চাঁদা না দেওয়ায় প্রবাসীর স্ত্রীকে যুবদল নেতার ধর্ষণ দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ভিন্ন ঘটনার

সম্প্রতি “চাঁদা না দেওয়ার কারণে প্রবাসীর বউকে জোর করে ধর্ষণ করলো যুবদল নেতা” শীর্ষক দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে চাঁদা না দেওয়ায় প্রবাসীর স্ত্রীকে যুবদল নেতার ধর্ষণের কোনো ঘটনার নয়, বরং এটি এক নারীর সাথে মুন্সীগঞ্জ কারাগারের জেলারের ফাঁস হওয়া ব্যক্তিগত মুহূর্তের ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দাবিটির সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘Md Tarikul Islam Bhuiyan’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২০ ফেব্রুয়ারিতে “কয়েদির স্ত্রীর সঙ্গে জেলারের আ’প’ত্তি’ক’র ভি’ডিও ভা’ই’রা’ল’” ক্যাপশনে প্রকাশিত পোস্টে কালবেলার লোগো সম্বলিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিও প্রতিবেদনের একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত পোস্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কালবেলার ওয়েবসাইটে ২০২৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ‘কয়েদির স্ত্রীর সঙ্গে জেলারের আপত্তিকর ভিডিও ফাঁস!’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়৷ 

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “মুন্সীগঞ্জের জেলা কারাগারের জেলার নুর মোহাম্মদ মৃধার আপত্তিকর ভিডিও ফাঁস হয়েছে।।(…) ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক জেলার নুর মোহাম্মদ ও এক নারীকে বিবস্ত্র অবস্থায় আটক করে ভিডিও করছেন। এ সময় তাদের পাশেই এক শিশু কান্নাকাটি করছিল। ওই নারী বারবার বাধা দিলেও ভিডিও করেন তারা।” এছাড়াও, উক্ত প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়, ভিডিওটি ২০২৪ সালের মার্চ মাসের। নুর মোহাম্মদ তখন মাগুরা জেলা কারাগারে দায়িত্বরত ছিলেন। সেই সময় এক ব্যক্তির স্ত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি।

এছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যম জনকণ্ঠের ওয়েবসাইটে ২০২৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘কয়েদির স্ত্রীর সাথে জেলারের আপত্তিকর ভিডিও নতুন করে ভাইরাল’ শিরোনামে এ বিষয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়, এই ভিডিওটি দুই বছর আগের পুরানো। সম্প্রতি তিনি তার গ্রামের একটি স্কুলের গভর্নিংবডির সভাপতি হওয়ার পর তখন এই  ভিডিওটি নতুন করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়া হয়।

তবে, উক্ত ভিডিওটি ঠিক কবেকার সে বিষয়ে স্বতন্ত্রভাবে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য যে, উক্ত ভিডিওটি গত ফেব্রুয়ারিতে বাচ্চার সামনে নারীকে ধর্ষণের দৃশ্য দাবিতে প্রচার হলে সেসময় এ বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার টিম।

সুতরাং, মুন্সীগঞ্জ কারাগারের জেলারের ফাঁস হওয়া ব্যক্তিগত মুহূর্তের ভিডিওর দৃশ্যকে সাম্প্রতিক সময়ে চাঁদা না দেওয়ায় প্রবাসীর স্ত্রীকে যুবদল নেতার ধর্ষণের ঘটনার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img