Home Blog Page 120

মামাবাড়িতে নির্যাতনের শিকার হওয়া কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার তরুণী দাবিতে প্রচার

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন কিশোরীর ধারণকৃত একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “বিবস্ত্র নারী- উলঙ্গ দেশ, এ কেমন বাংলাদেশ | তরুণীকে সংঘবদ্ধভাবে ধ’র্ষণ! ইনুচ্চা এর কারান।”

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত কিশোরীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়নি বরং, তাকে তার মামাবাড়িতে মামা-মামিরা নানাভাবে নির্যাতন করেছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ‘ক্যাট ওয়ার্ল্ড’ নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ৮ মার্চে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে ভিডিও দুইটির সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

ভিডিওটি সম্পর্কে ক্যাপশনে বলা হয়, “মামার বাড়ি কবিতার মতো বাস্তব কাহিনি..

“মামি আইলো লাঠি নিয়া পালাই পালাই”..কিন্তু রোজিনা পালাতে পারে নি.. দা*, প্লেট, গরম খুনতি, পুতারও বাদ যাই নি পায়ের আঙুল থেতলে দাওয়ার জন্য..”।

এরই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো’তে “কিশোরীকে গরম খুন্তির ছেঁকা-নির্যাতন, মামা-মামি গ্রেপ্তার” শীর্ষক শিরোনামে গত ৭ মার্চে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনটিতে নির্যাতনের শিকার হওয়া কিশোরীর একটি ছবিও অস্পষ্টভাবে সংযুক্ত করা হয় যার সাথে আলোচিত কিশোরীর সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, “নির্যাতনের শিকার রোজিনা আক্তার (১৫) চাঁদপুর সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের বাখরপুর গ্রামের আলী আহম্মদ ভূঁইয়ার মেয়ে। এ ঘটনায় গতকাল (৬ মার্চ) রাতে চাঁদপুর মডেল থানায় নারী শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছেন আলী আহম্মদ ভূঁইয়া। রোজিনা চাঁদপুর ২৫০ শয্যার সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, ‘এক বছর আগে রোজিনাকে ঢাকায় আমার বড় মেয়ের কাছে দিয়েছিলাম। সেখান থেকে আমাকে না জানিয়ে রোজিনার মামা রুবেল মোল্লা তাঁর প্রতিবন্ধী সন্তান রিফাতকে দেখাশোনা করার কথা বলে তাকে (রোজিনা) ঢাকায় বাসায় নিয়ে যান। কিন্তু রোজিনাকে গৃহকর্মীর কাজ করানো হতো। গত জানুয়ারিতে ঢাকা থেকে চাঁদপুরে চলে আসেন রুবেল মোল্লা ও তাঁর স্ত্রী রোকেয়া বেগম। শহরের বিষ্ণুদী মাদ্রাসা রোড এলাকার একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন। এক বছর ধরে আমাদের সঙ্গে রোজিনাকে দেখা করতে এবং কথা বলতে দেননি তাঁরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে রোজিনা মামা-মামির নির্যাতন সইতে না পেরে ঘর থেকে পালিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন রোজিনার অবস্থা দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে প্রথম থানায় নিয়ে যায় এবং হাসপাতালে ভর্তি করায়।’

রোজিনা জানায়, নানা অজুহাতে মামা-মামি তাকে মারধর করত। ধারালো দা, ছুরি দিয়ে শরীরে আঘাত করেছে। পিঠে ব্লেড দিয়ে কেটে দিয়েছে। গরম খুন্তি দিয়ে ছেঁকা দিত। পায়ের আঙুলগুলো থেঁতলে দিয়েছে। ঠিকমতো খাবার দিত না। মা–বাবার সঙ্গেও দেখা বা কথা বলতে চাইলে দিত না। গতকাল বাসায় মামি ছিল না। তখন সে ঘর থেকে পালিয়ে বাইরে চলে আসে।”

তবে, উক্ত প্রতিবেদনে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের শিকার হওয়ার বিষয়ে কোনো উল্লেখ করা হয়নি।

