সম্প্রতি, মেট্রোতে দুই তরুণীর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের অঙ্গভঙ্গির ভিডিও ভাইরাল শীর্ষক দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মেট্রোরেলে দুই তরুণীর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভাইরাল ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় বরং ভিডিওটি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির মেট্রোরেলের ভেতরের।
অনুসন্ধানের শুরুতে ফেসবুকে প্রকাশিত পোস্টগুলোতে “মেট্রোতে দুই তরুণীর অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির ভিডিও ভাইরাল” শীর্ষক শিরোনামে বাংলাদেশি বেসরকারি ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম সময় টিভির একটি ফটোকার্ড এবং জাতীয় দৈনিক যুগান্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনাম লক্ষ্য করা যায়।
পরবর্তীতে উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে সময় টিভির ফেসবুক পেজ আন্তর্জাতিক সময় এ গত ২৪ মার্চ “মেট্রোতে দুই তরুণীর অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির ভিডিও ভাইরাল” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ফটোকার্ড এবং দৈনিক যুগান্তরের ওয়েবসাইটে গত ২৩ মার্চ “মেট্রোতে দুই তরুণীর অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির ভিডিও ভাইরাল” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
দৈনিক যুগান্তরের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মেট্রোরেলে ধারণ করা দুই তরুণীর ভাইরাল ভিডিওটি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির মেট্রোরেলের ভেতরের।
তাছাড়া একাধিক গণমাধ্যম তাদের ফেসবুক পেজে (১, ২) ঘটনাটি’র বিস্তারিত উল্লেখ না করে শুধুমাত্র শিরোনাম এবং ফটোকার্ড পোস্ট করার ফলে ঘটনাটি ভারতের হলেও স্থানের নাম উল্লেখ না করে বাংলাদেশে প্রচার করায় বিষয়টি বাংলাদেশের ভেবে নেটিজেনদের মাঝে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে এবং নেটিজেনরা বিষয়টি সঠিকভাবে না জেনেই ঘটনাটি বাংলাদেশের মনে করেছেন।
উক্ত পোস্টগুলোর মন্তব্যঘর বিশ্লেষণ করে ঘটনাটি বাংলাদেশের ভেবে নেটিজেনদের বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করতে দেখা যায়।
পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে কি ওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এর ওয়েবসাইটে গত ২৩ মার্চ “Beyond Intolerable…’: Intimate Holi Celebration Inside Delhi Metro Sparks Online Debate” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দিল্লি মেট্রোরেলের ভেতরে ‘আং লাগা দে’ নামক একটি হিন্দি গানের সুরে হোলি খেলার সময় দুজন তরুণীর অন্তরঙ্গ আচরণে লিপ্ত হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।
অর্থাৎ, মেট্রোরেলে দুই তরুণীর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়। তবে এ সম্পর্কিত খবরের শিরোনামে স্থানের নাম না উল্লেখ করে বাংলাদেশে প্রচার করায় ঘটনাটি বাংলাদেশের ভেবে নেটিজেনরা বিভ্রান্ত হয়েছেন।
পাশাপাশি, দেশিয় মূলধারার গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
মূলত, সম্প্রতি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে মেট্রোরেলে হোলি খেলার সময় দুজন তরুণীর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের অঙ্গভঙ্গির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে তা নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমসহ বাংলাদেশি গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তবে বাংলাদেশের কয়েকটি গণমাধ্যমের ফটোকার্ড ও প্রতিবেদনের শিরোনামে ঘটনাটির স্থানের নাম উল্লেখ না করে প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা বিষয়টি বাংলাদেশের ঘটনা মনে করে ফেসবুকে প্রচার করেন।
উল্লেখ্য, পূর্বেও ভারতের একাধিক ঘটনা বাংলাদেশের দাবিতে প্রচারিত হলে তা নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কয়েকটি প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
সুতরাং, ভারতের নয়াদিল্লির মেট্রোরেলে হোলি খেলার সময় দুজন তরুণীর অন্তরঙ্গ অঙ্গভঙ্গির ঘটনাকে বাংলাদেশে স্থানের নাম উল্লেখ না করে ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।