিওটি পোস্ট করেছিলেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের কর্মীদের পুলিশি দমন-পীড়ন দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, ‘ডে’ভিল ই’উনুস ও তার পুলিশ বা’হিনী এভাবেই গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগের কর্মীদের সাথে যু’দ্ধ করছেন…!’ ক্যাপশনে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

অর্থাৎ, দাবি করা হচ্ছে এই ভিডিওটি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসন কর্তৃক বলপ্রয়োগের ঘটনার।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের কোনো ঘটনার নয়। তাছাড়া, এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক পুলিশ প্রশাসন দিয়ে গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের কর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর দমনমূলক কার্যক্রমেরও কোনো ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, অন্তত ২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান এই ভিডিওটি আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। ভিডিওটি ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকায় গণগ্রেপ্তার করা হয়েছিল এমন দাবিতে প্রচার হয়েছিল।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ভিডিওটি থেকে কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘Sayed Rouf’ নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্টে ২০২৪ সালের ২৬ জুলাই ‘Gunshots fired and several arrested just a hour ago across several areas of DHAKA!!!’ ক্যাপশনে প্রচারিত পোস্টে হুবহু ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। এছাড়াও, পোস্টটিতে #Bangladesh #StudentsUnderAttack #StepDownHasina হ্যাশট্যাগুলো ব্যবহার করা হয়।

Comparison : Rumor Scanner

এছাড়াও, ভিডিওটি ‘Basherkella – বাঁশেরকেল্লা’ নামক এক্স অ্যাকাউন্টেও একই তারিখে প্রচারিত একটি পোস্টে খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot : Basherkella – বাঁশেরকেল্লা (X Account)

পোস্টটিতে বলা হয়, ‘গণহত্যার পর সারা ঢাকা শহরজুড়ে এখন চলছে গণগ্রেপ্তার!

সারারাত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। এসময় তাদের পাশে সশস্ত্র সেনা সদস্যদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। একাধিক জায়গায় বিল্ডিং এর মেইন গেইট ভেঙ্গে শিক্ষার্থীদের তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই সংক্রান্ত একটা ভিডিও সংযুক্ত করা হয়েছে। গত রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক গোলাগুলির শব্দও পাওয়া গেছে বলে একাধিক ব্যক্তি আমাদের ফেসবুক পেইজের ইনবক্সে জানিয়েছে। ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে যেন যুদ্ধে নেমেছে এই পোশাকধারী সন্ত্রাসীরা!’

এছাড়াও, ‘3X Movie’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলেও ২০২৪ সালের ২৬ জুলাই ভিডিওটি সেই সময়ের ঢাকার ভিডিও দাবিতে প্রচার হতে দেখা যায়। একই তারিখে ভিডিওটি ফেসবুকেও প্রচার হতে দেখা যায়। দেখুন – এখানে, এখানে

অর্থাৎ, এই ভিডিওটি পুরোনো এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলের নয়।

সুতরাং, অন্তত ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান ভিডিওকে সম্প্রতি পুলিশ প্রশাসন গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের কর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর দমনমূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

‘জুলাই সনদ অঙ্গীকারনামা’ শিরোনামে এনসিপির নামে ভুয়া বিজ্ঞপ্তি প্রচার 

0

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পক্ষ থেকে আজ (২ আগস্ট) জানানো হয়েছে, আগামী ৫ আগস্ট বিকেল ৫টায় গণঅভ্যুত্থানের সকল পক্ষের উপস্থিতিতে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে। এরই মধ্যে, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) লেটারপ্যাডে ‘জুলাই সনদ অঙ্গীকারনামা’ শীর্ষক একটি বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে মোট ৭ দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে। দাবিগুলো হুবহু নিচে তুলে ধরা হলো:

“১/ ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্রদের নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণে এবং জনগণের সমর্থনে যে আন্দোলন হয়েছে তা বাংলাদেশের “২য় স্বাধীনতা” হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।

২/ জুলাই আন্দোলনে একমাত্র নেতৃত্বদানকারী হলো নাহিদ, আসিফ, হাসনাত সহ এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। তাই আন্দোলনের সবচেয়ে বড় স্টেকহোল্ডার হিসেবে আন্দোলন পরবর্তী ছাত্রদের গঠিত দল ‘এনসিপি’ কে আন্দোলনের মূল নেতৃত্বদানকারী দল হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।

৩/ এই আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী ছাত্রদের বিপ্লবী ছাত্র হিসেবে ঘোষণা দিয়ে, ভবিষ্যৎে তাদের সকল কর্মকান্ডকে (আইনসিদ্ধ বা আইন বহিঃর্ভূত) রাষ্ট্র স্বীকৃতি দিতে বাধ্য থাকিবে।

৪/ জুলাই আন্দোলন তথা ২য় স্বাধীনতাকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মর্যাদা দিতে হবে এবং এই আন্দোলনে শহীদ ও যোদ্ধাদের মুক্তিযোদ্ধার সমান স্বীকৃতি ও সকল সুযোগ সুবিধা দিতে হবে।