এছাড়া এ বিষয়ে মূলধারার গণমাধ্যম আরটিভির ফেসবুক পেজ ও সমকালের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একইরকম তথ্য জানা যায় কিন্তু সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, মামা বাড়িতে নির্যাতনের শিকার হওয়া কিশোরীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের শিকার হওয়া তরুণী দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

নরসিংদীতে বিএনপি নেতাদের চাঁদাবাজির সংবাদ দাবিতে তিন গণমাধ্যমের নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি নরসিংদীতে বিএনপি নেতাদের চাঁদাবাজির ঘটনায় গণমাধ্যমের সংবাদ দাবিতে তিনটি গণমাধ্যম (ফেস দ্যা পিপল, মানবজমিন ও মানবকণ্ঠ)-এর লোগো সম্বলিত তিনটি ফটোকার্ড সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।

ফেস দ্যা পিপলের লোগো সম্বলিত ফটোকার্ডে দাবি করা হয়েছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মইন খানের ব্যক্তিগত সহকারী বাহাউদ্দিন মিল্টনের চাঁদাবাজিতে নরসিংদীর পলাশের ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, প্রধান শিক্ষকসহ সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। বিএনপি নেতা আলম মোল্লা, মহিউদ্দিন চিশতী, ছাত্রদল নেতা পাপন ও আরিফ তার চাঁদাবাজির প্রধান হাতিয়ার

মানবজমিনের লোগো সম্বলিত ফটোকার্ডে দাবি করা হয়েছে, নরসিংদীর পলাশ ও ঘোড়াশালে বিএনপি নেতারা প্রতিদিন পরিবহন খাত থেকে লাখ টাকার চাঁদাবাজি করছে, অথচ প্রশাসন নীরব।

মানবকণ্ঠের লোগো সম্বলিত ফটোকার্ডে দাবি করা হয়েছে, বিএনপি নেতা মহিউদ্দিন চিশতী ও সাবেক ছাত্রনেতা রতন পরিবহন থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করছে।

 উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ),  এখানে (আর্কাইভ)। 

ফাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, নরসিংদীতে বিএনপি নেতাদের চাঁদাবাজির দাবিতে আলোচিত সংবাদ বা ফটোকার্ডগুলো সংশ্লিষ্ট তিনট গণমাধ্যম (ফেস দ্যা পিপল, মানবজমিন ও মানবকণ্ঠ) প্রকাশ করেনি। বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে গণমাধ্যমগুলোর লোগো ব্যবহার করে নকল ফটোকার্ড তৈরি করা হয়েছে।

ফেস দ্যা পিপলের লোগো সম্বলিত ফটোকার্ডে যাচাই

আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে ফেস দ্যা পিপলের লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ফেস দ্যা পিপলের লোগো ও ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখের সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, ফেস দ্যা পিপলের ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, আলোচিত ফটোকার্ডটিতে ব্যবহৃত ফন্ট ও গঠনের সাথে ফেস দ্যা পিপলের প্রচলিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্ট ও গঠনের ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner. 

মানবজমিনের লোগো সম্বলিত ফটোকার্ডে যাচাই

আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে মানবজমিনের লোগো লোগো থাকলেও এতে প্রকাশের কোনো তারিখের উল্লেখ নেই।

মানবজমিনের লোগোর সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, মানবজমিনের ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, আলোচিত ফটোকার্ডটিতে ব্যবহৃত ফন্ট ও গঠনের সাথে মানবজমিনের প্রচলিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্ট ও গঠনের ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner. 

মানবকণ্ঠের লোগো সম্বলিত ফটোকার্ডে যাচাই

আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে মানবকণ্ঠের লোগো রয়েছে এবং এটি প্রকাশের তারিখ ০৩ মার্চ, ২০২৫ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

মানবকণ্ঠের লোগো ও ফটোকার্ড প্রকাশের তারিখের সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, মানবকণ্ঠের ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, আলোচিত ফটোকার্ডটিতে ব্যবহৃত ফন্ট ও গঠনের সাথে মানবকণ্ঠের প্রচলিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্ট ও গঠনের ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner.

