Home Blog Page 158

কোটা আন্দোলন নিয়ে তারেক রহমান ও ঢাবি প্রো-ভিসি মামুন আহমেদের ফোনালাপটি ২০১৮ সালের

গত বছরের ৫ জুন হাইকোর্ট কোটা পদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ সালের প্রজ্ঞাপনকে অবৈধ ঘোষণা করলে ছাত্র-জনতার মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। জুলাই মাসে এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। মাত্র দুই মাসের মধ্যেই ৫ আগস্ট সরকারের পতন ঘটে। এই গণ-আন্দোলন পরবর্তীতে ‘জুলাই বিপ্লব’ নামে পরিচিতি পায়।

সম্প্রতি, ঢাবির বর্তমান প্রো-ভিসি ড. মামুন আহমেদ এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে একটি ফোনালাপের অডিও রেকর্ড ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। দাবি করা হচ্ছে, এটি গত জুলাই আন্দোলনে দিকনির্দেশনার ফোনালাপ।

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখুন: ফেস দ্যা পিপল (ফেসবুক), বার্তা বাজার

উক্ত দাবিতে অনলাইন গণমাধ্যম ফেস দ্য পিপলের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট প্রচারিত হয়। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে তারেক রহমানের সাথে ড. মামুন আহমেদ এর আলোচিত ফোনালাপটি ২০২৪ সালের নয়, বরং ২০১৮ সালের।

আলোচিত ফোনকলের বিষয়ে অনুসন্ধানে, জাগোনিউজ২৪-এর ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ১২ এপ্রিল “কোটাব্যবস্থা নিয়ে ঢাবি শিক্ষককে যা বললেন তারেক রহমান’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের কোটা আন্দোলন চলাকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কোটাব্যবস্থা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মামুন আহমেদের সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনা করেছিলেন। এই কথোপকথনের বিষয়টি একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের কাছে স্বীকার করেছেন অধ্যাপক মামুন আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘মঙ্গলবার (১০ এপ্রিল ২০১৮) সন্ধ্যার পর তারেক রহমানের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।”

পাশাপাশি উক্ত প্রতিবেদনে তারেক রহমানের সঙ্গে অধ্যাপক মামুন আহমেদের সম্পূর্ণ ফোনালাপ তুলে ধরা হয়, যার সাথে আলোচিত ফোনালাপের হুবহু মিল দেখা যায়।

এছাড়া, ২০১৮ সালের ১২ এপ্রিল ‘Bangla Voice24’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে এই ফোনকলের অডিও রেকর্ড পাওয়া যায়। যার সাথেও আলোচিত ফোনালাপের মিল পাওয়া যায়।

একই দিন যমুনা টিভি’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচিত ফোনালাপের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের মন্তব্য পাওয়া যায়। তিনি বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যদি সমমনা কোনো শিক্ষককে আন্দোলনে সমর্থন দিতে বলেন, তাতে অন্যায়ের কিছু নেই।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী একই বিষয়ে বলেন, ‘একটি যৌক্তিক আন্দোলনে সমর্থন দিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দলের একজন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যকে তারেক রহমান ফোন দিতেই পারেন। এই ফোনালাপ স্বাভাবিক ঘটনা।’

অর্থাৎ, আলোচিত ফোনালাপটি ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রথম দফার সঙ্গে সম্পর্কিত।

সুতরাং, ২০১৮ সালের কোটা আন্দোলন নিয়ে ড. মামুন আহমেদ ও তারেক রহমানের পুরোনো ফোনালাপ ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

বাংলাদেশে বৃদ্ধ বরকে দেখে কনের অচেতন হওয়ার দাবিতে ভাইরাল স্ক্রিপ্টেড ভিডিও

সম্প্রতি, বাংলাদেশের একটি অ্যারেঞ্জড ম্যারেজে কনে তার বরকে দেখার সাথে সাথে অচেতন হয়ে পড়ল দাবিতে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

কথিত ভিডিওটিতে দেখা যায়, যুবতী কনে বৃদ্ধ বরকে দেখে চিৎকার দিয়ে অচেতন হয়ে পড়ে।

উক্ত দাবিতে এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশে একটি অ্যারেঞ্জড ম্যারেজে যুবতী কনে তার বৃদ্ধ বরকে দেখে অচেতন হয়ে পড়ছে দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সত্য কোনো ঘটনার নয় বরং, স্ক্রিপ্টেড বা অভিনীত ভিডিওকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি থেকে কিছু কি-ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ‘Wedding Studio’ নামের একটি ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ২৬ জুলাই আপলোডকৃত একটি ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিরও মিল খুঁজে পাওয়া যায়। এই ভিডিওটির ১ মিনিট ৮ সেকেন্ড থেকে প্রায় ১ মিনিট ২২ সেকেন্ড দৃশ্যের সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Screenshot: Facebook (Wedding Studio)

