Home Blog Page 123

বাংলাদেশের রাস্তায় অর্ধনগ্ন নারী কর্তৃক যুবককে মারধর দাবিতে ভারতের পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি ‘বাংলাদেশের রাস্তায় পরনের পোশাক খুলে অর্ধনগ্ন এক নারী একজন যুবককে মারছে’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে৷

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশের রাস্তায় একজন অর্ধনগ্ন নারী কর্তৃক এক যুবককে মারধর দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর ঘটনা বাংলাদেশে ঘটেনি বরং ভারতের একটি পুরোনো ঘটনার ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতের উত্তর প্রদেশের গণমাধ্যম UP Namaste এর ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ২৬ জুন ‘The fight between a transgender and an e-rickshaw driver in Ujhani became a topic of discussion’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়৷ উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওটির বিষয়বস্তু ও পারিপার্শ্বিকতার মিল খুঁজে পাওয়া গেছে৷

প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ভারতের উত্তর প্রদেশের উঝানি জেলার বারি বাইপাস এলাকায় রূপান্তরকামী নারী চাঁদনী ও ই-রিকশা চালক আনমোল গুপ্তর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে এবং এক পর্যায়ে চাঁদনী তার পরনের প্যান্ট খুলে আনমোলকে মারধর করতে থাকে। তাদের মধ্যে মারামারির ঘটনার কারণ হিসেবে চাঁদনী কর্তৃক আনমোলের রিকশা নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা বা রিকশা ভাড়া নিতে বাকবিতন্ডা অথবা আনমোল কতৃক চাঁদনীর প্রতি বাজে মন্তব্য করা- এই কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ উঠে এসেছে৷

পরবর্তীতে, আরেক ভারতীয় গণমাধ্যম The Free Press Journal এর ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ০৪ জুলাই ‘VIDEO: Transgender Woman Removes Pant, Gets Naked & Assaults Auto Driver In Crowded Market Over ‘₹10 Dispute’’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়৷ উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিগুলোর সাথে আলোচিত ভিডিওটির চিত্রের মিল খুঁজে পাওয়া গেছে৷

অর্থাৎ, উক্ত ভিডিওর ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং ঘটনাটি বাংলাদেশেরও নয়।

সুতরাং, বাংলাদেশের রাস্তায় একজন অর্ধনগ্ন নারী কর্তৃক এক যুবককে মারধর দাবিতে ভারতের একটি পুরোনো ঘটনার ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

দিল্লিতে শেখ হাসিনার সাথে জাতিসংঘের টিম বৈঠক করছে দাবিতে ২০২৩ সালের যুক্তরাজ্যের ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি ‘ব্রেকিং নিউজ, দিল্লি তে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে, জাতিসংঘের টিম বৈঠক করছে এবং খুব তাড়াতাড়ি দেশে ফেরার আশ্বাস দিয়েছেন। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে ৷

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এক্সে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি দিল্লিতে শেখ হাসিনার সাথে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের বৈঠকের কোনো ঘটনার  নয়, বরং এটি ২০২৩ সালে যুক্তরাজ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্তৃক দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে নাগরিক সংবর্ধনার ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘Ziaul Amin Jewel’ নামক ফেসবুক চ্যানেলে ২০২৩ সালের ০৩ অক্টোবর ‘যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা এমপি কে লন্ডনে নাগরিক সংবর্ধনা।’ ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির ২ মিনিট ২৫ সেকেন্ড দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া গেছে৷

Comparison: Rumor Scanner.

পরবর্তীতে, উক্ত পোস্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কী-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ইলেকট্রিক গণমাধ্যম ‘SOMOY TV’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ০৩ অক্টোবর একই ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত ভিন্ন ফ্রেমের একটি ভিডিও খুঁজেপাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২ অক্টোবর (২০২৩) যুক্তরাজ্যের সেন্ট্রাল লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার এলাকার ম্যাথডিস্ট চার্চ হলে নাগরিক সংবর্ধনায় বক্তব্য রাখেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ এই সংবর্ধনার আয়োজন করে। 

একই বিষয়ে সেসময় দেশের মূলধারার একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনে (, ,) প্রকাশিত হয়। 

সুতরাং,  সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে দিল্লিতে শেখ হাসিনার সাথে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের  বৈঠকের দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ভারতের কাছে হারের পর ট্র্যাভিস হেড স্ত্রীকে জড়িয়ে কান্না করেছেন দাবিতে ভুয়া ছবি ভাইরাল