সুতরাং, নরসিংদীতে বিএনপি নেতাদের চাঁদাবাজির ঘটনায় গণমাধ্যমের সংবাদ দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

ভারতীয় সন্দেহে নয়, দুজন ইরানি নাগরিক ছিনতাইকারী সন্দেহে হামলার শিকার 

সম্প্রতি রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় একটি মারধরের ঘটনার প্রেক্ষিতে ‘ভারতীয় নাগরিক ভেবে দুই ইরানি নাগরিকের উপর হামলা’ শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে৷ 

উক্ত দাবিতে এক্স-এ প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বসুন্ধরা এলাকায় মারধরের শিকার ওই দুই ইরানি নাগরিককে ভারতীয় সন্দেহে নয় বরং ছিনতাইকারী সন্দেহে মারধর করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ই-পেপার বাংলাদেশ বুলেটিনের ফেসবুক পেজে গত ০৭ মার্চ প্রকাশিত পোস্টে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া গেছে৷ 

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ০৪ মার্চ দুপুরে মানি একচেঞ্জ করার জন্য বসুন্ধরা এলাকায় যান ইরানি নাগরিক আহমেদ (৭৪) ও  মেহেদী (১৮)। এসময় আশেপাশের লোকজন মব তৈরি করে  ছিনতাইকারী সন্দেহে তাদের গণপিটুনি দিয়ে তাদের আহত করে৷ 

পরবর্তীতে, একই ঘটনায় গণমাধ্যম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ওয়েবসাইটে ০৫ মার্চ ‘বসুন্ধরায় ছিনতাইয়ের সন্দেহে দুই ইরানি নাগরিকের ওপর হামলার ঘটনায় আটক ২’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়৷ 

Screenshot: Website 

সুতরাং, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় দুইজন ইরানি নাগরিকের ছিনতাইকারী সন্দেহে হামলার শিকারের ঘটনাকে ভারতীয় সন্দেহে হামলা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

আওয়ামী লীগ নেতাকে আটক করতে আসায় নয়, মাছ লুটে বাঁধা দেওয়ায় এলাকাবাসী পুলিশকে ধাওয়া দেয়

সম্প্রতি ‘ব্রেকিং নিউজ ৭.৩.২০২৫ সুনামগঞ্জ শাল্লা আওয়ামিলীগ নেতাকে ধরতে গেলে এলাকাবাসী একজোট হয়ে উল্টো পুলিশকে ধাওয়া করে। অভিনন্দন সুনামগঞ্জবাসী।’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সুনামগঞ্জে আওয়ামিলীগ নেতাকে আটক করতে করতে গেলে এলাকাবাসীর সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার কোনো ঘটনার নয় বরং, এটি জলমহাল থেকে মাছ লুট করার চেষ্টাকালে পুলিশ বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনার ভিডিও। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে মূলধারার গণমাধ্যম যায়যায়দিনের ওয়েবসাইটে ২০২৫ সালের ৮ মার্চ ‘শাল্লায় পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে জলমহাল লুট’ শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সুনামগঞ্জের শাল্লায় সত্তুয়া জলমহালে মাছ ধরতে বাধা দেওয়ায় জনতার; সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ৭ মার্চ (শুক্রবার) সকালে দ্বিতীয় দফায় সত্তুয়া বিলে মাছ ধরতে আসে আসপাশের এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার জনতা। 

পুলিশ সূত্রে প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, পুলিশ মাছ ধরতে বাধা দিলে এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশকে ধাওয়া দেয় স্থানীয় জনতা। এক পর্যায়ে বিক্ষোভত্ব জনতা জলমহাল ইজারা দারদের ২টি ছাউনি ঘর ও নৌকায় আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

একই বিষয়ে একই তথ্যে দেশের মূলধারার একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন (, ,) প্রকাশিত হয়। 

অর্থাৎ, সুনামগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতাকে আটক করতে যাওয়ায় নয় বরং জলমহাল থেকে মাছ লুটে বাধা দেওয়ার কারণে পুলিশের সাথে গ্রামবাসীর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

সুতরাং, সুনামগঞ্জে মাছ লুটের চেষ্টার সময় পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ভিডিওকে আওয়ামিলীগ নেতাকে ধরতে গেলে এলাকাবাসীর সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র

