Home Blog Page 26

সারজিস আলম নয়, বিমানবন্দরে বিদেশী মদসহ আটক এই ব্যক্তি ভারতীয় নাগরিক 

সম্প্রতি “সমন্বয়ক সারজিস রোগী সেজে দেশ পালাতে গিয়ে বিমানবন্দরে বিদেশি মদ সহ আটক” দাবিতে একটি ভিডিও টিকটকে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন: এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রোগীর ছদ্মবেশ ধরে অভিযুক্ত অবৈধ পণ্য বহনকারী ব্যক্তি এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক এবং সাবেক সমন্বয়ক সারজিস আলম নন। প্রকৃতপক্ষে চলতি বছরের ১৭ মার্চ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রোগীর বেশধারী ভারতীয় এক নাগরিকের কাছ থেকে অভিনব কৌশলে লুকিয়ে রাখা মদ ও কসমেটিকস পণ্য উদ্ধারের ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে দেশিয় মূলধারার ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম ‘Channel 24’ এর ইউটিউব চ্যানেলে চলতি বছরের ১৮ মার্চ তারিখে “রোগী সেজে চোরাচালান; অবশেষে ধরা” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি এবং দৃশ্যের সাথে আলোচিত ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি এবং দৃশ্যের মিল রয়েছে। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে, উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা পোস্টের ওয়েবসাইটে ১৮ মার্চ ২০২৫ ইং তারিখে ‘সিসিইউ রোগীর বেশধারী ভারতীয় নাগরিকের কাছ থেকে মদ জব্দ’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনের ফিচারে সংযুক্ত ছবিগুলোর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল রয়েছে। 

Screenshot from Dhaka Post by Rumor Scanner 

উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ১৭ মার্চ রাতে ভারতের কলকাতা থেকে নজরুল হক নামের এক যাত্রী বিমানের সিসিইউ ইউনিটে ঢাকায় আসেন। বিমানবন্দর ত্যাগ করার সময় অভিনব কৌশলে লুকিয়ে রাখা মদ ও কসমেটিকস পণ্য উদ্ধার করে ঢাকা কাস্টম হাউস। জব্দ করা পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে– কসমেটিকস পণ্য ২০ কেজি, মদ ৪ লিটার, মোবাইল ৩ পিস ও কাপড় ৭ পিস। 

অর্থাৎ, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রোগীর বেশধারী ব্যক্তি এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক এবং সাবেক সমন্বয়ক সারজিস আলম কিংবা কোনো বাংলাদেশী নয় বরং তিনি ভারতীয় নাগরিক এবং তার নাম নজরুল হক। 

এছাড়া, বিমানবন্দরে মাদকসহ সারজিস আলম গ্রেফতার হলে কিংবা এ জাতীয় কোনো ঘটনা ঘটলে দেশিয় সংবাদমাধ্যমে ঢালাওভাবে খবর প্রচার হতো। কিন্তু এক্ষেত্রে দেশিয় সংবাদমাধ্যম এবং নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রে সারজিস আলমের আটক হওয়ার বিষয়ে কোনো সংবাদ প্রচার হতে দেখা যায়নি। 

সুতরাং, এনসিপি নেতা সারজিস আলম  রোগী সেজে দেশ থেকে পালাতে গিয়ে বিমানবন্দরে বিদেশি মদ সহ আটক হওয়ার দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত দাবিটি মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞার হুশিয়ারি দিয়ে জাতিসংঘ কোনো ভিডিও বার্তা দেয়নি

আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুনরায় ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া সফলভাবে বাস্তবায়ন না করা হলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে পাঠানো এক ভিডিও বার্তা পাঠানো হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসুবকে প্রচার করা হয়েছে। পোস্টটিতে আরও দাবি করা হয়, শেখ হাসিনাকে জোরপূর্বক ক্ষমতাচ্যুত করা, বাংলাদেশে ব্যাপকহারে জঙ্গি উপস্থিতি এবং সেনবাহিনীর উপর দলীয়করণের অভিযোগে জাতিসংঘ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে জাতিসংঘের ভিডিও বার্তা পাঠানোর দাবি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ সেনাঘাঁটি ফোর্ট স্টুয়ার্টে সাম্প্রতিক গোলাগুলির ঘটনায় পরিস্থিতির বিবরণ দিয়ে মার্কিন সেনাবাহিনীর একটি সংবাদ সম্মেলনের ভিডিওকে এই দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করে রিউমর স্ক্যানার। এতে ভিডিওটির বাম পাশে উপরের দিকে মার্কিন গণমাধ্যম কলম্বিয়া ব্রডকাস্টিং সিস্টেম বা সিবিএস নিউজের লোগো দেখা যায়।

ভিডিওটিতে একজন ব্যক্তিকে বলা শোনা যায়:

‘আমরা অভিযুক্ত বন্দুকধারীকে সার্জেন্ট কোরনেলিয়াস র‍্যাডফোর্ড হিসাবে শনাক্ত করেছি। তিনি সেকেন্ড ব্রিগেড কমব্যাট টিমে নিযুক্ত একজন স্বয়ংক্রিয় লজিস্টিক সার্জেন্ট। সার্জেন্ট র্যাডফোর্ড এর আগে যুদ্ধে নিয়োজিত হননি। সার্জেন্ট র‍্যাডফোর্ডকে আর্মি ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এবং তিনি বর্তমানে প্রি-ট্রায়াল আটক অবস্থায় আছেন, স্পেশাল ট্রায়াল কাউন্সিলের অফিস থেকে অভিযোগের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছেন। এই মুহূর্তে, আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হল প্রথমে বহন করা…’

ভিডিওটির বিষয়বস্তুর সঙ্গে পোস্টের শিরোনামে উল্লিখিত দাবির মধ্যে অসামঞ্জস্য লক্ষ্য করা যায়।

পরবর্তীতে আলোচিত ভিডিওটির কয়েকটি কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে CBS News এর ফেসবুক পেজে গত ৭ আগস্ট প্রচারিত মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ায় অবস্থিত সেনাঘাঁটি ফোর্ট স্টুয়ার্টে বুধবার অর্থাৎ, ৬ আগস্ট গুলাগুলির ঘটনা ঘটে। যাতে পাঁচজন সেনাসদস্য গুলিবিদ্ধ হয়। এ ঘটনায় ২৮ বছর বয়সী স্বয়ংক্রিয় লজিস্টিকস সার্জেন্ট এবং ২য় আর্মার্ড ব্রিগেড কমব্যাট টিমের সদস্য কোরনেলিয়াস র‍্যাডফোর্ডকে  অভিযুক্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও শিরোনাম থেকে জানা যায়, ভিডিওটি যে ব্যক্তিকে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে তিনি ফোর্ট স্টুয়ার্টের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জন লুবাস। শিরোনামে লুবাসের বরাতে জানানো হয়, গুলাগুলির ঘটনাটি ফোর্টের কমব্যাট টিমের এরিয়ায় ঘটে। তবে বর্তমানে আহত সেনারা সবাই আশঙ্কামুক্ত অবস্থায় আছেন বলেও শিরোনামে উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও ভিডিওটিতেও একই ঘটনা সম্পর্কে আলোচনা করতে শোনা যায়। 

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে সিবিএস নিউজের ওয়েবসাইটে সেদিনের সংবাদ সম্মেলনের পুরো ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। যাতে ফোর্ট স্টুয়ার্টে গোলাগুলির ঘটনা ব্যতিত অন্যকোনো ইস্যুতে ভিডিওর ব্যক্তিকে কথা বলতে শোনা যায়না। অর্থাৎ, উক্ত সংবাদ সম্মেলনের ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবির কোনো সম্পর্ক নেই।