0

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমি-ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৪ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছেছে ভারত। এরই প্রেক্ষিতে, ভারতের কাছে পরাজয়ের পর অজি ক্রিকেটার ট্র্যাভিস হেড তার স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে কান্না করেছেন দাবিতে একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমি-ফাইনালে ভারতের কাছে পরাজয়ের পর ট্র্যাভিস হেডের স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে কান্নার দাবিটি সম্পূর্ণ সত্য নয়। এই দাবির সঙ্গে ভাইরাল হওয়া ছবিগুলোও বাস্তব নয়, বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে‘cric.box_7x’ নামের একটি ফেসবুক পেজে ৪ মার্চ রাত ১১টা ১১ মিনিটে প্রকাশিত একটি পোস্টে উক্ত ছবিগুলো সম্বলিত সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি পাওয়া যায়। পোস্টটির এডিট হিস্টোরি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রকাশের প্রায় ২১ ঘণ্টা পর সেখানে ‘Ai Pics’ লেখাটি যুক্ত করা হয়। এছাড়া উল্লেখিত ফেসবুক পেজটি ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে নিয়মিতভাবে এআই প্রযুক্তিতে তৈরি বিভিন্ন ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট ছবি শেয়ার করা হচ্ছে।

Screenshot: Facebook.

ছবিগুলো এআই-জেনারেটেড হওয়ার সম্ভাবনা বিবেচনায় রিউমর স্ক্যানার টিম সেগুলো ভালোভাবে বিশ্লেষণ করে। এতে দেখা যায়, ছবিতে ট্র্যাভিস হেডের জার্সির ডিজাইন সেমি-ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের পরিহিত জার্সির সঙ্গে মিলছে না। এছাড়া দাবিকৃত দুইটি ছবিতেও জার্সির ভিন্নতা দেখা যায়। পাশাপাশি, মুখের গঠনে অসঙ্গতি, হাত ও আঙুলের অস্বাভাবিকতা, ব্যাকগ্রাউন্ডের অস্পষ্টতা এবং পোশাকের অবাস্তব টেক্সচারসহ এআই-জেনারেটেড ছবির একাধিক লক্ষণও এতে দেখা যায়।

Comparison: Rumor Scanner.

ছবিগুলোর সত্যতা আরও নিশ্চিত করতে, রিউমর স্ক্যানার টিম ডিপফেক শনাক্তকরণ প্ল্যাটফর্ম হাইভ মোডারেশননে ছবিগুলো বিশ্লেষণ করে। ওয়েবসাইটটির মূল্যায়নে দেখা যায়, ছবিগুলো এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯.৯%।

Screenshot: Hive Moderation.
Screenshot: Hive Moderation. 

এছাড়া, বিশ্বস্ত কোনো সূত্রেও সেমি-ফাইনালে পরাজয়ের পর স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে ট্র্যাভিস হেডের কান্নার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি করা ছবি দিয়ে ভারতের কাছে পরাজয়ের পর অজি ক্রিকেটার ট্র্যাভিস হেডের স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে কান্নার বাস্তব দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে, যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

‘আবু সাঈদ মুদ্ধ, টিপে দিয়েছে দুগ্ধ’ শীর্ষক লেখা সম্বলিত প্রচারিত প্ল্যাকার্ডটি সম্পাদিত

0

সম্প্রতি ‘তারাও বৈষম্যের শিকার! সফলভাবে ৭.৬২ ফায়ার করার পরেও, তাদেরকে উপদেষ্টা বানানো হয়নি।’ শীর্ষক ক্যাপশনে একজন ব্যক্তির হাতে ‘আবু সাঈদ মুদ্ধ, টিপে দিয়েছে দুগ্ধ’ লিখা প্লেকার্ডের একটি ছবি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আবু সাঈদ মুদ্ধ, টিপে দিয়েছে দুগ্ধ’ লেখা প্ল্যাকার্ডের ছবিটি আসল নয়। বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ভিন্ন একটি প্ল্যাকার্ডের ছবিকে সম্পাদনা করে আলোচিত প্ল্যাকার্ডের ছবিটি তৈরি করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম The Daily Sun এর ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ০৭ ডিসেম্বর ‘Armed Forces retirees protest against Indian aggression’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদনে ‘আবু সাইদ মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ৷ প্রচারে: সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যবৃন্দ’ লিখা প্ল্যাকার্ড হাতে একজন ব্যক্তিকে দেখা যায়, উক্ত ব্যক্তির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির ব্যক্তির চেহারার মিল খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison:Rumor Scanner 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের ০৭ ডিসেম্বর মহাখালীতে অবস্থিত রাওয়া ক্লাবের সামনে সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যবৃন্দ এবং জাতীয় ঐক্য ও সংহতি পরিষদ ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানায়, এই আয়োজনের  প্ল্যাকার্ডগুলোতে লিখা ছিলো ‘প্রচারে: সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যবৃন্দ’। 