গ্রামীণ ব্যাংকের কিস্তির টাকা শোধ করতে না পারলে সম্পত্তি আমাদের নামে লিখে দিবে শীর্ষক মন্তব্য করেননি ড. ইউনূস

সম্প্রতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলছেন ‘গ্রামীণ ব্যাংক থেকে লোন নাও, কিস্তির টাকা শোধ করবা করতে না পারলে সমস্যা নেই। ঘর বাড়ি জায়গা জমি আমাদের নামে লিখে দিলা। তারপর রাস্তাঘাঠে থাকবা সুন্দরভাবে। এইটা হলো সংস্কার।’ এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘গ্রামীণ ব্যাংক থেকে লোন নাও, কিস্তির টাকা শোধ করবা করতে না পারলে সমস্যা নেই। ঘর বাড়ি জায়গা জমি আমাদের নামে লিখে দিলা। তারপর রাস্তাঘাঠে থাকবা সুন্দরভাবে। এইটা হলো সংস্কার।’ শীর্ষক মন্তব্য করেননি। বরং ভিন্ন ভিডিও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পাদনা করে কৃত্রিমভাবে অডিও যুক্ত করে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূল ধারার গণমাধ্যম চ্যানেল২৪ এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ১২ ফেব্রুয়ারী প্রকাশিত ‘আয়নাঘরের বিভিন্ন ভার্সন দেশজুড়ে রয়েছে: প্রধান উপদেষ্টা’ শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর ৫৩ সেকেন্ডের অংশ হতে আলোচিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়। তবে ভিন্ন অডিও শুনতে পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটি থেকে জানা যায়, গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা, অন্যান্য উপদেষ্টা মন্ডলী, কয়েকজন ভুক্তভোগী এবং সাংবাদিকসহ আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। ভিডিওতে প্রধান উপদেষ্টাকে বলতে শোনা যায়,“বীভৎস দৃশ্য। নৃশংস জিনিস হয়েছে এখানে।’ তিনি বলেন, ‘যতটাই শুনি মনে হয়, অবিশ্বাস্য, এটা কি আমাদেরই জগৎ, আমাদের সমাজ? যাঁরা নিগৃহীত হয়েছেন, তাঁরাও আমাদের সমাজেই আছেন। তাঁদের মুখ থেকে শুনলাম। কী হয়েছে, কোনো ব্যাখ্যা নেই।”

একাধিক জাতীয় গনমাধ্যম থেকে আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস ব্রিফিং এর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে (দেখুন এখানে, এখানে)। এছাড়া উক্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীন ব্যাংক নিয়ে কোনো কথা বলেননি।

তাছাড়া কোনো গণমাধ্যম সূত্রেও দাবিটির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। 

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওটি প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ‘গ্রামীণ ব্যাংক থেকে লোন নাও, কিস্তির টাকা শোধ করবা করতে না পারলে সমস্যা নেই। ঘর বাড়ি জায়গা জমি আমাদের নামে লিখে দিলা। তারপর রাস্তাঘাঠে থাকবা সুন্দরভাবে। এইটা হলো সংস্কার।’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

রোজায় শেখ হাসিনাকে মিস করা প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেননি সেনাপ্রধান 

সম্প্রতি ‘এই রোজায় আমরা শেখ হাসিনাকে অনেক মিস করি – সেনাপ্রধান’ শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ইউটিউবে প্রচার করা হয়েছে ৷

উক্ত দাবিতে প্রচারিত ইউটিউব পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ হাসিনাকে মিস করা প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য করেননি সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বরং, অধিক ভিউ পাওয়ার আশায় চটকদার থাম্বনেইল এবং ভিন্ন ভিডিও ব্যবহার করে ভুয়া এই দাবি প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে “Jamuna 24” নামের যে ইউটিউব চ্যানেলটি থেকে ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে তা পর্যবেক্ষণ করে এটি যমুনা টিভির আসল চ্যানেল নয় বলে প্রতীয়মান হয়। যমুনা টিভির আসল ইউটিউব চ্যানেলের নাম Jamuna Tv

পরবর্তীতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে রোজায় দ্রব্যমূল্যের দাম ও তেলের সিন্ডিকেট নিয়ে কথা বলতে দেখা যায় সাধারণ মানুষকে।

