এবার উপদেষ্টা মাহফুজের গ্রেফতারের ভুয়া তথ্য সজীব ওয়াজেদ জয়ের পোস্টে

সম্প্রতি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় তার ফেসবুক পেজ এবং এক্স অ্যাকাউন্টে একটি ইউটিউব ভিডিও লিংক শেয়ার করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বিষয়ে দাবি করেন যে মাহফুজ অনেক বছর আগে আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সদস্য হিসেবে গ্রেফতার হয়েছিলেন। ফেসবুক পোস্টের ক্যাপশনে তিনি বিস্তারিত ওই ইউটিউব ভিডিওতে জানতে পারবেন বলেও উল্লেখ করেছেন। 

“চেতনা” নামের ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রকাশিত “ইউনূসের প্রধান সহকারী মাহফুজের ভয়ঙ্কর অতীত” শিরোনামের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, সেখানে ২০১৯ সালে হিযবুত তাহরীরের নেতা হিসেবে আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ নামের এক ব্যক্তির আটকের প্রতিবেদন দেখানো হয়েছে এবং নামের মিলের কারণে আটক আব্দুল্লাহ আল মাহফুজকে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের গ্রেফতারের ঘটনা হিসেবে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। রিউমর স্ক্যানার ইতোমধ্যেই এই দাবি ভুয়া হিসেবে চিহ্নিত করে ফ্যাক্টচেক প্রকাশ করেছে। 

অর্থাৎ, সজীব ওয়াজেদ জয় এমন একটি তথ্য প্রচার করেছেন, যা ইতোমধ্যে মিথ্যা হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।

Collage: Rumor Scanner 

“২০১৯ সালে গ্রেফতার হিযবুত তাহরীরের মাহফুজ আর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ একই ব্যক্তি নন” শিরোনামে গত ৪ নভেম্বর প্রকাশিত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনে রিউমর স্ক্যানার এই দাবিকে মিথ্যা হিসেবে চিহ্নিত করে। রিউমর স্ক্যানার জানায়, ২০১৯ সালে গ্রেফতার হওয়া আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ এবং উপদেষ্টা মাহফুজ আলম দুজন সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যক্তি। নামের মিল থাকায় তাদের একই ব্যক্তি হিসেবে ভুলভাবে উপস্থাপন করে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। দুই মাহফুজের ছবি, জেলা, বয়স ইত্যাদি যাচাই করে দেখা যায়, তারা দুজন সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যক্তি।  

Collage: Rumor Scanner 

এর পূর্বে গত অক্টোবরের শুরুর দিকে ভারতে নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একই গুজব প্রচার করেন। তিনি তার পোস্টে ২০১৯ সালের দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডে প্রচার হওয়া একটি সংবাদের লিংক দেন। রিউমর স্ক্যানার উক্ত প্রতিবেদনটি যাচাই করে দেখতে পায়, নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহ্‌রীরের নেতা আব্দুল্লাহ আল মাহফুজকে ২০১৯ সালে চট্টগ্রামের একটি আদালত সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে ৮ দিনের রিমান্ড দেওয়ার সংবাদ এটি। এই প্রতিবেদনে অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ আল মাহফুজের কোনো ছবি বা বিশদ পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি। তবে সে সময়ে অন্যান্য গণমাধ্যমে হিযবুত তাহরীরের নেতা মাহফুজের ছবি পাওয়া যায়, যার সাথে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের চেহারার কোনো মিলই নেই। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় দুইজন ভিন্ন ব্যক্তি। 

Comparison : Rumor Scanner

তসলিমা নাসরিন পরে তার ভুল বুঝতে পেরে পোস্টটি কয়েক দফায় সম্পাদনা করার পর এক পর্যায়ে পোস্ট থেকে সংবাদ প্রতিবেদনটি সরিয়ে নেন।

উল্লেখ্য, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম গত ১৪ সেপ্টেম্বর এক ফেসবুক পোস্টে স্পষ্ট করেন, তিনি হিযবুত তাহরীর কিংবা যেকোনো অগণতান্ত্রিক গোষ্ঠীর আদর্শের বিপরীতে আগেও ছিলেন এবং এখনও আছেন। 

সুতরাং, ইউটিউবের একটি চ্যানেলের ভুয়া ভিডিওর বরাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ২০১৯ সালে হিযবুত তাহরীরের নেতা হিসেবে গ্রেফতার হয়েছিলেন শীর্ষক যে দাবি প্রচার করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

আরও পড়ুন

spot_img