পরবর্তীতে, ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত New Age এর অনলাইনে ‘Protests continue’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়৷ 

অর্থাৎ, মূল প্ল্যাকার্ডে ‘আবু সাইদ মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ। প্রচারে: সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যবৃন্দ’ এর স্থলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ‘আবু সাঈদ মুদ্ধ, টিপে দিয়েছে দুগ্ধ প্রচারে, সেনাবাহিনীর বহিস্কৃত জঙ্গি লেখা হয়েছে’ শীর্ষক লেখা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে৷ 

সুতরাং, সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের মিছিলের প্ল্যাকার্ডে ‘আবু সাঈদ মুদ্ধ, টিপে দিয়েছে দুগ্ধ’ শীর্ষক লেখা রয়েছে দাবিতে প্রচারিত প্ল্যাকার্ডটি এডিটেড বা সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

কুদরতি পাথর নয়, এটি মিশরের কায়রো বিমানবন্দরে অবস্থিত একটি ভাস্কর্য

0

সম্প্রতি, ‘এই সেই আল্লাহর কুদরতি পাথর যে হাজার হাজার বছর ধরে ঝুলন্ত উড়ে ভেসে আছে’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভিডিওতে দেখতে পাওয়া পাথরগুলো কোনো কুদরতি পাথর নয়। এছাড়াও এগুলো হাজার হাজার বছর ধরে ভেসে থাকার দাবিটিও সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, এটি মিশরের কায়রো বিমানবন্দরে অবস্থিত একটি ভাস্কর্য।

মূলত, ২০০৮ সালে মিশরের কায়রো বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে পাথরের একটি অপটিক্যাল ইল্যুশন ভাস্কর্য তৈরি করা হয়। শাবান আব্বাস নামের মিশরীয় এক জনপ্রিয় ভাস্কর এটি তৈরি করেন। সম্প্রতি, উক্ত ভাস্কর্যটিকেই হাজার হাজার বছর ধরে ঝুলন্ত অবস্থায় ভেসে থাকা কুদরতি পাথর দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, পূর্বেও পাথরগুলো নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন দাবি ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে কুইক ফ্যাক্টচেকফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার।

ভারতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধির সঙ্গে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ দাবিতে ২০১০ সালের পুরোনো ভিডিও প্রচার

গত ২ মার্চ রোববার, ভারতে অবস্থানকালে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এক্সে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এটি গত ২ মার্চ ভারতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধির সঙ্গে শেখ হাসিনার সাক্ষাতের ভিডিও নয়, বরং ২০১০ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইউরোপীয় কাউন্সিলের তৎকালীন সভাপতি হারমান ভান রমপুইয়ের সঙ্গে শেখ হাসিনার সাক্ষাতের পুরোনো ভিডিও।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Herman Van Rompuy’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০১০ সালের ২৫ নভেম্বর প্রকাশিত একই ভিডিওর দীর্ঘ সংস্করণ খুঁজে পাওয়া যায়। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি মূলত এই পুরোনো ভিডিওরই খণ্ডিত অংশ। 

Comparison: Rumor Scanner.

