সম্প্রতি, সকালেই মিছিল থেকে গ্রেফতার হলেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন শীর্ষক দাবিতে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছ।
উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।
উক্ত ইউটিউব ভিডিওটি ফেসবুকেও পোস্ট করা হয়েছে। ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সম্প্রতি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির জ্যেষ্ঠ সদস্য ইশরাক হোসেন গ্রেপ্তার হননি বরং তাকে গতবছর গ্রেপ্তারকালীন সময়ে গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও প্রতিবেদনের অংশ বিশেষ কাট করে সম্প্রতি তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
আলোচিত দাবিটি সত্য কিনা তা যাচাইয়ে প্রচারিত ভিডিওটির কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে মূলধারার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভির টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ৬ এপ্রিল ‘বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর প্রথম অংশের সাথে সাথে আলোচিত ভিডিওর প্রথম কয়েক সেকেন্ডের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
ভিডিও থেকে জানা যায়, ২০২০ সালে গাড়িতে অগ্নি সংযোগের একটি মামলায় ঐ বছরের ৬ এপ্রিল বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে গ্রেপ্তার করে মতিঝিল থানা পুলিশ।
পরবর্তীতে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একই দিনে জাতীয় দৈনিক যুগান্তরের ওয়েবসাইটে “বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন গ্রেফতার” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।
এছাড়া, অনুসন্ধানে বিএনপির মিডিয়া সেল এবং দেশের মূলধারার গণমাধ্যম সূত্রে সম্প্রতি বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন গ্রপ্তার হওয়ার কোনো তথ্য খুঁজে পায়নি রিউমর স্ক্যানার টিম।
উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টেবর ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা দাবিতে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করার ঘটনায় মার্কন নাগরিক মিয়ান আরেফি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির জ্যেষ্ঠ সদস্য ইশরাক ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা হাসান সারওয়ার্দীর বিরুদ্ধে পল্টন থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার এজাহারে হাসান সারওয়ার্দী এবং ইশরাক হোসেনের বিরুদ্ধে মিয়ান আরেফিকে মিথ্যা বক্তব্য দিতে সহযোগিতা করা এবং তার বক্তব্য সমর্থন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিতে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। উক্ত মামলায় মিয়ান আরাফি ও হাসান সারওয়ার্দীকে গ্রেপ্তার করা হলেও ইশরাক হোসেনকে এখন অবধি গ্রেপ্তার করা হয়নি।
মূলত, ২০২২ সালে এপ্রিল মাসে ২০২০ সালে গাড়িতে অগ্নি সংযোগের একটি মামলায় বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে গ্রেপ্তার করে মতিঝিল থানা পুলিশ। সেসময় উক্ত ঘটনা নিয়ে মূলধারার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সম্প্রতি আরটিভির সেই প্রতিবেদনের অংশবিশেষ যুক্ত করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন গ্রেপ্তার হয়েছেন দাবিতে ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মতিঝিল থানার নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন ২০২২ সালের ১২ এপ্রিল জামিন পান।
উল্লেখ্য, পূর্বে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে নিয়ে ইন্টারনেটে ভুল তথ্য ছড়ালে তা শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে,
- ভিডিওটি রুমিন ফারহানাকে অপমানের প্রতিবাদে ইশরাকের বিক্ষোভ মিছিলের নয়
- এটি বিএনপি নেতা ইশরাকের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনের ভিডিও নয়
- বিএনপি নেতা ইশরাকের কারামুক্তির সংবাদটি মিথ্যা
সুতরাং, সম্প্রতি বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন গ্রেপ্তার হয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত বিষয়টি মিথ্যা।