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে আলোচিত দাবি সম্বলিত কোনো ভিডিও বার্তা পাঠানোর তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্রের সেনাঘাঁটিতে হওয়া গোলাগুলির ঘটনায় করা সংবাদ সম্মেলনের ভিডিওকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণে জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে জানিয়ে ভিডিও বার্তা পাঠানোর দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

যশোরে যুবলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যার দৃশ্য দাবিতে নড়াইলে ছিনতাইকারী সন্দেহে গণপিটুনির ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি গণপিটুনির ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “যশোরে যুবলীগ নেতাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে ইউনূস বাহিনী”।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত দাবিতে প্রচারিত উপরোল্লিখিত ভিডিও পোস্টগুলো প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজারেরও অধিক বার দেখা হয়েছে এবং প্রায় ১,৫০০ এরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওগুলোতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

এরূপ দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি যশোরে যুবলীগ নেতাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার দৃশ্যের নয়৷ প্রকৃতপক্ষে এটি গত ১৪ আগস্টের নড়াইলের রূপগঞ্জ বাজারের ভিডিওটি এবং প্রদর্শিত ব্যক্তিকে চোর ও ছিনতাইকারী সন্দেহে গণপিটুনি দেওয়া হয়। তাছাড়া, গণপিটুনির শিকার হওয়া উক্ত ব্যক্তি এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি বেঁচে আছেন।

অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম ‘চ্যানেল আই’ এর সাবেক সাংবাদিক ‘মধু সরকার’ এর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ১৪ আগস্টে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত গণপিটুনি খাওয়া ব্যক্তি ও আশেপাশের কয়েকজন ব্যক্তি ও পোশাকের মিল পাওয়া যায়। 

Comparison : Rumor Scanner

ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, “নড়াইলের রুপগঞ্জ বাজার থেকে ছিনতাইকারীকে সাধারণ জনগণ গণপিটুনি দেয়,পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে….চোর দুইজনকে”। এছাড়াও, ‘MD Shakib Arfin’ নামের আরেকটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেও উক্ত ঘটনার ভিডিও গত ১৪ আগস্টে প্রচার হতে দেখা যায়। পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়, “নড়াইলের রুপগঞ্জ  বাজার থেকে সোনার চেইন ছিনতাই করতে গিয়ে  ছিনতাইকারী সাধারণ জনগণের কাছে ধরা পড়ে পরে তাকে গণপিটুনি দেয়,পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে”।

উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে গুগল ম্যাপে নড়াইলের রূপগঞ্জ বাজার এলাকা পর্যবেক্ষণ করলে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রদর্শিত পারিপার্শ্বিক অবস্থার সাথে রূপগঞ্জ বাজারের পারিপার্শ্বিক অবস্থার দৃশ্যের মিল পাওয়া যায় এবং নিশ্চিত হওয়া যায় যে ঘটনাস্থল নড়াইলের রূপগঞ্জ বাজার।

পরবর্তীতে উক্ত ভিডিওটির বিষয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘ঢাকা মেইল’ এর নড়াইল জেলা প্রতিনিধি হাবিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করে। তিনি ভিডিওটি দেখে জানান, ঘটনাটি গত ২-৩ দিন আগে নড়াইলের রূপগঞ্জ বাজারে ঘটেছে৷ ছিনতাইকারী সন্দেহে উক্ত ব্যক্তিকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। তার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই এবং উক্ত ব্যক্তি এখনও বেঁচে আছেন।

এ বিষয়ে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনিও নিশ্চিত করেন, গণপিটুনির ঘটনাটি চোর সন্দেহে ঘটেছে এবং যুবলীগ নেতা হওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। তিনি আরো জানান, গণপিটুনির শিকার হওয়া ব্যক্তি বর্তমানে বেঁচে আছেন এবং জেলখানায় আছেন।

