Home Blog Page 156

শরীয়তপুরে মুসলিম নারীর মৃতদেহকে হিন্দু দাবিতে অপপ্রচার

সম্প্রতি, বাংলাদেশের শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলায় হিজাব ও বোরকা না পরায় এক নারীকে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

উক্ত দাবিতে এক্সের পোস্ট দেখুন এখানে। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশের শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলায় হিজাব ও বোরকা না পরায় এক নারীকে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয় বরং, প্রচারিত ভিডিওতে থাকা নারী মুসলিম এবং তার নাম মোছাঃ কাকলি আক্তার। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে উক্ত নারী আত্মহত্যা করেছেন।

অনুসন্ধানে জাজিরা টাইমস নামক একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত ২৭ জানুয়ারি প্রচারিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডে থাকা ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল রয়েছে। 

Comparison By Rumor Scanner 

উক্ত ফটোকার্ড এবং পোস্টের ক্যাপশন থেকে জানা যায়, পদ্মাসেতুর দক্ষিণ থানার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নে গাছের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় এক যুবতীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত কাকলি আক্তার উপজেলার পূর্বনাওডোবা ইউনিয়নের হাজী জাহেদ আলী মাদবর কান্দি গ্রামের জুলহাস মাদবরের মেয়ে।

প্রেমঘটিত কারণে আত্মহত্যা করতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।

পরবর্তীতে দৈনিক দেশেরপত্র নামে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে গত ২৭ জানুয়ারি “শরীয়তপুরে গাছের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় যুবতীর মরদেহ উদ্ধার” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৭ জানুয়ারি সকালে শরীয়তপুরের পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানাধীন পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নে গাছের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় এক যুবতীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত কাকলি আক্তার শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের হাজী জাহেদ আলী মাদবর কান্দি গ্রামের জুলহাস মাদবরের মেয়ে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রেমঘটিত কারণে কাকলি আক্তার আত্মহত্যা করেছেন।

প্রতিবেদনে পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে। প্রাথমিক সুরতহালে তেমন কিছু বোঝা যায়নি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে এলে বিস্তারিত জানা যাবে।

পরবর্তীতে বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম হোসেনের সাথে যোগাযোগ করে রিউমর স্ক্যানার। তিনি বলেন, গত ২৭ জানুয়ারি নিহত হওয়া এই ব্যক্তি মুসলিম। মেয়েটির নাম মোছাঃ কাকলি আক্তার। ডাক নাম মুন্নি। বয়স ১৬ বছর৷ বাবার নাম জুলহাস মাদবর। 

এছাড়া, আলোচিত দাবিটি প্রোপাগান্ডা বলেও দাবি করেন তিনি। 

সুতরাং, শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় নিহত মুসলিম নারীকে হিন্দু দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

অন্তর্বর্তী সরকারে ভারতের দালাল প্রবেশ করেছে শীর্ষক মন্তব্য করেননি হাসনাত আবদুল্লাহ 

0

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছে যেখানে দাবি করা হচ্ছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন “অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে ভারতের দালাল প্রবেশ করেছে”।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে ভারতের দালাল প্রবেশ করেছে” শীর্ষক কোনো মন্তব্য হাসনাত আবদুল্লাহ করেননি বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে আলোচিত দাবির পক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এছাড়া, হাসনাত আবদুল্লাহর ফেসবুক পেজেও এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সাধারণত হাসনাত আবদুল্লাহর জাতীয় ইস্যুতে করা মন্তব্যগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়।  

আলোচিত ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহর যে ছবি ব্যবহার করা হয়েছে তার বিষয়ে অনুসন্ধানে ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে “নিহতদের জাতীয় বীরের মর্যাদা দেয়া হবে: সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ | Hasnat Abdullah | ATN News” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। 

