বৃহস্পতিবার, অক্টোবর 3, 2024
spot_img

শাহজালাল বিমানবন্দরের নতুন টেলিফোন বুথ দাবিতে দুবাই বিমানবন্দরের ছবি প্রচার 

ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে যান। ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এর মধ্যে, ড. ইউনূস হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অত্যাধুনিক টেলিফোন বুথ স্থাপন করেছেন দাবিতে একজন ব্যক্তি একটি আধুনিক টেলিফোন বুথের সামনে দাঁড়িয়ে থাকার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

টেলিফোন বুথ

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নয়, বরং এটি দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ছবি।

আলোচ্য দাবিটির উৎসের সন্ধানে ‘Shuvo Kamal’ নামে একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ৩১ আগস্ট রাতে উক্ত দাবিতে করা সম্ভাব্য প্রথম পোস্টটি পাওয়া যায়। ২ সেপ্টেম্বর তিনি মন্তব্য করে জানান, পোস্টটি ছিল সার্কাজম। তবে এর আগেই পোস্টটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, এবং অনেকেই এটিকে বাস্তব হিসেবে বিশ্বাস করেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্রি টেলিফোন বুথের স্থাপনা নতুন কিছু নয়। ২০২০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিমানবন্দরকে আরও যাত্রীবান্ধব করতে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে সেসময় বিমানবন্দরে ফ্রি টেলিফোন বুথ বসিয়েছে বিটিসিএল। এই প্রতিবেদনে টেলিফোন বুথের একটি ছবিও দেখা যায়।

২০২২ সালের ০৮ ফেব্রুয়ারি ‘Bangla Aviation’ নামের একটি ফেসবুক পেজে বিমানবন্দরের টেলিফোন বুথের একটি ছবি পাওয়া যায়। এছাড়া, বিমানবন্দরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটেও এই ফ্রি টেলিফোন বুথের তথ্যের পাশাপাশি একটি প্রতীকী ছবি দেখা যায়। 

উপরিউক্ত সবগুলো টেলিফোন বুথের ছবিতেই বিটিসিএলের লোগো দেখা যায়।

অর্থাৎ, শাহজালাল বিমানবন্দরে টেলিফোন বুথ বসানো হয়েছে বিটিসিএলের সৌজন্যে এবং প্রতিটি বুথেই প্রতিষ্ঠানটির লোগো রয়েছে। কিন্তু দাবিকৃত ছবিতে বিটিসিএলের কোনো লোগো নেই এবং সেখানে আরবি ভাষায় কিছু লেখা দেখা যাচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে স্টক ফটো ওয়েবসাইট অ্যালামিতে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টেলিফোন বুথের ছবি পাওয়া যায়, যা ভাইরাল হওয়া ছবির টেলিফোন বুথের সঙ্গে হুবহু মিলে যায়।

Image Comparison: Rumor Scanner.

এছাড়া, ড. ইউনূসের দায়িত্ব নেওয়ার পর বিমানবন্দরে নতুন কোনো টেলিফোন বুথ স্থাপনের তথ্য বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে পাওয়া যায়নি। গত ৩০ আগস্ট প্রকাশিত একটি ফ্যাক্ট-চেক প্রতিবেদনে রিউমর স্ক্যানারও নিশ্চিত করেছে, ড. ইউনূসের দায়িত্ব গ্রহণের আগেই বিমানবন্দরে এই সেবা চালু ছিল।

সুতরাং, দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টেলিফোন বুথের ছবিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে টেলিফোন বুথের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

RS Team
Rumor Scanner Fact-Check Team
- Advertisment -spot_img
spot_img
spot_img