এছাড়াও, অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম দেশ টিভির ওয়েবসাইটে ‘যশোরে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা আটক’ শিরোনামে গত ১৭ আগস্টে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, “যশোরে ফেসবুকে ভুয়া ভিডিও ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অভিযোগে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সদর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও আরবপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন সাজু আটক হয়েছেন। শনিবার (১৬ আগস্ট) গভীর রাতে শহরতলীর পুলেরহাট কৃষ্ণবাটি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। তিনি ওই এলাকার সিদ্দিক হোসেনের ছেলে।…পুলিশ জানায়, সাজু তার ফেসবুক আইডি ‘আমার বাংলাদেশ’ থেকে “যশোরে যুবলীগ কর্মীকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা” শিরোনামে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। তবে ভিডিওটি যশোরের নয়, বরং ১৪ আগস্ট নড়াইলের রূপগঞ্জে ছিনতাইকারীকে মারধরের ঘটনা। ওই ভিডিও বিকৃত করে যশোরের ঘটনা হিসেবে প্রচার করা হয়। এর মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বিতর্কিত করা, অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি ও সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেন তিনি।”

সাম্প্রতিক সময়ে যশোরে কোনো যুবলীগ নেতা গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন কি না এ বিষয়ে অনুসন্ধান করলে এমন কোনো ঘটনা নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়নি। তবে মূলধারার গণমাধ্যম ‘দ্য ডেইলি স্টার’ এর ওয়েবসাইটে গত ১৩ আগস্টে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “যশোরের সদর উপজেলায় রেজাউল ইসলাম (৪০) নামে এক যুবলীগ কর্মীকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ বুধবার (১৩ আগস্ট) যশোর কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, রেজাউলের বাবার নাম গোলাম তোরফদার। স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্য অনুসারে, একদল দুর্বৃত্ত ভোররাতে রেজাউলকে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং বাড়ির পাশেই গলা কেটে হত্যা করে।”

সুতরাং, গত ১৪ আগস্টে নড়াইলের রূপগঞ্জ বাজারে চোর ও ছিনতাইকারী সন্দেহে গণপিটুনির ভিডিওকে যশোরে যুবলীগ নেতাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

গেল ১৫ই আগস্ট ঘিরে মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার মিছিল দাবিতে ২০২৩ সালের ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, “নড়াইলে ১৫ই আগস্ট সফল করলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা” শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

একই দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৫ আগস্ট উপলক্ষে সাবেক সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা কোনো মিছিলে অংশ নেননি বরং, এটি ২০২৩ সালে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত শোক র‌্যালির ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির কী-ফ্রেম রিভার্স সার্চের মাধ্যমে ‘Mash Reporter Official’ নামক একটি টিকটক অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের ০৩ সেপ্টেম্বর প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে।

Video Comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে, উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূলধারার অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা পোস্টের ওয়েবসাইটে ২০২৩ সালের ১৫ আগস্ট ‘নড়াইলে শোককে শক্তিতে পরিণত করলেন মাশরাফি’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি ২০২৩ সালে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত শোক র‌্যালির দৃশ্য। যেখানে মাশরাফি বিন মর্তুজাকে ঐ মিছিলের নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়। 

এছাড়া, গেল ১৫ আগস্ট উপলক্ষে নড়াইলে মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার মিছিলে অংশগ্রহণ করার দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য দেশিয় গণমাধ্যম ও অন্য কোনো বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, ২০২৩ সালের নড়াইলের লোহাগড়ায় আয়োজিত এক শোক র‍্যালির দৃশ্যকে গেল ১৫ই আগস্ট উপলক্ষে নড়াইলে মাশরাফি বিন মর্তুজা মিছিলে অংশ নিয়েছেন দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

