Home Blog Page 124

“ড. ইউনূস সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবেনা বিএনপি” বলে মন্তব্য করেননি মির্জা ফখরুল

সম্প্রতি “ড.ইউনূস সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবেনা বিএনপি। সাফ জানিয়ে দিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।” শীর্ষক দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন যাওয়া নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কোনো বক্তব্যের নয়, বরং এটি ২০২২ সালে এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিএনপির দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ না করার বিষয়ে মির্জা ফখরুলের দেওয়া বক্তব্যের ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটিতে বেসরকারি ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম যমুনা টিভির লোগো দেখতে পাওয়া যায়। উক্ত সূত্র ধরে যমুনার টিভির ইউটিউব চ্যানেল পর্যবেক্ষণ করে গণমাধ্যমটির ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ১০ মে ‘বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি: ফখরুল | Fakhrul’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়৷ এই ভিডিও প্রতিবেদনের একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison: Rumor Scanner

উক্ত ভিডিও প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে অনলাইন গণমাধ্যম রাইজিংবিডি ডট কমের ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১০ মে ‘বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি: ফখরুল’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়৷

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ১০ মে (২০২২) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও সহযোগী সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যৌথ সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আগে বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। তারপর নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। এতে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হবে। বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না।’ 

সুতরাং, আওয়ামীলীগ সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করা নিয়ে ২০২২ সালে মির্জা ফখরুলের দেওয়া বক্তব্যের ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া নিয়ে করা মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র 

আউটসোর্সিং কর্মচারীদের বিক্ষোভ সমাবেশের মিছিলের ভিডিওকে আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ মিছিলের ভিডিও দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি, দীর্ঘ ৬ মাস পর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যে প্রতিবাদ মিছিল করেছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটিতে ভয়েস ওভারে একজন ব্যক্তি দাবি করেন, আওয়ামী লীগ মাঠে অবস্থান করেছে এবং পুলিশ নিরাপত্তা দিয়ে তাদেরকে মিছিল করার সুযোগ করে দিয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের কোনো প্রতিবাদ মিছিলের ভিডিও নয় বরং, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি আউটসোর্সিং কর্মচারীদের বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘ইসলামিক সাইবার মিডিয়া’ নামক ফেসবুক পেজ থেকে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। লাইভ ভিডিওটির একটি ফ্রেমে থাকা ব্যক্তিদের সাথে আলোচিত ভিডিওর ফ্রেমের সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, এটি বাংলাদেশ আউটসোর্সিং কর্মচারী কল্যাণ ও ঐক্য পরিষদের ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশের দৃশ্য।

একই ঘটনার ২৭ ফেব্রুয়ারি ডেইলি ইত্তেফাক এর ফেসবুক পেজে প্রচারিত একটি লাইভ ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenhot: Daily Ittefaq

উক্ত তথ্যগুলোর  সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে একই বিষয়ে ঢাকা পোস্টজাগো নিউজ এর ওয়েবসাইটে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সরকারি আধাসরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে ঠিকাদার প্রথা বাতিল করে বিনা কারণে চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল ও বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ আউটসোর্সিং কর্মচারী কল্যাণ ও ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আউটসোর্সিং কর্মীরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেছে।

সুতরাং, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি আউটসোর্সিং কর্মচারীদের বিক্ষোভ সমাবেশের মিছিলের ভিডিওকে দীর্ঘ ৬ মাস পর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রকাশ্যে প্রতিবাদ মিছিলের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

২০২৫ সালের বইমেলায় মাত্র ৬১ লাখ টাকার বই বিক্রির দাবিটি সত্য নয়

0

ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় অমর একুশে বইমেলা-২০২৫। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মাসব্যাপী অনুষ্ঠিত এই বইমেলার পর্দা নামে। এরই প্রেক্ষিতে এবারের বইমেলায় বিক্রীত বইয়ের একটি হিসাব সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ছড়িয়ে পড়া দাবি অনুযায়ী, এবারের বই বিক্রির পরিমাণ ইতিহাসের সর্বনিম্ন। দাবি অনুযায়ী, ২৭ দিনে মাত্র ৬১ লাখ ৬৫ হাজার ৫৯৩ টাকার বই বিক্রি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় নজিরবিহীনভাবে কম।