Screenshot: Youtube

উক্ত ভিডিওটিতে জুলাইয়ের আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা ও স্বীকৃতি সংক্রান্ত আলোচনা করা হলেও ভারতের বিষয়ে কোন মন্তব্য হাসনাত আবদুল্লাহ করেননি।

সুতরাং, “অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে ভারতের দালাল প্রবেশ করেছে” শীর্ষক মন্তব্য হাসনাত আবদুল্লাহ করেছেন বলে প্রচারিত দাবিটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

বিপিএল উপস্থাপক ইয়াশার ভক্তের সাথে মিথস্ক্রিয়ার ভিডিওকে ভারতীয় পর্যটককে হেনস্তার দাবিতে অপপ্রচার

সম্প্রতি, বাংলাদেশে বেড়াতে আসা একজন ভারতীয় পর্যটককে হয়রানি করা হয়েছে দাবিতে এক্সে (সাবেক টুইটার) ‘ Kanglus found an Indian tourist and can’t stop harrasing her. Imagine the the rotten fish smell she has to gone through’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ভারতীয় এক্স(সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওতে বাংলাদেশে বেড়াতে আসা ভারতীয় পর্যটককে হয়রানির দৃশ্য নেই বরং, বিপিএলে চিটাগং কিংসের হোস্ট (উপস্থাপক) ইয়াশা সাগরের সাথে তার একজন ভক্তের ছবি তোলার সময় ধারণকৃত দৃশ্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে এতে কাউকে হেনস্তা সংক্রান্ত কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি।

পরবর্তী অনুসন্ধানে প্রচারিত ভিডিওটির একাধিক কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে সিলেটের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘Sylhetview’ এর ফেসবুক পেজে গত ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ এ ‘হাসি মুখে দর্শকদের সাথে সেলফি তুললেন ইয়াশা সাগর’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও (আর্কাইভ) পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে হুবহু সাদৃশ্য পাওয়া যায়। 

Comparison: Rumor Scanner

পরবর্তীতে, এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে মূলধারার জাতীয় গণমাধ্যম দৈনিক আমাদের সময় এর ওয়েবসাইটে গত ০২ জানুয়ারি “বিপিএল মাতাচ্ছেন ইয়াশা” শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডার মডেল-অভিনেত্রী, ফিটনেস ইনফ্লুয়েন্সার ও ক্রিকেট প্রেজেন্টার ইয়াশা সাগারকে চলমান বিপিএলে চট্টগ্রাম কিংসের ‘অফিসিয়াল হোস্ট’ (উপস্থাপক) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

ক্রিকেট ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিডি ক্রিকটাইম ওয়েবসাইটে প্রকাশিত  একটি প্রতিবেদন থেকেও এ বিষয়ে একই তথ্য জানা যায়।

এছাড়া, তার ইনস্টাগ্রাম পোস্ট এবং সময় টিভিতে তার দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাকে বলতে দেখা যায় যে তিনি বাংলাদেশে তার সময় এবং কাজ উপভোগ করছেন। বিডিক্রিকটাইমের এক প্রতিবেদনে তাকে বাংলাদেশের আতিথেয়তার প্রশংসাও করতে দেখা যায়।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর নারী বাংলাদেশে বেড়াতে আসা ভারতীয় পর্যটক নন এবং তিনি হয়রানিরও স্বীকার হননি।

সুতরাং, বিপিএল হোস্ট (উপস্থাপক) ইয়াশা সাগরের সাথে একজন ভক্তের ছবি তোলার সময় ধারণকৃত দৃশ্যকে বাংলাদেশে বেড়াতে আসা ভারতীয় পর্যটককে হয়রানির দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

