Home Blog Page 101

নারী পুরুষের মারামারির ঘটনাটি বাংলাদেশের নয়, ভারতের

সম্প্রতি, ‘ব্রেকিং নিউজ দেশের বর্তমান অবস্থা শেষ, ভালো নেই দেশ।’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, নারী পুরুষের মারামারির এই ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় বরং, এটি ভারতের ভিডিও।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির কিছু কী ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে এক্সে (সাবেক টুইটারে) ‘भारत समाचार | Bharat Samachar‘ নামক অ্যাকাউন্ট এ গত ১ এপ্রিল একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে সংযুক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। 

Comparison: Rumor Scanner

পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়, ‘মহারাজগঞ্জ- দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ভিডিও ভাইরাল, লাঠি, ইট ও পাথর নিয়ে পুরুষ ও মহিলার মধ্যে লড়াই। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এক যুবককে লাঠি দিয়ে পেটানো হচ্ছে, যুবকটি দৌড়ে নিজের জীবন বাঁচালো। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে, ভিডিওটি পানিয়ারা থানা এলাকার বলে জানা গেছে।’ (অনূদিত)  

উক্ত পোস্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে  প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘डाइनामाइट न्यूज़’ এর ওয়েবসাইটে গত ৩১ মার্চ  ‘মহারাজগঞ্জ সংবাদ: জমি বিরোধের জেরে লাঠি-লাঠি ব্যবহার, মারামারির ভিডিও ভাইরাল’ (অনূদিত) শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পানিয়ারার শৌরাহা গ্রামের তোলা কাটারিয়ায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে, সুভাষ যাদবের বড় ভাই রাম সুভাগ যাদব, তার ছোট ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে, তার ভাগ্নে এবং ভাগ্নীকে ইট ও লাঠি দিয়ে মারধর করেন, যার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় পুলিশ রামসুহাগ যাদব, জনার্দন যাদব এবং জ্যোতি যাদবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। 

সুতরাং, ভারতের ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে বাংলাদেশে নারী পুরুষের মারামারির দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মুসলিম শিক্ষার্থীকে হিন্দু নারী ধর্ষণের পর হত্যা দাবিতে প্রচার 

0

সম্প্রতি, Bangladesh is increasingly unsafe for minorities as jihadist and Jamat-shibir terrorism persists. Everyday they attacking minor people,raping the minor girl and killing them. অর্থাৎ, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের জন্য পরিস্থিতি ক্রমাগত বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। কারণ জিহাদী এবং জামাত-শিবির সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিন তারা সংখ্যালঘু মানুষের উপর আক্রমণ করছে। ছোট মেয়েদের ধর্ষণ করেছে এবং তাদের হত্যা করছে। শীর্ষক দাবিতে এক নারীর ছবি যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

উক্ত দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)। 

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, এক নারীর ছবি যুক্ত করে জামায়াতে-শিবির কর্তৃক ওই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার দাবিটি সঠিক নয় এবং ছবিতে থাকা নারী সংখ্যালঘুও নন বরং প্রচারিত ছবিতে থাকা নারী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন এবং তিনি মুসলিম ধর্মাবলম্বী।

অনুসন্ধানে সাতকানিয়ার মজলুম নামক একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত ০৪ এপ্রিল প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টে থাকা ছবির সাথে আলোচিত পোস্টটিতে থাকা নারীর মিল রয়েছে। 

Image Comparison By Rumor Scanner 

উক্ত পোস্ট থেকে জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বড়তাকিয়া বাইপাস এলাকায় বাসের ধাক্কায় অটোরিকশাতে থাকা এক নারী নিহত হয়েছেন। নিহত তরুণীর পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। তাকে বড়তাকিয়া রেডিয়েন্স হাসপাতালে রাখা হয়েছে।

পরবর্তীতে জাতীয় দৈনিক সমকালের ওয়েবসাইটে ০৫ এপ্রিল “মীরসরাইয়ে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল এসএসসি পরীক্ষার্থীর” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে যুক্ত ছবির সাথেও আলোচিত পোস্টে থাকা নারীর মিল রয়েছে। 