একই পেজ থেকে ২০২৪ সালের একই বৃদ্ধের আরও একটি ভিডিও পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook (Wedding Studio)

উক্ত ফেসবুক পেজটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, পেজটি থেকে নিয়মিত এমন ভিডিও প্রচার করা হয়।
এছাড়া, ফেসবুক পেজ ‘Wedding Studio’-এর “অ্যাবাউট” বিভাগে দেখা যায়, পেজটির লোকেশন হিসেবে সৌদি আরবের রিয়াদ উল্লেখ করা হয়েছে। পেজটির ইন্ট্রোতে লেখা রয়েছে:

“হ্যালো বন্ধুরা, আমি দেলোয়ার। আমি সৌদি আরবে থাকি। আমরা কাউকে আঘাত করার উদ্দেশ্যে ভিডিও আপলোড করি না, বরং স্মৃতি ধরে রাখার জন্য ভিডিও তৈরি করি। আমরা কোনো বিয়ের অনুষ্ঠান পরিচালনা করি না। আপনার কোনো অভিযোগ থাকলে দয়া করে আমাদের জানান।”

Screenshot: Facebook (Wedding Studio)

পেজটির “ট্রান্সপারেন্সি” বিভাগ যাচাই করে দেখা গেছে, পেজটি বাংলাদেশ থেকে দুইজন ব্যক্তি পরিচালনা করেন। জানা যায়, ২০২২ সালের ২৮ জুলাই পেজটি প্রথমে ‘Wedding Studio’ নামে তৈরি করা হয়। এরপর ২০২৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পেজটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘AN Media’। তবে, একই বছরের ১৮ এপ্রিল পেজটির নাম আবার পরিবর্তন করে পুরোনো নাম ‘Wedding Studio’ রাখা হয়।

Screenshot: Facebook (Wedding Studio)

অর্থাৎ, পেজটি পর্যবেক্ষণ করে এটা নিশ্চিত যে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি স্ক্রিপ্টেড।

সুতরাং, স্ক্রিপ্টেড ভিডিওকে সত্য দাবিতে বাংলাদেশের একটি অ্যারেঞ্জড ম্যারেজে কনে তার বৃদ্ধ বরকে দেখার সাথে সাথেই অচেতন হয়ে পড়েছে দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

  • Wedding Studio: Facebook Page Video
  • Wedding Studio: Facebook Page Video
  • Facebook Page: Wedding Studio
  • Rumor Scanner’s Own Analysis

আনসারের টিডিপি প্রশিক্ষণকে ভারতবিরোধী সামরিক প্রশিক্ষণ দাবিতে অপপ্রচার

সম্প্রতি, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বাংলাদেশি নারী ও পুরুষদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে দাবিতে কয়েকটি ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। একইসঙ্গে দাবি করা হয়, উক্ত প্রশিক্ষণে কোনো হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের যুক্ত করা হয়নি।

এক্স-এ প্রচারিত এমন ছবি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এছাড়াও ভারতীয় গণমাধ্যম আজতক বাংলাতে একই ঘটনাকে জিহাদি ট্রেনিং দাবিতে প্রচারিত প্রতিবেদন দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।  

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সীমান্তবর্তী এলাকায় বাংলাদেশি নারী ও পুরুষদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, রাজধানীতে অবস্থিত বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দপ্তরে আয়োজিত ঢাকা মহানগরের নগর প্রতিরক্ষা দলের (টিডিপি) মৌলিক প্রশিক্ষণের ছবিকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে রির্ভাস ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টেলিভিশন’র ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৯ জানুয়ারি প্রচারিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner 

প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলো সাথে উক্ত প্রতিবেদনের বেশ কয়েকটি স্থানের ফুটেজের সাথে হুবহু মিল রয়েছে। যা থেকে ধারণা করা যায়, ছবিগুলো উক্ত প্রতিবেদন থেকেই স্ক্রিনশটের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ভিডিওটি আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ‘টাউন ডিফেন্স পার্টি- টিডিপি’র মৌলিক প্রশিক্ষণের ভিডিও। প্রতিবেদনটি প্রকাশের দিন ‍উক্ত প্রশিক্ষণ শুরু হয়। উক্ত প্রশিক্ষণে ঢাকা মহানগরীর ২৫০ জন তরুণ-তরুণী অংশগ্রহণ করেছেন। প্রতিবেদনটি থেকে আরও জানা যায়, এবারের প্রশিক্ষণে প্রথমবারের মত অস্ত্র চালানোর শিক্ষা দেওয়া হবে।

