সম্প্রতি, ইসরায়েলি হামলায় পৃথিবীর প্রাচীন গির্জা সেন্ট পরফেরিয়স চার্চ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)
তাছাড়া, একই দাবিতে ইংরেজি ভাষায় প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, গাজায় অবস্থিত সেইন্ট পরফাইরিয়স চার্চ ইজরায়েলি হামলায় ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়নি বরং প্রাচীন খ্রিস্টান অর্থোডক্স এই চার্চটি অক্ষত আছে বলে চার্চের ফেসবুক পেজ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে চার্চ কর্তৃপক্ষ।
প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, ফরাসি সংবাদমাধ্যম France 24 এর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১১ অক্টোবর “No, the Saint Porphyrios Orthodox Church in Gaza was not hit by Israeli air strikes” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ইসরায়েলি আকাশ হামলায় প্রাচীন অর্থোডক্স চার্চটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ার যে খবর প্রচার করা হচ্ছে তা সঠিক নয়। চার্চটি এখনও পর্যন্ত অক্ষত রয়েছে।
এছাড়াও কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, আন্তজার্তিক বার্তা সংস্থা AP এর ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১৩ অক্টোবর প্রকাশিত “A medieval church in Gaza was not razed by Israeli bombing, contrary to online posts” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গাজায় অবস্থিত মধ্যযুগীও চার্চটির কর্তৃপক্ষ AP কে নিশ্চিত করেছে যে, চার্চটি এখনও অক্ষত ও নিরাপদ রয়েছে। সেই সাথে চার্চের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার খবরও নিশ্চিত করেছে চার্চ কর্তৃপক্ষ।
প্রতিবেদনের সূত্র ধরে, Saint Porphyrios Orthodox Church-Gaza এর ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ০৯ অক্টোবরের একটি পোস্ট খুঁজে পায় রিউমর স্ক্যানার টিম।
উক্ত পোস্ট থেকে জানা যায়, সেন্ট পরফেরিয়াস চার্চটি অক্ষত রয়েছে এবং নিজেদের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। চার্চটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ার যে খবর প্রচারিত হচ্ছে সেটি মিথ্যা বলে উক্ত ফেসবুক পোস্টে নিশ্চিত করেছে চার্চ কর্তৃপক্ষ।
মূলত, সম্প্রতি হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে হামাসের ছোড়া রকেটের পাল্টা জবাবে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় রকেট হামলা চালায়। পরবর্তীতে, গাজায় ইসরায়েলি রকেট হামলায় পৃথিবীর প্রাচীন খ্রিস্টান অর্থোডক্স চার্চ সেন্ট পরফেরিয়স গির্জা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, গাজায় অবস্থিত প্রাচীন চার্চটি অক্ষত রয়েছে এবং নিজেদের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে নিশ্চিত করেছে চার্চ কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস আকাশপথে ইসরায়েলে রকেট হামলা চালায়। পরবর্তীতে হামাসের আক্রমণের পাল্টা জবাব হিসেবে ইসরায়েলেও অবরুদ্ধ গাজা তীরে রকেট হামলা চালায়।
উল্লেখ্য, পূর্বেও হামাস-ইসরায়েল সাম্প্রতিক যুদ্ধকে জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সে বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।
সুতরাং, ইসরায়েলি হামলায় গাজার প্রাচীন গির্জা সেন্ট পরফেরিয়স চার্চ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।