মেহজাবীন চৌধুরীর অন্তর্বাস পরিহিত ছবি দাবিতে সম্পাদিত ছবি প্রচার

0

চলতি বছরের শুরুর দিকে বিয়ে পরিচালক আদনান আল রাজীবকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। বিয়ের প্রায় ৫ মাস পর হানিমুনে বিদেশ যায় এই দম্পতি। যার বেশকিছু মুহুর্তের ছবি মেহজাবীন তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রোফাইলে শেয়ার করেন। এর প্রেক্ষিতে সম্প্রতি, বিদেশে গিয়ে মেহজাবীন প্রকাশ্যে অন্তর্বাস পড়ে ছবি তুলেছেন দাবিতে তার কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীর অন্তর্বাস পরিহিত এই ছবিগুলো আসল নয়। প্রকৃতপক্ষে, তার কয়েকটি ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ছবিগুলো তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মেহজাবীন চৌধুরীর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ পর্যালোচনার মাধ্যমে গত ১৬ জুন প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। পোস্টটিতে তিনি তাদের হানিমুনে প্যারিসের লুভর মিউজিয়াম ভ্রমণের কয়েকটি ছবি সম্বলিত একটি ফটো এ্যালবাম প্রচার করেছেন। 

Screenshot: Facebook 

ছবিগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, উক্ত ফটো এ্যালবামে থাকা মেহজাবীনের বেশ দুটি ছবির সাথে আলোচিত ছবিগুলোর পারিপার্শ্বিক অবস্থা এবং তার অঙ্গভঙ্গির হুবহু মিল রয়েছে। এছাড়াও আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলোর পোশাকের রঙের সাথে তার পোস্টে প্রচারিত ছবিগুলোর পোশাকের রঙেরও মিল লক্ষ্য করা যায়। এমন ছবিগুলো দেখুন এখানে এবং এখানে। 

Image Comparison by Rumor Scanner 

যা থেকে স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে, মেহেজাবীন চৌধুরীর লুভর মিউজিয়াম ভ্রমণের এই ছবি দুটো ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ছবিগুলো তৈরি করা হয়েছে। 

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিনোদন অঙ্গনের একাধিক নারী তারকা এমন ভুয়া এডাল্ট কনটেন্টের মাধ্যমে অপপ্রচারের শিকার হয়েছেন। এই তালিকায় মেহজাবীন ছাড়াও আরো যারা আছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন সাদিয়া আয়মান, রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা, শবনম ফারিয়া, পরী মণি।  

সুতরাং, মেহজাবীন চৌধুরীর বিদেশে গিয়ে প্রকাশ্যে অন্তর্বাস পরে ছবি তুলেছেন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ছবিগুলো সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

  • Mehazabien Chowdhury Facebook Page Post
  • Mehazabien Chowdhury Facebook Page Post
  • Mehazabien Chowdhury Facebook Page Post
  • Rumor Scanner’s Analysis

শেখ মুজিবের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মোমবাতি হাতে ধানমন্ডি ৩২ এ শতবর্ষী জননী দাবিতে কলকাতার ছবি প্রচার 

0

সাম্প্রতিক সময়ে ১৫ আগস্ট ঘিরে এক বৃদ্ধার মোমবাতি হাতে ধানমন্ডি ৩২ এ বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে যাওয়ার দৃশ্য দাবিতে দুইটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে। 

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো এক বৃদ্ধার মোমবাতি হাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যাওয়ার কিংবা বাংলাদেশের নয়। প্রকৃতপক্ষে, এটি কলকাতায় চিকিৎসক মৌমিতা দেবনাথকে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে মায়া রাণী চক্রবর্তী নামের এক বৃদ্ধার মিছিলে যোগ দেওয়ার সময়কার ছবি। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে, রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Arpita Chakraborty নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টের একটি পোস্টে আলোচিত ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়। পোস্টদাতা উক্ত পোস্টের বিস্তারিত অংশে ঐ বৃদ্ধা নারীকে নিজের ঠাকুরমা (দাদি/নানি) বলে পরিচয় দেন। ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, অ্যাকাউন্টটির মালিক একজন ভারতীয়। 

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে ১৫ আগস্ট ঘিরে একই দাবিতে ছবিগুলো প্রচার করা হয়েছিলো। সেসময়ে বিষয়টিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রিউমর স্ক্যানার। 

আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে গ্রেফতার করা হয়নি, প্রচারিত ভিডিওটি ভিন্ন ঘটনার

সম্প্রতি ‘আলোচিত আইনজীবী জেডআই খান পান্না গ্রেপ্তার। তাকে রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করেছে ইউনুছ বাহিনী’ ক্যাপশনে সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী জহিরুল ইসলাম খান পান্না ওরফে জেড আই খান পান্নাকে গ্রেফতার করা হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)৷

টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে গ্রেফতার করা হয়নি। প্রকৃতপক্ষে, রাজশাহী নগরীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহলের একটি পুরোনো ভিডিওকে জেড আই খান পান্নাকে গ্রেফতার করা হয়েছে দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের মাধ্যমে ‘দৈনিক রাজশাহী সংবাদ’ নামক ফেসবুক পেজে ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। 

Comparison: Rumor Scanner 

উক্ত ভিডিওটির ক্যাপশনে এটিকে ‘নগরীরতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার। রাজশাহী শহরের রাস্তাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল চলমান।’ সম্পর্কিত চিত্র বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া, আইনজীবী জেড আই খান পান্নার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট পর্যেবক্ষণ করে গত ১৫ আগস্ট আলোচিত দাবির বিষয়ে একাধিক পোস্ট (, ) খুঁজে পাওয়া যায়। 

এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘আমি গৃহবন্দী । এরেস্ট বা গ্রেফতার হইনি । তারপরও গৃহবন্দি আমার সন্তানের দ্বারা॥’

আরেক পোস্টে তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ হয়ে বাসায়।নজরদারিতে নেই। আমার সন্তানের চাপে আছি॥’

এছাড়া, গণমাধ্যম কিংবা সংশ্লিষ্ট সূত্রে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো সংবাদ বা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে গ্রেফতার  করা হয়েছে শীর্ষক দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

শেখ মুজিবের ছবিতে মমতা ব্যানার্জীর ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়, ২০২০ সালের  

0

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী গেল ১৫ই আগস্ট বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন দাবিতে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে উক্ত দাবিতে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ইন্সটাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ছবিটি গেল ১৫ আগস্টের নয় বরং, এটি ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে মমতা ব্যানার্জীর ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর ছবি।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ছবিটির রিভার্স সার্চ করে মমতা ব্যানার্জীর ফেসবুক পেজে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টের সাথে সংযুক্ত প্রথম ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকীতে আজ (২০২০ সালের ১৭ মার্চ) বিধানসভায় শ্রদ্ধেয় স্পিকার এবং বিধায়কদের উপস্থিতিতে তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করলাম। এই অবিসংবাদিত নেতা মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমির জন্য লড়াই করে আজও জাতির অনুপ্রেরণা হয়ে আছেন।

পরবর্তীতে, এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে অনলাইন গণমাধ্যম  বাংলা নিউজ ২৪ ডট কমের ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে মমতার শ্রদ্ধা’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়। 

সুতরাং, ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে মমতা ব্যানার্জীর ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর ঘটনাকে গেল ১৫ই আগস্টের ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

গেল ১৫ আগস্ট নয়, শেখ মুজিবের সমাধিতে সেনাপ্রধানের শ্রদ্ধা জানানোর এই ভিডিওটি ২০২৪ সালের জুন মাসের

‘বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান’ দাবিতে গত ১৫ আগস্ট ইন্টারনেটে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

অর্থা, দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওটি গেল ১৫ আগস্টের।

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদন লেখা অবধি টিকটকে ভিডিওটি দেখা হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ বারেরও বেশি। এছাড়াও ভিডিওটিতে প্রায় ৭ হাজারেরও বেশি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি ভিডিওটি ১ হাজার ৮০০ বারেরও বেশি শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শ্রদ্ধা জানানোর এই ভিডিওটি গত ১৫ আগস্টের নয় বরং, এটি ২০২৪ সালের জুন মাসে সেনাপ্রধানের দায়িত্বগ্রহণের পর শেখ মুজিবের সমাধিতে ওয়াকার-উজ-জামানের শ্রদ্ধা জানানোর ভিডিও।