Screenshot: Samakal Website 

উক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের বড়তাকিয়া বাইপাসে দ্রুতগামী বাসের ধাক্কায় সাদিয়া ইয়াসমিন জুথি নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। গত ০৪ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টার দিকে মীরসরাই উপজেলার বড়তাকিয়া ইউটার্ন এলাকার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত সাদিয়া ইয়াসমিন জুথি উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নের পূর্ব পোলমোগড়া স্টেশন এলাকার রিপনের মেয়ে। তিনি স্থানীয় আবুল কাসেম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।

অর্থাৎ, নিহত নারী জামায়াত-শিবির কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হননি এবং তাকে হত্যাও করা হয়নি। বরং তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। এছাড়া, উক্ত নারী সংখ্যালঘু নন বরং তিনি মুসলিম ধর্মাবলম্বী। 

সুতরাং, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মুসলিম নারীর ছবি ব্যবহার করে জামায়াত-শিবির কর্তৃক সংখ্যালঘু নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র 

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারীর ধর্ষণ ও হত্যা দাবিতে মুসলমান নারীর হত্যাকান্ডের ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি ‘বাংলাদেশী জিহাদিরা প্রতিদিন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারীর ধর্ষণ ও হত্যা করছে’ শীর্ষক দাবি ‘Bangladeshi jihadist rapêing and killing minor girls everyday’ ক্যাপশনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে এক্স-এ প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত দাবির ভিডিওটি জিহাদি কর্তৃক কোনো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারীর ধর্ষণ ও হত্যার নয় বরং, দুর্বৃত্ত কর্তৃক একজন মুসলমান নারীর হত্যাকান্ডের ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Sujon Bepari নামক ফেসবুক প্রোফাইলে গত ২৬ মার্চ প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য রয়েছে। 

উক্ত ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ থানার অন্তর্ভুক্ত ছয়গাঁও ইউনিয়নের বারৈ জঙ্গল গ্রামে মুক্তা বেগম (৪৫) নামে এক গৃহিণীকে গলা কেটে হত্যা করেছে ডাকাত দল। 

অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ২৬ মার্চ ‘নামাজ শেষে বাড়ি ফিরে খাটের ওপর পেলেন স্ত্রীর রক্তাক্ত মরদেহ’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ২৫ মার্চ রাতে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার ছয়গাঁও ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়ৈজঙ্গল গ্রামে মুক্তা বেগম (৫৫) নামক এক নারীর হত্যাকান্ড ঘটেছে। ২৬ মার্চ সকালে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। মুক্তা বেগম তার স্বামী মান্নান গাজীর সাথে বাড়ৈজঙ্গল গ্রামে বসবাস করতেন, ঘটনার সময় মান্নান গাজী তারাবিহর নামাজ আদায় করতে গ্রামের মসজিদে গিয়েছিলেন। ওই ঘটনার পর গভীর রাত পর্যন্ত ওই এলাকা ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় মসজিদের মাইক থেকে মাইকিং করে ডাকাত দল এক নারীকে হত্যা করেছে—এমন প্রচারণা চালানো হয়েছে। কিন্তু পুলিশ বলছে, ঘটনাটি ডাকাতির নয়। দুর্বৃত্তরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে পালিয়েছে। ভেদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এলাকায় ডাকাতি হচ্ছে, একজনকে হত্যা করেছে—এমন খবর পেয়ে আমরা ওই এলাকায় যাই। ওই নারীকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। তবে এটি ডাকাতির ঘটনা নয়। ওই নারীকে কেউ হত্যা করেছেন, কিন্তু ঘরের কোনো মালামাল খোয়া যায়নি। কারা এমন করতে পারে, তার ধারণা পরিবার থেকেও পাচ্ছি না। ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।’

অর্থাৎ, হত্যাকান্ডের শিকার ব্যক্তি একজন মুসলমান নারী ছিলেন এবং হত্যার বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন আছে, কারণ জানা যায়নি। 