পরবর্তীতে উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে দৈনিক আজকের পত্রিকা-এর ওয়েবসাইটে গত ২১ জানুয়ারি একই ঘটনায় আনসার সদর দপ্তরে টিডিপির মৌলিক প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Ajker Patrika 

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ প্রতিপাদ্যকে উপজীব্য করে সারা দেশে উদ্‌যাপিত হচ্ছে তারুণ্যের উৎসব-২০২৫। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দপ্তরে ঢাকা মহানগরের নগর প্রতিরক্ষা দলের (টিডিপি) মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। মানব নিরাপত্তা, কমিউনিটি অ্যালার্ট মেকানিজম, স্বেচ্ছাসেবা এবং নগর অঞ্চলের অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্যোগ মোকাবিলা প্রভৃতি বিষয়ে সমন্বিত ও বাস্তব ধারণা প্রদানের মাধ্যমে তরুণদের কীভাবে একই ছাতার নিচে আনা যায়, তা এই প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য। যেখানে ঢাকা মহানগরের খিলগাঁও, মিরপুর, ভাটারা ও লালবাগ থানার মোট ২৫৬ জন নারী ও পুরুষকে মৌলিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।

পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে Bangladesh Ansar and VDP এর ফেসবুক পেজে গত ১৯ জানুয়ারি প্রচারিত উক্ত প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠান উদ্বোধনের একটি পোস্ট ‍খুঁজে পাওয়া যায়। য়েখানে সেদিনের প্রশিক্ষণ এবং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বেশ কয়েকটি ছবিও দেখতে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

পাশাপাশি উক্ত পেজটি পর্যালোচনার মাধ্যমে গত ২৪ জানুয়ারি প্রচারিত একটি পোস্টও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Facebook

ভারতীয় গণমাধ্যম আজতক বাংলায় উক্ত প্রশিক্ষণের ছবি প্রচার করে এটিকে বাংলাদেশে ‘জিহাদি ট্রেনিং’ প্রদানের চিত্র দাবি করার প্রেক্ষিতে পোস্টটি করা হয়। পোস্টটিতে জানানো হয়, দেশের তারুণ্যের শক্তিকে জনসম্পদে রুপান্তরিত করতে বাহিনীর প্রতিষ্ঠালগ্ন হতেই গ্রাম প্রতিরক্ষা দল (ভিডিপি) ও শহর প্রতিরক্ষা দল (টিডিপি) এর মৌলিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ খ্রি. তারিখে সারাদেশের প্রত্যেকটি উপজেলায় ১০ (দশ) দিন মেয়াদী এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়। যেটিকে ভারতীয় গণমাধ্যমে ‘জিহাদি প্রশিক্ষণ’ এবং ‘উগ্র-চরমপন্থীদের প্রশিক্ষণ’ দাবি করার বিষয়টির প্রতিবাদও জানানো হয় পোস্টটির মাধ্যমে।

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ওয়েবসাইটের তথ্যানুসারে, ১৯৭৬ সালে গ্রাম প্রতিরক্ষা দল (ভিডিপি) এবং ১৯৮০ সালে শহর প্রতিরক্ষা দল (টিডিপি) গঠন করা হয়। পরবর্তীতে এ দুটি সংগঠন আনসার বাহিনীর সঙ্গে একীভূত হয়ে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় একটি সমন্বিত শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখতে শুরু করে। সদস্যদের দক্ষতা এবং কার্যকারিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিবছর নিয়মিতভাবে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।

ওপেন সোর্স অনুসন্ধানেও ফেসবুকে ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে টিডিপি প্রশিক্ষণের দুটি পোস্ট পাওয়া গেছে। পোস্টগুলো দেখুন এখানে এবং এখানে।  

Screenshot Collage by Rumor Scanner 

এছাড়াও, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে কোনো প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে কিনা জানতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমেও গণমাধ্যম কিংবা অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

তাছাড়া, এই প্রশিক্ষণে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো বিধি-নিষেধ রয়েছে বলে বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে তথ্য পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বাংলাদেশি নারী ও পুরুষদের সামরিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে দাবিতে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী পুষ্পিতা বিশ্বাসের মরদেহ উদ্ধারের সংবাদে ভিন্ন নারীর ছবি প্রচার

0

সম্প্রতি, ঢাকার হাজারীবাগ এলাকার একটি হোস্টেল থেকে ইডেন মহিলা কলেজের পুষ্পিতা বিশ্বাস নামের এক ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই মৃত্যুর সংবাদে উক্ত নারীর ছবি দাবিতে একটি ছবি সামাজিক মাধ্যম ও কতিপয় গণমাধ্যমে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।

