Home Blog Page 32

তিতুমীর কলেজের সামনে ছাত্রলীগের স্লোগান দেওয়ার এই ভিডিওটি পুরোনো

সম্প্রতি, রাজধানীর তিতুমীর কলেজের প্রধান ফটকের সামনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিচ্ছেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত একই ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। প্রকৃতপক্ষে, অন্তত ১ বছর পুরোনো তিতুমীর কলেজের সামনে ছাত্রলীগের স্লোগান দেওয়ার দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে এটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘7 College News’ নামের একটি ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট কলেজ গেটে তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের অবস্থান ও স্লোগান শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিওর সন্ধান পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তিতুমীর কলেজের প্রধান ফটকের সামনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের স্লোগান দেওয়ার আলোচিত ভিডিওটির সাথে উক্ত ভিডিওর হুবহু মিল রয়েছে। অর্থাৎ, ছাত্রলীগের স্লোগান দেওয়ার এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে তিতুমীর কলেজে ছাত্রলীগের অবস্থান কর্মসূচি পালন বা স্লোগান দেওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে অনুসন্ধানে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট দেশব্যাপী আন্দোলন চলাকালীন দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাস ও এলাকায় ছাত্রলীগের অবস্থান নেওয়ার তথ্য পাওয়া যায়। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। ধারণা করা যাচ্ছে, ‍তিতুমীর কলেজের প্রধান ফটকের সামনে ধারণ করা আলোচিত ভিডিওটিও গতবছরের ৪ আগস্ট কলেজটিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অবস্থান নেওয়ার সময় ধারণ করা হয়েছে।  

সুতরাং, অন্তত ১ বছর পুরোনো তিতুমীর কলেজের সামনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের স্লোগান দেওয়ার ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

  • 7 College News Facebook Page Post
  • Rumor Scanner’s Analysis

ড. ইউনূস ১৫ আগস্ট শোক দিবস পালনের আহ্বান জানাননি, প্রচারিত ভিডিওটি ডিপফেক

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৫ই আগস্টে শোক পালনের আহ্বান জানিয়েছেন শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও অনলাইনের প্লাটফর্মে প্রচার হচ্ছে। ভিডিওটিতে ড. ইউনূসের কথিত কন্ঠে বলতে শোনা যায়, “আগামী ১৫ই আগস্ট জাতির একটি শোক দিবস। আপনারা যে যেখানে থাকেন, সেদিন শুক্রবার যেহেতু, সেহেতু অন্তত কালো জামা না হলেও কালো একটা ব্যাজ ধারণ করেন এবং বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের যে ১৬ জন। পরিবার এবং দুইজন বাইরের বোধহয়। একজন কর্ণেল জামিল আরেকজন বরিশালের রিন্টু। তো আপনারা তাদের জন্য দোয়া করবেন আল্লাহর কাছে। কারণ বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির পিতা। তার যৌবনের ১৭ট বছর কারাগারে কাটিয়েছেন। পাকিস্তানিদের সাথে কীভাবে ফাইট করেছে, একটা ফাইট তো হলো নয় মাসের যুদ্ধ, সেটা না, তার আগে রাজনৈতিক যুদ্ধ সেটা। অতএব যে যে অবস্থায় পারেন, এই প্রতিকূল অবস্থাতেই অন্তত মসজিদে মন্দিরে এবং ঘরে বসে হলেও..”

উক্ত দাবিতে শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে,এখানে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৫ আগস্ট শোক পালনের বিষয়ে সম্প্রতি কোনো বক্তব্যই দেননি ড. ইউনূস বরং ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি এক বছর পূর্বের। প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পর জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণের এই ভিডিওতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি ভুয়া অডিও যুক্ত করে ড. ইউনূসের বক্তব্য দাবিতে প্রচার হচ্ছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূল ধারার গণমাধ্যম যমুনা টিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত বছরের ০৯ আগস্ট ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস জাতির উদ্দেশে যে বার্তা দিলেন’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল পাওয়া গেলেও দুই ভিডিওর বক্তব্যের অডিওতে অমিল পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner 

একই ভিডিও অন্যান্য গণমাধ্যমেও খুঁজে পাওয়া যায়। এসব ভিডিওতেও একই অমিলের বিষয়টি লক্ষ্য করা যায়। 

ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ড. ইউনূস ০৮ আগস্ট দেওয়া এই ভাষণে ১৫ই আগস্ট বিষয়ে কোনো মন্তব্যই করেননি। অর্থাৎ, ভিডিওটির মূল অডিও বদলে ভিন্ন অডিও যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। ১৫ই আগস্ট বিষয়ে ড. ইউনূসকে অন্য কোথাও এমন মন্তব্য করতে দেখা যায়নি। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এই অডিওটি ভুয়া। এআই এর মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে অডিওটি। পরবর্তীতে তা যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে ভিডিওতে। তাছাড়া, প্রচারিত ভিডিওটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলেও ড. ইউনূসের ঠোঁটের নড়াচড়ার সাথে অডিও স্পষ্ট অমিল লক্ষ্য করা যায়। 

পরবর্তী অনুসন্ধানে জানা যায়, ৭ মার্চ, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসসহ আটটি জাতীয় দিবস উদ্‌যাপন বা পালন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত অক্টোবরে এ বিষয়ে আদেশও জারি করা হয়। 

সুতরাং, ড. ইউনূসের ১৫ আগস্ট শোক পালনের আহ্বান দাবিতে অডিও বদলে তার বক্তব্যের পুরোনো ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র 

আওয়ামী লীগের মিছিলের এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়, ২০২২ সালের

“আজ গাজীপুর উত্তাল মিডিয়া প্রচার করিনি ৩০/৭/২৫/ ব্রেকিং নিউজ” শীর্ষক দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

টিকটকে উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি ভিডিওটি প্রায় ১ লাখ ৮৪ হাজারেরও অধিক বার দেখা হয়েছে। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি গাজীপুরে সাম্প্রতিক সময়ের আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচির নয় বরং, এটি ২০২২ সালে ফেনীতে বিএনপি জামায়াত জোটের বিরুদ্ধে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স সার্চ করে ‘Feni Media’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর “ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের মিছিল” শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির মিল রয়েছে।

Comparison: Rumor Scanner

পরবর্তীতে, ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর ফেসবুক পেজে ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর প্রচারিত ভিন্ন ফ্রেমের ভিডিও সংযুক্ত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত পোস্টের ক্যাপশন থেকে জানা যায়, এটি ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর বিকেলে ফেনীতে ‘বিএনপি জামায়াত জোটের দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র,সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে’ ফেনী জেলা আওয়ামী লীগ এর উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল।

এছাড়া, সেসময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রকাশিত একই তথ্যসংবলিত পোস্ট (,,,) খুঁজে পাওয়া যায়। 

সুতরাং, ২০২২ সালে ফেনীতে বিএনপি-জামায়াত জোটের বিরুদ্ধে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র 

চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক মিছিল দাবিতে এআই নির্মিত ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি ‘আজ চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের লোকজন রাস্তায় নেমেছেন…’ শিরোনামে একটি ভিডিও শর্ট ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকে প্রচার করা হয়েছে। 

ভিডিওটির শিরোনামে ‘১ থেকে ৮ তারিখের প্রথম সুচনা’ উল্লেখ করা হয়, এর মাধ্যমে গত ০১ আগস্টে প্রচারিত এই ভিডিওটি ওইদিনের চট্টগ্রামের ঘটনা বলে দাবি করা হয়েছে৷ 

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অবধি টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রায় ১৫ হাজার পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে এবং ভিডিওটি প্রায় সাড়ে তিন হাজার বার শেয়ার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ইউটিউবে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ০১ আগস্ট চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের সমর্থকদের মিছিল দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তার নির্মিত ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে রিউমর স্ক্যানার এতে বেশ কিছু অসঙ্গতি লক্ষ্য করে। ভিডিওতে দেখা যায়, মিছিলে কিছু ব্যক্তি চলাফেরার মধ্যে হুট করে আরেক ব্যক্তির শরীরে মিশে   যাচ্ছে, একাধিক ব্যক্তি মিলে একজনে পরিণত হচ্ছে এবং ফ্রেমের বামে থাকা একটি গাড়ির নড়াচড়ায় অসংলগ্নতা রয়েছে।   