সাংবাদিক মাসুদ কামাল নিজেকে বড় আওয়ামী লীগ বলে দাবি করেননি

0

সম্প্রতি, ‘আমি তাদের চেয়েও বড় আওয়ামী লীগ’ শীর্ষক একটি মন্তব্যকে সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামালের নিজের বিষয়ে করা মন্তব্য দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, মাসুদ কামাল নিজের বিষয়ে কিংবা নিজেকে আওয়ামীলীগার দাবি করে ‘আমি তাদের চেয়েও বড় আওয়ামী লীগ’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি বরং, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে তাঁর করা মন্তব্যকে তার নিজের বিষয়ে করা মন্তব্য দাবিতে ফেসবুকে বিকৃতভাবে প্রচার করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দেশটিভি’র ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ২১ এপ্রিল ‘যারা নৌকা মার্কা নিয়ে জিতছে, আমি তাদের চেয়েও বড় আ. লীগ: মাসুদ কামাল’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ভিডিও (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Desh TV News

উক্ত ভিডিওটিতে মাসুদ কামালকে ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যুতে কথা বলতে দেখা যায়। আলোচনার একপর্যায়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তারা প্রমাণ করার চেষ্টা করলো- যারা নৌকা মার্কা নিয়ে জিতেছে, আমি তাদের চেয়েও বড় আওয়ামী লীগ।”

মূলত, তিনি বুঝিয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী যারা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছেন তারা নিজেদের আরও বড় আওয়ামী লীগ হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা করছেন। এ সময় তিনি উদাহরণস্বরূপ- স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়নের ভারও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর ওপর দিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন।

অর্থাৎ, মাসুদ কামাল নিজেকে আওয়ামী লীগ দাবি করে ‘আমি তাদের চেয়েও বড় আওয়ামী লীগ’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি।

সুতরাং, মাসুদ কামাল নিজের বিষয়ে ‘আমি তাদের চেয়েও বড় আওয়ামী লীগ’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত তথ্যটি বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

গাজীপুরের বারাকা গার্মেন্টসে টিফিন খেয়ে ১১ জন মারা যাওয়ার দাবিটি ভুয়া

0

সম্প্রতি, গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত বারাকা ফ্যাশন লিমিটেড নামের কারখানায় টিফিন খাওয়ার পর ১১ জন মারা গিয়েছে শীর্ষক একটি দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, গাজীপুরের বারাকা ফ্যাশন লিমিটেড কারখানায় টিফিন খাওয়ার পর ১১ জন কর্মী মারা যাওয়ার তথ্যটি সঠিক নয়। বরং, টিফিন খাওয়ার পর শতাধিক কর্মী অসুস্থ হওয়ার ঘটনাকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। এই ঘটনায় কারো মৃত্যু হয়নি।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে Mohammad Ujjal Uddin নামের একটি ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট থেকে গত ২৪ জানুয়ারি প্রচারিত একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, বারাকা নামের গার্মেন্টসটি টঙ্গীর শিংবাড়ি নামক এলাকায় অবস্থিত। এছাড়াও পোস্টটিতে টিফিন খাওয়ার পরে শতাধিক কর্মী অসুস্থ হওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু পোস্টে ১১ জন কর্মী মারা যাওয়ার উল্লেখ নেই।

পরবর্তী অনুসন্ধানে মূল ধারার গণমাধ্যম আরটিভির ওয়েবসাইটে গত ২৪ জানুয়ারি টঙ্গীতে রাতের টিফিন খেয়ে পোশাক কারখানার শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৩ জানুয়ারি রাতে টঙ্গীর সিংবাড়ী মোড় এলাকার বারাকা ফ্যাশন লিমিটেড নামক কারখানায় টিফিন খেয়ে শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হওয়ার ঘটনা ঘটে। এছাড়াও জানা যায়, সেদিন ওভারটাইমে কাজ করানোর জন্য এক হাজার শ্রমিককে রাখা হয়। রাতে কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের টিফিন সরবরাহ করে। এর পরই অসুস্থ হতে থাকেন শ্রমিকরা। রোগীর সংখ্যা বেশি হতে থাকায় কারখানার ভেতর প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে স্থানীয় একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। পাশাপাশি প্রতিবেদনটিতে গাজীপুর শিল্প পুলিশ পরিদর্শক (টঙ্গী জোন) মো. ইসমাইল হোসেন-এর বরাত দিয়ে জানানো হয়, অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। তবে প্রতিবেদনটির কোথাও কারও মারা যাওয়ার তথ্য উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

