Home Blog Page 122

রাবির লতিফ হল শাখা ছাত্রদল ও শিবির সভাপতির রুম থেকে অস্ত্র উদ্ধারের দাবিগুলো ভুয়া

সম্প্রতি, সামাজিক মাধ্যমে অস্ত্রে সজ্জিত একটি টেবিলের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি শেয়ার করে কিছু পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলের শিবির সভাপতির রুম থেকে সেনাবাহিনীর উদ্ধার করা অস্ত্রের দৃশ্য। অপর কিছু পোস্টে একই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, এগুলো ছাত্রদল সভাপতির রুম থেকে উদ্ধার করা অস্ত্র।

শিবির সভাপতির রুম থেকে অস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ছাত্রদল সভাপতির রুম থেকে অস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

এছাড়া এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অস্ত্র উদ্ধারের ভিডিও দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যম টিভি নাইন-এর দাবি দেখুন এখানে

ইউটিউবে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলের ছাত্রদল বা শিবির সভাপতির রুম থেকে অস্ত্র উদ্ধারের দাবিটি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে, এই দাবিতে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি গত বছরের আগস্টে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী থানায় লুট হওয়া অস্ত্র সেনাবাহিনীর মাধ্যমে উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করার পুরোনো ঘটনার।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার লৌহজং প্রতিনিধি শওকত হোসেনের ফেসবুক প্রোফাইলে গত ১৮ আগস্ট প্রকাশিত একটি পোস্টে একই ভিডিও পাওয়া যায়। পোস্টের ক্যাপশন অনুযায়ী, ভিডিওটি মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী থানায় লুট হওয়া অস্ত্র সেনাবাহিনী উদ্ধার করে থানায় হস্তান্তরের দৃশ্য।

Comparison: Rumor Scanner. 

একই দিন আজকালের খবরের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর, মুন্সীগঞ্জ সদর থানা ও ট্র্যাফিক পুলিশ কার্যালয় থেকে লুট হওয়া বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। ১৮ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা সার্কিট হাউজ কক্ষে উদ্ধার হওয়া এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ সহ লুট হাওয়া বিভিন্ন সরঞ্জাম পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে সেনাবাহিনী। উদ্ধারকৃত এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ সহ বিভিন্ন সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে রাইফেল,পিস্তল,শর্টগান সহ বিভিন্ন ধরনের মোট ১৪০টি আগ্নেয়াস্ত্র,৩ হাজার ৯৩৪ রাউন্ড গোলাবারুদ। এছাড়াও উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৯ হাজার ৫০০ টাকার,নগদ অর্থ ও পুলিশের পোষাক সামগ্রী। একই দিন জেলার টঙ্গীবাড়ী থানা থেকে লুট হওয়া ৭৯টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩ হাজার ৮৯১টি গোলাবারুদ উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

একই তথ্য একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনেও (,,) উঠে এসেছে।

আমরা বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে ভিডিওটি প্রথম ফেসবুকে পোস্ট করা সাংবাদিক শওকত হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি জানান, তার দেওয়া ক্যাপশনের তথ্যটি সঠিক।

এছাড়া, গতকাল (৭ আগস্ট) সমকালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নবাব আবদুল লতিফ হলের শিবির সভাপতির কক্ষ থেকে অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া তথ্যটি গুজব বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান।

সুতরাং, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলের ছাত্রদল বা শিবির সভাপতির রুম থেকে অস্ত্র উদ্ধারের দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

হালনাগাদ/ Update

১২ মার্চ, ২০২৫ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়ে একই দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি আমাদের নজরে আসার প্রেক্ষিতে দাবিটি এই প্রতিবেদনে যুক্ত করা হলো।

এটি ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ শেখ মুজিবের ভাষণের ছবি নয়

১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর তৎকালীন পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে আওয়ামী লীগ বিজয় লাভ করে। কিন্তু শাসকগোষ্ঠীর ক্ষমতা হস্তান্তরে তালবাহানার কারণে বাঙালিরা আন্দোলন শুরু করে৷ এর প্রেক্ষিতে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন রমনার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ঐতিহাসিক একটি ভাষণ দেন। তার এই ভাষণের একাধিক ছবি বহু বছর ধরেই প্রচার হয়ে আসছে যার মধ্যে একটি ছবিতে দেখা যায়, তিনি একটি ডায়াসের সামনে দাঁড়িয়ে তর্জনী উঠিয়ে ভাষণ দিচ্ছেন। এই ডায়াস কোনো পর্দা বা কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল না।  

