রাসেলস ভাইপার নিয়ে হাস্যরসে ব্যবহার হচ্ছে গণমাধ্যমের নকল ফটোকার্ড

বাংলাদেশে রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপের আতঙ্ক নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই সাপের ভয়ে সব ধরনের সাপকেই পিটিয়ে মারা হচ্ছে। একসময় বিলুপ্ত বলে ধারণা করা এই সাপ আবার ফিরে আসায় এবং এর কামড়ে মানুষ মৃত্যুর ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। এই পরিস্থিতির সুযোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে  নানা গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। বিশেষ করে, গণমাধ্যমের ফটোকার্ড নকল করে বেশিরভাগ গুজব ছড়াতে দেখা যাচ্ছে। এছাড়া গণমাধ্যমের ফটোকার্ড নকল করে সাপের কামড়ে মৃত্যু নিয়ে হাস্যরসাত্মক উদ্দেশ্যে ফেসবুকে প্রচারিত বিভিন্ন পোস্ট ব্যাপক ভাইরাল হচ্ছে।

রিউমর স্ক্যানার টিম ইতোমধ্যে রাসেলস ভাইপার সম্পর্কিত ১১টি গুজব শনাক্ত করেছে। এসব গুজবের মধ্যে পুরোনো ছবি সাম্প্রতিক বলে দাবি করা এবং অন্যান্য সাপকে রাসেলস ভাইপার বলে প্রচার করা অন্যতম। বিশেষ করে গণমাধ্যমের ফটোকার্ড নকল বা বিকৃত করে গুজব ছড়ানোর প্রবণতা বেড়েছে। ছড়ানো ১১টি গুজবের মধ্যে ৩টিই গণমাধ্যমের ফটোকার্ড সংক্রান্ত।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গণমাধ্যমের ফটোকার্ড নকল করে গুজব ছড়ানোর প্রবণতা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত মাসে রিউমর স্ক্যানার টিম গণমাধ্যমের নকল ও ভুয়া ফটোকার্ড ব্যবহার করে ১৩টি গুজব শনাক্ত করেছে। হাস্যরস ও সার্কাজমের উদ্দেশ্যেও এখন নকল ফটোকার্ড বানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এসবে নেটিজেনদের একটি বড় অংশ প্রতিক্রিয়াও জানাচ্ছেন।

উদাহরণস্বরূপ, ২১ জুন ‘হাসির রাজা’ নামের একটি ফেসবুক পেজ যমুনা টিভির লোগো ব্যবহার করে মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য সাকিব আল হাসান রাসেলস ভাইপারের কামড়ে মারা গেছেন বলে একটি ফটোকার্ড প্রকাশ করে। যদিও এটি নিছক সার্কাজম ছিল, তবুও ৫৮ হাজার প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়, যার মধ্যে ৪৮ হাজারই হাসির প্রতিক্রিয়া।

২৩ জুন একই পেজ থেকে যমুনা টিভির ফটোকার্ড নকল করে ক্রিকেটার লিটন দাস রাসেলস ভাইপারের কামড়ে মারা গেছেন বলে পোস্ট করা হয়, কিন্তু এবার আর তেমন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এছাড়া, অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী নিজ নিজ অ্যাকাউন্ট থেকে রাসেলস ভাইপারের কামড়ে মৃত্যুর ফটোকার্ড তৈরি করে হাস্যরসাত্মক পোস্ট করেছেন। 

উদাহরণস্বরূপ, ‘Rifat Mirza’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে “ময়মনসিংহে রিফাত নামক যুবকের পাছায় কামড় দিয়ে রাসেল ভাইপারের মৃত্যু” শীর্ষক যমুনা টিভির নকল ফটোকার্ড পোস্ট করে। অনুরূপভাবে, ‘আজিজুল ইসলাম’ নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী “ময়মনসিংহে যুবককে ছোবল দিয়ে রাসেল ভাইপারের মৃত্যু” শীর্ষক যমুনা টিভির নকল ফটোকার্ড পোস্ট করে। এই নকল ফটোকার্ড ব্যবহার করে রাসেল ভাইপারের কামড়ে মৃত্যু নিয়ে হাস্যরস একটি ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে।

শুধু যমুনা টিভি নয়, অন্যান্য গণমাধ্যমের ফটোকার্ডও ব্যবহার করা হচ্ছে। গত ২৩ জুন ‘Md Faurdous Islam’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে “রাসেল ভাইপার সাপ দেখে উত্তেজিত হয়ে ছবি তুলতে গিয়ে বি’চিতে কামড় খেলো সৈকত নামের যুবক” শীর্ষক সময় টিভির নকল ফটোকার্ড প্রচার করা হয়। একই দিন আরটিভির ফটোকার্ড নকল করে ‘DHAKA CITY COLLEGE’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপ “বৈজ্ঞানিক সূত্রে জানা যাচ্ছে রাসেলস ভাইপারের প্রধান লক্ষ্য ঢাকার ধানমন্ডির সিটি কলেজ দখল করা” শীর্ষক একটি ফটোকার্ড পোস্ট করে।

হাস্যরসাত্মক উদ্দেশ্যে যেসব গণমাধ্যমের ফটোকার্ড নকল করা হয়েছে 
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে এমন ২১টি নকল ফটোকার্ড পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ১৫টি (,,,,,,,,,১০,১১,১২,১৩,১৪,১৫) যমুনা টিভির, ৪টি সময় টিভির (,,,) এবং ২টি (১,)টি আরটিভির ফটোকার্ড।

আরও পড়ুন

spot_img