৫/ আন্দোলনের মূল নেতা নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম, আখতার হোসেন, মাহফুয আলম, নাসিরউদ্দিন পাটওয়ারীকে জুলাই আন্দোলনের ৭জন “বীরশ্রেষ্ঠ” হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। আন্দোলনের সকল সমন্বয়ককে “বীর বিক্রম” উপাধি দিতে হবে।

৬/ আন্দোলনের আহত, নিহতের পরিবারের সদস্য, অংশগ্রহণকারী, বীরশ্রেষ্ঠ এবং বীর বিক্রমের পরিবারের সদস্য সকলকে সরকারি চাকরিতে বিশেষ সুবিধা দিয়ে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

৭/ জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী দল হিসেবে এনসিপি এর জন্য পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০টি আসন সংরক্ষিত রাখতে হবে।”

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন: এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

ফ্যাক্টচেক


রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা গেছে, জাতীয় নাগরিক পার্টি – এনসিপি’র লেটারপ্যাডে প্রচারিত ‘জুলাই সনদ অঙ্গীকারনামা’ শীর্ষক প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি আসল নয়। বরং, এনসিপির নাম ও লোগো ব্যবহার করে এই ভুয়া বিজ্ঞপ্তিটি তৈরি করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত বিজ্ঞপ্তিটির সত্যতা যাচাই করতে এনসিপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে খোঁজ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তবে সেখানে এমন কোনো বিজ্ঞপ্তির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে, দলটির ফেসবুক পেজে প্রকাশিত অন্যান্য সংবাদ বিজ্ঞপ্তির (,,,,) সঙ্গে আলোচিত বিজ্ঞপ্তিটির তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হয়। বিশ্লেষণে দেখা যায়, কথিত বিজ্ঞপ্তিতে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি – এনসিপি’ লেখার বাম পাশে এবং লেখার মূল অংশে এনসিপির লোগো ব্যবহৃত হয়েছে। তবে, দলটির মূল বিজ্ঞপ্তিগুলোতে সাধারণত কোনো লোগো ব্যবহার করা হয় না। এছাড়া, মূল বিজ্ঞপ্তিগুলোতে স্মারক বা সূত্র নম্বর এবং তারিখ উল্লেখ থাকলেও আলোচিত বিজ্ঞপ্তিটিতে সে ধরনের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

Comparison: Rumor Scanner. 

এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে রিউমর স্ক্যানার টিম জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব সালেহ উদ্দিন সিফাতের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আলোচিত বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া।

এছাড়া, দলটির ফেসবুক পেজে দেওয়া একটি পোস্টে বিজ্ঞপ্তিটি নিয়ে বলা হয়, “জাতীয় নাগরিক পার্টি – এনসিপি’র প্যাডে এমন একটি বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়াচ্ছে পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তির বরকন্দাজরা। এটি মিথ্যা, অসত্য ও ভুয়া বিজ্ঞপ্তি। আমরা এমন কোনো বিজ্ঞপ্তি ইস্যু করিনি।”

সুতরাং, জাতীয় নাগরিক পার্টি – এনসিপির লেটারপ্যাডে প্রচারিত ‘জুলাই সনদ অঙ্গীকারনামা’ শীর্ষক প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s analysis.
  • Statement of Saleh Uddin Sifat.
  • NCP: Facebook Post 

আজমেরী হক বাঁধন দাবিতে ভারতীয় মডেলের সম্পাদিত ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি বাংলাদেশি অভিনেত্রী আজমেরী বাঁধনের ছবি দাবিতে ‘আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন’ ক্যাপশনে একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, অভিনেত্রী আজমেরী বাঁধনের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলো আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, একজন ভারতীয় মডেলের ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলো তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে অভিনেত্রী বাঁধনের ফেসবুক পেজইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট যাচাই করে আলোচিত ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে, Antara Das নামক ভারতীয় মডেলের ফেসবুক  প্রোফাইলে গত ২০  জুলাই প্রকাশিত একটি পোস্টে কিছু ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। এসব ছবির সাথে আলোচিত ছবিগুলোর আংশিক সাদৃশ্য রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

ছবিগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, অভিনেত্রী বাঁধনের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলোর সাথে এসব ছবিতে থাকা ব্যক্তির পোশাক, অঙ্গভঙ্গি ও পারিপার্শ্বিক সবকিছুর মিল রয়েছে কিন্তু ছবিগুলোতে থাকা নারীদের চেহারা ভিন্ন। প্রকৃতপক্ষে, মূল ছবিগুলোতে উক্ত ব্যক্তির মুখমণ্ডলের স্থলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় আজমেরী হক বাঁধনের মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ছবিগুলো তৈরি করা হয়েছে। 

উক্ত ফেসবুক প্রোফাইলের বিবরণী থেকে জানা যায়, ছবির ব্যক্তির নাম অন্তরা দাস এবং তিনি ভারতের কলকাতায় বসবাসকারী একজন ফ্যাশন মডেল । 

অন্তরা দাসের ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একই পোশাক পরিহিত ও একই পশ্চাৎপটে তার একাধিক ভিডিও (, ) পোস্ট করা হয়েছে।

সুতরাং, অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলো সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র