এ বিষয়ে আরও নিশ্চিত হতে এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম Cantilux এ ভিডিওটি যাচাই করলে দেখা যায়, এটি এআই দিয়ে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯ শতাংশ।

Screenshot: Cantilux Website 

পরবর্তীতে, আরেক এআই কনটেন্ট শনাক্তকারী প্ল্যাটফর্ম Resemble AI এ ভিডিওটির অডিও ক্লিপটি যাচাই করলে এটিকে ‘Fake’ বলে চিহ্নিত করা হয়।

Screenshot: Resemble AI Website 

সুতরাং, এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় তৈরি একটি ভিডিওকে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক মিছিলের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

দিল্লিতে শেখ হাসিনার জনসম্মুখে আসার দাবিটি ভুয়া 

সম্প্রতি, “এবার দিল্লির রাজস্থানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক শেষে রাজস্থান রাজ্য ভবন থেকে বের হলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা” শীর্ষক ক্যাপশনে একটি ভিডিও Tamanna Akhter Yesman নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রকাশ করা হয়। পরবর্তীতে তিনিই উক্ত ভিডিওটি বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে একাধিক পোস্ট প্রচার করেন ৷ 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে। 

একই ক্যাপশনে অন্যান্য ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেও এই ভিডিওটি প্রচার করা হয়। 

ভিডিওটি দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ইন্সটাগ্রামে এমন ভিডিও দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লিতে প্রকাশ্যে আসেননি। প্রকৃতপক্ষে, ২০২২ সালের মার্চ মাসে শেখ হাসিনার সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের সময়ে ধারণকৃত একটি ভিডিওকে সম্প্রতি আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে আলোচিত দাবিতে থাকা ভিডিওটি থেকে কী-ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে ‘Ad. Shahneaz Sultana Cumilla’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে “Bangladesh PM Sheikh Hasina Visited Dubai Expo 2020” শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতে থাকা দৃশ্যের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল রয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner

পরবর্তীতে উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ইংরেজি দৈনিক দ্যা ডেইলি স্টারের ওয়েবসাইটে ২০২২ সালের ১৩ মার্চ তারিখে ‘PM returns home from UAE’ শিরোনামে আলোচ্য বিষয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from The Daily Star by Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের মার্চ মাসে শেখ হাসিনা পাঁচ দিনের সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করেন। সরকারি এই সফরে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক, ছয়টি সমঝোতা স্বাক্ষর, এক্সপো ২০২০ দুবাই পরিদর্শন ও ব্যবসায়ী ফোরামসহ নানা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ শেষে দেশে ফেরেন তিনি। 

অর্থাৎ, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সম্প্রতি দিল্লির রাজস্থানে ধারণ করা নয় তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে। 

এছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে শেখ হাসিনার জনসম্মুখে আসার বিষয়ে দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য বা সংবাদ ভারতীয় গণমাধ্যম কিংবা অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, Tamanna Akhter Yesman নামে পরিচালিত এই ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ভুয়া। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমিরর ছবি ব্যবহার করে এই ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে আওয়ামী লীগের পক্ষে রাজনৈতিক প্রভাব তৈরির চেষ্টা নিয়ে গত ১৯ জুন বিস্তারিত ফ্যাক্টস্টোরি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

উল্লেখ্য, ভারতের দিল্লিতে রাজস্থান কলোনি নামে একটি আবাসিক এলাকা রয়েছে, যেটি উত্তর পূর্ব দিল্লিতে অবস্থিত। তাছাড়া, রাজস্থান নামে ভারতের একটি আলাদা রাজ্যও রয়েছে। 

সুতরাং, ২০২২ সালে শেখ হাসিনার সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের একটি ভিডিওকে সম্প্রতি শেখ হাসিনা দিল্লির রাজস্থানে জনসম্মুখে এসেছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে, যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

চ্যানেল২৪ এর ফটোকার্ড ডিজাইন নকল করে মহিউদ্দিন রনিকে জড়িয়ে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার 