দাবিতে আরও উল্লেখ করা হয়, তুলনামূলকভাবে ২০২৪ সালে ২৯ দিনব্যাপী বইমেলায় আনুমানিক ৬০ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছিল। ২০২৩ সালে এ পরিমাণ ছিল ৪৭ কোটি, ২০২২ সালে প্রায় ৫২.৫ কোটি, এবং ২০২০ সালে প্রায় ৮২ কোটি টাকা। এমনকি, ২০২১ সালে কোভিড লকডাউনের মধ্যেও বই বিক্রির পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ১১ লাখ টাকা, যা এবারের তুলনায় তিনগুণেরও বেশি।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে এক্সে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এবারের বইমেলায় মাত্র ৬১ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছে বলে প্রচারিত দাবিটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, এই পরিমাণ কেবল বাংলা একাডেমির স্টল ও প্যাভিলিয়ন থেকে বিক্রীত বইয়ের হিসাব। পুরো বইমেলার অন্যান্য স্টল মিলিয়ে মোট বিক্রির পরিমাণ এখনো প্রকাশ করেনি বাংলা একাডেমি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিডিনিউজ২৪-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মেলায় অংশ নেওয়া প্রকাশনীগুলোর সম্মিলিত বই বিক্রির পরিসংখ্যান এখনো প্রকাশ করেনি মেলা পরিচালনা কমিটি। তবে বাংলা একাডেমির বই বিক্রি গত বছরের তুলনায় অর্ধেকেরও বেশি কমেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলা একাডেমি বইমেলায় ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকার বই বিক্রি করেছিল, ২০২৩ সালে যা ছিল ১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। তবে এবারের মেলায় (২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত) বাংলা একাডেমির বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১ লাখ ৬৫ হাজার ৫৯৩ টাকায়।

একই বিষয়ে, ৪ মার্চ বণিকবার্তায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বাংলা একাডেমি সূত্রের বরাতে জানানো হয়েছে, সদ্য শেষ হওয়া বইমেলায় প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করেছে ৬১ লাখ টাকার বই। গত বছর বিক্রি হয়েছিল ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকার। সে হিসেবে এবার গত বছরের তুলনায় অর্ধেকেরও কম বই বিক্রি হয়েছে।

এছাড়া, ১ মার্চ কালের কণ্ঠে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবারের বইমেলায় বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে মোট বিক্রির পরিমাণ জানানো হয়নি। তবে বাংলা একাডেমির স্টল ও প্যাভিলিয়ন থেকে বিক্রির পরিমাণ ছিল ৬১ লাখ ৬৫ হাজার ৫৯৩ টাকা। 

এই বিষয়ে বাংলা একাডেমির সংস্কৃতি, পত্রিকা ও মিলনায়তন বিভাগের পরিচালক এবং মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ড. সরকার আমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তিনি জানান, ৬১ লাখ টাকা কেবল বাংলা একাডেমির স্টল ও প্যাভিলিয়ন থেকে বিক্রীত বইয়ের পরিমাণ। এটি পুরো বইমেলার মোট বিক্রির হিসাব নয়।

তিনি আরও জানান, বইমেলায় মোট বিক্রির সঠিক পরিসংখ্যান নির্ধারণের কাজ চলছে এবং শিগগিরই তা গণমাধ্যমে জানানো হবে।

সুতরাং, এবারের বইমেলায় মাত্র ৬১ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছে বলে প্রচারিত দাবিটি বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ভারতের ঘটনাকে খুলনায় ভুট্টা ক্ষেতে হিন্দু মহিলাকে ধর্ষণের পর হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য দাবিতে অপপ্রচার

0

গতকাল (০৩ মার্চ) থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ও এক্সে একটি ভিডিও ব্যাপকভাবে প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “খুলনায় ভুট্টা খেতে হি ন্দু মহিলাকে ধ*র্ষনের পর গলা কে*টে হ*ত্যা করা হয়েছে।” কিছু পোস্টে লাশ উদ্ধারের তারিখ হিসেবে গতকাল (০৩ মার্চ) উল্লেখ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, প্রচারিত ভিডিওটিতে ভুট্টা ক্ষেত সদৃশ জায়গায় একজন মহিলাকে গলা কাটা অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি খুলনায় কোনো হিন্দু নারীকে ধর্ষণের পর হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য নয় বরং ভারতের বিহার রাজ্যের একটি ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ‘মুন্না সিংহানিয়া’ নামের ভারত থেকে পরিচালিত একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গত ২৬ ফেব্রুয়ারিতে প্রচারিত একটি ভিডিও পোস্ট পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে সাদৃশ্য পাওয়া যায়। 