উক্ত দাবিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ দেখুন, বাংলাদেশ বুলেটিন, খবরের কাগজ

এছাড়াও সনাতন টিভি নামের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংবাদ দেখুন – এখানে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত এই ছবিটি পুষ্পিতা বিশ্বাসের নয় বরং, গত বছরের নভেম্বরে আত্মহত্যা করা বর্ষা আক্তার বিথী নামের ইডেন কলেজের আরেক ছাত্রীর ছবিকে পুষ্পিতা বিশ্বাসের ছবি দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানে মূল ধারার গণমাধ্যম প্রথম আলোঢাকা ট্রিবিউন এর ওয়েবসাইটে প্রাকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, গত ১৭ জানুয়ারী দিবাগত রাতে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার একটি হোস্টেল থেকে পুষ্পিতা বিশ্বাস (২১) নামে ইডেন মহিলা কলেজের এক ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

কিন্তু প্রথম আলো ও ঢাকা ট্রিবিউনের সংবাদে উক্ত শিক্ষার্থীর ছবি ব্যবহার করা হয়নি।

পরবর্তী অনুসন্ধানে, জাতীয় দৈনিক ‘কালবেলা’ এর ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ৩০ নভেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৩০ নভেম্বর রাজধানীর রামপুরার একটি বাসা থেকে বর্ষা আক্তার বিথী (২৪) নামে এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

Comparison: Rumor Scanner

এই সংবাদে প্রচারিত ছবির সাথে পুষ্পিতা বিশ্বাসের ছবি দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। অর্থাৎ, ছবিটি বর্ষা আক্তার বিথীর।

তাছাড়া, আরেক জাতীয় দৈনিক যায়যায়দিন এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও জানা যায় ছবিটি বর্ষা আক্তার বিথীর।

সুতরাং, সম্প্রতি পুষ্পিতা বিশ্বাস নামে ইডেন মহিলা কলেজের এক ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের সংবাদে বর্ষা আক্তার বিথী নামে একই কলেজের আরেক ছাত্রীর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

ভারতে নারী খুনের ঘটনায় ভাইরাল ভিডিওকে বাংলাদেশের ধর্ষণের ঘটনা বলে অপপ্রচার

সম্প্রতি একজন মারাত্মকভাবে আহত নারীর রাস্তার পাশে বসে থাকা ও তাকে পাশ থেকে মানুষজনের প্রশ্ন করার একটি ভিডিও ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্লাটফর্মে প্রচার করা হচ্ছে৷ 

প্রচারিত পোস্টগুলোতে ওই নারীকে টুরিস্ট উল্লেখ করে টেকনাফে গণধর্ষণের শিকার বা কুমিল্লায় রাস্তায় মারধর করে ঠোঁট-জিহ্বা কেটে দেওয়া হয়েছে বা ধর্ষণের শিকার ও কথা বলা রোধ করতে জিহ্বা কেটে দেওয়ার ভিন্ন ভিন্ন দাবি করা হচ্ছে৷ 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷

উক্ত দাবিতে এক্স-এ প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)৷ 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, রাস্তার ধারে ক্ষতবিক্ষত নারীর ভাইরাল ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো ঘটনার নয় বরং, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি সাম্প্রতিক ঘটনার ভিডিওকে বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে৷ 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আহত নারীকে তার বাড়ি কোথায় প্রশ্ন করা হলে তার অস্পষ্ট উত্তরে প্রত্যুত্তরে একজন ব্যক্তি মুর্শিদাবাদের কথা উল্লেখ করেন৷ উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটি জেলা। 

উক্ত তথ্যের সূত্রে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘News 18’ এর ওয়েবসাইটে গত ২২ জানুয়ারি প্রকাশিত ‘জয়নগরে ধানক্ষেতের ধার থেকে মহিলার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার, তদন্তে পুলিশ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, গত ২০ জানুয়ারি গভীর রাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে জয়নগরের বকুলতলা থানার অন্তর্গত রথতলা এলাকায় ফাঁকা ধানক্ষেতের ধারে ইটের রাস্তায় এক মহিলাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে প্রত্যক্ষদর্শীরা। পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়, হাসপাতালে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে৷ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মহিলার শরীরে অস্ত্রের কোপ ছিলো, মুখের এক দিক থেতলানো অবস্থায় ছিলো এবং বেশ কয়েকটি দাঁত ভেঙে গিয়েছিলো। 

একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার

অধিকতর অনুন্ধানে ‘Vision 18 Bangla’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৪ জানুয়ারি প্রকাশিত ‘Joynagar News: বকুলতলায় ধানক্ষেতে অজ্ঞাত মহিলার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার, তদন্তে পুলিশ।’ শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির বিষয় ও পারিপার্শ্বিকতার মিল রয়েছে৷ 

