শাহবাগে পুলিশের গুলিতে দুই মাদ্রাসা শিক্ষক নিহতের দাবিটি গুজব

গতকাল ২৬ জানুয়ারি চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে অবস্থান নেওয়া ইবতেদায়ি শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার এক পর্যায়ে সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ সময় পুলিশকে শিক্ষকদের লাঠিপেটা করতে দেখা যায়। এরই প্রেক্ষিতে শাহবাগে পুলিশ ও ইবতেদায়ী শিক্ষকদের সংঘর্ষে বা পুলিশের গুলিতে ২ জন নিহত হয়েছেন দাবিতে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ইবতেদায়ি শিক্ষকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় ২ জন শিক্ষক নিহত হওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং, উক্ত ঘটনায় এই প্রতিবেদন প্রকাশ অবধি কোনো শিক্ষকের মৃত্যু ঘটেনি। তবে এ ঘটনায় আহত হয়ে অন্তত ৫ জন শিক্ষক ঢাকা মেডিকেল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলো’র অনলাইন সংস্করণে গত ২৬ জানুয়ারি ‘শাহবাগে ইবতেদায়ি শিক্ষকদের ওপর পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড, লাঠিপেটা, আহত ৬’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শাহবাগে পুলিশ-শিক্ষক সংঘর্ষের ঘটনায় এক নারীসহ ছয়জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের সেদিন দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। আহতরা হলেন আনোয়ার হোসেন (৩৫), ফরিদুল ইসলাম (৩০), আমিনুল (৩৫), মিজানুর রহমান (৩৫), বিন্দু ঘোষ ও মারুফা আক্তার (২৫)। তাঁরা সবাই ইবতেদায়ি শিক্ষক বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

এছাড়াও, মূলধারার একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত এসম্পর্কিত প্রতিবেদনগুলোতেও (, , ) উক্ত ঘটনায় কোনো নিহতের তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে এসব প্রতিবেদনে ৫ থেকে ৬ জন শিক্ষকের আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতের জন্য রিউমর স্ক্যানারের পক্ষ থেকে ঢাকা মেডিকেলের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ফারুকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গত ২৬ জানুয়ারি ইবতেদায়ি শিক্ষকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো শিক্ষক মারা যাননি। এঘটনায় ৫ জন শিক্ষক আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে এসেছিলেন; যারা চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ছেড়েছেন।

সুতরাং, ইবতেদায়ি শিক্ষকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের গুলিতে ২ জন শিক্ষক নিহত হয়েছেন দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img