শুক্রবার, মে 23, 2025

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারীর ধর্ষণ ও হত্যা দাবিতে মুসলমান নারীর হত্যাকান্ডের ভিডিও প্রচার 

সম্প্রতি ‘বাংলাদেশী জিহাদিরা প্রতিদিন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারীর ধর্ষণ ও হত্যা করছে’ শীর্ষক দাবি ‘Bangladeshi jihadist rapêing and killing minor girls everyday’ ক্যাপশনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। 

উক্ত দাবিতে এক্স-এ প্রচারিত পোস্ট দেখুন এখানে (আর্কাইভ)৷

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত দাবির ভিডিওটি জিহাদি কর্তৃক কোনো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারীর ধর্ষণ ও হত্যার নয় বরং, দুর্বৃত্ত কর্তৃক একজন মুসলমান নারীর হত্যাকান্ডের ভিডিওকে উক্ত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে Sujon Bepari নামক ফেসবুক প্রোফাইলে গত ২৬ মার্চ প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সাদৃশ্য রয়েছে। 

উক্ত ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ থানার অন্তর্ভুক্ত ছয়গাঁও ইউনিয়নের বারৈ জঙ্গল গ্রামে মুক্তা বেগম (৪৫) নামে এক গৃহিণীকে গলা কেটে হত্যা করেছে ডাকাত দল। 

অনুসন্ধানে মূলধারার গণমাধ্যম প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ২৬ মার্চ ‘নামাজ শেষে বাড়ি ফিরে খাটের ওপর পেলেন স্ত্রীর রক্তাক্ত মরদেহ’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ২৫ মার্চ রাতে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার ছয়গাঁও ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়ৈজঙ্গল গ্রামে মুক্তা বেগম (৫৫) নামক এক নারীর হত্যাকান্ড ঘটেছে। ২৬ মার্চ সকালে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। মুক্তা বেগম তার স্বামী মান্নান গাজীর সাথে বাড়ৈজঙ্গল গ্রামে বসবাস করতেন, ঘটনার সময় মান্নান গাজী তারাবিহর নামাজ আদায় করতে গ্রামের মসজিদে গিয়েছিলেন। ওই ঘটনার পর গভীর রাত পর্যন্ত ওই এলাকা ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় মসজিদের মাইক থেকে মাইকিং করে ডাকাত দল এক নারীকে হত্যা করেছে—এমন প্রচারণা চালানো হয়েছে। কিন্তু পুলিশ বলছে, ঘটনাটি ডাকাতির নয়। দুর্বৃত্তরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে পালিয়েছে। ভেদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এলাকায় ডাকাতি হচ্ছে, একজনকে হত্যা করেছে—এমন খবর পেয়ে আমরা ওই এলাকায় যাই। ওই নারীকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। তবে এটি ডাকাতির ঘটনা নয়। ওই নারীকে কেউ হত্যা করেছেন, কিন্তু ঘরের কোনো মালামাল খোয়া যায়নি। কারা এমন করতে পারে, তার ধারণা পরিবার থেকেও পাচ্ছি না। ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।’

অর্থাৎ, হত্যাকান্ডের শিকার ব্যক্তি একজন মুসলমান নারী ছিলেন এবং হত্যার বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন আছে, কারণ জানা যায়নি। 

সুতরাং, একজন মুসলমান নারীর হত্যাকান্ডের তদন্তাধীন ঘটনাকে জিহাদি কর্তৃক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারীর ধর্ষণ ও হত্যা দাবিতে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img