ভিডিওটি হিজাব পরার কারণে ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়ে দমন-পীড়নের কোনো ঘটনার নয় 

সম্প্রতি, হিজাব পড়াকে কেন্দ্র করে ভারতের বিশ্ব বিদ্যালয়ে চলছে দমন – পীড়ন। শীর্ষক শিরোনামে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

উক্ত দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিও দেখুন এখানে (আর্কাইভ) এবং এখানে (আর্কাইভ)। 

উক্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া অব্দি আলোচিত দাবিতে সবচেয়ে ভাইরাল ভিডিওটি ৪৩ লক্ষেরও বেশিবার দেখা হয়েছে এবং তিন হাজার ভিন্ন ভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে। এছাড়া ভিডিওটি ৫২ হাজার বার শেয়ার করা হয়েছে।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রচারিত ভিডিওটি হিজাব পরার কারণে ভারতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার নয় বরং এটি ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পুলিশ প্রতিহত করার ভিডিও।

ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে Hashim Azmi নামক এক্স অ্যাকাউন্টে গত ১২ মার্চ প্রকাশিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

উক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর অডিও ব্যতিত বাকি অংশের সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

Video Comparison: Rumor Scanner

ভিডিওটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি ভারতের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা।

একই পোস্টে এক প্রতিত্তরে ভিডিওটির প্রকাশক জানান, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করায় বিরোধীরা তাদের প্রতিহত করে।

এই বিষয়ে অধিকতর অনুসন্ধানে ভারতীয় গণমাধ্যম Latestly এর ওয়েবসাইটে গত ১২ মার্চ “Students Detained From Delhi University While Staging Protest Against Implementation of Citizenship Amendment Act” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটিতে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর একটি দৃশ্যও খুঁজে পাওয়া যায়।

Screenshot: Latestly

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় পুলিশ প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থীকে আটক করে।

অর্থাৎ, আলোচিত ভিডিওর সাথে হিজাব পরা নিয়ে দমন-পীড়নের কোনো সম্পর্ক নেই।

মূলত, গত ১২ মার্চ ভারতের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় পুলিশ প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থীকে আটক করে। সম্প্রতি সেই ভিডিওটি হিজাব পরাকে কেন্দ্র করে ভারতের বিশ্ববিদ্যালয় দমন-পীড়নের দৃশ্য  দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে।

সুতরাং, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঘটনায় শিক্ষার্থী আটকের ভিডিওকে হিজাব পরার কারণে শিক্ষার্থীদের ওপর দমন-পীড়ন দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচার করা হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

হালনাগাদ/ Update

২১ এপ্রিল, ২০২৪ : এই প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী সময়ে এ সংক্রান্ত দাবিগুলোর আর্কাইভ লিংক প্রতিবেদনে সংযুক্ত করা হলো।

আরও পড়ুন

spot_img