অনুসন্ধানে ভিডিওটির কিছু কী-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে অনলাইন সংবাদ মাধ্যম ‘নবধারা’ -এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ২৫ জুন ‘টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে নবনিযুক্ত সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের শ্রদ্ধা’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর দৃশ্যের সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর দৃশ্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটির ক্যাপশন বর্ণনায় বলা হয়, ‘মঙ্গলবার (২০২৫ সালের ২৫ জুন) দুপুরে তিনি টুঙ্গিপাড়া পৌঁছে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে সৌধ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।’ 

Comparison : Rumor Scanner

একই ঘটনায় সেসময় মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতেও (,,) একই সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে সেনাপ্রধানের শ্রদ্ধা জানানোর এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়।

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গেল ১৫ আগস্টে শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে সেনাপ্রধানের শ্রদ্ধা জানানোর সপক্ষে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে সেনাপ্রধানের শ্রদ্ধা জানানোর পুরোনো ভিডিওকে গেল ১৫ আগস্টের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

এটিএন বাংলার নামে সারাদেশে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার 

0

সম্প্রতি, “ATN Bangla চ্যানেলে সারাদেশে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে” দাবিতে এটিএন বাংলার লোগো সম্বলিত একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। 

প্রচারিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশে কাজের সুযোগ রয়েছে এমন উল্লেখিত পদ হলো- 

▪️স্টাফ রিপোর্টার
▪️ক্রাইম রিপোর্টার
▪️বিশেষ প্রতিনিধি
▪️ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি
▪️উপজেলা প্রতিনিধি
▪️ক্যাম্পাস প্রতিনিধি 

এছাড়াও, আবেদন শুধু মাত্র হোয়াটসঅ্যাপের এই নাম্বারে (01963151028) করতে হবে আবেদনের শেষ তারিখ হিসেবে ১৮ আগস্ট ২০২৫ ইং উল্লেখ কর হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক  

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এটিএন বাংলায় সাংবাদিক নিয়োগ সংক্রান্ত পোস্টটি ভুয়া বরং, প্রতারণার উদ্দেশ্যে এটিএন বাংলার নাম ব্যবহার করে আলোচিত পোস্টটি প্রচার করা হয়েছে। 

এই বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টটিতে থাকা নাম্বারে রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা চেষ্টা করা হলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে, এটিএন বাংলার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ এবং ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করেও এ সংক্রান্ত কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সন্ধান পাওয়া যায়নি। 

তবে, আলোচিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে এটিএন বাংলার সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বিশেষ সংবাদদাতা আলী আসগর ইমনের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ১৪ আগস্টে একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot from Facebook 

উক্ত পোস্টের ক্যাপশনে আলী আসগর ইমন আলোচিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া বলে নিশ্চিত করেন এবং বলেন, “এটিএন বাংলা কর্তৃপক্ষ এমন কোন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়নি।” 

এছাড়া, এটিএন বাংলার ফেসবুক পেজে গত ১৬ আগস্টে ‘এটিএন বাংলার নামে ভুয়া সাংবাদিকতা ও নিয়োগে প্রতারণা! সতর্ক করল কর্তৃপক্ষ’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

উক্ত প্রতিবেদনে আলোচিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করে অভিযুক্তদের আইনে সোপর্দ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটিতে সাংবাদিক ও জনবল নিয়োগের ভুয়া নিয়োগের বিজ্ঞাপন দিয়ে একটি চক্র প্রতারণা করছে বলেও জানানো হয়। 

সুতরাং, এটিএন বাংলায় সারাদেশে সাংবাদিক প্রয়োজন দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারিত এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া ও বানোয়াট। 

তথ্যসূত্র