0

সম্প্রতি, “বরিশাল মেডিকেলের টেন্ডার দখল কে কেন্দ্র করে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জ” শিরোনামে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন হাওলাদার রনির ছবি যুক্ত করে দেশিয় মূলধারার ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম চ্যানেল২৪ এর লোগো ও ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, চ্যানেল২৪ ‘বরিশাল মেডিকেলের টেন্ডার দখল কে কেন্দ্র করে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জ’ শিরোনাম বা তথ্যে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, চ্যানেল২৪ এর প্রচলিত ফটোকার্ডের ডিজাইন নকল করে আলোচিত ফটোকার্ডটু তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ফটোকার্ডটি চ্যানেল২৪ এর ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ফটোকার্ডের ডিজাইনের আদলে তৈরি করা হয়েছে এবং ফটোকার্ডটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ১১ আগস্ট, ২০২৫ উল্লেখ রয়েছে। 

আলোচিত দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ফটোকার্ডটিতে থাকা তারিখ এবং লোগোর সূত্র ধরে চ্যানেল২৪ এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া, চ্যানেল২৪ এর ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবির সপক্ষে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে, গত ১১ আগস্টে চ্যানেল২৪ এর ফেসবুক পেজে ‘বরিশালে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনকারীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ’ শিরোনামের প্রতিবেদনের একটি ফটোকার্ড পোস্ট করা হয়। 

Photocard comparison: Rumor scanner

উক্ত ফটোকার্ডের মন্তব্যের ঘরে পাওয়া প্রতিবেদনের বিস্তারিত অংশ থেকে জানা যায়, বরিশালে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার দাবিতে আন্দোলনকারী দুই গ্রুপের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত ১০ আগস্ট (রোববার) রাতে সংঘটিত এ ঘটনায় মহিউদ্দিন রনিসহ উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। এর মধ্যে পাঁচজনকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

অর্থাৎ, চ্যানেল২৪ আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি।

পাশাপাশি, মূলধারার গণমাধ্যম বা বিশ্বস্ত অন্য কোনো সূত্রেও বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে টেন্ডার দখলকে কেন্দ্র করে সংঘাত শীর্ষক কোনো তথ্য বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।  

ছবি যাচাই 

আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটিতে ব্যবহৃত ছবির উৎস অনুসন্ধানে গত ১০ আগস্টে বাংলা ভিশনের ওয়েবসাইটে ‘পাঁচ ঘণ্টা পর বরিশালের সড়ক অবরোধ তুলে নিলো শিক্ষার্থীরা’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচিত ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot from Banglavision by Rumor Scanner 

সুতরাং, ‘বরিশাল মেডিকেলের টেন্ডার দখল কে কেন্দ্র করে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জ’ শিরোনামে চ্যানেল২৪ এর নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া ও বানোয়াট।

তথ্যসূত্র

ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মিছিল দাবিতে ভিন্ন মিছিলের অডিও সম্পাদনা করে প্রচার

সম্প্রতি ‘ইউনুস তুই রাজাকার এই মুহূর্তে গদি রে শেখ হাসিনা আসবে বাংলাদেশে হাঁসবে’ ও ‘জনতার মুখে স্লোগান ডঃ ইউনুস তুই দোড়া কর শেখ হাসিনার পায়ে ধর’ শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটের বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হয়েছে। 

ভিডিওটিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে ‘ইউনূস তুই তওবা কর শেখ হাসিনার পায়ে ধর’ সূচক স্লোগান দিয়ে মিছিল করতে দেখা যায়।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে মিছিলের ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে মিছিলের একাধিক ভিডিও ক্লিপ ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তা যুক্ত করে আলোচিত ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিও ক্লিপগুলোগুলো পৃথকভাবে যাচাই করেছে রিউমর স্ক্যানার।

ভিডিও যাচাই- ১ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যম সমকালের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর ‘কুমিল্লায় জুলাই-আগস্ট হত্যা কাণ্ডের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর আংশিক দৃশ্যাবলীর সাথে আলোচিত ভিডিওটির কিছু দৃশ্যের মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, ২০২৪ এর জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে সেদিন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্রসমাজ’। একইসাথে, উক্ত আয়োজনের মুক্তিযোদ্ধা ও কৃষকলীগ নেতা আব্দুল হাই কানুকে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। 

উক্ত ভিডিওতে ‘ইউনূস তুই তওবা কর শেখ হাসিনার পায়ে ধর’ সূচক কোনো স্লোগান দিতে দেখা যায়নি। 