আরেক মূল ধারার গণমাধ্যম যমুনা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে একই ঘটনায় প্রচারিত প্রতিবেদন ও হাসপাতাল থেকে সরাসরি সম্প্রচারকৃত দুটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। এসব ভিডিওতেও মারা যাওয়ার বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। 

দাবিটির বিষয়ে জানতে টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসকান্দার হাবিবুর রহমান-এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি রিউমর স্কানারকে জানান,  বারাকা ফ্যাশন লিমিটেডের ঘটনায় প্রায় ১২০ জনের মত অসুস্থ হয়েছিল। কিন্তু কেউ মারা যায়নি।

সুতরাং, কর্তৃপক্ষের সরবরাহকৃত টিফিন খেয়ে টঙ্গীর বারাকা নামের কারখানায় অসুস্থ হয়ে ১১ জন কর্মী মারা যাওয়ার দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

ভুয়া ফটোকার্ডঃ জামায়াত নেতারা যুদ্ধে অংশ নেয়া জাতীয় বীর শীর্ষক মন্তব্য করেননি দলটির আমীর

0

সম্প্রতি “৭১ এ জামায়াত কোনো ভুল করেনি বিগত দিনগুলোতে জাতিকে ভুল ইতিহাস শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। জামায়াত স্বাধীনতার বিরূদ্ধে ছিলোনা। জামায়াতের শীর্ষ নেতারা ৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা জাতীয় বীর। অধ্যাপক গোলাম আযমকে বীর প্রতিক উপাধি দেওয়ার কথা থাকলেও অদৃশ্য কারণে তা দেওয়া হয়নি।” মন্তব্যটি জামায়াত আমির ড. শফিকুর রহমানের দাবিতে দৈনিক আমার দেশের ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে প্রচারিত ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক 

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ডা. শফিকুর রহমানের মন্তব্য দাবিতে আমার দেশ পত্রিকা এ ধরনের কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি এবং ডা. শফিকুর রহমানও এ ধরনের কোনো মন্তব্য করেননি। বরং, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় আমার দেশের ডিজাইন নকল করে ভুয়া মন্তব্য সম্বলিত আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটি প্রচারের তারিখ হিসেবে ৯ জানুয়ারি, ২০২৫ উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লিখিত তারিখে দৈনিক আমার দেশের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে  ও ইউটিউবে এই সংক্রান্ত কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে, আমার দেশ পত্রিকার ফটোকার্ডগুলো যাচাই করে দেখা যায়, প্রচারিত ফটোকার্ডের সাথে আসল ফটোকার্ডের ফন্ট ও লোগোর কোনো মিল নেই। এছাড়াও, প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে মূল ধারার কোনো গণমাধ্যমে জামায়াতের আমীরের এ ধরণের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। 

তবে গত বছরের ১৯ নভেম্বর শফিকুর রহমান যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে বলেন, একাত্তরে জামায়াত কোনো ভুল করলে, সেটি যদি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়, তাহলে তিনি জাতির কাছে ক্ষমা চাইবেন।

একই অনুষ্ঠানে ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে নিহত ব্যক্তিদের ‘জাতীয় বীর’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান জামায়াতের আমির।  

সুতরাং, জামায়াত শীর্ষ নেতারা যুদ্ধে অংশ নেয়া জাতীয় বীর শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দলটির আমীর দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটি ভুয়া।

তথ্যসূত্র 

জেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের নামে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার

0

সম্প্রতি, ১৮১৩ নং স্মারক উল্লেখ করে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অধীনে ৩ বছর মেয়াদী প্রকল্পে সারাদেশে ৪২০ জন মাঠকর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত একটি কথিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সারাদেশে ৪২০ জন মাঠকর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত এই বিজ্ঞপ্তি পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর দেয়নি বরং আর্থিক প্রতারণার উদ্দেশ্যে ভুয়া এই বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করেও কথিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। এবং গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রেও এ ধরনের কোন বিজ্ঞপ্তির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। 

এছাড়া পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক খন্দকার আরিফুজ্জামান রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন যে বিজ্ঞপ্তিটি ভুয়া।

পূর্বেও একই দাবিতে ভিন্ন নাম্বার ব্যবহার করে একই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে রিউমর স্ক্যানার এ বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

সাবেক এমপি নিজাম হাজারীকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আটকের দাবিটি ভুয়া

0

সম্প্রতি, আওয়ামী লীগ সরকারের ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার।

সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম্যের পোস্টগুলোতে দাবিতে করা হচ্ছে, ‘অবৈধ ভবে আধার কার্ড সংগ্রহ করতে গেলে পালিয়ে থাকা আওয়ামীলীগের ডামি এমপি  নিজামুদ্দিন হাজারীকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

ফেনীর সন্ত্রাসী গডফাদার হাজারী ও তার ঘনিষ্ট ক্যাডাররা স্থানীয় দালাদের মাধমে চুক্তিতে বৈধ ভাবে কলকাতায় বসবাসের উদ্দেশে ঔই কার্ড সংগ্রহ করার চেষ্টা করলে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ তাদেরকে আটক করে।’

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

তাছাড়া, বাংলাদেশ সকাল নামের একটি অনলাইন পোর্টালে গত ০৯ জানুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও প্রায় একই দাবি করা হয়। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে আটক হননি বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানের শুরুতে দাবির সত্যতা যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে নিজাম উদ্দিন হাজারী পশ্চিম বঙ্গ পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন দাবির সপক্ষে ভারতীয় বা বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।

দাবির সূত্রপাত সম্পর্কে জানতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ‘Abdur Rab Bhuttow’ নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ০৮ জানুয়ারী রাত ১০টা ০৩ মিনিটে করা পোস্টটি সম্ভাব্য প্রথম পোস্ট হিসেবে পাওয়া যায়। তবে এই পোস্টে কোনো তথ্যসূত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে, দাবির বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামীম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, “এমন কোনো গ্রেফতারের বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই”।

তবে, গত ০৬ আগস্ট মূলধারার গণমাধ্যম যুগান্তর এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, অবৈধ পথে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফেনী-২ আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী ও এমপির দেহরক্ষী পিএস মানিক আটক করেছে সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড। সেসময় একই তথ্যে সংবাদ প্রকাশ করে অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা টাইমস

নিজাম উদ্দিন হাজারীকে আটকের বিষয় সম্পর্কে জানতে ফেনীর পুলিশ সুপার মোঃ হাবিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যনারকে জানান, “গত ০৬ আগস্ট নিজাম উদ্দিন হাজারী আটকের বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই”।

মূলধারার অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা নিউজ২৪ এর ওয়েবসাইটে গত ০১ জানুয়ারি ‘চব্বিশের বিপ্লব, ফেনীতে হাজারী যুগের অবসান’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে নিজাম হাজারীর বিষয়ে ফেনীর পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান এর একটি বক্তব্য পাওয়া যায়। এই পুলিশ সুপার বলেন, “এখন পর্যন্ত নিজাম হাজারীর নামে ৮টি হত্যা মামলাসহ নয়টি মামলা হয়েছে। তার নামে নানা অপকর্মের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।”

নিজাম হাজারীকে আটকের দাবিটি ভুয়া বলে নিশ্চিত হলেও তার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য জানা যায়নি।

উল্লেখ্য, নিজাম হাজারী গ্রেফতার না হলেও গত ১২ আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাওয়ার সময় তার ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) মোহাম্মদ ফরিদ মানিক আটক করেছে পুলিশ। পরদিন ১৩ আগস্ট ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