সুতরাং, একজন মুসলমান নারীর হত্যাকান্ডের তদন্তাধীন ঘটনাকে জিহাদি কর্তৃক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারীর ধর্ষণ ও হত্যা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

জুলাই আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী ১০০ এর কম শীর্ষক মন্তব্য করেননি বদিউল আলম মজুমদার, যমুনা টিভির নামে সম্পাদিত ফটোকার্ড 

0

সম্প্রতি, “শুল্ক না কমালে আমেরিকা কে পারমাণবিক বোমা মেরে উড়িয়ে দিবো” শীর্ষক মন্তব্য সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)–এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের দাবিতে মূল ধারার গণমাধ্যম যমুনা টিভির ডিজাইন সম্বলিত একটি ফটোকার্ডে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, “জুলাই আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ১০০ এর কম হবে।” শীর্ষক কোনো মন্তব্য বদিউল আলম মজুমদার করেননি এবং যমুনা টিভিও এ সংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রচার করেনি বরং, ভিন্ন প্রেক্ষিতে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে প্রচারিত একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। 

অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উক্ত ফটোকার্ডটিতে যমুনা টিভির লোগো রয়েছে। এই সূত্রে অনুসন্ধান করে গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজ, ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলে এ সংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে গত ২০ মার্চ “জুলাই আন্দোলনে নিহত পুলিশ সদস্যের সংখ্যা ১০০ এর কম হবে। বদিউল আলম মজুমদার” শীর্ষক শিরোনামের একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ফটোকার্ডের সাথে আলোচিত ফটোকার্ডটির শিরোনাম ব্যতিত বাকি সব উপাদানের মিল রয়েছে।

Photocard Comparison: Rumor Scanner 

ফটোকার্ডটিতে থাকা শিরোনামটি ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।  

যমুনা টিভির মূল ফটোকার্ড সম্বলিত পোস্টের কমেন্টে এ সংক্রান্ত সংবাদের কোনো লিংক দেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর ফেসবুক পেজে গত ২০ মার্চের একটি লাইভ ভিডিওর খোঁজ পায় রিউমর স্ক্যানার। রাষ্ট্র সংস্কারে রাজনৈতিক ঐকমত্য ও নাগরিক ভাবনা শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের এই সরাসরি আয়োজনে জনাব বদিউল আলম মজুমদারকে পুলিশ সম্পর্কে উক্ত মন্তব্যটি করতে দেখা যায়। 

তবে, এই আয়োজনে এবং প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে অন্য কোনো গণমাধ্যমেও আলোচিত দাবির পক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, “জুলাই আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ১০০ এর কম হবে। বদিউল আলম মজুমদার” শীর্ষক শিরোনামে চ্যানেল২৪ এর নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত। 

তথ্যসূত্র 

চাঁদপুরে পান খাওয়ায় হিন্দু নারীকে মারধরের পুরোনো ঘটনাকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার  

0

গত ১৯ মার্চ চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের ৭নং বড়কুল ইউনিয়নের নাটেহরা গ্রামে প্রতিভা রানী নামক এক হিন্দু নারীকে রমজান মাসে পান খাওয়ায় মারধর করেন একই গ্রামের মোহাম্মদ কলিমুদ্দিন গাজীর ছেলে নুরুল আমিন।- শীর্ষক একটি দাবি সম্বলিত পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, চাঁদপুরে প্রতিভা রানী নামক হিন্দু নারীকে পান খাওয়ায় একই গ্রামের মোহাম্মদ কলিমুদ্দিন গাজীর ছেলে নুরুল আমিন কর্তৃক মারধরের ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং, ২০২৪ সালের ঘটনাকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জামান ফিরোজ নামক একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ২০২৪ সালের ২১ মার্চ প্রচারিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

উক্ত পোস্টে বলা হয়, গত বছরের ১৯ মার্চ রমজানে নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় বাগানে প্রকাশ্যে পান খাওয়ায় বেধড়ক মার খান প্রতিভা রানী নামক হিন্দু ধর্মাবলম্বী এক নারী। ১৯ মার্চ দুপুরে চাঁদপুর হাজীগঞ্জের বড়কুল ইউনিয়নের নাটেহরা গ্রামে বাঁশের লাঠি দিয়ে প্রতিভা রানীকে এমন বর্বরোচিতভাবে পিটিয়েছে নুরুল আমিন।