Screenshot: YouTube

উক্ত ভিডিওর ১ মিনিট ১৭ সেকেন্ডে একজন সাধারণ মানুষকে বাজারের পরিস্থিতি নিয়ে কথার এক পর্যায়ে বলতে দেখা যায়, “ এই মুহুর্তে আমরা শেখ হাসিনাকে মিস করতেছি, আমরা শেখ হাসিনার রেসিপি মিস করতেছি, আগের মতো রেসিপি পাই না, কাঁঠালের বার্গার…”।  

উক্ত ভিডিওতে কোথাও সেনাপ্রধানকে কোনো বক্তব্য দিতে দেখা যায় নি। 

তাছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে রমজানে হাসিনাকে মিস করা প্রসঙ্গে সেনাপ্রধানের এমন মন্তব্যের দাবির সপক্ষে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। সেনাপ্রধানের মতো একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এমন কথা বললে সেটি নিয়ে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে সংবাদ প্রচার হওয়ার কথা। 

সুতরাং, রমজানে শেখ হাসিনাকে মিস করছেন সেনাপ্রধান শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

  • Rumor Scanner’s Own Analysis

রাজনীতি করতে চান না শীর্ষক মন্তব্য করেননি মমতাজ

0

অন্তত গত ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম মন্তব্য করেছেন যে তিনি রাজনীতি করতে চান না। অতীত ভুলে দেশের মাঝে থাকতে চান। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকের কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজনীতি করতে চান না শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি মমতাজ বরং গত বছর আওয়ামী লীগ সরকার পতন পরবর্তী সময়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি দলটির সাবেক এই সংসদ সদস্যকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এক প্রকার নিষ্ক্রিয় রয়েছেন তিনি। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মমতাজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, অ্যাকাউন্টটিতে সর্বশেষ পোস্ট করা হয় গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর। তিনি সেদিন ইউটিউব থেকে একটি ভিডিওর লিংক পোস্ট করেন। এছাড়া, আগস্টের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আরো দুইটি পোস্ট করেন তিনি। এসব পোস্টে তিনি আলোচিত দাবির সাথে দৃশ্যমান কোনো মন্তব্য করেননি। ফেসবুকে মমতাজের একটি ভেরিফাইড পেজ রয়েছে। পেজটিতে সর্বশেষ তিনি একটি গানের ভিডিও পোস্ট করেন গত বছরের ১৩ অক্টোবর। এই পেজেও তাকে আলোচিত দাবির সাথে দৃশ্যমান কোনো মন্তব্য করতে দেখা যায়নি। 

পরবর্তী অনুসন্ধানে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর গত ০৪ মার্চের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের কোনো খোঁজখবর নেই। সাত মাস ধরে তাঁকে প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানেও দেখা যায়নি।

মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরের জয়মণ্ডপ মমতাজ বেগমের বাড়ি। গত বছর এমন সময়েও বাড়িটি মানুষের আনাগোনায় মুখর ছিল। কিন্তু এখন সেই বাড়ির পরিবেশ একেবারে নীরব।

প্রথম আলো জানিয়েছে, মমতাজের ব্যবহৃত দুটি ফোন নম্বর বন্ধ। ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ভাইবার ও হোয়াটসঅ্যাপে সক্রিয় থাকলেও এখন কোনো অ্যাপে সক্রিয় নন তিনি।

প্রথম আলোর এই প্রতিবেদন থেকেই স্পষ্ট যে মমতাজ সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসে কোনো মন্তব্য করেননি। 

অন্যান্য গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা তথ্য মেলেনি। 

সুতরাং, সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম আমি আর রাজনীতি করতে চাই না-অতীত ভুলে দেশের মাঝে থাকতে চাই। শীর্ষক মন্তব্য করেছেন শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

