বাবা মায়ের বাড়িতে সন্তানের থাকা নিয়ে কোনো রায় দেয়নি বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট

সম্প্রতি, “বাবা মায়ের বাড়িতে আর সন্তানের আইনত অধিকার আর থাকবে না, ছেলের থাকা বা না থাকাটা নির্ভর করবে বাবা মায়ের ওপর। শেষ বয়সে বাবা মায়ের ঠিকানা বৃদ্ধাশ্রমে না হয়ে যেন নিজের গড়া বাড়িতেই হয় তাই এই রায় দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট” শীর্ষক তথ্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

সম্প্রতি বাংলাদেশ পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলামও তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে উক্ত দাবিতে ২০১৮ সালের একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

টিকটকে প্রচারিত এমন একটি ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে ২০২৩ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাবা মায়ের বাড়িতে আর সন্তানের আইনত অধিকার থাকবে না শীর্ষক কোনো রায় বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক দেওয়া হয়নি বরং ভারতের দিল্লি হাইকোর্টের একটি রায়কে কেন্দ্র করে আলোচিত দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়।

মূলত, ২০১৬ সালে ভারতে বাবা-মা বনাম ছেলে-বৌয়ের মামলায় রায় দিতে গিয়ে দিল্লি হাইকোর্ট একটি রায় দেয়। এই রায়ে দিল্লি হাইকোর্ট জানায়, পিতা-মাতার নিজের অর্জিত বাড়িতে সন্তানের থাকার কোনো আইনী অধিকার নেই। যদি পিতামাতা চান তবেই সন্তান বাড়িতে থাকতে পারবেন। আবার এর মানে এই নয় যে, সন্তানদের বাড়ি থাকার অনুমতি দিয়েছে বলে সন্তানের সারাজীবনের ভরণপোষণের দায়িত্ব পিতা-মাতাকে বহন করতে হবে। দিল্লি হাইকোর্টের এই রায়টিকেই বাংলাদেশে কোনো দেশের নাম উল্লেখ ব্যতীত ‘বাবা মায়ের বাড়িতে আর সন্তানের আইনত অধিকার আর থাকবে না, ছেলের থাকা বা না থাকাটা নির্ভর করবে বাবা মায়ের ওপর। শেষ বয়সে বাবা মায়ের ঠিকানা বৃদ্ধাশ্রমে না হয়ে যেন নিজের গড়া বাড়িতেই হয় তাই এই রায় দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট’ শীর্ষক দাবিতে ইন্টারনেটে মাধ্যমে প্রচার করা হয়। 

উল্লেখ্য, পূর্বেও একই দাবিতে ইন্টারনেটে ফটোকার্ডটি ছড়িয়ে পড়লে সেসময় বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। 

আরও পড়ুন

spot_img