স্থানীয়রা জানান, নুরুল আমিন নাটেহরা গ্রামের মোহাম্মদ কলিমুদ্দিন গাজীর ছেলে। রমজান মাসে কেন হিন্দুনারী প্রতিমা রানী পান খাচ্ছে- এই প্রশ্ন তুলে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেদম মারধর শুরু করে এবং সবশেষ হত্যার উদ্দেশ্যে বর্বরভাবে গলায় পাড়া দিয়ে ধরে রাখে।

স্থানীয়রা আরও জানান, নিজ বাগানে পাতা কুড়াতে কুড়াতে পান খাচ্ছিলেন প্রতিভা রানী। আর ওদিক দিয়ে যাওয়ার সময় তা দেখে তেলে-জলের ন্যায় জ্বলে উঠে নুরুল আমিন। অশ্রাব্য ভাষায় হিন্দুধর্মকে গালাগাল দিয়ে প্রতিভা রানীকে বেদম প্রহার শুরু করে। পরে প্রতিভা রানীর ডাক চিৎকারে আশে পাশের লোকজন এসে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি চাঁদপুর সদর হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন আছে।

পরবর্তীতে জাতীয় দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের ওয়েবসাইটে গত বছরের ২২ মার্চ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে পান খাওয়াকে কেন্দ্র করে এক নারীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। আহত প্রতিভা রানী (৬৪) উপজেলার পশ্চিম বড়কুল ইউনিয়নের নাটেহারা গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ঘটনায় ২০ মার্চ আহতের ছেলে বিষু চন্দ্র দাস হাজীগঞ্জ থানায় মামলা করেন।

হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদ মামলার তথ্য দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।

মামলার তথ্য অনুযায়ী, গত ১৯ মার্চ দুপুরে নাটেহারা গ্রামের গাজী বাড়িতে মারধরের ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত নুরুল আমিন একই গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনার দিন ওই বাড়ির কাছে পাতা কুড়াতে যান প্রতিভা রানী। তখন নুরুল আমিনের স্ত্রী তাকে ঘরের কিছু কাজ করে দেওয়ার জন্য বলেন। প্রতিভা রানী কাজ করতে রাজি হন এবং তাকে পান দিতে বলেন।

পরে প্রতিভা রানীকে পান খেতে দেখে নুরুল আমিন তাকে গালমন্দ করেন এবং বাঁশের লাঠি দিয়ে মারধর করেন। এ সময় প্রতিভা রানীর গলা চেপে ধরে হত্যার চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

তার চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এসে উদ্ধার করে তাকে প্রথমে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।

অর্থাৎ, রমজান মাসে পান খাওয়ায় হিন্দু নারীকে মারধরের ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। 

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে চাঁদপুরে সাম্প্রতিক সময়ে এমন ঘটনা ঘটার কোনো তথ্য গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া যায়নি। 

সুতরাং, ২০২৪ সালে চাঁদপুরে রমজান মাসে পান খাওয়ায় হিন্দু নারীকে মারধরের ঘটনাকে সাম্প্রতিক সময়ের দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর। 

তথ্যসূত্র 

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক নারী নির্যাতনের দৃশ্য দাবিতে কম্বোডিয়ার ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়কালে নারী নির্যাতনের ভয়াবহ দৃশ্য দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

এক্সে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ।   

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে নারী নির্যাতনের ভিডিও নয়। প্রকৃতপক্ষে, কম্বোডিয়ার রতনকিরি প্রদেশের নারী নির্যাতনের ভিডিওকে বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

ভিডিওটির বিষয়ে অনুসন্ধারে សោម វីរ៉ា ធីវីញូស៍ som vira TVnews নামের একটি ফেসবুক পেজে গত ৩১ মার্চ প্রচারিত একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। 