Comparison: Rumor Scanner 

এছাড়া, News 18 এর ইউটিউব চ্যানেলে গত ২৫ জানুয়ারি প্রকাশিত ‘Joynagar News : জয়নগরে মহিলা খুনে অধরা অভিযুক্ত, বকুলতলায় মহিলাকে কুপিয়ে খুন! শিরোনামের ভিডিওতে ব্লার করে একই ভিডিও ব্যবহার করা হয়৷ 

তাছাড়া, রেখা পাত্র নামক একটি ভারতীয় ফেসবুক অ্যাকাউন্টের পোস্ট থেকে উক্ত ঘটনার ওই নারীর আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়, এই পোস্টের ক্যাপশন থেকেও ভিডিওটি পশ্চিমবঙ্গের বলে নিশ্চিত হওয়া যায়৷ 

উপরোক্ত তথ্যাবলী থেকে নিশ্চিত করা যায়, আলোচিত ভিডিওর ঘটনাটি বাংলাদেশে ঘটেনি৷

সুতরাং, বাংলাদেশে সম্প্রতি একজন নারীকে ধর্ষণ এবং তার জিহ্বা কাটার দাবিতে ভারতের সাম্প্রতিক একটি ঘটনার ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

শিক্ষার্থীদের ধোলাই খেয়ে হাসপাতালে হাসনাত আবদুল্লাহ দাবিতে পুরোনো ভিডিও প্রচার

অন্তত আজ (২৭ জানুয়ারি) ভোরবেলা থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহর একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “শিক্ষার্থীদের ধোলাই খেয়ে সমন্বয়ক হাসনাত এখন হাসপাতালে।” এছাড়া, উক্ত একই ভিডিওটি প্রচার করে কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, এবার মধ্য রাতে গণধোলাই খেয়ে সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এখন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।

উক্ত ভিডিওটিতে হাসনাত আবদুল্লাহকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে শুয়ে থাকতে দেখা যায় এবং তার আশেপাশে আরো কয়েকজন ব্যক্তিকেও দেখা যায়।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহর গতরাতের বা সাম্প্রতিক সময়ের নয়। বরং, গত আগস্ট মাসে ঢাকার সচিবালয় এলাকায় আনসার সদস্যদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হওয়ার পর হাসনাত আব্দুল্লাহকে হাসপাতালে নেওয়ার পর সেসময়ে ধারণকৃত দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যবেক্ষণ করলে তাতে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে সংবাদমাধ্যম ঢাকা পোস্টের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ২৬ আগস্টে “গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে হাসনাত আবদুল্লাহ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে হুবহু সাদৃশ্য পাওয়া যায়। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়৷

Comparison: Rumor Scanner

এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে একই শিরোনামে ঢাকা পোস্টের ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ২৫ আগস্টে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, “রাজধানীর সচিবালয় এলাকায় আনসার সদস্যদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ইমারজেন্সি সেন্টারে (ওসেক) নিয়ে আসা হয়েছে। রোববার (২৫ আগস্ট) রাতে অসুস্থ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। […] এর আগে রাত ৯টা ২০ মিনিটের দিকে সচিবালয়ের সামনে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সরেজমিনে দেখা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমকে আটক রাখার খবরে সচিবালয়ের উদ্দেশে রওনা হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় আনসার সদস্যরা শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে। […]”

এছাড়াও, গত ২৫ ও ২৬ আগস্টে মূলধারার গণমাধ্যম চ্যানেল২৪, একাত্তর টিভিইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনসহ একাধিক গণমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলে আহত অবস্থায় হাসনাত আবদুল্লাহর ধারণকৃত দৃশ্য প্রচার করা হয়, যার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

এদিকে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে অনলাইন সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের ওয়েবসাইটে আজকে (২৭ জানুয়ারি) প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলা অবস্থায়ই সংঘর্ষস্থলে হাজির হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনার চেষ্টা করতে গিয়ে তিনি তোপের মুখে পড়েন। রবিবার (২৬ জানুয়ারি) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে নীলক্ষেত এলাকায় আসেন হাসনাত। এ সময় তিনি ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা তার সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।

এরপর হাসনাত উভয়পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করলে নিজেই উভয়পক্ষের তোপের মুখে পড়েন। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হাসনাতকে উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ এবং ‘এসেছে রে এসেছে- ফুটেজখোর এসেছে’ স্লোগান দেন। পরে তিনি সংঘর্ষ এলাকা ছেড়ে ক্যাম্পাসের দিকে চলে যান।”