উক্ত ছবি ব্যবহার করে সম্প্রতি প্রকাশিত গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন চ্যানেল আই, সংবাদ প্রকাশ

একই দাবিতে ফেসবুকের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ইউটিউবের ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে এক্সের পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বহুল প্রচারিত এই ছবিটি ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের নয় বরং সে বছরেরই ৩ জানুয়ারি রেসকোর্স ময়দানে আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর আরেক সমাবেশ থেকে ছবিটি তুলেছিলেন জালালউদ্দিন হায়দার। 

মূলত, জালালউদ্দিন হায়দার নামে এক ফটোগ্রাফার ১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারি রেসকোর্স ময়দানের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাবেশে তাঁর ভাষণ দেওয়ার সময়কার একটি ছবি তুলেন। উক্ত ছবিটিকে তিনি এবং ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে ৭ মার্চের ছবি বলে দাবি করা হয়েছে। তবে রিউমর স্ক্যানার টিম যাচাই করে দেখেছে, বঙ্গবন্ধু যে ডায়াসটির সামনে দাঁড়িয়ে ০৭ই মার্চ ভাষণ দিয়েছিলেন, সেটি সাদা কাপড় বা পর্দা দিয়ে সামনের এবং উপরের অংশ ঢেকে দেওয়া ছিল। কিন্তু প্রচারিত ছবিটিতে সাদা কাপড় বা পর্দার অস্তিত্ব নেই। এ সংক্রান্ত ভিডিও এবং সে সময়কার পত্রিকা বিশ্লেষণ করে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে ছবিটি ০৭ই মার্চের নয়।

Screenshot comparison: Rumor Scanner

সুতরাং, জালালউদ্দিন হায়দারের তোলা ১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারি রেসকোর্স ময়দানের সমাবেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ দেওয়ার সময়কার একটি ছবিকে সে বছরের ৭ মার্চের ছবি দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে; যা বিভ্রান্তিকর।

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই ছবি নিয়ে একই দাবি ইন্টারনেটে প্রচার হলে সে সময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার৷ 

এটি সারজিস আলমের পদত্যাগের দাবির ভিডিও নয়

সম্প্রতি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের পদত্যাগের দাবিতে মধ্যরাতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সারজিস আলমের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল করার দাবিটি সঠিক নয়। বরং, আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলমের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের করা বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে এতে বিক্ষোভকারীদের ‘সুশীলতার দিন শেষ, বিচার চাই বাংলাদেশ’, ‘দফা এক দাবি এক, জাহাঙ্গীরের পদত্যাগ’ শীর্ষক স্লোগান দিতে শোনা যায়।

স্লোগানের সূত্র ধরে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক Sabbir Uddin Rion এর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ❝জুলাই রক্তের দাম চাই, নিরাপদ দেশ চাই।❞ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিওর স্লোগানের সাথে উক্ত বিক্ষোভ মিছিলের স্লোগানের মিল রয়েছে। এছাড়াও উক্ত ভিডিওর মিছিলের সামনে থাকা দুইজন ব্যক্তির জার্সির সাথে আলোচিত ভিডিওর মিছিলের সামনে থাকা দুই ব্যক্তির জার্সির প্যাটার্নের মিল রয়েছে। পাশাপাশি ভিডিওটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, দেশের আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলমের পদত্যাগ দাবিতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষার্থীরা মিছিল করেন।

পরবর্তীতে উক্ত ব্যক্তির ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একই রাতের মিছিলের আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল রয়েছে।

Video Comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলেও একই বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

অনলাইন সংবাদমাধ্যম বিডিনিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে মধ্যরাতে ঢাবিতে মিছিল শীর্ষক শিরোনামে উক্ত ঘটনায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগের দাবিতে ২৪ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে বিক্ষোভ মিছিল করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া এলাকা থেকে মিছিল ‍শুরু করে বিভিন্ন হলে হলে গিয়ে মিছিল করে পরে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশ করেন বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা। 