শেখ হাসিনাকে ইফতারে গোবরের চপ দেওয়া সংক্রান্ত কোনো সংবাদ দেয়নি চ্যানেল আই

0

গেল বছরের আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে তিনি ভারতেই অবস্থান করছেন বলে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে। সম্প্রতি, “শেখ হাসিনাকে ইফতারে গোবরের চপ দেওয়া হলো” শীর্ষক শিরোনামে মূলধারার ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম চ্যানেল আইয়ের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ হাসিনাকে ইফতারে গোবরের চপ দেওয়া হলো দাবি করে চ্যানেল আই কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে চ্যানেল আইয়ের একটি ফটোকার্ড নকল করে এই ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে চ্যানেল আইয়ের লোগো রয়েছে। এর সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, চ্যানেল আইয়ের ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও, আলোচিত ফটোকার্ডটিতে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে চ্যানেল আইয়ের প্রচলিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্টের ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়।

Photocard Comparison by Rumor Scanner

চ্যানেল আইয়ের ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমেও উক্ত ফটোকার্ডটি ভুয়া বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডে শেখ হাসিনার যে ছবিটি প্রচার করা হচ্ছে তা বাংলাদেশেরই। গত বছরের সেপ্টেম্বরে রিউমর স্ক্যানার প্রকাশিত এক ফ্যাক্টচেক থেকে জানা যাচ্ছে, ২০১৯ সালের ১৪ মার্চ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কুমুদিনী কমপ্লেক্সের ভারতেশ্বরী হোমসে শহীদ দানবীর রনদা প্রসাদ সাহা স্মারক সম্মাননা ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহেনাও। শেখ হাসিনার জন্য সেদিন ৩১ পদের বাঙ্গালি খাবারের আয়োজন করেছিল কুমুদিনী পরিবার। কাঁসার থালায় খাবার ও কাঁসার গ্লাসে পানি পান করেন শেখ হাসিনা। সে সময়েরই তোলা ছবি এটি। 

সুতরাং, শেখ হাসিনাকে ইফতারে গোবরের চপ দেওয়া হলো দাবিতে চ্যানেল আইয়ের নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

মাদারীপুরের হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য দাবিতে ভারতের মন্দিরের ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার ভিডিও প্রচার

গতকাল (৮ মার্চ) মাদারীপুরে বালুর ব্যবসা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তিন ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহতরা হলেন আতাউর রহমান সরদার ওরফে আতাবুর (৩৫), সাইফুল ইসলাম ওরফে হিটার সাইফুল (৩০) এবং তাদের চাচাতো ভাই পলাশ সরদার।

এই ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে মাথাবিহীন এক ব্যক্তিকে হাত-পা নড়াতে দেখা যায়। ভিডিওতে আর্তনাদের শব্দও শোনা যায়। এটি প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, এটি মাদারীপুরের আলোচিত হত্যাকাণ্ডের ভিডিও।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে এক্সে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, আলোচিত ভিডিওটির সঙ্গে মাদারীপুরের আলোচিত তিন ব্যক্তি হত্যাকাণ্ডের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি ভারতের একটি মন্দিরে ভূত তাড়ানোর বিশেষ ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার দৃশ্য। মূল ভিডিওতে থাকা ব্যক্তিটি আসলে একটি গর্তে মাথা ঢুকিয়ে রেখেছে। তবে, দাবিকৃত ভিডিওতে মূল ভিডিওর খণ্ডিত অংশ প্রচারের ফলে ব্যক্তিটিকে মস্তকবিহীন বলে মনে হচ্ছে। এছাড়া, ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে ভিডিওটির অডিও পরিবর্তন করে আর্তনাদের শব্দও সংযোজন করা হয়েছে।

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘Balaji Bhagwanpur Dham’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ৭ মার্চ প্রকাশিত একই ভিডিওর দীর্ঘ সংস্করণ খুঁজে পাওয়া যায়। আলোচিত দাবির সঙ্গে প্রচারিত ভিডিওটি মূলত এই ভিডিওরই খণ্ডিত অংশ।

Comparison: Rumor Scanner. 