Comparison : Rumor Scanner

ভিডিওটি সম্পর্কে ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, “জেলা মোতিহারি, ভুরকুরবা গ্রামের হত্যা (অনূদিত)”। এছাড়া, উক্ত একই তথ্যসম্বলিত ক্যাপশনে ফেসবুকেও গত ২৬-২৭ ফেব্রুয়ারিতে একাধিক পোস্ট পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে মোতিহারি এলাকার বিষয়ে অনুসন্ধান করে জানা যায়, এটি ভারতের বিহার রাজ্যের একটি শহর এবং পূর্ব চম্পারণ জেলার সদর দপ্তর। এটি ভারতের বিহার রাজ্যের অন্যতম প্রধান স্থান।

এছাড়া, এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করেও সম্প্রতি খুলনায় এরূপ কোনো ঘটনা ঘটার সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, ভারতের বিহার রাজ্যে ভুট্টা ক্ষেত সদৃশ জায়গায় একজন মহিলাকে গলা কেটে হত্যার দৃশ্যকে সম্প্রতি খুলনায় হিন্দু নারীকে ধর্ষণের পর হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

লালমাটিয়ায় তরুণী লাঞ্ছিতের ঘটনায় বিক্ষোভের প্ল্যাকার্ডে “আমার দেশ আমার রাস্তা আমার গন্ধ” শীর্ষক বাক্য লেখা ছিল না

0

সম্প্রতি, রাজধানী ঢাকার লালমাটিয়ায় চায়ের দোকানে ধূমপান করা নিয়ে দুই তরুণীকে শারীরিক লাঞ্ছিতের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তার বক্তব্যের প্রতিবাদে ০৩ মার্চ ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে’র ব্যানারে একদল বিক্ষোভকারী লালমাটিয়ার বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। উক্ত বিক্ষোভের একটি প্ল্যাকার্ডে “আমার দেশ আমার রাস্তা আমার গন্ধ” শীর্ষক বাক্য লেখা ছিল দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।  

উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত বিক্ষোভের প্ল্যাকার্ডটিতে “আমার দেশ আমার রাস্তা আমার গন্ধ” শীর্ষক বাক্য লেখা ছিল না বরং উক্ত পোস্টারে থাকা “আমার দেশ আমার রাস্তা আমার অধিকার” শীর্ষক বাক্যের ‘আমার অধিকার’ অংশটুকু ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় মুছে দিয়ে ‘আমার গন্ধ’ শীর্ষক শব্দদ্বয় যুক্ত করে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বাংলা সংস্করণের ওয়েবসাইটে গত ০৩ মার্চ প্রকাশিত এক সংবাদ প্রতিবেদনে এ সংক্রান্ত মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে যে প্ল্যাকার্ডটি দেখা যাচ্ছে তাতে “আমার দেশ আমার রাস্তা আমার গন্ধ” শীর্ষক বাক্য নেই। তাছাড়া আলোচিত ছবির সাথে এই ছবির পারিপার্শ্বিক সকল উপাদানের মিল রয়েছে। প্ল্যাকার্ডে মূলত লেখা রয়েছে, “আমার দেশ আমার রাস্তা আমার অধিকার।”

Comparison: Rumor Scanner 

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, লালমাটিয়ায় প্রকাশ্যে ধূমপান করা নিয়ে দুই তরুণীকে লাঞ্ছনার ঘটনার জের ধরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে বিক্ষোভকারীরা।

লালমাটিয়ায় চায়ের দোকানে ধূমপান করা নিয়ে দুই তরুণীকে শারীরিক লাঞ্ছিতের ঘটনার পরদিন সাংবাদিকরা ওই ঘটনার বিষয়ে জনাব জাহাঙ্গীরের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি যতটুকু জেনেছি তারা (দুই তরুণী) নাকি সিগারেট খাচ্ছিল, কিছু লোক সেখান দিয়ে নামাজ পড়তে যাচ্ছিল। তারা বাধা দেওয়ায়, তাদের ওপর চা ছুড়ে মেরেছিল।’