সুতরাং, ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

ভুয়া অডিওর মাধ্যমে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের দাবিতে সেনাপ্রধানের নামে ভুয়া তথ্য প্রচার

0

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও আকারে একটি অডিও প্রচার করে দাবি করা হয় যে, এটি বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের ঘোষণার। ভিডিওটিতে কোনো একজনকে বলতে শোনা যায়, “অদ্য সকাল হতে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করিয়াছে। সরকারকে উৎখাত করা হইয়াছে। এখন থেকে সারাদেশে সামরিক আইন জারি করা হলো।”

উক্ত দাবিতে টিকটকে প্রচারিত পোস্টটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি উক্ত ভিডিওটি ৭৪ হাজারেরও অধিক বার দেখা হয়েছে এবং প্রায় ৫ হাজারটি পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটিতে লাইক দেওয়া হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারকে উৎখাত করে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল করা বা সামরিক আইন জারির বিষয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান কোনো ঘোষণা দেননি। প্রকৃতপক্ষে, কোনোরকম নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিতে উক্ত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টটি পর্যবেক্ষণ করলে তাতে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ উল্লেখ করতে দেখা যায়নি। তাছাড়া, সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল করা বা সামরিক আইন জারি করার বিষয়ে সেনাপ্রধানের অনুরূপ কোনো ঘোষণা দেওয়ার বিষয়েও কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

পরবর্তীতে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রচারিত অডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধান করলে নজরুল সায়েদ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২০ সালের ১৬ আগস্টে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটিতে মূলত একটি অডিও শুনতে পাওয়া যায়। উক্ত অডিওটির কথার সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে বলা কথাগুলোর সাদৃশ্য পাওয়া যায়। 

তবে, ইউটিউবের উক্ত ভিডিওটিতে বলা হয়, “মেজর ডালিম বলছি। অদ্য সকাল হতে খন্দকার মোশতাক আহমেদের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করিয়াছে। শেখ মুজিব ও তার খুনি, দুর্নীতিবাজ সরকারকে উৎখাত করা হইয়াছে। এখন থেকে সারাদেশে সামরিক আইন জারি করা হলো। [….]” অর্থাৎ, উক্ত অডিওটি থেকে সম্পাদনার মাধ্যমে কিছু কিছু শব্দ বাদ দেওয়া হয়েছে এবং সম্পাদিত অডিওটি আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। ইউটিউব ভিডিওটিতে উক্ত অডিওটি সম্পর্কে বলা হয়, “১৫ আগস্ট ১৯৭৫ রেডিওতে মেজর ডালিমের ঘোষণা।” এছাড়াও ভিডিওটির বর্ণনা অংশে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ডের পর সেদিন সকালে রেডিওতে এই ঘোষণাটি দেওয়া হয়েছিল।

অর্থাৎ, প্রচারিত অডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং তা যে বেশ পুরোনো সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়।

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের বিষয়ে সাম্প্রতিক সময়ে মূলধারার গণমাধ্যম আরটিভির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সেনানিবাসস্থ দি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টারের শহীদ এম আর চৌধুরী প্যারেড গ্রাউন্ডে ঐতিহ্যবাহী ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ১৭তম ‘কর্নেল অব দি রেজিমেন্ট’ অভিষেক অনুষ্ঠানে দেশের স্বার্থে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে সেনা সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। এর পরবর্তী সময়ে বা সাম্প্রতিক সময়ে সামরিক আইন জারি করা বা সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের বিষয়ে তার কোনো প্রকাশ্য ঘোষণা পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, পুরোনো এবং ভিন্ন একটি অডিও সম্পাদনা করে বাংলাদেশে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করেছে এবং সামরিক আইন জারি করা হয়েছে জানিয়ে ঘোষণা দিয়েছেন সেনাপ্রধান শীর্ষক দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা এবং প্রচারিত অডিওটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