অর্থাৎ, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগের দাবিতে ঢাবি শিক্ষার্থীদের করা বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিওকে সারজিস আলমের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মিছিল দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, সারজিস আলমের পদত্যাগের দাবিতে মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল করার দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

‘বাংলাদেশ এখন পুরোপুরি দুর্বৃত্তদের কবলে’ শীর্ষক ফখরুলের ভাইরাল বক্তব্যটি বর্তমান সরকারের আমলের নয়

লাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে, ‘বাংলাদেশ এখন পুরোপুরি দুর্বৃত্তদের কবলে। বাংলাদেশ এখন ‍লুটেরা মাফিয়াদের কবলে, একদিকে যেমন রাজনৈতিক অধিকার হরণ করছে। অন্যদিকে তারা অর্থনীতিকে ধ্বংস করছে এবং তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে এটিকে পরনির্ভরশীল একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা। আমরা এর বিরুদ্ধে লড়াই করছি। ইনশাআল্লাহ আমরা জয়ী হবো।’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।  

ইউটিউবে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং, ২০২৪ সালের মে মাসে আওয়ামী লীগের শাসনামলে নিয়ে তার করা মন্তব্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম একাত্তর টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে ৩০ মে ২০২৪ সালের বাংলাদেশ এখন লুটেরা,মাফিয়া ও দুর্বৃত্তদের কবলে: মির্জা ফখরুল | Mirza Fakhrul | BNP | Ekattor TV শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এটির ১ মিনিট থেকে ১ মিনিট ২১ সেকেন্ড পর্যন্ত সময়ের ভিডিও ফুটেজ এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের সাথে আলোচিত ভিডিওটির মিল রয়েছে। পাশাপাশি প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারকে উদ্দেশ্য করে গণমাধ্যমে তিনি এসব কথা বলেন। 

মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্য নিয়ে সেসময় অন্যান্য গণমাধ্যমগুলোও প্রতিবেদন (, ) প্রকাশ করে।

অর্থাৎ,  বিএনপি মহাসচিবের ভাইরাল বক্তব্যের  সাথে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই।

সুতরাং, ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি-র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের দেওয়া বক্তব্যকে বর্তমান বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে তার মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে ; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

উড়োজাহাজ তৈরি করা আলোচিত জুলহাস হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাননি

অন্তত ৬ মার্চ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দুইটি স্ক্রিনশট কোলাজ করে দাবি প্রচার করা হচ্ছে, “বিমান বানিয়ে তাক লাগিয়ে দেওয়া ছেলেটা বিশ্ববিখ্যাত হারবাট ভার্সিডিতে চান্স পেয়েছে। বাঙালিরা মেধার মূল্যায়ন দিতে না জানলেও যুক্তরাজ্য ঠিকই জানে।”

সংযুক্ত স্ক্রিনশট দুইটির একটি মূলধারার সংবাদমাধ্যম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ফেসবুক পেজে প্রচারিত একটি পোস্টের এবং অপরটি ‘আহমেদ হাসান’ নামের একজন ব্যক্তির ফেসবুক পোস্টের।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নিজের তৈরি ‘উড়োজাহাজে’ আকাশে উড়া মানিকগঞ্জের তরুণ জুলহাস মোল্লার যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার তথ্যটি সঠিক নয় বরং ‘আহমেদ হাসান’ নামের অপর এক ব্যক্তির হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার ঘটনাকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টে সংযুক্ত মূলধারার সংবাদমাধ্যম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ফটোকার্ডে প্রদত্ত টেক্সটের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে গত ০৪ মার্চে সংবাদমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে উক্ত পোস্টটি পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টটিতে সংযুক্ত ফটোকার্ডে বলা হয়, “মানিকগঞ্জের এসএসসি পাশ যুবক সফলভাবে নিজ হাতে তৈরি করা বিমান উড়িয়েছেন।” (অনূদিত) এবং পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়, “বাজেট সীমাবদ্ধতার কারণে পাম্প ইঞ্জিন, অ্যালুমিনিয়াম এবং স্টেইনলেস স্টিল ব্যবহার করে নির্মিত উক্ত এয়ারক্রাফটটির ওজন প্রায় ১০০ কেজি।” (অনূদিত) উক্ত ফেসবুক পোস্টটির মন্তব্য সেকশনে এ বিষয়ে গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের লিঙ্কের সংযুক্তি পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে একই শিরোনামে গত ০৪ মার্চে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, “অভূতপূর্ব উদ্ভাবনক্ষমতার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে, মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার শৈতঘর টেওতা গ্রামের ২৮ বছর বয়সী ইলেকট্রনিক মেকানিক জুলহাস মোল্লা নিজে তৈরি করা একটি রেডিও-নিয়ন্ত্রিত এয়ারক্রাফট সফলভাবে উড়িয়েছেন, যা তার সমাজের মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছে। আজ (৪ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে যমুনার চর, জাফরগঞ্জ থেকে উড্ডীন হওয়া এ বিমানটি শত শত মানুষের ভিড় আকর্ষণ করে।

…দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া এলাকার বাসিন্দা জুলহাস ও তার পরিবার নদী ভাঙনের কারণে শৈতঘর টেওতা গ্রামে স্থানান্তরিত হন। ছয় ভাই ও দুই বোনের মধ্যে পঞ্চম জুলহাস ২০১৪ সালে জিয়নপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি সম্পন্ন করেন, তবে আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারেননি।” (অনূদিত)

এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের ওয়েবসাইটে গত ০৪ মার্চে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন থেকেও একইরকম তথ্য জানা যায়। এছাড়াও জানা যায়, পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান জুলহাস ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন। অবসরে তিনি এই উড়োজাহাজ তৈরি করেন।

এছাড়া, জুলহাস মোল্লা যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন শীর্ষক এমন কোনো তথ্যের উল্লেখ কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রেই পাওয়া যায়নি।

পরবর্তী অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টে সংযুক্ত দ্বিতীয় স্ক্রিনশট তথা ‘আহমেদ হাসান’ নামের ফেসবুক ব্যবহারকারীর ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশটে প্রদত্ত টেক্সটের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে উক্ত মূল পোস্টটি খুঁজে পাওয়া যায়। ‘আহমেদ হাসান’ নামের একটি ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ০৪ মার্চে “রমজানের তৃতীয় দিনে আপনাদের জন্য একটি সুখবর নিয়ে এসেছি—আমি হার্ভার্ডের মাস্টার ইন ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আমার জন্য দোয়া রাখবেন! (অনূদিত)” শীর্ষক ক্যাপশনে উক্ত পোস্টটি করা হয়৷ উক্ত পোস্টটিতে আহমেদ হাসান হার্ভার্ড থেকে পাওয়া তার ভর্তির আবেদনের এক্সেপ্টেন্স লেটারের একটি ছবিও সংযুক্ত করেন।

তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় তিনি এর আগে ঢাকার নটরডেম কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’তে পড়াশোনা করেছেন। অপরদিকে আলোচিত জুলহাস এসএসসির পর আর পড়াশোনা করেননি। তাছাড়া, আলোচিত দুই ব্যক্তির নামও ভিন্ন। হার্ভার্ডে পড়ার সুযোগ পাওয়া ব্যক্তির নাম আহমেদ হাসান, অপরদিকে বিমান বানিয়ে আলোচনায় আসা ব্যক্তির নাম জুলহাস মোল্লা।

এছাড়াও, প্রচারিত পোস্টে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় দাবি করা হলেও আদতে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় যুক্তরাষ্ট্রের

সুতরাং, আহমেদ হাসান নামে ভিন্ন এক ব্যক্তির হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাওয়ার ঘটনাকে বিমান বানিয়ে আলোচনায় আসা জুলহাস মোল্লা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

নীলফামারীতে ধর্ষণের শিকার এই কিশোরী হিন্দু ধর্মাবলম্বী নয়

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া গ্রামে ১৪ বছরের এক হিন্দু মেয়েকে আব্দুল কুদ্দুস ও ছামিনুর রহমান নামের দুইজন ইসলামপন্থী ব্যক্তি সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। আরও দাবি করা হয়, ধর্ষণকারীরা ওই কিশোরীকে অপহরণ করে একটি ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন।