তিনি বলেন, ‘পাবলিক প্লেসে ধূমপান নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য অপরাধ। তাই সবাইকে অনুরোধ করব, কেউ যেন উন্মুক্ত স্থানে ধূমপান না করে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ওই বক্তব্যের প্রতিবাদে সোমবার ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে’র ব্যানারে একদল বিক্ষোভকারী লালমাটিয়ার ওই জায়গায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। সেখানে তারা দুই তরুণী লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ জানান।

দেশের অন্যান্য গণমাধ্যমের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনেও একই ছবি রয়েছে৷ 

সুতরাং, লালমাটিয়ায় তরুণী লাঞ্ছিতের ঘটনায় বিক্ষোভের প্ল্যাকার্ডে “আমার দেশ আমার রাস্তা আমার গন্ধ” শীর্ষক বাক্য লেখা ছিল দাবিতে একটি ছবি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র 

আর্থিক প্রতারণার উদ্দেশ্যে ভারতীয় শিশুকে বাংলাদেশি দাবিতে প্রচার

0

সম্প্রতি, কিডনি জটিলতায় আক্রান্ত অনিক দাসকে বাচাতে চিকিৎসার জন্য ১০/১২ লক্ষ টাকার প্রয়োজন শীর্ষক দাবিতে একটি শিশুর কয়েকটি ছবি যুক্ত করে একটি মানবিক সাহায্যের আবেদন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনও একই বিষয়ে পোস্ট করেছেন। দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, কিডনি জটিলতায় আক্রান্ত শিশু অনিক দাস দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলো কোনো বাংলাদেশি শিশুর নয় বরং ক্যানসারে আক্রান্ত শ্রীয়ান নামের ভারতীয় এক শিশুর ছবিকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

মূলত, কিডনি জটিলতায় আক্রান্ত অনিক দাস নামে এক শিশুর চিকিৎসার জন্যে প্রায় ১০/১২ লক্ষ টাকা প্রয়োজন যেটি তার গার্মেন্টস কর্মী মা-বাবার পক্ষে বহন করা সম্ভব নয় জানিয়ে একটি ছেলের কয়েকটি ছবি যুক্ত একটি মানবিক সাহায্যের পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত শিশুর ছবিটি বাংলাদেশের কোনো শিশুর নয়। প্রকৃতপক্ষে, ক্যান্সারে আক্রান্ত শ্রীয়ান নামের ভারতীয় এক শিশুর চিকিৎসার জন্যে আর্থিক সহায়তা চেয়ে ভারতের মেডিকেল ক্রাউডফান্ডিং প্ল্যাটফর্ম ‘Ketto’ এর ওয়েবসাইটে শ্রীয়ান ও তার পরিবারের কিছু ছবি প্রকাশ করে। সেখান থেকে শ্রীয়ন ও তার পরিবারের ছবি সংগ্রহ করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, আর্থিক সহায়তার নামে প্রতারণার উদ্দেশ্যে ভারতীয় ক্যান্সার আক্রান্ত শিশু শ্রীয়ানের ছবি বাংলাদেশের শিশু অনিক দাস দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

উল্লেখ্য, পূর্বেও দাবিটি ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টি মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে বন্দুকধারী ব্যক্তির ভাইরাল ভিডিওটি শ্যুটিংয়ের দৃশ্যের

সম্প্রতি ‘জুলাই আগস্টে থানাায় আক্রমণের মধ্যমে লুট করা প্রায় ১৪০০ অস্ত্র ও ২৫০০০০ গোলাবারুদ উদ্ধারে সরকারের এতো অনিহা কেনো? কারণ সব অস্ত্র সমন্বয়ক জঙ্গী জামায়াত-শিবিরের হাতে। ভিডিওতে চট্টগ্রামে পতেঙ্গা অঞ্চলে দুইজন সমন্বয়ক সন্ত্রাসী পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র হাতে মহড়া দিচ্ছে।’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে

একই ভিডিও ‘#TerrorAlert! This video is not from Syria or Gaza. It is from Bangladesh. Youths are publicly waving weapons as they are being trained by Pakistani ISI to attack India as well as Indian and American establishments in Bangladesh.’ শীর্ষক ক্যাপশনে এক্স (সাবেক টুইটার) প্লাটফর্মে প্রচার করা হচ্ছে ৷  যার অর্থ দাঁড়ায়, #সন্ত্রাসের সতর্কতা! এই ভিডিওটি সিরিয়া বা গাজার নয়। এটি বাংলাদেশের। পাকিস্তানি আইএসআই কর্তৃক ভারত, বাংলাদেশে ভারতীয় ও আমেরিকান স্থাপনাগুলিতে আক্রমণ করার প্রশিক্ষণ দেওয়ায় যুবকরা প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে ধরছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এক্স (সাবেক টুইটার)-এ প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চট্টগ্রামে পতেঙ্গা অঞ্চলে দুইজন সমন্বয়ক সন্ত্রাসী পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র হাতে মহড়া দিচ্ছে দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর ঘটনাটি বাস্তবে ঘটেনি বরং, টগর সিনেমার শ্যুটিং সেটের দৃশ্যকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতেই ভিডিও এনালাইসিস করে বন্দুক হাতে ব্যক্তির গায়ের গেঞ্জিতে টগর লেখা দেখতে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে টগর নামক সিনেমার  বিষয়ে অনুসন্ধানে The Daily Star এর ওয়েবসাইটে গত ২৩ ফেব্রুয়ারী প্রকাশিত ‘শুটিং শুরুর আগে জানা গেল ‘টগর’ সিনেমার নায়িকা পূজা চেরি’ শীর্ষক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সিনেমাটির কাহিনী ও চিত্রনাট্য এ আর মুভি নেটওয়ার্ক টিমের।

উক্ত সূত্র ধরে আলোচিত দাবির বিষয়ে জানতে এ আর মুভি নেটওয়ার্ক টিমের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। তারা নিশ্চিত করেছে আলোচিত দাবিটি ভুয়া। এটা টগর সিনেমার দৃশ্য। তাদের দাবি, দূর হতে কেউ ভিডিও করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়েছে। সিনেমার শ্যুটিং এর বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন অবগত রয়েছে। 

Collage: rumor scanner

ঘটনার প্রমাণের স্বপক্ষে ভিডিওতে দেখানো বাস, অংশগ্রহণকারী তরুণদের ছবি এবং যথাযথ কতৃপক্ষের কাছে অনুমতিপত্রের প্রমাণ রিউমর স্ক্যানার টিমের হাতে এসেছে।

Comparison: rumor scanner

এই ছবিতে পরিহিত টি-শার্ট এবং ভিডিওতে দেখানো টি-শার্টের মধ্যে মিল লক্ষ্য করা যায়। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওচিত্রের দৃশ্যের সাথে দাবিটির সম্পর্ক নেই। 

সুতরাং, চট্টগ্রামে পতেঙ্গা অঞ্চলে দুইজন সমন্বয়ক সন্ত্রাসী পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র হাতে মহড়া দিচ্ছে দাবিতে টগর সিনেমার শ্যুটিং সেটের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।  

তথ্যসূত্র

রমজান উপলক্ষে ১০০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেটের অফারটি ভুয়া

0

সম্প্রতি, “শুভ রমজান উপলক্ষে 100 জিবি ফ্রি ইন্টারনেট! আমিও পেয়েছি আপনিও নিতে পারেন” শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বিশেষত মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মাহে রমজান উপলক্ষে ঈদ অফারে সকল সিমের গ্রাহকদের ১০০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট অফার দেওয়ার দাবি সংক্রান্ত লিংকটি ভুয়া এবং উক্ত পদ্ধতি ব্যবহার করে ১০০ জিবি ইন্টারনেট পাওয়ার বিষয়টিও মিথ্যা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত রমজান উপলক্ষে ঈদ অফারে সকল অপারেটরে ৩০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট অফার সংক্রান্ত লিংকটিতে (আর্কাইভ) ঢুকার পর “সমস্ত নেটওয়ার্কের জন্য বিনামূল্যে 100GB ডেটা প্ল্যান” ‘এখানে ক্লিক করুন’ নামের একটি অপশন দেখা যায়। 

Screenshot: Scamming website 

উক্ত বাটনটিতে ক্লিক করার কিছুক্ষণ পর সেখানে মোবাইল নাম্বার প্রদানের একটি ফাঁকা ঘর আসে।