ভারতে পার্লামেন্টে শেখ হাসিনার পাসপোর্ট ইস্যুতে মোদিকে প্রশ্ন করার দাবিটি মিথ্যা 

সম্প্রতি, কোন আইনে পাসপোর্ট ছাড়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লী পৌঁছাতে পারলো?, ভারতীয় পার্লামেন্টে নরেন্দ্র মোদিকে এমন প্রশ্ন করা হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসুবকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই ভিডিওতে শেখ হাসিনা পাসপোর্ট ছাড়া দিল্লী কীভাবে পৌঁছালো সংক্রান্ত প্রশ্ন ভারতীয় পার্লামেন্টে নরেন্দ্র মোদিকে করা হয়েছে শীর্ষক দাবিটি সঠিক নয়। বরং দিল্লির আম আদমি পার্টির সাংসদ সঞ্জয় সিংহের ভিন্ন বিষয়ে দেওয়া বক্তব্যকে আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। তাছাড়া, তার এই বক্তব্যের সময় নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, নির্মলা সীতারমণ ও রাজনাথ সিং এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি 

অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, ভিডিওতে সাংসদ সঞ্জয় সিংহ সীমান্তে নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলেন। ট্রাম্প বা ওবামার সরকার নয় বরং ভারতে এক মহামানবের সরকার চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমি সেই মহামানব নরেন্দ্র মোদীকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে প্রশ্ন করতে চাই, সীমান্তে নিরাপত্তার দায়িত্ব কাদের? অমিত শাহের দফতরের।” 

এছাড়াও, তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি প্রশ্ন তোলেন, কোনো বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ত্রিপুরা, অসম, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার, ইউপির সীমান্ত পেরিয়ে কিভাবে দিল্লি চলে আসে। 

তবে, ভিডিওতে শেখ হাসিনা সংক্রান্ত কোনো কথা তাকে বলতে দেখা যায়নি।

অনুসন্ধানে ভারতের ‘Sansad TV’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর ‘RS | Sanjay Singh’s Remarks | Discussion on Journey of 75 Years of Constitution of India’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত ভিডিওটির ২২ মিনিট ৩০ সেকেন্ড অংশ থেকে ২৩ মিনিট ২৮ সেকেন্ড অংশের সাথে সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওতে জেপি নাড্ডার ‘অনুপ্রবেশকারী’ সংক্রান্ত এক বক্তব্যের জবাবে দিল্লির আম আদমি পার্টির সাংসদ সঞ্জয় সিং সীমান্তে নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি প্রশ্ন তোলেন, কোনও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ত্রিপুরা, অসম, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার, ইউপির সীমান্ত পেরিয়ে কিভাবে দিল্লি চলে আসে। 

তবে, তার বক্তব্যে শেখ হাসিনা প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য আসেনি। তাছাড়া, আলোচিত ভিডিওতে থাকা রাজ্যসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বা প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং কাউকেই দেখতে পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ, তাদেরকে আলোচিত ভিডিওটিতে সম্পাদনার মাধ্যমে যুক্ত করা হয়েছে।

তবে, ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ জানুয়ারী অনুপ্রবেশকারীদের ইস্যুতে শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ তুলে কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন আম আদমি পার্টির রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিং।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশি গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত ০৮ জানুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। তবে, সাংসদ সঞ্জয় সিংহের যে ভিডিও দিয়ে আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে, সেই ভিডিওতে তিনি যখন সংসদে বক্তব্য রাখেন তখন শেখ হাসিনার পাসপোর্ট বাতিল করা হয়নি। 

সুতরাং, ভারতীয় পার্লামেন্টে শেখ হাসিনার পাসপোর্ট ইস্যুতে নরেন্দ্র মোদিকে প্রশ্নের সম্মুখীন করা হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর ।

তথ্যসূত্র