এক্সে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও ধর্ষণের শিকার কিশোরী হিন্দু ধর্মাবলম্বী নয়। এছাড়াও, ধর্ষণকারীদের সাথে ইসলামপন্থী কোনো রাজনৈতিক দলেরও সংশ্লিষ্টতা নেই।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে ভিডিওটিতে ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে দেখতে পাওয়া যায়। তার চেহারা প্রযুক্তির সহায়তায় ঝাপসা করে দেওয়া হয়েছে। ক্যামেরার পেছনে থাকা একজন ব্যক্তির প্রশ্নের প্রেক্ষিতে ভিডিওটিতে ওই কিশোরীকে উত্তর দিতে দেখা যায়। ভিডিওটির শুরুতেই মেয়েটি তার নাম উল্লেখ করে। যেটি মূলত একটি মুসলিম নাম। এছাড়াও সে জানায়, পানি আনতে গেলে অভিযুক্তরা তার মুখ বেঁধে জোড়পূর্বক তাকে একটি ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে যায়।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে সংবাদমাধ্যম সময়ের কণ্ঠস্বরের ওয়েবসাইটে গত ১ মার্চ নীলফামারীতে স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেফতার ২ বন্ধু শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের ছাতনাই বালাপাড়া গ্রামে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই রাতেই ছামিনুর রহমান ও আব্দুল কুদ্দুস নামের দুই বন্ধুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রতিবেদনটি থেকে আরও জানা যায়, ওই কিশোরী সন্ধ্যায় নলকূপ থেকে পানি আনতে গেলে সেখানে ওত পেতে থাকা উক্ত দুই বখাটে যুবক কিশোরীর হাত মুখ বেঁধে পার্শ্ববর্তী ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করে।

তবে প্রতিবেদনের কোথাও মেয়েটির ধর্মীয় পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি। এছাড়াও এ ঘটনায় প্রকাশিত অন্যান্য গণমাধ্যমের প্রতিবেদনেও (দেশ রূপান্তরআজকের পত্রিকা) এটি উল্লেখ করা হয়নি।

তাই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ডিমলা থানার পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ ফজলে এলাহীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, ধর্ষিতা, ধর্ষণকারী এবং সহায়তাকারী সকলেই মুসলিম। মূলত, গ্রেফতারকৃত দুইজনের মধ্যে একজন ধর্ষণে সহায়তাকারী। তবে তাদের সাথে ইসলামপন্থী কোনো রাজনৈতিক দলের কোনো সংশ্লিষ্টা নেই বলেও জানান তিনি।

সুতরাং, নীলফামারীতে ১৪ বছরের হিন্দু কিশোরীকে অপহরণ করে ইসলামপন্থীদের সংঘবদ্ধ ধর্ষণের দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারির ভুয়া দাবি প্রচার

0

অন্তত গত ০৫ মার্চ থেকে, ‘আজ ঢাকার অবস্থা খারাপ, ১৪৪ ধারা জারি’ শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকায় সম্প্রতি ১৪৪ ধারা জারির কোনো ঘটনা ঘটেনি বরং, ভিন্ন ঘটনার পুরোনো সংবাদকে উক্ত শিরোনাম দিয়ে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত ফেসবুক পোস্টগুলোর কমেন্টে সূত্র হিসেবে প্রিয়বাংলা২৪ নামে একটি সাইটের সংবাদের লিংক দেওয়া হয়েছে।  

উক্ত লিংকে প্রবেশ করে দেখা যায়, এটি ব্লগস্পটের ‘প্রিয় বাংলা’ নামের এই ডোমেইন সাইটে অবস্থা খুবই খারাপ, ১৪৪ ধারা জারি’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হতে দেখা যায়।

কথিত সংবাদটি পড়ে দেখা যায়, ময়মনসিংহ নগরীর থানা ঘাট এলাকার হজরত শাহ সুফি সৈয়দ কালু শাহ (রহ.)-এর মাজার ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল ৯টা ৪৫ মিনিট থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা পর্যন্ত এই আদেশ কার্যকর থাকবে।

জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুফিদুল আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের থানাঘাট থেকে ট্রাফিক অফিস পর্যন্ত একই সময়ে একাধিক পক্ষ সভা-সমাবেশের ঘোষণা দেয়। এতে এলাকায় চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতির সম্ভাবনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করতে বাধ্য হয়।

অর্থাৎ, সংবাদটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং এটি ঢাকারও কোনো ঘটনা নয়।

জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর ১৪ জানুয়ারির এক প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।  

পরবর্তীতে ঢাকার কোনো স্থানে সম্প্রতি ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে মূল ধারার গণমাধ্যম এবং বিশ্বস্ত সূত্রগুলোয়ও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিকভাবে এমন কোনো সংবাদ এলে হলে তা মূলধারা গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার কথা।

সুতরাং, ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত সংবাদটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশের রাস্তায় অর্ধনগ্ন নারী কর্তৃক যুবককে মারধর দাবিতে ভারতের পুরোনো ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি ‘বাংলাদেশের রাস্তায় পরনের পোশাক খুলে অর্ধনগ্ন এক নারী একজন যুবককে মারছে’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে৷

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশের রাস্তায় একজন অর্ধনগ্ন নারী কর্তৃক এক যুবককে মারধর দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর ঘটনা বাংলাদেশে ঘটেনি বরং ভারতের একটি পুরোনো ঘটনার ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতের উত্তর প্রদেশের গণমাধ্যম UP Namaste এর ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ২৬ জুন ‘The fight between a transgender and an e-rickshaw driver in Ujhani became a topic of discussion’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়৷ উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সাথে আলোচিত ভিডিওটির বিষয়বস্তু ও পারিপার্শ্বিকতার মিল খুঁজে পাওয়া গেছে৷

প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ভারতের উত্তর প্রদেশের উঝানি জেলার বারি বাইপাস এলাকায় রূপান্তরকামী নারী চাঁদনী ও ই-রিকশা চালক আনমোল গুপ্তর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে এবং এক পর্যায়ে চাঁদনী তার পরনের প্যান্ট খুলে আনমোলকে মারধর করতে থাকে। তাদের মধ্যে মারামারির ঘটনার কারণ হিসেবে চাঁদনী কর্তৃক আনমোলের রিকশা নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা বা রিকশা ভাড়া নিতে বাকবিতন্ডা অথবা আনমোল কতৃক চাঁদনীর প্রতি বাজে মন্তব্য করা- এই কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ উঠে এসেছে৷

পরবর্তীতে, আরেক ভারতীয় গণমাধ্যম The Free Press Journal এর ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ০৪ জুলাই ‘VIDEO: Transgender Woman Removes Pant, Gets Naked & Assaults Auto Driver In Crowded Market Over ‘₹10 Dispute’’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়৷ উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিগুলোর সাথে আলোচিত ভিডিওটির চিত্রের মিল খুঁজে পাওয়া গেছে৷

অর্থাৎ, উক্ত ভিডিওর ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় এবং ঘটনাটি বাংলাদেশেরও নয়।

সুতরাং, বাংলাদেশের রাস্তায় একজন অর্ধনগ্ন নারী কর্তৃক এক যুবককে মারধর দাবিতে ভারতের একটি পুরোনো ঘটনার ভিডিও প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

দিল্লিতে শেখ হাসিনার সাথে জাতিসংঘের টিম বৈঠক করছে দাবিতে ২০২৩ সালের যুক্তরাজ্যের ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি ‘ব্রেকিং নিউজ, দিল্লি তে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে, জাতিসংঘের টিম বৈঠক করছে এবং খুব তাড়াতাড়ি দেশে ফেরার আশ্বাস দিয়েছেন। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে ৷

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এক্সে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি দিল্লিতে শেখ হাসিনার সাথে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের বৈঠকের কোনো ঘটনার  নয়, বরং এটি ২০২৩ সালে যুক্তরাজ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্তৃক দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে নাগরিক সংবর্ধনার ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘Ziaul Amin Jewel’ নামক ফেসবুক চ্যানেলে ২০২৩ সালের ০৩ অক্টোবর ‘যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা এমপি কে লন্ডনে নাগরিক সংবর্ধনা।’ ক্যাপশনে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির ২ মিনিট ২৫ সেকেন্ড দৃশ্যের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া গেছে৷

Comparison: Rumor Scanner.