Video Comparison by Rumor Scanner 

ভিডিওটির শিরোনাম থেকে জানা যায়, এটি রতনকিরি প্রদেশের বোরকেও জেলার কিচং কমিউনের পাওর তোচ নামক গ্রামের ভিডিও। ভিডিওতে দেখতে পাওয়া নারী নির্যাতনকারী ওই নারীর স্বামী হন বলেও পোস্টটির শিরোনামে উল্লেখ করা হয়। কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে জানা যায়, রতনকিরি হল কম্বোডিয়ার উত্তর-পূর্ব এলাকার একটি প্রদেশ।

পরবর্তীতে យោ ចាន់ ធូ নামের একজন গণমাধ্যম কর্মীর ফেসবুক পেজে গত ০১ এপ্রিল করা একটি পোস্টের সন্ধান পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

পোস্ট থেকে জানা যায়, স্ত্রীকে নির্যাতনকারী ওই ব্যক্তির নাম টিং চুন। উক্ত ঘটনায় পুলিশ তাকে আটক করেছে। এছাড়াও জানা যায়, নির্যাতনের শিকার ওই নারীকে চিকিৎসার জন্যে কিচং কমিউন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। পাশাপাশি, পোস্টটিতে আলোচিত ভিডিওটির পাশাপাশি নির্যাতনকারীকে আটকের ছবিও যুক্ত পাওয়া যায়।

 কম্বোডিয়ান গণমাধ্যম Khmer Times এর ওয়েবসাইটে গত ২ এপ্রিল একই ঘটনায় Man, who brutally attacked his wife and child, arrested শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন  থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়াও জানা যায়, স্ত্রীকে মারধরের সময় ওই ব্যক্তি মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন।

সুতরাং, কম্বোডিয়ার নারী নির্যাতনের ভিডিওকে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে নারী নির্যাতনের ভিডিও দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

সারজিস আলম ও নাফসিন মেহনাজের নামে ভুয়া ছবি ছড়িয়ে অপপ্রচার

0

সম্প্রতি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাফসিন মেহনাজের ‘ব্যক্তিগত মুহূর্তের’ দৃশ্য দাবিতে  একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

একই দাবিতে এক্সে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, সারজিস আলমের সাথে নাফসিন মেহনাজের প্রচারিত ছবিটি আসল নয়। মূলত, প্রযুক্তির মাধ্যমে একটি ভিন্ন যুগলের ছবি বিকৃত করে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মূল ছবিটি গত ২৯ জানুয়ারি একটি ভারতীয় পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইটে খুঁজে পাওয়া যায়। (সঙ্গত কারণে লিংক সংযুক্ত করা হয়নি)।

Comparison: Rumor Scanner. 

এছাড়া, গত ২৯ মার্চ ‘lL!nk dede’ নামের একটি ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত একটি পোস্টেও একই ছবি পাওয়া যায়।

ছবি দুটিকে তুলনামূলকভাবে বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ভাইরাল ছবিতে থাকা ব্যক্তিদের পোশাক, পরিবেশ ও শারীরিক গঠন মূল ছবির সঙ্গে পুরোপুরি মিললেও, মুখমণ্ডল সম্পূর্ণ ভিন্ন। অর্থাৎ, মূল ছবিটি সম্পাদনার মাধ্যমে মুখমণ্ডল পরিবর্তন করে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং, একটি ভিন্ন যুগলের ছবি বিকৃত করে তাতে সারজিস আলম ও নাফসিন মেহনাজের মুখমণ্ডল বসিয়ে ছবিগুলো তাদের ‘ব্যক্তিগত মুহূর্তের’ হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, যা বিকৃত।

তথ্যসূত্র

  • Rumor Scanner’s investigation.