এছাড়া, মূলধারার সংবাদমাধ্যম যুগান্তরে “সমন্বয়ক হাসনাতের সঙ্গে কী হয়েছিল গতরাতে?” শীর্ষক শিরোনামে আজ (২৭ জানুয়ারি) প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদনেও এ বিষয়ে একই তথ্য জানা যায়। তবে, কোনো গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রেই হাসনাত আবদুল্লাহ গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য যে, পাঁচ দফা দাবিতে গতকাল (২৬ জানুয়ারি) ঢাকার সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। গতকাল (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তাঁরা ঢাকা কলেজের সামনে জড়ো হন। এরপর সেখানে কিছু সময় থেকে সরে এসে সায়েন্স ল্যাব মোড়ে অবস্থান নেন। এতে সায়েন্স ল্যাব, নীলক্ষেত মোড়, এলিফ্যান্ট রোডসহ আশপাশে সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, পাঁচ দফা দাবি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ সাত কলেজের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে অপমান করেন। এর প্রতিবাদে তাঁরা সড়ক অবরোধ করেছেন। তাঁরা জানান, তাঁদের পাঁচ দফা দাবি মেনে নিতে হবে এবং সহ–উপাচার্যকে তাঁর আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করতে হবে।

সুতরাং, গত আগস্ট মাসে ঢাকার সচিবালয় এলাকায় আনসার সদস্যদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হওয়ার পর হাসনাত আব্দুল্লাহকে হাসপাতালে নেওয়ার পর সেসময়ে ধারণকৃত দৃশ্যকে গতকাল (২৬ জানুয়ারি) বা সাম্প্রতিক সময়ে হাসনাত আবদুল্লাহ আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

শাহবাগে পুলিশের গুলিতে দুই মাদ্রাসা শিক্ষক নিহতের দাবিটি গুজব

0

গতকাল ২৬ জানুয়ারি চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে অবস্থান নেওয়া ইবতেদায়ি শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার এক পর্যায়ে সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ সময় পুলিশকে শিক্ষকদের লাঠিপেটা করতে দেখা যায়। এরই প্রেক্ষিতে শাহবাগে পুলিশ ও ইবতেদায়ী শিক্ষকদের সংঘর্ষে বা পুলিশের গুলিতে ২ জন নিহত হয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইবতেদায়ি শিক্ষকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় ২ জন শিক্ষক নিহত হওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং, উক্ত ঘটনায় এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি কোনো শিক্ষকের মৃত্যু ঘটেনি। তবে এ ঘটনায় আহত হয়ে অন্তত ৫ জন শিক্ষক ঢাকা মেডিকেল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো’র অনলাইন সংস্করণে গত ২৬ জানুয়ারি ‘শাহবাগে ইবতেদায়ি শিক্ষকদের ওপর পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড, লাঠিপেটা, আহত ৬’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শাহবাগে পুলিশ-শিক্ষক সংঘর্ষের ঘটনায় এক নারীসহ ছয়জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের সেদিন দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। আহতরা হলেন আনোয়ার হোসেন (৩৫), ফরিদুল ইসলাম (৩০), আমিনুল (৩৫), মিজানুর রহমান (৩৫), বিন্দু ঘোষ ও মারুফা আক্তার (২৫)। তাঁরা সবাই ইবতেদায়ি শিক্ষক বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

এছাড়াও, মূলধারার একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত এসম্পর্কিত প্রতিবেদনগুলোতেও (, , ) উক্ত ঘটনায় কোনো নিহতের তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে এসব প্রতিবেদনে ৫ থেকে ৬ জন শিক্ষকের আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে ঢাকা মেডিকেলের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ফারুকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গত ২৬ জানুয়ারি ইবতেদায়ি শিক্ষকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো শিক্ষক মারা যাননি। এঘটনায় ৫ জন শিক্ষক আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে এসেছিলেন; যারা চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ছেড়েছেন।

সুতরাং, ইবতেদায়ি শিক্ষকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের গুলিতে ২ জন শিক্ষক নিহত হয়েছেন দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

কারাগারে সাবেক বিচারপতি মানিকের মৃত্যুর গুজব

0

সম্প্রতি, বাংলাদেশের আপিল বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মোহাম্মদ শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক কারাগারে মৃত্যু বরণ করেছেন দাবিতে বিভিন্ন পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, কারাগারে বিচারপতি মানিকের মৃত্যুর খবরটি সত্য নয় বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বিশ্বস্ত কোনো গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সাধারণত, সাবেক বিচারপতি মোহাম্মদ শামসুদ্দিন চৌধুরীর মতো আলোচিত ব্যক্তিত্ব মৃত্যুবরণ করলা তা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হতো। তবে নির্ভরযোগ্য কোনো উৎসে এমন তথ্য পাওয়া না যাওয়ায় প্রচারিত দাবিটি ভিত্তিহীন বলে প্রতীয়মান হয়।