পরবর্তীতে, উক্ত পোস্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কী-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ইলেকট্রিক গণমাধ্যম ‘SOMOY TV’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ০৩ অক্টোবর একই ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত ভিন্ন ফ্রেমের একটি ভিডিও খুঁজেপাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২ অক্টোবর (২০২৩) যুক্তরাজ্যের সেন্ট্রাল লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার এলাকার ম্যাথডিস্ট চার্চ হলে নাগরিক সংবর্ধনায় বক্তব্য রাখেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ এই সংবর্ধনার আয়োজন করে। 

একই বিষয়ে সেসময় দেশের মূলধারার একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনে (, ,) প্রকাশিত হয়। 

সুতরাং,  সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে দিল্লিতে শেখ হাসিনার সাথে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের  বৈঠকের দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ভারতের কাছে হারের পর ট্র্যাভিস হেড স্ত্রীকে জড়িয়ে কান্না করেছেন দাবিতে ভুয়া ছবি ভাইরাল

0

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমি-ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৪ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছেছে ভারত। এরই প্রেক্ষিতে, ভারতের কাছে পরাজয়ের পর অজি ক্রিকেটার ট্র্যাভিস হেড তার স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে কান্না করেছেন দাবিতে একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমি-ফাইনালে ভারতের কাছে পরাজয়ের পর ট্র্যাভিস হেডের স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে কান্নার দাবিটি সম্পূর্ণ সত্য নয়। এই দাবির সঙ্গে ভাইরাল হওয়া ছবিগুলোও বাস্তব নয়, বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে‘cric.box_7x’ নামের একটি ফেসবুক পেজে ৪ মার্চ রাত ১১টা ১১ মিনিটে প্রকাশিত একটি পোস্টে উক্ত ছবিগুলো সম্বলিত সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি পাওয়া যায়। পোস্টটির এডিট হিস্টোরি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রকাশের প্রায় ২১ ঘণ্টা পর সেখানে ‘Ai Pics’ লেখাটি যুক্ত করা হয়। এছাড়া উল্লেখিত ফেসবুক পেজটি ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে নিয়মিতভাবে এআই প্রযুক্তিতে তৈরি বিভিন্ন ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট ছবি শেয়ার করা হচ্ছে।

Screenshot: Facebook.

ছবিগুলো এআই-জেনারেটেড হওয়ার সম্ভাবনা বিবেচনায় রিউমর স্ক্যানার টিম সেগুলো ভালোভাবে বিশ্লেষণ করে। এতে দেখা যায়, ছবিতে ট্র্যাভিস হেডের জার্সির ডিজাইন সেমি-ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের পরিহিত জার্সির সঙ্গে মিলছে না। এছাড়া দাবিকৃত দুইটি ছবিতেও জার্সির ভিন্নতা দেখা যায়। পাশাপাশি, মুখের গঠনে অসঙ্গতি, হাত ও আঙুলের অস্বাভাবিকতা, ব্যাকগ্রাউন্ডের অস্পষ্টতা এবং পোশাকের অবাস্তব টেক্সচারসহ এআই-জেনারেটেড ছবির একাধিক লক্ষণও এতে দেখা যায়।

Comparison: Rumor Scanner.

ছবিগুলোর সত্যতা আরও নিশ্চিত করতে, রিউমর স্ক্যানার টিম ডিপফেক শনাক্তকরণ প্ল্যাটফর্ম হাইভ মোডারেশননে ছবিগুলো বিশ্লেষণ করে। ওয়েবসাইটটির মূল্যায়নে দেখা যায়, ছবিগুলো এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯.৯%।

Screenshot: Hive Moderation.
Screenshot: Hive Moderation. 

এছাড়া, বিশ্বস্ত কোনো সূত্রেও সেমি-ফাইনালে পরাজয়ের পর স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে ট্র্যাভিস হেডের কান্নার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, এআই দিয়ে তৈরি করা ছবি দিয়ে ভারতের কাছে পরাজয়ের পর অজি ক্রিকেটার ট্র্যাভিস হেডের স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে কান্নার বাস্তব দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে, যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র