এটি ইসরায়েলের দিকে ছোড়া ইরানের ক্ষেপনাস্ত্রের ভিডিও নয়

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে অবস্থিত ইরানি কনস্যুলেটে হামলা চালায় ইসরায়েল। এই হামলার জবাবে গত ১৩ এপ্রিল ইসরায়েলে সরাসরি হামলা চালিয়েছে ইরান। সম্প্রতি, ‘ইসরাইলে ছোড়া ইরানের ক্ষেপনাস্ত্র কতটা মারাত্মক দেখুন’ দাবিতে একটি ভিডিও ‍রিলস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে।

ইসরায়েলে

ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি দেখুন এখানে (আর্কাইভ)।

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধারন জানা যায়, ’ইসরাইলে ছোড়া ইরানের ক্ষেপনাস্ত্র কতটা মারাত্মক দেখুন’ দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ইসরায়েলে ইরানের হামলার ভিডিও নয় বরং এই দুইটি পুরোনো ও ভিন্ন সময়ের ভিডিওকে প্রযুক্তির সাহায্যে একত্রিত করে উক্ত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে । 

অনুসন্ধানের শুরুতেই ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে দুইটি আলাদা ফুটেজ রয়েছে। প্রথম ফুটেজটির বিষয়ে অনুসন্ধানে ২০২০ সালের ৫ আগস্ট Rahmtuallah Golo Baloch নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আপলোকৃত ভিডিওর (২৩-২৫ সেকেন্ড অংশে) সাথে মিল পাওয়া যায়। 

Screenshot collage: Rumor Scanner

মার্কিন সংবাদমাধ্যম CNBC এর ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ৩ আগস্ট ‘One year on from the Beirut blast, questions remain’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও এর একটি দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়। 

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ২০২০ সালে ৪ আগস্ট ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। বৈরুত বন্দরে এক রাসায়নিক পদার্থের গুদামে এই বিস্ফোরণ ঘটেছিল। বৈরুতের বন্দর এলাকায় বহু বছর ধরে ফেলে রাখা প্রায় ২,৭৫০ টন এ্যামোনিয়াম নাইট্রেটে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। এটি সেসময়েরই ফুটেজ। 

প্রচারিত ভিডিওটির দ্বিতীয় ফুটেজটির বিষয়ে অনুসন্ধানে মার্কিন সংবাদমাধ্যম NBC News এর ইউটিউব চ্যানেলে চলতি বছরের জানুয়ারীর ২২ তারিখে ‘Young and old fall victim to intense bombardment of Gaza’s Khan Younis’ শিরোনামের ভিডিওর সাথে মিল পাওয়া যায়। এছাড়াও, ভিডিও’র কিছু অংশ অন্যান্য ওয়েবসাইট ও ইউটিউব চ্যানেলেও পাওয়া যায় (, , , , )।

Screenshot collage: Rumor Scanner

গত বছরের (২০২৩) ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি এই ‍দুই মাস ফিলিস্তিনি ছিটমহল দক্ষিণ গাজার প্রধান শহর খান ইউনিসে ব্যাপক বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এটা সেসময়েই ভিডিও। 

অর্থাৎ, দুইটি ভিন্ন ঘটনার ভিডিও জুড়ে দিয়ে এটিকে ইসরায়েলে ইরানের সাম্প্রতিক হামলার দাবিতে প্রচার হচ্ছে।

মূলত, গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে অবস্থিত ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে ১৩ এপ্রিল ইরান নিজেদের ভূখন্ড থেকে সরাসরি ইসরায়েলে ড্রোন ও মিসাইল দিয়ে হামলা চালায়। সম্প্রতি এই ঘটনারই একটি ভিডিও দাবিতে দুইটি ফুটেজ একত্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। তবে রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক কোনো ঘটনার নয়। প্রকৃতপক্ষে, ভিডিওতে থাকা ফুটেজদুইটি লেবানন ও গাজার ভিন্ন ঘটনার, যা ইসরায়েলে ইরানের হামলার আগে থেকে ইন্টারনেটে বিদ্যমান। 

সুতরাং, ইন্টারনেট থেকে পুরোনো দুটি ‍ভিডিও সংগ্রহ করে প্রযুক্তির সাহায্যে একত্রিত করে ইসরায়েলে দিকে ছোড়া  ইরানের ক্ষেপনাস্ত্রের ভিডিও দাবিতে প্রচারিত হয়েছে; যা মিথ্যা।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

spot_img