একই বিষয়ে বাংলা নিউজ টোয়েন্টিফোরের ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর ‘৯ মামলার আসামি আব্দুল হাই কানুকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও একই চিত্র ও তথ্য পাওয়া যায়। 

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ও তার নামে একাধিক মামলা থাকা নিয়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে কুমিল্লায় মুক্তিযোদ্ধা ও কৃষকলীগ নেতা আব্দুল হাই কানুকে জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করা হয়। 

ভিডিও যাচাই- ২

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের মাধ্যমে কালের কন্ঠের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর ‘জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে শুক্রবার ভোরে আ.লীগ কর্মীদের ঝটিকা মিছিল’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর দৃশ্যাবলীর সাথে আলোচিত ভিডিওটির কিছু অংশের মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner 

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটির ০০:৩০ থেকে ০০:৩৮ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশটি আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে। ভিডিওতে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের ২০২৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর ভোরে রাজধানী ঢাকার ধানমণ্ডি ৩২ নাম্বার সড়ক এলাকায় মিছিল করতে দেখা যায়। 

উক্ত ভিডিওতে ‘ইউনূস তুই তওবা কর শেখ হাসিনার পায়ে ধর’ সূচক কোনো স্লোগান দিতে দেখা যায়নি।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহৃত এসব ফুটেজ ভিন্ন ভিন্ন ঘটনার এবং এগুলো সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

অডিও যাচাই

আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহৃত স্লোগানের বিষয়ে অনুসন্ধানে মাধ্যমে Md Borikul Islam নামের একটি ফেসবুক প্রোফাইলে গত ২৫ মে  প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে থাকা স্লোগানের ‘ইউনূস তুই তওবা কর, শেখ হাসিনার পায়ে ধর’ অংশটির সাথে আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহৃত স্লোগানের কণ্ঠের হুবহু মিল পাওয়া যায়। যা থেকে স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে, উক্ত ভিডিওর স্লোগানের ওই নির্দিষ্ট অংশটুকু কাট করে আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহার করা হয়েছে।

সুতরাং, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে স্লোগান দাবিতে প্রচারিত এই মিছিলের ভিডিওটি সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র

চট্টগ্রামের বন্দর এলাকায় বোমা বিস্ফোরণের দাবিটি ভুয়া

গত ১১ আগস্ট থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, চট্টগ্রামের বন্দর এলাকায় একটি আবাসিক ভবনে বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। ভিডিওটিতে রাতের আঁধারে কথিত ওই ভবনটিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য দেখা যায়। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।  

ইন্সটাগ্রামে এমন ভিডিও দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি চট্টগ্রামের নয় এবং চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় আবাসিক ভবনে বোমা বিস্ফোরণের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৩ সালের এপ্রিলে রাজধানীর ওয়ারী এলাকায় একটি বেবি শপে আগুন লাগার ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

আলোচিত ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধানে এটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ‘জয় বাংলা’ নামের একটি ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ১৮ এপ্রিল প্রচারিত একটি ভিডিওর সন্ধান পাওয়া যায়।  

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ভিডিওটি আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর সাথে হুবহু মিল না থাকলেও দুটো ভিডিও-ই একই ঘটনার। উভয় ভিডিওতেই আগুন লাগা ভবনের সামনের ভবনের সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও দুটি ভিডিওতেই একই ব্যক্তির ব্যানার দেখতে পাওয়া যায়। ঘটনাস্থল থেকে ভিডিও ধারণকারী ক্যামেরাগুলোর দূরত্বের কারণে ব্যানারটি একেক ভিডিওতে একেক দূরত্বে দেখতে পাওয়া যায়।

এছাড়াও ভিডিওটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, এটি চট্টগ্রামের কোনো আবাসিক ভবনে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার নয়, বরং সেবছরের ১৭ এপ্রিল দিবাগত রাত প্রায় দুইটার দিকে রাজধানীর ওয়ারী এলাকার একটি বেবি শপে আগুন লাগার ঘটনার দৃশ্য।

প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ১৮ এপ্রিল রাজধানীর ওয়ারীতে বেবি শপে আগুন; ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি শীর্ষক শিরোনামে একই ঘটনায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।  

উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণ থেকেই উক্ত অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। এ ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার কথা জানা যায় প্রতিবেদনটি থেকে।

পাশাপাশি কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে গত ১১ আগস্ট কিংবা সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামের বন্দর এলাকায় আবাসিক ভবনে বোমা বিস্ফোরণের তথ্য পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, রাজধানীর ওয়ারীতে বেবি শপে আগুন লাগার পুরোনো ভিডিওকে সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামের বন্দর এলাকায় আবাসিক ভবনে বোমা বিস্ফোরণের দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সামান্তা শারমিনের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধার ও তাকে গ্রেফতারের ভুয়া দাবি প্রচার

সম্প্রতি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখপাত্র সামান্তা শারমিনের বাসা থেকে সিন্দুক ও বস্তা ভর্তি টাকা উদ্ধার দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), 

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এনসিপি নেত্রী সামান্তা শারমিনের বাসা থেকে সিন্দুক ও বস্তা ভর্তি টাকা উদ্ধারের কোনো ঘটনা ঘটেনি এবং তাকে গ্রেফতারও করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা এনামুল হক এনু ও তার ভাই রুপন ভূঁইয়ার একটি বাড়ি থেকে র‍্যাবের অভিযানে নগদ সাড়ে ২৬ কোটি টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা, স্বর্ণালঙ্কার এবং ক্যাসিনো সরঞ্জাম উদ্ধারের ঘটনার সংবাদ ফুটেজ আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। এছাড়া, সামান্তা শারমিন গ্রেফতার দাবিতে গত মে মাসে গ্রেফতারকৃত আওয়ামী লীগের নেত্রী রজনী আক্তার তুশির ছবিতে সামান্তা শারমিনের মুখমন্ডল বসিয়ে আলোচিত ছবিটি তৈরি করে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার। এতে টাকা উদ্ধারের কিছু ভিডিও ফুটেজ এবং একজন র‌্যাব সদস্য কর্তৃক সেই টাকা উদ্ধারের ঘটনা মিডিয়াকে বলছেন এমন একটি ফুটেজ দেখতে পাওয়া যায়। র‌্যাব সদস্যকে বলতে শুনা যায়, “নগদ ২৬ কোটি ৫৫ লক্ষ ৬’শ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এই অপারেশন থেকে উদ্ধার করতে পেরেছি। এখন যে আইনগত প্রক্রিয়া, উদ্ধারকৃত জিনিসপত্র আমরা থানায় হ্যান্ডওভার করব।”

এরপর ভয়েসওভারে পুরুষ কন্ঠে বলা হয়, র‌্যাব ও পুলিশের অভিযানে এনসিপি নেত্রি সামান্তা শারমিনের বাসায় ৪ সিন্দুক ও বস্তাভর্তি টাকা পাওয়া গেছে। উক্ত ঘটনায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে এনসিপি নেত্রী সামান্তা শারমিন। তার বাড়ি থেকে প্রায় ছাব্বিশ থেকে সাতাশ কোটি টাকার মতো পেয়েছে র‌্যাব।

টাকা উদ্ধারের ভিডিও ফুটেজ যাচাই

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ‘বাংলাভিশন’ -এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘আওয়ামী লীগ নেতা এনু-রুপনের বাসায় টাকার পাহাড়’ শিরোনামে প্রচারিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে থাকা টাকা উদ্ধারের ফুটেজগুলো দেখতে পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

সংবাদ প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক এনু ও তার ভাই রুপন ভূঁইয়ার বাড়ি থেকে র‍্যাবের অভিযানে নগদ সাড়ে ২৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ছাড়াও তাদের বাড়ি থেকে ৫ কোটি টাকার এফডিআর বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয়েছিল।

সেই সময় এই বিষয় নিয়ে সময় টিভি ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ইউটিউবে প্রচারিত সংবাদ প্রতিবেদন থেকেও প্রায় একই তথ্য জানা যায়।