Screenshot: Scamming website

ফোন নাম্বার প্রদানের কিছুক্ষণ পরে নতুন পেজের শুরুতেই লেখা থাকে ‘অভিনন্দন! আপনার নম্বরটি বিনামূল্যে 100GB ডেটা পাওয়ার যোগ্য, ও মাসের জন্য বৈধ! আপনার বিনামূল্যের 100GB ডেটা পেতে, নীচের বোতামটি ক্লিক করুন এবং আপনার পছন্দের মেসেজিং অ্যাপে 5টি গ্রুপ বা 12 জন বন্ধুর সাথে এই তথ্যটি শেয়ার করুন! আসুন আমরা একসাথে উদযাপন করি। আপনার প্রিয়জনকেও সুবিধার জন্য আমন্ত্রণ জানান। বার্তা পাঠানোর পরে, আপনি এখন 15 মিনিটের মধ্যে আপনার মোবাইলে বিনামূল্যে 100GB ডেটা পাবেন।’ 

Screenshot: Scamming website

কিন্তু, নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানকারী সর্বশেষ ধাপটি সম্পন্ন করেননি।

উল্লেখ্য, এসব লিংকে ক্লিক করলে ব্যবহারকারীর ডিভাইসে ম্যালওয়্যার বা ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে, ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হওয়ার ঝুঁকি থাকে এবং আর্থিক প্রতারণার শিকার হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। এ ধরনের ফিশিং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে হ্যাকাররা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা অন্যান্য ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে পারে, ফলে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের মোবাইল সিম কোম্পানিগুলোর পেজ বা ওয়েবসাইটে এ ধরনের কোনো অফারের প্রচারণা পাওয়া যায়নি, এবং গণমাধ্যমেও তাদের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

সুতরাং, রমজান উপলক্ষে ঈদ অফারে সকল সিম গ্রাহকদের ১০০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট প্রদানের দাবিতে যে লিংকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভুয়া। 

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s Own Analysis

বিসিবি সভাপতি ও তামিম ইকবালকে জড়িয়ে সময় টিভির নামে ভুয়া খবর প্রচার

0

সম্প্রতি মূলধারার টেলিভিশন চ্যানেল সময় টিভির একটি প্রতিবেদনের বরাতে দাবি করা হচ্ছে, বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ দায়িত্ব নেওয়ার পর তামিম ইকবালের বাড়িতে এক গোপন বৈঠক হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তামিম ইকবাল, তার ভাই নাফিস ইকবাল, ফারুক আহমেদ ও সাংবাদিক নট আউট নোমান।

দাবি অনুযায়ী সময় টিভির কথিত ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ওই বৈঠকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মাত্র তিন মাস আগে প্রধান কোচ চন্ডিকা হাতুরুসিংহে ও একাধিক বোর্ড কর্মকর্তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাশাপাশি, জাতীয় দলের কেন্দ্রীয় চুক্তি ও স্কোয়াডে কাদের রাখা হবে, সে বিষয়েও সেখানে আলোচনা হয়। এ ছাড়া, বৈঠকের সময় বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ তামিম ইকবালকেই পরবর্তী বিসিবি সভাপতি বানানো প্রতিশ্রুতি দেন বলেও দাবি করা হয়।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ, তামিম ইকবাল, নাফিস ইকবাল এবং ক্রীড়া সাংবাদিক নট আউট নোমানের গোপন বৈঠক নিয়ে সময় টিভি কোনো সংবাদ প্রচার করেনি। বরং, সময় টিভির ভুয়া সূত্র দেখিয়ে সামাজিক মাধ্যমে এই দাবি ছড়িয়ে পড়লে একটি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, তারা এমন কোনো খবর প্রকাশ করেনি।

এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে প্রথমে সময় টিভির ফেসবুক, ইউটিউবঅফিসিয়াল ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করা হয়। কিন্তু সেখানে এ ধরনের কোনো প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।