ভিডিওটির বর্ণনা অনুযায়ী, এটি ইউরোপীয় কাউন্সিলের তৎকালীন সভাপতি হারমান ভান রমপুই ও বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক বৈঠকের দৃশ্য।

এ বিষয়ে ডেইলি স্টারে ২০১০ সালের ২১ নভেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ওই সময়ে শেখ হাসিনা রাশিয়া, বেলজিয়াম ও জাপান সফরে ছিলেন এবং ২৫ নভেম্বর ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কাউন্সিলের তৎকালীন সভাপতি হারমান ভান রমপুই ও ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি জোসে ম্যানুয়েল বারোসোর সঙ্গে বৈঠক করেন।

সুতরাং, গত ২ মার্চ ভারতে অবস্থানকালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধির সঙ্গে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ করার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

শেখ হাসিনাকে কড়া নিরাপত্তায় ভারতের এলাহাবাদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পুরোনো ও ভিন্ন ঘটনার 

সম্প্রতি ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত সরকারেরসর্বোচ্চ নিরাপত্তায় পুনরায় দিল্লি এলাহাবাদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে৷ উক্ত ভিডিওতে বিভিন্ন ধরণের গাড়ি ও মোটরসাইকেলের একটি বহরকে সারিবদ্ধভাবে একটি সড়ক ধরে এগিয়ে যেতে দেখা যায়৷ 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটি ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত সরকার কর্তৃক এলাহাবাদে সরিয়ে নেওয়ার গাড়ি বহরের নয় বরং, ভারতের ছাত্তিসগড় রাজ্যের সরকারি গাড়ি বহরের পুরোনো ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে News Agradoot নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ০৭ মার্চ ‘March 7, 2023’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির দৃশ্যের মিল খুঁজে পাওয়া গেছে৷ 

Comparison: Rumor Scanner 

তবে, ভিডিওটিতে প্রকাশিত চিত্রের বিষয়বস্তুর কোনো প্রকার তথ্য প্রদান করা হয়নি। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, গাড়ি বহরের গাড়িগুলোর নাম্বার প্লেটে ‘CS’ কোড রয়েছে৷ উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে  জানা যায়, ‘CS’ ভারতের ছাত্তিসগড় রাজ্যের যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন কোড৷ অর্থাৎ, গাড়ি বহরে থাকা যানবাহন ভারতের ছাত্তিসগড় রাজ্যে রেজিস্ট্রেশন করা। ভিডিওতে একটি গাড়ির নাম্বারপ্লেটের ওপর ‘S.D.M. CG12BA7711’ লিখা প্লেট দেখা যায়৷ 

এছাড়া, Abhishek_upsc_lover নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১৪ মে ‘IAS SDM का क़ाफ़िला’ (IAS SDM এর কাফেলা) শিরোনামে প্রকাশিত একটি রীলে একই ভিডিও ব্যবহার করা হয়৷ উল্লেখ্য, IAS ও SDM দ্বারা Indian Administrative Service  ও Sub Divisional Magistrate বুঝানো হয়৷ 

Screenshot: Youtube 

পরবর্তীতে, S.D.M. CG12BA7711 লিখা প্লেটের সূত্র ধরে ভারতে Ministry of Road Transport and Highways এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট Parivahan Sewa তে উক্ত নাম্বারটি যাচাই করে দেখা যায়, এই নাম্বারের গাড়িটি ভারতের ছাত্তিসগড় রাজ্যের অন্তর্গত কোরবা শহরের District Transport Office (DTO) তে নিবন্ধন করা হয়েছে৷ 

Screenshot: Parivahan Sewa Website 

উল্লেখ্য, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম IBC24 এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ০৭ মার্চ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের ০৬:২৮ সেকেন্ড থেকে সে বছর হোলি উৎসব উদযাপনের সময়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে ভারতের ছাত্তিসগড় রাজ্যের রায়পুর শহরে একটি ফ্ল্যাগ মার্চের ভিডিও প্রচার করা হয়েছে৷ বিভিন্ন পুলিশ স্টেশন থেকে বের হওয়া পুলিশ ও দাঙ্গা পুলিশের গাড়ি এবং মোটরসাইকেলের এক বহরের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির গাড়ি বহরের মিল রয়েছে এবং উভয় ভিডিও প্রকাশের তারিখের (০৭ মার্চ, ২০২৩) মধ্যেও মিল রয়েছে৷ 

Screenshot: YouTube 

উপরোক্ত তথ্যাবলী থেকে নিশ্চিত করা যায়, আলোচিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ২০২৪ সালের ০৫ আগস্ট ভারতে আশ্রয় নেয়, কিন্তু উক্ত ভিডিওটি অন্তত ২০২৩ সালের ০৭ মার্চ থেকে ইন্টারনেটে রয়েছে৷ 