এছাড়াও, যুগান্তর ও আরটিভির ওয়েবসাইটে সেই সময়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সেই সময় চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর পুরান ঢাকায় র‌্যাব-৩-এর একটি দল ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১২টায় পুরান ঢাকার ১১৯/১  লালমোহন সাহা স্ট্রিটে ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা এনু-রুপনের একটি বাড়িতে অভিযান চালায়। ২৫ ফেব্রুয়ারি দুপুর দেড়টা পর্যন্ত টানা ১২ ঘণ্টা ধরে শ্বাসরুদ্ধকর এই অভিযান চলে।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওতে ব্যবহৃত টাকা উদ্ধারের ফুটেজের সাথে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখপাত্র সামান্তা শারমিনের কোনো সম্পর্ক নেই। 

এছাড়াও কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে সামান্তা শারমিনের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমান টাকা উদ্ধারের বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

গ্রেফতারকৃত ছবি যাচাই

এই বিষয়ে অনুসন্ধানে সমকালের ওয়েবসাইটে চলতি বছরের ২৫ মে ‘নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার ঢাকা মহানগর আ.লীগ নেত্রী রজনী আক্তার’ শিরোনামে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ফিচার ইমেজে থাকা গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির মুখমণ্ডল ব্যতিত বাকি অংশের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison : Rumor Scanner

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৪ মে শনিবার দিবাগত রাতে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কাশিপুরের একটি ভাড়া করা বাড়ি থেকে আওয়ামী লীগের নেত্রী রজনী আক্তার তুশিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এই বিষয়ে বাংলা ট্রিবিউনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও একই ছবি দেখতে পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, গত মে মাসে গ্রেপতারকৃত আওয়ামী লীগের নেত্রী রজনী আক্তার তুশির ছবিতে সামান্তা শারমিনের মুখমন্ডল বসিয়ে আলোচিত ছবিটি তৈরি করে প্রচার করা হয়েছে। তাছাড়া, যেহেতু সামান্তা শারমিনকে গ্রেফতারই করা হয়নি সেহেতু তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার দাবিটিও অবান্তর।

সুতরাং, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখপাত্র সামান্তা শারমিনের বাসা থেকে সিন্দুক ও বস্তা ভর্তি টাকা উদ্ধার এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে শীর্ষক দাবিগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

৫ আগস্ট দেশত্যাগের বিষয়ে শেখ হাসিনার সশরীরে কথা বলার দৃশ্য দাবিতে ডিপফেক ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, “৫ আগস্ট দেশত্যাগ নিয়ে শেখ হাসিনার সশরীরে কথা বলার দৃশ্য” দাবিতে একটি ভিডিও টিকটকে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টে দেশত্যাগ বিষয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সশরীরে কথা বলছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৩ সালের মে মাসে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকায় দেওয়া শেখ হাসিনার একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিওতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভিন্ন একটি অডিও সংযুক্ত করে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি থেকে প্রাপ্ত ইমেজ রিভার্স সার্চের মাধ্যমে দেশিয় মূলধারার ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম একাত্তর টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ০২ মে তারিখে “ভয়েস অব আমেরিকাকে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার” শিরোনামে প্রকাশিত একতি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

মুল ভিডিওর দৃশ্যাবলীর সঙ্গে আলোচিত ভিডিওটির ভিজ্যুয়াল সাদৃশ্যতা থাকলেও ভিডিওটির অডিওর সঙ্গে অমিল লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া কথা বলার সময় শেখ হাসিনার মুখ ও ঠোঁটের অসাদৃশ্যতা লক্ষ্য করা যায়। 

পরবর্তীতে, শেখ হাসিনার দেয়া উক্ত সাক্ষাৎকারের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে জাতীয় দৈনিক এনটিভি’র ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ০১ মে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from NTV by Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের মে মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কিন গণমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগে একটি সাক্ষাৎকার দেন। সাক্ষাৎকারে তিনি (শেখ হাসিনা) বিএনপি ও তার মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ও সাংবাদিক হয়রানি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। 

উল্লেখ্য, গত ০৫ আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের বিষয়ে এক বছর পূর্তি উপলক্ষে শেখ হাসিনা লাইভে আসার দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য নির্ভরযোগ্য কোনো মাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, ২০২৪ সালের ০৫ আগস্ট দেশত্যাগ বিষয়ে শেখ হাসিনা গত ০৫ আগস্ট সশরীরে কথা বলেছেন দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র