ঢাবির কার্জন হল এলাকায় মুসুল্লিদের সাম্প্রতিক নামাজ আদায়ের ছবি দাবিতে পুরোনো ছবি প্রচার

0

জুলাই অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে দেশব্যাপী তৌহিদী জনতার ব্যানারে মাজার ভাঙচুর, হোটেলে গরুর মাংস না রাখা নিয়ে প্রতিবাদ থেকে শুরু করে রমজান মাসে হোটেলে খেতে যাওয়া মুসুল্লিদের অপদস্ত করার মত বিভিন্ন ঘটনা ঘটানো হয়। এছাড়াও ইসলামি ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় দলটির সদস্যদের যত্রতত্র অবস্থান নিয়েও ইন্টারনেটে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এসকল ঘটনার প্রেক্ষিতে গত রমজান মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল এলাকায় একদল কট্টরপন্থী মুসুল্লি খোলা মাঠে নামাজ আদায় করেছেন দাবিতে দুটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

এক্সে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)। 

ফেসবুকে প্রচারিত এমন পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল এলাকায় মুসুল্লিদের নামাজ আদায়ের ছবিটি এ বছরের রমজান মাসের নয় বরং, ২০২৪ সালের রমজান মাসে একটি ইসলামিক রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের ইফতার মাহফিল পরবর্তী নামাজ আদায়ের দৃশ্যকে এ বছরের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

দাবিটির বিষয়ে অনুসন্ধানে Determined Nasrullah নামের ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে ২০২৪ সালের ২৯ মার্চ চিরায়ত রূপে ঢাবি শীর্ষক শিরোনামে একই ছবিগুলো প্রচারিত হতে দেখা যায়। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, আলোচিত ছবিগুলো এ বছরের নয়।

Image Comparison by Rumor Scanner 

পরবর্তীতে অনলাইন গণমাধ্যম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের ৩০ মার্চ শুনলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্যু হয়েছে: তসলিমা নাসরিন শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ফিচার ইমেজের ছবির সাথে আলোচিত নামাজ আদায় করার ছবির মিল পাওয়া যায়।

Image Comparison by Rumor Scanner 

এছাড়াও প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ছবিটি সে বছরের ২৮ মার্চ কার্জন হল এলাকায় ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের আয়োজিত ইফতার মাহফিল পরবর্তী মাগরিবের নামাজ আদায়ের দৃশ্যের।

পরবর্তীতে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের ফেসবুক পেজে ২০২৪ সালের ৩০ মার্চ প্রচারিত মূল ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্ট থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়।

Screenshot: Facebook 

সুতরাং, ২০২৪ সালে অভ্যুত্থানের পূর্বে ঢাবির কার্জন হল এলাকায় একটি রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের ইফতার মাহফিল পরবর্তী নামাজের দৃশ্যকে সাম্প্রতিক সময়ের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।

তথ্যসূত্র

শেখ হাসিনাকে ছাড়া বিএনপির নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়ে মির্জা ফখরুলের মন্তব্য দাবিতে যমুনা টিভির নামে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

0

সম্প্রতি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ‘শেখ হাসিনাকে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বিএনপি’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম যমুনা টেলিভিশনের লোগো সম্বলিত একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন ফটোকার্ড দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ‘শেখ হাসিনাকে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বিএনপি’ এমন কোনো মন্তব্য করেননি। এছাড়াও যমুনা টেলিভিশনও আলোচিত ফটোকার্ডটি প্রচার করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যমুনা টেলিভিশনের ভিন্ন আরেকটি ফটোকার্ডের শিরোনাম সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে যমুনা টিভি’র নাম ও লোগো রয়েছে। তবে এটি প্রকাশের কোনো তারিখ উল্লেখ নেই।

পরবর্তীতে যমুনা টিভি‘র ফেসবুক পেজে প্রচারিত ফটোকার্ডগুলো পর্যালোচনা করে উক্ত শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও যমুনা টিভি’র ওয়েবসাইটইউটিউব চ্যানেল বা অন্য কোনো গণমাধ্যমেও উক্ত দাবির বিষয়ে কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

তবে যমুনা টিভির ফেসবুক পেজ পর্যালোচনা করে ২০২৪ সালের ২৩ নভেম্বর ‘দেশে ফ্যাসিবাদের জনক শেখ মুজিবুর রহমান’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়।