সাধারণত, গণমাধ্যমগুলো জনপ্রিয় ব্যক্তিদের নিয়ে বিশেষ টপিক বা ক্যাটাগরি পেজ তৈরি করে, যেখানে তাদের সম্পর্কে প্রকাশিত সর্বশেষ ও গুরুত্বপূর্ণ সংবাদগুলো একত্রে সংরক্ষিত থাকে। সময় টিভির ওয়েবসাইটে ‘তামিম ইকবাল’ ও ‘ফারুক আহমেদ’ টপিক পেজ পর্যালোচনা করেও এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

দাবিটির সূত্রপাত খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, অন্তত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে এটি ফেসবুকে প্রচারিত হচ্ছে। একই দিন দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে ‘JoyNal AbeDin Tipu’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে এই দাবির সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি করা হয়। ওই পোস্টে সময় টিভির নাম উল্লেখ করা হলেও কোনো প্রতিবেদনের লিংক, স্ক্রিনশট বা ভিডিও যুক্ত করা হয়নি। অর্থাৎ, এই দাবির ভিত্তি একটি অনির্ভরযোগ্য ফেসবুক আইডির পোস্ট।
এছাড়া, দেশের কোনো মূলধারার গণমাধ্যমেও এ ধরনের বৈঠকের খবর প্রকাশিত হয়নি।

গত ১ মার্চ সময় টিভির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশিত একটি পোস্টে সময় টিভি জানায়, গণমাধ্যমটি এ ধরনের কোনো খবর প্রকাশ করেনি।

Screenshot: Facebook.

সুতরাং, বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ ও সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালকে নিয়ে সময় টিভির বরাতে প্রচারিত গোপন বৈঠকের দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বিজ্ঞানী ইয়োশিনোরি ওহশোমির রোজা নিয়ে গবেষণা দাবিতে ভুয়া তথ্য প্রচার

0

সম্প্রতি, নোবেল বিজয়ী জাপানি বিজ্ঞানী ইয়োশিনোরি ওহশোমির গবেষণা দাবিতে কিছু তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

দাবি করা হচ্ছে, ইয়োশিনোরি ওহশোমি গবেষণা ও আবিষ্কার করেন যে, ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা রোজা রাখলে মানুষের দেহে অটোফেজি (Auto phazy) চালু হয়। তিনি প্রমাণ করেন যে, রোজা রাখার মাধ্যমে মানুষ নিন্মুক্ত উপকারগুলো পান।

১) দেহের সেল পরিস্কার হয়।
২) ক্যান্সার সেল ধ্বংস হয়।
৩) পাকস্থলীর প্রদাহ সেরে যায়।
৪) ব্রেইনের কার্যকারিতা বাড়ে।
৫) শরীর নিজে নিজেই সেরে যায় ( Autophazy)।
৬) ডাইয়াবেটিস ভালো হয়।
৭) বাধ্যর্ক রোধ করা যায়।
৮) স্থুলতা দূর হয়।
৯) দীর্ঘ জীবন লাভ করা যায়।
১০) মানুষ ও জীবের প্রতি সহানুভূতি জন্মায়।”

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইসলামিক বক্তা আমির হামজাও একই দাবিতে ওয়াজে বক্তব্য দিয়েছেন। দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইয়োশিনোরি ওহশোমির গবেষণা দাবিতে রোজার মাধ্যমে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস হওয়ার তথ্য সঠিক নয় বরং, অধ্যাপক ইয়োশিনোরি ওহশোমি এমন মন্তব্য বা গবেষণা করেননি।

প্রকৃতপক্ষে, ২০১৬ সালে অটোফেজি নিয়ে গবেষণার জন্য নোবেল পুরস্কার পান ইয়োশিনোরি ওহশোমি। অটোফেজি মানবদেহের একটি চলমান প্রক্রিয়া। রোজা বা উপবাসসহ নানান উপায়ে এই প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করা যায়। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে নির্দিষ্ট সময় রোজা রাখলে অটোফেজি চালু হয় এবং রোজার মাধ্যমে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস হয় বলে প্রমাণ দিয়েছেন ইয়োশিনোরি এমন দাবি ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে। 

ইয়োশিনোরির কর্মস্থল টোকিও ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজিও ইয়োশিনোরির নামে প্রচারিত তথ্যগুলোকে মিথ্যা বলে ২০২২ সালে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছিল। তবে রোজা ক্যান্সার চিকিৎসায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখে বলে বিভিন্ন গবেষণায় এসেছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও দাবিটি ব্যাপকভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টি মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।