আলোচিত দাবিতে গাড়ি বহরটি দিল্লী এলাহাবাদের বলে উল্লেখ করা হয়েছে; দিল্লি ভারতের একটি ইউনিয়ন টেরিটোরি এবং এলাহাবাদ উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে অবস্থিত, অর্থাৎ দিল্লি ও এলাহাবাদ দুটি ভিন্ন স্থান এবং একে অপরের অন্তর্গত নয়।

সুতরাং, শেখ হাসিনাকে ভারত সরকার কর্তৃক এলাহাবাদে সরিয়ে নেওয়ার দাবিতে ভারতের ছাত্তিসগড় রাজ্যের সরকারের গাড়ি বহরের পুরোনো ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

আসিফ নজরুলকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়নি জাতিসংঘ, ভুয়া দাবি ফেসবুকে

0

সম্প্রতি, ২৪ ঘন্টার মধ্যে উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছে জাতিসংঘ শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আসিফ নজরুলকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়নি জাতিসংঘ বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইন সাইট ব্যবহার করে প্রকাশিত ভুয়া সংবাদ সত্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত ফেসবুক পোস্টগুলোর কমেন্টে সূত্র হিসেবে একটি সংবাদের লিংক দেওয়া হয়েছে।  

Screenshot: Facebook 

উক্ত লিংকে প্রবেশ করে দেখা যায়, এটি ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ‘স্বাধীন নিউজ’ নামের এই ডোমেইন সাইটে ‘জাতিসংঘের নির্দেশে উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের গ্রেপ্তার চূড়ান্ত’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদনটি গত ০৬ মার্চ প্রকাশিত হতে দেখা যায় এবং এটিই আলোচিত দাবিটির সম্ভাব্য উৎস বলে প্রতীয়মান হয়। 

কথিত সংবাদটি পড়ে দেখা যায়, “বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে এক বড় সিদ্ধান্ত এলো জাতিসংঘের পক্ষ থেকে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নির্দেশে **উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে**। তাঁর বিরুদ্ধে **রাষ্ট্রবিরোধী গুজব ছড়ানো, সহিংসতা উসকে দেওয়া ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অভিযোগ** আনা হয়েছে।”

জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধির বিবৃতির বরাত দিয়ে দাবি করা হয়েছে, “বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা রক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব রয়েছে। আমরা দেখেছি, কিছু ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন। এটি বন্ধ করতেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”

রিউমর স্ক্যানার জাতিসংঘের এমন কোনো বিবৃতির অস্তিত্ব পায়নি যেখানে সংস্থাটির পক্ষ থেকে আসিফ নজরুলকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

উক্ত দাবির বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে মূল ধারার গণমাধ্যম এবং বিশ্বস্ত সূত্রগুলোয়ও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিকভাবে এমন কোনো সংবাদ এলে হলে তা মূলধারা গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার কথা।

আসিফ নজরুল বর্তমানে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থান করছেন। ৫ মার্চ জেনেভায় জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার ওপর ‘চার্টিং দ্য পাথ ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত ছিলেন। একই অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মানবাধকার হাই কমিশনার ভলকার টুর্কও উপস্থিত ছিলেন।

সুতরাং, ২৪ ঘন্টার মধ্যে উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছে জাতিসংঘ শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত সংবাদটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

ট্রাম্পকে ঢাকার মাফ করে দেওয়া সংক্রান্ত সংবাদ দেয়নি চ্যানেল২৪, সম্পাদিত ফটোকার্ড প্রচার 

0

সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) ২৯ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প বাংলাদেশের দুজন ব্যক্তির মালিকানাধীন কোনো সংস্থাকে দেওয়ার কথা বলেছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরবর্তীতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ওই বক্তব্য সত্য নয় বলে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরই প্রেক্ষিতে “ট্রাম্পকে এবারের মতো মাফ করে দিলো ঢাকা: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা” শীর্ষক শিরোনামে মূল ধারার গণমাধ্যম চ্যানেল২৪ এর আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।   

উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ট্রাম্পকে ঢাকার মাফ করে দেওয়া সংক্রান্ত সংবাদ দেয়নি চ্যানেল২৪ বরং ভারতীয় ভিসা ইস্যুতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য সংক্রান্ত চ্যানেল২৪ এর একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তিতে সম্পাদনা করে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে চ্যানেল২৪ এর লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ০৪ মার্চ, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে। এর সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, চ্যানেল২৪ এর ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে গত ০৪ মার্চ গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে “ভারতীয় ভিসা ইস্যুতে যে খবর দিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে এই ফটোকার্ডটির ডিজাইন ও ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবির সাথে আংশিক মিল রয়েছে।  

