সম্প্রতি, “যশোরের শার্শা সরকারি মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র মেহেদী হাসান সাগরকে পিটিয়ে জখম করেছে ঐ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শহীদুল ইসলাম।” শীর্ষক একটি তথ্য ও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, যশোরে প্রধান শিক্ষক কর্তৃক মেহেদী নামের স্কুল ছাত্র নির্যাতনের ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ের নয় বরং ঘটনাটি প্রায় তিন বছর পুরোনো এবং প্রচারিত ছবিগুলো মেহেদীর নয়, এগুলো নিজ বাবা কর্তৃক নির্যাতনের স্বীকার এক ইয়েমেনি শিশুর পুরোনো ছবি।
ছবি যাচাই
রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে, ইয়েমেনের সংবাদপত্র yemennownews এর ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে تعرض طفل للضرب المبرح من قبل والده بالمحويت
(অনুবাদঃ মাহওয়েতে একটি শিশুকে তার বাবা মারাত্মকভাবে মারধর করেছে) শীর্ষক শিরোনামে আরবি ভাষায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে একই ছবি খুঁজে পাওয়া যায়।
পাশাপাশি, একই সময়ে উক্ত ঘটনা নিয়ে ইয়েমেনের সংবাদমাধ্যম ‘shafatak.net‘ ও ‘pressbee.net‘ এ প্রকাশিত প্রতিবেদনেও উক্ত ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়। (2)
মূলত, আলোচিত ছবির শিশুটির নাম Shamakh Rashid Al-Qahaili এবং সে ইয়েমেনের বাসিন্দা। শিশুটির বাবা তার নিজ সন্তানকে শাসন করার জন্য পিটিয়ে জখম করেছিলো এবং পরবর্তীতে ইয়েমেনের পুলিশ শিশুটির বাবাকে গ্রেফতার করে। বিষয়টি নিয়ে ঐ সময়ে ইয়েমেনের সংবাদমাধ্যম গুলোতে সংবাদ প্রচারিত হয়। ইয়েমেনে বাবা কর্তৃক সন্তানকে পিটিয়ে আহত করার পুরোনো ছবিই সম্প্রতি বাংলাদেশের যশোরে স্কুল ছাত্র নির্যাতনের ছবি দাবিতে পুনরায় প্রচার করা হচ্ছে।
তথ্য যাচাই
কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে ২০১৯ সালের ৬ ফেব্রুয়ারিতে ‘ড্রেস কিনতে পারেনি, স্কুলছাত্রকে পিটিয়ে জখম প্রধান শিক্ষকের‘ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
এছাড়াও, যশোরে স্কুলছাত্রকে নির্যাতন নিয়ে ২০১৯ সালে বাংলাদেশের একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়, দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
মূলত, স্কুলড্রেসের প্যান্ট ছাড়া শুধু শার্ট পরিধান করে স্কুলে যাওয়ার কারণে যশোরের শার্শা উপজেলার সরকারি মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র মেহেদী হাসান সাগরকে পিটিয়ে জখম করেন ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম। ২০১৯ সালে যশোরে প্রধান শিক্ষক কর্তৃক ছাত্র পেটানোর ঘটনার তথ্য এবং ২০২০ সালে ইয়েমেনে এক বাবা কর্তৃক সন্তানকে পিটিয়ে আহত করার ছবি ব্যবহার করে সাম্প্রতিক সময়ে যশোরে ছাত্র নির্যাতনের ঘটনা ও নির্যাতিত শিশুর ছবি দাবিতে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের মার্চ মাসেও শিশুটির একই ছবিগুলো ব্যবহার করে, ‘স্কুলে ১০ মিনিট দেরি করে আসায় শিক্ষক কর্তৃক ছাত্র নির্যাতন’ দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হয় এবং সেসময়ে রিউমর স্ক্যানার উক্ত বিষয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
সুতরাং, প্রায় ৩ বছর আগে যশোরের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক কর্তৃক ছাত্র নির্যাতনের ঘটনার তথ্যের সাথে এক ইয়েমেনি শিশুর পুরোনো ছবি ব্যবহার করে
সাম্প্রতিক ঘটনা দাবিতে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।
[su_box title=”True or False” box_color=”#f30404″ radius=”0″]
- Claim Review: যশোরের শার্শা সরকারি মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র মেহেদী হাসান সাগরকে পিটিয়ে জখম করেছে ঐ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শহীদুল ইসলাম
- Claimed By: Facebook Posts
- Fact Check: Misleading
[/su_box]
তথ্যসূত্র
- Yemen Now News: https://yemennownews.com/article/1022426
- Sahafatak: https://sahafatak.net/show2328390.html
- Pressbee: https://pressbee.net/show2794977.html
- Jugantor: https://www.jugantor.com/country-news/141668/%E0%A6%A1%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B8-%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A6%BF-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A6%9B%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A6%AA%E0%A6%BF%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%9C%E0%A6%96%E0%A6%AE-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A7%E0%A6%BE%E0%A6%A8-%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%B0
- Ekattor TV: https://youtu.be/nSnYC_GEYHM
- Bangla Tribune: https://www.banglatribune.com/country/khulna/415243/%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A7%81%E0%A6%B2-%E0%A6%A1%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B8-%E0%A6%A8%E0%A6%BE-%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A7%9F-%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A7%80%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A6%AA%E0%A7%87%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%A8-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A7%E0%A6%BE%E0%A6%A8
- Dhaka Tribune: https://bangla-archive.dhakatribune.com/bangladesh/2019/02/06/7443