Photocard Comparison by Rumor Scanner 

ফটোকার্ডটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ‍উক্ত ফটোকার্ডের ডিজাইন এবং ছবির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডের মিল রয়েছে। এছাড়াও উভয় ফটোকার্ডে সেটি প্রকাশের তারিখ উল্লেখ নেই এবং দুটোতেই নিচে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নাম লেখা রয়েছে। পাশাপাশি আলোচিত ফটোকার্ডের শিরোনামে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে যমুনা টেলিভিশনের ফটোকার্ডের ফন্টের পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। 

সুতরাং, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ‘শেখ হাসিনাকে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বিএনপি’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে যমুনা টেলিভিশনের লোগো সম্বলিত ফটোকার্ডটি সম্পাদিত।

তথ্যসূত্র

  • Jamuna Television Facebook Page Post

বিএনপি নেতার নামাজ আদায়ের দৃশ্য দাবিতে ভারতীয় নেতার ভিডিও প্রচার

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে নামাজের মধ্য থেকে এক ব্যক্তি ক্যামেরাম্যানের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা ইঙ্গিত/নির্দেশনা দিচ্ছেন। উক্ত ভিডিওটি প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নামাজে দাঁড়িয়ে চোখের ইশারায় আরেকজনকে বলতেছে ভিডিও কর। সামনে নির্বাচন জনগণ দেখুক আমি নামাজ পড়তেছি.”। এছাড়াও, কোনো নির্দিষ্ট পদের উল্লেখ ছাড়াও কেবলমাত্র বিএনপি নেতার ভিডিও দাবিতেও আলোচিত ভিডিওটি প্রচার করা হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ), এখানে (আর্কাইভ)।

এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়া অবধি এরূপ দাবিতে ফেসবুকে সবচেয়ে ভাইরাল পোস্টটি ১৪ লক্ষেরও অধিক বার দেখা হয়েছে এবং ১৪ হাজারেরও অধিক পৃথক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটিতে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

এরূপ দাবিতে ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

এরূপ দাবিতে থ্রেডসে প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি বিএনপির কোনো নেতার নামাজ আদায়ের দৃশ্যের নয় বরং, ভারতের আসামের ধুবরি থেকে লোকসভার সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ভারতীয় রাজনীতিবিদ রকিবুল হুছেইনের নামাজ আদায়ের দৃশ্য আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে ভারতের আসাম ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘প্রতিবিম্ব লাইভ’ এর ফেসবুক পেজে গত ২৫ মার্চে প্রচারিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়।

Comparison : Rumor Scanner

উক্ত ভিডিওটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির তুলনা করলে সাদৃশ্য পাওয়া যায়। ভিডিওটি সম্পর্কে ক্যাপশনে বলা হয়, “ক্যামেরার সামনে ধৰ্ম। ধুবরি এর এমপি রকিবুল হুসেইন এর নামাজের বিশেষ দৃশ্য ভাইরাল” (অনূদিত)

এছাড়াও, উক্ত ভিডিওটি আসাম ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এএন নিউজটাইম টিভি আসামের ফেসবুক পেজেও ভারতীয় সাংসদ রকিবুল হুছেইনের নামাজ পড়ার দৃশ্য দাবিতে প্রচারিত হতে দেখা যায়।

Comparison : Rumor Scanner

পাশাপাশি, প্রচারিত ভিডিওটির সাথে ভারতের আসামের ধুবরির লোকসভার সাংসদ রকিবুল হুছেইনের মুখমণ্ডলের তুলনা করলেও সাদৃশ্য পাওয়া যায়, যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, প্রচারিত ভিডিওটি ভারতীয় রাজনীতিবিদ রকিবুল হুছেইনের নামাজ আদায়ের দৃশ্য।

সুতরাং, ভারতীয় রাজনীতিবিদ রকিবুল হুছেইনের নামাজ আদায়ের দৃশ্যকে বিএনপি নেতার নামাজ আদায়ের দৃশ্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

হালনাগাদ/ Update

৮ এপ্রিল, ২০২৫ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়ে একইরকম দাবি সম্বলিত থ্রেড পোস্ট আমাদের নজরে আসার প্রেক্ষিতে উক্ত পোস্ট প্রতিবেদনে দাবি হিসেবে যুক্ত করা হলো।