সাম্প্রতিক সময়ে বাচ্চার সামনে নারীকে ধর্ষণের দৃশ্য দাবিতে ভিন্ন ঘটনার পুরোনো ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি “Viewers warning….কোথাও বাবার সামনে, কোথাও স্বামীকে বেঁধে রেখে, কোথাও মায়ের সামনে, কোথাও ভাইয়ের সামনে, শেষ পর্যন্ত ছোট্ট বাচ্চার সামনে চলছে ধ’র্ষনের মহোৎসব। হায় মহাজনের বাংলাদেশ– Viewers warning: the photo or video contains extreme video graphics. Please do not watch it if you have any health issues.” শীর্ষক দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

উক্ত দাবিতে প্রচারিত এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ) ।

উক্ত দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

ইউটিউবে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

 থ্রেড প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে বাচ্চার সামনে নারীকে ধর্ষণের কোনো ঘটনার নয়, বরং এটি ২০২৪ সালে মুন্সীগঞ্জ কারাগারের জেলারের ফাঁস হওয়া আপত্তিকর ভিডিওর দৃশ্য। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দাবিটির সপক্ষে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। 

পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে Md Tarikul Islam Bhuyian নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ‘কয়েদির স্ত্রীর সঙ্গে জেলারের আ’প’ত্তি’ক’র ভি’ডিও ভা’ই’রা’ল’ক্যাপশনে প্রকাশিত পোস্টে কালবেলার লোগো সম্বলিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিও প্রতিবেদনের একটি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

উক্ত পোস্টে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কালবেলার ওয়েবসাইটে ২০২৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ‘কয়েদির স্ত্রীর সঙ্গে জেলারের আপত্তিকর ভিডিও ফাঁস!’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়৷ 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “মুন্সীগঞ্জের জেলা কারাগারের জেলার নুর মোহাম্মদ মৃধার আপত্তিকর ভিডিও ফাঁস হয়েছে।।(…) ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক জেলার নুর মোহাম্মদ ও এক নারীকে বিবস্ত্র অবস্থায় আটক করে ভিডিও করছেন। এ সময় তাদের পাশেই এক শিশু কান্নাকাটি করছিল। ওই নারী বারবার বাধা দিলেও ভিডিও করেন তারা। (…) ভিডিওটি ২০২৪ সালের মার্চ মাসের। নুর মোহাম্মদ তখন মাগুরা জেলা কারাগারে দায়িত্বরত ছিলেন। সেই সময় এক ব্যক্তির স্ত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ বিভাগসহ জেলা কারাগারের কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।” 

এছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যম জনকণ্ঠের ওয়েবসাইটে ২০২৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ‘কয়েদির স্ত্রীর সাথে জেলারের আপত্তিকর ভিডিও নতুন করে ভাইরাল’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, যদিও এই ভিডিওটি দুই বছর আগের পুরানো। (…) সম্প্রতি তিনি তার গ্রামের একটি স্কুলেরগভর্নিংবডির সভাপতি হওয়ার পর তখন এই  ভিডিওটি  নতুন করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়া হয়। (…) এ ঘটনা পর জেলার নুর মোহাম্মদ মৃধার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়। পরে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী কয়েক রাজনৈতিক নেতাদের তদবিরের কারণে তিনি ওই সময় রক্ষা পেয়ে যান।

সুতরাং, ২০২৪ সালে মুন্সীগঞ্জ কারাগারের জেলারের ফাঁস হওয়া আপত্তিকর ভিডিওর দৃশ্যকে সাম্প্রতিক সময়ে বাচ্চার সামনে নারীকে ধর্ষণের ঘটনা দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র 

আরও পড়ুন

spot_img