ভিডিওটির দীর্ঘ সংস্করণ পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এক ব্যক্তি একটি মূর্তির সামনে থাকা মাথা ঢুকিয়ে হাত-পা ছুঁড়ছেন। ভিডিওটিতে একজন নারীকেও একই আচরণ করতে দেখা যায়।

ভিডিওটির বর্ণনা ও শিরোনাম বিশ্লেষণে জানা যায়, এটি ভারতের উত্তর প্রদেশের আমেঠি জেলার একটি মন্দিরের ভিডিও।

অর্থাৎ, ভিডিওটি ভারতের ওই মন্দিরে ভূত তাড়ানোর উদ্দেশ্যে পালিত এক বিশেষ ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার চিত্র।

এছাড়া, দাবিকৃত ভিডিওটিতে আর্তনাদের শব্দ শোনা গেলেও মূল ভিডিওতে ঢাক-ঢোল ও অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে কীর্তন গাইতে শোনা যায়।

উক্ত ইউটিউব চ্যানেল পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, সেখানে একই ধরনের আরও অনেক ভিডিও (,) রয়েছে। এসব ভিডিওতে বিভিন্ন ব্যক্তিকে একই গর্তে মাথা ঢুকিয়ে হাত-পা নড়াতে দেখা যায়। পাশাপাশি, সেখানে আরও একটি বড় গর্তের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা যায়।

সুতরাং, মাদারীপুরের হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য দাবিতে ভারতের একটি মন্দিরে ভূত তাড়ানোর উদ্দেশ্যে পালিত বিশেষ ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s analysis.
  • Balaji Bhagwanpur Dham: YouTube Video

অস্ত্রোপচার সফল, পিনাকী মারা যাওয়ার দাবিটি ভুয়া

0

সম্প্রতি ফ্রান্সে বসবাসরত বাংলাদেশি অনলাইন এক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য তার ফেসবুক পেজের মাধ্যমে জানান যে হাসপাতালে তার একটি সার্জারি হবে। এর প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে যে পিনাকী হাসপাতালে অপারেশন টেবিলেই মারা গেছেন।

উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, পিনাকী ভট্টাচার্য মারা যাওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ডোমেইন সাইট ব্যবহার করে প্রকাশিত ভুয়া সংবাদ সত্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রচারিত ফেসবুক পোস্টগুলোর কমেন্টে সূত্র হিসেবে একটি সংবাদের লিংক দেওয়া হয়েছে।  

Screenshot: Facebook 

উক্ত লিংকে প্রবেশ করে দেখা যায়, এটি ব্লগস্পটের বিনামূল্যের ‘আমার দেশ’ নামের একটি ডোমেইন সাইট; যাতে ‘প্রতিবেদন: ফ্রান্সের হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সময় মারা গেলেন পিনাকী ভট্টাচার্য’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদনটি গত ০৮ মার্চ প্রকাশিত হতে দেখা যায় এবং এটিই আলোচিত দাবিটির সম্ভাব্য উৎস বলে প্রতীয়মান হয়। সাইটটির লোগো হিসেবে জাতীয় দৈনিক আমার দেশ এর লোগো ব্যবহার করা হয়েছে। যদিও গণমাধ্যমটির মূল ওয়েবসাইটে এমন কোনো সংবাদের অস্তিত্ব মেলেনি।

Screenshot: Blogspot site

কথিত সংবাদটি পড়ে দেখা যায়, ০৭ মার্চ পিনাকীর অস্ত্রোপচার হয়। তবে অস্ত্রোপচারের এক পর্যায়ে গুরুতর জটিল সমস্যা দেখা দিলে অপারেশন টেবিলেই মারা যান তিনি। এই সংবাদে দাবি করা হয়, পিনাকীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে পিনাকী ভট্টাচার্যের ফেসবুক পেজেই অস্ত্রোপচার পরবর্তী সময়ের একটি পোস্ট পাওয়া যায়। পোস্টে পেজটির এডমিন জানান, পিনাকীর সার্জারী ভালো ভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। তাকে রুমে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি ভালো বোধ করছেন। 

অর্থাৎ, পিনাকীর মারা যাওয়ার দাবিটি ভুয়া। তাছাড়া, 
নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে পিনাকীর মৃত্যুতে ড. ইউনূসের
শোক জানানোরও কোনো প্রমাণ মেলেনি।

সুতরাং, অনলাইন এক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য মারা গেছেন শীর্ষক দাবিতে প্রচারিত সংবাদটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র