গত ২৩ আগস্ট রাতে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত থেকে সাবেক বিচারপতি মানিককে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি। পরদিন সিলেটের বিচারিক হাকিম আলমগীর হোসেন বিচারপতি মানিককে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তবে ওইদিন বিকালে আদালতে তোলার সময় আলোচিত এই বিচারপতিকে লক্ষ্য করে উত্তেজিত জনতা ডিম ও জুতা নিক্ষেপ করে, যার ফলে প্রচন্ড আহত হয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। পরবর্তীতে গত ১২ সেপ্টেম্বর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এবং সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কারাগারেই আছেন তিনি।

গেলো বছরের ১৮ নভেম্বর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল Somoy TV এর ফেসবুক পেজে “আমার জন্য দোয়া কইরেন, আকুতি পলকের” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে বিচারপতি শামসুজ্জামান মানিককে সুস্থভাবে প্রিজন ভ্যানের দিকে হেটে যেতে দেখা যায়। পরবর্তীতে তার অসুস্থতা নিয়ে গণমাধ্যমে আর কোন সংবাদ প্রকাশিত হয়নি। 

অর্থাৎ তার বিষয়ে সর্বশেষ প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, তিনি এখন কারাগারে আছেন।

সুতরাং, সাবেক বিচারপতি শামসুজ্জামান মানিক কারাগারে মারা গেছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই বৈদেশিক সহযোগিতা স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র

0

গত ২০ জানুয়ারি ৪৭ তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট শপথ গ্রহণ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শপথ গ্রহণের প্রথম দিনেই একশোর বেশি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন ট্রাম্প। এমনই এক নির্বাহী আদেশে বাংলাদেশে মার্কিন সহায়তা স্থগিত করেছে দাবিতে একটি তথ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি দেখুন: আজতক, টিভি নাইন, এবিপি, ক্যালকাটা নিউজ, জি নিউজ, রিপাবলিক বাংলা এবং ওয়ার্ল্ড ইজ ওয়ান নিউজ

রিপাবলিক বাংলার আলোচিত উপস্থাপক ময়ূখ রঞ্জনের ফেসবুক পেজ থেকেও একই দাবিতে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়।

ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এবং এখানে (আর্কাইভ)।

এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশি সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত করার সিদ্ধান্ত শুধু বাংলাদেশের জন্য নেওয়া হয়নি। বরং, বিশ্বের প্রায় সকল দেশের জন্যই যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের বিদেশি সাহায্য কার্যক্রম ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। তবে, ইসরায়েল ও মিশর সামরিক সহায়তার ক্ষেত্রে এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য জীবন রক্ষাকারী খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা এই স্থগিতাদেশের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সে গত ২১ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সব বিদেশি সাহায্য কার্যক্রম ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন। এর উদ্দেশ্য হলো এসব সাহায্য কার্যক্রম তার প্রশাসনের নীতিমালার সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ তা পর্যালোচনা করা।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এই আদেশের ফলে কী পরিমাণ তহবিল স্থগিত হবে, তা স্পষ্ট নয়, কারণ অনেক প্রকল্প ইতোমধ্যেই কংগ্রেস দ্বারা অনুমোদিত এবং অর্থ ব্যয় করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ট্রাম্প বলেছেন, বিদেশি সাহায্য ব্যবস্থাপনা অনেক ক্ষেত্রে আমেরিকার স্বার্থের সঙ্গে বিরোধী এবং বৈশ্বিক শান্তির জন্য ক্ষতিকর।

পররাষ্ট্র মন্ত্রী মার্কো রুবিও তার বক্তব্যে বলেন, প্রতিটি সাহায্য কর্মসূচি তিনটি প্রশ্নের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে: এটি কি আমেরিকাকে নিরাপদ রাখে? এটি কি আমেরিকাকে শক্তিশালী করে? এটি কি আমেরিকাকে আরও সমৃদ্ধ করে?