Comparison: Rumor Scanner 

অর্থাৎ, চ্যানেল২৪ এর এই ফটোকার্ডটির শিরোনাম ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

চ্যানেল২৪ এর এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভারতীয় ভিসা নিয়ে কোনো সুখবর নেই বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ৪ মার্চ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন উপদেষ্টা। এই প্রতিবেদনে ট্রাম্পকে ঢাকার মাফ করে দেওয়া সংক্রান্ত কোনো তথ্য উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

পাশাপাশি, আলোচিত দাবি সমর্থিত কোনো তথ্য অন্য কোনো গণমাধ্যমেও পাওয়া যায়নি। 

তবে সেদিন সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রসঙ্গেও কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। প্রথম আলোর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের ক্ষেত্রে এ ধরনের (ট্রাম্পের) উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার কারণে বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনারকে তলব করা হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে মার্কিন দূতকে কেন তলব করা হবে না, এমন এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এটাকে আমি কোনো উসকানিমূলক মন্তব্য বলে মনে করি না। একটি বিবৃতি দিয়েছি। আমরা দেখেছি যে এটার তেমন কোনো ভিত্তি দেখা যাচ্ছে না। উনি (মার্কিন প্রেসিডেন্ট) এটা তো স্পষ্ট করে বলেননি যে বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ রকম কোনো কথা তিনি বলেননি। তিনি দুই ব্যক্তি বলে কাকে বোঝাতে চেয়েছেন, সেটি আমি জানি না। কাজেই এরপর আমরা কোনো বাড়াবাড়ি করার প্রয়োজন দেখি না।’

সুতরাং, ট্রাম্পকে এবারের মতো মাফ করে দিলো ঢাকা: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত চ্যানেল২৪ এর নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

ভিডিওর এই নারী সারজিস আলমের স্ত্রী নয়

গত ৩১ জানুয়ারি বিয়ে করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সারজিসের সাথে এক নারীর রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকার একটি ভিডিওর মাধ্যমে প্রচার করা হয় যে উক্ত নারী সারজিসের স্ত্রী।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওর এই নারী সারজিস আলমের স্ত্রী নয় বরং এই নারী গত বছরের জুলাইয়ের কোটা আন্দোলনে নিহত শহীদ সৈকতের বোন সাবরিনা আফরোজ সেবন্তি। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলানিউজ২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত বছরের ২১ ডিসেম্বর প্রকাশিত একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিও থেকে জানা যায়, সে সময় পাকিস্তানি সংগীতশিল্পী রাহাত ফতেহ আলী খানের কনসার্ট দেখতে আর্মি স্টেডিয়ামে যাওয়ার সময়ের দৃশ্য এটি। তবে এই ভিডিও থেকে উক্ত নারীর পরিচয় জানা যায়নি। 

Screenshot: YouTube  

পরবর্তীতে ভিডিওতে উপস্থিত থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিডিয়া সেলের সদস্য রায়হান আহমেদ তামীমের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, উক্ত নারী জুলাইয়ের আন্দোলনে শহিদ মাহামুদুর রহমান সৈকতের বোন। নাম সাবরিনা আফরোজ সেবন্তী। 

রিউমর স্ক্যানার সেবন্তীর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে থাকা তার ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওর নারীর চেহারার সাদৃশ্য পেয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলার সময় গত বছরের ১৯ জুলাই নিহত হন শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান সৈকত। বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে সৈকত ছিলেন তিন ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট। তারই বোন সাবরিনা আফরোজ সেবন্তী। 

অর্থাৎ, ভিডিওতে থাকা নারী সারজিসের স্ত্রী নয়। 

তাছাড়া, সারজিস আলমের স্ত্রীর নাম কিংবা ছবি প্রকাশ করা হয়নি। তবে দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সার্জিস আলমের স্ত্রী সবার বড়। তিনি একজন কোরআনের হাফেজা। সবসময়ই পর্দা করে চলেন বলে জানা গেছে।

সুতরাং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সারজিস আলমের সাথে এক নারীর রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকার একটি ভিডিওর মাধ্যমে প্রচার করা হয় যে উক্ত নারী সারজিসের স্ত্রী; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র