একই বিষয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট প্রায় সব বিদেশি সাহায্য কার্যক্রম স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে এবং নতুন সাহায্য কার্যক্রমও স্থগিত করা হয়েছে। তবে এই স্থগিতাদেশের বাইরে রাখা হয়েছে শুধু ইসরায়েল ও মিশরের জন্য সামরিক সহায়তা। বিবিসি জানায়, স্টেট ডিপার্টমেন্টের একটি অভ্যন্তরীণ মেমো ফাঁস হওয়ার পর এই তথ্য প্রকাশ্যে আসে।

অর্থাৎ, শুধুমাত্র ইসরায়েল ও মিশর সামরিক সহায়তার ক্ষেত্রে এই স্থগিতাদেশের বাইরে রাখা হয়েছে। এর বাইরে প্রায় সকল দেশেই যুক্তরাষ্ট্রের সব বিদেশি সাহায্য কার্যক্রম ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।

তবে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত একটি বিবৃতি থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য জীবন রক্ষাকারী খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য স্থগিতাদেশের বাইরে রাখা হয়েছে। ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের কর্মকর্তারা প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমানের সঙ্গে এক বৈঠকে গতকাল ২৬ জানুয়ারি এই ব্যতিক্রমের বিষয়ে তাকে অবহিত করেন। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস এই মানবিক পদক্ষেপের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

অর্থাৎ, ইসরায়েল ও মিশর সামরিক সহায়তার মতোই বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য জীবন রক্ষাকারী খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা এই স্থগিতাদেশের বাইরে রাখা হয়েছে।

সুতরাং, বিশ্বের প্রায় সকল দেশে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি এর সহযোগিতা কার্যক্রম স্থগিত করা হলেও শুধু বাংলাদেশে সহযোগিতা স্থগিত হওয়ার বিষয়ে প্রচারণা চালানোর বিষয়টি বিভ্রান্তকর।

তথ্যসূত্র

যমুনা টিভির ফটোকার্ড নকল করে ঢাবি উপাচার্যের নামে ভুয়া বক্তব্য প্রচার

0

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৭  গতরাতে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপের পরবর্তীতে মধ্যরাতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় নীলক্ষেত ও নিউমার্কেট এলাকা। এরই প্রেক্ষিতে “ছাত্রদের কাছে দুঃখ প্রকাশের কিছু নেই তার ‘বেয়াদব’ – ঢাবি উপাচার্য” শীর্ষক শিরোনামে বেসরকারি ইলেকট্রনিক মিডিয়া যমুনা টিভির লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে(আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “ছাত্রদের কাছে দুঃখ প্রকাশের কিছু নেই তার ‘বেয়াদব’ – ঢাবি উপাচার্য” শীর্ষক দাবিতে যমুনা টিভি কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি বরং, যমুনা টিভি কর্তৃক প্রকাশিত ভিন্ন শিরোনামের একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানও ছাত্রদের বেয়াদব বলে এমন কোনো মন্তব্য করেননি।  

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে ফটোকার্ডটিতে যমুনা টিভির লোগো ও প্রকাশের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ খুঁজে পাওয়া যায়। 

পরবর্তীতে আলোচিত ফটোকার্ডটির বিষয়ে অনুসন্ধানে যমুনা টিভির লোগো ও প্রকাশের তারিখের সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে ‘ছাত্রদের কাছে দুঃখ প্রকাশের কিছু নেই তার ‘বেয়াদব’ – ঢাবি উপাচার্য’ শীর্ষক শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, যমুনা এর ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

তবে আজ ২৭ জানুয়ারি গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ঢাবি উপাচার্য’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। 

Photocard Comparison by Rumor Scanner

উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে এই ফটোকার্ডটির ডিজাইনের মিল রয়েছে। তবে, আলোচিত ফটোকার্ডের শিরোনাম ও শিরোনামে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে যমুনা টিভির ফটোকার্ডের ফন্টের পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। উভয় ফটোকার্ডের উপাচার্যের ছবির মিল থাকলেও শিরোনামে পরিবর্তন দেখা যায়।

অর্থাৎ, যমুনা টিভির এই ফটোকার্ডটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

পরবর্তীতে, এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাকের ওয়েবসাইটে আজ (২৭ জানুয়ারি) “শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাবি উপাচার্যের দুঃখ প্রকাশ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়৷ 

উক্ত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, রোববার (২৬ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ৩টার দিকে এক বিবৃতিতে উপাচার্য বলেন, বর্তমানে দেশ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এ অবস্থায় কোনো তৃতীয় পক্ষ যাতে সুযোগ নিতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। ক্যাম্পাসে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় মর্মাহত উল্লেখ করে উপাচার্য বিবৃতিতে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন। ধৈর্য ধারণ এবং সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান উপাচার্য। বিবৃতিতে তিনি জানান, ২৭ জানুয়ারি অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে। যেসব বিষয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন, সেগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন উপাচার্য।

সুতরাং, ‘ছাত্রদের কাছে দুঃখ প্রকাশের কিছু নেই তার ‘বেয়াদব’ – ঢাবি উপাচার্য’ শীর্ষক শিরোনামে যমুনা টিভির নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র